শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫ | ২৭ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

পর্ব-২৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা

কিছুক্ষণ পর দূর থেকে ছুটে আসে পাকিস্তানি সেনাদের গুলি। অনেকের গায়ে গুলি লাগে। পড়ে যায় অনেকে। যাদের গায়ে গুলি লাগেনি তারা গড়াতে গড়াতে সীমান্তের এপাশে চলে আসে। একসময় গুলি থেমে গেলে উঠে দাঁড়ায় অনেকে। দেখতে পায় বেশ দূর থেকে গুলি আসছে। এখন ওরা থেমে গেছে। বোধহয় গুলি ফুরিয়েছে। যাদের গায়ে গুলি লাগেনি তারা উঠে দাঁড়ায়। দেখতে পায় পাকিস্তানি সেনারা অন্যদিকে যাচ্ছে। যারা আহত হয়েছে তাদের নিজ নিজ তাঁবুতে পৌঁছে দেয় সবাই। পাঁচ জন মারা গেছে। চারদিকে কান্নার ধ্বনি প্রবল শব্দে মিশে যায় বাতাসে। শরণার্থী শিবিরজুড়ে কান্নার শব্দ ছাড়া আর কোনো শব্দ নাই। আহতদের আর্তনাদ বন্ধ হয়ে গেছে। অনেকেই জ্ঞান হারিয়েছে। বাকিরা মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। থমথম করছে চারদিক। স্তব্ধ যশোর রোডের মাঝখানে নিঃশব্দে দাঁড়িয়ে থাকে অঞ্জন। মনে হয় বুকের ভেতরে নিঃশ্বাসও পড়ছে না। পরক্ষণে মনে হয় কিছু ওষুধ আনার জন্য কাছের হাসপাতালে যাওয়া দরকার। অঞ্জন ছুটতে থাকে বনগাঁওয়ের দিকে। নিজেতো ডাক্তার, বনগাঁও হাসপাতাল থেকে কিছু ওষুধ আনতে পারলে আহতদের সুস্থ করা যাবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বনগাঁও পর্যন্ত যেতে পারে না অঞ্জন। মাথা ঘুরে ওঠে। পথের ধারে পড়ে যায়। ঘাস ও মাটির মাঝে পড়ে গেলে শরীরজুড়ে ময়লা ভরে যায়। উঠে বসে, কিন্তু হাঁটার জন্য দাঁড়াতে পারে না। কেমন অবশ লাগছে শরীর। হাঁটুর ওপর মাথা রেখে চুপচাপ বসে থাকে। একটুপরে মাথা সোজা করলে দেখতে পায় একটি মেয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে আসছে। কাছে এসে মুখোমুখি বসে বলে, আমি দূর থেকে আপনাকে পড়ে যেতে দেখেছি। আপনাকে ধরে ওঠাব?

-না, এখন না। আর একটুক্ষণ বসি। তোমার নাম কি?

-ছবিরাণী। আমি বড় হলে বাবা আমাকে বলেছিলেন, তুমি আমার কাছে দেশের ছবি। সেজন্য তোমার নাম ছবি রেখেছি। বড় হয়ে সবসময় দেশের কথা মাথায় রাখবে। দেশের জন্য যা কিছু করা দরকার করবে। কখনো পিছিয়ে থাকবে না।

-ছবিরাণী তোমার বাবা একজন মহান মানুষ।

ছবিরাণী হাসতে হাসতে বলে, হ্যাঁ, ঠিক বলেছেন। আপনি কোথায় যাবেন? চলেন আপনাকে পৌঁছে দেই।

-না, আমাকে পৌঁছাতে হবে না। আমি চলে যেতে পারব।

-আবার যদি পড়ে যান?

-পড়ে গেলে আবার উঠব, আবার হাঁটব।

-আচ্ছা, তাহলে আমি যাই।

-হ্যাঁ, যাও। কোথায় যাবে?

