শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫ | ২৮ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৩৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা


দ্রুতপায়ে তাঁবু থেকে বেরিয়ে ও কান্নারত আর এক শিশুর কাছে যায়। তাঁবুর সামনে গিয়ে দাঁড়ালে বেরিয়ে আসে ওর বাবা।
- কি হয়েছে বাচ্চাটার? কাঁদে কেন?
-বলে যে পেট ব্যথা করছে।
এবং এই পর্যন্ত সংশোধণ করা হলো
-কি খাইয়েছেন?
-আমি জানিনা, ওর মা জানে।
হঠাৎ করে কান্না থেকে যায়। গড়িয়ে পড়ে ছেলেটি।
অঞ্জন আঁতকে উঠে বলে, কি হলো?
-কি আর হবে, কান্না বন্ধ করেছে।
-আপনি ওকে বাইরে নিয়ে আসেন।

মুজাফফর ভেতরে ঢুকে ছেলেকে কোলে করে বাইয়ে আনে। বুকে জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে থাকে। অঞ্জন ওকে কোলে নিয়ে পরীক্ষা করে দেখে যে, মরে গেছে বাচ্চাটি। ও মুখে কিছু বলেনা। শরণার্থী শিবিরে এমন মৃত্যু প্রায়ই দেখতে হয়। কিছু করার উপায় নাই। মুহূর্তে চিৎকার করে কেঁদে ওঠে ওর বাবা। পেছন থেকে ওর মাও। মৃত শিশুটিকে ওদের কোলে দিতে হবে এই ভাবনা ওকে মর্মাহত করে। সেজন্য শিশুটিকে বুকে জড়িয়ে রাখে। চোখ থেকে জল ঝরতে শুরু করে। অঞ্জন তাঁবুর সামনে এসে দাঁড়ায়। দুকান ভরে বাবা-মায়ের কান্নার শব্দ শোনে। এ কান্না থামানোর জন্য কিছু বলার নেই। এখন বুকের ভেতরে নদীর স্রোতের মতো বয়ে যাবে কান্নার ঢেউ।

ছেলেকে কোলে নিয়ে মুজাফফর এগিয়ে যেতে থাকে। ধানক্ষেতের পাশে গিয়ে বসে পড়ে। মৃত ছেলেকে কোলে রাখে। আশপাশের থেকে লোকজন আসতে শুরু করে। কেউ কেউ মুজাফফরের পাশে বসে। বাকিরা এদিক ওদিকে দাঁড়িয়ে থাকে। কেউ কোনো কথা বলে না। মৃত ছেলেকে কোলে নিয়ে বসে থাকা বাবাকে কি বলবে? কবর দিতে হবে এটাতো বাবাই ভালো জানে। বলবে কি, একটা কি কবর খুঁড়ে দেব? না, সে কথা কেই বলবে না। এখানে খোঁড়া হবে না, গর্ত খুঁড়তে হবে। সবাই চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে। তখন মুজাফফর ছেলে ঘাসের ওপর শুইয়ে রেখে বলে, আসেন আমরা জানাজা পড়ি।

-এটাতো জানাজা পড়ার জায়গা না। সবাই একসঙ্গে দাঁড়াতে পারব না।
-সেটাতো আমিও দেখছি। যেখানে পারি এলোমেলোভাবে দাঁড়াই। তাও জানাজা হোক। সবাই ধানক্ষেতের পাশে এলোমেলোভাবে দাঁড়ায়। সবাই যারা যার মতো করে সুরা পড়ে। আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ে সবার কন্ঠস্বর। সুরার শব্দ শুনে বিভিন্ন দিক থেকে এগিয়ে আসে অনেকে। তারাও মাথায় টুপি দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। সকলের বুকের ভেতর তড়পায় শোক। ঘাসের ওপর রেখে দেয়া শিশুটির দিকে তাকালে পানিতে চোখ ভরে যায়।

