শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫ | ২৮ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৪০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা

দিন গড়ায়। পার হয়ে যায় মাস। সামনে স্বপ্নে দিন প্রবল হয়ে উঠতে থাকে। চারদিক থেকে মুক্তিযুদ্ধের নানা খবর জানতে পারে শরণার্থীরা। কোথায় কি হচ্ছে জেনে নিজেদের পরিস্থিতি ঝাঁকিয়ে তোলে। অনেকে কাছে-ধারে যুদ্ধের নানা জায়গায় চলে যায়। মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করে।

লুৎফা অনেক আগ্রহ নিয়ে মুজফফরকে ধরে চৌগাছা যায়। কাছাকাছি গেলেই টের পায় মুক্তিবাহিনী যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সেখানে এসেছেন রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ-প্রস্তুতির এলাকাগুলো ঘুরে ঘুরে দেখেন। মুজফফর আর লুৎফা অন্যদের কাছ থেকে শুনে বুঝতে পারে যে তিনি কে। তাঁকে ঘিরে লোকজন দাঁড়িয়ে আছে। ওরাও এক জায়গায় দাঁড়ায়। শুনতে পায় তিনি কি বলছেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের দিকে তাকিয়ে বলেন, ‘সেদিন আর দেরি নেই, যেদিন শত্রুর জেল থেকে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে এসে আমাদের রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ঢাকায় মুক্তিবাহিনীর অভিবাদন গ্রহণ করবেন। মুক্তিবাহিনীর বীরযোদ্ধারা শিগগিরই হানাদারদের বঙ্গোপসাগরে নিক্ষেপ করবেন। পৃথিবীর মানচিত্রে স্বাধীন বাংলাদেশ তার নিজের শক্তিতেই রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত আছে এবং থাকবে।’

চারদিক থেকে সবাই চিৎকার করে বলে, বাংলাদেশ বাংলাদেশ। মুজফফর আর লুৎফা উদ্দীপ্ত হয়ে উঠে। সবার কণ্ঠের সঙ্গে নিজেদের কণ্ঠ মেলায়। দেখতে পায় একটু পরে তিনি চলে যাচ্ছেন। অনেকেই তাঁর পেছনে পেছনে হাঁটে, কিন্তু বেশিদূর যেতে পারে না। তিনি ঘুরে দাঁড়িয়ে সবাইকে নিষেধ করেন। মুজফফর আর লুৎফা সীমান্তের কাছে গিয়ে দাঁড়ায়। সামনের দিকে তাকিয়ে দূরে পাকিস্তানি বাহিনীকে দেখে দৌড়াতে দৌড়াতে অন্যদিকে চলে যায়। এক জায়গায় গিয়ে দাঁড়ালে একজন বলে, ওই দেখেন, ওইটা ভারতের বয়ড়া গ্রাম। ওই গ্রামের পাশেই আমাদের চৌগাছা। মুজফফর লুৎফার হাত ধরে বলে, চলো ওখান থেকে ঘুরে আসি।

