কাশ্মীর সীমান্তে ফের গোলাগুলি, মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তান সেনা

ছবি: সংগৃহীত
কাশ্মীর সীমান্তে আবারও মুখোমুখি হলো ভারত ও পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাতে সংঘর্ষে জড়ায় দুই দেশের সেনারা। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি ও টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, পাকিস্তান প্রথমে অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘন করে গুলি ছোড়ে, এর পাল্টা জবাব দেয় ভারতীয় বাহিনী।
সেনাবাহিনী সূত্র জানিয়েছে, কাশ্মীর ছাড়াও লাদাখ সীমান্তে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। এর আগের রাতেও একই ধরনের গোলাগুলির ঘটনা ঘটে, যা চলমান উত্তেজনাকে আরও উসকে দিয়েছে।
এই অবস্থায় দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিকভাবে সমাধানের আহ্বান জানাতে এগিয়ে এসেছে আন্তর্জাতিক মহল। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ বিষয়ে বলেন, "কাশ্মীরের সংঘাত শতাব্দীপ্রাচীন। আমি ভারত ও পাকিস্তানের দুই পক্ষকেই চিনি। তারা নিজেরাই কোনো না কোনোভাবে এই সমস্যার সমাধান করবে।"
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে, তারা কাশ্মীর পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে, যদিও এ বিষয়ে সরাসরি কোনো অবস্থান নেয়নি। ব্রিটিশ সরকারও ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে নাগরিকদের ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিয়েছে।
এদিকে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও তীব্র হয়েছে সিন্ধু পানি চুক্তি ঘিরে। ভারতের জলশক্তিমন্ত্রী সিআর পাতিল দিল্লিতে অমিত শাহর বাসভবনে জরুরি বৈঠক শেষে জানান, পাকিস্তানকে সিন্ধুর এক ফোঁটা পানিও দেয়া হবে না—এমন পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত।
পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ভারতের এমন পদক্ষেপ যুদ্ধের প্ররোচনার সমতুল্য হবে এবং এর জন্য জবাবদিহি করতে হবে।
উত্তেজনার মধ্যে মধ্যস্থতার আগ্রহ জানিয়েছে ইরানও। দেশটির উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি জানিয়েছেন, তেহরান চায় দুই দেশের মধ্যে সংকট নিরসনে ভূমিকা রাখতে। তিনি বলেন, “এই অঞ্চলের বন্ধুপ্রতিম দেশ হিসেবে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে বোঝাপড়া তৈরিতে আমরা সবসময় প্রস্তুত।”
বিশ্বব্যাংকের ভূমিকা নিয়েও চলছে বিতর্ক। দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত তাদের সিন্ধু পানি সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের আগে বিশ্বব্যাংককে আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি। তবে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের দাবি, পাকিস্তানকে জানানোই যথেষ্ট ছিল।
