শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৩৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা

অঞ্জন দ্রুতপায়ে হেঁটে যায়। মাথায় ভেসে ওঠে সুশান্তের চেহারা। ওর সঙ্গে দেখা হয়েছিল। চৌগাছা সীমান্তে। ওখান দিয়ে ভারতে ঢুকে বনগাঁও হাসপাতালের কাছে ওরা একটি বাড়ি ভাড়া করে থাকে। এখনো ওরা ওখানে আছে। পরিবারের সবাই মিলে নানা কাজ করে সংসার চালায়। সুশান্তর কাছে গেলে বনগাঁও হাসপাতাল থেকে ওষুধ আনতে পারবে। কিন্তু যেতে সময় লাগবে। যশোর রোডের ধুলোমলিন রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে শরণার্থী জীবনের অনুভব ওকে দায়িত্বের চেতনায় গম্ভীর করে। পথের রেখা স্তব্ধ হয়ে চেপে যায় বুকের ভেতর। ও মাথার উপর ছড়িয়ে থাকা গাছের ডালের ফাঁক দিয়ে আকাশের দিকে তাকায়। নিজেকে বলে, এই আকাশ আমার স্বাধীনতার পতাকা। একটুপরে রাস্তার ধারে বসে থাকা একজনের ট্রানজিস্টারে শুনতে পায় ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠানের খবর। খবর শুনে অঞ্জন অনুপ্রাণিত হয়। ভালো করে শোনার জন্য রাস্তার ধারে যার ট্রানজিস্টার তার কাছে বসে পড়ে। জানতে পারে যে আগস্টের ১ তারিখে নিউইয়র্কের ম্যাডিসন স্কয়ারে একটি গানের অনুষ্ঠান হবে। বর্তমানে পণ্ডিত রবিশংকর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। তার লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রতি বিশ্ব জনমত গড়ে তোলা। পাশাপাশি টিকিট বিক্রির মাধ্যমে যে অর্থ পাওয়া যাবে তা শরণার্থীদের আর্থিক সাহায্য হিসেবে দেওয়া হবে।

বিষয়টি জানতে পেরে অঞ্জন একদিকে যেমন অনুপ্রাণিত হয়, অন্যদিকে তেমন মনখারাপ করে। ভাবে, যদি ও নিজেও এই কনসার্টে থাকতে পারত! তাহলে স্বাধীনতার গৌরবগাঁথা আজীবন স্মৃতির সঞ্চয়ে রাখতে পারত। নিজে শরণার্থী হয়ে একটি দিক পেয়েছে। কিন্তু আর কোথাও যুক্ত হওয়ার সুযোগ এখন আর নাই। নিজে নিজে ভাবে কনসার্টের পুরো খবরটা ট্রানজিস্টার থেকে জেনে নেবে। সবসময় খুলে রাখবে। এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ অঞ্জনকে অনুপ্রাণিত করে। মেঠো পথে হাঁটার জন্য পায়ের স্যান্ডেল খুলে হাতে নেয়। তারপর পা ঘঁষে ঘঁষে হাঁটতে থাকে। মনে হয় মাটি আর আকাশ এক হলে এভাবে হেঁটে যাওয়া ব্যক্তির পায়ে সমুদ্রের ছোঁয়া থাকে। সেটা দেশপ্রেমের সমুদ্র। নিজের এমন ভাবনায় নিজের বুকের ভেতর উচ্ছ্বাস বয়ে যায়। নিজেকে আনন্দে রাখার এমন দিক ও মনের ভেতর রাখে। নিজের উচ্ছ্বাসকে নিজে উপভোগ করে। হঠাৎ মনে করে, এমন করে কি অন্যরা ভাবে? নিজের ভেতরে উচ্ছ্বাসের জোয়ার তৈরি করে? ধুত, কি যে সব ভাবছি! পরক্ষণে নিজেকে ধমকায়। অন্যের ভাবনার সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করছে কেন? যে যার মতো দিন কাটাবে। একর সঙ্গে অন্যের ভাবনা মিলবে কেন? শয়তান একটা, নিজেকে ধমকায়। কঠিনভাবে নিজেকে শাসন করে। দেখতে পায় রাস্তার পাশে কয়েকজন শিশু চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। ও এগিয়ে যেতে থাকলে শিশুরা দৌড়ে ওর কাছে আসে। চারদিক দিয়ে ওকে ঘিরে ধরে। ওরা কাছে এসে দাঁড়ালে অঞ্জন একে একে ওদের মাথায় হাত রেখে বলে, ভালোইতো তোরা সবাই মিলে খেলা করছিস।

