মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫ | ১১ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

আওয়ামী ঘরানার কর্মকর্তাদের দখলে এখনো রেলওয়ের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ

আওয়ামী ঘরানার কর্মকর্তাদের দখলে এখনো রেলওয়ের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ। ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। যার প্রভাব পড়েছে রাজনীতি, প্রশাসন, সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত থেকে শুরু পাড়া মহল্লা পর্যন্ত। পাল্টে যাচ্ছে চিরচেনা রূপ। এমন পরিস্থিতিতে আওয়ামী ঘরনার সুবিধা ভোগী কর্মকর্তাগণ রাতারাতি দল পরিবর্তনের প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। দখলে রেখেছেন রেলওয়ের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ।

আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৫ বছরে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজের বাজেট পায় রেলওয়ে। যার ৯০ শতাংশ নতুন প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ছিল। এই অর্থ তৎকালীন সরকারের মন্ত্রী এমপিদের লুটপাটের সহযোগী হিসেবে ছিলেন রেলের আওয়ামী ঘরানার কর্মকর্তাগণ। এদের প্রভাবে রেলের অন্য ঘরানার বাকি কর্মকর্তারা ছিলেন একপ্রকার অসহায়, বঞ্চিত ও নির্যাতিত।

রেলের আওয়ামী ঘরানার কিছু কর্মকর্তাগণের প্রভাব ও দখল কেমন ছিল তার কিছু অংশ তুলে ধরা হল-

রেলওয়েতে আওয়ামী ঘরানার কর্মকর্তাদের মধ্যে সবচেয়ে সুবিধাভোগী কর্মকর্তা হলেন তাবাসসুম বিনতে ইসলাম- যুগ্ম মহাপরিচালক (মেকানিক), রেলভবন। তাবাসসুম প্রায় ১৬ জন সিনিয়র কর্মকর্তাকে ডিঙ্গিয়ে এই গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হন। তার এই পদে আসার পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছিলেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। এছাড়াও শামসুজ্জামান যেসময় রেলের মহাপরিচালক ছিলেন তখন তাবাসসুম ছিলেন রেলের অলিখিত রানী তথা রেল রাণী। তৎকালীন সময় রেলমন্ত্রী সুজন ও ডিজি শামসুজ্জামান তাবাসসুমকে রেলের বদলি,পদোন্নতি থেকে শুরু করে টেন্ডার বাণিজ্য পর্যন্ত সকল কাজের ব্লাংক চেক দেওয়ার মত ক্ষমতা দিয়েছিলেন।

তাবাসসুম বিনতে ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

তাবাসসুমের এই ক্ষমতার উৎস ছিল তার স্বামী প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন হায়দার- যুগ্ম সচিব হিসেবে বর্তমানে পাসপোর্ট অধিদপ্তরে আছেন। জসিম একসময় প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের পরিচালক ছিলেন এবং ২০০৯ পরবর্তী প্রতিটি অবৈধ নির্বাচনে আওয়ামী লাঠিয়াল হিসেবে কাজ করেন। জসিমের ভয়ে রেলের সিনিয়র কর্মকর্তারাও তাকে ম্যাডাম বলে সম্বোধন করেন। এছাড়াও তাবাসসুম গত ১৫ বছরে প্রায় ৪০ টির অধিক দেশে সরকারি ভ্রমণ করেন। তার দেশে বিদেশে আছে শতকোটির অধিক সম্পদ । জসিম উদ্দিনের প্রভাবে সম্প্রতি তাবাসসুম তার সিনিয়র সকল কর্মকর্তাকে ডিঙ্গিয়ে ৩ নং স্কেলে পদোন্নতি নেন। সম্প্রতি তাবাসসুম ২ নং স্কেলের পদে দায়িত্ব নেওয়ার জন্য তার চেয়ে ৯ ব্যাচ সিনিয়র অত্যন্ত মেধাবী কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত অতিরিক্ত মহাপরিচালক(রোলিং স্টক) পার্থ সরকারকে স্থায়ী বরখাস্ত করার জন্য সংসদীয় কমিটির সভাপতি ও কয়েকজন সদস্যকে তার স্বামী জসিম ও মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব নিশাত রসুলকে দ্বারা ম্যানেজ করেন।

