শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ১৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান

যে রাতে জ্যাক ওই ঘটনার বর্ণনা শুনেছিল সে রাতে বিছানার একপাশে গুটিশুটি মেরে পড়েছিল যাতে তার ভাইয়ের গায়ের সঙ্গে ছোঁয়া না লাগে। তখনকার দিনে তারা দুভাই এক বিছানায় ঘুমাত। বমনভাব এবং ভীতি ঠেকিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করতে হয়েছিল তাকে। ঘটনার বর্ণনা শুনে কল্পনায় যেসব চিত্র আসত সেগুলো তার কাছে ভীতিকর মনে হতো। সারা জীবনই ওইসব প্রতিমূর্তি তাকে তাড়া করেছে, তার ঘুমের মধ্যেও; কখনও কখনও মাঝে মধ্যে, কখনও কখনও নিয়মিতভাবে। বিভিন্ন রূপ ধরে দুঃম্বপ্ন তাকে তাড়া করে বেড়াত। তবে সব সময় ওইসব দুঃস্বপ্নের বিষয়বস্তু একটাই থাকত: তাকে ওই প্রতিমূর্তিগুলো ফাঁসি দেওয়ার জন্য নিতে এসেছে।

জেগে উঠে অনেক সময় ধরে চেষ্টা করার পরে তবে সেই ভয়জাগানিয়া মানসিক অবস্থা থেকে সে বের হয়ে আসতে পারত যেখানে সত্যি কোনো আশঙ্কা নেই তার ফাঁসি হয়ে যাওয়ার। বড় হওয়ার পর তার চারপাশে পৃথিবীর ঘটনাবলী এমনভাবে ঘটেছে তার ফাঁসি যেন আর খুব বেশি অসম্ভব ঘটনা থাকেনি। বাস্তবতা তার স্বপ্নকে আর প্রশমন করতেও পারেনি। বরং তার ভয়াবহ দুঃস্বপ্ন বেশ কিছু বছর ধরে তার বাস্ততবাকে যেন হৃষ্টপুষ্ট করেছে। যে দুঃস্বপ্ন তার বাবাকে তাড়া করেছে সেটাই যেন তিনি তার ছেলের জন্য রেখে গেছেন একমাত্র সুস্পষ্ট এবং নিশ্চিত উত্তরাধিকার হিসেবে। এই রহস্যময় বন্ধন তাকে সেন্ট ব্রিউকের ওই অচেনা মানুষটির সঙ্গে সম্পর্কের সুতোয় বেঁধেছে যে মানুষটি হয়তো ধারণাই করতে পারেননি, তার এরকম অপঘাতী মৃত্যু হবে। এই বন্ধন তার মায়ের বোধগম্যতার বাইরে; কেননা তিনি ওই ফাঁসির রাতের ঘটনার বর্ণনা শুনেছিলেন, জ্যাকের বাবার বমি করা দেখেছেন এবং সকালবেলা ভুলেও গেছেন। সেভাবেই পরবর্তীতে তিনি অনুভব করতে অক্ষম থেকেছেন সময় বদলে গেছে সেকথাও। তার কাছে সময় একই রকম রয়ে গেছে: তিনি মনে করেছেন, কোনো রকম পূর্বাভাস ছাড়াই যে কোনো মুহূর্তে বিপর্যয় ঘটতে পারে।

অন্যদিকে, জ্যাকের নানির সবকিছু সম্পর্কে অনেকটা সঠিক ধারণা ছিল: জ্যাককে তিনি প্রায়ই বলতেন, তোর শেষ পরিণতি হবে ফাঁসিকাঠ। কেন হবে না? এরকম আশঙ্কা একদম যে অস্বাভাবিক ছিল তাও নয়। তিনি পরিষ্কারভাবে তেমন কোনো আশঙ্কার কথা জানতেন না। তবে তার চারিত্রিক গঠন যেমন ছিল তাতে জ্যাকের ভাগ্যে সেরকম কিছু ঘটে গেলে তিনি বিস্মিত হতেন না মোটেও। কালো পোশাক পরিহিত দীর্ঘদেহী নানিকে দেখাত মহিলা পয়গম্বরের মতো। অনেক বিষয় সম্পর্কেই বেখবর এবং একগুঁয়ে ছিলেন বলে কী করে সবকিছু বিনা প্রতিবাদে মেনে নেওয়া যায় সে জ্ঞান তার ছিল না। জ্যাকের ছেলেবেলার অধিকাংশ অভিজ্ঞতা জুড়ে অন্য আর কারো থেকে সবচেয়ে বেশি তার উপস্থিতি। মাহুন থেকে আগত বাবা মা তাকে বড় করেছিলেন ছোট একটা খামার এলাকায় এবং অল্প বয়সেই বিয়ে দিয়েছিলেন মাহুন থেকে আগত হালকা পাতলা কোমল গড়নের একজন মানুষের সঙ্গে। তার স্বামীর ভাইয়েরা ১৮৪৮ সালের দিকে তাদের দাদার মৃত্যুর পরে আলজেরিয়ায় বসতি স্থাপন করেছিলেন।