একসময় শেষ হয় দাঁড়িয়ে থাকা। তারপর দা দিয়ে গর্ত খোঁড়ে কেউ কেউ। মাজাফফর ছেলেটিকে বুকে জড়িয়ে বসে থাকে। মৃদুস্বরে সুরা পড়ে ছেলের সারা গায়ে ফুঁ দিয়ে। চোখের পানি মুখে শেস করতে পারে না। মোছার চেষ্টাও করে না। লুৎফা তাঁবুতে গড়াগড়ি করে কাঁদে। ভাবে, তাঁবুতে ফিরলে ওকে বুকে জড়িয়ে ধরে রাখবে। বলবে, কেঁদো না গো। তোমাকে আর একটি ছেলে উপহার দিব। পরক্ষণে ভাবে, লুৎফা কি মানবে এমন কথা? ও বলবে আল্লাহর কাছে চাও। নামাজ পড় আর চাও। আল্লাহর রহমত হলে আমরা আর একটি ছেলে না হয় একটি মেয়ে পাব। মুজাফফর নিজের ভাবনায় ম্লান হয়ে যায়। লুৎফার কাছে এমন কথা শুনতে চায় না ও। সুতরাং ছেলে উপহার দেবে এমন কথা বলা মানে নিজের সঙ্গে প্রতারণা করা। সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার করে কেঁদে ওঠে মুজাফফর। সবাই ওর দিকে তাকিয়ে থাকে। কেউ কোনো কথা বলেনা। দেখতে পায় মুজাফফর ছেলেটিকে বুকের সঙ্গে জড়িয়ে ধরে আছে কঠিনভাবে, যেন ওকে কবরে নামাবেনা। এভাবে নিজের বুকে রেখে দিন কাটাবে। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা হাবিবুর ওর পাশে বসে বলে, ছেলেটিকে আমার কাছে দাও। আমি কবরে নামাই।

-না, আমি নামাব। আমি ওকে সুন্দর করে শুইয়ে দেব। যেন ওর কোনো কষ্ট না হয়।
-মাটিতে শোয়ালেতো কষ্ট হবে।
-তাহলে একটা ছোট চাদর নিয়ে আসি।
-না, খবরদার না, কবরে এসব চলবে না। তুমি কি আগে কখনো কবর দেয়া দেখনি?
-হাবিবুর চুপ করে থাক। আমার সঙ্গে কথা বলোনা।
-হ্যাঁ, চুপ করলাম। তুমিও চুপ করো। মরে যাওয়া একটি শিশুর আবার কষ্ট কি?
-তাতো ঠিকই বলেছো। কষ্ট থাকবে বেঁচে থাকা সবার। মৃত্যু মানে কষ্টের বাইরে চলে যাওয়া।
-এত কথা না বলে আমার মানিককে কবর দেই। গর্ত খুঁড়ি। তোমরা ওর জন্য দোয় কর। সবাই বসে পড়ে যে যার মতো দোয়া করো। মৃত ছেলেকে কিছুক্ষণ বুকে জড়িয়ে রেখে বাবা ওকে কবরে নামায়। তারপর দুহাতে মাটি টেনে দেয়। টানা শেস হলে চিৎকার করে কেঁদে ওঠে। দুহাতে মুখ ঢেকে রাখে। তার চিৎকার ছড়িয়ে যায় চারদিকে। আশপাশ থেকে অনেকে এসে তাকে ঘিরে দাঁড়ায়। পানিভরা চোখে সবার দিকে তাকায় মুজাফফর। দুহাতে চোখের পানি মুখে মাথা ঝাঁকায়। কেউ কোনো কথা বলেনা। চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে। মুজাফফার একটুক্ষণ পরে বলে, আমি যাই। বউয়ের অবস্থা দেখি গিয়ে, ওতো কাঁদতে কাঁদতে বেহুঁশ হয়ে যায়।
-হ্যাঁ, হ্যাঁ, তাড়াতাড়ি যান মুজাফফর ভাই। ভাবীকে সামাল দেন।