তিনচার জন একসঙ্গে বলে, আপনি আমাদের একটা ফুটবল কিনে দেন কাকু। আমরা ফুটবল খেলব।
এখানেতো ফুটবল খেলার মাঠ নেই।
মাঠ লাগবে না। আমরা এই রাস্তাতে খেলব।
না, না রাস্তায় ফুটবল খেলা ঠিক হবে না। রাস্তা দিয়ে লোকজন হাঁটাহাটি করে।
চিৎকার করে ওঠে শিশুরা, আমরা কি কোনো দিন একটা ফুটবল পাব না। ফুটবল খেলা ছাড়া বড় হবো?
দেশ স্বাধীন হলে তোরা ফুটবল খেলবি নিজের দেশে গিয়ে।
কবে দেশ স্বাধীন হবে?
আমরাতো যুদ্ধ করছি। যেদিন যুদ্ধে জিতব সেদিন স্বাধীন হবে।
তাহলে আমরাও যুদ্ধ করব।
তোরাও যুদ্ধ করবি! ওহ্ স্বাধীনতা, স্বাধীনতা! হাসতে হাসতে ওদের মাথার ওপর হাত রাখে অঞ্জন। ছেলেরা হাততালি দিতে দিতে চেঁচিয়ে বলে, স্বাধীনতা, স্বাধীনতা। ওদের হাততালি থামলে অঞ্জন বলে, তোরা আমার সঙ্গে গান কর।
কী গান? আমরাতো গান গাইতে জানি না।
আমার সঙ্গে গাইবি।
আচ্ছা, আচ্ছা।
অঞ্জন গাইতে শুরু করে, ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’।
এক লাইন গানে মুখর হয়ে ওঠে শরণার্থী এলাকা। শিশুদের কণ্ঠস্বর প্লাবিত করে বেঁচে থাকার সমুদ্র। চারপাশ থেকে লোকজন বেরিয়ে ওদের ঘিরে দাঁড়ায়। কেউ কেউ অঞ্জনকে বলে, পুরো গানটা গেয়ে শোনান।
আমার মুখস্থ নাই। আপনারাও একটা লাইন গান।
আপনি আবার শুরু করেন।
অঞ্জন আবার শুরু করে।

