শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫ | ২৮ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৩৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা

স্লোগানে মুখর হয়ে উঠে শরণার্থী শিবির। অঞ্জন স্লোগান দিতে দিতে নিজের তাঁবুর দিকে হাঁটতে শুরু করে। অন্যদিকের লোকজন এগিয়ে এসে জিজ্ঞাসা করে, কি হয়েছে? কোনো নতুন খবর আছে?
-নতুন খবরের জন্য আমরা স্লোগান দিচ্ছি। তবে এটাও ঠিক খবর না পেয়ে স্লোগান দিয়ে লাভ কি?
-তবে দিচ্ছেন কেন?
-মনের আনন্দের জন্য দেই। ভবিষ্যতের খুশির খবর নিয়ে আমরা স্বাধীন দেশে যাব। বঙ্গবন্ধুকে দেখব। এজন্য নিজেদের প্রস্তুত করছি। যেন কোনোভাবে কোনো দুঃখের খবর না পাই। আমাদের আনন্দ তোমরাও বুকে তুলে নাও।
সঙ্গে সঙ্গে স্লোগান দেয় কয়েকজন-জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু। পেছনে দাঁড়ানো একজন তরুণ মামুন গেয়ে উঠে গানের লাইন- ‘শোন একটি মুজিবরের থেকে লক্ষ মুজিবরের কণ্ঠস্বরের ধ্বনি-প্রতিধ্বনি, আকাশে বাতাসে ওঠে রণি।’ এক লাইন গান শুনে সবাই হাততালি দেয়। একজন বলে, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে আমরাও এই গান শুনেছি, কিন্তু মুখস্ত করতে পারিনি।
মামুন বলে, আপনারা শিখতে চাইলে আমি গানটা সবাইকে শেখাব।
অঞ্জন উচ্চস্বরে বলে, সবাই শিখবে। আমিও শিখব।
একসঙ্গে উচ্চারিত হয়, আমরাও শিখব। আমরা গান গাইতে পারিনা, কিন্তু এই গানটি গাইলে বঙ্গবন্ধুকে আমাদের বুকের ভেতর দেখতে পাব। তার অপূর্ব সুন্দর চেহারা ভেসে উঠবে চোখের সামনে। আমরা তার পায়ের উপর লুটিয়ে পড়ব।
-সাবাস। ভরে উঠেছে শরণার্থী শিবির। এখানে আমাদের কোনো কষ্ট নেই। আমরা না খেয়ে থাকলেও মরে যাব না। সবার মনের শক্তি এভাবে ধরে রাখতে হবে।
-ঠিক, ঠিক। আমাদের স্বাধীনতা, আমাদের বঙ্গবন্ধু।
-চলো, এই স্লোগান দিতে দিতে রাস্তা ধরে এগোই। আমাদের সঙ্গে যুক্ত হবে সবাই। কেউ বসে থাকবে না।
অঞ্জন নিজে শুরু করে, আমাদের স্বাধীনতা, আমাদের বঙ্গবন্ধু।
