শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫ | ২৮ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৪২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা

কথা শেষ করার সঙ্গে সঙ্গে কাঁদতে শুরু করে। অন্যরাও কেঁদে বুক ভাসায়। সালাম সবার পরিচিত। মুজফফর বলে, সালামকে কবর দেব আমরা। যাই কবর খুঁড়ে নেই। সবাই চলো আমার সঙ্গে। গর্ত খোঁড়া হলে আমরা এসে শহীদ সালামকে নিয়ে যাব।

সবাই দূরে হেঁটে যেতে থাকে। খালেক নিজের বাড়িতে গিয়ে একটি কোদাল নিয়ে আসে। ধানক্ষেতের পাশে এক জায়গায় গর্ত করে শহীদ সালামের লাশ নামানো হয়। সবাই মিলে দোয়া পড়ে। লুৎফা খানিকটা দূরে বসে চিৎকার করে কাঁদে। যখন মাটি চাপা দিয়ে গর্ত ভরানো হয় তখন লুৎফা কবরের পাশে বসে জোরে জোরে দোয়া পড়ে। কবরের উপরের মাটি সমান করে গোছাতে থাকে। সবাই মিলে লুৎফার সঙ্গে দোয়া পড়ে, মাটি গুছিয়ে একসময় বলে, চলেন ভাবী। আমরা আবার আসব।
-আমি এখন যাব না। শুনতে পান না যুদ্ধ তুমুল হয়ে উঠেছে।
-আমরা দূর থেকে দেখতে পাচ্ছি পাকিস্তান বাহিনীর ষোলটি ট্যাঙ্কের মধ্যে তেরোটি ধ্বংস করেছে মুক্তিযোদ্ধারা। অনেক সৈন্যের লাশ মাটিতে পড়ে আছে।
-যুদ্ধ এখনই থেমে যাবে বলে মনে হয় না।
-হ্যাঁ, আমরাও তাই মনে করছি। আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি সেনাদের ধ্বংস করে ছাড়বে।
-চলো আমরা এখান থেকে সরে যাই। মুজফফর সবার দিকে চোখ বড় করে তাকায়, এখানে থাকা কোনো কাজে আসছেনা। তবে থাকতে হবে কেন?
লুৎফা চেঁচিয়ে বলে, আমি মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ দেখব। আমি যাব না। এই গাছের আড়ালে বসে থাকব। দরকার মতো ওদের সেবা করব।
অঞ্জন বলে, আমিও যাব না। যে আহত হবে তাকে সুস্থ করতে হবে। আমরাতো কাজের দায়িত্ব নিয়ে এসেছি। চলে যাব কেন?
-আচ্ছা ঠিক আছে। তাহলে সবাই থাকি।
-শুধু থাকি না, সবাই যুদ্ধে আছি। যুদ্ধের যা কিছু দরকার হবে আমরা মিলিতভাবে করব।
-এই দেখ মুক্তিযোদ্ধারা ষোলটি ট্যাংকের মধ্যে তেরোটি ধ্বংস করে বাকি তিনটি দখল করেছে। পাকিস্তানি সেনারা পিছু হটছে।
-আমরা যুদ্ধে জিতেছি।
-হ্যাঁ, জিতেছি, জিতেছি, জিতেছি। চেঁচিয়ে ওঠে সবাই, জয় বাংলা।
-প্রায় একশজন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছে।
-যুদ্ধ থামেনি। মনে হচ্ছে আরও অনেকক্ষণ চলবে।
-চলুক। যতক্ষণ দরকার ততক্ষণ তো চলতে হবে। বিজয় নিয়ে আমরা তাঁবুতে ফিরব।
অনেকক্ষণ একজায়গায় বসে থাকার পরে সন্ধ্যা হয়ে যায়। মুজফফর লুৎফাকে হাত ধরে টেনে বলে চলে আমরা যাই।
-হ্যাঁ, চলো। অঞ্জন ভাই যাবেন না?
