দুদক সংস্কারের খবরে তরিঘরি ২৪ কর্মকর্তার পদন্নোতি, অর্থ লেনদেনের অভিযোগ
ছবি: ঢাকাপ্রকাশ গ্রাফিক্স
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। যার প্রভাব পড়েছে রাজনীতি, প্রশাসন, সরকারি-বেসরকারি অফিস থেকে শুরু করে সকল মহলে। পাল্টে যাচ্ছে চিরচেনা রূপ। এমন পরিস্থিতিতে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) সকাল থেকেই বিরাজ করছিল শুনশান নীরবতা। অফিসে ছিল না কোন রুটিন ওয়ার্ক। মঙ্গলবার দুপুর ১২টার পর দুদক কার্যালয় খালি হতে থাকে। অফিস থেকে বের হওয়ার হিড়িক পড়ে যায়। গুজব ছড়ানো হয় নাশকতা হবে দুদক অফিসে। তবে অফিসে অবস্থান করছিলেন কয়েকজন কর্মকর্তা।
এদিন এই সুযোগে আওয়ামী ঘরনার দুদকের নিজস্ব জনবলের কর্মকর্তারা চেয়ারম্যান দপ্তরে ভিড় করতে থাকেন।
এর আগে সরকারের পতনের সম্ভাবনা বুঝতে পেরে দুদকের নিজস্ব জনবলের আওয়ামী ঘরনার কর্মকর্তারা দুদক চেয়ারম্যান, ২ কমিশনার, সচিব, আওয়ামী ঘরনার এক মহাপরিচালক, পরিচালক(প্রশাসন) ও ডুসার একজন প্রভাবশালী কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে ব্যাকডেটে(পূর্বের তারিখ) দিয়ে পদন্নোতির ফাইল স্বাক্ষর করার জন্য রাজী করান।
তারপর উপপরিচালক (ডিডি) পদে ২৪ জনের পদোন্নতির অনুমোদন দেয় কমিশন। পদোন্নতির আদেশ দিয়ে চেয়ারম্যান, দুই কমিশনার ও সচিব অফিস থেকে বের হয়ে যান।
এদিকে দীর্ঘদিন পদন্নোতি বঞ্চিত কর্মকর্তারা এই পদন্নোতিকে ক্ষমতার অপব্যবহার বলে উল্লেখ করেছেন। তারা আরও বলেন, অনেক দুদকের কর্মকর্তা পদন্নোতি পাওয়ার সময় হয়ে গেলেও প্রশাসন ক্যাডারের বিধি বর্হিভূতভাবে প্রেষণে নিয়োগ পাওয়ায় ফাকা হচ্ছে না অনেক পদ। যার ফলে পদন্নোতি বঞ্চিত হচ্ছে দুদকের নিজস্ব কর্মকর্তারা।
এর আগে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় দুদকে আসেন দুদক চেয়ারম্যান। সকাল ১১টায় আসেন কমিশনার (তদন্ত) মো. জহুরুল হক। পৌনে ১২টায় আসেন কমিশনার (অনুসন্ধান) মোছাঃ আছিয়া খাতুন।
এমন পরিস্থিতিতে নতুন কোনো নির্দেশনা আছে কিনা জানতে চাইলে কয়েকজন ডিজি ও দুদক সচিব গণমাধ্যমকে বলেন, কমিশনের নির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছেন তারা। দুর্নীতিবাজদের ধরতে এখনই বিশেষ কোনো তালিকা করা হয়নি।
এদিকে দুদকের চাকরিচ্যুত উপসহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিন গতকাল বুধবার দুদকে এসে তার চাকরি পুনর্বহালের জন্য আবেদন করেন। শরীফ উদ্দিন দীর্ঘসময় চট্টগ্রামে কর্মরত ছিলেন। তিনি কক্সবাজারে ৭২টি প্রকল্পে সাড়ে ৩ লাখ কোটি টাকার ভূমি অধিগ্রহণে দুর্নীতি, কিছু রোহিঙ্গার এনআইডি ও পাসপোর্ট জালিয়াতি, কর্ণফুলী গ্যাসে অনিয়মসহ বেশকিছু দুর্নীতিবিরোধী অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি মামলা করেন। এতে তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের অনেক প্রভাবশালী মন্ত্রী এমপি আমলাদের চক্ষুশূল হয়ে উঠেছিলেন এবং যার ফল স্বরূপ চাকরিচ্যুত হয় শরিফ উদ্দিন।