শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫ | ২৭ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৩০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা

অঞ্জন ট্রানজিষ্টার হাতে নিয়ে নদীর ধারে থেকে ফিরে এসে গাছতলার নিচে বসে যায়। ওর বাবা আসেনা। দাঁড়িয়ে থাকে সবার সঙ্গে। অঞ্জন বিবিসি শোনার জন্য নব ঘোরায়। ভেসে আসে বিবিসির বাংলা বিভাগ থেকে কন্ঠস্বর। আর্জেন্টিনার লেখক ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গড়ে তোলে। লেখক-বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে মিছিল করে। বাংলাদেশের শরণার্থীদের প্রতি সহযোগিতার জন্য আর্জেন্টাইন সরকারকে স্মারকলিপি প্রদান করে। পররাষ্ট্র মন্ত্রী লুইস মারিয়া ডি পাবলো পারডোর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। বাংলাদেশের শরণার্থীদের জন্য সাহায্যে পাঠানোর দাবি জানান। ভিক্টোরিয়ার সঙ্গে ছিলেন খ্যাতিমান সাহিত্যিকরা।


সংবাদ শুনে বুক ভরে যায় অঞ্জনের। ভাবে, এভাবে বিশ্বের সব দেশ যদি সহযোগিতার হাত না বাড়ায় তবে শরণার্থীদের কষ্টের সীমা থাকবে না। ভারতের সহযোগিতায় বেঁচে থাকার প্রেরণা শক্ত হয়ে আছে। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ ওর নিজের একটি অসাধারণ দিকদর্শন হবে। বাবার ডান হাত চেপে ধরে বলে, বাবা, আমি ঠিক করেছি যুদ্ধ করব।

-তুইতো ডাক্তাররে বাবা। তুই মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা শুশ্রুষা কর। এটাওতো যুদ্ধেরই একদিক।
-না বাবা, আমি এভাবে বসে থাকবনা। আমি যুদ্ধ করব।
-না রে বাবা, তুই যুদ্ধে যাবিনা। তুই যুদ্ধে গেলে আমি মরে যাব।
-কি যে বলেন না আপনি। আপনিতো জানেন আমাদের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ চলছে।

শব্দ করে কেঁদে ওঠে অঞ্জনের বাবা। কাঁদতে কাঁদতে দুহাতে চোখ চেপে রাখে। পানি গড়ায় গালের ওপর।
অঞ্জন বাবাকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলে, কাঁদবেন না বাবা। আশেপাশের সবাই এখানে এসে জড়ো হবে। ওরা আপনাকে অন্যরকম মানুষ ভাবুক এটা আমি চাইনা। আপনি বিবিসিতে শুনলেননা বিদেশী একজন সাহিত্যিক বাংলাদেশের শরণার্থীদের জন্য ভাবনাচিন্তা করে।

ছেলের বুক থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নেয় বাবা। এভাবে নিজেকে শক্তিহীন মানুষ ভাবতে চায়না। মাথা সোজা করে সামনে তাকালে পুরো যশোর রোডের এমাথা ওমাথা দেখার জন্য মাথা ঘোরায়। তারপর ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে বলে, ভারতের এই জায়গা আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাসে উল্লেখ থাকবে।


-শুধু এ জায়গা কেন বাবা? যত জায়গায় শরণার্থী আছে, যেখানে মুক্তিযুদ্ধ হচ্ছে সেসব জায়গা এবং আমাদের মা ইন্দিরা গান্ধী আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাসকে ধারণ করেছেন। আজ থেকে আমি ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোকেও মনে রাখবো। তিনি আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধকে বিজয়ী করার জন্য নিজের দেশের সরকারের কাছে আবেদন করেছেন। নিজের দেশের জ্ঞানী-গুণী মানুষদের জড়ো করেছেন আমাদের স্বাধীনতার লাভের পক্ষে।

