শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫ | ২৮ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস পর্ব -৩৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান

তার সামরিক বাহিনীর সহকর্মীরা বিমূঢ় হয়ে পড়ে। হঠাৎ দেখা এবং পরিচয়সূত্রে তারা ডাক্তার সাহেবের সহকর্মী ছিলেন। তাদের তিনি অদ্ভুত সহকর্মী বলেছেন। তাদের সব রকমের প্রতিকার ব্যবস্থা ফুরিয়ে যায়। তখন তারা একটা বুদ্ধি বের করে—রক্ত প্রবাহ ঠিক রাখতে নাচ চালু করে তারা।

প্রতি রাতে মৃতদের দাফনের মাঝখানে জীবিতরা বেহালার সুরে নাচতে থাকে। এরকম একটা অদ্ভূত ব্যবস্থা তারা মন্দ বের করেনি। সহজ সরল মানুষগুলো নাচের সময় শরীরে যা কিছু থাকত সব ঘামের মধ্য দিয়ে বের করে দিত। এভাবে চলতে চলতে এক সময় কলেরার মহামারি থেমে যায়। আবিষ্কার করার মতোই একটা বুদ্ধি বটে। তপ্ত-আর্দ্র রাতে অসুস্থ ঘুমন্ত রোগীদের কুঁড়ের মাঝখানে একজন বেহালা বাদক একটা ঝুড়ির উপর বসে। তার পাশে একটা বাতি আর চারপাশে ভনভন করছে মশা ও অন্যান্য কীটপতঙ্গ। তার সুরের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিজেতারা লম্বা পোশাক এবং চাদর পরে বড় বড় ডালপালার আগুনের চারপাশে অবিচলিত ভঙ্গিতে নাচছে। তখন তাদের তাঁবুগুলোর চার কোণে পাহারায় থাকত কয়েকজন, যাতে রক্ষিত ব্যক্তিদের উপরে কালো কেশরঅলা সিংহ, গবাদিপশুর চোর, আরবের ডাকাত দল এবং মাঝে মধ্যে সরবরাহের অনুসন্ধানী ফরাসি অভিবাসীরা আক্রমণ করতে না পারে।

পরবর্তীতে তাদের টুকরো টুকরো বিচ্ছিন্ন জমি দেওয়া হয়েছিল, তবে কুঁড়ের এলাকা থেকে অনেক দূরে। পরে তারা সেসব জায়গায় গ্রাম গড়ে তুলেছিল মাটির দেয়াল তৈরি করে। কিন্তু অভিবাসীদের দুই তৃতীয়াংশই ততদিনে মারা গেছে, আলজেরিয়ার অন্য সব জায়গার মতোই সেখানেও অভিবাসী মানুষরা কোদাল কিংবা লাঙলে হাত রাখার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে। প্যারিস থেকে আসা আর যারা বেঁচেছিল মাঠে কাজ করার সময় তাদের মাথায় থাকত হ্যাট, কাঁধে বন্দুক এবং দাঁতের ফাঁকে পাইপ। শুধু পাইপ টানা ছাড়া সিগারেট ফোঁকার অনুমতি তাদের ছিল না। পকেটে থাকত কুইনাইন, বনের ক্যাফে এবং মনডোভির ক্যান্টিনে সাধারণ পানীয়ের মতোই বিক্রি হতো কুইনাইন। সঙ্গে থাকত রেশমী পোশাক পরিহিত তাদের স্ত্রীরা। তবে সব সময়ই থাকত বন্দুক আর সৈনিকরা। এমনকি সেবাউসে লন্ড্রির কাজকর্ম করতে গেলেও প্রতিরক্ষা সহচর দরকার হতো, বিশেষ করে পুরনো দিনে যারা রিউ ডি আর্কাইভসের ওয়াশহাউসে কাজ করার সময় ঝামেলাহীন অভ্যর্থনা কক্ষ চালাত তাদের জন্য। আর রাতের বেলা খোদ গ্রামটাই মাঝে মধ্যে আক্রমণের শিকার হত। ৫১ সালে বিদ্রোহের সময় যেমন হয়েছিল। সেবার দেয়ালের চারপাশ ঘিরে ফেলা বুর্নুস পরিহিত শত শত অশ্বারোহী সেনা ভয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল। কারণ পরিবেষ্টিত মানুষরা উনানের নল তাক করেছিল তাদের দিকে। দেখে তারা মনে করেছিল, তাদের দিকে কামান দাগা হবে বুঝি। দখলে আসতে অনিচ্ছুক এরকম একটা এলাকায় কাজ করা, ঘরবসতি তৈরি করা খুব কঠিন ছিল। সুযোগ পেলেই এলাকাটা যেন প্রতিশোধ নিতে চেষ্টা করত।

