শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ৪৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান

বাব আজুন ছিল মূলত একটা সরু রাস্তা। বিশাল গোলাকার সব থামের উপর তৈরি খিলানগুলোর কারণে রাস্তাটা আরও সরু হয়ে গিয়েছিল। সে কারণে অন্য কোম্পানি চালিত ট্রলিগুলো কোনো রকমে চলতে পারত মাত্র। ওই ট্রলিগুলোই শহরের উপরের এলাকার সঙ্গে ওই এলাকাটার সংযোগ তৈরি করেছিল। গরমের দিনে মাথার উপরের ঘন নীলাকাশ রাস্তার উপরে যেন সীসার বাষ্প ঝরাত। অবশ্য খিলানের ছায়ার নিচে কিছুটা ঠাণ্ডা আবহাওয়া বিরাজ করত। বৃষ্টি-বাদলার দিনে গোটা রাস্তা চকচকে ভেজা পাথরের গভীর পরিখার আকার ধারণ করত।

খিলানগুলোর নিচে বসত সারি সারি দোকানপাট। পাইকারি টেক্সটাইলের দোকান, দোকানের চেহারায় থাকত গাঢ় রঙের প্রলেপ। ছাউনির নিচে দোকানের হালকা রঙের কাপড়ের স্তুপগুলো হালকা জ্বলজ্বল করত। মুদির দোকান থেকে লবঙ্গ এবং কফির সুবাস ছড়াত। ছোট ছোট দোকানগুলোতে আরবের লোকেরা তেল আর মধু চোয়ানো পেস্ট্রি বিক্রি করত। অন্ধকারের গভীরে বসানো ক্যাফেগুলোতে কফির পাত্রে তরল ঢালত তারা। সন্ধ্যার সময় ঝলমলে আলোর বাতিতে ভরে উঠত জায়গাটা। লোকজনের কলকাকলিতে ভরা জায়গাটাতে মানুষজন মেঝের ধূলোবালি মাড়িয়ে পানশালায় ঢুকত। সেখানে পাওয়া যেত গ্লাসভরা বর্ণিল পানীয়, তশতরিতে থাকত বিচিত্র রঙের ফুল, হেরিংমাছ, টুকরো করে কাটা শাক, জলপাই, ভাজা পোনামাছ, পেস্তাবাদাম ইত্যাদি। এরপর আরও সব দোকান ছিল। সেগুলোতে প্রাচ্যের অদ্ভূতদর্শন সব মনোহারি দ্রব্য বেচাকেনা হতো। জানালার পাশে ঘূর্ণায়মান তাকে পোস্টকার্ডের সঙ্গে লাগিয়ে বিক্রি করা হতো সেগুলো। ক্যাটকেটে উজ্জ্বল রঙের মুরীয় দোপাট্টাও বিক্রি হতো সেখানে।

বাজারগুলোর একটা ছিল খিলানগুলোর মাঝখানে। সেটা চালাত একটা মোটা লোক। সে সব সময় জানালার পেছনে, খিলানের ছায়ায় অথবা বিদ্যুতের আলোর নিচে বসে থাকত। চকচকে চোখের লোকটা স্থূল হলেও তার গায়ের রং ছিল পাথরের নিচে চাপা পড়া ঘাসের মতো কিংবা বড় গাছের পুরনো গোড়ার মতো ফ্যাকাশে ধরনের। তার চেহারার সবচেয়ে লক্ষণীয় দিক হলো, তার মাথাটা পুরোপুরি টাক। তার মাথার ওই চেহারার কারণে লিসের ছাত্ররা তার ছদ্মনাম দিয়েছিল ‘মাছিদের স্কেটিং মেঝে’ এবং ‘মশাদের সাইকেল দৌড়ের ট্র্যাক’।

