মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১ আশ্বিন ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

আওয়ামী ঘরানার কর্মকর্তাদের দখলে এখনো রেলওয়ের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ

আওয়ামী ঘরানার কর্মকর্তাদের দখলে এখনো রেলওয়ের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ। ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। যার প্রভাব পড়েছে রাজনীতি, প্রশাসন, সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত থেকে শুরু পাড়া মহল্লা পর্যন্ত। পাল্টে যাচ্ছে চিরচেনা রূপ। এমন পরিস্থিতিতে আওয়ামী ঘরনার সুবিধা ভোগী কর্মকর্তাগণ রাতারাতি দল পরিবর্তনের প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। দখলে রেখেছেন রেলওয়ের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ।

আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৫ বছরে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজের বাজেট পায় রেলওয়ে। যার ৯০ শতাংশ নতুন প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ছিল। এই অর্থ তৎকালীন সরকারের মন্ত্রী এমপিদের লুটপাটের সহযোগী হিসেবে ছিলেন রেলের আওয়ামী ঘরানার কর্মকর্তাগণ। এদের প্রভাবে রেলের অন্য ঘরানার বাকি কর্মকর্তারা ছিলেন একপ্রকার অসহায়, বঞ্চিত ও নির্যাতিত।

রেলের আওয়ামী ঘরানার কিছু কর্মকর্তাগণের প্রভাব ও দখল কেমন ছিল তার কিছু অংশ তুলে ধরা হল-

রেলওয়েতে আওয়ামী ঘরানার কর্মকর্তাদের মধ্যে সবচেয়ে সুবিধাভোগী কর্মকর্তা হলেন তাবাসসুম বিনতে ইসলাম- যুগ্ম মহাপরিচালক (মেকানিক), রেলভবন। তাবাসসুম প্রায় ১৬ জন সিনিয়র কর্মকর্তাকে ডিঙ্গিয়ে এই গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হন। তার এই পদে আসার পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছিলেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। এছাড়াও শামসুজ্জামান যেসময় রেলের মহাপরিচালক ছিলেন তখন তাবাসসুম ছিলেন রেলের অলিখিত রানী তথা রেল রাণী। তৎকালীন সময় রেলমন্ত্রী সুজন ও ডিজি শামসুজ্জামান তাবাসসুমকে রেলের বদলি,পদোন্নতি থেকে শুরু করে টেন্ডার বাণিজ্য পর্যন্ত সকল কাজের ব্লাংক চেক দেওয়ার মত ক্ষমতা দিয়েছিলেন।

তাবাসসুম বিনতে ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

তাবাসসুমের এই ক্ষমতার উৎস ছিল তার স্বামী প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন হায়দার- যুগ্ম সচিব হিসেবে বর্তমানে পাসপোর্ট অধিদপ্তরে আছেন। জসিম একসময় প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের পরিচালক ছিলেন এবং ২০০৯ পরবর্তী প্রতিটি অবৈধ নির্বাচনে আওয়ামী লাঠিয়াল হিসেবে কাজ করেন। জসিমের ভয়ে রেলের সিনিয়র কর্মকর্তারাও তাকে ম্যাডাম বলে সম্বোধন করেন। এছাড়াও তাবাসসুম গত ১৫ বছরে প্রায় ৪০ টির অধিক দেশে সরকারি ভ্রমণ করেন। তার দেশে বিদেশে আছে শতকোটির অধিক সম্পদ । জসিম উদ্দিনের প্রভাবে সম্প্রতি তাবাসসুম তার সিনিয়র সকল কর্মকর্তাকে ডিঙ্গিয়ে ৩ নং স্কেলে পদোন্নতি নেন। সম্প্রতি তাবাসসুম ২ নং স্কেলের পদে দায়িত্ব নেওয়ার জন্য তার চেয়ে ৯ ব্যাচ সিনিয়র অত্যন্ত মেধাবী কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত অতিরিক্ত মহাপরিচালক(রোলিং স্টক) পার্থ সরকারকে স্থায়ী বরখাস্ত করার জন্য সংসদীয় কমিটির সভাপতি ও কয়েকজন সদস্যকে তার স্বামী জসিম ও মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব নিশাত রসুলকে দ্বারা ম্যানেজ করেন।