সবাই মিলে স্লোগান দিতে শুরু করলে সরব হয়ে উঠে যশোর রোডের শরণার্থী শিবির। চারদিক থেকে ছুটে আসে অন্যরা। পথজুড়ে বিশাল সমাবেশ স্লোগানে মুখর করে সবাই। সীমান্তের কাছে এসে শেষ হয়ে যায় মিছিল। কিন্তু স্লোগান ফুরোয় না। চলতে থাকে আরও কিছুক্ষণ। চারদিক থেকে শিশুরা দৌড়াতে দৌড়াতে আসে। একসময় বড়দের স্লোগান থেমে গেলে শিশুরা বলতে থাকে, আমাদের স্বাধীনতা, আমাদের বঙ্গবন্ধু। ওরা এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকে না। এদিক-ওদিকে দৌড়াতে থাকে। ওদের কণ্ঠস্বরে স্লোগানের বলিষ্ঠতা মায়াবী উচ্চারণে ভরে থাকে। বড়রা তাকিয়ে থাকে ওদের দিকে। কাছে এলে মাথায় হাত দিয়ে আদর করে। ওরা হাসিতে উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠলে কণ্ঠস্বরে স্লোগানের ধ্বনি ব্যাপকতা লাভ করে, যেন শরণার্থী শিবিরে বেঁচে থাকার আনন্দের উচ্ছ্বাস প্রবাহিত হয়ে যাচ্ছে বসন্তের বাতাস হয়ে। অঞ্জন বুকভরে শ্বাস টানে। কাছে আসা শিশুদের বুকে টেনে ধরে। কাউকে কাউকে বলে, আয় একসঙ্গে স্লোগান দেই। আমাদের স্বাধীনতা, আমাদের বঙ্গবন্ধু। আশেপাশে দাঁড়িয়ে থাকা শিশুরা সবাই ওর সঙ্গে গলা মেলায়। বসন্তের বাতাস আরও প্রবলভাবে প্রবাহিত হয় উঠে যায় নীল আকাশের তটরেখায়। অঞ্জন প্রবলভাবে আন্দোলিত হয়। ভাবে শরণার্থী শিবিরের সুবর্ণরেখা ওদের মাথায় ছুঁয়ে নীল আকাশে ছড়িয়ে আছে। এভাবে স্বাধীনতার স্বপ্ন গৌরব-দীপ্ত হয় শিবিরে বাস করা সবার কাছে। কয়েকজন বলে, আমাদের কোনো কষ্ট নেই। আমরা আনন্দের জোয়ারে আছি। ভেসে যাচ্ছি হাজার হাজার নৌকা ভরা ফুল নিয়ে। ফুলের গন্ধে ভরে আছে প্রকৃতি। আমাদের স্বাধীনতা আমাদের স্বপ্নের ঘর।
সবাই হাততালি দেয়। হাততালি থামলে অঞ্জন সবাইকে বলে, চলো আমরা সীমান্ত পার হয়ে নিজের দেশের মাটি ছুঁয়ে আসি।
-ঠিক, ঠিক। যাই আমরা। মাটিতে মাথা ঠেকিয়ে আসব।
-অঞ্জন ভাই আপনি যাবেন না?
-যাব, যাব।
দুপা হেঁটে অঞ্জন উপুড় হয়ে মাটিতে মাথা ঠেকায়। ওর দেখাদেখি অন্যরাও তাই করে। অঞ্জন মাথা উঁচু করে বলে, বাংলার মাটি আমাদের প্রাণের মাটি। জন্ম হয়েছে এখানে, মৃত্যুও হবে এই মাটিতে। বাংলার মাটি আমাদের মাটি। কয়েকবার কথাটি বলে অঞ্জন নিজের দেশের মাটি ছেড়ে ভারতের মাটিতে ঢোকে। বলে, নিজেদের স্বাধীনতার যুদ্ধের সময় এই মাটিও আমাদের প্রিয় মাটি। ঠাঁই দিয়েছে বেঁচে থাকার অধিকার সামলে নিয়ে। আবার স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গ করার মহান ব্রতে। সেজন্য আমাদের দায়িত্ব হবে স্বাধীনতার জন্য নিজের শক্তি কাজে লাগাতে। আমরা যেন সময়ের বরখেলাপ না করি।
-অঞ্জন ভাই আপনি আমাদের চেয়ে বেশি বোঝেন। আমরা শুধু বুঝি প্রশিক্ষণ নেওয়া আর যুদ্ধে যাওয়া।