মুজাফফর কারো সঙ্গে কথা না বলে দ্রæত পায়ে হাঁটতে শুরু করে। তাঁবুর কাছে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুনতে পায় লুৎফা কাঁদছে। কান্নার ধ্বনি বুকের ভেতর গেঁথে নেয় মুজাফফর। তাঁবুর ভেতরে ঢুকে বুকে জড়িয়ে ধরে লুৎফাকে। দুই চোখে চুমু দিয়ে চোখের পানি মুছে দিতে চায়। কিন্তু মোছা হয়না। পানি গড়াতেই থাকে লুৎফার দুই চোখ বেয়ে। ওর মাথা বুকে জড়িয়ে রেখে মুজফফর বলে, আর কেঁদোনা। ছেলের জন্য দোয়া কর।
লুৎফা কথা বলেনা। চুপ করে থাকে।
-কিছু বলছ না কেন?

লুৎফা দুহাতে চোখের পানি মোছে। নিজের মাথা ধাম করে মুজাফফরের ঘাড়ের ওপর রেখে দুহাতে জড়িয়ে ধরে স্বামীকে। সন্তান হারানোর বেদনা কাটিয়ে ওঠা যাবেনা, এমন চিন্তায় নিজেকে ডুবিয়ে রাখে। মুজফফর লুৎফাকে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে ধরে বলে, আমাদের ছেলে স্বাধীনতার স্বপ্ন হয়ে মরে গেছে। ওকে আমরা স্মরণ করে বলব, ও আমাদের স্বাধীনতার স্বপ্ন, স্বপ্ন।
-ঠিক বলেছো।
লুৎফা আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে ওঠে। আমি আমার মরণের আগ পর্যন্ত ওকে স্বাধীনতার স্বপ্ন বলতে থাকব। মুজফফর বউকে ছেড়ে দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিজের চোখ থেকে পানি গড়ায়। লুৎফা ওর দিকে তাকায়না। ওকে নাস্তা খাওয়ানোর জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে। ভাবে প্রথমে এক চামচ সুজির হালুয়া নিজে ওর মুখে দেবে। মুহূর্তে মনে হয়, যুদ্ধ-জীবন এমনই। মৃত্যুও প্রাণের টান হয়ে দাঁড়ায়। পরক্ষণে নিজেকে বলে, এটা তো যুদ্ধ না স্বাধীনতার স্বপ্ন।

চলবে..

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা। পর্ব- ৩৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা পর্ব: ২৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১

Header Ad
Header Ad

কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ মিরাজ, দর্শক পছন্দে সেরা ঋতুপর্ণা

ছবি: সংগৃহীত

২০২৪ সালের কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত জমকালো অনুষ্ঠানে তার হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

অন্যদিকে, দর্শক ভোটে সর্বাধিক পছন্দের ক্রীড়াবিদ হিসেবে ‘পপুলার চয়েজ অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করেন নারী সাফ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা জাতীয় নারী ফুটবল দলের মিডফিল্ডার ঋতুপর্ণা চাকমা।

এ বছর ‘স্পোর্টস পারসন অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কার জয়ের দৌড়ে মিরাজ পেছনে ফেলেছেন ঋতুপর্ণা এবং ২০২৪ প্যারিস অলিম্পিকে কোয়ালিফাই করা আর্চার সাগর ইসলামকে। অপরদিকে, ‘পপুলার চয়েজ’ বিভাগে ঋতুপর্ণা এগিয়ে যান মিরাজ ও উদীয়মান পেসার নাহিদ রানাকে ছাড়িয়ে।

 

ছবি: সংগৃহীত

১৯৬৪ সাল থেকে ক্রীড়াবিদদের স্বীকৃতি জানিয়ে আসা দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ক্রীড়া সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএসপিএ) এবছর ১৫টি বিভাগে মোট ১৩ ব্যক্তি, দল ও সংস্থাকে সম্মাননা দেয়। সংগঠনের সভাপতি রেজওয়ান উজ জামান রাজিবের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং স্কয়ার টয়লেট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী।