যখন বিমানটা কিছুটা উপরের দিকে উঠে গিয়ে নেমে আসছে তখন জ্যাকের মায়ের কথা মনে পড়ে গেল। মনের পর্দায় ছবির মতো জ্যাক দেখতে পায়, বন থেকে চলে আসা রাস্তাটায় ওয়াগনটা কেমন বার বার আটকে যাচ্ছে সামনে চলার সময়। বসতি স্থাপনকারীরা কোথাও সাহায্য পাওয়ার আশায় একজন সন্তানসম্ভবা নারীকে ফেলে গেছে এবং এসে দেখে তার পেট ফাঁড়ি দেওয়া এবং স্তন কেটে ফেলা হয়েছে।
ভেইলার্ড বলল, সময়টা ছিল যুদ্ধের।
ডাক্তার সাহেব বললেন, আমরা এখন নিরপেক্ষ হতে পারি। আমরা এখন তাদের সবাইকে বন্ধ করে রাখতে পারি। হ্যাঁ, অবশ্যই, অবশ্যই। তারা সবাই প্রথম নাপিতের বিচি কেটে দিয়েছিল। তারপর তোমরা সবাই প্রথম অপরাধীর নাম জানো, কাবিল। তার সময় থেইে যুদ্ধের সূত্রপাত। মানুষ আসলে জঘন্য, বিশেষ করে বর্বর সূর্যের নিচে যাদের অবস্থান।