আওয়ামী ঘরনার ও তাবাসসুম সিন্ডিকেটের একজন প্রভাবশালী সদস্য এবং সরঞ্জাম বিভাগের এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় লুটেরা হলেন আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি ছিলেন সাবেক রেলমন্ত্রী নরুল ইসলাম সুজনের ভাগ্নি জামাই। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর নুরুল ইসলাম সুজন রেল মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার দিনে আনোয়ার চট্টগ্রামে প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে ৫ মণ মিষ্টি বিতরণ করেন। শ্বশুর মন্ত্রী হওয়ার সুবাদে আনোয়ার সবসময় একই সাথে ২/৩ টা পদের দায়িত্ব পালন করতেন।

আনোয়ারুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

এখনো চট্টগ্রামে তিনি পরিচালক ইনভেন্ট্রি কন্ট্রোলের পাশাপাশি সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক/পূর্ব হিসেবে দায়িত্বরত আছেন। আনোয়ার প্রায় ১৫ বছর যাবত চট্টগ্রাম সরঞ্জাম বিভাগে বিভিন্ন লাভজনক পদে কর্মরত আছেন। এই দীর্ঘ সময়ে একই সময়ে ২/৩ টা পদের দায়িত্ব পালন করায় তিনি কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছেন। সম্প্রতি সরঞ্জাম বিভাগের সবচেয়ে বড় পদ প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক, পাহাড়তলী পদে পদোন্নতির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন জানা যাচ্ছে।

তাবাসসুম সিন্ডিকেটের সরকার দলীয় আরও একজন কর্মকর্তা হচ্ছেন প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা সলিমুল্লাহ বাহার। বিগত সরকার রেলওয়েতে বিভিন্ন প্রকল্পে প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেন। এই বিশাল অঙ্কের টাকায় রেলওয়েতে বেশ কিছু মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা পরিকল্পনা দপ্তরে প্রায় ১৫ বছর ধরে কর্মরত আছেন।রেলওয়েতে বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের টাকা হরিলুটের জন্য অবসরপ্রাপ্ত এবং চাকুরীরত কর্মকর্তাদের একটা সিন্ডিকেট আছে। প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা এই সিন্ডিকেটের একজন গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। তার কাজই হল এই সিন্ডিকেটের ইন্টারেস্ট পূরণে সর্বদা নিজেকে পূর্ণভাবে নিয়োজিত করা। তার সূক্ষ্ণ পরিকল্পনায় প্রকল্পের টাকা লুটের নানা কৌশলে তিনি সদা ব্যস্ত। এই সিন্ডিকেটের মূল লক্ষ্যই থাকে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো। কারণ প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো মানেই প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানো, আর ব্যয় বাড়ানো মানেই হাজার কোটি টাকায় সিন্ডিকেটের পকেট ভারী।

সলিমুল্লাহ বাহার। ছবি: সংগৃহীত

তাছাড়াও প্রকল্পের টাকা লুটের আর একটা ফাঁদ হলো ভেরিয়েশন ওর্ডার এবং ইনিয়ে বিনিয়ে নতুন আইটেম অন্তর্ভুক্ত করে সংশোধিত ডিপিপি প্রণয়ন। ফলে প্রকল্পের খরচ বহুগুণ বেড়ে যায়। রেলের কর্মকর্তারাই নাকি প্রকল্পের কাজ শেষ হোক এ বিষয়ে আন্তরিক না। যার কারণে রেলওয়ের কোন প্রকল্পই ১৫ বছরের আগে শেষ হয় না অর্থাৎ রেলের কর্মকর্তাদের সিন্ডিকেটের প্রত্যক্ষ মদদে প্রকল্প শেষ হয়েও শেষ হয় না। সিন্ডিকেটের চাহিদার প্রধান উদ্দেশ্য থাকে দেশের কাজে লাগুক বা না লাগুক, যেকোনো কৌশলে রাষ্ট্রের টাকা লুটপাট করার নতুন নতুন ফাঁদ তৈরি করা । এই টাকার ভাগ সরকারের সব মহলে জেত। যার প্রধান দায়িত্বে ছিলেন রেলের প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা সলিমুল্লাহ বাহার। এছাড়াও রেলভবনে আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় গাড়িচালক নিয়োগে তিনি বড় ধরনের দুর্নীতি করেন বাহার। তাছাড়া প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা তার নিজের সেবার পরিকল্পনায় অনেক ব্যস্ত। তিনি নিজে ২/৩টা পাজেরো স্পোর্টস গাড়ি ব্যবহার করে দেশের টাকা লুট করছেন।