লুৎফা দ্রুত পায়ে এগিয়ে যায়। মুজফফরের হাঁটার পেছনে থাকে না। বয়ড়ার মাটিতে পা রেখে দুজনে চারদিকে তাকায়। দেখতে পায় অনেক দূরে পাকিস্তানি বাহিনী স্কোয়াড্রন ট্যাঙ্ক বহর নিয়ে অপেক্ষা করছে। লুৎফা ওই দিকে তাকিয়ে বলে, ওরা কি শরণার্থীদের মেরে ফেলার জন্য তৈরি হয়েছে? আমাদের শত্রু ভাবছে, যে কোনো সময় ছুটে আসতে পারে।
-আসুক। এলে আমরা কি ছাড়ব নাকি? আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা বাধা দেবে।
-তাই যেন হয়। আমরা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কাছে নতি স্বীকার করব না।
-কি যে বল এসব কথা। নতি স্বীকারের তো প্রশ্নই উঠে না। যদি শহীদ হতে হয় সবাই মিলে শহীদ হব। আমাদের ছেলেমেয়েরা স্বাধীন দেশের মানুষ হবে।
-স্বাধীনতার জন্য যা কিছু ঘটবে, ঘটুক। আমরা সবাইকে সালাম জানাই। দেখছিতো চৌগাছার এখানে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধের জন্য তৈরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাকিস্তানি বাহিনী এগিয়ে এলে রেহাই পাবে না। মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হবে।
-হয়েছে থাক। চলো আমরা যাই। যুদ্ধ শুরু হলে আমরা এখানে আসব।
-আমিও আসব। আমি যুদ্ধের মানুষ হতে চাই। শূন্য হাতে স্বাধীনতা চাই না। স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দিতে রেডি আছি।
-তুমি খুব সাহসী মহিলা লুৎফা।
-স্বাধীনতার জন্য সাহস তো থাকতেই হবে।
-আমার বউয়ের সাহস দেখে আমি অবাক হচ্ছি।
-ভালোবাসা দেখে অবাক হওনি?
-বাব্বা, তোমার সঙ্গে কথা বলে আমি পারি না। তোমার ভালোবাসা আমাকে অবাক করেনি। জীবনকে ফুলবাগান করেছে। কত রঙের ফুল, আর কত সুন্দর সুবাস। নিশ্বাস টানলে বুক ভরে যায়। তোমার ভালোবাসা আমাকে এভাবে উৎফুল্ল করে।
-আমার প্রাণ ভরে গেল তোমার কথায়। চলো দুজনে ফিরে যাই।
-আমাদের শরণার্থী জীবনে আমরা দুজনে দুজনকে আবিষ্কার করলাম।
-ঘরে গিয়ে আমরা একটি বাচ্চা নেব। যেন ওর জন্ম হয় শরণার্থী শিবিরে।

মুজফফর জোরে জোরে বলে, না আমি চাই না। দেশ স্বাধীন হলে তারপর আমাদের অনেক স্বপ্ন পূরণ হবে। শরণার্থী শিবির মানে আমাদের এখন যুদ্ধের দিন। যুদ্ধ ছাড়া আমরা আর অন্যকিছু চিন্তা করব না।

লুৎফা এই কথায় দমে যায়। এটাইতো সঠিক কথা। ও নিজে কেন চিন্তা করল না। নিজের উপর রাগ হয়। লুৎফা আর কথা বলে না। নিশ্চুপ হয়ে যায়। নতুন ভাবনা ওকে আলোড়িত করে। ভাবে, এখান থেকে চৌগাছায় চলে যাবে। সেখানে থাকার জায়গা না পেলে গাছের নিচে থাকব, এমন ভাবনা ওকে আলোড়িত করে। মুজফফরের হাত ধরে দ্রুতপায়ে ফিরে আসে তাঁবুতে। মেঝেতে বসে পড়ে বলে, আমি আর এখানে থাকব না। চৌগাছায় যাব।
-হ্যাঁ, আমিও যাব। জীবনের মায়া নিয়ে পড়ে থাকব না।
-কবে যাব আমরা?
-দু’একদিনের মধ্যে।
-কালকেই যাই?
-হ্যাঁ, চলো। চাল-ডাল সব যা আছে গুছিয়ে নাও।
-তাতো নিতে হবেই। তুমি কিছু ভেবো না। আমি সব গুছিয়ে নেব। খাবারের জন্য কারো কাছে হাত পাততে হবে না।
-আমিতো জানি তোমার মাথায় এমন চিন্তাই থাকবে। তোমার কাছে পিছুটানের হিসাব নেই। লুৎফা হাসতে হাসতে বলে, তুমি আমাকে খুব ভালো করে বোঝ। এটাই তোমার ভালোবাসা।
কথা বলে উঠে বসে লুৎফা। তাঁবুর ভেতরের সবকিছু এক জায়গায় এনে গোছাতে শুরু করে।
মুজাফফর বাইরে ঘুরতে যায়।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা। পর্ব- ৩৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা পর্ব: ২৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১

Header Ad
Header Ad

কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ মিরাজ, দর্শক পছন্দে সেরা ঋতুপর্ণা

ছবি: সংগৃহীত

২০২৪ সালের কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত জমকালো অনুষ্ঠানে তার হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

অন্যদিকে, দর্শক ভোটে সর্বাধিক পছন্দের ক্রীড়াবিদ হিসেবে ‘পপুলার চয়েজ অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করেন নারী সাফ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা জাতীয় নারী ফুটবল দলের মিডফিল্ডার ঋতুপর্ণা চাকমা।