তাদের দাদা জীবনের একটা সময় জুড়ে ছিলেন কবি: গাধার পিঠে চড়ে গোটা দ্বীপের সব্জি বাগানগুলোর দেয়ালের পাশ দিয়ে ঘুরে বেড়াতেন আর কাব্য রচনা করতেন। এরকম কাব্য রচনা চলার এক পর্যায়ে হঠাৎ তিনি কাব্য রচনা ছেড়ে দিলেন: তার বিশ্বাস হয়েছিল, তিনি একজন প্রেমিককে শাস্তি দিচ্ছেন। কিন্তু সামনের ওই ছায়াচিত্র এবং বৃহৎ প্রান্তভাগঅলা কালো টুপির কাছে তিনি প্রতারিত হয়েছিলেন এবং এভাবেই পরিবারিকসূত্রে পাওয়া কাব্যগুণকে হত্যা করেছিলেন। শেষে তার সন্তানদের জন্য কিছুই রেখে যেতে পারেননি। একজন কবির প্রতারিত হওয়ার মতো এরকম ট্র্যাজিক পরিণতির মধ্যেই তার বংশধরদের আলজেরীয় উপকূলে বছর বছর সংখ্যায় বেড়ে ওঠা নিরক্ষর লোকদের মাঝে বসবাসের শুরু। আশেপাশে কোনো স্কুল ছিল না। প্রখর সূর্যের নিচে শ্রম ঢেলে শেষ হয়ে যাওয়া জীবনের সঙ্গেই তাদের অস্তিত্বের বন্ধন। কিন্তু জ্যাকের নানার ফটো দেখে বোঝা যায়, তার কবি দাদার উৎসাহের কিছু একটা রেশ তার মধ্যে ছিল।

তবে সরু মুখমণ্ডল, উঁচু ভ্রু রাশির নিচে তার সুস্পষ্ট চাহনি এবং চোখে স্বপ্নবাজের প্রকাশভঙ্গি দেখে মনে করার কোনো কারণ নেই, তিনি তার অল্পবয়সী, সুদর্শনা এবং শক্তিমতি স্ত্রীর সামনে নিজস্ব মূর্তি রক্ষা করতে পারবেন। নানি তার স্বামীকে নয় জন সন্তান উপহার দিয়েছিলেন: দুজন শৈশবেই মারা যায়। একজন প্রতিবন্ধী হয়ে রক্ষা পায়; শেষের জন জন্মের সময় থেকেই আধা বোবা এবং বধির। তার সন্তানদের তিনি বড় করেছেন একটা ছোট খামারের নিরানন্দ পরিবেশে এবং একই সঙ্গে তাদের সঙ্গে নিজের ভাগের কঠিন কায়িক শ্রমের কাজকর্মও করেছেন। খাবার সময় টেবিলের এক কোণে লম্বা একটা লাঠি হাতে বসে থাকতেন। তাতে মুখের কথায় কাউকে শাসন করার মতো প্ররিশ্রমের হাত থেকে রেহাই মিলত। কারো দোষ পেলে সঙ্গে সঙ্গে মাথার ওপর বাড়ি মারতেন।

ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে তিনি নিজের জন্য এবং তার স্বামীর জন্য শ্রদ্ধা আদায় করে নেওয়ার চেষ্টা করতেন: ছেলেমেয়েদের তিনি নির্দেশ দিতেন তারা যেন কথা বলার সময় বাবার সঙ্গে নম্র ভদ্রভাবে স্পেনীয় কায়দায় কথা বলে। তার স্বামী অবশ্য এই শ্রদ্ধা উপভোগ করেননি; অল্প বয়সেই তিনি মারা যান। রোদে পুড়ে, কঠিন পরিশ্রমের ফলে এবং সম্ভবত দাম্পত্য জীবনের কারণে তিনি মারা গেছেন; জ্যাক জানতে পারেনি, কী রোগে তিনি মারা গেছেন। একা হয়ে যাওয়ায় নানি খামার ছেড়ে তার ছোট সন্তানদের নিয়ে আলজিয়ার্সে বসবাসের জন্য চলে যান। বাকিরা কাজেকর্মে ব্যস্ত ছিল। কারণ সামান্য নবিশ হওয়ার মতো বয়স হতেই তাদেরকে কাজে লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

