শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ৪৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান

বাব আজুন ছিল মূলত একটা সরু রাস্তা। বিশাল গোলাকার সব থামের উপর তৈরি খিলানগুলোর কারণে রাস্তাটা আরও সরু হয়ে গিয়েছিল। সে কারণে অন্য কোম্পানি চালিত ট্রলিগুলো কোনো রকমে চলতে পারত মাত্র। ওই ট্রলিগুলোই শহরের উপরের এলাকার সঙ্গে ওই এলাকাটার সংযোগ তৈরি করেছিল। গরমের দিনে মাথার উপরের ঘন নীলাকাশ রাস্তার উপরে যেন সীসার বাষ্প ঝরাত। অবশ্য খিলানের ছায়ার নিচে কিছুটা ঠাণ্ডা আবহাওয়া বিরাজ করত। বৃষ্টি-বাদলার দিনে গোটা রাস্তা চকচকে ভেজা পাথরের গভীর পরিখার আকার ধারণ করত।

খিলানগুলোর নিচে বসত সারি সারি দোকানপাট। পাইকারি টেক্সটাইলের দোকান, দোকানের চেহারায় থাকত গাঢ় রঙের প্রলেপ। ছাউনির নিচে দোকানের হালকা রঙের কাপড়ের স্তুপগুলো হালকা জ্বলজ্বল করত। মুদির দোকান থেকে লবঙ্গ এবং কফির সুবাস ছড়াত। ছোট ছোট দোকানগুলোতে আরবের লোকেরা তেল আর মধু চোয়ানো পেস্ট্রি বিক্রি করত। অন্ধকারের গভীরে বসানো ক্যাফেগুলোতে কফির পাত্রে তরল ঢালত তারা। সন্ধ্যার সময় ঝলমলে আলোর বাতিতে ভরে উঠত জায়গাটা। লোকজনের কলকাকলিতে ভরা জায়গাটাতে মানুষজন মেঝের ধূলোবালি মাড়িয়ে পানশালায় ঢুকত। সেখানে পাওয়া যেত গ্লাসভরা বর্ণিল পানীয়, তশতরিতে থাকত বিচিত্র রঙের ফুল, হেরিংমাছ, টুকরো করে কাটা শাক, জলপাই, ভাজা পোনামাছ, পেস্তাবাদাম ইত্যাদি। এরপর আরও সব দোকান ছিল। সেগুলোতে প্রাচ্যের অদ্ভূতদর্শন সব মনোহারি দ্রব্য বেচাকেনা হতো। জানালার পাশে ঘূর্ণায়মান তাকে পোস্টকার্ডের সঙ্গে লাগিয়ে বিক্রি করা হতো সেগুলো। ক্যাটকেটে উজ্জ্বল রঙের মুরীয় দোপাট্টাও বিক্রি হতো সেখানে।

বাজারগুলোর একটা ছিল খিলানগুলোর মাঝখানে। সেটা চালাত একটা মোটা লোক। সে সব সময় জানালার পেছনে, খিলানের ছায়ায় অথবা বিদ্যুতের আলোর নিচে বসে থাকত। চকচকে চোখের লোকটা স্থূল হলেও তার গায়ের রং ছিল পাথরের নিচে চাপা পড়া ঘাসের মতো কিংবা বড় গাছের পুরনো গোড়ার মতো ফ্যাকাশে ধরনের। তার চেহারার সবচেয়ে লক্ষণীয় দিক হলো, তার মাথাটা পুরোপুরি টাক। তার মাথার ওই চেহারার কারণে লিসের ছাত্ররা তার ছদ্মনাম দিয়েছিল ‘মাছিদের স্কেটিং মেঝে’ এবং ‘মশাদের সাইকেল দৌড়ের ট্র্যাক’।

