শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৩৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা


দ্রুতপায়ে তাঁবু থেকে বেরিয়ে ও কান্নারত আর এক শিশুর কাছে যায়। তাঁবুর সামনে গিয়ে দাঁড়ালে বেরিয়ে আসে ওর বাবা।
- কি হয়েছে বাচ্চাটার? কাঁদে কেন?
-বলে যে পেট ব্যথা করছে।
এবং এই পর্যন্ত সংশোধণ করা হলো
-কি খাইয়েছেন?
-আমি জানিনা, ওর মা জানে।
হঠাৎ করে কান্না থেকে যায়। গড়িয়ে পড়ে ছেলেটি।
অঞ্জন আঁতকে উঠে বলে, কি হলো?
-কি আর হবে, কান্না বন্ধ করেছে।
-আপনি ওকে বাইরে নিয়ে আসেন।

মুজাফফর ভেতরে ঢুকে ছেলেকে কোলে করে বাইয়ে আনে। বুকে জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে থাকে। অঞ্জন ওকে কোলে নিয়ে পরীক্ষা করে দেখে যে, মরে গেছে বাচ্চাটি। ও মুখে কিছু বলেনা। শরণার্থী শিবিরে এমন মৃত্যু প্রায়ই দেখতে হয়। কিছু করার উপায় নাই। মুহূর্তে চিৎকার করে কেঁদে ওঠে ওর বাবা। পেছন থেকে ওর মাও। মৃত শিশুটিকে ওদের কোলে দিতে হবে এই ভাবনা ওকে মর্মাহত করে। সেজন্য শিশুটিকে বুকে জড়িয়ে রাখে। চোখ থেকে জল ঝরতে শুরু করে। অঞ্জন তাঁবুর সামনে এসে দাঁড়ায়। দুকান ভরে বাবা-মায়ের কান্নার শব্দ শোনে। এ কান্না থামানোর জন্য কিছু বলার নেই। এখন বুকের ভেতরে নদীর স্রোতের মতো বয়ে যাবে কান্নার ঢেউ।

ছেলেকে কোলে নিয়ে মুজাফফর এগিয়ে যেতে থাকে। ধানক্ষেতের পাশে গিয়ে বসে পড়ে। মৃত ছেলেকে কোলে রাখে। আশপাশের থেকে লোকজন আসতে শুরু করে। কেউ কেউ মুজাফফরের পাশে বসে। বাকিরা এদিক ওদিকে দাঁড়িয়ে থাকে। কেউ কোনো কথা বলে না। মৃত ছেলেকে কোলে নিয়ে বসে থাকা বাবাকে কি বলবে? কবর দিতে হবে এটাতো বাবাই ভালো জানে। বলবে কি, একটা কি কবর খুঁড়ে দেব? না, সে কথা কেই বলবে না। এখানে খোঁড়া হবে না, গর্ত খুঁড়তে হবে। সবাই চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে। তখন মুজাফফর ছেলে ঘাসের ওপর শুইয়ে রেখে বলে, আসেন আমরা জানাজা পড়ি।

-এটাতো জানাজা পড়ার জায়গা না। সবাই একসঙ্গে দাঁড়াতে পারব না।
-সেটাতো আমিও দেখছি। যেখানে পারি এলোমেলোভাবে দাঁড়াই। তাও জানাজা হোক। সবাই ধানক্ষেতের পাশে এলোমেলোভাবে দাঁড়ায়। সবাই যারা যার মতো করে সুরা পড়ে। আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ে সবার কন্ঠস্বর। সুরার শব্দ শুনে বিভিন্ন দিক থেকে এগিয়ে আসে অনেকে। তারাও মাথায় টুপি দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। সকলের বুকের ভেতর তড়পায় শোক। ঘাসের ওপর রেখে দেয়া শিশুটির দিকে তাকালে পানিতে চোখ ভরে যায়।