-শরণার্থী শিবিরে যাব। দেখব কারো কিছু লাগবে কি না।

-তোমাকেতো আমি শরণার্থী শিবিরে আগে কখনো দেখিনি।

-আমি তিন-চার মাস আগে এসেছি। আপনাকেও দেখিনি। যে মায়েরা ভাতের অভাবে কেঁদেছে তাদেরকে চাল এনে দিয়েছি। বেশিজন না, কয়েকজনকে মাত্র। একটি মেয়ের জন্ম হলে মরে যায়। ওকে কোলে করে নিয়ে গিয়েছিলাম আমার বাড়িতে। ভাইদের দিয়ে গর্ত খুঁড়ে ওকে মাটি চাপা দিয়েছি ধানক্ষেতের পাশে।

-ছবিরাণী তোমার মতো মেয়ে আমি দেখিনি। তুমি এত ভালো মেয়ে-

-চলেন আপনাকে পৌঁছে দিয়ে আসি। আমি চাইনা আপনি আর একবার পড়ে যান।

ছবিরাণী দুহাত টেনে ধরে অঞ্জনের। অঞ্জন উঠে দাঁড়ায়। ছবিরাণী ওর হাত ধরে হাঁটতে শুরু করে। অঞ্জনের তাঁবুতে এসে দাঁড়ালে তার বাবা-মাকে দেখতে পায়। পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে। বলে, মাসীমা আমার নাম ছবিরাণী। আমি দাদাকে পথে পড়ে যেতে দেখেছি।

-মাগো তোমাকে দেখে মন ভরে গেছে। তুমি লক্ষ্মী মেয়ে। তোমার বাড়ি কোথায়?

-চৌগাছায়।

-তোমার বাবা কি করে?

-আমার বাবা কৃষিকাজ করে। বাবাকে কৃষক বলতে পারেন। নিজের দেশ নিয়ে বাবা অনেক চিন্তা করেন। বলে, আমি অনেক ধান চাষ করব। আমার চারদিকের লোকজন যেন না খেয়ে থাকে। যার থালায় ভাত থাকবেনা আমি তার থালায় ভাত দিয়ে আসব।

-বাব্বা তোমার বাবাতো একজন মহান মানুষ। তুমিও বাবার মতো হয়েছ। আমাদের ছেলেকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছ।

-দিবইতো। রাস্তায় উপুড় হয়ে পড়ে গেলে আমি কি তাকে ছেড়ে দিতে পারি? আমিতো মানুষ, ব্যাঙ না।
হা-হা করে হাসে সবাই। ছবিরাণী নিজেও হাসে। তারপর বলে, এখন যাই। মাঝে মাঝে এসে আপনাদের খোঁজ করব।

-আমার ছেলে ডাক্তার। তোমার বাবা-মায়ের অসুখ হলে ওকে ডেকে নিয়ে যেও।

-হ্যাঁ, মাসীমা ঠিক বলেছেন। যাচ্ছি। দাদা, ভালো থাকুন।

ছবিরাণী শরণার্থী শিবির থেকে বের হওয়ার জন্য দৌড়াতে শুরু করে। অঞ্জন বাবা-মাসহ ওর দিকে তাকিয়ে থাকে। ও দৌড়াচ্ছে দেখে অঞ্জন বলে, এই গতি শরণার্থী শিবিরের না। এখানে আছে দুঃখ-কষ্ট-মৃত্যু-কান্না। মায়ের দিকে ঘুরে ও বলে, ওর ছবি চোখে নিওনা মাগো। ও যাচ্ছে, যাক।

ওর বাবা ওর হাতে ট্রানজিস্টার দিয়ে বলে, নে বিবিসির খবর শোন।

-দাও ওই গাছের নিচে বসে খবর শুনব। যশোর রোডে এত গাছ দেখে আমি ভাবছি, গাছের ছায়ায় বেঁচে থাকব বলে এখানে এসেছি।

-থাক, এত কথা বলতে হবে না। মানুষের কষ্ট চোখে দেখিস না।

-শুধু কি চোখে দেখি? কান্নাকাটিও শুনি বাবা। সেটাতো বুক দিয়ে শুনি।

-চল, তোর সঙ্গে আমি যাব। দুজনে গাছের নিচে বসব। আমারও গাছের নিচে বসতে ভালোলাগে।
-মা যাবেন?

-নারে। আমি এখানে থাকব। জীবনে কখনো তাঁবুতে থাকিনি। এখন স্বাধীনতার স্বপ্ন নিয়ে তাঁবুতে থাকব।

-শুধু তাঁবুতে থাকলেতো হবে না। যুদ্ধ লাগবে মা।

-আমি কেমন করে যুদ্ধ করব? আমি কি অস্ত্র ধরতে পারি?