আওয়ামী ঘরনার ও তাবাসসুম সিন্ডিকেটের একজন প্রভাবশালী সদস্য এবং সরঞ্জাম বিভাগের এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় লুটেরা হলেন আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি ছিলেন সাবেক রেলমন্ত্রী নরুল ইসলাম সুজনের ভাগ্নি জামাই। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর নুরুল ইসলাম সুজন রেল মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার দিনে আনোয়ার চট্টগ্রামে প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে ৫ মণ মিষ্টি বিতরণ করেন। শ্বশুর মন্ত্রী হওয়ার সুবাদে আনোয়ার সবসময় একই সাথে ২/৩ টা পদের দায়িত্ব পালন করতেন।

আনোয়ারুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

এখনো চট্টগ্রামে তিনি পরিচালক ইনভেন্ট্রি কন্ট্রোলের পাশাপাশি সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক/পূর্ব হিসেবে দায়িত্বরত আছেন। আনোয়ার প্রায় ১৫ বছর যাবত চট্টগ্রাম সরঞ্জাম বিভাগে বিভিন্ন লাভজনক পদে কর্মরত আছেন। এই দীর্ঘ সময়ে একই সময়ে ২/৩ টা পদের দায়িত্ব পালন করায় তিনি কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছেন। সম্প্রতি সরঞ্জাম বিভাগের সবচেয়ে বড় পদ প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক, পাহাড়তলী পদে পদোন্নতির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন জানা যাচ্ছে।

তাবাসসুম সিন্ডিকেটের সরকার দলীয় আরও একজন কর্মকর্তা হচ্ছেন প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা সলিমুল্লাহ বাহার। বিগত সরকার রেলওয়েতে বিভিন্ন প্রকল্পে প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেন। এই বিশাল অঙ্কের টাকায় রেলওয়েতে বেশ কিছু মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা পরিকল্পনা দপ্তরে প্রায় ১৫ বছর ধরে কর্মরত আছেন।রেলওয়েতে বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের টাকা হরিলুটের জন্য অবসরপ্রাপ্ত এবং চাকুরীরত কর্মকর্তাদের একটা সিন্ডিকেট আছে। প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা এই সিন্ডিকেটের একজন গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। তার কাজই হল এই সিন্ডিকেটের ইন্টারেস্ট পূরণে সর্বদা নিজেকে পূর্ণভাবে নিয়োজিত করা। তার সূক্ষ্ণ পরিকল্পনায় প্রকল্পের টাকা লুটের নানা কৌশলে তিনি সদা ব্যস্ত। এই সিন্ডিকেটের মূল লক্ষ্যই থাকে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো। কারণ প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো মানেই প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানো, আর ব্যয় বাড়ানো মানেই হাজার কোটি টাকায় সিন্ডিকেটের পকেট ভারী।