-এটাইতো স্বাধীনতার যুদ্ধের বড় দিক। তোমরা ঠিকই বোঝ।
-আর কতদিন আমাদের যুদ্ধ করতে হবে অঞ্জন ভাই?
-যতদিন আমরা পাকসেনাদের হারাতে না পারি ততদিন। ধৈর্য রাখ সবাই।
সবাই হাততালি দিয়ে বলে, জয় বাংলা-জয় বঙ্গবন্ধু। আমরা করব জয়।
-চলো, কে কেমন আছে জেনে দেখি। সব তাঁবুতে যেতে হবে।
-আপনি তো ডাক্তার, আপনি একা যান।
-কেন একা যাব? আপনারা কি সবার ভালোমন্দ জানতে চান না?
-আমরা জানতে চাই। কিন্তু আমরা চাই না যে একসঙ্গে গিয়ে ভিড় করি। আমরা সবাই সবার খোঁজ রাখব।
-ঠিক আছে, যে যার মতো চলে যান। সবাই এদকি-ওদিক চলে যায়। একটি তাঁবু থেকে শিশুর কান্না শুনতে পেয়ে অঞ্জন সেদিকে যায়। দরজায় দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করে, মা আপনি কি ভেতরে আছেন?
-হ্যাঁ আছি। আপনি কে?
-আমি ডাক্তার অঞ্জন। বাচ্চা কাঁদছে কেন তা জানতে এসেছি।
-ওর পায়খানা হচ্ছে, পেট ব্যথা করছে।
-আপনি যত্ন করে রাখেন। আমি ওর জন্য ওষুধ আনতে যাচ্ছি।
অঞ্জন বুঝে যায় বাচ্চাটি কলেরায় আক্রান্ত হয়েছে। ওর মা সঙ্গে সঙ্গে বলে, ওর বাবা ওষুধ আনতে গেছে আপনাকে যেতে হবে না।
-ও আচ্ছা ঠিক আছে। তাহলে যাই। মাহমুদ ভাইকে বলবেন দরকার হলে আমাকে ডাকতে।
-আচ্ছা। আচ্ছা।
ওর মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথা বলে। মায়ের এই কণ্ঠস্বর অঞ্জনের বুকে বাধে। অন্যদিকে শিশুটির চিৎকার করে কান্নাও মেনে নিতে কষ্ট হয়। তারপরও দ্রুতপায়ে হেঁটে সরে আসে তাঁবুর কাছ থেকে। আর একটি তাঁবু থেকে বেরিয়ে আসে শরীফ। অঞ্জনকে দেখে দ্রুতপায়ে কাছে আসে।
-ডাক্তার সাহেব আমার মেয়েটির খুব জ্বর। মুষড়ে পড়ে আছে। কিছু খেতেও চায় না।
-ও কত বড়?
-পনেরো বছর হয়েছে।
-চলেন দেখি।
অঞ্জন পকেট থেকে থার্মোমিটার বের করে হাতে রাখে। দুজন দ্রুত হেঁটে গিয়ে তাঁবুতে ঢোকে। মেয়েটি মায়ের কোলে মাথা রেখে শুয়ে কঁকাচ্ছে। এক অদ্ভুত শব্দ ভেসে আসছে ওর মুখ থেকে। অঞ্জন ওকে দেখে বিব্রত হয়। বুঝে যায় যে মেয়েটির শুধু জ্বর নয়। থার্মোমিটার দিয়ে জ্বর মেপে বিস্মিত হয়। বুঝতে পারে ও টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়েছে। হাসপাতালে নিতে হবে। কিন্তু সেটা সম্ভব হবে না। তাঁবু থেকে বেরিয়ে শরীফকে বলে, আমি যাই, ওষুধ আনার ব্যবস্থা করি।
শরীফ ঘাড় নেড়ে বলে, আচ্ছা।

