মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১ আশ্বিন ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

দুর্নীতির অভিযোগ সত্ত্বেও সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর জামাতা স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান বহাল তবিয়তে

বাংলাদেশের স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী । ছবি সংগৃহিত

সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ এর জামাতা মো:জিল্লুর রহমানের চৌধুরী এর বিরুদ্ধে রয়েছে দুর্নীতি শত শত অভিযোগ। অসংখ্য অভিযোগ সত্ত্বেও তিনি এখনো স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হিসেবে বহাল তবিয়তেই রয়েছেন।

আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠজন হওয়ায় চাকরির ক্ষেত্রে যে সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থানে তাকে পদায়ন করা হয় :

(১) জেলা প্রশাসক, লক্ষ্মীপুর (২০১৫ হতে ২০১৬ পর্যন্ত)

(২) জেলা প্রশাসক, চট্টগ্রাম

(২০১৬ নভেম্বর হতে ২০১৮ অক্টোবর পর্যন্ত)

(৩) বিভাগীয় কমিশনার, খুলনা (৩রা জুলাই ২০২২ হতে ১৫ জুলাই ২০২৩ পর্যন্ত)

(৪) চেয়ারম্যান, বাংলাদেশের স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষ

(২০ জুলাই ২০২৩ হতে চলমান ) এ সময় তিনি অতিরিক্ত সচিব হতে পদোন্নতি লাভ করে গ্রেট-১ কর্মকর্তা হন.

বাংলাদেশের স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরীর দখলে রয়েছে দেশের চব্বিশটি স্থল বন্দর। শ্বশুরের প্রভাব খাটিয়ে গত বছরের জুলাই মাসে বাংলাদেশ স্থল বন্দর এর চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন মো: জিল্লুর রহমান চৌধুরী। চেয়ারে বসেই শুরু করেন অনিয়ম-দুর্নীতি আর নিয়োগ বাণিজ্য। অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই ৫ একর জমিতে গড়ে তুলেন আলিশান বাড়ি। মালিক হয়ে যান একাধিক বিলাসী গাড়ি। শ্বশুরবাড়ি এলাকায় লালমনিরহাটে স্ত্রীর নামে একশত একর জমি কেনেন জিল্লুর রহমান। দুর্নীতির টাকায় এলাকায় সমাজ সেবা করে বেড়ান জিল্লুর রহমান। একাধিক মসজিদ-মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠান খুলে সেখানে অবৈধ আয় এর দোকান খুলে বসেছেন তিনি। আট থেকে দশ জন শিশুকে এতিম দেখিয়ে সরকারি-বেসরকারি অর্থ হাতানো শুরু করেন জিল্লুর রহমান। তার অবৈধ আয় এর অন্যতম খাত নিয়োগ-বাণিজ্য,বড় বড় প্রকল্পে নিম্নমানের কাজ,টেন্ডার বাজি । আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে শত শত নিয়োগ দিতে থাকেন জিল্লুর রহমান। যাতে জনপ্রতি ২ থেকে ৫ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

অন্য দিকে নিজ প্রতিষ্ঠান স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষে স্বজনদের নিয়োগ দিয়ে প্রতিষ্ঠানকে পারিবারিক কেন্দ্র বানিয়ে ফেলার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। গত দুই মাসের মধ্যে স্থল বন্দরে নিজ পরিবারে মধ্যে যাদের চাকরি দিয়েছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

(১) আবু রায়হান চৌধুরী, সহকারী পরিচালক (ট্র্যাফিক), আপন বড় ভাইয়ের ছেলে।

(২) সামিয়া আক্তার নীলা, ফায়ার হাইড্রেন অপারেটর, আপন বোনের মেয়ে।

(৩) তানভির আহমদ,ফায়ার হাউজ ড্রাইভার,আপন মেজ ভাইয়ের ছেলে।

(৪) মো. আতাউর,পাওয়ার হাউজ ড্রাইভার, আপন বড় ভাই নাতি.

(৫) মোহাম্মদ শরীফ মোল্লা, কার ড্রাইভার, আপন বোনের পালিত ছেলে।এছাড়াও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার নেতৃত্বদানকারী ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ নেত্রী ফাতেমা খাতুন লাভলীকে চলতি মাসের ১ তারিখে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে নিয়োগ দেন। এই নেত্রী ৩রা আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে গণভবনে সাক্ষাৎকারের ছবি প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে।

বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের বর্তমান চেয়ারম্যান মো: জিল্লুর রহমান চৌধুরী স্থলবন্দরে একটি গাড়ি পেলেও তিনি তার দখলে রাখেন তিনটি গাড়ি। বাধ্য হয়ে বন্দরের নির্বাহী প্রকৌশলী চুক্তিভিত্তিক ভাড়া গাড়িতে অফিস করেন। এছাড়াও একের পর এক ভৌতিক প্রকল্প দিয়ে কোটি কোটি টাকা আয় করেছেন তিনি। জিল্লুর রহমানের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে মুখ খুলতে গিয়ে বন্দরের অনেককে দিতে হয়েছে মাশুল। বদলি,কারণ দর্শানোর নোটিশ, বিভাগীয় ব্যবস্থার মত শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছে। তার দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও ক্ষমতা অপব্যবহার সংক্রান্ত বিভিন্ন মহলে একাধিকবার অভিযোগ দেওয়া হলেও স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ এর জামাতা হওয়ায় সরকার কোন ব্যবস্থা না নিয়ে তাকে বহাল তবিয়তে রেখেছেন। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের ৩ হাজার ৪শত কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পসহ ১০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নে মন্ত্রীর স্বেচ্ছাচারিতায় জিল্লুর রহমানকে স্থলবন্দরের চেয়ারম্যান পদে পদায়ন করা হয়।তিনি বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর নিজ ক্ষমতায় বাটা লাগতে পারে সেজন্য ৮ই আগস্ট তড়িঘড়ি করে আরো কিছু নিয়োগ-বাণিজ্য করেন।

এছাড়াও গত ৫আগস্ট সরকার পতনের দু-দিন পর রাজধানীর ইস্কাটনে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরীর সরকারি বাসায় সপরিবারে তার শ্বশুর সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ আত্মগোপনে ছিলেন। পরিস্থিতি কিছুটা ঠান্ডা হলে গত সোমবার দুপুর ১২টার দিকে তার শ্বশুর লালমনিরহাট-২ আসনের এমপি সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের ন্যাম ভবনের বাসার মালামাল আনতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে আটক হয় মালামাল সহ স্থলবন্দরের দুটি গাড়ি। উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সদর দপ্তর থেকে আরেকটি মাইক্রোবাস যোগে বন্দরের কতিপয় নিরাপত্তাকর্মী গিয়ে শিক্ষার্থীদের হাত থেকে বন্ধুর চেয়ারম্যান ও সরকারি গাড়ি উদ্ধার করে নিয়ে আসে। যদিও অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে জিল্লুর রহমান বলেন।তবে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সদর দপ্তরের গাড়িচালক মাজেদুর রহমান লিটন বলেন, সোমবার দুপুরে স্যারের (জিল্লুর রহমান) গাড়িটি ন্যাম ভবনে আটকে দেন শিক্ষার্থীরা। পরে স্যারদের সহায়তায় আরেক সহকর্মীকে নিয়ে ন্যাম ভবন থেকে গাড়িটি উদ্ধার করে নিয়ে আসি।জিল্লুর রহমান তার শ্বশুরের মালামাল নামাতে ব্যবহার করেন স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ সদর দপ্তরের নিরাপত্তারক্ষী অপুসহ কয়েকজনকে। অপু বলেন, স্যাররা বলেছেন, তাই গেছি। বেশিক্ষণ ছিলাম না। লিফটের ৯ তলায় স্যারের শ্বশুরের কিছু মাল নামিয়েছিলাম। কিন্তু শিক্ষার্থী ও ন্যাম ভবনের স্যাররা নিষেধ করায় ১২ টার দিকে রেখে চলে আসছি।এদিকে তার শশুররে নেম ভবনের ফ্ল্যাট হতে মূল্যবান গহনা, বস্তা ভর্তি টাকা ও মূল্যবান দ্রব্যাদি ইস্কাটন রোডের ১ নম্বর গেইটের রজনীগন্ধা ভবনের ৫ তলায় তার নির্ধারিত সরকারি ফ্লাটে নিজ হেফাজতে সরিয়ে রাখার অভিযোগও রয়েছে।

অন্যদিকে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী, গ্রেট-১(পরিচিতি নং-৬১০৩) এর বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ দাখিল করা হলেও তিনি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এতই প্রভাবশালী ছিলেন যে অভিযোগটি দুদক আমলে নিয়ে অনুসন্ধানের সাহসও পর্যন্ত পায়নি।

এই অভিযোগ গুলোর ব্যাপারে জানার জন্য বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরীর ফোনে কল করেও তাকে পাওয়া যায় নাই।

Header Ad

দাড়ি-গোঁফ কেটে পালাচ্ছিলেন শ্যামল দত্ত-মোজাম্মেল বাবু

ছবি: সংগৃহীত

গত ৫ আস্ট ছাত্র-জনতার দেশ কাঁপানো অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন। এ ঘটনার পর অনেকেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে যাওয়ার সময় আটক হয়েছেন। অনেক সময় চেহারায়ও পরিবর্তন এনেছেন। সোমবার ভোরে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলা হয়ে অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার পথে একাত্তর টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোজাম্মেল হক বাবু এবং দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্তসহ চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। এর মধ্যে শ্যামল দত্ত ও মোজাম্মেল বাবু দাড়ি-গোঁফ ছেঁটে ভারতে পালাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ময়মনসিংহ উপজেলার ধোবাউড়া থানায় আটক হন তারা।