তাকে বোঝার মতো বয়স হলে জ্যাক দেখতে পেয়েছে, না দারিদ্র, না অন্য কোনো বিরূপ পরিস্থিতি তাকে কাবু করতে পেরেছে। তখন শুধু তিন সন্তান তার সঙ্গে ছিল: ক্যাথরিন, যোসেফ এবং প্রতিবন্দ্বী এতিয়েনে। জ্যাকের মায়ের আরেক নাম ক্যাথরিন, তাকেও অন্য লোকদের বাড়ির কাজে লাগিয়ে দেয়া হয়েছিল; প্রতিবন্দ্বী ছোট ছেলে, পরবর্তীতে উদ্যমী: টব, পিপে ইত্যাদি নির্মাতা হয়েছিল। যোসেফ তখনও বিয়ে করেনি এবং রেলওয়ের কাজ করত। তাদের তিন জনের রোজগার একত্র করলে খুব সামান্য পরিমাণই হতো এবং সেটা দিয়েই পাঁচ সদস্যের সংসার চলত। সংসারের টাকা পয়সার দেখভাল করতেন নানি এবং পরে জ্যাক তার সম্পর্কে প্রথমত যে ধারণাটা পেয়েছে সেটা হলো, তিনি কৃপণ। যে বাতাস আমাদের বাঁচিয়ে রাখে সে বাতাস প্রসঙ্গে আমরা যতখানি কৃপণ তার চেয়ে মনে হয় তিনি বেশি কৃপণ ছিলেন না।

ছোটদের কাপড়-চোপড় নানি নিজে কিনতেন। জ্যাকের মা কাজ থেকে বাড়ি ফিরতেন দিনের শেষ ভাগে। তার মায়ের কাছে যা শুনতেন তাতেই সন্তুষ্ট থাকতেন। তার মায়ের শক্তি দেখে বিমূঢ়ও হতেন এবং তার কাছেই তার নিজের রোজগার সবকিছুই বুঝে দিতেন। কাজেই জ্যাকের ছেলেবেলার সবটা সময় জুড়েই যেসব রেইনকোট পড়তে হয়েছে সেগুলো তার শরীরিক আকারের চেয়ে অনেক বড় থাকত। এখানে নানির যুক্তি ছিল প্রকৃতি নির্ভর, মানে ছোট জ্যাক বড় হতে থাকবে এবং যেহেতু রেইনকোটটা অনেক দিন ব্যবহার করতে হবে, জ্যাক বড় হয়ে গেলেও একই রেইনকোট তাকে মানিয়ে যাবে। পনের বছর বয়সের আগ পর্যন্ত জ্যাক খুব একটা দ্রুত বাড়েনি এবং রেইনকোটের মধ্যে জ্যাক বড় হয়ে ওঠার আগেই সেটা ছিড়ে গেছে।

পরবর্তীটা যখন কেনা হতো তখনও ওই মিতব্যয়িতার নীতিতেই কেনা হতো। আর জ্যাকের ক্লাসমেটরা তার লম্বা পোশাক নিয়ে দুষ্টুমি করলে তার কোমরের পাশে রেইনকোটটা ফুলিয়ে ওপরের দিকে তোলা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকত না। কারণ তাতে রেইনকোটের হাস্যকর চেহারায় খানিকটা মানানসই ভাব ফুটে উঠত। অবশ্য স্কুলের ওই সব লজ্জার ঘটনাগুলো সে দ্রুতই ভুলে যেত ক্লাসে ঢুকলে। সেখানে জ্যাকের মর্যাদা সবার ওপরে থাকত। এছাড়া খেলার মাঠেও ছিল তার রাজত্ব: সে খুব ভালো ফুটবল খেলতে পারত। কিন্তু সেখানেও আনন্দের বিপরীতে আরেক সমস্যা ছিল: ফুটবল মাঠে ছিল সিমেন্টের গ্রাউন্ড; ক্লাসের বিরতিতে ফুটবল খেললে তার জুতার তলা ক্ষয়ে যেত বলে নানি নিষেধ করে দিয়েছিলেন এই খেলা। নাতির জন্য তিনি নিজে শক্ত তলাঅলা জুতা কিনে দিয়েছিলেন। আশা করেছিলেন, ওই জুতা অমর হয়ে থাকবে। জুতার আয়ু বাড়ানোর জন্য তলায় মোচাকৃতির বিরাট পেরেক লাগানোর ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। তাতে জুতার আয়ু দ্বিগুণ হওয়ার কথা। পেরেক ক্ষয় হয়ে গেলে তারপর জুতার তলা ক্ষয়ে যাবে। তাতে নানির আরেক সুবিধা হয়েছিল: তিনি জ্যাককে ফুটবল খেলতে নিষেধ করেছিলেন; তার নিষেধাজ্ঞা জ্যাক কতখানি অমান্য করল তাও ধরা সহজ হয়ে গেল।