তারা বলত, মশা-মাছিগুলো তার মাথার খুলির ফাঁকা ময়দানের উপরে দৌড়ের সময় উল্টো ঘুরতে গিয়ে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলত। সন্ধ্যার সময় ছাত্ররা তার দোকানের সামনে দিয়ে নকলপটু পাখিদের ঝাঁকের মতো এদিক ওদিক দ্রুত ছুটে যাওয়ার সময় তার ছদ্মনাম উচ্চারণ করতে করতে মশা-মাছিদের মতো জ্্্্্জ্্্্্জ্্জ্্্্্জ্্্জ্্্্্জ্্্্্জ্্্্্জ্্ শব্দ করত। লোকটা তাদের উদ্দেশে গালিগালাজ ঝাড়ত। মাঝে মধ্যে তাদেরকে ধাওয়া করার চেষ্টাও করত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ধরতে না পেরে রণে ভঙ্গ দিত। তারপর এক সময় লোকটা তাদের চিৎকার চেঁচামেচি আর উপহাসের বর্ষণের মুখে চুপ হয়ে গেলে এবং বাচ্চারা একদম তার মুখের উপর এসে উৎপাত করা পর্যন্ত কিছুই বলত না। তারপর এক সন্ধ্যায় কয়েকজন আরবলোক থামের আড়াল থেকে বের হয়ে এসে বাচ্চাদের ধাওয়া করে বসল। লোকটা সম্ভবত ওই লোকগুলোকে ভাড়া করে বাচ্চাদের দিকে লেলিয়ে দিয়েছিল। সেদিন জ্যাক এবং পিয়েরে শাস্তি থেকে রেহাই পেয়েছিল তাদের দ্রুত গতির কারণে। মাথার পেছনে একটা চাটি খেয়ে মুহূর্তখানেকের মধ্যে বিস্ময় কাটিয়ে উঠে ছুট লাগিয়েছিল জ্যাক। কিন্তু তাদের স্কুলের দুতিনজন বন্ধু ধরা পড়ে আচ্ছামতো পিটুনি খেয়েছিল। ছাত্ররা পরিকল্পনা করল, তারা দোকান লুটপাট করবে এবং মালিককে থেঁতলে দেবে। অবশ্য তারা তাদের কুপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেনি। তাদের শিকারকে বরং জ্বালাতন করাই ছেড়ে দিল তারা। দোকানের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তার অন্য পাশ দিয়ে দেবদূত হয়ে চলাফেরা করতে লাগল তারা।

জ্যাক একদিন তিক্তমুখে বলল, আমরা আসলে এমনিতেই ভড়কে গিয়েছিলাম।
পিয়েরে বলল, দোষ তো আসলে আমাদেরই ছিল।
জ্যাক বলল, দোষ আমাদের ছিল বলেই মারের ভয়ে সটকে পড়লাম।