তারা বলত, মশা-মাছিগুলো তার মাথার খুলির ফাঁকা ময়দানের উপরে দৌড়ের সময় উল্টো ঘুরতে গিয়ে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলত। সন্ধ্যার সময় ছাত্ররা তার দোকানের সামনে দিয়ে নকলপটু পাখিদের ঝাঁকের মতো এদিক ওদিক দ্রুত ছুটে যাওয়ার সময় তার ছদ্মনাম উচ্চারণ করতে করতে মশা-মাছিদের মতো জ্্্্্জ্্্্্জ্্জ্্্্্জ্্্জ্্্্্জ্্্্্জ্্্্্জ্্ শব্দ করত। লোকটা তাদের উদ্দেশে গালিগালাজ ঝাড়ত। মাঝে মধ্যে তাদেরকে ধাওয়া করার চেষ্টাও করত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ধরতে না পেরে রণে ভঙ্গ দিত। তারপর এক সময় লোকটা তাদের চিৎকার চেঁচামেচি আর উপহাসের বর্ষণের মুখে চুপ হয়ে গেলে এবং বাচ্চারা একদম তার মুখের উপর এসে উৎপাত করা পর্যন্ত কিছুই বলত না। তারপর এক সন্ধ্যায় কয়েকজন আরবলোক থামের আড়াল থেকে বের হয়ে এসে বাচ্চাদের ধাওয়া করে বসল। লোকটা সম্ভবত ওই লোকগুলোকে ভাড়া করে বাচ্চাদের দিকে লেলিয়ে দিয়েছিল। সেদিন জ্যাক এবং পিয়েরে শাস্তি থেকে রেহাই পেয়েছিল তাদের দ্রুত গতির কারণে। মাথার পেছনে একটা চাটি খেয়ে মুহূর্তখানেকের মধ্যে বিস্ময় কাটিয়ে উঠে ছুট লাগিয়েছিল জ্যাক। কিন্তু তাদের স্কুলের দুতিনজন বন্ধু ধরা পড়ে আচ্ছামতো পিটুনি খেয়েছিল। ছাত্ররা পরিকল্পনা করল, তারা দোকান লুটপাট করবে এবং মালিককে থেঁতলে দেবে। অবশ্য তারা তাদের কুপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেনি। তাদের শিকারকে বরং জ্বালাতন করাই ছেড়ে দিল তারা। দোকানের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তার অন্য পাশ দিয়ে দেবদূত হয়ে চলাফেরা করতে লাগল তারা।

জ্যাক একদিন তিক্তমুখে বলল, আমরা আসলে এমনিতেই ভড়কে গিয়েছিলাম।
পিয়েরে বলল, দোষ তো আসলে আমাদেরই ছিল।
জ্যাক বলল, দোষ আমাদের ছিল বলেই মারের ভয়ে সটকে পড়লাম।