-আপনি যুদ্ধ করতে পারবেন না। যুদ্ধ আমাকে করতে হবে।

-না, তুই ডাক্তারী করবি। যারা যুদ্ধ করবে তাদের সেবা করবি।

-হ্যাঁ, তাই করব। এটাও যুদ্ধের একটা দিক।

-আর কথা বলতে হবে না। চল, চল।

বাবার হাত ধরে হাঁটতে শুরু করে অঞ্জন। অনেক তাঁবু থেকে কান্নার শব্দ আসছে। শুধু শিশুদের কান্না না, বড়দেরও। অঞ্জন থমকে দাঁড়ায়। বাবার দিকে মুখ ঘুরিয়ে বলে, আমাদের কিছু করার আছে?

-আমরা কি করতে পারি? আমাদের চালের গুদাম থাকলে ঘরে ঘরে চাল পৌঁছে দিতাম।

-এমন কথা শুনলে আমার মন খারাপ হয়। যা পারব না-

-থাক, চুপ কর। একটা তাঁবু থেকে কান্না শুনলে নিজেদের তাঁবু থেকে চাল নিয়ে যেতাম।

-নিজেদের তাঁবুতে যে অল্প চাল আছে। সেখান থেকেতো দেয়ার মতো নেই বাবা।

-তা ঠিক। চল বুকের ভেতর কান্নার শব্দ নিয়ে হাঁটি।

শুনতে পায় কান্নার ধ্বনি বেড়েছে। মন খারাপ করে দুজনে যশোর রোডের গাছের নিচে এসে বসে। দুজনেই চুপচাপ বসে থাকে। কান্নার ধ্বনি বুকের ভেতর জমে আছে। একসময় দেখতে পায় মৃত শিশু দুহাতে ধরে এগিয়ে আসছে আমেনা বেগম। দুজনকে দেখে দ্রুতপায়ে কাছে এসে বসে পড়ে চিৎকার করে কাঁদে।

-মাইয়াটা মইরা গেল ভাত খাইতে না পাইয়া। আমিও মইরা যামু ওর লগে। আমি আর বাঁচমুনা।

অঞ্জন মেয়েটিকে নিজের কোলে তুলে নেয়। শীতল হয়ে গেছে মেয়েটির শরীর। নিষ্প্রাণ দেহটির স্পর্শ ওকে শীতল করে দেয়। ও মেয়েটিকে বুখে জড়িয়ে ধরে। আমেনা বেগম মেয়েটিকে অঞ্জনের কাছ থেকে টেনে নিয়ে বুকে জড়িয়ে হাঁটতে শুরু করে। কান্নার ধ্বনি ছড়িয়ে পড়ে শরণার্থী শিবিরে। জোর কান্নার ধ্বনিতে চারদিক থেকে লোক এগিয়ে আসতে থাকে। আমেনা বেগম দ্রুত হেঁটে ঝাঁপিয়ে পড়ে নদীতে। ডুবে যায় শরীর। চারদিকে ভিড় করে দাঁড়িয়ে থাকে সবাই। অনেক মেয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদে। শরণার্থী শিবিরে পরিচিত হওয়া খালার জন্য কান্নার ধ্বনি আপনজনের আর্তনাদের বার্তা ছড়ায়। আমেনা বেগমের নিজের কেউ নেই। শরণার্থী শিবিরে আসার সময় পাকসেনাদের গুলিতে শহীদ হয় স্বামী আফজাল। মেয়েটিকে বুকে নিয়ে স্বাধীনতার স্বপ্নে মগ্ন ছিল। কিন্তু মেয়েটির মৃত্যু ওকে নিঃসঙ্গ করে দিলে বেঁচে থাকার স্বপ্ন ফুরিয়ে যায়।

চলবে...