সেদিন দুপুরের খাবারের পর তারা গ্রামের ভেতর দিয়ে হেঁটেছিল। সারাদেশের শত শত গ্রামের মতো এই গ্রামটাও, উনিশ শতকের শেষের দিকের সাধারণ ধাঁচে তৈরি শত শত ঘরবাড়ি রাস্তার ধারে দাঁড়ানো। রাস্তাগুলো এগিয়ে গিয়ে মিশেছে দালানকোঠাগুলোর সঙ্গে। সমবায় সমিতি, খামারের ব্যাংক, বিনোদনের হল সবকিছুই ক্যারাসেল কিংবা মেট্রোর প্রবেশ পথের মতো দেখতে বাদন মঞ্চের দিকে চলে গেছে। সেখানে বহুদিন ধরে গ্রামের লোকদের ঐকতানের ধর্মসংগীত কিংবা সামরিক দলের কনসার্ট হয়েছে। চারপাশে যুগলবৃন্দ তাদের সাধ্যমতো ভালো পোশাক পরে পায়চারি করে বেরিয়েছে এবং প্রচন্ড তাপ আর ধূলির মধ্যে অলস ভঙ্গিতে বাদামের খোসা ছড়িয়েছে। আজও রবিবার, তবে সামরিক বাহিনীর মনস্তাত্ত্বিক শাখা বাদন মঞ্চে লাউডস্পিকার খাটিয়েছে এবং উপস্থিত লোকদের বেশিরভাগই আরব। তারা স্কোয়ারের চারপাশে হাঁটাহাঁটি না করে দাঁড়িয়ে সংগীত শুনছে। একবার খানিক বক্তৃতা হচ্ছে। তারপর আবার সংগীত হচ্ছে। ভিড়ের মধ্যে প্রায় চোখে পড়ে না ধরনের ফরাসি লোকদের সবার চেহারা প্রায় একই রকম ভাবগম্ভীর। তারা যেন ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আছে অনেকদিন আগে লাব্রাডরে যারা এসেছিল ঠিক তাদের মতো। কিংবা অন্যদের মতো যারা একই রকম পরি¯ি’তিতে, একই রকম ভোগান্তির মধ্য দিয়ে অন্যান্য অঞ্চলে এসেছিল দারিদ্র এবং শাস্তি এড়াতে এবং পেয়েছিল দুঃখ আর পাথর, ঠিক তাদের মতো। জ্যাকের মায়ের পূর্বপুরুষ মাহুনের স্পেনীয়দের বেলায় এবং যারা জার্মান শাসন প্রত্যাখ্যান করে ফরাসি শাসন গ্রহণ করেছিল তাদের বেলায়ও একই রকম ঘটেছিল। তাদের ৭১ এর আরব বিদ্রোহীদের ভূমি দান করা হয়েছিল। কারণ ততদিনে ওরা হয় মারা গেছে, নয়তো জেলে গেছে। ভিন্ন মতাবলম্বীরা ভূমি গ্রহণের পর বিদ্রোহীদের দ্বারা পরিবেশ গরম রাখে। জ্যাকের বাবার পূর্বপুরুষরা এসেছেন যন্ত্রণাদানকারী-যন্ত্রণাপ্রাপ্তদের দিকে থেকে। চল্লিশ বছর পর তিনি ওই একই রকম ভাবগম্ভীর এবং দৃঢ়চেতা চেহারা নিয়ে এখানে এসেছিলেন। তার চিন্তাচেতনা ছিল ভবিষ্যতের দিকে ধাবিত। যারা নিজেদের অতীত অপছন্দ করে এবং ভবিষ্যৎ ভালোবাসে ঠিক তাদের মতো ছিলেন তিনি। যারা এই ভূমিতে জীবনযাপন করেছে এবং কবরখানায় ভাঙাচোরা দাঁত বের করে হাসার মতো চেহারার পাথর ছাড়া আর কোনো চিহ্ন রেখে যেতে পারেনি তাদের মতো একজন অভিবাসী ছিলেন তিনি। ভেইলার্ড বিদায় নেওয়ার পরে দিনের শেষে বৃদ্ধ ডাক্তারের সঙ্গে জ্যাক এরকমই এক কবরখানায় গেল। একদিকে সাম্প্রতিক কালের দাফন কেতার উৎকট এবং নতুন নির্মাণকলা: সাম্প্রতিক কালে যে ধরনের সস্তা ধর্মীয় শিল্পের প্রদর্শন থাকে সেরকম। অন্যদিকে পুরনো সাইপ্রেস গাছের নিচে পায়ে চলা পথের মাঝে পাইনের সুচালো ফলা কিংবা সাইপ্রেসের কোণ বিছানো মাটিতে অথবা স্যাঁতসেতে দেয়ালের পাশে বেড়ে ওঠা ওক্সালিসের ফুলের ঝাড়ের পাশে পুরনো কবর ফলকগুলো যেন মাটির সমতল থেকে আলাদাভাবে চোখেই পড়ে না এমন অস্পষ্ট হয়ে গেছে।