একসময় শেষ হয় দাঁড়িয়ে থাকা। তারপর দা দিয়ে গর্ত খোঁড়ে কেউ কেউ। মাজাফফর ছেলেটিকে বুকে জড়িয়ে বসে থাকে। মৃদুস্বরে সুরা পড়ে ছেলের সারা গায়ে ফুঁ দিয়ে। চোখের পানি মুখে শেস করতে পারে না। মোছার চেষ্টাও করে না। লুৎফা তাঁবুতে গড়াগড়ি করে কাঁদে। ভাবে, তাঁবুতে ফিরলে ওকে বুকে জড়িয়ে ধরে রাখবে। বলবে, কেঁদো না গো। তোমাকে আর একটি ছেলে উপহার দিব। পরক্ষণে ভাবে, লুৎফা কি মানবে এমন কথা? ও বলবে আল্লাহর কাছে চাও। নামাজ পড় আর চাও। আল্লাহর রহমত হলে আমরা আর একটি ছেলে না হয় একটি মেয়ে পাব। মুজাফফর নিজের ভাবনায় ম্লান হয়ে যায়। লুৎফার কাছে এমন কথা শুনতে চায় না ও। সুতরাং ছেলে উপহার দেবে এমন কথা বলা মানে নিজের সঙ্গে প্রতারণা করা। সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার করে কেঁদে ওঠে মুজাফফর। সবাই ওর দিকে তাকিয়ে থাকে। কেউ কোনো কথা বলেনা। দেখতে পায় মুজাফফর ছেলেটিকে বুকের সঙ্গে জড়িয়ে ধরে আছে কঠিনভাবে, যেন ওকে কবরে নামাবেনা। এভাবে নিজের বুকে রেখে দিন কাটাবে। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা হাবিবুর ওর পাশে বসে বলে, ছেলেটিকে আমার কাছে দাও। আমি কবরে নামাই।

-না, আমি নামাব। আমি ওকে সুন্দর করে শুইয়ে দেব। যেন ওর কোনো কষ্ট না হয়।
-মাটিতে শোয়ালেতো কষ্ট হবে।
-তাহলে একটা ছোট চাদর নিয়ে আসি।
-না, খবরদার না, কবরে এসব চলবে না। তুমি কি আগে কখনো কবর দেয়া দেখনি?
-হাবিবুর চুপ করে থাক। আমার সঙ্গে কথা বলোনা।
-হ্যাঁ, চুপ করলাম। তুমিও চুপ করো। মরে যাওয়া একটি শিশুর আবার কষ্ট কি?
-তাতো ঠিকই বলেছো। কষ্ট থাকবে বেঁচে থাকা সবার। মৃত্যু মানে কষ্টের বাইরে চলে যাওয়া।
-এত কথা না বলে আমার মানিককে কবর দেই। গর্ত খুঁড়ি। তোমরা ওর জন্য দোয় কর। সবাই বসে পড়ে যে যার মতো দোয়া করো। মৃত ছেলেকে কিছুক্ষণ বুকে জড়িয়ে রেখে বাবা ওকে কবরে নামায়। তারপর দুহাতে মাটি টেনে দেয়। টানা শেস হলে চিৎকার করে কেঁদে ওঠে। দুহাতে মুখ ঢেকে রাখে। তার চিৎকার ছড়িয়ে যায় চারদিকে। আশপাশ থেকে অনেকে এসে তাকে ঘিরে দাঁড়ায়। পানিভরা চোখে সবার দিকে তাকায় মুজাফফর। দুহাতে চোখের পানি মুখে মাথা ঝাঁকায়। কেউ কোনো কথা বলেনা। চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে। মুজাফফার একটুক্ষণ পরে বলে, আমি যাই। বউয়ের অবস্থা দেখি গিয়ে, ওতো কাঁদতে কাঁদতে বেহুঁশ হয়ে যায়।
-হ্যাঁ, হ্যাঁ, তাড়াতাড়ি যান মুজাফফর ভাই। ভাবীকে সামাল দেন।

মুজাফফর কারো সঙ্গে কথা না বলে দ্রæত পায়ে হাঁটতে শুরু করে। তাঁবুর কাছে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুনতে পায় লুৎফা কাঁদছে। কান্নার ধ্বনি বুকের ভেতর গেঁথে নেয় মুজাফফর। তাঁবুর ভেতরে ঢুকে বুকে জড়িয়ে ধরে লুৎফাকে। দুই চোখে চুমু দিয়ে চোখের পানি মুছে দিতে চায়। কিন্তু মোছা হয়না। পানি গড়াতেই থাকে লুৎফার দুই চোখ বেয়ে। ওর মাথা বুকে জড়িয়ে রেখে মুজফফর বলে, আর কেঁদোনা। ছেলের জন্য দোয়া কর।
লুৎফা কথা বলেনা। চুপ করে থাকে।
-কিছু বলছ না কেন?

