শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫ | ২৮ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৪১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা

কয়েক মাস পরই চৌগাছায় যুদ্ধ শুরু হয়। অঞ্জন দ্রুত চৌগাছায় পৌঁছে যায়। ওর সঙ্গে মুজফফর আর লুৎফাও আসে। অঞ্জন ওদেরকে বলে, আমাদের তো অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ নাই। তাই আমরা আহতদের চিকিৎসা করব। সুস্থ করব সবাইকে। কারো যদি মৃত্যু হয় তাহলে কবর দেব তাকে। কেউ কোথাও পড়ে থাকবে না।
লুৎফা চিৎকার করে কেঁদে ওঠে। বলে, আমিও আপনার সঙ্গে সবার সেবা করব। কবর দেয়ার আগে দোয়া পড়ব। জানাজা তো হবে না।
- ঠিক বলেছেন ভাবী।
অঞ্জন লুৎফার পায়ে হাত দিয়ে সালাম করে। লুৎফা আবার বলে, আমরা একটা বড় গর্ত করব। যার যার ধর্ম তার থাকবে, কিন্তু সবাইকে এক গর্তে রেখে মাটি টেনে দেব।
- বাব্বা, আপনি তো বেশ-
- আমরা হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খৃষ্টান খুঁজব না। সবাই আমাদের সামনে স্বাধীনতার শহীদ। আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ হবে।
- তাতো হতেই হবে। শরণার্থী শিবিরে এসে আমরা এই সত্য গভীরভাবে বুঝতে পারছি। ধর্ম যার যার দেশ সবার। শরণার্থী শিবিরে আমরা একসঙ্গে দিন কাটাচ্ছি। এখানে ধর্ম নিয়ে আমাদের কোনো বাড়াবাড়ি নাই। এখানে আমরা একটি স্বপ্ন পূরণের জায়গায় জড়ো হয়েছি। সবাই আমরা এক স্বপ্ন দেখার মানুষ। এর বাইরে আমরা আর কিছু চিন্তা করিনা।
অঞ্জনের কথা শুনে লুৎফা উৎফুল্ল হয়ে বলে, ঠিক বলেছেন দাদা। খুব সুন্দর করে বলেছেন। এমন কথা শুনলে আমার মাথা ভরে যায়। শরণার্থী শিবিরে থাকার সব কষ্ট বুলে যাই। বেঁচে থাকা ফুলে ফুলে ভরে ওঠে। ফুলের গন্ধে শ্বাস টানি।
চারপাশে দাঁড়িয়ে থাকা সবাই শব্দ করে হাসে। হাসতে হাসতে সিরাজ বলে, ভাবী নতুন করে কথা বলে।
মাসুম হাসতে হাসতে বলে, বুঝতে পারছি ভাবী ঢাকায় থাকলে কবিতা লিখতেন।
সবাই একসঙ্গে বলে, ঠিক ঠিক।
কারো মুখ থেকে হাসি বন্ধ হয়না। কিছুক্ষণ হাসির স্রোত বয়ে যায়। লুৎফা চুপ করে থেকে সবার মুখের দিকে তাকায়। অঞ্জন বলে, আমি আপনাকে কাগজ কলম দেব। আপনি স্বাধীনতা নিয়ে এক লাইন কবিতা লিখবেন।
- না, না, আমি পারবনা। আমিতো কখনো কবিতা পড়ি নাই।
- পারবেন, পারবেন। আপনার চিন্তা সুন্দর।
- এখন থাক। এখন এসব ভাবব না। আগে যুদ্ধে জিতব আমরা। আমার সামনে যুদ্ধ এখন কবিতা। কঠিন কবিতা। যেটা লেখা সহজ না। এটা লিখতে জীবন দিতে হয়।
মুজফফর লুৎফার পিঠে হাত রেখে বলে, এখন থাম গো। এতকথা বলার দরকার নাই।
- না, আর কথা বলব না। থামলাম।
পাশে দাঁড়ানো সবাই হাততালি দেয়। জোরে জোরে বলে, যুদ্ধ আমাদের কবিতা। কবিতা দিয়ে স্বাধীনতা আনব।
লুৎফা কথা বলে না। মুজফফর সীমান্তের ওপারে তাকিয়ে থাকে। দেখতে পায় পাকিস্তানি বাহিনী ভারতের সীমান্ত গ্রাম বয়ড়ার দিকে এগিয়ে আসছে। কিছুক্ষণ পরই তীব্র আক্রমণ চালায়। বয়ড়া গ্রামের ঢোকার চেষ্টা করছে। চৌগাছায় মুক্তিবাহিনী প্রতিরোধ করে। শুরু হয় তুমুল যুদ্ধ। মুজফফর লুৎফার হাত ধরে বলে, আমরা যুদ্ধের পেছনের শক্তি হয়ে থাকব। আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য যা কিছু করা দরকার তা করব। আমরা আড়াল হয়ে থাকবনা।