প্রায় একশো বছরের বেশি সময় ধরে দলে দলে লোকজন এখানে এসেছে। জমিতে লাঙল চালিয়ে লাঙলের ফলার দাগ তৈরি করেছে মাটির বুকে। কোথাও কোথাও গভীর করে খুঁড়ে ফেলেছে মাটি। জমির কর্ষণের ধূলো তাদের গায়ে আস্তরণ না ফেলা পর্যন্ত এবং জমি বুনো গাছপালা আবাদের মতো অবস্থায় ফিরে না যাওয়া পর্যন্ত কোথাও কোথাও খুব হালকা করে কর্ষণ করেই গেছে তারা। নিজেদের বংশবিস্তার ঘটিয়েছে এবং অবশেষে বিলীন হয়ে গেছে। তাদের পুত্রদের ক্ষেত্রে তেমনটিই ঘটেছে। তাদের পুত্ররা, নাতিরা তাদের মতোই নিজেদের দেখতে পেয়েছে এই ভূমির বুকে কোনো অতীত ছাড়া, ধর্ম ছাড়া, মূল্যবোধ-নীতি ছাড়া, পথপ্রদর্শন ছাড়াই। তাতেই খুশি থেকেছে তারা। রাত এবং মৃত্যুর সম্মুখে ভীতও থেকেছে তারা। কত রকমের জাতি থেকে কত সব প্রজন্মের মানুষ এখানে এই বিশাল আকাশতলে এসে জমায়েত হয়েছে। এখানে প্রথম গোধূলির আলামত ততক্ষণে শুরু হয়েও গেছে। নিজেদের মধ্যে যেন বন্দি অবস্থায় থেকেই তারা সবাই বিলীন হয়ে গেছে। কোনো চিহ্ন পর্যন্ত রেখে যায়নি। ব্যাপক অবয়ব নিয়ে তাদের উপরে পতিত হয়েছে এক বিশাল বিস্মৃতি। সেটাই যেন রাতের সঙ্গী হয়ে গ্রামে ফিরে আসা তিনজন মানুষের উপরেও পড়েছে। রাতের আগমন তাদের হৃদয় ছুঁয়ে দিয়েছে বলে সমুদ্রের উপরে, এবড়ো থেবেড়ো পর্বতের উপরে, মালভূমির উপরে হঠাৎ সন্ধ্যা নেমে এলে আফ্রিকার সব মানুষকে যে বিভীষিকা ছেয়ে ফেলে সেই বিভীষিকা তাদের হৃদয়কেও গ্রাস করে ফেলেছে। এরকম পবিত্র বিভীষিকা ডেলফির পর্বতের গায়েও পতিত হয়েছে একই রকম প্রভাব নিয়ে এবং তার ফলে সেখানে তৈরি হয়েছে মন্দির আর বেদী। কিন্তু আফ্রিকার এই ভূমিতে সব মন্দির ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। হৃদয়ের উপর ভর করে আছে শুধু এই দুর্বহ কোমল একটা বোঝা: তারা কীভাবে মারা গেছে, মারা যাচ্ছে। সবকিছু থেকে দূরে, নীরবতার মধ্যে, মাতৃভূমি থেকে অনেক দূরে দুর্বোধ্য এক ট্র্যাজেডির মধ্যে তারা মারা গেছে। তার বাবাও এরকম ট্র্যাজেডির মধ্যেই স্বাধীন ইচ্ছে-রহিত জীবনযাপন করা অবস্থায় মারা গেছেন, এতিমখানা থেকে হাসপাতাল পর্যন্ত, পথিমধ্যে শুধু অপরিহার্য বিয়ে। যুদ্ধে তার মৃত্যুবরণ করার আগ পর্যন্ত জীবন তার চারপাশে বেড়ে চলেছে। যুদ্ধে তিনি মারা গেছেন। কিন্তু নিকটজনেরা তার মৃত্যু সম্পর্কে, তার দাফন সম্পর্কে কোনোদিন কিছুই জানতে পারেনি। তার নিজের ছেলের কাছে তিনি অজানাই থেকে গেছেন চিরতরে। তার জাতির লোকদের সর্বশেষ ঠিকানা হয়েছিল বিশাল বিস্মৃতি।

চলবে…

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

Header Ad
Header Ad

কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ মিরাজ, দর্শক পছন্দে সেরা ঋতুপর্ণা

ছবি: সংগৃহীত

২০২৪ সালের কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত জমকালো অনুষ্ঠানে তার হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

অন্যদিকে, দর্শক ভোটে সর্বাধিক পছন্দের ক্রীড়াবিদ হিসেবে ‘পপুলার চয়েজ অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করেন নারী সাফ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা জাতীয় নারী ফুটবল দলের মিডফিল্ডার ঋতুপর্ণা চাকমা।

এ বছর ‘স্পোর্টস পারসন অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কার জয়ের দৌড়ে মিরাজ পেছনে ফেলেছেন ঋতুপর্ণা এবং ২০২৪ প্যারিস অলিম্পিকে কোয়ালিফাই করা আর্চার সাগর ইসলামকে। অপরদিকে, ‘পপুলার চয়েজ’ বিভাগে ঋতুপর্ণা এগিয়ে যান মিরাজ ও উদীয়মান পেসার নাহিদ রানাকে ছাড়িয়ে।