-না, আমি যাব না। মুক্তিযোদ্ধাদের কেউ যদি আহত হয় তাকে আমার দেখতে হবে।
-ও হ্যাঁ, তাইতো, তাইতো।
-অঞ্জন দাদার সঙ্গে আমরা কয়জন থাকব। দাদা একা থাকলে হবে না।
-হ্যাঁ, ঠিক বলেছো, থাক। অঞ্জন ভাই একা সেবা করতে পারবে না।
-আপনারা যান।
-ঠিক আছে আমরা যাচ্ছি।
মুজফফর আর লুৎফা এগিয়ে যেতে থাকে। দুকানে ধারণ করে গোলাগুলির শব্দ। মাথা ভরে যায় সেই শব্দে। লুৎফা গুনগুনিয়ে বলে, আমাদের স্বাধীনতা, আমাদের স্বাধীনতা।
মুজফফর নিজেও গুনগুনিয়ে গানের মতো গাইতে থাকে আমাদের স্বাধীনতা-আমাদের স্বাধীনতা। স্বাধীনতা পূর্ণ করবে আমাদের শরণার্থী শিবির। নিজ দেশের ঘরে ফেরার সময় গাইব -আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি।
-গানটা তোমার মুখস্ত নাই?
-পুরোটা নাই। দুই লাইন মুখস্ত আছে। দুই লাইনই গাইব।
লুৎফা উচ্ছসিত হয়ে বলে, আমাদের চারপাশে যারা থাকবে তাদের সবাইকে গাইতে বলব।
-হ্যাঁ, ঠিক বলেছ।
দুজনে গুনগুন করে গাইতে গাইতে নিজেদের তাঁবুতে গিয়ে ঢোকে। কুপি জ্বালায় লুৎফা। মুজফফর কলসি থেকে পানি ঢেলে খায়। তারপর এক গ্লাস পানি লুৎফার দিকে এগিয়ে দেয়। লুৎফা, নিজেও একটানে গ্লাসের পানি শেষ করে। বুঝতে পারে বুকের ভেতর পানির টান প্রবল ছিল। পানি খেয়ে বলে, হাঁড়িতে দুপুরের ভাত-তরকারি কিছু আছে। ওইটুকু খেয়ে আমরা শুয়ে যাই। হবে না?
-হ্যাঁ, হবে হবে। তোমাকে এখন আর রান্নার ঝামেলায় যেতে হবে না।
-আমি সকালে রান্না করব। চট করে খেয়ে নিয়ে চৌগাছায় যাব। যুদ্ধের অবস্থা দেখব।
-ঠিকই বলেছ। হাতমুখ ধুয়ে নেই। ভাত খেয়ে শুয়ে পড়ব।
লুৎফা দ্রুত থালায় ভাত-তরকারি দিয়ে মুজফফরকে দেয়। মুজফফর থালা হাতে নিয়ে বলে, তোমার থালা কই? ভাত আছেতো? আমাকে শুধু খাইও না।
-আছে আমার জন্য। তুমি তোমার মতো খাও। আমি থালায় ভাত নিচ্ছি। অল্প সময়ের মধ্যে দুজনে খেয়ে শুয়ে পড়ে। চৌগাছায় দেখা যুদ্ধ দুজনকেই তন্ময় করে রাখে। ঘুম আসে না। ঘুমাতে অনেক রাত হয়ে যায়। লুৎফা ভাবে, শরণার্থী শিবিরের এখানে চৌগাছায় যুদ্ধ হচ্ছে। গোলাগুলির শব্দ রাতের অন্ধকার কাঁপিয়ে তুলেছে। ঘুম আসছে না। মুজফফর ঘুমিয়ে পড়েছে। তখন ও ভাবে কেন যুদ্ধের এমন চিন্তা ওকে কাহিল করে ফেলেছে। কেন ওর ঘুম আসছে না। বালিশে মুখ গুঁজে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ে লুৎফা। মাঝে মাঝে নিশ্বাস নিতে কষ্ট হয়, তখন মাথা কাত করতে হয়। প্রবলভাবে নিশ্বাস টানে। ঘুম জড়ানো কণ্ঠে মুজফফর বলে, তোমার কি হয়েছে?
-ঘুম আসছে না।
-আমার বুকে মাথা রাখ। আমি তোমাকে ঘুম পাড়িয়ে দিচ্ছি।