অত্যন্ত কঠোর আওয়ামী ঘরানার আরও একজন কর্মকর্তা হলেন আবু জাফর মিয়া। ফরিদপুর জেলার ভাংগা থানায় বাড়ি হওয়ায় তিনি ক্ষমতার প্রভাব দেখাতে শুরু করেন। প্রধান প্রকৌশলী(পূর্ব) চট্টগ্রাম হিসেবে পদায়িত হওয়ার পর থেকে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির আশ্রয় নেন। তিনি তার এই লুটপাট জন্য চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের এক নেতার সহায়তা নেন। তিনি কোন পূর্ত কাজের টেন্ডার আহ্বান করার পরে সকল টেন্ডারের ইষ্টীমেট বা প্রাক্কলন তার পার্টনার ঐ শীর্ষ নেতার কে বলে দিতেন। এর ফলে ঐ নেতার তার মনোনীত ঠিকাদার ছাড়া অন্য কেউ এই টেন্ডারে অংশ নিত না বা নেওয়ার সাহস পেত না।

আবু জাফর মিয়া। ছবি: সংগৃহীত

সরকারের অত্যন্ত বিশ্বস্ত কর্মকর্তা হওয়ায় তাকে ভারতের পূর্বাঞ্চলে করিডোর হিসেবে ব্যবহারের জন্য নির্মিত আখাউড়া -আগরতলা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। জানা যায় যে,শেখ হাসিনার সাথে জাফর যতবার দেখা করতেন ততবারই তার পদধূলি মাথায় নিতেন। তার পদে কোন কর্মকর্তা আসার চিন্তা করলেই তাকে তিনি বিএনপি জামাত হিসেবে চিহ্নিত করে তার পদায়ন ঠেকিয়ে দিতেন। এই কর্মকর্তা গেট কিপার নিয়োগে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি করেছেন। নিজের এলাকায় শত শত বিঘা জমি ক্রয়ের পাশাপাশি তিনি অবৈধ বড় একটা অংশ বিদেশে পাচার করেছেন বলে তথ্য আছে।

আওয়ামী ঘরানার আরও একজন কর্মকর্তা হলেন তাপস কুমার দাস যিনি বর্তমানে প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী/পূর্ব, চট্টগ্রাম হিসেবে কর্মরত আছেন। এই কর্মকর্তা চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগের এক নেতা বাবরের ছত্রছায়ায় ব্যাপাক লুটপাট করেছেন।

তাপস কুমার দাস। ছবি: সংগৃহীত

তাপসের বাড়ি বাগেরহাট হওয়ায় তিনি হাসিনার নিকটাত্মীয় শেখ হেলাল ও শেখ জুয়েলের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন। ফলে রেলের বিভিন্ন প্রাইজ পোস্টিং পেতে তাকে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি এবং এসব পোস্টে পদায়িত হয়ে হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছেন। তার এই লুটপাটের টাকা তিনি প্রতিবেশী ইন্ডিয়াতে পাচার করেছেন। অনুসন্ধানে জানা যায় যে তাপস দাস অত্যন্ত গরীব ঘরের ছেলে ছিলেন। খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরে তার পড়াশোনা চালানোর মত কোন টাকা তার ছিল না। বর্তমানে কোটি কোটি টাকার মালিক এই তাপস।

এই পাঁচ কর্মকর্তা ছাড়াও রেলওয়েতে আছে আরও অনেক আওয়ামী সুবিধাভোগী কর্মকর্তা। যা আমরা পরবর্তীতে প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করবো।

Header Ad
Header Ad

৫৩ বছরেও দেশের মানুষ স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে পারেনি: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার হীন লক্ষ্যে পলাতক অবৈধ সরকার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান ভেঙে ফেলেছে। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরে আজও তাই এ দেশের মানুষ স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে পারেনি।’

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে গণমাধ্যম দেওয়া এক বাণীতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের পতনের পর এখন সুযোগ এসেছে বাংলাদেশের সব দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তি এবং জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথচলা নিশ্চিত করা এবং দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে সংহত করা। এটিই হচ্ছে স্বাধীনতার মূল চেতনা।

বলেন, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস আমাদের জাতীয় জীবনে নবীন সূর্যোদয়ের মধ্য দিয়ে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা। হাজার বছরের সংগ্রাম মুখর এ জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন বাংলাদেশের স্বাধীনতা। আজকের এই দিনে আমি দেশবাসী ও প্রবাসী বাংলাদেশীসহ সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