লুৎফা দুহাতে চোখের পানি মোছে। নিজের মাথা ধাম করে মুজাফফরের ঘাড়ের ওপর রেখে দুহাতে জড়িয়ে ধরে স্বামীকে। সন্তান হারানোর বেদনা কাটিয়ে ওঠা যাবেনা, এমন চিন্তায় নিজেকে ডুবিয়ে রাখে। মুজফফর লুৎফাকে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে ধরে বলে, আমাদের ছেলে স্বাধীনতার স্বপ্ন হয়ে মরে গেছে। ওকে আমরা স্মরণ করে বলব, ও আমাদের স্বাধীনতার স্বপ্ন, স্বপ্ন।
-ঠিক বলেছো।
লুৎফা আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে ওঠে। আমি আমার মরণের আগ পর্যন্ত ওকে স্বাধীনতার স্বপ্ন বলতে থাকব। মুজফফর বউকে ছেড়ে দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিজের চোখ থেকে পানি গড়ায়। লুৎফা ওর দিকে তাকায়না। ওকে নাস্তা খাওয়ানোর জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে। ভাবে প্রথমে এক চামচ সুজির হালুয়া নিজে ওর মুখে দেবে। মুহূর্তে মনে হয়, যুদ্ধ-জীবন এমনই। মৃত্যুও প্রাণের টান হয়ে দাঁড়ায়। পরক্ষণে নিজেকে বলে, এটা তো যুদ্ধ না স্বাধীনতার স্বপ্ন।

চলবে..

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা। পর্ব- ৩৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা পর্ব: ২৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১

Header Ad

গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের শ্রীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উদয়খালী গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

মৃত তিন শিক্ষার্থী হলেন- মোজাম্মেল হোসেন নাঈম (২৪), মোস্তাকিম রহমান মাহিন (২২) ও জোবায়ের আলম সাকিব (২২)।

জানা গেছে, শনিবার সকালে গাজীপুর মহানগরের বোর্ড বাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের প্রায় ৪৬০ জন শিক্ষার্থী বিআরটিসির ৬টি ডাবল ডেকার বাস ও ৩টি মাইক্রোবাসে করে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উত্তর পেলাইদ গ্রামের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামীণ আঞ্চলিক সড়ক ধরে রিসোর্টের উদ্দেশ্যে যাওয়ার সময় উত্তর পেলাইদ গ্রামের উদয়খালী বাজারে পৌঁছালে বিআরটিসির ডাবল ডেকার একটি বাস পল্লী বিদ্যুতের তারের স্পর্শে আসে। এ সময় বাসটি বিদ্যুতায়িত হলে কয়েকজন শিক্ষার্থী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। তাদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক জাকিউল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, তিনজনকেই মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। আহত সংখ্যা এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি। আমরা জরুরি বিভাগে যাচ্ছি।

Header Ad

কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া

ছবি: সংগৃহীত

মিল্ক বিউটিখ্যাত দক্ষিনি অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়া নতুন বছরে তার জীবনের একটি বিশেষ অধ্যায়ে পা রাখতে যাচ্ছেন। খলচরিত্র করে আলোড়ন তোলা অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে তার প্রেমের গুঞ্জন চলছিল অনেক দিন ধরেই। তবে এ নিয়ে কেউই মুখ খোলেননি। এবার তাদের সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন তামান্না। এমনকি ২০২৫ সালে সাতপাকে বাঁধা পড়ার সম্ভাবনা আছে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমের এক প্রোমোশনাল ইন্টারভিউতে তামান্না তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে জানান, প্রেমের সম্পর্কের জন্য জীবনে দুবার হৃদয় ভেঙেছে তার। সেই সময়টা তামান্নার জন্য খুবই ভয়াবহ ছিল।

তিনি আরও জানান, তিনি খুব কম বয়সে একজন ছেলের সঙ্গে প্রথম ভালোবাসায় জড়িয়েছিলেন এবং তার দ্বিতীয় সম্পর্কটি ছিল তার অভিনয় ক্যারিয়ারের শিখরে থাকা অবস্থায়। তবে সে সময় তিনি অনুভব করেন যে, সেই ছেলে তার সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের জন্য সঠিক ব্যক্তি নয়।

তবে এত কিছুর পরও বাহুবলিখ্যাত তামান্না প্রেমিকের নাম প্রকাশ করেননি। এর আগে গুঞ্জন ছিল যে, তিনি ভারতীয় অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে ডেট করছেন। পাপারাজ্জিদের ক্যামেরায় বহুবার ফ্রেমবন্দি হয়েছেন তারা। যদিও নিজেদের এ সম্পর্ক আড়ালে রাখতে বদ্ধপরিকর দুজনই। এখন দেখার অপেক্ষা তামান্না জীবনসঙ্গী হিসেবে কাকে বেছে নেন।

সবশেষ তামান্না ভাটিয়াকে আইটেম গার্ল হিসেবে দেখা যায় অমর কৌশিক পরিচালিত ‘স্ত্রী ২’ সিনেমায়। এ সিনেমায় আরও অভিনয় করেন রাজকুমার রাও, শ্রদ্ধা কাপুর, পঙ্ক ত্রিপাঠিসহ আরও অনেকে।

Header Ad

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...