পুরস্কার গ্রহণ করে মিরাজ বলেন, “বিএসপিএকে ধন্যবাদ প্রতি বছর এমন আয়োজনের জন্য। এটা আমাদের খেলোয়াড়দের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস।” ভুটানে লিগ খেলায় ব্যস্ত থাকায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে না পারলেও ভিডিও বার্তায় ঋতুপর্ণা জানান, “এই সম্মান আমাকে আরও ভালো করার অনুপ্রেরণা দেবে।”

Header Ad
Header Ad

রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা, মগবাজার-মধুবাগে তীব্র ভোগান্তি

রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মগবাজার ও মধুবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় ওয়াসার পানিতে পোকা ও ময়লার উপস্থিতি নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা। ট্যাপের পানি দুর্গন্ধযুক্ত ও অস্বচ্ছ হওয়ায় তা রান্না, গোসল ও দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করতে গিয়ে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, বাসার পানির ট্যাঙ্ক একাধিকবার পরিষ্কার করেও মিলছে না সমাধান। ওয়াসার সাপ্লাই পাইপ থেকেই এই সমস্যার উৎপত্তি বলে মনে করছেন তারা।

মধুবাগ এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, “এই পানি দিয়ে রান্না ও গোসল সম্ভব না। আমাদের বাসার শিশুরা পানি খেতেই চায় না। বাধ্য হয়ে পাম্প থেকে পানি এনে ব্যবহার করতে হচ্ছে।” আরেকজন জানান, “ট্যাঙ্ক পরিস্কার করলে প্রথমে কিছুদিন ভালো থাকে, তারপর আবার পোকা দেখা দেয়।”

বিকল্প না থাকায়, অনেকেই ট্যাপের মুখে কাপড় বেঁধে পানি ব্যবহার করছেন। কিন্তু তারপরও পেটের অসুখ ও চর্মরোগের প্রকোপ বাড়ছে বলেও জানান স্থানীয়রা।

এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঢাকা ওয়াসার তিনজন কর্মকর্তা মধুবাগ এলাকায় পরিদর্শনে যান এবং কয়েকটি বাসা থেকে পানি সংগ্রহ করে পরীক্ষায় পোকা পাওয়ার কথা স্বীকার করেন। তবে দায় চাপান ট্যাঙ্ক ঠিকমতো পরিষ্কার না করাকে। ওয়াসার উপসহকারী প্রকৌশলী তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, “লাইনের পানি পরিষ্কার। ট্যাঙ্ক যদি নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়, তাহলে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।”

তবে এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নন এলাকাবাসী। তারা বলছেন, নিয়মিত ট্যাঙ্ক পরিষ্কারের পরও পানি দূষিত হচ্ছে, যা পাইপলাইনের সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। এ অবস্থায় ওয়াসার কর্মকর্তারা পাইপের মান যাচাইয়ের আশ্বাস দিয়েছেন। এলাকাবাসী দ্রুত সমস্যার স্থায়ী সমাধান চেয়ে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Header Ad
Header Ad

বিদেশি আইনের আওতায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ: গভর্নর

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরাতে হবে বিদেশি আইনের মাধ্যমে এবং এ উদ্যোগ সম্পূর্ণ নতুন। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়াটি দেশের নয়, বরং বিদেশের আইনের সঙ্গে সংযোগ রেখে করতে হবে। এর জন্য আগে সংশ্লিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করতে হবে এবং এস্টেট (সম্পদ) ফ্রিজ করে আদালতের মাধ্যমে বাকি প্রক্রিয়া চালাতে হবে।”

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “প্রথমে এস্টেটগুলো ফ্রিজ করার চেষ্টা করছি। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে, চিঠি পাঠানো হচ্ছে। আইন পরামর্শক নিয়োগে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এস্টেট ট্রেসিং ফার্মের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এস্টেট ফ্রিজ করা গেলে এটিই হবে প্রথম সাফল্য।”