লুৎফা ঘুরে শুয়ে মুজফফরকে জড়িয়ে ধরে। মুজফফর ওর মাথা বুকের সঙ্গে গভীর মমতায় জড়িয়ে ধরে গুনগুন করে গাইতে থাকে ‘আমরা যুদ্ধে জিতব, স্বাধীন দেশে যাব’। লুৎফাও মুজফফরের সঙ্গে কণ্ঠ মেলায়। গুনগুন করতে করতে দুচোখের পাতা বুঁজে আসে। দুজনে একসঙ্গে ঘুমিয়ে পড়ে।
সকালে যখন ঘুম ভাঙে তখন যুদ্ধের গোলাগুলির শব্দ একইভাবে শুনতে পায়। লুৎফা ধড়মড়িয়ে উঠে বসে বলে, আমি একটুপরে চৌগাছা যাব। তুমিও যাবে আমার সঙ্গে। যাবে তো?
-হ্যাঁ, যাবই। স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ সোজা কথা না।
মুজফফর উঠে তাঁবুর বাইরে যায়। একপাশে দাঁড়িয়ে চারদিকের পরিস্থিতি দেখে। লুৎফা দ্রুতহাতে কয়েকটি রুটি বানায় আর আলু ভাজি করে। দুজনে নিজেদের মতো করে পরিস্থিতি সামলায়। লুৎফার কাজ শেষে দ্রুত আলু ভাজি দিয়ে রুটি খায়। বেশ অনেকগুলো রুটি দেখে মুজফফর বলে, এত রুটি বানালে কেন?
-চৌগাছায় নিয়ে যাব। যদি কারো দরকার হয়ে তাকে খেতে দেব।
-ভালোই করেছ। গুছিয়ে নাও। চলে যাই। কেউ না খেতে চাইলে ক্ষতি নেই। আমরা খাব। তুমি সাধাসাধি করে কাউকে খাওয়াতে চেওনা।
-আমার মাথা এত খারাপ হবে না। কেউ খেতে না চাইলে বুঝব তাদের খাওয়ার ইচ্ছা নেই।

চলবে….

আগের পর্বগুলো পড়ুন>

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৪১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৪০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩৭

 

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা। পর্ব- ৩৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা পর্ব: ২৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১

Header Ad
Header Ad

কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ মিরাজ, দর্শক পছন্দে সেরা ঋতুপর্ণা

ছবি: সংগৃহীত

২০২৪ সালের কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত জমকালো অনুষ্ঠানে তার হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

অন্যদিকে, দর্শক ভোটে সর্বাধিক পছন্দের ক্রীড়াবিদ হিসেবে ‘পপুলার চয়েজ অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করেন নারী সাফ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা জাতীয় নারী ফুটবল দলের মিডফিল্ডার ঋতুপর্ণা চাকমা।

এ বছর ‘স্পোর্টস পারসন অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কার জয়ের দৌড়ে মিরাজ পেছনে ফেলেছেন ঋতুপর্ণা এবং ২০২৪ প্যারিস অলিম্পিকে কোয়ালিফাই করা আর্চার সাগর ইসলামকে। অপরদিকে, ‘পপুলার চয়েজ’ বিভাগে ঋতুপর্ণা এগিয়ে যান মিরাজ ও উদীয়মান পেসার নাহিদ রানাকে ছাড়িয়ে।

 