চলবে…

আগের পর্বগুলো..

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা। পর্ব- ৩৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা পর্ব: ২৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১

 

Header Ad
Header Ad

কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ মিরাজ, দর্শক পছন্দে সেরা ঋতুপর্ণা

ছবি: সংগৃহীত

২০২৪ সালের কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত জমকালো অনুষ্ঠানে তার হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

অন্যদিকে, দর্শক ভোটে সর্বাধিক পছন্দের ক্রীড়াবিদ হিসেবে ‘পপুলার চয়েজ অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করেন নারী সাফ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা জাতীয় নারী ফুটবল দলের মিডফিল্ডার ঋতুপর্ণা চাকমা।

এ বছর ‘স্পোর্টস পারসন অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কার জয়ের দৌড়ে মিরাজ পেছনে ফেলেছেন ঋতুপর্ণা এবং ২০২৪ প্যারিস অলিম্পিকে কোয়ালিফাই করা আর্চার সাগর ইসলামকে। অপরদিকে, ‘পপুলার চয়েজ’ বিভাগে ঋতুপর্ণা এগিয়ে যান মিরাজ ও উদীয়মান পেসার নাহিদ রানাকে ছাড়িয়ে।

 

ছবি: সংগৃহীত

১৯৬৪ সাল থেকে ক্রীড়াবিদদের স্বীকৃতি জানিয়ে আসা দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ক্রীড়া সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএসপিএ) এবছর ১৫টি বিভাগে মোট ১৩ ব্যক্তি, দল ও সংস্থাকে সম্মাননা দেয়। সংগঠনের সভাপতি রেজওয়ান উজ জামান রাজিবের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং স্কয়ার টয়লেট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী।

পুরস্কার গ্রহণ করে মিরাজ বলেন, “বিএসপিএকে ধন্যবাদ প্রতি বছর এমন আয়োজনের জন্য। এটা আমাদের খেলোয়াড়দের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস।” ভুটানে লিগ খেলায় ব্যস্ত থাকায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে না পারলেও ভিডিও বার্তায় ঋতুপর্ণা জানান, “এই সম্মান আমাকে আরও ভালো করার অনুপ্রেরণা দেবে।”

Header Ad
Header Ad

রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা, মগবাজার-মধুবাগে তীব্র ভোগান্তি

রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মগবাজার ও মধুবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় ওয়াসার পানিতে পোকা ও ময়লার উপস্থিতি নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা। ট্যাপের পানি দুর্গন্ধযুক্ত ও অস্বচ্ছ হওয়ায় তা রান্না, গোসল ও দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করতে গিয়ে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, বাসার পানির ট্যাঙ্ক একাধিকবার পরিষ্কার করেও মিলছে না সমাধান। ওয়াসার সাপ্লাই পাইপ থেকেই এই সমস্যার উৎপত্তি বলে মনে করছেন তারা।

মধুবাগ এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, “এই পানি দিয়ে রান্না ও গোসল সম্ভব না। আমাদের বাসার শিশুরা পানি খেতেই চায় না। বাধ্য হয়ে পাম্প থেকে পানি এনে ব্যবহার করতে হচ্ছে।” আরেকজন জানান, “ট্যাঙ্ক পরিস্কার করলে প্রথমে কিছুদিন ভালো থাকে, তারপর আবার পোকা দেখা দেয়।”

বিকল্প না থাকায়, অনেকেই ট্যাপের মুখে কাপড় বেঁধে পানি ব্যবহার করছেন। কিন্তু তারপরও পেটের অসুখ ও চর্মরোগের প্রকোপ বাড়ছে বলেও জানান স্থানীয়রা।

এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঢাকা ওয়াসার তিনজন কর্মকর্তা মধুবাগ এলাকায় পরিদর্শনে যান এবং কয়েকটি বাসা থেকে পানি সংগ্রহ করে পরীক্ষায় পোকা পাওয়ার কথা স্বীকার করেন। তবে দায় চাপান ট্যাঙ্ক ঠিকমতো পরিষ্কার না করাকে। ওয়াসার উপসহকারী প্রকৌশলী তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, “লাইনের পানি পরিষ্কার। ট্যাঙ্ক যদি নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়, তাহলে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।”

তবে এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নন এলাকাবাসী। তারা বলছেন, নিয়মিত ট্যাঙ্ক পরিষ্কারের পরও পানি দূষিত হচ্ছে, যা পাইপলাইনের সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। এ অবস্থায় ওয়াসার কর্মকর্তারা পাইপের মান যাচাইয়ের আশ্বাস দিয়েছেন। এলাকাবাসী দ্রুত সমস্যার স্থায়ী সমাধান চেয়ে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Header Ad
Header Ad

বিদেশি আইনের আওতায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ: গভর্নর

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরাতে হবে বিদেশি আইনের মাধ্যমে এবং এ উদ্যোগ সম্পূর্ণ নতুন। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়াটি দেশের নয়, বরং বিদেশের আইনের সঙ্গে সংযোগ রেখে করতে হবে। এর জন্য আগে সংশ্লিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করতে হবে এবং এস্টেট (সম্পদ) ফ্রিজ করে আদালতের মাধ্যমে বাকি প্রক্রিয়া চালাতে হবে।”