অঞ্জন কথা শেষ করলে কথা বলেনা ওর বাবা। বুকের ভেতরে গুমগুম শব্দ তাকে ম্রিয়মান করে রাখে। দেশে যুদ্ধ করতে গলে যদি শহীদ হয়। ভাবনার জায়গা নিঃশেষ হয়ে যায়। বুকের ভেতর দম আটকে থাকে। পরক্ষণে সুবাতাস বইতে থাকে বুকের ভেতর। ছেলে স্বাধীনতার জন্য প্রাণদানকারী মানুষ হবে। দেশ-জাতি ওকে স্মরণ ক০রবে। তাহলে কেন যুদ্ধ করবেনা? যুদ্ধ না করলে স্বাধীনতার স্বপ্ন পূরণ হবে কিভাবে? কথাবিহীনভাবে নিজেকে ধমকায়। মনে মনে নিজেকে বলে, আমারওতো যুদ্ধ করা দরকার। শুধু শরণার্থী মানুষ হয়ে বেঁচে থাকা কি দেশের জন্য প্রেম? ধমক দিয়ে নিজের বোধকে চাঙ্গা করে। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে ওঠে। ভাবে, শরণার্থী হয়ে বেঁচে থাকা একটা দিক, স্বাধীনতার জন্য জীবন দেয়া আর একটা দিক। সবকিছু মেনে নিয়ে বেঁচে থাকার সত্যকে তুমুল করে তুলতে হবে। স্বাধীনতা লাভ সহজ কথা নয়। হঠাৎ মনে হয়, পাকিস্তানের কারাগারে বঙ্গবন্ধু বেঁচে আছেন কি? বঙ্গবন্ধু আর বাংলাদেশ একসঙ্গে বলতে হবে। নিজের বুকের ভেতরের প্রতিক্রিয়ায় উদ্ভাসিত হয় চেহারা।

অঞ্জন বাবার দিকে তাকিয়ে বলে, বাবা কি ভাবছেন?

-ভাবছি, স্বাধীন দেশ মানে বঙ্গবন্ধু আর বাংলাদেশ। ভাবছি, তিনি কি বেঁচে আছেন?
-ঠিক বলেছেন। আমাদেরকে এই ভাবনায় ডুবে থাকতে হবে বাবা। আপনি খুবই সুন্দরভাবে ভেবেছেন।
তখন দুটো ছেলেমেয়ে কাঁদতে কাঁদতে হাঁটে। অঞ্জন উঠে গিয়ে কাছে নিয়ে আসে ওদের। জিজ্ঞেস করে, তোরা কাঁদছিস কেন? কি হয়েছে?

ছেলেটি বলে, আমরা শুধু নুন দিয়ে ভাত খেয়েছি সেজন্য কাঁদছি। মা কোনো তরকারি রাঁধতে পারেনি।
মেয়েটি বলে, কালকে আমরা ভাত খেতে পারবনা। আমাদের কাছে চাল নাই। আমার মাও কাঁদছে।
এই কথা বলে দুজনে আবার হাউমাউ করে কাঁদে। অঞ্জন ওদের মাথায় হাত রেখে বলে, কাঁদিসনা সোনারা। ভাত খেয়ে পেট ভরেছে?

-হ্যাঁ, ভরেছে। এখন আর খিদা নাই।
-তাহলে আর তোরা কাঁদবিনা।
দুজনে একসঙ্গে বলে, কাঁদব, কাঁদব। কালকে তো কিছুই খাওয়া হবেনা।
-আমি তোদের জন্য চাল যোগাড় করার চেষ্টা করব। দেখি পাই কিনা। যা, তাঁবুতে যা।
-না, তাঁবুতে যাবনা। গাছের নিচে বসে থাকি। এখানে বসে থাকতে আমাদের খুব ভালোলাগে।
-তোদের নাম কি?
-আমার না হাশেম। আমি ফাতেমা।

