শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫ | ২৮ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৩৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা

পরক্ষণে এক চামচ সুজির হালুয়া মুজফফরের মুখের সামনে ধরে বলে, খাও। মুজফফর চট করে খেয়ে নেয়। ভাবে, এটা একরকম খাওয়া না, অন্যরকম। হাসতে হাসতে বলে, বেশ করে খাওয়ালে। পেট ভরে না, কিন্তু মন ভরে যায়।
-মন ভরাতেইতো চেয়েছি। চাইলে পেটও ভরাতে পারব। দেব?
-না, না। তোমার ভালোবাসায় মন ভরিয়ে আমি বেঁচে থাকতে চাই।
-বাব্বা, এতবড় কথা বললে।
-বলবইতো। তুমি আমাকে পরীর মতো ভালোবাস। তোমার ভালোবাসায় আমি বাতাসে উড়ি, নদীতে ভাসি, মাটিতে গড়াই।
খিলখিলিয়ে হাসে লুৎফা। হাসতে হাসতে উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে।
-হাসছ কেন?
-আনন্দে হাসছি। তোমার কথায় আমার বুক ভরে গেছে। কত সুন্দর করে ভালোবাসার কথা বললে তুমি।
-বলবইতো। ভালোবাসা পেলে বলব না কেন? তুমিওতো আমার ভালোবাসা পাও।
-হ্যাঁ, পাইতো। তোমার কথা আমারও কথা। আমরা দুজনে এক হয়ে দাঁড়িয়েছি সংসারের কাঠগড়ায়।
মুজফফর হা-হা করে হাসে। কাঠগড়া শব্দ শুনে মাথা দপদপ করে ওঠে। লুৎফা হা করে তাকিয়ে থেকে বলে, হাসছ কেন?
-হাসব না কেন? ভালোবাসার সংসারকে তুমি কাঠগড়া বানালে। আমরা কি আসামি?
লুৎফাও হাসতে হাসতে বলে, হ্যাঁ, আমরা ভালোবাসার সংসারে আসামি। দুজনে দুজনকে ভালোবাসা ছাড়া আর কিছু পারি না। দুজনে দুজনকে ভালোবাসায় খুন করেছি। ঠিক না?
-হ্যাঁ, ঠিক বলেছ। আমিতো আমার পুরো শরীরের ভালোবাসার রক্ত মেখে আছি।
আমিও ভালোবাসার রক্ত মেখে আছি। এই রক্তের রঙ লাল না গোলাপি।
-আমি মনে করি রক্তের রঙ সবুজ। জীবনভর গাছ-গাছালি, অনেকর রকম ফুল, কত পাখি ডানা মেলে ঘুরে বেড়ায়। আমার সবুজ রঙের ভালোবাসায় সবুজ ছবি ভেসে থাকে। মন ভরে যায় ছবি দেখে। চোখ জুড়িয়ে যায়। তুমি আমার সবুজ প্রকৃতি।
-বাব্বা অনেক কথা বললে।
-এটাতো শুধু কথা না।
-জানি কথা না, ভালোবাসার রক্ত। এই রক্তকে গায়ে মেখে ভালোবাসার বসন্ত বাতাস করি। চলো শুয়ে থাকি। গভীর নিশ্বাস ফেলে ভরিয়ে দেব তাঁবুর ছোট জায়গাটি। বলব, স্বাধীনতার স্বপ্ন নিয়ে এই নিশ্বাস আমার বসন্ত বাতাস।
-বাব্বা, আজ তোমার মনের দরজা খুলে গেছে। হু-হু করে বেরিয়ে আসছে ভালোবাসার বসন্ত বাতাস। যাই, বাইরে দেখি অন্যরা কি করছে।