ছবি: সংগৃহীত

১৯৬৪ সাল থেকে ক্রীড়াবিদদের স্বীকৃতি জানিয়ে আসা দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ক্রীড়া সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএসপিএ) এবছর ১৫টি বিভাগে মোট ১৩ ব্যক্তি, দল ও সংস্থাকে সম্মাননা দেয়। সংগঠনের সভাপতি রেজওয়ান উজ জামান রাজিবের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং স্কয়ার টয়লেট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী।

পুরস্কার গ্রহণ করে মিরাজ বলেন, “বিএসপিএকে ধন্যবাদ প্রতি বছর এমন আয়োজনের জন্য। এটা আমাদের খেলোয়াড়দের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস।” ভুটানে লিগ খেলায় ব্যস্ত থাকায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে না পারলেও ভিডিও বার্তায় ঋতুপর্ণা জানান, “এই সম্মান আমাকে আরও ভালো করার অনুপ্রেরণা দেবে।”

Header Ad
Header Ad

রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা, মগবাজার-মধুবাগে তীব্র ভোগান্তি

রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মগবাজার ও মধুবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় ওয়াসার পানিতে পোকা ও ময়লার উপস্থিতি নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা। ট্যাপের পানি দুর্গন্ধযুক্ত ও অস্বচ্ছ হওয়ায় তা রান্না, গোসল ও দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করতে গিয়ে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, বাসার পানির ট্যাঙ্ক একাধিকবার পরিষ্কার করেও মিলছে না সমাধান। ওয়াসার সাপ্লাই পাইপ থেকেই এই সমস্যার উৎপত্তি বলে মনে করছেন তারা।

মধুবাগ এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, “এই পানি দিয়ে রান্না ও গোসল সম্ভব না। আমাদের বাসার শিশুরা পানি খেতেই চায় না। বাধ্য হয়ে পাম্প থেকে পানি এনে ব্যবহার করতে হচ্ছে।” আরেকজন জানান, “ট্যাঙ্ক পরিস্কার করলে প্রথমে কিছুদিন ভালো থাকে, তারপর আবার পোকা দেখা দেয়।”

বিকল্প না থাকায়, অনেকেই ট্যাপের মুখে কাপড় বেঁধে পানি ব্যবহার করছেন। কিন্তু তারপরও পেটের অসুখ ও চর্মরোগের প্রকোপ বাড়ছে বলেও জানান স্থানীয়রা।

এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঢাকা ওয়াসার তিনজন কর্মকর্তা মধুবাগ এলাকায় পরিদর্শনে যান এবং কয়েকটি বাসা থেকে পানি সংগ্রহ করে পরীক্ষায় পোকা পাওয়ার কথা স্বীকার করেন। তবে দায় চাপান ট্যাঙ্ক ঠিকমতো পরিষ্কার না করাকে। ওয়াসার উপসহকারী প্রকৌশলী তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, “লাইনের পানি পরিষ্কার। ট্যাঙ্ক যদি নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়, তাহলে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।”

তবে এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নন এলাকাবাসী। তারা বলছেন, নিয়মিত ট্যাঙ্ক পরিষ্কারের পরও পানি দূষিত হচ্ছে, যা পাইপলাইনের সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। এ অবস্থায় ওয়াসার কর্মকর্তারা পাইপের মান যাচাইয়ের আশ্বাস দিয়েছেন। এলাকাবাসী দ্রুত সমস্যার স্থায়ী সমাধান চেয়ে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Header Ad
Header Ad

বিদেশি আইনের আওতায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ: গভর্নর

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরাতে হবে বিদেশি আইনের মাধ্যমে এবং এ উদ্যোগ সম্পূর্ণ নতুন। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়াটি দেশের নয়, বরং বিদেশের আইনের সঙ্গে সংযোগ রেখে করতে হবে। এর জন্য আগে সংশ্লিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করতে হবে এবং এস্টেট (সম্পদ) ফ্রিজ করে আদালতের মাধ্যমে বাকি প্রক্রিয়া চালাতে হবে।”

