বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪ | ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৩৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা

কলকাতা থেকে শরণার্থীদের দেখতে যশোর রোডে এসেছেন আমেরিকার কবি অ্যালেন গিনসবার্গ। সঙ্গে সুনীল গঙ্গ্যোপাধ্যায়। শরণার্থী শিবিরের দিকে তাকিয়ে মর্মাহত হন গিনসবার্গ। শিশুরা রাস্তার ধারে কিংবা মাঠের এখানে-ওখানে গড়াগড়ি দিচ্ছে। খিদায় কাঁদছে। ওরা খেলাধুলার মধ্যে নেই। গিনসবার্গ চারদিকে তাকিয়ে মর্মাহত হয়।

মানুষের দুঃখ-কষ্টের জীবনযাপন তাদের চেহারায় প্রতিফলিত হয়ে আছে। বিশেষ করে বৃদ্ধ মানুষদের দিকে তাকিয়ে দৃষ্টি ধরে রাখা যায়না। মানুষের কষ্টের চেহারা এভাবে দেখতে পাওয়া এক ভিন্নতর অভিজ্ঞতা। আগে কখনো দেখা হয়নি। এইসব দেখার অনুভব তার কবিতার লাইনে উঠে আসবে। মনে মনে ঠিক করে কবিতার নাম হবে ‘সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড’। শরণার্থী মানুষের চেহারা দেখে বুকের ভেতর কাঁপন ধরে। সুনীলের দিকে ঘুরে তাকিয়ে বলে, বুঝতে পারছি ওদের খুব কষ্টে দিন কাটছে।
-কাটবেইতো। সুনীল সার্পোট করে বলে। তারা নিজের দেশের থেকে চলে এসেছে পাকিস্তানিদের নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য। ভারত সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে নিজেদের সাধ্যমতো।
-বুঝেছি। থাক আর বলতে হবে না। যুদ্ধের পরিস্থিতিতে এমন হবেই। আমি আমেরিকায় ফিরে গিয়ে কবিতা লিখব।
-বেশ, বেশ। সুন্দর ধারণা। আমিও লিখব।
-মানুষের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখছি কি অবস্থা। সবার চেহারায় আছে দুঃখ-কষ্টের ছাপ। আরও নানা বর্ণনা করতে পারব। কষ্টের সীমারেখায় কবিতা লেখা হবে। আরও কিছুক্ষণ ঘুরেফিরে তারপর চলে যাব। যশোর রোডের শরণার্থী শিবির আমার জীবনের নতুন শিক্ষা। জীবনযাপন দেখার নতুন বৈচিত্র্য। এই সময় কলকাতায় না এলে আমার দেখা হতো না। তোমাকে আমার কৃতজ্ঞতা জানাই সুনীল।
-পূর্ববঙ্গ স্বাধীন বাংলাদেশ হবে এটা আমার বিশাল প্রত্যাশা। শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্ব বাঙালিকে সচেতন করে তুলেছে। বাঙালি একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের নাগরিক হবে এ বড় গৌরবের জায়গা। আমিতো মনে করি স্বাধীনতার পরে বাংলা ভাষা হবে রাষ্ট্রের ভাষা। সুনীলের এমন প্রত্যাশা মুগ্ধ করে অ্যালেন গিনসবার্গকে। বাঙালির সেই স্বপ্ন পূরণ হবে এটা নিয়ে নিজেও উদ্বুদ্ধ হয়। ও সুনীলকে বলে, এমন স্বপ্ন পূরণের জন্য মানুষের দুঃখ-কষ্ট প্রকৃতির নিয়ম। তোমার মতো আমিও বাংলা ভাষাকে নিয়ে এই স্বপ্ন দেখছি। কবিতায় ধরে রাখব সময়ের পরিধি।