অনেক দিন পরে যখন সে বুঝতে পেরেছে, মানুষ সত্যকে মেনে নেওয়ার ভান করে এবং বাধ্য না হলে হার মানে না তখন ওই ঘটনার কথা তার মনে পড়ে যায়। বাব আজুন পর্যন্ত যে রাস্তাটা চলে গেছে তার মাঝখানে রাস্তাটা বেশ চওড়া হয়ে গেছে এবং খিলানের একপাশে সেন্ট ভিক্টইরের গির্জার জন্য যেন জায়গা ছেড়ে দিয়েছে। ধ্বংস হয়ে যাওয়া একটা মসজিদের চত্বর জুড়ে ছিল গির্জাটা। গির্জাটাকে মনে হতো পূজা অর্পণের বিশেষ কোনো জায়গা। সব সময় ফুলের সমারোহ এবং সাদা রং করা বাইরের পাশটা বিচিত্র রকমের খোদাই শোভিত। বাচ্চারা পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় দেখত, ফুলের কারবারিরা খোলা ফুটপাথে দোকান সাজিয়ে বসেছে। মৌসুম অনুসারে তারা গোলাপফুল, শ্বেতদুর্বার ফুল, তারাফুল, কার্নেশন ইত্যাদি ফুল দিয়ে লম্বা টিনের কেনেস্তারা সাজিয়ে রেখেছে। সব সময় ফুলের উপরে পানি ছিটানোর কারণে কেনেস্তারাগুলোর গায়ে মরিচা পড়েছে। রাস্তার ওই একই পাশে একটা ছোট দোকান ছিল। সেখানে ফলের টুকরো, ডিম এবং তেলের মধ্যে তেলে ভাজা পিঠা বিক্রি করত আরবের লোকেরা। দোকানের পরিসর খুব ছোট ছিল। এক সঙ্গে তিন জন মানুষও ধারণ করার মতো নয়। এক কোণায় একটা চুলা তৈরি করা হয়েছিল। চুলার চারপাশে নীল এবং সাদা সব মাটির পাত্র সাজানো ছিল। মাঝখানে জ্বলত টগবগে ফুটন্ত তেলের বেসিন। চুলার পাাশে বাবু মেরে বসে কাজ করত একজন অদ্ভূতদর্শন লোক, পরনে আরব দেশের লোকদের মতোই পাজামা। গরমের দিনে এবং দিনের বেলার তাপের সময় গা অর্ধেক খোলা। অন্য সময় ইউরোপীয় জ্যাকেট পরত। গলার কাছে সেপটিপিন দিয়ে আটকানো। তার ন্যাড়া মাথা এবং পাতলা মুখের কারণে তাকে মনে হতো চশমা-ছাড়া গান্ধী। হাতে একটা চামচের মতো লাল ছাকনি নিয়ে সে ফুটন্ত তেলের মধ্যে ফলের টুকরোগুলোর বাদামি হয়ে যাওয়া পরোখ করত। পিঠার বাইরের পাশ সোনালি এবং ভেতরের লেই আলু ভাজার মতো স্বচ্ছ এবং মচমচে হয়ে গেলে সে ছাকনি দিয়ে দক্ষতার সঙ্গে পিঠাগুলো তেলের বাইরে তুলে এনে বেসিনের উপরে ছাকনি তিন চার বার ঝাঁকুনি দিয়ে কাচঘেরা একটা তাকে সারিবদ্ধ করে রাখত। তাকের একপাশে মধু জড়ানো লম্বা পিঠা রাখত। আরেক পাশে চ্যাপটা গোলাকার সাধারণ পিঠা রাখত। পিয়েরে এবং জ্যাক এই পিঠার জন্য পাগল ছিল। কালে ভদ্রে তাদের কারো কাছে সামান্য পয়সা থাকলে দোকানের সামনে একটুখানি থেমে সাধারণ পিঠাগুলোর দু-একটা কিনে নিত। দোকানি যে কাগজে করে পিঠা ধরিয়ে দিত সেটা তেলে ভিজে খুব তাড়াতাড়িই স্বচ্ছ হয়ে উঠত। কখনো লম্বা পিঠাও নিয়েছে তারা। তখন দোকানি চুলার পাশে একটা পাত্রের ভেতর রাখা মধুর মধ্যে পিঠাগুলো চুবিয়ে দিত। পিঠার ভাঙা টুকরোগুলো মধুর পাত্রে ভাসতে থাকত। এই অপূর্ব স্বাদের পিঠা হাতে লিসের দিকে দৌড়ে যেতে যেতে পিঠায় কামড় দিতে থাকত তারা। দৌড়ানোর সময় তাদের মাথা এবং মুখ থাকত সামনের দিকে ঝুঁকে যাতে পিঠার রস পড়ে জামা কাপড় নষ্ট না হয়ে যায়। স্কুল খোলার পর পরই প্রতি বছর সেইন্ট ভিক্টইরের গির্জার সামনে আবাবিল পাখিদের বিদায় পর্ব অনুষ্ঠিত হতো। বিদ্যুতের তার কিংবা উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তার ব্যবহার করা হতো ট্রলিবাস চালানোর জন্য। তবে বাস চলা বন্ধ থাকার সময়ও রাস্তাটা যেখানে প্রশস্ত হয়েছে সেখানকার তার নামানো হতো না।

আবাবিল পাখিগুলো পানির পাশের বীথিকার উপর দিয়ে উড়ে এসে লিসের সামনের চত্বরে কিংবা দারিদ্র পীড়িত এলাকার আকাশে চলে আসত। কখনো কখনো ডুমুর ফলের উপর কামড় দিতে দিতে কান ঝালাপালা করা কিচির মিচির শব্দে চারপাশ ভরিয়ে তুলত। দলের কোনো কোনো পাখির মুখে থাকত উড়ন্ত ময়লার টুকরো, কোনোটার মুখে জৈব সারের দলা থাকত। ওখানে কখনো তুষার পড়ত না। গরমের মাসগুলো শেষ হলে শীতের ভাবটা একটু একটু বোঝা যেত। যা হোক, শীতের শুরুতে পাখিগুলো একটা একটা করে রিউ বাব আজুনের করিডোরে এসে হাজির হতো। ট্রলিবাস লক্ষ করে নিচের দিকে উড়ে আসত। তারপর দিক পরিবর্তন করে আবার বাড়ি ঘরের উপরের আকাশের দিকে উড়ে যেত। একবার হঠাৎ করে হাজারে হাজারে আবাবিল পাখি সেইন্ট ভিক্টইরের চত্বরে এবং ঘরবাড়ির উপরে এসে জমায়েত হতে লাগল। একটার সঙ্গে আরেকটার গা ঘেঁষে বসা, সাদা আর কালো মেশানো রঙের ঘাড়ের উপরের মাথা দোলানো, লেজ নাচানো, নতুন কারো জন্য জায়গা করে দেওয়ার জন্য আস্তে আস্তে পা সরানো ইত্যাদি তাদের সাধারণ দৃশ্যের মধ্যে পড়তে লাগল। ফুটপাত ঢেকে গেল তাদের ছাইরঙা বিষ্ঠায়। সবগুলো একই সুরে কিচির মিচির করত। মাঝে মধ্যে হঠাৎ বিরতি দিত কককক শব্দে। মনে হতো, তাদের মধ্যে কোনো গোপন কথাবার্তা চলছে। সারাটা সকাল জুড়ে চলত এরকম।