মুজফফর তাঁবু থেকে বেরিয়ে গেলে লুৎফা মাটিতে বিছানা মাদুরের উপর শুয়ে পড়ে। মাথার নিচে বালিশ নেই। ওর মাথা মাটিতে গড়ায়। নিজেকে বলে, মাথায় মাটি নিয়ে স্বাধীন দেশে যাব। আমার দেশের মাটি আমার বুকে থাকবে। আর সব দেশের মাটি মাথায় থাকবে। আমি মাটি থেকে দূরে থাকবনা। মাটি হবে বেঁচে থাকার উৎস। ভাবতে ভাবতে উপুড় হয়ে মাথা দোলায়। বিড়বিড় করে বলে, আমার মাটি আমার দেশ। আমার মাটি আমার স্বাধীনতা, আমার মাটি আমার স্বপ্ন। মাটিতে মাথা ঘঁষতে ঘঁষতে দুচোখ পানিতে ভরে যায়। লুৎফা একসময় গুণগুণ করে গায়

-‘ও আমার দেশের মাটি তোমার পরে ঠেকাই মাথা।’ একটি লাইনই অনেকক্ষণ ধরে গাইতে থাকে। মাটি আর গানের সুরে ওর শরণার্থী জীবন উৎফুল্ল হয়ে ওঠে। ওর মাথা সোজা করার ইচ্ছা হয় না। একটুপরে মুজফফর ফিরে এসে তাঁবুর সামনে দাঁড়িয়ে থাকে। লুৎফার কন্ঠ থেকে ভেসে আসা গানের মাধুর্য ওকে বিমোহিত করে রাখে। ওর ভেতরে ঢোকার ইচ্ছা হয় না। কারণ ওকে দেখলে থেকে যাবে লুৎফার প্রাণঢালা সংগীত। ও তখন ওর সঙ্গে নানা কথা বলা শুরু করবে। তারচেয়ে এই গুণগুণ ধ্বণি অনেক বেশি আনন্দের। মুজাফফর চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে। নিজেও মাটির ভাবনায় আপ্লুত হয়। এক সময় থেমে যায় লুৎফার কন্ঠস্বর। মুজফফর সঙ্গে সঙ্গে তাঁবুর ভেতর ঢোকে। লুৎফা তখনো মাটিতে শুয়ে আছে। মুজফফর পাশে গিয়ে বসে পিঠে হাত রেখে বলে, চল দুজনে মিলে গানের লাইনটা গাই। তোমার গান আমার বুকের ভেতর নাড়িয়ে দিয়েছে। এই মাটির টানে আমরা স্বাধীন দেশে যাব।
-স্বাধীন দেশের জন্য তোমাকে যুদ্ধ করতে হবে।
-যুদ্ধ করার জন্য অস্ত্র চালানো শিখতে হবে। কোথায় শিখব জানি না তো।
-আশেপাশে খোঁজ নিয়ে দেখনা।
-তাহলে আমি কালকে চৌগাছায় যাব। দেখব কি করতে পারি।
-হ্যাঁ, যাও যাও। আমিও যাব তোমার সঙ্গে।
-তুমি গিয়ে কী করবে?
-যুদ্ধ করব। তোমার সঙ্গে থেকে যা করতে হয় তার সব কাজ করব।
-ঠিক আছে। তাহলে আমরা একসঙ্গেই যাব।
খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে লুৎফা। হাসতে হাসতে বলে, আমার ভাগ্য ভালো যে তুমি আমাকে না বলোনি। তুমি না বললে আমি কাঁদতে কাঁদতে শেষ হয়ে যেতাম।
-চল, যশোর রোডে হেঁটে আসি।
-চল, দেখি চারদিকের অবস্থা কী।
দুজনে তাঁবু থেকে বেরিয়ে পড়ে। হাত ধরে হাঁটে। মুজফফর মৃদু হেসে বলে, দূর থেকে কেউ দেখলে বলবে আপনার বউ কি হারিয়ে যাবে?
-তাহলে হাত ছেড়ে দাও।
-না, ছাড়ব না। তুমি হারাবে কেন? এটা আমার মাথায় নাই। আমি ভালোবাসার হাত ধরেছি।