-তোমাকে অভিনন্দন জানাই। কবিতার জন্য সুন্দর নাম নির্বাচন করেছ।
-থ্যাঙ্কু। চলো কিছুক্ষণ ঘুরে বেড়াই। মানুষের কষ্টের চেহারা আটকে থাকুক বুকের ক্যানভাসে।
সুনীল কথা বাড়ায়না। হাঁটতে শুরু করে। দুজনে এগিয়ে যায়। দেখতে পায় নানাদিকের দৃশ্য একরকমই। সবার চেহারায় কষ্টের ছাপ। ওদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অনেক লোক। একইসঙ্গে হাঁটছে। অ্যালেন গিনসবার্গ বুঝতে পারে কোনোরকমে বাস করার ঠাঁই করে নিয়েছে সবাই। কিন্তু পর্যাপ্ত খাবার নেই, বিশুদ্ধ পানি নেই, স্যানিটেশনের ব্যবস্থা পর্যাপ্ত নয়। এতকিছু দেখে ভীষণ মর্মাহত হলেন তিনি। মানুষের এভাবে দিনযাপন মানবিকতার ছোঁয়া না। কিন্তু কিছু করারও নই। যুদ্ধ শেষ হলে স্বাধীনতার বরণডালা মাথায় নিয়ে ঘরে ফিরবে সবাই। এই শুভ ধারণা নিয়ে ফিরে যায় দুজনে। মাঝপথে দেখা হয় অঞ্জনের সঙ্গে। অঞ্জন সুনীলকে চিনতে পারে। কাছে গিয়ে বলে, সুনীলদা আপনি শরণার্থী শিবির দেখতে এসেছেন?
-ইনি আমেরিকার কবি অ্যালেন গিনসবার্গ। তাঁকে দেখাতে নিয়ে এসেছি। তিনি আমেরিকা ফিরে ‘সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড’ নামে কবিতা লিখবেন।
-ওহ দারুণ! আপনাকে ধন্যবাদ।
অঞ্জন হাত বাড়িয়ে হ্যান্ডশেক করে। অভিভূত হয়।
-আমিও শরণার্থী ক্যাম্পে থাকি স্বাধীনতার স্বপ্ন নিয়ে। এখানে থাকার কষ্ট অনুভব করিনা।
-দারুণ চিন্তা। আপনাকে অভিনন্দন জানাই। সবার মাঝে এমন চিন্তা ছড়াবেন। কেউ যেন কষ্ট করে না থাকে।
-হ্যাঁ, আমি সবাইকে এটা বোঝাই। তবে সবাইতো একরকম না। অনেকের কাছে কষ্ট প্রধান হয়ে উঠে। তবে স্বাধীনতার স্বপ্ন সবার বুকের ভেতর আছে।
-আমিও তাই মনে করি। কষ্ট সাময়িক। স্বপ্ন থাকে জীবনভর।
-ঠিক, ঠিক। অঞ্জন হাসতে হাসতে মাথা ঝাঁকায়। অ্যালান গিনসবার্গকে দৃষ্টিতে নন্দিত করে। সুনীলকে বলে, দাদা, আপনাদের জন্য কি করতে পারি?
-এখানে কিছু করা যাবে না। আমরা কিছু খাব না।
-কবি কি কারো সঙ্গে কথা বলবেন?
-না, দরকার নেই। আমরা চলে যাই এখন।
-আচ্ছা, আপনাদের সঙ্গে আমিও এগোব।
-কতদূর যাবেন?
-যশোর রোডের শেষ মাথায়।
-চলেন, যাই।
তিনজনে হাঁটতে শুরু করে। দেখতে পায় চারপাশে দুঃখী মানুষরা ঘোরাফেরা করছে। কেউ কেউ তাদের পেছনে আসছে। অঞ্জন অতিথি দুজনের সঙ্গে কথা বলে না। নিজের থেকে কিছু বলার ইচ্ছা হয় না। যারা দেখতে এসেছে তারা দেখুক চারদিক। নিজেদের উপলব্ধি দিয়ে মূল্যায়ন করুক বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়।