 

ছবি: সংগৃহীত

১৯৬৪ সাল থেকে ক্রীড়াবিদদের স্বীকৃতি জানিয়ে আসা দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ক্রীড়া সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএসপিএ) এবছর ১৫টি বিভাগে মোট ১৩ ব্যক্তি, দল ও সংস্থাকে সম্মাননা দেয়। সংগঠনের সভাপতি রেজওয়ান উজ জামান রাজিবের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং স্কয়ার টয়লেট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী।

পুরস্কার গ্রহণ করে মিরাজ বলেন, “বিএসপিএকে ধন্যবাদ প্রতি বছর এমন আয়োজনের জন্য। এটা আমাদের খেলোয়াড়দের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস।” ভুটানে লিগ খেলায় ব্যস্ত থাকায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে না পারলেও ভিডিও বার্তায় ঋতুপর্ণা জানান, “এই সম্মান আমাকে আরও ভালো করার অনুপ্রেরণা দেবে।”

Header Ad
Header Ad

রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা, মগবাজার-মধুবাগে তীব্র ভোগান্তি

রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মগবাজার ও মধুবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় ওয়াসার পানিতে পোকা ও ময়লার উপস্থিতি নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা। ট্যাপের পানি দুর্গন্ধযুক্ত ও অস্বচ্ছ হওয়ায় তা রান্না, গোসল ও দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করতে গিয়ে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, বাসার পানির ট্যাঙ্ক একাধিকবার পরিষ্কার করেও মিলছে না সমাধান। ওয়াসার সাপ্লাই পাইপ থেকেই এই সমস্যার উৎপত্তি বলে মনে করছেন তারা।

মধুবাগ এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, “এই পানি দিয়ে রান্না ও গোসল সম্ভব না। আমাদের বাসার শিশুরা পানি খেতেই চায় না। বাধ্য হয়ে পাম্প থেকে পানি এনে ব্যবহার করতে হচ্ছে।” আরেকজন জানান, “ট্যাঙ্ক পরিস্কার করলে প্রথমে কিছুদিন ভালো থাকে, তারপর আবার পোকা দেখা দেয়।”

বিকল্প না থাকায়, অনেকেই ট্যাপের মুখে কাপড় বেঁধে পানি ব্যবহার করছেন। কিন্তু তারপরও পেটের অসুখ ও চর্মরোগের প্রকোপ বাড়ছে বলেও জানান স্থানীয়রা।

এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঢাকা ওয়াসার তিনজন কর্মকর্তা মধুবাগ এলাকায় পরিদর্শনে যান এবং কয়েকটি বাসা থেকে পানি সংগ্রহ করে পরীক্ষায় পোকা পাওয়ার কথা স্বীকার করেন। তবে দায় চাপান ট্যাঙ্ক ঠিকমতো পরিষ্কার না করাকে। ওয়াসার উপসহকারী প্রকৌশলী তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, “লাইনের পানি পরিষ্কার। ট্যাঙ্ক যদি নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়, তাহলে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।”

তবে এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নন এলাকাবাসী। তারা বলছেন, নিয়মিত ট্যাঙ্ক পরিষ্কারের পরও পানি দূষিত হচ্ছে, যা পাইপলাইনের সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। এ অবস্থায় ওয়াসার কর্মকর্তারা পাইপের মান যাচাইয়ের আশ্বাস দিয়েছেন। এলাকাবাসী দ্রুত সমস্যার স্থায়ী সমাধান চেয়ে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Header Ad
Header Ad

বিদেশি আইনের আওতায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ: গভর্নর

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরাতে হবে বিদেশি আইনের মাধ্যমে এবং এ উদ্যোগ সম্পূর্ণ নতুন। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়াটি দেশের নয়, বরং বিদেশের আইনের সঙ্গে সংযোগ রেখে করতে হবে। এর জন্য আগে সংশ্লিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করতে হবে এবং এস্টেট (সম্পদ) ফ্রিজ করে আদালতের মাধ্যমে বাকি প্রক্রিয়া চালাতে হবে।”