অঞ্জন বলে, চলো ওই পাশে যাই। ওখঅনে গিয়ে দাঁড়ালে যুদ্ধের পরিস্থিতি ভালোভাবে বোঝা যাবে।
মুজফফর কড়কড় শব্দে চেঁচিয়ে বলে, পাকিস্তানি সেনারা ষোলটা ট্যাংক নিয়ে এগিয়েছে। আমি গুণেছি।
- আমিও গুনেছি। আমাদের মুক্তিবাহিনীও সমান ট্যাংক আর ভারী কামান নিয়ে পাকিস্তানি বাহিনীকে আক্রমণ করেছে।
- চলো, কতজন পাকিস্তানি সৈন্য আছে আমরা গুণে দেখি।
- গোণার কি দরকার?
- এজন্য গুণব যে কতজনের সঙ্গে আমাদের যুদ্ধ হচ্ছে তা দেখব।
মুজফফর বলে, আমরা ওই দিকে দাঁড়িয়ে গুণতে পারব। চলো। গুণে ফেলি।
লুৎফা চেঁচিয়ে বলে, যুদ্ধের সময় এটা তোমাদের একটা খেলা হবে। তখন প্রবল গুলির শব্দে মুক্তিযোদ্ধা সালাম মাটিতে গড়িয়ে পড়ে। অঞ্জন একদৌড়ে কাছে গিয়ে বসে পড়ে। দেখতে পায় বুকে গুলি লেগেছে। মুজাফফর কাছে এসে বলে, আপনি আর আমি ওনাকে নিয়ে ওপাশে যাই। আপনি মাথা ধরেন, আমি পায়ের দিক ধরছি। ওখানে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করব। দুজনে সালামকে তুলে নিয়ে চলে যায়। লুৎফা নিজের শাড়ির আঁচল দিয়ে গড়িয়ে পড়া রক্তের ধারা মুছতে থাকে। সালামকে ঘাসের ওপর শুইয়ে দিলে অঞ্জন ওর কাছে রাখা যে ওষুধ আছে তা দিয়ে পরিচর্যা শুরু করে। বুকে গুলি লেগে জ্ঞান হারিয়েছে সালাম। অঞ্জন বুঝতে পারে ওকে বাঁচানো যাবে না। যতক্ষণ বেঁচে থাকবে এইটুকুই ওর যুদ্ধের সময়। ও কাউকে কিছু বলে না। কিন্তু নিজে সরে যায় না। নানাভাবে পরিচর্যা করতে থাকে। একসময় লুৎফা এসে ওর কাছাকাছি বসে। বলে, এখনও জ্ঞান ফিরল না? আমার ভয় করছে? আমি কোনো সেবা করতে পারি?
- না, কিছু করতে পারবে না। আমি যা করছি এটাই ঠিক আছে।
লুৎফা কথা বলে না। সালামের কপালে হাত রাখে। বলে, জ্ঞান ফিরলে আমি প্রথম কথা বলব। আপনি বলবেন না।
- আপনি চুপচাপ বসে থাকেন। কথা বলার দরকার নাই।
- আমি আস্তে আস্তে ওনার জন্য দোয়া পড়ব।
- পড়েন। আল্লাহতালা ওকে বাঁচিয়ে দেবে। আমাদের সামনে একজন মুক্তিযোদ্ধা মরে যাবে এটা আমরা ভাবতে পারি না।
লুৎফা মৃদু স্বরে দোয়া পড়ে। ওর কণ্ঠস্বর চারদিকে ছড়িয়ে যায়। সবাই খুব স্বস্তি বোধ করে। আহত মুক্তিযোদ্ধাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে সবাই অঞ্জনের বুক শীতল হয়ে আসে। বুঝতে পারে সালামকে বাঁচানো যাবে না। ওর শরীর শীতল হয়ে আসছে। জ্ঞান ফিরবে বলে মনে হচ্ছে না।
একটু পরে মুজফফর এসে বলে, পাকিস্তানি সেনারা পাঁচশ জন আছে।
লুৎফা দাঁড়িয়ে উঠে বলে, ওরা আমাদের মুক্তিযোদ্ধার বুকে গুলি মেরেছে। ওদের সবগুলোকে আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা শেষ করবে।
দাঁড়িয়ে থাকা সবাই লুৎফার দিকে তাকিয়ে থাকে। কেউ কোনো কথা বলে না। চারদিকে গোলাগুলির শব্দ প্রবল হয়ে ওঠে। দূর থেকে দেখা যায় বেশ কয়েকজন পাকিস্তানি সেনা গুলিবিদ্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়ে। দূরে দাঁড়িয়ে শরণার্থীরা উৎফুল্ল হয়ে ওঠে। সবাই মিলে স্লোগান দেয়, জয় বাংলা - জয় বাংলা।
অঞ্জন দেখতে পায় মরে গেলেন মুক্তিযোদ্ধা সালাম। উপুড় হয়ে ওর বুকের ওপর মাথা রাখে অঞ্জন। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সবাই এসে সালামকে ঘিরে বসে।
লুৎফা বলে, আমাদের মুক্তিযোদ্ধা শহীদ সালাম - জয় বাংলা।