লুৎফা দুজনের হাত বুকে চেপে ধরে। মুজফফর হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বলে, আর হাত ধরে হাঁটব না। লোকে হাসবে। দুজনে চুপচাপ হেঁটে এগোয়। দেখতে পায় অঞ্জন গাছের নিচে বসে খবর শুনছে। মুজফফর আর লুৎফা ওর সামনে গিয়ে বসে।
-কি খবর শুনছেন অঞ্জন ভাই?
-খবরটা আমেরিকার। ওখানে নিউইয়র্কে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে গানের আসর অনুষ্ঠিত হয়। বলা হয় কনসার্ট ফর বাংলাদেশ। সব টিকিট বিক্রি হয়েছে।
লুৎফা চেঁচিয়ে বলে, দারুণ খবর জানালেন অঞ্জন ভাই।
-আরও বড় খবর আছে ভাবী। এই টাকা ইউনিসেফের মাধ্যমে শরণার্থীদের দেওয়া হবে। ওখানে একজন গায়ক একটি গান গেয়েছেন যে গানের লাইনে ছিল বাংলাদেশ বাংলাদেশ।

মুজফফর লাফ দিয়ে দুহাত উপরে তুলে বলে, আমরা এখনও স্বাধীন হইনি। কিন্তু দুনিয়ার মানুষের কাছে বাংলাদেশ নাম পৌঁছে গেছে। ওহ গানটা শুনলে আমরাও গাইতাম বাংলাদেশ বাংলাদেশ। রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা সবাই হাততালি দিয়ে লাফালাফি করে। চিৎকার করে বলতে থাকে, বাংলাদেশ বাংলাদেশ। চারদিক থেকে লোকজন এগিয়ে আসে

-সবার মুখে মুখে উচ্চারিত হতে থাকে কনসার্ট ফর বাংলাদেশ। তিনটি শব্দ আকাশ-বাতাস তোলপাড় করে। যারা শব্দ তিনটি বুঝতে পারেনা তারা অঞ্জনকে বলে, অঞ্জন ভাই আমাদেরকে বলেন কনসার্ট ফর বাংলাদেশ কী? অঞ্জন ওদেরকে বুঝিয়ে দিলে সবাই একসঙ্গে বলে, দুনিয়ার সামনে বাংলাদেশ ফুটে উঠেছে। আমাদের স্বাধীনতার দেরি নাই। আমরা যশোর রোড থেকে মিছিল করে স্বাধীন দেশে ঢুকব। হুররে, বাংলাদেশ. বাংলাদেশ।
চলবে...

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা। পর্ব- ৩৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা পর্ব: ২৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১

 

Header Ad
Header Ad

কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ মিরাজ, দর্শক পছন্দে সেরা ঋতুপর্ণা

ছবি: সংগৃহীত

২০২৪ সালের কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত জমকালো অনুষ্ঠানে তার হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

অন্যদিকে, দর্শক ভোটে সর্বাধিক পছন্দের ক্রীড়াবিদ হিসেবে ‘পপুলার চয়েজ অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করেন নারী সাফ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা জাতীয় নারী ফুটবল দলের মিডফিল্ডার ঋতুপর্ণা চাকমা।

এ বছর ‘স্পোর্টস পারসন অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কার জয়ের দৌড়ে মিরাজ পেছনে ফেলেছেন ঋতুপর্ণা এবং ২০২৪ প্যারিস অলিম্পিকে কোয়ালিফাই করা আর্চার সাগর ইসলামকে। অপরদিকে, ‘পপুলার চয়েজ’ বিভাগে ঋতুপর্ণা এগিয়ে যান মিরাজ ও উদীয়মান পেসার নাহিদ রানাকে ছাড়িয়ে।

 

ছবি: সংগৃহীত

১৯৬৪ সাল থেকে ক্রীড়াবিদদের স্বীকৃতি জানিয়ে আসা দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ক্রীড়া সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএসপিএ) এবছর ১৫টি বিভাগে মোট ১৩ ব্যক্তি, দল ও সংস্থাকে সম্মাননা দেয়। সংগঠনের সভাপতি রেজওয়ান উজ জামান রাজিবের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং স্কয়ার টয়লেট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী।