বেলা বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কান ঝালাপালা করে দিত তাদের কলরব। সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের কলরব বাড়তেই থাকত। তখন ছেলেরা বাড়ি ফেরার ট্রলিবাস ধরার জন্য বের হতো। সে সময় হঠাৎ করে সব কলরব থেমে যেত কোনো এক আজানা নির্দেশে। হাজার হাজার ঘুমন্ত পাখি তাদের ছোট মাথাগুলো নিচু করে সাদা কালো লেজ দোলাত। আরও দুতিন দিন সেহেল কিংবা তার চেয়েও দূরবর্তী জায়গা থেকে উড়ে আসত পালকওয়ালা দল বেধে। আগে যারা এসেছে তাদের মধ্যে জায়গা করে নিত নতুনগুলো। এলাকার রাস্তার দুপাশের সব বাড়ি ঘরের কার্নিসে এসে জড়ো হতো পাখিগুলো। পথচারীদের কানে তালা লাগিয়ে দিত উচ্চ কলরবে। তারপর হঠাৎ কোনো সকালে দেখা যেত, রাস্তার আশপাশের এলাকা পুরোপুরি ফাঁকা। ভোর হওয়ার আগে পাখিগুলো দক্ষিণের দিকে কোথাও উড়ে গেছে। বাচ্চাদের জন্য সে সময়টা ছিল শীতের শুরু। কারণ সন্ধ্যার ঊষ্ণ আকাশে পাখিদের তীক্ষ্ণ কলরব ছাড়া কোনো গ্রীষ্ম তারা দেখেনি।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

আরএ/

Header Ad
Header Ad

নাটকীয়তা শেষে রাতে ফাইনালে মুখোমুখি রিয়াল-বার্সা

ছবি: সংগৃহীত

রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার মুখোমুখি লড়াই মানেই ফুটবল দুনিয়ায় বাড়তি উত্তেজনা। স্প্যানিশ ফুটবলের এই দুই মহারথীর লড়াই কেবল মাঠের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এতে মিশে আছে স্পেন ও কাতালুনিয়ার জাতিসত্ত্বার লড়াই এবং রক্তাক্ত গৃহযুদ্ধের ইতিহাসও।

এবারের কোপা দেল রে ফাইনালে (শনিবার দিবাগত রাত ২টা, বাংলাদেশ সময়) আবার মুখোমুখি হচ্ছে রিয়াল ও বার্সা। তবে এবারের লড়াইয়ে যোগ হয়েছে ভিন্ন মাত্রা। রেফারিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে রিয়াল মাদ্রিদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে অস্থিরতা। সেভিয়ায় ফাইনালের আগে নির্ধারিত অনুশীলন করেনি রিয়াল, সংবাদ সম্মেলনেও আসেননি কোচ ও খেলোয়াড়রা। এমনকি দুই ক্লাবের কর্মকর্তাদের আনুষ্ঠানিক নৈশভোজেও থাকছেন না রিয়াল প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ। গুঞ্জন উঠেছিল, রিয়াল হয়তো ফাইনাল বয়কটও করতে পারে। তবে শেষ পর্যন্ত ক্লাব কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা খেলবে।

এদিকে, বার্সেলোনার সামনে রয়েছে ট্রেবল জয়ের স্বপ্ন টিকিয়ে রাখার চ্যালেঞ্জ। লা লিগায় শীর্ষে থাকা বার্সা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালেও জায়গা করে নিয়েছে। কোপা দেল রে শিরোপা তাদের ট্রেবল যাত্রার প্রথম ধাপ হতে পারে।

 