চলবে...

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৪০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা। পর্ব- ৩৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা পর্ব: ২৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১

 

Header Ad
Header Ad

কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ মিরাজ, দর্শক পছন্দে সেরা ঋতুপর্ণা

ছবি: সংগৃহীত

২০২৪ সালের কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত জমকালো অনুষ্ঠানে তার হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

অন্যদিকে, দর্শক ভোটে সর্বাধিক পছন্দের ক্রীড়াবিদ হিসেবে ‘পপুলার চয়েজ অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করেন নারী সাফ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা জাতীয় নারী ফুটবল দলের মিডফিল্ডার ঋতুপর্ণা চাকমা।

এ বছর ‘স্পোর্টস পারসন অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কার জয়ের দৌড়ে মিরাজ পেছনে ফেলেছেন ঋতুপর্ণা এবং ২০২৪ প্যারিস অলিম্পিকে কোয়ালিফাই করা আর্চার সাগর ইসলামকে। অপরদিকে, ‘পপুলার চয়েজ’ বিভাগে ঋতুপর্ণা এগিয়ে যান মিরাজ ও উদীয়মান পেসার নাহিদ রানাকে ছাড়িয়ে।

 

ছবি: সংগৃহীত

১৯৬৪ সাল থেকে ক্রীড়াবিদদের স্বীকৃতি জানিয়ে আসা দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ক্রীড়া সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএসপিএ) এবছর ১৫টি বিভাগে মোট ১৩ ব্যক্তি, দল ও সংস্থাকে সম্মাননা দেয়। সংগঠনের সভাপতি রেজওয়ান উজ জামান রাজিবের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং স্কয়ার টয়লেট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী।