ছবি: সংগৃহীত

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকার বিনিময়ে নয় মাসের শিশু সন্তানকে দত্তক দেন শরীফা খাতুন নামে মানসিক ভারস্যমহীন এক মা। বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ওই নবজাতককে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশের সহায়তায় ওই শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফেরত দেন।
মানসিক ভারসাম্যহীন নারী শরীফা খাতুন বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের জেমজুট মুসলিমবাগ এলাকায় তিন সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালান।

প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যরা জানান, গত এক বছর আগে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় শরীফা খাতুনের। এর পর সন্তানদের নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে চলত তার পরিবার।

গত মঙ্গলবার নিজের ৯ মাসের কন্যা সন্তানকে পঞ্চগড় পৌরসভার দক্ষিণ তেলিপাড়া এলাকায় একটি হলুদ খেতে রেখে ভিক্ষা করতে যান শরীফা খাতুন। এ সময় শিশুটিকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে স্থানীয় রুনা আক্তার নামে এক নারী; একইসঙ্গে শরীফাকেও নিজ বাড়িতে নেন তিনি। রুনা নামে ওই নারীর নিজ সন্তান না থাকায় শিশুটিকে দত্তক নিতে চাইলে, ৫০০ টাকার বিনিময়ে রেখে চলে যান শরীফা।

এরপর চার দিন পর অবশেষে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় নিজ পরিবারের কাছে ফিরেছে শিশুটি। বর্তমানে শিশুটিকে দেখভাল করছেন মানসিক ভারসামহীন শরীফার ১৬ বছরের বড় ছেলে নয়ন।

এ বিষয়ে শরীফার ছেলে নয়ন ইসলাম বলেন, গত চার দিন আগে মা বোনকে নিয়ে হঠাৎ পঞ্চগড়ে যান। পরে একসময় বাড়িতে একাই এসে ঘরে তালা লাগিয়ে বন্দি অবস্থায় থাকতে শুরু করেন। বোন কোথায় তা জানতে চাইলে কোনো কিছুই জানাচ্ছিলেন না।

পরে অনেক কৈশলে বোনের অবস্থান জানতে পারি। এরপর সেই বাড়িতে গিয়ে বোনকে ফেরত চাইলে তারা দিতে অস্বীকার করেন। আরও জানতে পারি মা বোনকে নেবেন না বললে তারা ৫০০ টাকা মাকে খেতে দিয়ে একটা কাগজে স্বাক্ষর করে নেন। শুক্রবার সাংবাদিক ও পুলিশ এসে তদন্ত করে আমার বোনকে আনতে নির্দেশ দিলে মাকে সঙ্গে নিয়ে বোনকে বাড়িতে নিয়ে আসি।

স্থানীয় মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অনেক আগে থেকে ওই নারীকে দেখছি। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে পরিবার চালান। তবে কয়েকদিন আগে নিজের সন্তানকে মানুষের কাছে দিয়ে প্রায় পাগল হয়ে বেড়াচ্ছিলেন।

কাজলা নামে স্থানীয় এক নারী বলেন, সকালে শরিফা আমার কাছে এসে আমার পা জড়িয়ে ধরেছেন আর বলেছেন আপু যেভাবেই পারো আমার মেয়েকে এনে দাও।

প্রতিবেশীরা বলেন, স্বামী না থাকায় পরিবারটা চালাতে শরীফা খাতুন ভিক্ষা করতেন। এর মাঝে এমন কাণ্ড ঘটে তিনি পাগল হয়ে গেছেন। তার তিনটা সন্তান। একটা ছেলে ও দুটি মেয়ে। এদের কি হবে আমরা জানি না। তবে সরকারি সহায়তা পেলে তাদের গতি হতো।

এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, আগের বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। খবর পাওয়ার পর পঞ্চগড় সদর থানার ওসিকে জানানো হয়। বিষয়টি পুলিশের হস্তক্ষেপে সুষ্ঠু সমাধান করে ভারসাম্যহীন নারীর কাছে তার বাচ্চা ফেরত দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, যেহেতু ওই নারীর বাড়ি বোদা উপজেলায়, সেখানকার ইউএনওকে জানিয়ে সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান
বেনাপোলে সীমান্ত থেকে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল উদ্ধার
পুলিশ-অটোরিকশা চালক সংঘর্ষ, ঢাকা-পদ্মা সেতু ট্রেন চলাচল বন্ধ
ভারতীয় সাবমেরিনের সঙ্গে মাছ ধরা নৌকার সংঘর্ষ, নিখোঁজ ২
সংসার ভাঙার দুদিন পরই সুখবর দিলেন এ আর রহমান
ঢাকায় পৌঁছেছেন বাইডেনের বিশেষ প্রতিনিধি
আ.লীগকে নির্বাচনের সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে যা বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