এক প্রশ্নের উত্তরে গভর্নর বলেন, “আমার ধারণা, প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। শুধু বেক্সিমকো গ্রুপেরই প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার মতো অর্থ পাচার হয়েছে। এগুলো বড় গ্রুপের হিসাব, ছোট গ্রুপগুলো এখনো বিবেচনায় আনা হয়নি। ভবিষ্যতে যেন এমন না ঘটে, সে জন্য আমরা প্রয়োজনীয় নিয়ম-কানুন সংশোধনের উদ্যোগ নিচ্ছি।”

তিনি আরও বলেন, “সব সময় আদালতের মাধ্যমে সমাধান না করে, কিছু ক্ষেত্রে সমঝোতার ভিত্তিতেও (আউট অব কোর্ট সেটেলমেন্ট) টাকা ফেরত আনার চিন্তা করছি। তবে সেটার আগে সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকা জরুরি, না হলে আমরা ঠকে যাব।”

মুদ্রাস্ফীতি সংক্রান্ত এক প্রশ্নে গভর্নর বলেন, “অতীতে খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি ৯-১০ শতাংশ দেখানো হলেও বাস্তবে তা ছিল ১৩-১৪ শতাংশ। তবে এখন সেটি ৮-৯ শতাংশে নেমেছে। সামগ্রিকভাবে মুদ্রাস্ফীতি কমতির দিকেই। আগামী বছরে তা ৫ শতাংশ বা তার নিচে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।”

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. জামাল উদ্দিন, ফাইন্যান্স ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের পরিচালক মো. আনিসুর রহমানসহ চট্টগ্রাম কার্যালয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সঞ্চালনায় ছিলেন উপপরিচালক মো. জোবাইর হোসেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ মিরাজ, দর্শক পছন্দে সেরা ঋতুপর্ণা
রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা, মগবাজার-মধুবাগে তীব্র ভোগান্তি
বিদেশি আইনের আওতায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ: গভর্নর
মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম বদল নয়, বরং ঐতিহ্যে ফেরত: ঢাবি উপাচার্য
তৃতীয় বিয়ের ইতি, রোশন সিংয়ের সঙ্গে আইনিভাবে বিচ্ছিন্ন শ্রাবন্তী
৬৪ জেলা নিয়ে তৃণমূল ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজনের ঘোষণা ক্রীড়া উপদেষ্টার
আগামীকাল শনিবার রাজধানীতে “মার্চ ফর গাজা”, পাঁচটি স্থান থেকে শোভাযাত্রা শুরু
অবশেষে নতুন চুক্তি সালাহর, লিভারপুলে থাকছেন ২০২৭ পর্যন্ত
পহেলা বৈশাখের শোভাযাত্রায় হাসিনার মুখাবয়ব
ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে মামলা করল ওপেনএআই
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মৃদু ভূমিকম্প
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে নাগরিক কমিটির নেত্রী দিলশাদ আফরিন আটক
বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কায় ডলারের বড় পতন, রেকর্ড ছুঁয়েছে স্বর্ণের দাম
ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে ১৪৭ দেশ, বাড়ছে বিশ্বজনমত
মার্কিন পণ্যে ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে চীনের পাল্টা জবাব
নারায়ণগঞ্জে দুই নারী ও এক শিশুর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার
ফুটবল মাঠ পেরিয়ে হলিউডে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো
পুলিশের চাকরি পেতে সমন্বয়কদের পেছনে দৌড়ানো বন্ধ করুন: সারজিস
ড. ইউনূসের ৫ বছর ক্ষমতায় থাকার কোনও অধিকার নেই: সেলিমা রহমান
সিটি কর্পোরেশন হচ্ছে বগুড়া, গণশুনানির প্রস্তুতি শুরু