দুজনে একটুখানি দূরে গিয়ে ঘাসের ওপর বসে পড়ে। তাকিয়ে থাকে সামনে। দেখতে পায় ওদের বয়সী তিনজন কাঁদতে কাঁদতে হাঁটছে। কখনো কাশতে কাশতে আকাশের দিকে তাকায়। অঞ্জন উঠে গিয়ে ওদের হাত ধরে টেনে এনে ওদের কাছে বসায়।
-কাঁদছিস কেন তোরা?
-অল্প ভাত খেয়েছি। পেট ভরেনি। আবার খিদা পেয়েছে। মায়ের কাছে গেলে মাতো কিছু খেতে দিতে পারবেনা।
-আয় বস এখানে।
-আমরা ওদের কাছে গিয়ে বসি।
তিনজনে এগিয়ে যায় হাশেম আর ফাতেমার দিকে। কাছে গিয়ে বসে পড়ে।
হাশেম বলে, দুলালরে কাঁদছিস কেন?
-খিদে পেয়েছে।
-আমরাও নুন দিয়ে ভাত খাওয়ার জন্য কেঁদেছিলাম। আর কাঁদবনা।
দুলাল বলে, আমরাও আর কাঁদবনা। তোদের কি মনে হয় রে বেলাল আর লাকী?
-আমরাও আর কাঁদবনা।
দুজনে দুহাতে চোখের পানি মোছে।
-ঠিক বলেছিস তোরা। হাশেম, চল আমরা রাস্তায় খেলি।
-কি খেলব?
-লুকোচুরি।
-চল, ভালোই হবে।

পাঁচজন দৌড় দিয়ে সামনে এগিয়ে যায়। অঞ্জন তাকিয়ে থাকে। নিজের শৈশবের কথা মনে হয়। এমন দীর্ঘ রাস্তাতো ওর শৈশবে ও দেখেনি। শহরের জীবনে রাস্তা মানে গাড়ি-রিকশা-লোকজনের হাঁটাহাঁটি। শিশুরা ওখানে কোনো ঠাঁই পেতনা। শিশুদের জন্য খেলার মাঠ ছিল। সেই মাঠে অনেকদিন একা একা দৌড়াদৌড়ি করেছে। সবুজ ঘাসের ওপর দৌড়াতে ওর খুব ভালোলাগত। মনে হতো এমন সবুজ রঙের নরম ঘাস দিয়ে জীবন সাজাবে। নিজের জীবনের চারদিকে এমন ঘাস লাগাবে। কিন্তু কিভাবে লাগাবে? পড়ালেখা দিয়ে। ওর পড়ালেখা হবে ওর জীবনের সবুজ ঘাস। অঞ্জন এমন ভাবনা নিজের বোধের জায়গায় রেখেছিল। কিন্তু বেঁচে থাকার এই পর্যন্ত সবুজ ঘাসের চিন্তা ও মাথায় তেমনভাবে থাকেনি। এখন ছেলেমেয়েদের দৌড়াতে দেখে সবুজ ঘাসের ভাবনা মাথায় উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। এসব ভাবনার মাঝে দেখতে পায় ক্যামেরাম্যান রঘু রাই আসছে। কোথাও কোথাও দাঁড়িয়ে ছবি তুলছে। ওর তোলা ছবি দেখে বিস্মিত হয় অঞ্জন। এত নিখুঁত ছবি একটি সময়কে ধারণ করে ইতিহাসের দিকচিহ্ন হবে। মাথায় পোঁটলা-পুটলি নিয়ে স্রোতের মতো হেঁটে আসছে মানুষ। ওদের পেছনে মৃত্যুর তাড়া, সামনে শরণার্থী শিবিরের কষ্টকর জীবন। সবকিছু ছাপিয়ে স্বাধীনতার স্বপ্ন। নিজেদেরকে মুক্তিযোদ্ধার প্রেরণায় ধারণ করার মানসিক ভরসা। রঘু রাইয়ের ছবি দেখে নিজের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ইতিহাস সংরক্ষিত হচ্ছে, এই চেতনায় অঞ্জন খুব অনুপ্রাণিত হয়। রঘু রাইকে আসতে দেখে উঠে দাঁড়ায়। কাছে এলে জিজ্ঞেস করে, কেমন আছেন?

-ভালো। একটা অন্যরকম ছবি তুলেছি। তোমাকে দেখাব।

রঘু রাই ক্যামেরা থেকে ছবি বের করে। ছবি দেখে চেঁচিয়ে ওঠে অঞ্জন, ওহ দারুণ ছবি।

 

চলবে..