এরপরও জ্যাক মাঠে ফুটবল খেললে পেরেকের নাল তার অবাধ্য হয়ে ক্ষয়ে যেত। বাড়ি ফিরে প্রতিদিন জ্যাককে নানির কাছে হাজিরা দিতে হতো। তখন কাসান্ড্রা, তার নানি, সাধারণত রান্নাঘরে কালো হাঁড়িপাতিলগুলোর ওপর তার কৃর্তত্ব ফলাতে ব্যস্ত থাকতেন। নাল পরানোর সময় ঘোড়ার পা যেমন ওপরের দিকে তোলা থাকে সেভাবে জ্যাক হাঁটু মুড়ে জুতার তলা ওপরের দিকে তুলে নানিকে দেখাত। অবশ্য বন্ধুদের ডাক এবং প্রিয় খেলার লোভ তাকে টানতই। তখন অসম্ভব সদ্গুণ অবলম্বন না করে বরং পাপকে ঢাকার চেষ্টাই করত সে: স্কুল থেকে ফেরার পথে খানিকটা সময় ব্যয় করে কাদামাটির ভেতর জুতার তলা ঘষে নিতো যাতে পেরেকের ক্ষয়ে যাওয়া মাথা না দেখা যায়। কখনও কখনও এই চেষ্টা সফলও হতো। কিন্তু এক সময় পেরেকের ক্ষয়ে যাওয়া মাথা বের হয়েই যেত, কিংবা খোদ জুতার তলাটাই নষ্ট হয়ে যেত, কিংবা সবচেয়ে ভয়াবহ ট্র্যাজিক বিষয়ও ঘটে যেত–খেলার সময় মাঠের মাটিতে কষে লাথি চালালে অথবা গাছপালা রক্ষা করার জন্য ব্যবহৃত লোহার বেষ্টনীতে লাথি মারলে জুতার নিচের তলা থেকে ওপরের তলা বিচ্ছিন্ন হয়ে যেত। সে রকম ঘটনার দিনে দড়ি কিংবা সুতা দিয়ে জুতা বেঁধে নিয়ে বাড়ি ফিরত জ্যাক।

ওইসব রাতে চামড়ার চাবুক ছিল অনিবার্য। কান্নারত জ্যাককে মা শুধু একটা সান্ত্বনাই দিতে পারতেন, জানিস তো জুতোগুলো কত দামি। আরেকটু সচেতন হতে পারিস না? মা কোনোদিন তার সন্তানদের গায়ে হাত তুলতেন না। পরের দিন জ্যাককে মোটা কাপড়ের তৈরি দড়ি দিয়ে বানানো তলাঅলা জুতা পরিয়ে জুতা মেরামতকারীর কাছে নিয়ে যাওয়া হতো। দুতিন দিন পর তার সেই জুতা ফেরত পেত সে, নতুন নাল পরানো অবস্থায়। আরেকবার তাকে পিচ্ছিল নড়বড়ে তলার ওপরে ভারসাম্য রক্ষার অনুশীলন করতে হতো।

(চলবে)

এসএ/

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

Header Ad

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কুশল বিনিময় করেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে তাদের এ কুশল বিনিময় হয়।

সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া পৌঁছালে উপস্থিত সবাই তাকে স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ও সরকারের উপদেষ্টা তার পাশে এসে দাঁড়ান এবং শারীরিক খোঁজখবর নেন। এ সময় খালেদা জিয়া তাদের অভিনন্দন জানান এবং দেশকে এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন।

এ সময় এই ৩ উপদেষ্টা বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে দোয়া চান এবং সরকারের সংস্কার কাজে তার সর্বাত্মক সহযোগিতা চান।

এদিকে সেনাকুঞ্জে গেলে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া এখানে এসেছেন। একযুগ তিনি আসার সুযোগ পাননি। আমরা গর্বিত এই সুযোগ দিতে পেরে। দীর্ঘদিনের অসুস্থতা সত্ত্বেও বিশেষ দিনে সবার সঙ্গে শরিক হওয়ার জন্য আপনাকে আবারও ধন্যবাদ। আপনার আশু রোগমুক্তি কামনা করছি।

Header Ad

দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম

ছবি: সংগৃহীত

আবারও স্বর্ণের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার ভরিতে ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা আজকেও ছিল এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩ হাজার ৬৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গয়নার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

স্বর্ণের দাম কমানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫৭৮ টাকায়। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫৮৬ টাকায়।

এর আগে, সবশেষ গত ১৯ নভেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় টানা চার দফা কমার পর ভরিতে ২ হাজার ৯৪০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।

এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩১ হাজার ১৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯২ হাজার ২৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছে গত ২০ নভেম্বর থেকে।

এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে ৫১ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ৩০ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ২১ বার।

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত