শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫ | ২৮ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৩৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা

কলকাতা থেকে শরণার্থীদের দেখতে যশোর রোডে এসেছেন আমেরিকার কবি অ্যালেন গিনসবার্গ। সঙ্গে সুনীল গঙ্গ্যোপাধ্যায়। শরণার্থী শিবিরের দিকে তাকিয়ে মর্মাহত হন গিনসবার্গ। শিশুরা রাস্তার ধারে কিংবা মাঠের এখানে-ওখানে গড়াগড়ি দিচ্ছে। খিদায় কাঁদছে। ওরা খেলাধুলার মধ্যে নেই। গিনসবার্গ চারদিকে তাকিয়ে মর্মাহত হয়।

মানুষের দুঃখ-কষ্টের জীবনযাপন তাদের চেহারায় প্রতিফলিত হয়ে আছে। বিশেষ করে বৃদ্ধ মানুষদের দিকে তাকিয়ে দৃষ্টি ধরে রাখা যায়না। মানুষের কষ্টের চেহারা এভাবে দেখতে পাওয়া এক ভিন্নতর অভিজ্ঞতা। আগে কখনো দেখা হয়নি। এইসব দেখার অনুভব তার কবিতার লাইনে উঠে আসবে। মনে মনে ঠিক করে কবিতার নাম হবে ‘সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড’। শরণার্থী মানুষের চেহারা দেখে বুকের ভেতর কাঁপন ধরে। সুনীলের দিকে ঘুরে তাকিয়ে বলে, বুঝতে পারছি ওদের খুব কষ্টে দিন কাটছে।
-কাটবেইতো। সুনীল সার্পোট করে বলে। তারা নিজের দেশের থেকে চলে এসেছে পাকিস্তানিদের নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য। ভারত সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে নিজেদের সাধ্যমতো।
-বুঝেছি। থাক আর বলতে হবে না। যুদ্ধের পরিস্থিতিতে এমন হবেই। আমি আমেরিকায় ফিরে গিয়ে কবিতা লিখব।
-বেশ, বেশ। সুন্দর ধারণা। আমিও লিখব।
-মানুষের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখছি কি অবস্থা। সবার চেহারায় আছে দুঃখ-কষ্টের ছাপ। আরও নানা বর্ণনা করতে পারব। কষ্টের সীমারেখায় কবিতা লেখা হবে। আরও কিছুক্ষণ ঘুরেফিরে তারপর চলে যাব। যশোর রোডের শরণার্থী শিবির আমার জীবনের নতুন শিক্ষা। জীবনযাপন দেখার নতুন বৈচিত্র্য। এই সময় কলকাতায় না এলে আমার দেখা হতো না। তোমাকে আমার কৃতজ্ঞতা জানাই সুনীল।
-পূর্ববঙ্গ স্বাধীন বাংলাদেশ হবে এটা আমার বিশাল প্রত্যাশা। শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্ব বাঙালিকে সচেতন করে তুলেছে। বাঙালি একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের নাগরিক হবে এ বড় গৌরবের জায়গা। আমিতো মনে করি স্বাধীনতার পরে বাংলা ভাষা হবে রাষ্ট্রের ভাষা। সুনীলের এমন প্রত্যাশা মুগ্ধ করে অ্যালেন গিনসবার্গকে। বাঙালির সেই স্বপ্ন পূরণ হবে এটা নিয়ে নিজেও উদ্বুদ্ধ হয়। ও সুনীলকে বলে, এমন স্বপ্ন পূরণের জন্য মানুষের দুঃখ-কষ্ট প্রকৃতির নিয়ম। তোমার মতো আমিও বাংলা ভাষাকে নিয়ে এই স্বপ্ন দেখছি। কবিতায় ধরে রাখব সময়ের পরিধি।
-তোমাকে অভিনন্দন জানাই। কবিতার জন্য সুন্দর নাম নির্বাচন করেছ।
-থ্যাঙ্কু। চলো কিছুক্ষণ ঘুরে বেড়াই। মানুষের কষ্টের চেহারা আটকে থাকুক বুকের ক্যানভাসে।
সুনীল কথা বাড়ায়না। হাঁটতে শুরু করে। দুজনে এগিয়ে যায়। দেখতে পায় নানাদিকের দৃশ্য একরকমই। সবার চেহারায় কষ্টের ছাপ। ওদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অনেক লোক। একইসঙ্গে হাঁটছে। অ্যালেন গিনসবার্গ বুঝতে পারে কোনোরকমে বাস করার ঠাঁই করে নিয়েছে সবাই। কিন্তু পর্যাপ্ত খাবার নেই, বিশুদ্ধ পানি নেই, স্যানিটেশনের ব্যবস্থা পর্যাপ্ত নয়। এতকিছু দেখে ভীষণ মর্মাহত হলেন তিনি। মানুষের এভাবে দিনযাপন মানবিকতার ছোঁয়া না। কিন্তু কিছু করারও নই। যুদ্ধ শেষ হলে স্বাধীনতার বরণডালা মাথায় নিয়ে ঘরে ফিরবে সবাই। এই শুভ ধারণা নিয়ে ফিরে যায় দুজনে। মাঝপথে দেখা হয় অঞ্জনের সঙ্গে। অঞ্জন সুনীলকে চিনতে পারে। কাছে গিয়ে বলে, সুনীলদা আপনি শরণার্থী শিবির দেখতে এসেছেন?
-ইনি আমেরিকার কবি অ্যালেন গিনসবার্গ। তাঁকে দেখাতে নিয়ে এসেছি। তিনি আমেরিকা ফিরে ‘সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড’ নামে কবিতা লিখবেন।
-ওহ দারুণ! আপনাকে ধন্যবাদ।
অঞ্জন হাত বাড়িয়ে হ্যান্ডশেক করে। অভিভূত হয়।
-আমিও শরণার্থী ক্যাম্পে থাকি স্বাধীনতার স্বপ্ন নিয়ে। এখানে থাকার কষ্ট অনুভব করিনা।
-দারুণ চিন্তা। আপনাকে অভিনন্দন জানাই। সবার মাঝে এমন চিন্তা ছড়াবেন। কেউ যেন কষ্ট করে না থাকে।
-হ্যাঁ, আমি সবাইকে এটা বোঝাই। তবে সবাইতো একরকম না। অনেকের কাছে কষ্ট প্রধান হয়ে উঠে। তবে স্বাধীনতার স্বপ্ন সবার বুকের ভেতর আছে।
-আমিও তাই মনে করি। কষ্ট সাময়িক। স্বপ্ন থাকে জীবনভর।
-ঠিক, ঠিক। অঞ্জন হাসতে হাসতে মাথা ঝাঁকায়। অ্যালান গিনসবার্গকে দৃষ্টিতে নন্দিত করে। সুনীলকে বলে, দাদা, আপনাদের জন্য কি করতে পারি?
-এখানে কিছু করা যাবে না। আমরা কিছু খাব না।
-কবি কি কারো সঙ্গে কথা বলবেন?
-না, দরকার নেই। আমরা চলে যাই এখন।
-আচ্ছা, আপনাদের সঙ্গে আমিও এগোব।
-কতদূর যাবেন?
-যশোর রোডের শেষ মাথায়।
-চলেন, যাই।
তিনজনে হাঁটতে শুরু করে। দেখতে পায় চারপাশে দুঃখী মানুষরা ঘোরাফেরা করছে। কেউ কেউ তাদের পেছনে আসছে। অঞ্জন অতিথি দুজনের সঙ্গে কথা বলে না। নিজের থেকে কিছু বলার ইচ্ছা হয় না। যারা দেখতে এসেছে তারা দেখুক চারদিক। নিজেদের উপলব্ধি দিয়ে মূল্যায়ন করুক বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়।

যশোর রোডের শেষ মাথা এসে দাঁড়িয়ে পড়ে তিনজনে। অ্যালেন বলে, আমার এই শরণার্থী শিবির দেখার অভিজ্ঞতা আমি আজীবন মনে রাখব।

সুনীল বলে, আমিও মনে রাখব। আমার দেখা পূর্ববঙ্গ স্বাধীন বাংলাদেশ হবে, এটা আমার কাছে গৌরবের অহঙ্কার। বিদায় ডক্টর অঞ্জন।
-গুড বাই ডক্টর অঞ্জন। আপনার সঙ্গে দেখা হয়ে ভালো লেগেছে।
-আপনিও আমার প্রিয় কবি হয়ে থাকবেন, অ্যালেন গিনসবার্গ।
-থ্যাঙ্কু।
দুজনে সামনে এগিয়ে গিয়ে বাসে উঠে। ওদের দিকে তাকিয়ে থাকে অঞ্জন। ভাবে, ও নিজেও একদিন বাসে উঠে কলকাতার সল্টলেকের শরণার্থী শিবির দেখতে যাবে। পরক্ষণে মনে হয়, কেমন করে যাবে? ওর কাছে তো ইন্ডিয়ান রুপি নেই। মুহূর্তে পেছনে ফিরে হাঁটতে শুরু করে। দেখতে পায় মাঠের ভেতরে বেশকিছু লোক জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু বলে স্লোগান দিচ্ছে। নিজেও স্লোগান দিতে দিতে ওদের কাছে চলে যায়। ওদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ওদের মতো দুহাত উপরে তুলে স্লোগান দেয়। উদ্দীপিত হয়। একসময় লোকেরা ওকে জিজ্ঞেস করে, বঙ্গবন্ধুকে আমরা কবে দেখতে পাব ডাক্তার সাহেব?
-জানিনা ভাইয়েরা আমার। আমার মনে হয় পাকিস্তানিদের লাত্থি দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়ার পরে পাকিস্তানের জেলখানা থেকে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আসা যাবে।
-হুররে.... ঠিক ঠিক। জয় বাংলা-জয় বঙ্গবন্ধু।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা। পর্ব- ৩৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা পর্ব: ২৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১

 

Header Ad
Header Ad

কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ মিরাজ, দর্শক পছন্দে সেরা ঋতুপর্ণা

ছবি: সংগৃহীত

২০২৪ সালের কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত জমকালো অনুষ্ঠানে তার হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

অন্যদিকে, দর্শক ভোটে সর্বাধিক পছন্দের ক্রীড়াবিদ হিসেবে ‘পপুলার চয়েজ অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করেন নারী সাফ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা জাতীয় নারী ফুটবল দলের মিডফিল্ডার ঋতুপর্ণা চাকমা।

এ বছর ‘স্পোর্টস পারসন অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কার জয়ের দৌড়ে মিরাজ পেছনে ফেলেছেন ঋতুপর্ণা এবং ২০২৪ প্যারিস অলিম্পিকে কোয়ালিফাই করা আর্চার সাগর ইসলামকে। অপরদিকে, ‘পপুলার চয়েজ’ বিভাগে ঋতুপর্ণা এগিয়ে যান মিরাজ ও উদীয়মান পেসার নাহিদ রানাকে ছাড়িয়ে।

 

ছবি: সংগৃহীত

১৯৬৪ সাল থেকে ক্রীড়াবিদদের স্বীকৃতি জানিয়ে আসা দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ক্রীড়া সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএসপিএ) এবছর ১৫টি বিভাগে মোট ১৩ ব্যক্তি, দল ও সংস্থাকে সম্মাননা দেয়। সংগঠনের সভাপতি রেজওয়ান উজ জামান রাজিবের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং স্কয়ার টয়লেট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী।

পুরস্কার গ্রহণ করে মিরাজ বলেন, “বিএসপিএকে ধন্যবাদ প্রতি বছর এমন আয়োজনের জন্য। এটা আমাদের খেলোয়াড়দের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস।” ভুটানে লিগ খেলায় ব্যস্ত থাকায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে না পারলেও ভিডিও বার্তায় ঋতুপর্ণা জানান, “এই সম্মান আমাকে আরও ভালো করার অনুপ্রেরণা দেবে।”

Header Ad
Header Ad

রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা, মগবাজার-মধুবাগে তীব্র ভোগান্তি

রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মগবাজার ও মধুবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় ওয়াসার পানিতে পোকা ও ময়লার উপস্থিতি নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা। ট্যাপের পানি দুর্গন্ধযুক্ত ও অস্বচ্ছ হওয়ায় তা রান্না, গোসল ও দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করতে গিয়ে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, বাসার পানির ট্যাঙ্ক একাধিকবার পরিষ্কার করেও মিলছে না সমাধান। ওয়াসার সাপ্লাই পাইপ থেকেই এই সমস্যার উৎপত্তি বলে মনে করছেন তারা।

মধুবাগ এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, “এই পানি দিয়ে রান্না ও গোসল সম্ভব না। আমাদের বাসার শিশুরা পানি খেতেই চায় না। বাধ্য হয়ে পাম্প থেকে পানি এনে ব্যবহার করতে হচ্ছে।” আরেকজন জানান, “ট্যাঙ্ক পরিস্কার করলে প্রথমে কিছুদিন ভালো থাকে, তারপর আবার পোকা দেখা দেয়।”

বিকল্প না থাকায়, অনেকেই ট্যাপের মুখে কাপড় বেঁধে পানি ব্যবহার করছেন। কিন্তু তারপরও পেটের অসুখ ও চর্মরোগের প্রকোপ বাড়ছে বলেও জানান স্থানীয়রা।

এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঢাকা ওয়াসার তিনজন কর্মকর্তা মধুবাগ এলাকায় পরিদর্শনে যান এবং কয়েকটি বাসা থেকে পানি সংগ্রহ করে পরীক্ষায় পোকা পাওয়ার কথা স্বীকার করেন। তবে দায় চাপান ট্যাঙ্ক ঠিকমতো পরিষ্কার না করাকে। ওয়াসার উপসহকারী প্রকৌশলী তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, “লাইনের পানি পরিষ্কার। ট্যাঙ্ক যদি নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়, তাহলে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।”

তবে এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নন এলাকাবাসী। তারা বলছেন, নিয়মিত ট্যাঙ্ক পরিষ্কারের পরও পানি দূষিত হচ্ছে, যা পাইপলাইনের সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। এ অবস্থায় ওয়াসার কর্মকর্তারা পাইপের মান যাচাইয়ের আশ্বাস দিয়েছেন। এলাকাবাসী দ্রুত সমস্যার স্থায়ী সমাধান চেয়ে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Header Ad
Header Ad

বিদেশি আইনের আওতায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ: গভর্নর

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরাতে হবে বিদেশি আইনের মাধ্যমে এবং এ উদ্যোগ সম্পূর্ণ নতুন। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়াটি দেশের নয়, বরং বিদেশের আইনের সঙ্গে সংযোগ রেখে করতে হবে। এর জন্য আগে সংশ্লিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করতে হবে এবং এস্টেট (সম্পদ) ফ্রিজ করে আদালতের মাধ্যমে বাকি প্রক্রিয়া চালাতে হবে।”

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “প্রথমে এস্টেটগুলো ফ্রিজ করার চেষ্টা করছি। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে, চিঠি পাঠানো হচ্ছে। আইন পরামর্শক নিয়োগে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এস্টেট ট্রেসিং ফার্মের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এস্টেট ফ্রিজ করা গেলে এটিই হবে প্রথম সাফল্য।”

এক প্রশ্নের উত্তরে গভর্নর বলেন, “আমার ধারণা, প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। শুধু বেক্সিমকো গ্রুপেরই প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার মতো অর্থ পাচার হয়েছে। এগুলো বড় গ্রুপের হিসাব, ছোট গ্রুপগুলো এখনো বিবেচনায় আনা হয়নি। ভবিষ্যতে যেন এমন না ঘটে, সে জন্য আমরা প্রয়োজনীয় নিয়ম-কানুন সংশোধনের উদ্যোগ নিচ্ছি।”

তিনি আরও বলেন, “সব সময় আদালতের মাধ্যমে সমাধান না করে, কিছু ক্ষেত্রে সমঝোতার ভিত্তিতেও (আউট অব কোর্ট সেটেলমেন্ট) টাকা ফেরত আনার চিন্তা করছি। তবে সেটার আগে সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকা জরুরি, না হলে আমরা ঠকে যাব।”

মুদ্রাস্ফীতি সংক্রান্ত এক প্রশ্নে গভর্নর বলেন, “অতীতে খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি ৯-১০ শতাংশ দেখানো হলেও বাস্তবে তা ছিল ১৩-১৪ শতাংশ। তবে এখন সেটি ৮-৯ শতাংশে নেমেছে। সামগ্রিকভাবে মুদ্রাস্ফীতি কমতির দিকেই। আগামী বছরে তা ৫ শতাংশ বা তার নিচে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।”

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. জামাল উদ্দিন, ফাইন্যান্স ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের পরিচালক মো. আনিসুর রহমানসহ চট্টগ্রাম কার্যালয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সঞ্চালনায় ছিলেন উপপরিচালক মো. জোবাইর হোসেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ মিরাজ, দর্শক পছন্দে সেরা ঋতুপর্ণা
রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা, মগবাজার-মধুবাগে তীব্র ভোগান্তি
বিদেশি আইনের আওতায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ: গভর্নর
মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম বদল নয়, বরং ঐতিহ্যে ফেরত: ঢাবি উপাচার্য
তৃতীয় বিয়ের ইতি, রোশন সিংয়ের সঙ্গে আইনিভাবে বিচ্ছিন্ন শ্রাবন্তী
৬৪ জেলা নিয়ে তৃণমূল ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজনের ঘোষণা ক্রীড়া উপদেষ্টার
আগামীকাল শনিবার রাজধানীতে “মার্চ ফর গাজা”, পাঁচটি স্থান থেকে শোভাযাত্রা শুরু
অবশেষে নতুন চুক্তি সালাহর, লিভারপুলে থাকছেন ২০২৭ পর্যন্ত
পহেলা বৈশাখের শোভাযাত্রায় হাসিনার মুখাবয়ব
ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে মামলা করল ওপেনএআই
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মৃদু ভূমিকম্প
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে নাগরিক কমিটির নেত্রী দিলশাদ আফরিন আটক
বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কায় ডলারের বড় পতন, রেকর্ড ছুঁয়েছে স্বর্ণের দাম
ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে ১৪৭ দেশ, বাড়ছে বিশ্বজনমত
মার্কিন পণ্যে ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে চীনের পাল্টা জবাব
নারায়ণগঞ্জে দুই নারী ও এক শিশুর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার
ফুটবল মাঠ পেরিয়ে হলিউডে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো
পুলিশের চাকরি পেতে সমন্বয়কদের পেছনে দৌড়ানো বন্ধ করুন: সারজিস
ড. ইউনূসের ৫ বছর ক্ষমতায় থাকার কোনও অধিকার নেই: সেলিমা রহমান
সিটি কর্পোরেশন হচ্ছে বগুড়া, গণশুনানির প্রস্তুতি শুরু