সলিমুল্লাহ বাহার। ছবি: সংগৃহীত

তাছাড়াও প্রকল্পের টাকা লুটের আর একটা ফাঁদ হলো ভেরিয়েশন ওর্ডার এবং ইনিয়ে বিনিয়ে নতুন আইটেম অন্তর্ভুক্ত করে সংশোধিত ডিপিপি প্রণয়ন। ফলে প্রকল্পের খরচ বহুগুণ বেড়ে যায়। রেলের কর্মকর্তারাই নাকি প্রকল্পের কাজ শেষ হোক এ বিষয়ে আন্তরিক না। যার কারণে রেলওয়ের কোন প্রকল্পই ১৫ বছরের আগে শেষ হয় না অর্থাৎ রেলের কর্মকর্তাদের সিন্ডিকেটের প্রত্যক্ষ মদদে প্রকল্প শেষ হয়েও শেষ হয় না। সিন্ডিকেটের চাহিদার প্রধান উদ্দেশ্য থাকে দেশের কাজে লাগুক বা না লাগুক, যেকোনো কৌশলে রাষ্ট্রের টাকা লুটপাট করার নতুন নতুন ফাঁদ তৈরি করা । এই টাকার ভাগ সরকারের সব মহলে জেত। যার প্রধান দায়িত্বে ছিলেন রেলের প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা সলিমুল্লাহ বাহার। এছাড়াও রেলভবনে আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় গাড়িচালক নিয়োগে তিনি বড় ধরনের দুর্নীতি করেন বাহার। তাছাড়া প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা তার নিজের সেবার পরিকল্পনায় অনেক ব্যস্ত। তিনি নিজে ২/৩টা পাজেরো স্পোর্টস গাড়ি ব্যবহার করে দেশের টাকা লুট করছেন।

অত্যন্ত কঠোর আওয়ামী ঘরানার আরও একজন কর্মকর্তা হলেন আবু জাফর মিয়া। ফরিদপুর জেলার ভাংগা থানায় বাড়ি হওয়ায় তিনি ক্ষমতার প্রভাব দেখাতে শুরু করেন। প্রধান প্রকৌশলী(পূর্ব) চট্টগ্রাম হিসেবে পদায়িত হওয়ার পর থেকে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির আশ্রয় নেন। তিনি তার এই লুটপাট জন্য চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের এক নেতার সহায়তা নেন। তিনি কোন পূর্ত কাজের টেন্ডার আহ্বান করার পরে সকল টেন্ডারের ইষ্টীমেট বা প্রাক্কলন তার পার্টনার ঐ শীর্ষ নেতার কে বলে দিতেন। এর ফলে ঐ নেতার তার মনোনীত ঠিকাদার ছাড়া অন্য কেউ এই টেন্ডারে অংশ নিত না বা নেওয়ার সাহস পেত না।

আবু জাফর মিয়া। ছবি: সংগৃহীত

সরকারের অত্যন্ত বিশ্বস্ত কর্মকর্তা হওয়ায় তাকে ভারতের পূর্বাঞ্চলে করিডোর হিসেবে ব্যবহারের জন্য নির্মিত আখাউড়া -আগরতলা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। জানা যায় যে,শেখ হাসিনার সাথে জাফর যতবার দেখা করতেন ততবারই তার পদধূলি মাথায় নিতেন। তার পদে কোন কর্মকর্তা আসার চিন্তা করলেই তাকে তিনি বিএনপি জামাত হিসেবে চিহ্নিত করে তার পদায়ন ঠেকিয়ে দিতেন। এই কর্মকর্তা গেট কিপার নিয়োগে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি করেছেন। নিজের এলাকায় শত শত বিঘা জমি ক্রয়ের পাশাপাশি তিনি অবৈধ বড় একটা অংশ বিদেশে পাচার করেছেন বলে তথ্য আছে।

আওয়ামী ঘরানার আরও একজন কর্মকর্তা হলেন তাপস কুমার দাস যিনি বর্তমানে প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী/পূর্ব, চট্টগ্রাম হিসেবে কর্মরত আছেন। এই কর্মকর্তা চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগের এক নেতা বাবরের ছত্রছায়ায় ব্যাপাক লুটপাট করেছেন।