সবার কণ্ঠে সুরের ছোঁয়ায় ধ্বনিত হয় ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি।’ কিছুক্ষণ পর গান থামলে শব্দ হতে থাকে, সোনার বাংলা, সোনার বাংলা, আমার সোনার বাংলা। লোকজন নানাভাবে উচ্চারণ করে। ভেসে ওঠে মানুষের আবেগের ধ্বনি। অঞ্জন অভিভূত হয়। শুনতে ভালো লাগে। দু’কান পেতে গাছের নিচে দাঁড়িয়ে থাকে। একসময় গাছের কান্ডে মাথা ঘঁষে। দেখতে পায় সোনার বাংলা বলতে বলতে চলে যাচ্ছে সবাই। যে যেদিকে যাক না কেন সবার বুকের ভেতরে শব্দ দুটি এক হয়ে থাকে। বিশাল মাত্রায় ফুলের মতো ফুটে থাকে। সৌরভ ছড়িয়ে যায় বিশ্বজুড়ে। অঞ্জন নিজের ভাবনায় আলোকিত হয়ে উদ্দীপিত হয়ে ওঠে। দ্রুতপায়ে হাঁটতে থাকে যশোর রোড ধরে। এখান থেকেই একদিন স্বাধীন দেশে ফিরবে। এই প্রত্যাশা বুকের ভেতর ঢং ঢং করে। তখন রাস্তার ধার থেকে একজন নারী দৌঁড়ে আসে।
ডাক্তার সাহেব
কি হয়েছে বুবু?
আমার স্বামীর জ¦র এসেছে। কাশিও হচ্ছে।
চলেন দেখি
দুজনে একসঙ্গে হেঁটে যায়। তাঁবুতে ঢুকে রোগীর পাশে বসে পড়ে অঞ্জন। পকেট থেকে থার্মোমিটার বের করে জ¦র দেখে। দেখতে পায় প্রবল জ¦রে আক্রান্ত আমিন মিয়া। জ¦র দেখে নিজেই আঁতকে ওঠে। কিন্তু মুখে কিছু বলেনা। পকেট থেকে জ¦রের ওষুধ বের করে পানি নিয়ে খাইয়ে দেয়। বাকি ওষুধ সখিনার হাতে দিয়ে বলে, বুবু এগুলো রাখেন। সকাল দুপুর রাতে একটি করে খাওয়াবেন। আমি যাই। দরকার হলে আমাকে ডাকবেন।
আচ্ছা, ঠিক আছে।

অঞ্জন যশোর রোডে দাঁড়িয়ে চারদিকে তাকায়। হাঁটতে হাঁটতে কখনো পায়ের ধুলো ঝাড়ে। একসময় মনে হয় শরীরজুড়ে ধুলো মাখিয়ে নিলে মনে হবে স্বাধীন দেশকে ধারণ করেছে বুকের ভেতর। তখন বিভিন্ন তাঁবু থেকে শিশুদের কান্নার শব্দ ভেসে আসে। দ্রুতপায়ে হেঁটে যায় এক এক তাঁবুতে। ওদের কি হয়েছে, নাকি কিছু হয়নি। নিজেকে এমন প্রশ্ন করে বিব্রত হয় অঞ্জন। একটি তাঁবুর বাইরে দাঁড়িয়ে হাত নেড়ে জিজ্ঞেস করে, কি হয়েছে বাচ্চাটির?

ওর মা মাথা নাড়িয়ে চোখ মুছে বলে, ছেলেটার জ¦র এসেছে। কি খাওয়াব জানিনা। আমার কাছে কোনো খাবার নাই। ওতো অনেক কিছু খেতে চায়?
অঞ্জন পকেট থেকে থার্মোমিটার বের করে বলে, দেখি কত জ্বর আছে?
দেখেন, দেখেন। মা ছেলেটিকে কোলে তুলে ধরে।

মাটিতে বসে বাচ্চাটিকে নিজের কোলে নেয়। থার্মোমিটার বগলের নিচে দিয়ে ওকে দুহাতের মাঝে আটকে রাখে। ছেলেটি চোখ বুঁজে মাথা নেতিয়ে পড়ে। থার্মোমিটারে একশর উপরে জ¦র দেখে ওর মাথা গুমগুম করে ওঠে। দ্রুত ওষুধ সংগ্রহের জন্য যেতে হবে। নইলে জ¦রের ঘোরে ও বাঁচবে বলে মনে হয়না। ওর বিষণœ মুখের দিকে তাকিয়ে মা বলে, ওষুধ কোথায় পাব? আমি দেখছি। আমি যাব ওষুধ আনতে। এখন আসি।

চলব...

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা। পর্ব- ৩৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩২

 

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা পর্ব: ২৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১

Header Ad

কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া

ছবি: সংগৃহীত

মিল্ক বিউটিখ্যাত দক্ষিনি অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়া নতুন বছরে তার জীবনের একটি বিশেষ অধ্যায়ে পা রাখতে যাচ্ছেন। খলচরিত্র করে আলোড়ন তোলা অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে তার প্রেমের গুঞ্জন চলছিল অনেক দিন ধরেই। তবে এ নিয়ে কেউই মুখ খোলেননি। এবার তাদের সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন তামান্না। এমনকি ২০২৫ সালে সাতপাকে বাঁধা পড়ার সম্ভাবনা আছে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমের এক প্রোমোশনাল ইন্টারভিউতে তামান্না তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে জানান, প্রেমের সম্পর্কের জন্য জীবনে দুবার হৃদয় ভেঙেছে তার। সেই সময়টা তামান্নার জন্য খুবই ভয়াবহ ছিল।

তিনি আরও জানান, তিনি খুব কম বয়সে একজন ছেলের সঙ্গে প্রথম ভালোবাসায় জড়িয়েছিলেন এবং তার দ্বিতীয় সম্পর্কটি ছিল তার অভিনয় ক্যারিয়ারের শিখরে থাকা অবস্থায়। তবে সে সময় তিনি অনুভব করেন যে, সেই ছেলে তার সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের জন্য সঠিক ব্যক্তি নয়।

তবে এত কিছুর পরও বাহুবলিখ্যাত তামান্না প্রেমিকের নাম প্রকাশ করেননি। এর আগে গুঞ্জন ছিল যে, তিনি ভারতীয় অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে ডেট করছেন। পাপারাজ্জিদের ক্যামেরায় বহুবার ফ্রেমবন্দি হয়েছেন তারা। যদিও নিজেদের এ সম্পর্ক আড়ালে রাখতে বদ্ধপরিকর দুজনই। এখন দেখার অপেক্ষা তামান্না জীবনসঙ্গী হিসেবে কাকে বেছে নেন।

সবশেষ তামান্না ভাটিয়াকে আইটেম গার্ল হিসেবে দেখা যায় অমর কৌশিক পরিচালিত ‘স্ত্রী ২’ সিনেমায়। এ সিনেমায় আরও অভিনয় করেন রাজকুমার রাও, শ্রদ্ধা কাপুর, পঙ্ক ত্রিপাঠিসহ আরও অনেকে।

Header Ad

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...

ছবি: সংগৃহীত

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকার বিনিময়ে নয় মাসের শিশু সন্তানকে দত্তক দেন শরীফা খাতুন নামে মানসিক ভারস্যমহীন এক মা। বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ওই নবজাতককে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশের সহায়তায় ওই শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফেরত দেন।
মানসিক ভারসাম্যহীন নারী শরীফা খাতুন বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের জেমজুট মুসলিমবাগ এলাকায় তিন সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালান।

প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যরা জানান, গত এক বছর আগে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় শরীফা খাতুনের। এর পর সন্তানদের নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে চলত তার পরিবার।

গত মঙ্গলবার নিজের ৯ মাসের কন্যা সন্তানকে পঞ্চগড় পৌরসভার দক্ষিণ তেলিপাড়া এলাকায় একটি হলুদ খেতে রেখে ভিক্ষা করতে যান শরীফা খাতুন। এ সময় শিশুটিকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে স্থানীয় রুনা আক্তার নামে এক নারী; একইসঙ্গে শরীফাকেও নিজ বাড়িতে নেন তিনি। রুনা নামে ওই নারীর নিজ সন্তান না থাকায় শিশুটিকে দত্তক নিতে চাইলে, ৫০০ টাকার বিনিময়ে রেখে চলে যান শরীফা।

এরপর চার দিন পর অবশেষে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় নিজ পরিবারের কাছে ফিরেছে শিশুটি। বর্তমানে শিশুটিকে দেখভাল করছেন মানসিক ভারসামহীন শরীফার ১৬ বছরের বড় ছেলে নয়ন।

এ বিষয়ে শরীফার ছেলে নয়ন ইসলাম বলেন, গত চার দিন আগে মা বোনকে নিয়ে হঠাৎ পঞ্চগড়ে যান। পরে একসময় বাড়িতে একাই এসে ঘরে তালা লাগিয়ে বন্দি অবস্থায় থাকতে শুরু করেন। বোন কোথায় তা জানতে চাইলে কোনো কিছুই জানাচ্ছিলেন না।

পরে অনেক কৈশলে বোনের অবস্থান জানতে পারি। এরপর সেই বাড়িতে গিয়ে বোনকে ফেরত চাইলে তারা দিতে অস্বীকার করেন। আরও জানতে পারি মা বোনকে নেবেন না বললে তারা ৫০০ টাকা মাকে খেতে দিয়ে একটা কাগজে স্বাক্ষর করে নেন। শুক্রবার সাংবাদিক ও পুলিশ এসে তদন্ত করে আমার বোনকে আনতে নির্দেশ দিলে মাকে সঙ্গে নিয়ে বোনকে বাড়িতে নিয়ে আসি।

স্থানীয় মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অনেক আগে থেকে ওই নারীকে দেখছি। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে পরিবার চালান। তবে কয়েকদিন আগে নিজের সন্তানকে মানুষের কাছে দিয়ে প্রায় পাগল হয়ে বেড়াচ্ছিলেন।

কাজলা নামে স্থানীয় এক নারী বলেন, সকালে শরিফা আমার কাছে এসে আমার পা জড়িয়ে ধরেছেন আর বলেছেন আপু যেভাবেই পারো আমার মেয়েকে এনে দাও।

প্রতিবেশীরা বলেন, স্বামী না থাকায় পরিবারটা চালাতে শরীফা খাতুন ভিক্ষা করতেন। এর মাঝে এমন কাণ্ড ঘটে তিনি পাগল হয়ে গেছেন। তার তিনটা সন্তান। একটা ছেলে ও দুটি মেয়ে। এদের কি হবে আমরা জানি না। তবে সরকারি সহায়তা পেলে তাদের গতি হতো।

এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, আগের বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। খবর পাওয়ার পর পঞ্চগড় সদর থানার ওসিকে জানানো হয়। বিষয়টি পুলিশের হস্তক্ষেপে সুষ্ঠু সমাধান করে ভারসাম্যহীন নারীর কাছে তার বাচ্চা ফেরত দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, যেহেতু ওই নারীর বাড়ি বোদা উপজেলায়, সেখানকার ইউএনওকে জানিয়ে সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।

Header Ad

অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা

ছবি: সংগৃহীত

অ্যন্টিগার পেস সহায়ক উইকেটে নতুন বলের বাড়তি সুবিধা বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছিল বাংলাদেশ। দিনের প্রথম সেশনে দ্রুত দুই উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চাপে ফেলেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সময় গড়াতেই বাংলাদেশের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায় দুই ক্যারিবিয়ান ব্যাটার মিকাইল লুইস ও আলিক অ্যাথানেজকে। জুটি গড়ে দুজনের ছুটতে থাকেন শতকের পথে। কিন্তু দুজনের কারও প্রত্যাশা পূরণ হতে দেয়নি বাংলাদেশ। দিনের শেষভাগে নার্ভাস নাইন্টিতে দুজনকে মাঠ ছাড়া করে প্রথম দিনের ইতি টানে বাংলাদেশ।

টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দিন শেষে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৫০ রান করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ দিকে বৃষ্টি হানা দেয় ম্যাচে। বৃষ্টি থামার পর আলোক স্বল্পতায় ৮৪ ওভার হওয়ার পরই দিনের খেলা শেষ করেন আম্পায়াররা।

টস জিতে বোলিংয়ে নেমে মেডেন ওভারে শুরুটা ভালো করেন হাসান মাহমুদ। অন্যপ্রান্তে আরেক পেসার শরিফুল ইসলামও মেডেন ওভার নেন। উইকেটের দেখা না পেলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ওপেনার কার্লোস ব্রাথওয়েট ও লুইসকে বেশ কয়েকবার পরাস্ত করেন বাংলাদেশের দুই পেসার।