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “প্রথমে এস্টেটগুলো ফ্রিজ করার চেষ্টা করছি। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে, চিঠি পাঠানো হচ্ছে। আইন পরামর্শক নিয়োগে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এস্টেট ট্রেসিং ফার্মের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এস্টেট ফ্রিজ করা গেলে এটিই হবে প্রথম সাফল্য।”

এক প্রশ্নের উত্তরে গভর্নর বলেন, “আমার ধারণা, প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। শুধু বেক্সিমকো গ্রুপেরই প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার মতো অর্থ পাচার হয়েছে। এগুলো বড় গ্রুপের হিসাব, ছোট গ্রুপগুলো এখনো বিবেচনায় আনা হয়নি। ভবিষ্যতে যেন এমন না ঘটে, সে জন্য আমরা প্রয়োজনীয় নিয়ম-কানুন সংশোধনের উদ্যোগ নিচ্ছি।”

তিনি আরও বলেন, “সব সময় আদালতের মাধ্যমে সমাধান না করে, কিছু ক্ষেত্রে সমঝোতার ভিত্তিতেও (আউট অব কোর্ট সেটেলমেন্ট) টাকা ফেরত আনার চিন্তা করছি। তবে সেটার আগে সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকা জরুরি, না হলে আমরা ঠকে যাব।”

মুদ্রাস্ফীতি সংক্রান্ত এক প্রশ্নে গভর্নর বলেন, “অতীতে খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি ৯-১০ শতাংশ দেখানো হলেও বাস্তবে তা ছিল ১৩-১৪ শতাংশ। তবে এখন সেটি ৮-৯ শতাংশে নেমেছে। সামগ্রিকভাবে মুদ্রাস্ফীতি কমতির দিকেই। আগামী বছরে তা ৫ শতাংশ বা তার নিচে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।”

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. জামাল উদ্দিন, ফাইন্যান্স ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের পরিচালক মো. আনিসুর রহমানসহ চট্টগ্রাম কার্যালয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সঞ্চালনায় ছিলেন উপপরিচালক মো. জোবাইর হোসেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ মিরাজ, দর্শক পছন্দে সেরা ঋতুপর্ণা
রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা, মগবাজার-মধুবাগে তীব্র ভোগান্তি
বিদেশি আইনের আওতায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ: গভর্নর
মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম বদল নয়, বরং ঐতিহ্যে ফেরত: ঢাবি উপাচার্য
তৃতীয় বিয়ের ইতি, রোশন সিংয়ের সঙ্গে আইনিভাবে বিচ্ছিন্ন শ্রাবন্তী
৬৪ জেলা নিয়ে তৃণমূল ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজনের ঘোষণা ক্রীড়া উপদেষ্টার
আগামীকাল শনিবার রাজধানীতে “মার্চ ফর গাজা”, পাঁচটি স্থান থেকে শোভাযাত্রা শুরু
অবশেষে নতুন চুক্তি সালাহর, লিভারপুলে থাকছেন ২০২৭ পর্যন্ত
পহেলা বৈশাখের শোভাযাত্রায় হাসিনার মুখাবয়ব
ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে মামলা করল ওপেনএআই
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মৃদু ভূমিকম্প
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে নাগরিক কমিটির নেত্রী দিলশাদ আফরিন আটক
বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কায় ডলারের বড় পতন, রেকর্ড ছুঁয়েছে স্বর্ণের দাম
ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে ১৪৭ দেশ, বাড়ছে বিশ্বজনমত
মার্কিন পণ্যে ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে চীনের পাল্টা জবাব
নারায়ণগঞ্জে দুই নারী ও এক শিশুর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার
ফুটবল মাঠ পেরিয়ে হলিউডে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো
পুলিশের চাকরি পেতে সমন্বয়কদের পেছনে দৌড়ানো বন্ধ করুন: সারজিস
ড. ইউনূসের ৫ বছর ক্ষমতায় থাকার কোনও অধিকার নেই: সেলিমা রহমান
সিটি কর্পোরেশন হচ্ছে বগুড়া, গণশুনানির প্রস্তুতি শুরু