পুরস্কার গ্রহণ করে মিরাজ বলেন, “বিএসপিএকে ধন্যবাদ প্রতি বছর এমন আয়োজনের জন্য। এটা আমাদের খেলোয়াড়দের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস।” ভুটানে লিগ খেলায় ব্যস্ত থাকায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে না পারলেও ভিডিও বার্তায় ঋতুপর্ণা জানান, “এই সম্মান আমাকে আরও ভালো করার অনুপ্রেরণা দেবে।”

Header Ad
Header Ad

রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা, মগবাজার-মধুবাগে তীব্র ভোগান্তি

রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মগবাজার ও মধুবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় ওয়াসার পানিতে পোকা ও ময়লার উপস্থিতি নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা। ট্যাপের পানি দুর্গন্ধযুক্ত ও অস্বচ্ছ হওয়ায় তা রান্না, গোসল ও দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করতে গিয়ে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, বাসার পানির ট্যাঙ্ক একাধিকবার পরিষ্কার করেও মিলছে না সমাধান। ওয়াসার সাপ্লাই পাইপ থেকেই এই সমস্যার উৎপত্তি বলে মনে করছেন তারা।

মধুবাগ এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, “এই পানি দিয়ে রান্না ও গোসল সম্ভব না। আমাদের বাসার শিশুরা পানি খেতেই চায় না। বাধ্য হয়ে পাম্প থেকে পানি এনে ব্যবহার করতে হচ্ছে।” আরেকজন জানান, “ট্যাঙ্ক পরিস্কার করলে প্রথমে কিছুদিন ভালো থাকে, তারপর আবার পোকা দেখা দেয়।”

বিকল্প না থাকায়, অনেকেই ট্যাপের মুখে কাপড় বেঁধে পানি ব্যবহার করছেন। কিন্তু তারপরও পেটের অসুখ ও চর্মরোগের প্রকোপ বাড়ছে বলেও জানান স্থানীয়রা।

এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঢাকা ওয়াসার তিনজন কর্মকর্তা মধুবাগ এলাকায় পরিদর্শনে যান এবং কয়েকটি বাসা থেকে পানি সংগ্রহ করে পরীক্ষায় পোকা পাওয়ার কথা স্বীকার করেন। তবে দায় চাপান ট্যাঙ্ক ঠিকমতো পরিষ্কার না করাকে। ওয়াসার উপসহকারী প্রকৌশলী তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, “লাইনের পানি পরিষ্কার। ট্যাঙ্ক যদি নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়, তাহলে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।”

তবে এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নন এলাকাবাসী। তারা বলছেন, নিয়মিত ট্যাঙ্ক পরিষ্কারের পরও পানি দূষিত হচ্ছে, যা পাইপলাইনের সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। এ অবস্থায় ওয়াসার কর্মকর্তারা পাইপের মান যাচাইয়ের আশ্বাস দিয়েছেন। এলাকাবাসী দ্রুত সমস্যার স্থায়ী সমাধান চেয়ে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Header Ad
Header Ad

বিদেশি আইনের আওতায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ: গভর্নর

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরাতে হবে বিদেশি আইনের মাধ্যমে এবং এ উদ্যোগ সম্পূর্ণ নতুন। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়াটি দেশের নয়, বরং বিদেশের আইনের সঙ্গে সংযোগ রেখে করতে হবে। এর জন্য আগে সংশ্লিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করতে হবে এবং এস্টেট (সম্পদ) ফ্রিজ করে আদালতের মাধ্যমে বাকি প্রক্রিয়া চালাতে হবে।”

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “প্রথমে এস্টেটগুলো ফ্রিজ করার চেষ্টা করছি। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে, চিঠি পাঠানো হচ্ছে। আইন পরামর্শক নিয়োগে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এস্টেট ট্রেসিং ফার্মের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এস্টেট ফ্রিজ করা গেলে এটিই হবে প্রথম সাফল্য।”