অনেক দিন পরে যখন সে বুঝতে পেরেছে, মানুষ সত্যকে মেনে নেওয়ার ভান করে এবং বাধ্য না হলে হার মানে না তখন ওই ঘটনার কথা তার মনে পড়ে যায়। বাব আজুন পর্যন্ত যে রাস্তাটা চলে গেছে তার মাঝখানে রাস্তাটা বেশ চওড়া হয়ে গেছে এবং খিলানের একপাশে সেন্ট ভিক্টইরের গির্জার জন্য যেন জায়গা ছেড়ে দিয়েছে। ধ্বংস হয়ে যাওয়া একটা মসজিদের চত্বর জুড়ে ছিল গির্জাটা। গির্জাটাকে মনে হতো পূজা অর্পণের বিশেষ কোনো জায়গা। সব সময় ফুলের সমারোহ এবং সাদা রং করা বাইরের পাশটা বিচিত্র রকমের খোদাই শোভিত। বাচ্চারা পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় দেখত, ফুলের কারবারিরা খোলা ফুটপাথে দোকান সাজিয়ে বসেছে। মৌসুম অনুসারে তারা গোলাপফুল, শ্বেতদুর্বার ফুল, তারাফুল, কার্নেশন ইত্যাদি ফুল দিয়ে লম্বা টিনের কেনেস্তারা সাজিয়ে রেখেছে। সব সময় ফুলের উপরে পানি ছিটানোর কারণে কেনেস্তারাগুলোর গায়ে মরিচা পড়েছে। রাস্তার ওই একই পাশে একটা ছোট দোকান ছিল। সেখানে ফলের টুকরো, ডিম এবং তেলের মধ্যে তেলে ভাজা পিঠা বিক্রি করত আরবের লোকেরা। দোকানের পরিসর খুব ছোট ছিল। এক সঙ্গে তিন জন মানুষও ধারণ করার মতো নয়। এক কোণায় একটা চুলা তৈরি করা হয়েছিল। চুলার চারপাশে নীল এবং সাদা সব মাটির পাত্র সাজানো ছিল। মাঝখানে জ্বলত টগবগে ফুটন্ত তেলের বেসিন। চুলার পাাশে বাবু মেরে বসে কাজ করত একজন অদ্ভূতদর্শন লোক, পরনে আরব দেশের লোকদের মতোই পাজামা। গরমের দিনে এবং দিনের বেলার তাপের সময় গা অর্ধেক খোলা। অন্য সময় ইউরোপীয় জ্যাকেট পরত। গলার কাছে সেপটিপিন দিয়ে আটকানো। তার ন্যাড়া মাথা এবং পাতলা মুখের কারণে তাকে মনে হতো চশমা-ছাড়া গান্ধী। হাতে একটা চামচের মতো লাল ছাকনি নিয়ে সে ফুটন্ত তেলের মধ্যে ফলের টুকরোগুলোর বাদামি হয়ে যাওয়া পরোখ করত। পিঠার বাইরের পাশ সোনালি এবং ভেতরের লেই আলু ভাজার মতো স্বচ্ছ এবং মচমচে হয়ে গেলে সে ছাকনি দিয়ে দক্ষতার সঙ্গে পিঠাগুলো তেলের বাইরে তুলে এনে বেসিনের উপরে ছাকনি তিন চার বার ঝাঁকুনি দিয়ে কাচঘেরা একটা তাকে সারিবদ্ধ করে রাখত। তাকের একপাশে মধু জড়ানো লম্বা পিঠা রাখত। আরেক পাশে চ্যাপটা গোলাকার সাধারণ পিঠা রাখত। পিয়েরে এবং জ্যাক এই পিঠার জন্য পাগল ছিল। কালে ভদ্রে তাদের কারো কাছে সামান্য পয়সা থাকলে দোকানের সামনে একটুখানি থেমে সাধারণ পিঠাগুলোর দু-একটা কিনে নিত। দোকানি যে কাগজে করে পিঠা ধরিয়ে দিত সেটা তেলে ভিজে খুব তাড়াতাড়িই স্বচ্ছ হয়ে উঠত। কখনো লম্বা পিঠাও নিয়েছে তারা। তখন দোকানি চুলার পাশে একটা পাত্রের ভেতর রাখা মধুর মধ্যে পিঠাগুলো চুবিয়ে দিত। পিঠার ভাঙা টুকরোগুলো মধুর পাত্রে ভাসতে থাকত। এই অপূর্ব স্বাদের পিঠা হাতে লিসের দিকে দৌড়ে যেতে যেতে পিঠায় কামড় দিতে থাকত তারা। দৌড়ানোর সময় তাদের মাথা এবং মুখ থাকত সামনের দিকে ঝুঁকে যাতে পিঠার রস পড়ে জামা কাপড় নষ্ট না হয়ে যায়। স্কুল খোলার পর পরই প্রতি বছর সেইন্ট ভিক্টইরের গির্জার সামনে আবাবিল পাখিদের বিদায় পর্ব অনুষ্ঠিত হতো। বিদ্যুতের তার কিংবা উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তার ব্যবহার করা হতো ট্রলিবাস চালানোর জন্য। তবে বাস চলা বন্ধ থাকার সময়ও রাস্তাটা যেখানে প্রশস্ত হয়েছে সেখানকার তার নামানো হতো না।

আবাবিল পাখিগুলো পানির পাশের বীথিকার উপর দিয়ে উড়ে এসে লিসের সামনের চত্বরে কিংবা দারিদ্র পীড়িত এলাকার আকাশে চলে আসত। কখনো কখনো ডুমুর ফলের উপর কামড় দিতে দিতে কান ঝালাপালা করা কিচির মিচির শব্দে চারপাশ ভরিয়ে তুলত। দলের কোনো কোনো পাখির মুখে থাকত উড়ন্ত ময়লার টুকরো, কোনোটার মুখে জৈব সারের দলা থাকত। ওখানে কখনো তুষার পড়ত না। গরমের মাসগুলো শেষ হলে শীতের ভাবটা একটু একটু বোঝা যেত। যা হোক, শীতের শুরুতে পাখিগুলো একটা একটা করে রিউ বাব আজুনের করিডোরে এসে হাজির হতো। ট্রলিবাস লক্ষ করে নিচের দিকে উড়ে আসত। তারপর দিক পরিবর্তন করে আবার বাড়ি ঘরের উপরের আকাশের দিকে উড়ে যেত। একবার হঠাৎ করে হাজারে হাজারে আবাবিল পাখি সেইন্ট ভিক্টইরের চত্বরে এবং ঘরবাড়ির উপরে এসে জমায়েত হতে লাগল। একটার সঙ্গে আরেকটার গা ঘেঁষে বসা, সাদা আর কালো মেশানো রঙের ঘাড়ের উপরের মাথা দোলানো, লেজ নাচানো, নতুন কারো জন্য জায়গা করে দেওয়ার জন্য আস্তে আস্তে পা সরানো ইত্যাদি তাদের সাধারণ দৃশ্যের মধ্যে পড়তে লাগল। ফুটপাত ঢেকে গেল তাদের ছাইরঙা বিষ্ঠায়। সবগুলো একই সুরে কিচির মিচির করত। মাঝে মধ্যে হঠাৎ বিরতি দিত কককক শব্দে। মনে হতো, তাদের মধ্যে কোনো গোপন কথাবার্তা চলছে। সারাটা সকাল জুড়ে চলত এরকম।