তাপস কুমার দাস। ছবি: সংগৃহীত

তাপসের বাড়ি বাগেরহাট হওয়ায় তিনি হাসিনার নিকটাত্মীয় শেখ হেলাল ও শেখ জুয়েলের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন। ফলে রেলের বিভিন্ন প্রাইজ পোস্টিং পেতে তাকে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি এবং এসব পোস্টে পদায়িত হয়ে হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছেন। তার এই লুটপাটের টাকা তিনি প্রতিবেশী ইন্ডিয়াতে পাচার করেছেন। অনুসন্ধানে জানা যায় যে তাপস দাস অত্যন্ত গরীব ঘরের ছেলে ছিলেন। খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরে তার পড়াশোনা চালানোর মত কোন টাকা তার ছিল না। বর্তমানে কোটি কোটি টাকার মালিক এই তাপস।

এই পাঁচ কর্মকর্তা ছাড়াও রেলওয়েতে আছে আরও অনেক আওয়ামী সুবিধাভোগী কর্মকর্তা। যা আমরা পরবর্তীতে প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করবো।

Header Ad

দাড়ি-গোঁফ কেটে পালাচ্ছিলেন শ্যামল দত্ত-মোজাম্মেল বাবু

ছবি: সংগৃহীত

গত ৫ আস্ট ছাত্র-জনতার দেশ কাঁপানো অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন। এ ঘটনার পর অনেকেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে যাওয়ার সময় আটক হয়েছেন। অনেক সময় চেহারায়ও পরিবর্তন এনেছেন। সোমবার ভোরে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলা হয়ে অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার পথে একাত্তর টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোজাম্মেল হক বাবু এবং দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্তসহ চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। এর মধ্যে শ্যামল দত্ত ও মোজাম্মেল বাবু দাড়ি-গোঁফ ছেঁটে ভারতে পালাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ময়মনসিংহ উপজেলার ধোবাউড়া থানায় আটক হন তারা।

সোমবার ভোরে স্থানীয় জনতা তাদের আটক করে পুলিশে দেয়। বিকেলে থানা থেকে তাদের রাজধানীকে নিয়ে আসে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি দল। এসময় তার লক্ষ্য করে উত্তেজিত জনতা ডিম নিক্ষেপ করে।

তাদের সঙ্গে আরও আটক হয়েছেন একাত্তর টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার জেমসন মাহাবুব ও প্রাইভেট কারের চালক সেলিম।

স্থানীয়রা জানায়, একটি প্রাইভেটকার রোববার গভীর রাত থেকে কখনো ঘোষবেড় দিয়ে সীমান্তের দিকে, কখনো ধোবাউড়া রোডের দর্শাপাড় এলাকায় বেশ কিছুক্ষণ চক্কর দেয়। এ সময় স্থানীয়দের বিষয়টি সন্দেহ হলে উৎসুক জনতা প্রাইভেটকারটি আটক করে। পরে গাড়িতে থাকা লোকজনের পরিচয় জানতে চায়। মোজাম্মেল হোসেন বাবু গোঁফ ও শ্যামল দত্ত দাড়ি ছেঁটে ফেলায় প্রথমে তাদের কেউ চিনতে পারেনি। পরে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলার একপর্যায়ে নিজেদের পরিচয় দেন। পরে তাদের মারধোর করে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা।

ধোবাউড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. চান মিয়া বলেন, ধোবাউড়া সীমান্তে সাংবাদিক শ্যামল দত্ত, একাত্তর টেলিভিশনের সিইও মোজাম্মেল বাবু, সিনিয়র রিপোর্টার জেমসন মাহবুব ও প্রাইভেটকার চালক সেলিমকে আটক করে দুপুরে কড়া নিরাপত্তায় ঢাকার ডিবি পুলিশের একটি টিম তাদের হস্তান্তর করা হয়। এ সময় নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে আটককৃতদের মাথায় হেলমেট ও গায়ে বুলেট প্রুফ জড়িয়ে সিলভার কালারের একটি মাইক্রোবাসে তুলে দেওয়া হয়।

শ্যামল দত্ত দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন মোজাম্মেল বাবু। এর আগে সপরিবারে ভারতে যাওয়ার সময় দৈনিক ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্তকে আটকে দিয়েছিল ইমিগ্রেশন পুলিশ।

ফরিদপুরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় ভারতীয় নাগরিক গ্রেপ্তার

ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় হরি মন্দির ও কালি মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় এক ভারতীয় নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ভাঙ্গা থানার ওসি মোকসেদুর রহমান জানা জানান, সোমবার সঞ্জিত বিশ্বাস নামের ওই ব্যক্তিকে আদালতে তোলা হয়। এর আগে রোববার কালি মন্দিরের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেন তারা।

৪৫ বছর বয়সী সঞ্জিত ভারতের নদীয়া জেলার নিশি কান্ত বিশ্বাসের ছেলে বলে জেলা পুলিশের বিজ্ঞপ্তিতে বলা উল্লেখ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শনিবার রাতের কোন এক সময় ভাঙ্গা বাজারের হরি মন্দিরের কার্তিক ঠাকুরের হাতের আঙুল, ময়ূরের গলা মোচড়ানো, ঘোড়ার কান ও আঙুল, অসুরের হাতের আঙুল এবং কালি মন্দিরের গণেশের হাতের আঙুল ও শুঁড় ভাঙা দেখে ভাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ করে মন্দির কমিটি।

এ ঘটনার পর সোমবার বিকেলে ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বি এম কুদরত-এ-খুদা স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন।

জেলা পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল বলেন, “ঘটনা তদন্তের সময় কালি মন্দিরের সামনে দুজন ব্যক্তিকে পাওয়া যায়। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় একজনকে স্থানীয়রা পরিচিত বলে শনাক্ত করেন।

“এ সময় অপর ব্যক্তিকে সন্দেহ হওয়ায় তাকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তখন তিনি একবার বাংলা এবং একবার হিন্দি ভাষায় কথা বলতে থাকেন। এক পর্যায়ে তিনি নিজেকে ভারতীয় নাগরিক পরিচয় দেন।”

এ ঘটনায় তদন্ত অব্যাহত রয়েছে বলে ওসি মোকসেদুর রহমান জানিয়েছেন।

সেই গোপন কক্ষ ‘গোপন’ ছিল না: মালা খান

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল মেজারমেন্টসের (বিআরআইসিএম) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মালা খান। সম্প্রতি নিজের অফিসের ভেতরে বিশেষভাবে তৈরি গোপন কক্ষের জন্য আলোচনায় আসেন তিনি।

তবে মালা খান গণমাধ্যমের কাছে দাবি করেছেন, তার অফিসের আলোচিত গোপন কক্ষ আসলে গোপন ছিল না। এ বিষয়ে ওই অফিসের সবাই জানতেন।

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার অলোয়া ইউনিয়নের নিকলা মহাব্বত (ঘাইনঞ্জানি) গ্রামের আবুল ফজল খানের মেয়ে মালা খান। বাবার চাকরির সুবাদে ঢাকায় লেখাপড়া করেন এবং বড় হন। তার চাচা গরু ব্যবসায়ী তোফাজ্জল খানের মাধ্যমে এলাকায় জমি ক্রয় ও গরু-ছাগল বেচাকেনা করতেন মালা খান। এলাকার কিছু লোককে সরকারি-বেসরকারি চাকরিও দিয়েছেন তিনি।

সম্প্রতি তার অফিসে গোপন কক্ষ থাকার খবর দেখে অবাক হন স্থানীয়রা।

সরেজমিনে অলোয়ার নিকলা মহাব্বত এলাকায় গিয়ে জানা গেছে, বিআরআইসিএমের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মালা খানের তিন মেয়ের মধ্যে দুই মেয়ে কানাডায় পড়াশোনা করছেন। তার স্বামী মোস্তফা আনোয়ারও একজন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ছিলেন। বর্তমানে তিনি দুই মেয়ের সঙ্গে কানাডায় বসবাস করছেন। তবে গুঞ্জন রয়েছে, স্বামী ও মেয়েদের জন্য কানাডায় বাড়ি কিনেছেন তিনি।