এ বছর ‘স্পোর্টস পারসন অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কার জয়ের দৌড়ে মিরাজ পেছনে ফেলেছেন ঋতুপর্ণা এবং ২০২৪ প্যারিস অলিম্পিকে কোয়ালিফাই করা আর্চার সাগর ইসলামকে। অপরদিকে, ‘পপুলার চয়েজ’ বিভাগে ঋতুপর্ণা এগিয়ে যান মিরাজ ও উদীয়মান পেসার নাহিদ রানাকে ছাড়িয়ে।

 

ছবি: সংগৃহীত

১৯৬৪ সাল থেকে ক্রীড়াবিদদের স্বীকৃতি জানিয়ে আসা দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ক্রীড়া সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএসপিএ) এবছর ১৫টি বিভাগে মোট ১৩ ব্যক্তি, দল ও সংস্থাকে সম্মাননা দেয়। সংগঠনের সভাপতি রেজওয়ান উজ জামান রাজিবের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং স্কয়ার টয়লেট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী।

পুরস্কার গ্রহণ করে মিরাজ বলেন, “বিএসপিএকে ধন্যবাদ প্রতি বছর এমন আয়োজনের জন্য। এটা আমাদের খেলোয়াড়দের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস।” ভুটানে লিগ খেলায় ব্যস্ত থাকায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে না পারলেও ভিডিও বার্তায় ঋতুপর্ণা জানান, “এই সম্মান আমাকে আরও ভালো করার অনুপ্রেরণা দেবে।”

Header Ad
Header Ad

রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা, মগবাজার-মধুবাগে তীব্র ভোগান্তি

রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মগবাজার ও মধুবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় ওয়াসার পানিতে পোকা ও ময়লার উপস্থিতি নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা। ট্যাপের পানি দুর্গন্ধযুক্ত ও অস্বচ্ছ হওয়ায় তা রান্না, গোসল ও দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করতে গিয়ে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, বাসার পানির ট্যাঙ্ক একাধিকবার পরিষ্কার করেও মিলছে না সমাধান। ওয়াসার সাপ্লাই পাইপ থেকেই এই সমস্যার উৎপত্তি বলে মনে করছেন তারা।

মধুবাগ এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, “এই পানি দিয়ে রান্না ও গোসল সম্ভব না। আমাদের বাসার শিশুরা পানি খেতেই চায় না। বাধ্য হয়ে পাম্প থেকে পানি এনে ব্যবহার করতে হচ্ছে।” আরেকজন জানান, “ট্যাঙ্ক পরিস্কার করলে প্রথমে কিছুদিন ভালো থাকে, তারপর আবার পোকা দেখা দেয়।”

বিকল্প না থাকায়, অনেকেই ট্যাপের মুখে কাপড় বেঁধে পানি ব্যবহার করছেন। কিন্তু তারপরও পেটের অসুখ ও চর্মরোগের প্রকোপ বাড়ছে বলেও জানান স্থানীয়রা।

এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঢাকা ওয়াসার তিনজন কর্মকর্তা মধুবাগ এলাকায় পরিদর্শনে যান এবং কয়েকটি বাসা থেকে পানি সংগ্রহ করে পরীক্ষায় পোকা পাওয়ার কথা স্বীকার করেন। তবে দায় চাপান ট্যাঙ্ক ঠিকমতো পরিষ্কার না করাকে। ওয়াসার উপসহকারী প্রকৌশলী তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, “লাইনের পানি পরিষ্কার। ট্যাঙ্ক যদি নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়, তাহলে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।”

তবে এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নন এলাকাবাসী। তারা বলছেন, নিয়মিত ট্যাঙ্ক পরিষ্কারের পরও পানি দূষিত হচ্ছে, যা পাইপলাইনের সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। এ অবস্থায় ওয়াসার কর্মকর্তারা পাইপের মান যাচাইয়ের আশ্বাস দিয়েছেন। এলাকাবাসী দ্রুত সমস্যার স্থায়ী সমাধান চেয়ে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Header Ad
Header Ad

বিদেশি আইনের আওতায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ: গভর্নর

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরাতে হবে বিদেশি আইনের মাধ্যমে এবং এ উদ্যোগ সম্পূর্ণ নতুন। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়াটি দেশের নয়, বরং বিদেশের আইনের সঙ্গে সংযোগ রেখে করতে হবে। এর জন্য আগে সংশ্লিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করতে হবে এবং এস্টেট (সম্পদ) ফ্রিজ করে আদালতের মাধ্যমে বাকি প্রক্রিয়া চালাতে হবে।”