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা পর্ব: ২৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১

 

 

Header Ad
Header Ad

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য দিলশাদ আফরিন বহিষ্কার

দিলশাদ আফরিন। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক কমিটির শৃঙ্খলা ও আদর্শ বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে সংগঠনটির নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানা শাখার সদস্য দিলশাদ আফরিনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) এই বহিষ্কারাদেশ জারি করা হয়।

বিষয়টি বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) গণমাধ্যমের সামনে আসে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত ওই বহিষ্কারাদেশে বলা হয়, ‘এই পত্রের মাধ্যমে আপনাকে জানানো যাচ্ছে যে, জাতীয় নাগরিক কমিটি-এর নিয়ম ও নীতিমালা অনুযায়ী আপনার সাম্প্রতিক কর্মকান্ড আমাদের সংগঠনের শৃঙ্খলা এবং আদর্শের পরিপন্থী বলে প্রতীয়মান হয়েছে। সমস্ত অভিযোগের ভিত্তিতে এবং সংগঠনের শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও সদস্য সচিব আখতার হোসেন এর অনুরোধক্রমে আপনাকে জাতীয় নাগরিক কমিটি থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।’

নারায়ণগঞ্জ জেলার দায়িত্বে থাকা জাতীয় নাগরিক কমিটির সাবেক যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল আমিন দিলশাদ আফরিনকে বহিষ্কারের বিষয়ে বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছিল। জাতীয় নাগরিক কমিটি অভিযোগ তদন্ত করে সত্যতা পাওয়ায় গত ৮ এপ্রিল তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে।

আফরিন জাতীয় নাগরিক কমিটির শহীদ আহত কল্যাণ সেলের কোনো দায়িত্বে ছিলেন না। তারপরেও তিনি ব্যক্তিগতভাবে শহীদ ও আহত পরিবারের আর্থিক বিষয় নিয়ে কাজ করেছেন। যা নিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটি অবগত ছিল না বলেও জানান তিনি।

Header Ad
Header Ad

সরকারে এলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে বিএনপি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে প্রথম ১৮ মাসে বিএনপি ১ কোটি কর্মসংস্থান বা চাকরির ব্যবস্থা করবে। ২০৩৪ সালে জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ১ ট্রিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে বিএনপি। এ ছাড়া জনগণের ঘাড় থেকে বাড়তি করের লাগাম টেনে ধরা, মানুষের মন থেকে করের ভয় দূর করে কীভাবে কর আহরণ বাড়ানো যায়, তা নিয়েও দলটি কাজ করতে চায়।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) আয়োজনে বিনিয়োগ সম্মেলন ২০২৫–এ অংশ নিয়ে বিএনপি এসব পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এসব তথ্য জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

‘১ ট্রিলিয়ন ডলার ইকোনমি’ শিরোনামে দেওয়া ওই পোস্টে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর লিখেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থান বা চাকরির ব্যবস্থা করবে। প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই)/মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) লক্ষ্যমাত্রার শূন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ থেকে জিডিপির ২ দশমিক ৫ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে বিএনপি। ২০৩৪ সালে জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ১ ট্রিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে বিএনপি। জনগণের ঘাড় থেকে বাড়তি করের লাগাম টেনে ধরা, মানুষের মন থেকে করের ভয় দূর করে কীভাবে কর আহরণ বৃদ্ধি করা যায়, তা নিয়েও কাজ করতে চায় বিএনপি।

বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ বা এফডিআইকে জনপ্রিয় করতে বিএনপি ১১টি রেগুলেটরি পরিবর্তনের প্রস্তাব করেছে বলেও পোস্টে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। এর মধ্যে আটটি প্রস্তাবের কথা তুলে ধরেছেন তিনি। এগুলো হলো বিডাকে কার্যকর করা, ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট বিধির আধুনিকীকরণ, বিনিয়োগকারীদের জন্য ২৪x৭ (দিনে ২৪ ঘণ্টা ও সপ্তাহে ৭ দিন) সেবা চালু করা, স্বয়ংক্রিয় মুনাফা প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা, স্থানীয়ভাবে দক্ষ জনশক্তির ব্যবস্থা করা, বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের সঙ্গে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, মানবসম্পদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা নেওয়া এবং প্রকৃত প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের পরিমাণ ও আওতা বৃদ্ধি।