ঢাকার মোহাম্মদপুরের বসিলা এলাকায় দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির গরু ও ছাগলের খামার রয়েছে। ওই খামার পরিচালনা করতেন তার আপন ছোট ভাই। এছাড়া বসিলাতেই তার জায়গা ও বাসা রয়েছে। টাঙ্গাইলসহ জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে চাচা তোফাজ্জল খানের মাধ্যমে গরু ও ছাগল কিনে মোটাতাজা করা হতো খামারে। এরপর চাচা ও ঢাকার বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে সেগুলো খামারসহ টাঙ্গাইলে এনেও বিক্রি করা হতো।

গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালানোর পর বসিলার ওই খামার থেকে অনেকেই গরু-ছাগল নিয়ে গেছেন। চাচার মাধ্যমে এলাকায় ৫৯ শতাংশ জমি কিনেছেন তিনি। মালা খান বিআরআইসিএমতে এলাকার বেশ কয়েকজনকে চাকরিও দিয়েছেন। তারা এখন সেখানে বিভিন্ন পদে কর্মরত রয়েছেন।

মালা খানের বিরুদ্ধে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের সনদ জালের অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে ২০১৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি একটি জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। “জালিয়াতির মালা গেঁথেছেন মালা খান” শিরোনামে ওই সংবাদে মালা খান জাল সনদ ও নিয়োগ পরীক্ষায় (লিখিত) সর্বনিম্ন নম্বর পেয়ে অকৃতকার্য হয়েও বেজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন বলে উল্লেখ করা হয়। এতে আরও বলা হয়- জালিয়াতির মাধ্যমে মালা খান অর্জন করেছেন পিএইচডি ডিগ্রি। আর ওই পিএইচডি কোর্সের কো-সুপারভাইজার ছিলেন তার স্বামী মোস্তফা আনোয়ার। তিনি যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি নিয়েছেন, সেই প্রতিষ্ঠানের নেই কোনো অনুমোদন। ভুয়া প্রতিষ্ঠানটি টাকার বিনিময়ে দিয়েছে পিএইচডির সনদ।

নিকলা এলাকার অনেকেই জানান, মালা খান এলাকার অনেককে চাকরি দিয়েছেন যারা বেকার ছিল। তবে টাকার বিনিময়ে দিয়েছেন কিনা সেটা কেউ বলতে পারেননি। এছাড়া এলাকায় তার চাচা তোফাজ্জলকে টাকা-পয়সা দিয়ে সহায়তা করতেন। তার চাচা ভূঞাপুর শিয়ালকোল হাটের ইজারাদার। চাচাই এলাকায় তাকে জায়গা জমি কিনে দিয়েছেন।

বিআরআইসিএমে চাকরি পাওয়া অলোয়া ইউনিয়নের ঘাইনঞ্জানি গ্রামের সোহান বলেন, কেরাণীগঞ্জে জায়গা লিজ নিয়ে তার ভাই গরু ও ছাগলের খামার করেছেন বলে জেনেছি। তবে বসিলাতে ছিল কিনা জানি না। ৫ আগস্টের পরই অফিসের লোকজন যারা বিরোধিতা করেছেন তাদের কাছেই চাবি ছিল অফিসের। যেখানে কোনো অবৈধ কার্যকলাপ ছিল না ম্যাডামের। বিআরআইসিএমের কার্যালয়ে গরু ও ছাগল নিয়ে আসা হতো বিক্রির জন্য। ঝামেলার কারণে খামার ছেড়ে দিয়েছিলেন। ফলে গরু ও ছাগলগুলো অফিসে আনা হয়েছিল। সেখান থেকে আমি দুটি গরু ও দুটি রাম ছাগল নিয়েছি। ঢাকায় তার কোনো সম্পত্তি নেই। ম্যাডাম তার বাবা, ভাই, ভাইয়ের স্ত্রীর সঙ্গে কোয়ার্টারে থাকতেন। ।

মালা খানের চাচা তোফাজ্জল খান বলেন, মালা খানের ঘটনাটি দেখে বিস্মিত হয়েছি। আমার ভাতিজি একজন সৎ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা। অফিসের লোকজন তার বিরুদ্ধে লেগেছে। তার অফিসে আয়নাঘর থাকাসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলছে। তার ভাইয়ের খামার ছিল বসিলাতে। আন্দোলনের আগে এক ট্রাক গরু এনে টাঙ্গাইলের বিভিন্ন হাটে বিক্রি করেছি। এলাকায় কিছু জায়গা কিনে দিয়েছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে ওই জমি আমি কিনে নিয়েছি।

চাচা তোফাজ্জল খানের মুঠোফোনে কথা হয় বিআরআইসিএমের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মালা খানের সঙ্গে।

তিনি বলেন, ঘটনাটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। ৫ আগস্টের পর অফিসে যাইনি কয়েকদিন। এর মধ্যে তারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে, মিথ্যা ঘটনা তৈরি করেছে। তারা মন্ত্রণালয় বরাবর অভিযোগ দিয়েছে আমার বিরুদ্ধে। মিথ্যা ঘটনার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আইনগত কোনো কিছুই করতে পারব না।

মালা খান বলেন, সরকার পতনের পর কয়েকদিন অফিস করেছি। আগে থেকেই ওই কক্ষের বিষয়ে জানত অফিসের লোকজন। কিন্তু এখন সেটি ‘গোপন কক্ষ’ নাম দিয়ে প্রচার করছে। মূলত আমাকে অপদস্ত করার জন্য এমন নাটক সাজিয়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ

দাড়ি-গোঁফ কেটে পালাচ্ছিলেন শ্যামল দত্ত-মোজাম্মেল বাবু
ফরিদপুরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় ভারতীয় নাগরিক গ্রেপ্তার
সেই গোপন কক্ষ ‘গোপন’ ছিল না: মালা খান
‘আপনার স্বামী আর্মিতে, আমার স্ত্রীও ডাক্তার’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে ১৪টি দাবি তুলে ধরলেন হাসনাত আবদুল্লাহ
শত্রুরা জানে জামায়াতে ইসলামী ভাঙবে, কিন্তু মচকাবে না: ডা. শফিকুর রহমান
সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন গ্রেফতার
নওগাঁয় ১৪মণ অবৈধ বিস্ফোরক দ্রব্যসহ ব্যবসায়ী গ্রেফতার
দায়িত্ব ছাড়ার পর উপদেষ্টাদের সম্পদ একটুও বাড়বে না : ধর্ম উপদেষ্টা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ককে কুপিয়েছে ছাত্রদল নেতা
রাতেই দেশ ছেড়ে পালাতে পারেন সাবেক মুখ্যসচিব কায়কাউস !
সৈয়দপুর রেল কারখানা থেকে লোহা ও কয়লা চুরি
ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ইংল্যান্ড যাওয়ার চেষ্টা, নৌকা ডুবে নিহত ৮
ভোলায় সাড়ে ৬ লাখ কোটি টাকার গ্যাসের সন্ধান
সেন্সর বোর্ডের সদস্যপদ ফিরিয়ে দিলেন আশফাক নিপুণ
হারিয়ে যাওয়া ২০০ একর জমি বাংলাদেশকে ফেরত দিতে সম্মত ভারত
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জুরিবোর্ডে থাকছেন যারা
নির্বাচিত সরকারই ঠিক করবে কী সংস্কার হবে: মির্জা ফখরুল
১০০ কোটি নয় কাজীপাড়া স্টেশন মেরামতে লাগছে ১ কোটি টাকারও কম
অবশেষে মিলল শেখ হাসিনার পদত্যাগের চিঠি