ইনিংসের অষ্টম ওভারে প্রথমবারের মতো বোলিংয়ে আনা হয় তাসকিন আহমেদকে। এই পেসারই প্রথম ব্রেকথ্রু দেন দলকে। ১৪তম ওভারে তাসকিনের অফ স্টাম্পে পড়ে একটু ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে ডিফেন্স করেছিলেন ব্রাথওয়েট। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়কের ব্যাটকে ফাঁকি দিয়ে বল আঘাত হানে পায়ে। বাংলাদেশের ফিল্ডারদের আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দেন। যদিও তৎক্ষণাৎ রিভিউ নেন ব্রাথওয়েট। তবে সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হয়নি।

তিনে নেমে টিকতে পারেননি কেসি কার্টি। ডানহাতি ব্যাটারকেও ফিরিয়েছেন তাসকিন। উইকেটে আসার পর থেকেই তাড়াহুড়ো করছিলেন তিনি। তাসকিনের মিডল এবং লেগ স্টাম্পের লেংথ ডেলিভারিতে ফ্লিক করার চেষ্টায় লিডিং এজ হয়ে মিড অনে থাকা তাইজুল ইসলামকে ক্যাচ দিয়েছেন কার্টি।

২৫ রানে দুই উইকেট হারানোর পর তৃতীয় উইকেট জুটিতে দলকে পথ দেখান লুইস ও কেভম হজ। তবে হজ ২৫ রান করে রান আউট হয়ে সাজঘরে ফিরলে ভাঙে ৫৯ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি।

এরপর বাংলাদেশকে বেশ ভুগিয়েছে লুইস ও আথানজে জুটি। দুজনেই সেঞ্চুরির পথে ছিলেন। তবে সম্ভাবনা জাগিয়েও কেউই মাইলফলক ছুঁতে পারেননি।

ইনিংসের ৭৫তম ওভারে মিরাজের বলে বেরিয়ে এসে ছক্কা মারতে গিয়ে টাইমিংয়ে ভুল করেন লুইস। ব্যাটের কানায় লেগে বল যায় স্লিপে। ক্যাচ নিতে ভুল করেননি শাহাদাত হোসেন দিপু। নব্বইয়ের ঘরে ২৬ বল আটকে থেকে আউট হন লুইস। ফলে ভেঙে যায় ২২১ বলে ১৪০ রানের জুটি। ২১৮ বলে এক ছক্কা ও নয় চারে ৯৭ রান করেন এই ওপেনার।

এর কিছুক্ষণ পরই ফিরেছেন আথানজেও। তাইজুলের অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি স্কুপের মতো খেলেছিলেন আথানজে। যদিও তেমন গতি না থাকায় তার ব্যাটে লেগে বল উপরে উঠে যায়। সহজ ক্যাচ নেন উইকেটরক্ষক লিটন। দশটি চার ও একটি ছক্কায় ১৩০ বলে ৯০ রান আসে বাঁহাতি এই ব্যাটারের ব্যাটে। তিন রানের মধ্যে দুই সেট ব্যাটারকে ফিরিয়ে লড়াইয়ে ফেরার সম্ভাবনা জাগায় বাংলাদেশ।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান
বেনাপোলে সীমান্ত থেকে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল উদ্ধার
পুলিশ-অটোরিকশা চালক সংঘর্ষ, ঢাকা-পদ্মা সেতু ট্রেন চলাচল বন্ধ
ভারতীয় সাবমেরিনের সঙ্গে মাছ ধরা নৌকার সংঘর্ষ, নিখোঁজ ২
সংসার ভাঙার দুদিন পরই সুখবর দিলেন এ আর রহমান
ঢাকায় পৌঁছেছেন বাইডেনের বিশেষ প্রতিনিধি
আ.লীগকে নির্বাচনের সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে যা বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবানন থেকে ফিরলেন আরও ৮২ বাংলাদেশি