পুরস্কার গ্রহণ করে মিরাজ বলেন, “বিএসপিএকে ধন্যবাদ প্রতি বছর এমন আয়োজনের জন্য। এটা আমাদের খেলোয়াড়দের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস।” ভুটানে লিগ খেলায় ব্যস্ত থাকায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে না পারলেও ভিডিও বার্তায় ঋতুপর্ণা জানান, “এই সম্মান আমাকে আরও ভালো করার অনুপ্রেরণা দেবে।”

Header Ad
Header Ad

রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা, মগবাজার-মধুবাগে তীব্র ভোগান্তি

রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মগবাজার ও মধুবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় ওয়াসার পানিতে পোকা ও ময়লার উপস্থিতি নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা। ট্যাপের পানি দুর্গন্ধযুক্ত ও অস্বচ্ছ হওয়ায় তা রান্না, গোসল ও দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করতে গিয়ে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, বাসার পানির ট্যাঙ্ক একাধিকবার পরিষ্কার করেও মিলছে না সমাধান। ওয়াসার সাপ্লাই পাইপ থেকেই এই সমস্যার উৎপত্তি বলে মনে করছেন তারা।

মধুবাগ এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, “এই পানি দিয়ে রান্না ও গোসল সম্ভব না। আমাদের বাসার শিশুরা পানি খেতেই চায় না। বাধ্য হয়ে পাম্প থেকে পানি এনে ব্যবহার করতে হচ্ছে।” আরেকজন জানান, “ট্যাঙ্ক পরিস্কার করলে প্রথমে কিছুদিন ভালো থাকে, তারপর আবার পোকা দেখা দেয়।”

বিকল্প না থাকায়, অনেকেই ট্যাপের মুখে কাপড় বেঁধে পানি ব্যবহার করছেন। কিন্তু তারপরও পেটের অসুখ ও চর্মরোগের প্রকোপ বাড়ছে বলেও জানান স্থানীয়রা।

এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঢাকা ওয়াসার তিনজন কর্মকর্তা মধুবাগ এলাকায় পরিদর্শনে যান এবং কয়েকটি বাসা থেকে পানি সংগ্রহ করে পরীক্ষায় পোকা পাওয়ার কথা স্বীকার করেন। তবে দায় চাপান ট্যাঙ্ক ঠিকমতো পরিষ্কার না করাকে। ওয়াসার উপসহকারী প্রকৌশলী তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, “লাইনের পানি পরিষ্কার। ট্যাঙ্ক যদি নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়, তাহলে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।”

তবে এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নন এলাকাবাসী। তারা বলছেন, নিয়মিত ট্যাঙ্ক পরিষ্কারের পরও পানি দূষিত হচ্ছে, যা পাইপলাইনের সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। এ অবস্থায় ওয়াসার কর্মকর্তারা পাইপের মান যাচাইয়ের আশ্বাস দিয়েছেন। এলাকাবাসী দ্রুত সমস্যার স্থায়ী সমাধান চেয়ে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Header Ad
Header Ad

বিদেশি আইনের আওতায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ: গভর্নর

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরাতে হবে বিদেশি আইনের মাধ্যমে এবং এ উদ্যোগ সম্পূর্ণ নতুন। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়াটি দেশের নয়, বরং বিদেশের আইনের সঙ্গে সংযোগ রেখে করতে হবে। এর জন্য আগে সংশ্লিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করতে হবে এবং এস্টেট (সম্পদ) ফ্রিজ করে আদালতের মাধ্যমে বাকি প্রক্রিয়া চালাতে হবে।”