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “প্রথমে এস্টেটগুলো ফ্রিজ করার চেষ্টা করছি। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে, চিঠি পাঠানো হচ্ছে। আইন পরামর্শক নিয়োগে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এস্টেট ট্রেসিং ফার্মের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এস্টেট ফ্রিজ করা গেলে এটিই হবে প্রথম সাফল্য।”

এক প্রশ্নের উত্তরে গভর্নর বলেন, “আমার ধারণা, প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। শুধু বেক্সিমকো গ্রুপেরই প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার মতো অর্থ পাচার হয়েছে। এগুলো বড় গ্রুপের হিসাব, ছোট গ্রুপগুলো এখনো বিবেচনায় আনা হয়নি। ভবিষ্যতে যেন এমন না ঘটে, সে জন্য আমরা প্রয়োজনীয় নিয়ম-কানুন সংশোধনের উদ্যোগ নিচ্ছি।”

তিনি আরও বলেন, “সব সময় আদালতের মাধ্যমে সমাধান না করে, কিছু ক্ষেত্রে সমঝোতার ভিত্তিতেও (আউট অব কোর্ট সেটেলমেন্ট) টাকা ফেরত আনার চিন্তা করছি। তবে সেটার আগে সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকা জরুরি, না হলে আমরা ঠকে যাব।”

মুদ্রাস্ফীতি সংক্রান্ত এক প্রশ্নে গভর্নর বলেন, “অতীতে খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি ৯-১০ শতাংশ দেখানো হলেও বাস্তবে তা ছিল ১৩-১৪ শতাংশ। তবে এখন সেটি ৮-৯ শতাংশে নেমেছে। সামগ্রিকভাবে মুদ্রাস্ফীতি কমতির দিকেই। আগামী বছরে তা ৫ শতাংশ বা তার নিচে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।”

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. জামাল উদ্দিন, ফাইন্যান্স ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের পরিচালক মো. আনিসুর রহমানসহ চট্টগ্রাম কার্যালয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সঞ্চালনায় ছিলেন উপপরিচালক মো. জোবাইর হোসেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ মিরাজ, দর্শক পছন্দে সেরা ঋতুপর্ণা
রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা, মগবাজার-মধুবাগে তীব্র ভোগান্তি
বিদেশি আইনের আওতায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ: গভর্নর
মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম বদল নয়, বরং ঐতিহ্যে ফেরত: ঢাবি উপাচার্য
তৃতীয় বিয়ের ইতি, রোশন সিংয়ের সঙ্গে আইনিভাবে বিচ্ছিন্ন শ্রাবন্তী
৬৪ জেলা নিয়ে তৃণমূল ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজনের ঘোষণা ক্রীড়া উপদেষ্টার
আগামীকাল শনিবার রাজধানীতে “মার্চ ফর গাজা”, পাঁচটি স্থান থেকে শোভাযাত্রা শুরু
অবশেষে নতুন চুক্তি সালাহর, লিভারপুলে থাকছেন ২০২৭ পর্যন্ত
পহেলা বৈশাখের শোভাযাত্রায় হাসিনার মুখাবয়ব
ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে মামলা করল ওপেনএআই
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মৃদু ভূমিকম্প
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে নাগরিক কমিটির নেত্রী দিলশাদ আফরিন আটক
বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কায় ডলারের বড় পতন, রেকর্ড ছুঁয়েছে স্বর্ণের দাম
ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে ১৪৭ দেশ, বাড়ছে বিশ্বজনমত
মার্কিন পণ্যে ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে চীনের পাল্টা জবাব
নারায়ণগঞ্জে দুই নারী ও এক শিশুর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার
ফুটবল মাঠ পেরিয়ে হলিউডে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো
পুলিশের চাকরি পেতে সমন্বয়কদের পেছনে দৌড়ানো বন্ধ করুন: সারজিস
ড. ইউনূসের ৫ বছর ক্ষমতায় থাকার কোনও অধিকার নেই: সেলিমা রহমান
সিটি কর্পোরেশন হচ্ছে বগুড়া, গণশুনানির প্রস্তুতি শুরু