তিনি বলেন, এই স্বাধীনতা দিবসে আনন্দোজ্জ্বল মুহূর্তের মধ্যে প্রথমেই যে কথা মনে পড়ে, তাহলো এ দেশের অগণিত দেশপ্রেমিক শহীদের আত্মদান, আমি এ মহান দিনে তাদের গভীর শ্রদ্ধা জানাই। যাদের অবিস্মরণীয় আত্মদানে অর্জিত হয়েছে দেশমাতৃকার মুক্তি। মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তমসহ সব জাতীয় নেতার স্মৃতির প্রতি আমি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। যাদের জীবন মরণ লড়াইয়ে ৯ মাসে আমরা বিজয় লাভ করেছি সেইসব অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানের কথা জাতি কখনোই বিস্মৃত হবে না।

তিনি মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করা মা-বোনদের অবদানকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে বলেন, স্বাধিকার আর স্বাধীনতা সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে রক্তস্নাত পথে বিশ্ব মানচিত্রে উদ্ভাসিত হয় আমাদের মানচিত্র। এদিনে দেশমাতৃকার শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। তার ঐতিহাসিক ঘোষণায় সেই মুহূর্তে দিশেহারা জাতি পেয়েছিল মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার অভয়মন্ত্র।

একটি শোষণ, বঞ্চনাহীন, মানবিক সাম্যের উদার গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে এদেশের মানুষ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। দুর্ভাগ্যক্রমে গণতন্ত্রবিনাশী শক্তির চক্রান্ত এখনও থেমে নেই। বারবার ফ্যাসিবাদী, স্বৈরাচারী ও অবৈধ শক্তি আমাদের সে লক্ষ্য পূরণ করতে দেয়নি। দেশি-বিদেশি চক্রান্তের ফলে আমাদের গণতন্ত্র ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি হোঁচট খেয়েছে এবং স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হয়েছে।

তারেক রহমান বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তমকে চক্রান্তমূলকভাবে হত্যার পরে গণতন্ত্রের আপোসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সফল ও সার্থক নেতৃত্বে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ধারা সূচিত হলেও গণতন্ত্রের শত্রুদের কারণে স্থায়ী ও মজবুত গণতান্ত্রিক কাঠামো তৈরি করা সম্ভব হয়নি। একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার হীন লক্ষ্যে পলাতক অবৈধ সরকার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভেঙ্গে ফেলেছে। আমি দেশবাসীর সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে প্রার্থনা জানাই।

Header Ad
Header Ad

অবৈধ স্যাটেলাইট পে-চ্যানেল বন্ধে বিটিআরসির নির্দেশ

ছবি: সংগৃহীত

দেশে অনুমোদনহীনভাবে স্যাটেলাইট পে-চ্যানেল প্রদর্শন বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। সম্প্রতি, কিছু ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান (আইএসপি) ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম অনুমোদন ছাড়া পে-চ্যানেল সম্প্রচার করছে, যা দেশের প্রচলিত আইন লঙ্ঘন করছে।

এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে বিটিআরসি, এবং আগামী ২৯ মার্চের মধ্যে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের কাছ থেকে করণীয় সম্পর্কে মতামত চেয়েছে।

বিটিআরসির এনফোর্সমেন্ট অ্যান্ড ইন্সপেকশন শাখার উপপরিচালক মো. হাসিবুল কবির স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জানানো হয়, কিছু আইএসপি অনুমোদিত প্রযুক্তি ব্যবহার না করেই বিদেশি চ্যানেলের পরিবেশকদের ডিস্ট্রিবিউট করা পে-চ্যানেলগুলো পাইরেসির মাধ্যমে ক্লিন ফিডবিহীনভাবে ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে বাসা-বাড়িতে প্রদর্শন করছে। একই ধরনের কার্যক্রম কিছু ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মেও চলছে, যা দেশের আইন পরিপন্থী।

বিটিআরসি জানায়, এসব অনিয়মের ফলে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের (বিএসসিএল) মাধ্যমে বৈধ বিদেশি চ্যানেলের সম্প্রচার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং চ্যানেলের সংখ্যা কমছে।

বিটিআরসি জানিয়েছে, আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলোর এই কার্যক্রম বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ আইন, ২০০১-এর ৭৩ নম্বর ধারা এবং আইএসপি গাইডলাইনের অনুচ্ছেদ ৭.৬ এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এছাড়া, গাইডলাইনের সঙ্গে সংযুক্ত এপেনডিক্স-৪-এর ২(ডি)(এক্স) ধারা অনুযায়ী করা হলফনামারও বরখেলাপ হয়েছে।