সোমবার ভোরে স্থানীয় জনতা তাদের আটক করে পুলিশে দেয়। বিকেলে থানা থেকে তাদের রাজধানীকে নিয়ে আসে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি দল। এসময় তার লক্ষ্য করে উত্তেজিত জনতা ডিম নিক্ষেপ করে।

তাদের সঙ্গে আরও আটক হয়েছেন একাত্তর টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার জেমসন মাহাবুব ও প্রাইভেট কারের চালক সেলিম।

স্থানীয়রা জানায়, একটি প্রাইভেটকার রোববার গভীর রাত থেকে কখনো ঘোষবেড় দিয়ে সীমান্তের দিকে, কখনো ধোবাউড়া রোডের দর্শাপাড় এলাকায় বেশ কিছুক্ষণ চক্কর দেয়। এ সময় স্থানীয়দের বিষয়টি সন্দেহ হলে উৎসুক জনতা প্রাইভেটকারটি আটক করে। পরে গাড়িতে থাকা লোকজনের পরিচয় জানতে চায়। মোজাম্মেল হোসেন বাবু গোঁফ ও শ্যামল দত্ত দাড়ি ছেঁটে ফেলায় প্রথমে তাদের কেউ চিনতে পারেনি। পরে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলার একপর্যায়ে নিজেদের পরিচয় দেন। পরে তাদের মারধোর করে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা।

ধোবাউড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. চান মিয়া বলেন, ধোবাউড়া সীমান্তে সাংবাদিক শ্যামল দত্ত, একাত্তর টেলিভিশনের সিইও মোজাম্মেল বাবু, সিনিয়র রিপোর্টার জেমসন মাহবুব ও প্রাইভেটকার চালক সেলিমকে আটক করে দুপুরে কড়া নিরাপত্তায় ঢাকার ডিবি পুলিশের একটি টিম তাদের হস্তান্তর করা হয়। এ সময় নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে আটককৃতদের মাথায় হেলমেট ও গায়ে বুলেট প্রুফ জড়িয়ে সিলভার কালারের একটি মাইক্রোবাসে তুলে দেওয়া হয়।

শ্যামল দত্ত দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন মোজাম্মেল বাবু। এর আগে সপরিবারে ভারতে যাওয়ার সময় দৈনিক ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্তকে আটকে দিয়েছিল ইমিগ্রেশন পুলিশ।

ফরিদপুরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় ভারতীয় নাগরিক গ্রেপ্তার

ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় হরি মন্দির ও কালি মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় এক ভারতীয় নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ভাঙ্গা থানার ওসি মোকসেদুর রহমান জানা জানান, সোমবার সঞ্জিত বিশ্বাস নামের ওই ব্যক্তিকে আদালতে তোলা হয়। এর আগে রোববার কালি মন্দিরের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেন তারা।

৪৫ বছর বয়সী সঞ্জিত ভারতের নদীয়া জেলার নিশি কান্ত বিশ্বাসের ছেলে বলে জেলা পুলিশের বিজ্ঞপ্তিতে বলা উল্লেখ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শনিবার রাতের কোন এক সময় ভাঙ্গা বাজারের হরি মন্দিরের কার্তিক ঠাকুরের হাতের আঙুল, ময়ূরের গলা মোচড়ানো, ঘোড়ার কান ও আঙুল, অসুরের হাতের আঙুল এবং কালি মন্দিরের গণেশের হাতের আঙুল ও শুঁড় ভাঙা দেখে ভাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ করে মন্দির কমিটি।

এ ঘটনার পর সোমবার বিকেলে ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বি এম কুদরত-এ-খুদা স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন।

জেলা পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল বলেন, “ঘটনা তদন্তের সময় কালি মন্দিরের সামনে দুজন ব্যক্তিকে পাওয়া যায়। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় একজনকে স্থানীয়রা পরিচিত বলে শনাক্ত করেন।

“এ সময় অপর ব্যক্তিকে সন্দেহ হওয়ায় তাকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তখন তিনি একবার বাংলা এবং একবার হিন্দি ভাষায় কথা বলতে থাকেন। এক পর্যায়ে তিনি নিজেকে ভারতীয় নাগরিক পরিচয় দেন।”

এ ঘটনায় তদন্ত অব্যাহত রয়েছে বলে ওসি মোকসেদুর রহমান জানিয়েছেন।

সেই গোপন কক্ষ ‘গোপন’ ছিল না: মালা খান

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল মেজারমেন্টসের (বিআরআইসিএম) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মালা খান। সম্প্রতি নিজের অফিসের ভেতরে বিশেষভাবে তৈরি গোপন কক্ষের জন্য আলোচনায় আসেন তিনি।