সরকার গঠন করতে পারলে দেশের মানবসম্পদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা নেওয়া, প্রকৃত প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের পরিমাণ ও আওতা বৃদ্ধির জন্য বিএনপি অতীতের চেয়েও ব্যাপক সফলতা অর্জন করতে চায় বলে জানান মির্জা ফখরুল। পোস্টে তিনি জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিনিয়োগ সম্মেলন উপলক্ষে এক শুভেচ্ছাবার্তায় তিনটি বিষয় বলেছেন। এগুলো হলো ঐক্যই ভবিষ্যৎ জাতীয় উন্নয়নের সোপান, এফডিআই আকৃষ্ট করতে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সরকার আইন করেছিল এবং দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সরকারগুলোর বিনিয়োগবান্ধব নীতি ছিল।

Header Ad
Header Ad

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বেলা ১১ টা থেকে ‍দুপুর ১২ টা ২০ মিনিট পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকা মেহেরপুর জেলার ইছাখালি সীমান্ত এলাকার মেইন পিলার ১২৪ এর নিকট শূন্য রেখা বরাবর ভারতীয় পার্শ্বে বিএসএফ নব চন্দ্রপুর ক্যাম্পে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বিজিবি সূত্র জানায়, চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এবং প্রতিপক্ষ ৫৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সাথে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বিজিবি’র পক্ষে চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. নাজমুল হাসান স্টাফ অফিসারসহ মোট ৯ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব প্রদান করেন।

অপরদিকে বিএসএফ এর পক্ষে ৫৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট শ্রী বিনয় কুমার তাঁর স্টাফ অফিসারসহ ৮ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।

বৈঠকের শুরুতে উভয় পক্ষ ঈদ-উল-ফিতর পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডার সীমান্ত এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে চোরাচালান প্রতিরোধ, অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধ, যৌথ টহল তৎপরতা জোরদারকরণ এবং গোয়েন্দা নজরদারির বিষয়সমূহে বিস্তারিত আলোচনা করেন। সীমান্তকে অধিক সুসংহত ও কার্যকরী করার লক্ষ্যে বিজিবি-বিএসএফ যৌথভাবে কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে ব্যাটালিয়ন কমান্ডারগণ একমত পোষণ করেন। এছাড়াও, সীমান্তে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা ও সীমান্ত সংক্রান্ত যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার তাৎক্ষণিক তথ্য আদান-প্রদানের বিষয়ে উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডারগণ সম্মত হন।

বৈঠক শেষে উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডার মেইন পিলার ১২৪ সহ তৎসংলগ্ন সীমান্ত পিলারসমূহ যৌথভাবে পায়ে হেঁটে পরিদর্শন করেন।
দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে আন্তরিক ও সদ্ভাবপূর্ণ পরিবেশে বৈঠক শেষ হয়।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য দিলশাদ আফরিন বহিষ্কার
সরকারে এলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে বিএনপি
চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত
আবারও চেন্নাইয়ের অধিনায়ক হলেন ধোনি
‘ক্রিম আপা’ খ্যাত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর শারমিন শিলা গ্রেফতার
দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে সোনা, ভরি ১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা
ভিন্ন ধর্মের ছেলের সঙ্গে প্রেম, বাবার হাতে প্রাণ গেল মেয়ের
পোল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত হলেন সাবেক আইজিপি ময়নুল
জেনে নিন গ্রীষ্মে সুস্বাদু আর উপকারী কাঁচা আমের ১১টি বিস্ময়কর গুণ
এসএসসি পরীক্ষা না দিয়ে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে কিশোরী
সাধারণ মানুষ চায় এই সরকার আরো ৫ বছর থাকুক: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে টাঙ্গাইলে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মানববন্ধন (ভিডিও)
জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকলে ইসরায়েল এমন অপকর্মের সাহস পেত না: মির্জা আব্বাস (ভিডিও)
নওগাঁয় গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ২
বাংলাদেশ রেলওয়ের দুই কর্মকর্তাকে পদায়ন ও বদলি
২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশে হাসপাতাল বানাচ্ছে মার্কিন কোম্পানি
কাদের-কামালসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি করতে চিঠি
সিলেটে থানায় লালগালিচা দেখে ক্ষোভ ঝাড়লেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
দিল্লিতে লিঙ্গ পরিবর্তনের চিকিৎসা নিতে এসে গ্রেপ্তার ৫ বাংলাদেশি
রবিবার ৩ জেলায় সাধারণ ছুটি, সবমিলিয়ে টানা ৪ দিনের অবকাশ