যশোর রোডের শেষ মাথা এসে দাঁড়িয়ে পড়ে তিনজনে। অ্যালেন বলে, আমার এই শরণার্থী শিবির দেখার অভিজ্ঞতা আমি আজীবন মনে রাখব।

সুনীল বলে, আমিও মনে রাখব। আমার দেখা পূর্ববঙ্গ স্বাধীন বাংলাদেশ হবে, এটা আমার কাছে গৌরবের অহঙ্কার। বিদায় ডক্টর অঞ্জন।
-গুড বাই ডক্টর অঞ্জন। আপনার সঙ্গে দেখা হয়ে ভালো লেগেছে।
-আপনিও আমার প্রিয় কবি হয়ে থাকবেন, অ্যালেন গিনসবার্গ।
-থ্যাঙ্কু।
দুজনে সামনে এগিয়ে গিয়ে বাসে উঠে। ওদের দিকে তাকিয়ে থাকে অঞ্জন। ভাবে, ও নিজেও একদিন বাসে উঠে কলকাতার সল্টলেকের শরণার্থী শিবির দেখতে যাবে। পরক্ষণে মনে হয়, কেমন করে যাবে? ওর কাছে তো ইন্ডিয়ান রুপি নেই। মুহূর্তে পেছনে ফিরে হাঁটতে শুরু করে। দেখতে পায় মাঠের ভেতরে বেশকিছু লোক জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু বলে স্লোগান দিচ্ছে। নিজেও স্লোগান দিতে দিতে ওদের কাছে চলে যায়। ওদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ওদের মতো দুহাত উপরে তুলে স্লোগান দেয়। উদ্দীপিত হয়। একসময় লোকেরা ওকে জিজ্ঞেস করে, বঙ্গবন্ধুকে আমরা কবে দেখতে পাব ডাক্তার সাহেব?
-জানিনা ভাইয়েরা আমার। আমার মনে হয় পাকিস্তানিদের লাত্থি দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়ার পরে পাকিস্তানের জেলখানা থেকে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আসা যাবে।
-হুররে.... ঠিক ঠিক। জয় বাংলা-জয় বঙ্গবন্ধু।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা। পর্ব- ৩৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা পর্ব: ২৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১

 

Header Ad

স্বৈরাচার পালিয়েছে কিন্তু লেজ রেখে গেছে, তারা ষড়যন্ত্র করছে: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, পতিত স্বৈরাচারের সময়ে যারা নিজেদের স্বার্থ হাসিল করেছে তারা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। আপনাদের সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের লেজ রেখে গেছে এবং তারা ষড়যন্ত্র করছে, তারা কিন্তু বসে নেই।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) দিনভর সিলেটে বিএনপির উদ্যোগে রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি বিষয়ক কর্মশালা শেষে বিকালে সমাপনী বক্তব্যে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, বিএনপি গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি, দেশের মানুষ বিএনপির সঙ্গে রয়েছেন। মানুষ মনে করে বিএনপির কাছে গণতন্ত্র ও বাক-স্বাধীনতা নিরাপদ। এজন্য মানুষ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। জনগণের এ আস্থাকে ধরে রাখার দায়িত্ব বিএনপি নেতাকর্মীদের।

তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষতিগ্রস্ত হলে দেশ ও গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি। দল কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে দেশ ও দেশের গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

তিনি আরও বলেন, আগামীতে বাংলাদেশকে কোনো হুমকি থেকে রক্ষা করতে হলে গণতন্ত্র টিকিয়ে রাখতে হবে।

সিলেট শিল্পকলা একাডেমিতে সকাল থেকে শুরু হওয়া রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি বিষয়ক কর্মশালায় অংশ নেন সিলেট বিভাগের পাঁচ ইউনিটের নেতারা।

কর্মশালায় জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জিকে গউসের সভাপতিত্বে ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেনের সঞ্চালনায় দিনব্যাপী কর্মশালায় প্রশিক্ষণ প্রদানকালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য এম নাসের রহমান ও সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীসহ কয়েকজন নেতার ৩১ দফা কর্মসূচির ওপর বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

প্রশিক্ষণে প্যানেল আলোচক ছিলেন- ডা. মওদুদ আলমগীর, বিএনপি মিডিয়া সেলের আহবায়ক ডা. মহিউদ্দিন আলমগীর পাবেল, কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবা হাবিবা, সহ-ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নেওয়াজ হালিমা আলি, সহ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রেহানা আক্তার রানু।

কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, সহ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খন্দকার আনিসুর রহমান তালুকদার, নির্বাহী কমিটির সদস্য (দপ্তরের দায়িত্বে) আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন ও মিফতাহ্ সিদ্দিকী। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য তাহসিনা রুশদির লুনা, খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির ও ড. এনামুল হক চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, সহ-সম্পাদক শাম্মী আক্তার ও আব্দুর রাজ্জাক, নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, মিজানুর রহমান চৌধুরী, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহবান ফজলুল হক ময়ুন, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নজিবুর রহমান নজিব।

সমাপনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যের শুরুতেই ঢাকায় গত দুই দিনের পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, পতিত স্বৈরাচারের সময়ে যারা নিজেদের স্বার্থ হাসিল করেছে তারা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। আপনাদের সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের লেজ রেখে গেছে এবং তারা ষড়যন্ত্র করছে, তারা কিন্তু বসে নেই। আমরা গণতন্ত্রের পক্ষে শক্তি, দেশের মানুষ আমাদের সঙ্গে রয়েছে। মানুষ মনে করে বিএনপির কাছে গণতন্ত্র ও বাক-স্বাধীনতা নিরাপদ। এজন্য মানুষ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে।

নেতাকর্মীদের প্রতি তারেক রহমান বলেন, মানুষ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। মানুষের আস্থা ধরে রাখার দায়িত্ব তৃণমূলের নেতাকর্মীদের। জনগণের এ আস্থাকে ধরে রাখার দায়িত্ব আপনার।

তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আন্দোলন করা সব দলের পক্ষ থেকে ৩১ দফা ঘোষণা করা হয়েছে। এটির মধ্যে রাষ্ট্রকাঠামোর অধিকাংশই আছে। আরও যত প্রস্তাব আসবে তা যুক্তিসংগত হলে যুক্ত করা হবে। আজকে বিভাগ পর্যায়ে ৩১ দফা নিয়ে আলোচনার পর জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যেতে হবে। বইয়ে অনেক কিছু সুন্দরভাবে লিখা থাকে, কিন্তু তা বাস্তবায়ন করতে হয় মানুষকে। তাই ভালো নিয়ত নিয়ে ভালো নিয়ত থাকলে আমরা ভালো কিছু করতে পারব।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র চলার পথে বিভিন্নভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। বিগত ১৬ বছরে বহু মানুষ গুম ও খুনের শিকার হয়েছেন। জুলাই-আগস্টে দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ শহিদ হয়েছেন। জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পারলে এ প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন সম্ভব। গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতাকে বজায় রাখলে জবাবদিহিতা তৈরি হবে। এজন্য যেকোনো মূল্যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে অব্যাহত রাখব।

Header Ad

সহজেই বাংলাদেশকে হারাল উইন্ডিজ

ছবি: সংগৃহীত

পরাজয়ের মঞ্চ প্রস্তুত হয়েই ছিল। দেখার ছিল টেস্টের শেষ দিন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ঠিক কতটা অপেক্ষায় রাখতে পারে বাংলাদেশ। তবে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি ক্যারিবীয়দের। দ্রুতই সফরকারীদের গুটিয়ে বড় রনের জয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা।

অ্যান্টিগা টেস্টের শেষ দিনে আজ মঙ্গলবার মেহেদী হাসান মিরাজের দল হারের ব্যবধান কতোটা কমাতে পারে সেটাই ছিল দেখার। কিন্তু ৩ উইকেট নিয়ে লড়তেই পারলেন না ব্যাটাররা। দিনের খেলা শুরুর ৪০ মিনিটের মধ্যেই জয় নিশ্চিত করে ফেলে উইন্ডিজ।

অ্যান্টিগা টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতল ২০১ রানে। একইসঙ্গে ২ ম্যাচ টেস্ট সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা। জ্যামাইকায় ৩০ নভেম্বর সিরিজের ২য় ও শেষ টেস্টে মুখোমুখি হবে এই দুই দল।

আগের দিন জয়ের জন্য ৩৩৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ৭ উইকেটে ১০৯ রানে চতুর্থ দিনের খেলা শেষ করে বাংলাদেশ। আর আজ ২ উইকেট হারাতেই শেষ হয়ে যায় ম্যাচ। শরিফুল ইসলাম চোটে থাকায় ব্যাট করতে করতে পারেন নি। রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে তিনি ড্রেসিংরুমে।

কাঁধে আঘাত পাওয়ার ব্যাটিং চালিয়ে যেতে পারেননি শরিফুল। তাতেই ৯ উইকেটে ১৩২ রানে থামল বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস। হাতে ১ উইকেট থাকলেও বাংলাদেশ হার মেনে নিয়ে মাঠ ছাড়ে। আগের দিন ১ উইকেট হাতে থাকলেও ১৮১ রানে পিছিয়ে থেকে ইনিংস ঘোষণা করেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

আজ টেস্টের প্রথম দিনে উইকেটে আসা-যাওয়ার দায়টুকু সারতেই যেন মাঠে নামল বাংলাদেশ ব্যাটাররা। ৪০ মিনিটের কম সময়ের মধ্যে শেষ ইনিংস। খেলতে পারল মাত্র ৭ ওভার। আগের দিনের রানের সঙ্গে যোগ করতে পারল মাত্র ২৩ রান।

জাকের আলি ফিরে গেলেন ৩১ রানে। আগের দিন মিরাজ করেন ৪৫ রান। এ নিয়ে টানা তিন সফরে অ্যান্টিগায় প্রথম টেস্টে হারল বাংলাদেশ দল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টানা পঞ্চম হার দেখল দলটি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ৪৫০/৯ ডিক্লে.
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২৬৯/৯ ডিক্লে.
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস: ১৫২/১০
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ৩৮ ওভারে ১৩২/১০ (জাকের ৩১, হাসান ০, তাসকিন ৪*, শরিফুল ১ আহত আউট; রোচ ৮-১-২০-৩, সিলস ১৩-৩-৪৫-৩, শামার জোসেফ ৬-১-২২-১, আলজারি জোসেফ ৮-১-৩২-২, গ্রেভস ৩-১-১২-০)
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০১ রানে জয়ী
সিরিজ: ২ ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ
পরবর্তী টেস্ট: ৩০ নভেম্বর, জ্যামাইকায়

Header Ad

আইনজীবী হত্যায় প্রধান উপদেষ্টার নিন্দা, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান

আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

বন্দরনগরী চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ও যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

পোস্টে শফিকুল আলম লিখেছেন, চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ও যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি লেখেন, জনগণকে শান্ত থাকার এবং অপ্রীতিকর কার্যকলাপে অংশ নেওয়া থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলিকে বন্দর নগরীসহ সমস্ত ঝুঁকিপূর্ণ আশেপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন।

যেকোনো মূল্যে অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিশ্চিত করতে ও সমুন্নত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও জানিয়েছেন ড. ইউনূস।

এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ সনাতনী জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে সৃষ্ট সংঘর্ষে নিহত হন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ। নিহত আলিফ (৩৫) সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি)। সাইফুল লোহাগাড়ার চুনতি এলাকার জামাল উদ্দিনের ছেলে।

জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম ষষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলামের আদালত চিন্ময়ের জামিন নামঞ্জুর করেন। পরে তার অনুসারীরা আদালত চত্বরে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় কয়েকজন আহত হন।

আহতদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা আহত শিক্ষানবিশ আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে মৃত ঘোষণা করেন।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

স্বৈরাচার পালিয়েছে কিন্তু লেজ রেখে গেছে, তারা ষড়যন্ত্র করছে: তারেক রহমান
সহজেই বাংলাদেশকে হারাল উইন্ডিজ
আইনজীবী হত্যায় প্রধান উপদেষ্টার নিন্দা, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান
এ আর রহমান আমার বাবার মতো: মোহিনী দে
ইসকন আন্দোলনে দেশি-বিদেশি ইন্ধন রয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
সাইম আইয়ুবের বিস্ফোরক সেঞ্চুরিতে সমতায় ফিরলো পাকিস্তান
কে এই চিন্ময় কৃষ্ণ দাস, তাকে গ্রেপ্তার নিয়ে কেন এত হইচই
ভারত থেকে আলু ও পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ, বেড়েছে দাম
৮০ বছর বয়সেও মডেলিং করবেন রুনা খান
চট্টগ্রামে চিন্ময়ের অনুসারীদের হামলায় আইনজীবী নিহত
গুলিবিদ্ধ হওয়ার ২২ দিন পর নওগাঁ যুবদল নেতার মৃত্যু
ঢাকা ও চট্টগ্রামে ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন
চিন্ময় কৃষ্ণকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়ে ভারতের বিবৃতি
সম্প্রদায়ের নেতা হিসেবে নয়, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় গ্রেফতার: আসিফ মাহমুদ
সংবিধানের ৬২ জায়গায় সংশোধনের প্রস্তাব বিএনপির
বঙ্গবন্ধু রেল সেতুতে চলল পরীক্ষামূলক ট্রেন
শাপলা চত্বর গণহত্যায় শেখ হাসিনাসহ ৪৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ
এখনও দেশের প্রতিষ্ঠিত অনেক গণমাধ্যম ভুল সংবাদ ও গুজব প্রচার করছে : উপদেষ্টা নাহিদ
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর, কারাগারে প্রেরণ
ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে উত্তাল পাকিস্তান, নিহত ছয়