এ পরিস্থিতিতে, পাইরেসি রোধ এবং ক্লিন ফিডবিহীন স্যাটেলাইট চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে (২৯ মার্চের মধ্যে) গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে বিটিআরসিকে অবহিত করতে বলা হয়েছে।

চিঠিটি আইএসপি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি এবং সব জাতীয়, বিভাগীয়, জেলা ও থানা পর্যায়ের আইএসপিদের পাঠানো হয়েছে।

বিটিআরসির এই কঠোর নির্দেশনার ফলে দেশে অনুমোদনহীনভাবে পে-চ্যানেল সম্প্রচারের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

Header Ad
Header Ad

ওয়াসিম হত্যা মামলায় নওফেল-নাসিরসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

ওয়াসিম হত্যা মামলায় নওফেল-নাসিরসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দ্বিতীয় শহীদ হিসেবে চিহ্নিত চট্টগ্রামের ওয়াসিম হত্যা মামলায় সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক মেয়র আ জ ম নাসির উদ্দীনসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারকের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।

গত ১৬ জুলাই বিকেল ৩টার দিকে চট্টগ্রামের মুরাদপুর এলাকায় ছাত্রদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সংঘর্ষ বাধে আন্দোলনকারী ও ছাত্রলীগের মধ্যে। এই সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন চট্টগ্রাম কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র এবং কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ওয়াসিম আকরাম।

ওয়াসিম কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তার বাবা সৌদি প্রবাসী শফিউল আলম। দুই ভাই ও তিন বোনের মধ্যে ওয়াসিম ছিলেন পরিবারের অন্যতম সদস্য।

ওয়াসিমের মা জোসনা আক্তার গত ১৮ আগস্ট চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ১৬ জুলাই বিকেল ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে ওয়াসিম আকরাম মুরাদপুরের বারকোড রেস্টুরেন্টের সামনে অবস্থান করছিলেন। তখন ছাত্র জনতার বৈষম্যবিরোধী শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলছিল।

এজাহারে আরও বলা হয়, আসামিদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ইন্ধনে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের ক্যাডাররা অস্ত্রশস্ত্রসহ আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায়। তারা মুহুর্মুহু বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে, লাঠিসোঁটা, হকিস্টিক, কিরিচ এবং আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হয়।

একপর্যায়ে, আসামিদের ছোড়া এলোপাতাড়ি গুলিতে ওয়াসিমের বুক ও নাভিতে গুলি লাগে। মাটিতে লুটিয়ে পড়ার পর দ্রুত তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আদেশের পর মামলার তদন্ত ও বিচার কার্যক্রমে নতুন মোড় নিতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এখন দেখার বিষয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কীভাবে আসামিদের গ্রেপ্তার ও মামলার বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

৫৩ বছরেও দেশের মানুষ স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে পারেনি: তারেক রহমান
অবৈধ স্যাটেলাইট পে-চ্যানেল বন্ধে বিটিআরসির নির্দেশ
ওয়াসিম হত্যা মামলায় নওফেল-নাসিরসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
বুধবার ভোরে সাভার-নবীনগর সড়কে যান চলাচল বন্ধ
৯০ দিনের মধ্যে দেশে স্টারলিংক চালুর নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে যা বললেন তামিম ইকবাল
অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান অব্যাহত থাকবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
জিএম সুবক্তগীন এর কর্মদক্ষতায় রেলের পূর্বাঞ্চলে বইছে সুবাতাস
ছায়ানটের সভাপতি সন্‌জীদা খাতুন মারা গেছেন
যারা ১০০ গাড়ি নিয়ে ক্যাম্পেইন করতে যায়, তারা কী করবে তা ভালো বুঝি: ফখরুল
‘আওয়ামী লিগ’ নামে নতুন দল গঠিত, নিবন্ধনের আবেদন ইসিতে
ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ১৫ নির্দেশনা
শপথ নিলেন আপিল বিভাগের নতুন দুই বিচারপতি
দেশে কোনো জরুরি অবস্থা জারি করা হয়নি: সেনাপ্রধান
১৩তম এনোবল এওয়ার্ড পেলেন মাওলা সোহরাব হোসাইন আতিকী  
আন্দোলনরত পোশাক শ্রমিকদের সচিবালয় অভিমুখে যাত্রা, পুলিশের বাধা
সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা
কন্যা সন্তানের বাবা হলেন ক্রিকেটার কে এল রাহুল
বাংলাদেশে এখনও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়নি: প্রধান উপদেষ্টা
এবার পুলিশের ৪৩ কর্মকর্তাকে বদলি