এক প্রশ্নের উত্তরে গভর্নর বলেন, “আমার ধারণা, প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। শুধু বেক্সিমকো গ্রুপেরই প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার মতো অর্থ পাচার হয়েছে। এগুলো বড় গ্রুপের হিসাব, ছোট গ্রুপগুলো এখনো বিবেচনায় আনা হয়নি। ভবিষ্যতে যেন এমন না ঘটে, সে জন্য আমরা প্রয়োজনীয় নিয়ম-কানুন সংশোধনের উদ্যোগ নিচ্ছি।”

তিনি আরও বলেন, “সব সময় আদালতের মাধ্যমে সমাধান না করে, কিছু ক্ষেত্রে সমঝোতার ভিত্তিতেও (আউট অব কোর্ট সেটেলমেন্ট) টাকা ফেরত আনার চিন্তা করছি। তবে সেটার আগে সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকা জরুরি, না হলে আমরা ঠকে যাব।”

মুদ্রাস্ফীতি সংক্রান্ত এক প্রশ্নে গভর্নর বলেন, “অতীতে খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি ৯-১০ শতাংশ দেখানো হলেও বাস্তবে তা ছিল ১৩-১৪ শতাংশ। তবে এখন সেটি ৮-৯ শতাংশে নেমেছে। সামগ্রিকভাবে মুদ্রাস্ফীতি কমতির দিকেই। আগামী বছরে তা ৫ শতাংশ বা তার নিচে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।”

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. জামাল উদ্দিন, ফাইন্যান্স ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের পরিচালক মো. আনিসুর রহমানসহ চট্টগ্রাম কার্যালয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সঞ্চালনায় ছিলেন উপপরিচালক মো. জোবাইর হোসেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ মিরাজ, দর্শক পছন্দে সেরা ঋতুপর্ণা
রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা, মগবাজার-মধুবাগে তীব্র ভোগান্তি
বিদেশি আইনের আওতায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ: গভর্নর
মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম বদল নয়, বরং ঐতিহ্যে ফেরত: ঢাবি উপাচার্য
তৃতীয় বিয়ের ইতি, রোশন সিংয়ের সঙ্গে আইনিভাবে বিচ্ছিন্ন শ্রাবন্তী
৬৪ জেলা নিয়ে তৃণমূল ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজনের ঘোষণা ক্রীড়া উপদেষ্টার
আগামীকাল শনিবার রাজধানীতে “মার্চ ফর গাজা”, পাঁচটি স্থান থেকে শোভাযাত্রা শুরু
অবশেষে নতুন চুক্তি সালাহর, লিভারপুলে থাকছেন ২০২৭ পর্যন্ত
পহেলা বৈশাখের শোভাযাত্রায় হাসিনার মুখাবয়ব
ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে মামলা করল ওপেনএআই
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মৃদু ভূমিকম্প
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে নাগরিক কমিটির নেত্রী দিলশাদ আফরিন আটক
বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কায় ডলারের বড় পতন, রেকর্ড ছুঁয়েছে স্বর্ণের দাম
ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে ১৪৭ দেশ, বাড়ছে বিশ্বজনমত
মার্কিন পণ্যে ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে চীনের পাল্টা জবাব
নারায়ণগঞ্জে দুই নারী ও এক শিশুর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার
ফুটবল মাঠ পেরিয়ে হলিউডে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো
পুলিশের চাকরি পেতে সমন্বয়কদের পেছনে দৌড়ানো বন্ধ করুন: সারজিস
ড. ইউনূসের ৫ বছর ক্ষমতায় থাকার কোনও অধিকার নেই: সেলিমা রহমান
সিটি কর্পোরেশন হচ্ছে বগুড়া, গণশুনানির প্রস্তুতি শুরু