এমএমএ/

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা পর্ব: ২৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১

 

Header Ad
Header Ad

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য দিলশাদ আফরিন বহিষ্কার

দিলশাদ আফরিন। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক কমিটির শৃঙ্খলা ও আদর্শ বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে সংগঠনটির নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানা শাখার সদস্য দিলশাদ আফরিনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) এই বহিষ্কারাদেশ জারি করা হয়।

বিষয়টি বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) গণমাধ্যমের সামনে আসে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত ওই বহিষ্কারাদেশে বলা হয়, ‘এই পত্রের মাধ্যমে আপনাকে জানানো যাচ্ছে যে, জাতীয় নাগরিক কমিটি-এর নিয়ম ও নীতিমালা অনুযায়ী আপনার সাম্প্রতিক কর্মকান্ড আমাদের সংগঠনের শৃঙ্খলা এবং আদর্শের পরিপন্থী বলে প্রতীয়মান হয়েছে। সমস্ত অভিযোগের ভিত্তিতে এবং সংগঠনের শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও সদস্য সচিব আখতার হোসেন এর অনুরোধক্রমে আপনাকে জাতীয় নাগরিক কমিটি থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।’

নারায়ণগঞ্জ জেলার দায়িত্বে থাকা জাতীয় নাগরিক কমিটির সাবেক যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল আমিন দিলশাদ আফরিনকে বহিষ্কারের বিষয়ে বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছিল। জাতীয় নাগরিক কমিটি অভিযোগ তদন্ত করে সত্যতা পাওয়ায় গত ৮ এপ্রিল তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে।

আফরিন জাতীয় নাগরিক কমিটির শহীদ আহত কল্যাণ সেলের কোনো দায়িত্বে ছিলেন না। তারপরেও তিনি ব্যক্তিগতভাবে শহীদ ও আহত পরিবারের আর্থিক বিষয় নিয়ে কাজ করেছেন। যা নিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটি অবগত ছিল না বলেও জানান তিনি।

Header Ad
Header Ad

সরকারে এলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে বিএনপি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে প্রথম ১৮ মাসে বিএনপি ১ কোটি কর্মসংস্থান বা চাকরির ব্যবস্থা করবে। ২০৩৪ সালে জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ১ ট্রিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে বিএনপি। এ ছাড়া জনগণের ঘাড় থেকে বাড়তি করের লাগাম টেনে ধরা, মানুষের মন থেকে করের ভয় দূর করে কীভাবে কর আহরণ বাড়ানো যায়, তা নিয়েও দলটি কাজ করতে চায়।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) আয়োজনে বিনিয়োগ সম্মেলন ২০২৫–এ অংশ নিয়ে বিএনপি এসব পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এসব তথ্য জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

‘১ ট্রিলিয়ন ডলার ইকোনমি’ শিরোনামে দেওয়া ওই পোস্টে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর লিখেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থান বা চাকরির ব্যবস্থা করবে। প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই)/মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) লক্ষ্যমাত্রার শূন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ থেকে জিডিপির ২ দশমিক ৫ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে বিএনপি। ২০৩৪ সালে জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ১ ট্রিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে বিএনপি। জনগণের ঘাড় থেকে বাড়তি করের লাগাম টেনে ধরা, মানুষের মন থেকে করের ভয় দূর করে কীভাবে কর আহরণ বৃদ্ধি করা যায়, তা নিয়েও কাজ করতে চায় বিএনপি।

বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ বা এফডিআইকে জনপ্রিয় করতে বিএনপি ১১টি রেগুলেটরি পরিবর্তনের প্রস্তাব করেছে বলেও পোস্টে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। এর মধ্যে আটটি প্রস্তাবের কথা তুলে ধরেছেন তিনি। এগুলো হলো বিডাকে কার্যকর করা, ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট বিধির আধুনিকীকরণ, বিনিয়োগকারীদের জন্য ২৪x৭ (দিনে ২৪ ঘণ্টা ও সপ্তাহে ৭ দিন) সেবা চালু করা, স্বয়ংক্রিয় মুনাফা প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা, স্থানীয়ভাবে দক্ষ জনশক্তির ব্যবস্থা করা, বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের সঙ্গে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, মানবসম্পদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা নেওয়া এবং প্রকৃত প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের পরিমাণ ও আওতা বৃদ্ধি।