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “প্রথমে এস্টেটগুলো ফ্রিজ করার চেষ্টা করছি। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে, চিঠি পাঠানো হচ্ছে। আইন পরামর্শক নিয়োগে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এস্টেট ট্রেসিং ফার্মের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এস্টেট ফ্রিজ করা গেলে এটিই হবে প্রথম সাফল্য।”

এক প্রশ্নের উত্তরে গভর্নর বলেন, “আমার ধারণা, প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। শুধু বেক্সিমকো গ্রুপেরই প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার মতো অর্থ পাচার হয়েছে। এগুলো বড় গ্রুপের হিসাব, ছোট গ্রুপগুলো এখনো বিবেচনায় আনা হয়নি। ভবিষ্যতে যেন এমন না ঘটে, সে জন্য আমরা প্রয়োজনীয় নিয়ম-কানুন সংশোধনের উদ্যোগ নিচ্ছি।”

তিনি আরও বলেন, “সব সময় আদালতের মাধ্যমে সমাধান না করে, কিছু ক্ষেত্রে সমঝোতার ভিত্তিতেও (আউট অব কোর্ট সেটেলমেন্ট) টাকা ফেরত আনার চিন্তা করছি। তবে সেটার আগে সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকা জরুরি, না হলে আমরা ঠকে যাব।”

মুদ্রাস্ফীতি সংক্রান্ত এক প্রশ্নে গভর্নর বলেন, “অতীতে খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি ৯-১০ শতাংশ দেখানো হলেও বাস্তবে তা ছিল ১৩-১৪ শতাংশ। তবে এখন সেটি ৮-৯ শতাংশে নেমেছে। সামগ্রিকভাবে মুদ্রাস্ফীতি কমতির দিকেই। আগামী বছরে তা ৫ শতাংশ বা তার নিচে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।”

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. জামাল উদ্দিন, ফাইন্যান্স ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের পরিচালক মো. আনিসুর রহমানসহ চট্টগ্রাম কার্যালয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সঞ্চালনায় ছিলেন উপপরিচালক মো. জোবাইর হোসেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ মিরাজ, দর্শক পছন্দে সেরা ঋতুপর্ণা
রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা, মগবাজার-মধুবাগে তীব্র ভোগান্তি
বিদেশি আইনের আওতায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ: গভর্নর
মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম বদল নয়, বরং ঐতিহ্যে ফেরত: ঢাবি উপাচার্য
তৃতীয় বিয়ের ইতি, রোশন সিংয়ের সঙ্গে আইনিভাবে বিচ্ছিন্ন শ্রাবন্তী
৬৪ জেলা নিয়ে তৃণমূল ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজনের ঘোষণা ক্রীড়া উপদেষ্টার
আগামীকাল শনিবার রাজধানীতে “মার্চ ফর গাজা”, পাঁচটি স্থান থেকে শোভাযাত্রা শুরু
অবশেষে নতুন চুক্তি সালাহর, লিভারপুলে থাকছেন ২০২৭ পর্যন্ত
পহেলা বৈশাখের শোভাযাত্রায় হাসিনার মুখাবয়ব
ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে মামলা করল ওপেনএআই
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মৃদু ভূমিকম্প
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে নাগরিক কমিটির নেত্রী দিলশাদ আফরিন আটক
বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কায় ডলারের বড় পতন, রেকর্ড ছুঁয়েছে স্বর্ণের দাম
ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে ১৪৭ দেশ, বাড়ছে বিশ্বজনমত
মার্কিন পণ্যে ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে চীনের পাল্টা জবাব
নারায়ণগঞ্জে দুই নারী ও এক শিশুর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার
ফুটবল মাঠ পেরিয়ে হলিউডে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো
পুলিশের চাকরি পেতে সমন্বয়কদের পেছনে দৌড়ানো বন্ধ করুন: সারজিস
ড. ইউনূসের ৫ বছর ক্ষমতায় থাকার কোনও অধিকার নেই: সেলিমা রহমান
সিটি কর্পোরেশন হচ্ছে বগুড়া, গণশুনানির প্রস্তুতি শুরু