বেলা বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কান ঝালাপালা করে দিত তাদের কলরব। সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের কলরব বাড়তেই থাকত। তখন ছেলেরা বাড়ি ফেরার ট্রলিবাস ধরার জন্য বের হতো। সে সময় হঠাৎ করে সব কলরব থেমে যেত কোনো এক আজানা নির্দেশে। হাজার হাজার ঘুমন্ত পাখি তাদের ছোট মাথাগুলো নিচু করে সাদা কালো লেজ দোলাত। আরও দুতিন দিন সেহেল কিংবা তার চেয়েও দূরবর্তী জায়গা থেকে উড়ে আসত পালকওয়ালা দল বেধে। আগে যারা এসেছে তাদের মধ্যে জায়গা করে নিত নতুনগুলো। এলাকার রাস্তার দুপাশের সব বাড়ি ঘরের কার্নিসে এসে জড়ো হতো পাখিগুলো। পথচারীদের কানে তালা লাগিয়ে দিত উচ্চ কলরবে। তারপর হঠাৎ কোনো সকালে দেখা যেত, রাস্তার আশপাশের এলাকা পুরোপুরি ফাঁকা। ভোর হওয়ার আগে পাখিগুলো দক্ষিণের দিকে কোথাও উড়ে গেছে। বাচ্চাদের জন্য সে সময়টা ছিল শীতের শুরু। কারণ সন্ধ্যার ঊষ্ণ আকাশে পাখিদের তীক্ষ্ণ কলরব ছাড়া কোনো গ্রীষ্ম তারা দেখেনি।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

আরএ/

Header Ad

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কুশল বিনিময় করেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে তাদের এ কুশল বিনিময় হয়।

সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া পৌঁছালে উপস্থিত সবাই তাকে স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ও সরকারের উপদেষ্টা তার পাশে এসে দাঁড়ান এবং শারীরিক খোঁজখবর নেন। এ সময় খালেদা জিয়া তাদের অভিনন্দন জানান এবং দেশকে এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন।

এ সময় এই ৩ উপদেষ্টা বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে দোয়া চান এবং সরকারের সংস্কার কাজে তার সর্বাত্মক সহযোগিতা চান।

এদিকে সেনাকুঞ্জে গেলে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া এখানে এসেছেন। একযুগ তিনি আসার সুযোগ পাননি। আমরা গর্বিত এই সুযোগ দিতে পেরে। দীর্ঘদিনের অসুস্থতা সত্ত্বেও বিশেষ দিনে সবার সঙ্গে শরিক হওয়ার জন্য আপনাকে আবারও ধন্যবাদ। আপনার আশু রোগমুক্তি কামনা করছি।

Header Ad

দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম

ছবি: সংগৃহীত

আবারও স্বর্ণের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার ভরিতে ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা আজকেও ছিল এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩ হাজার ৬৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গয়নার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

স্বর্ণের দাম কমানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫৭৮ টাকায়। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫৮৬ টাকায়।

এর আগে, সবশেষ গত ১৯ নভেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় টানা চার দফা কমার পর ভরিতে ২ হাজার ৯৪০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।

এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩১ হাজার ১৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯২ হাজার ২৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছে গত ২০ নভেম্বর থেকে।

এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে ৫১ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ৩০ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ২১ বার।

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত