বিদ্যুৎ উৎপাদনের ‘রেকর্ড’ সত্ত্বেও লোডশেডিং কেন?
দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড হয়েছে গত ১৬ এপ্রিল রাতে। এসময় সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে ১৪ হাজার ৭৮২ মেগাওয়াট। এর আগের রেকর্ড ছিল ১২ এপ্রিল। ওইদিন ১৪ হাজার ৭৮২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়।
ভোক্তরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, এই যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড তারপরও কেন লোডশেডিং? কেন ঢাকার বাইরে বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে সাহরি-ইফতার অন্ধকারে করতে হয়?
সরকারি হিসাবে, দেশে বিদ্যুতের উৎপাদন সক্ষমতা ২২ হাজার মেগাওয়াটেরও বেশি। তারপরও বিদ্যুৎ কেন থাকে না তা নিয়ে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান ঢাকাপ্রকাশ’কে বলেন, গ্যাসের স্বল্পতা থাকায় সক্ষমতা অনুযায়ী উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না। গ্যাসের সরবরাহ স্বাভাবিক হলে বিদ্যুৎ পরিস্থিতিরও উন্নতি হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রমজান মাসে বিদ্যুৎ ব্যবহারের ধরনও পাল্টে যায়। সাহরি, ইফতার ও তারাবিতে একযোগে বাড়ে বিদ্যুতের ব্যবহার। শপিংমলেও কেনাকাটার সময় একযোগে বাড়ে বিদ্যুতের ব্যবহার। এসবের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে গ্রীষ্মের গরম। চলছে সেচ মৌসুম। সব মিলিয়ে বছরে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ ব্যবহার হচ্ছে এই রমজানে।
বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, সরকারি হিসাবে এখন বিদ্যুতের চাহিদা গড়ে সাড়ে ১৪ হাজার মেগাওয়াটের বেশি। গড় উৎপাদন ৫০০ মেগাওয়াটের কিছু কম অর্থাৎ ১৪ হাজার মেগাওয়াট। এর সঙ্গে আছে সঞ্চালন ও বিতরণ লাইনের বিভ্রাট। ফলাফল লোডশেডিং।
ভোক্তারা বলছেন, বিদ্যুতের দাম তো ঠিকই বাড়াচ্ছে সরকার। কিন্তু বিদ্যুতের ব্যাকআপ তো পাচ্ছি না। প্রয়োজনের সময় বিদ্যুৎ থাকে না। এজন্য আমরা সরকারের কাছে দাবি করছি নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাওয়ার।
বিদ্যুৎ বিভাগের দাবি, রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটের কারণে জ্বালানির বিশ্ববাজার এখনো অস্থির। এ অবস্থায় কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ গ্যাস আমদানি করতে পারছে না সরকার। তারপরও শিল্পের সরবরাহ কমিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা চলছে।
এ অবস্থায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলছেন, এখন তো একটু ভাল অবস্থায় চলে এসেছি আমরা। মনে হয় না কোনো বড় ধরনের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা আছে। কোনো ধরনের ফল্ট আমরা এখনো ফেস করিনি।
তবে বৃহত্তর ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, রংপুর অঞ্চলে হয়তো কিছুটা সমস্যা হচ্ছে স্বীকার করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখন সমস্যা অনেক কেটে গেছে। ভবিষ্যতে হয়তো আরও ভাল হবে বলে আশা করি। সংকট কাটাতে গ্রাহকদেরও সাশ্রয়ী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।
আরইউ/এমএমএ/
Attachments area