সরকার গঠন করতে পারলে দেশের মানবসম্পদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা নেওয়া, প্রকৃত প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের পরিমাণ ও আওতা বৃদ্ধির জন্য বিএনপি অতীতের চেয়েও ব্যাপক সফলতা অর্জন করতে চায় বলে জানান মির্জা ফখরুল। পোস্টে তিনি জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিনিয়োগ সম্মেলন উপলক্ষে এক শুভেচ্ছাবার্তায় তিনটি বিষয় বলেছেন। এগুলো হলো ঐক্যই ভবিষ্যৎ জাতীয় উন্নয়নের সোপান, এফডিআই আকৃষ্ট করতে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সরকার আইন করেছিল এবং দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সরকারগুলোর বিনিয়োগবান্ধব নীতি ছিল।

Header Ad
Header Ad

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বেলা ১১ টা থেকে ‍দুপুর ১২ টা ২০ মিনিট পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকা মেহেরপুর জেলার ইছাখালি সীমান্ত এলাকার মেইন পিলার ১২৪ এর নিকট শূন্য রেখা বরাবর ভারতীয় পার্শ্বে বিএসএফ নব চন্দ্রপুর ক্যাম্পে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বিজিবি সূত্র জানায়, চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এবং প্রতিপক্ষ ৫৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সাথে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বিজিবি’র পক্ষে চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. নাজমুল হাসান স্টাফ অফিসারসহ মোট ৯ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব প্রদান করেন।

অপরদিকে বিএসএফ এর পক্ষে ৫৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট শ্রী বিনয় কুমার তাঁর স্টাফ অফিসারসহ ৮ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।

বৈঠকের শুরুতে উভয় পক্ষ ঈদ-উল-ফিতর পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডার সীমান্ত এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে চোরাচালান প্রতিরোধ, অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধ, যৌথ টহল তৎপরতা জোরদারকরণ এবং গোয়েন্দা নজরদারির বিষয়সমূহে বিস্তারিত আলোচনা করেন। সীমান্তকে অধিক সুসংহত ও কার্যকরী করার লক্ষ্যে বিজিবি-বিএসএফ যৌথভাবে কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে ব্যাটালিয়ন কমান্ডারগণ একমত পোষণ করেন। এছাড়াও, সীমান্তে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা ও সীমান্ত সংক্রান্ত যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার তাৎক্ষণিক তথ্য আদান-প্রদানের বিষয়ে উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডারগণ সম্মত হন।

বৈঠক শেষে উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডার মেইন পিলার ১২৪ সহ তৎসংলগ্ন সীমান্ত পিলারসমূহ যৌথভাবে পায়ে হেঁটে পরিদর্শন করেন।
দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে আন্তরিক ও সদ্ভাবপূর্ণ পরিবেশে বৈঠক শেষ হয়।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য দিলশাদ আফরিন বহিষ্কার
সরকারে এলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে বিএনপি
চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত
আবারও চেন্নাইয়ের অধিনায়ক হলেন ধোনি
‘ক্রিম আপা’ খ্যাত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর শারমিন শিলা গ্রেফতার
দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে সোনা, ভরি ১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা
ভিন্ন ধর্মের ছেলের সঙ্গে প্রেম, বাবার হাতে প্রাণ গেল মেয়ের
পোল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত হলেন সাবেক আইজিপি ময়নুল
জেনে নিন গ্রীষ্মে সুস্বাদু আর উপকারী কাঁচা আমের ১১টি বিস্ময়কর গুণ
এসএসসি পরীক্ষা না দিয়ে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে কিশোরী
সাধারণ মানুষ চায় এই সরকার আরো ৫ বছর থাকুক: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে টাঙ্গাইলে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মানববন্ধন (ভিডিও)
জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকলে ইসরায়েল এমন অপকর্মের সাহস পেত না: মির্জা আব্বাস (ভিডিও)
নওগাঁয় গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ২
বাংলাদেশ রেলওয়ের দুই কর্মকর্তাকে পদায়ন ও বদলি
২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশে হাসপাতাল বানাচ্ছে মার্কিন কোম্পানি
কাদের-কামালসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি করতে চিঠি
সিলেটে থানায় লালগালিচা দেখে ক্ষোভ ঝাড়লেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
দিল্লিতে লিঙ্গ পরিবর্তনের চিকিৎসা নিতে এসে গ্রেপ্তার ৫ বাংলাদেশি
রবিবার ৩ জেলায় সাধারণ ছুটি, সবমিলিয়ে টানা ৪ দিনের অবকাশ