ছবি: সংগৃহীত

বার্সার জন্য দুঃসংবাদ, ইনজুরির কারণে দলের নির্ভরযোগ্য স্ট্রাইকার রবার্ট লেভানডফস্কি এই ফাইনালে খেলতে পারবেন না। তার জায়গায় শুরুতে দেখা যেতে পারে ফেরান তোরেসকে। তবে দলের বাকিরা সুস্থ ও প্রস্তুত রয়েছেন। লিগের শেষ ম্যাচে অধিকাংশ মূল খেলোয়াড় বিশ্রামে থাকায় বার্সেলোনা কিছুটা সতেজ ভাবেই নামবে মাঠে।

রিয়াল মাদ্রিদেও রয়েছে ইনজুরি সমস্যা। দলের ফরাসি তারকা কিলিয়ান এমবাপে চোটে পড়েছিলেন আর্সেনালের বিপক্ষে ম্যাচে। শেষ মুহূর্তে তার ফিটনেস দেখে মাঠে নামানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে ডিফেন্ডার ফার্লান্দ মেন্ডি ফাইনালে থাকছেন না, এটা নিশ্চিত।

এখন পর্যন্ত সামগ্রিক এল ক্লাসিকোতে রিয়াল মাদ্রিদ এগিয়ে—১০৫ জয়। বার্সেলোনা জয় পেয়েছে ১০২ ম্যাচে। তবে কোপা দেল রে’র ইতিহাসে এগিয়ে আছে বার্সা। ৩৭ দেখায় বার্সা জিতেছে ১৬ ম্যাচ, রিয়াল ১৩টি। ৮ ম্যাচ ছিল ড্র।

তবে কোপা দেল রে’র ফাইনালে ৭ বার এল ক্লাসিকো অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে রিয়াল জিতেছে ৪ বার এবং বার্সা ৩ বার।

চলতি মৌসুমে দুই দলের দুই দেখায় দুটিতেই বার্সেলোনা জয়ী হয়েছে—লা লিগায় ৪-০ এবং সুপারকোপা দে এস্পানার ফাইনালে ৫-২ ব্যবধানে।

 

স্টেডিয়াম: দে লা কার্তুহা, সেভিল
সময়: বাংলাদেশ সময় শনিবার দিবাগত রাত ২টা

 

Header Ad
Header Ad

মাদকাসক্ত ছেলেকে ত্যাজ্য ঘোষণা করলেন বাবা

ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার মুরাদনগরে নাঈম সরকার (১৯) নামের এক যুবককে মাদকাসক্তির কারণে ত্যাজ্য ঘোষণা করেছেন তার বাবা মফিজুল ইসলাম। ছেলের মাদকাসক্তি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে তিনি এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন।

মফিজুল ইসলাম উপজেলার কোম্পানীগঞ্জের নগরপাড় এলাকার বাসিন্দা। তিনি বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) কুমিল্লা নোটারী পাবলিক কার্যালয়ে এক হলফনামার মাধ্যমে ছেলে নাঈমের সঙ্গে পারিবারিক, সামাজিক ও আর্থিক সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করেন।

হলফনামায় মফিজুল উল্লেখ করেন, নাঈম একাদশ শ্রেণির ছাত্র হলেও দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত। সে মদ, গাঁজা, ইয়াবাসহ বিভিন্ন নেশাজাত দ্রব্যে আসক্ত হয়ে পড়েছে। এতে পরিবারে প্রতিনিয়ত অশান্তি সৃষ্টি হচ্ছিল। গভীর রাতে বাড়ি ফেরা, মা-বাবার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা এবং নানা অনৈতিক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়েছিল নাঈম। পরিবারের মান-মর্যাদা রক্ষার স্বার্থে তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে মফিজুল ইসলাম বলেন, "সন্তানের এমন বিপথগামী আচরণে আমি অত্যন্ত মর্মাহত। বহু চেষ্টা করেও তাকে সঠিক পথে ফেরাতে ব্যর্থ হয়েছি। অবশেষে পরিবার ও সমাজের সম্মান রক্ষার্থে তার সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করতে বাধ্য হয়েছি।"

Header Ad
Header Ad

গরমে লোডশেডিং নিয়ে সুখবর দিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। ছবি: সংগৃহীত

দেশজুড়ে ক্রমাগত গরম বাড়ছে। সামনে তাপমাত্রা আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে লোডশেডিং ও ভোগান্তি বেড়ে যাওয়ার শঙ্কায় রয়েছে সাধারণ মানুষ। তবে এ নিয়ে আশার খবর দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