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “প্রথমে এস্টেটগুলো ফ্রিজ করার চেষ্টা করছি। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে, চিঠি পাঠানো হচ্ছে। আইন পরামর্শক নিয়োগে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এস্টেট ট্রেসিং ফার্মের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এস্টেট ফ্রিজ করা গেলে এটিই হবে প্রথম সাফল্য।”

এক প্রশ্নের উত্তরে গভর্নর বলেন, “আমার ধারণা, প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। শুধু বেক্সিমকো গ্রুপেরই প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার মতো অর্থ পাচার হয়েছে। এগুলো বড় গ্রুপের হিসাব, ছোট গ্রুপগুলো এখনো বিবেচনায় আনা হয়নি। ভবিষ্যতে যেন এমন না ঘটে, সে জন্য আমরা প্রয়োজনীয় নিয়ম-কানুন সংশোধনের উদ্যোগ নিচ্ছি।”

তিনি আরও বলেন, “সব সময় আদালতের মাধ্যমে সমাধান না করে, কিছু ক্ষেত্রে সমঝোতার ভিত্তিতেও (আউট অব কোর্ট সেটেলমেন্ট) টাকা ফেরত আনার চিন্তা করছি। তবে সেটার আগে সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকা জরুরি, না হলে আমরা ঠকে যাব।”

মুদ্রাস্ফীতি সংক্রান্ত এক প্রশ্নে গভর্নর বলেন, “অতীতে খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি ৯-১০ শতাংশ দেখানো হলেও বাস্তবে তা ছিল ১৩-১৪ শতাংশ। তবে এখন সেটি ৮-৯ শতাংশে নেমেছে। সামগ্রিকভাবে মুদ্রাস্ফীতি কমতির দিকেই। আগামী বছরে তা ৫ শতাংশ বা তার নিচে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।”

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. জামাল উদ্দিন, ফাইন্যান্স ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের পরিচালক মো. আনিসুর রহমানসহ চট্টগ্রাম কার্যালয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সঞ্চালনায় ছিলেন উপপরিচালক মো. জোবাইর হোসেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ মিরাজ, দর্শক পছন্দে সেরা ঋতুপর্ণা
রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা, মগবাজার-মধুবাগে তীব্র ভোগান্তি
বিদেশি আইনের আওতায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ: গভর্নর
মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম বদল নয়, বরং ঐতিহ্যে ফেরত: ঢাবি উপাচার্য
তৃতীয় বিয়ের ইতি, রোশন সিংয়ের সঙ্গে আইনিভাবে বিচ্ছিন্ন শ্রাবন্তী
৬৪ জেলা নিয়ে তৃণমূল ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজনের ঘোষণা ক্রীড়া উপদেষ্টার
আগামীকাল শনিবার রাজধানীতে “মার্চ ফর গাজা”, পাঁচটি স্থান থেকে শোভাযাত্রা শুরু
অবশেষে নতুন চুক্তি সালাহর, লিভারপুলে থাকছেন ২০২৭ পর্যন্ত
পহেলা বৈশাখের শোভাযাত্রায় হাসিনার মুখাবয়ব
ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে মামলা করল ওপেনএআই
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মৃদু ভূমিকম্প
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে নাগরিক কমিটির নেত্রী দিলশাদ আফরিন আটক
বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কায় ডলারের বড় পতন, রেকর্ড ছুঁয়েছে স্বর্ণের দাম
ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে ১৪৭ দেশ, বাড়ছে বিশ্বজনমত
মার্কিন পণ্যে ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে চীনের পাল্টা জবাব
নারায়ণগঞ্জে দুই নারী ও এক শিশুর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার
ফুটবল মাঠ পেরিয়ে হলিউডে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো
পুলিশের চাকরি পেতে সমন্বয়কদের পেছনে দৌড়ানো বন্ধ করুন: সারজিস
ড. ইউনূসের ৫ বছর ক্ষমতায় থাকার কোনও অধিকার নেই: সেলিমা রহমান
সিটি কর্পোরেশন হচ্ছে বগুড়া, গণশুনানির প্রস্তুতি শুরু