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “প্রথমে এস্টেটগুলো ফ্রিজ করার চেষ্টা করছি। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে, চিঠি পাঠানো হচ্ছে। আইন পরামর্শক নিয়োগে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এস্টেট ট্রেসিং ফার্মের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এস্টেট ফ্রিজ করা গেলে এটিই হবে প্রথম সাফল্য।”

এক প্রশ্নের উত্তরে গভর্নর বলেন, “আমার ধারণা, প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। শুধু বেক্সিমকো গ্রুপেরই প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার মতো অর্থ পাচার হয়েছে। এগুলো বড় গ্রুপের হিসাব, ছোট গ্রুপগুলো এখনো বিবেচনায় আনা হয়নি। ভবিষ্যতে যেন এমন না ঘটে, সে জন্য আমরা প্রয়োজনীয় নিয়ম-কানুন সংশোধনের উদ্যোগ নিচ্ছি।”

তিনি আরও বলেন, “সব সময় আদালতের মাধ্যমে সমাধান না করে, কিছু ক্ষেত্রে সমঝোতার ভিত্তিতেও (আউট অব কোর্ট সেটেলমেন্ট) টাকা ফেরত আনার চিন্তা করছি। তবে সেটার আগে সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকা জরুরি, না হলে আমরা ঠকে যাব।”

মুদ্রাস্ফীতি সংক্রান্ত এক প্রশ্নে গভর্নর বলেন, “অতীতে খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি ৯-১০ শতাংশ দেখানো হলেও বাস্তবে তা ছিল ১৩-১৪ শতাংশ। তবে এখন সেটি ৮-৯ শতাংশে নেমেছে। সামগ্রিকভাবে মুদ্রাস্ফীতি কমতির দিকেই। আগামী বছরে তা ৫ শতাংশ বা তার নিচে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।”

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. জামাল উদ্দিন, ফাইন্যান্স ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের পরিচালক মো. আনিসুর রহমানসহ চট্টগ্রাম কার্যালয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সঞ্চালনায় ছিলেন উপপরিচালক মো. জোবাইর হোসেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ মিরাজ, দর্শক পছন্দে সেরা ঋতুপর্ণা
রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা, মগবাজার-মধুবাগে তীব্র ভোগান্তি
বিদেশি আইনের আওতায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ: গভর্নর
মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম বদল নয়, বরং ঐতিহ্যে ফেরত: ঢাবি উপাচার্য
তৃতীয় বিয়ের ইতি, রোশন সিংয়ের সঙ্গে আইনিভাবে বিচ্ছিন্ন শ্রাবন্তী
৬৪ জেলা নিয়ে তৃণমূল ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজনের ঘোষণা ক্রীড়া উপদেষ্টার
আগামীকাল শনিবার রাজধানীতে “মার্চ ফর গাজা”, পাঁচটি স্থান থেকে শোভাযাত্রা শুরু
অবশেষে নতুন চুক্তি সালাহর, লিভারপুলে থাকছেন ২০২৭ পর্যন্ত
পহেলা বৈশাখের শোভাযাত্রায় হাসিনার মুখাবয়ব
ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে মামলা করল ওপেনএআই
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মৃদু ভূমিকম্প
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে নাগরিক কমিটির নেত্রী দিলশাদ আফরিন আটক
বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কায় ডলারের বড় পতন, রেকর্ড ছুঁয়েছে স্বর্ণের দাম
ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে ১৪৭ দেশ, বাড়ছে বিশ্বজনমত
মার্কিন পণ্যে ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে চীনের পাল্টা জবাব
নারায়ণগঞ্জে দুই নারী ও এক শিশুর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার
ফুটবল মাঠ পেরিয়ে হলিউডে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো
পুলিশের চাকরি পেতে সমন্বয়কদের পেছনে দৌড়ানো বন্ধ করুন: সারজিস
ড. ইউনূসের ৫ বছর ক্ষমতায় থাকার কোনও অধিকার নেই: সেলিমা রহমান
সিটি কর্পোরেশন হচ্ছে বগুড়া, গণশুনানির প্রস্তুতি শুরু