তিনি বলেন, "এবারের গরমে লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। আমরা সীমিত পর্যায়ে তা নিয়ন্ত্রণে রাখার পরিকল্পনা নিয়েছি। আমাদের প্রজেকশনে ১৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য রয়েছে। আশা করছি, অনেকটাই ম্যানেজ করতে পারবো।"

শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনের বিজয় হলে ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টারস বাংলাদেশ (এফইআরবি) আয়োজিত 'জ্বালানি সংকট উত্তরণের পথ' শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য রাখার সময় তিনি এসব কথা বলেন।

সেমিনারে উপদেষ্টা আরও জানান, লোডশেডিংয়ের ক্ষেত্রে শহর ও গ্রামের মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করা হবে। জ্বালানি আমদানি করে বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল রাখতে হবে। এলএনজি আমদানির ক্ষেত্রে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপে (পিপিপি) যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

সরকারের মেয়াদ স্বল্প হওয়ায় কাজের সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, "জ্বালানির ক্ষেত্রে যেকোনো কাজ সম্পন্ন করতে সময় লাগে। আমরা এমন কিছু হাতে নিচ্ছি না, যা সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে বকেয়া পরিশোধে। বিল পরিশোধ না করলে কোনো দেশ ব্যবসা করবে না।"

তিনি আরও জানান, আগামী দুই মাসের মধ্যে সিস্টেম লস ৫০ শতাংশ কমানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। লাইন লিকেজ ও গ্যাস চুরির বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন প্রকল্পে অপ্রয়োজনীয় ব্যয়ও কমিয়ে আনা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "আগামী বছর আর কোনো বকেয়া থাকবে না, শুধুমাত্র কারেন্ট পেমেন্ট দিতে হবে। ভর্তুকি বাড়বে না, বরং কমবে। আমরা যে সংকটের গহ্বরে পড়েছিলাম, সেখান থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছি।"

সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের বিষয়ে উপদেষ্টা জানান, বিট নিলামে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত অনুমোদন শেষে পুনরায় রি-টেন্ডার করা হবে বলেও তিনি আশ্বাস দেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

নাটকীয়তা শেষে রাতে ফাইনালে মুখোমুখি রিয়াল-বার্সা
মাদকাসক্ত ছেলেকে ত্যাজ্য ঘোষণা করলেন বাবা
গরমে লোডশেডিং নিয়ে সুখবর দিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা
পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের ক্রিকেটীয় সম্পর্ক ছিন্ন করা উচিত: সৌরভ গাঙ্গুলি
র‍্যাফেল ড্রতে ৯ কোটি টাকা জিতলেন দুই প্রবাসী বাংলাদেশি
৬২ জন পুলিশ সদস্য পাচ্ছেন বিপিএম ও পিপিএম পদক
সিন্ধুতে হয় পানি, না হয় ভারতীয়দের রক্ত বইবে: বিলাওয়াল ভুট্টো
অন্য নারীতে মজেছেন সৃজিত! মিথিলা কোথায়?
৪ মাসে কুরআনের হাফেজ হলেন ১০ বছরের অটিস্টিক শিশু আহমাদ
রাষ্ট্র সংস্কারের যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, তা যেন বেহাত না হয়: আলী রীয়াজ
১৪ ব্যাংকে ২৩৮ কোটি টাকা স্থানান্তর, যা বললেন বিসিবি সভাপতি
কাশ্মীর সীমান্তে ফের গোলাগুলি, মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তান সেনা
বাইরে থেকে ফিরেই ঠান্ডা গোসল? সাবধান! এই অভ্যাস ডেকে আনতে পারে বিপদ
কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তান-ভারত পাল্টাপাল্টি উত্তেজনা নিয়ে যা বললেন ট্রাম্প
রাঙামাটিতে সিএনজি-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ৫
রেফারির বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে রিয়াল, ফাইনাল ম্যাচ বয়কটের হুমকি
আইন উপদেষ্টাকে জড়িয়ে ভারতের গণমাধ্যমে মিথ্যা প্রতিবেদন, মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি
নিজ দেশেই বিমান হামলা চালালো ভারত, ‘অসাবধানতা’ বলছে বিমান বাহিনী
গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত আরও ৮৪ ফিলিস্তিনি
আইনি নোটিশ প্রসঙ্গে যা বললেন ডা. তাসনিম জারা