তবে মালা খান গণমাধ্যমের কাছে দাবি করেছেন, তার অফিসের আলোচিত গোপন কক্ষ আসলে গোপন ছিল না। এ বিষয়ে ওই অফিসের সবাই জানতেন।

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার অলোয়া ইউনিয়নের নিকলা মহাব্বত (ঘাইনঞ্জানি) গ্রামের আবুল ফজল খানের মেয়ে মালা খান। বাবার চাকরির সুবাদে ঢাকায় লেখাপড়া করেন এবং বড় হন। তার চাচা গরু ব্যবসায়ী তোফাজ্জল খানের মাধ্যমে এলাকায় জমি ক্রয় ও গরু-ছাগল বেচাকেনা করতেন মালা খান। এলাকার কিছু লোককে সরকারি-বেসরকারি চাকরিও দিয়েছেন তিনি।

সম্প্রতি তার অফিসে গোপন কক্ষ থাকার খবর দেখে অবাক হন স্থানীয়রা।

সরেজমিনে অলোয়ার নিকলা মহাব্বত এলাকায় গিয়ে জানা গেছে, বিআরআইসিএমের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মালা খানের তিন মেয়ের মধ্যে দুই মেয়ে কানাডায় পড়াশোনা করছেন। তার স্বামী মোস্তফা আনোয়ারও একজন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ছিলেন। বর্তমানে তিনি দুই মেয়ের সঙ্গে কানাডায় বসবাস করছেন। তবে গুঞ্জন রয়েছে, স্বামী ও মেয়েদের জন্য কানাডায় বাড়ি কিনেছেন তিনি।

ঢাকার মোহাম্মদপুরের বসিলা এলাকায় দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির গরু ও ছাগলের খামার রয়েছে। ওই খামার পরিচালনা করতেন তার আপন ছোট ভাই। এছাড়া বসিলাতেই তার জায়গা ও বাসা রয়েছে। টাঙ্গাইলসহ জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে চাচা তোফাজ্জল খানের মাধ্যমে গরু ও ছাগল কিনে মোটাতাজা করা হতো খামারে। এরপর চাচা ও ঢাকার বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে সেগুলো খামারসহ টাঙ্গাইলে এনেও বিক্রি করা হতো।

গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালানোর পর বসিলার ওই খামার থেকে অনেকেই গরু-ছাগল নিয়ে গেছেন। চাচার মাধ্যমে এলাকায় ৫৯ শতাংশ জমি কিনেছেন তিনি। মালা খান বিআরআইসিএমতে এলাকার বেশ কয়েকজনকে চাকরিও দিয়েছেন। তারা এখন সেখানে বিভিন্ন পদে কর্মরত রয়েছেন।

মালা খানের বিরুদ্ধে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের সনদ জালের অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে ২০১৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি একটি জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। “জালিয়াতির মালা গেঁথেছেন মালা খান” শিরোনামে ওই সংবাদে মালা খান জাল সনদ ও নিয়োগ পরীক্ষায় (লিখিত) সর্বনিম্ন নম্বর পেয়ে অকৃতকার্য হয়েও বেজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন বলে উল্লেখ করা হয়। এতে আরও বলা হয়- জালিয়াতির মাধ্যমে মালা খান অর্জন করেছেন পিএইচডি ডিগ্রি। আর ওই পিএইচডি কোর্সের কো-সুপারভাইজার ছিলেন তার স্বামী মোস্তফা আনোয়ার। তিনি যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি নিয়েছেন, সেই প্রতিষ্ঠানের নেই কোনো অনুমোদন। ভুয়া প্রতিষ্ঠানটি টাকার বিনিময়ে দিয়েছে পিএইচডির সনদ।

নিকলা এলাকার অনেকেই জানান, মালা খান এলাকার অনেককে চাকরি দিয়েছেন যারা বেকার ছিল। তবে টাকার বিনিময়ে দিয়েছেন কিনা সেটা কেউ বলতে পারেননি। এছাড়া এলাকায় তার চাচা তোফাজ্জলকে টাকা-পয়সা দিয়ে সহায়তা করতেন। তার চাচা ভূঞাপুর শিয়ালকোল হাটের ইজারাদার। চাচাই এলাকায় তাকে জায়গা জমি কিনে দিয়েছেন।

বিআরআইসিএমে চাকরি পাওয়া অলোয়া ইউনিয়নের ঘাইনঞ্জানি গ্রামের সোহান বলেন, কেরাণীগঞ্জে জায়গা লিজ নিয়ে তার ভাই গরু ও ছাগলের খামার করেছেন বলে জেনেছি। তবে বসিলাতে ছিল কিনা জানি না। ৫ আগস্টের পরই অফিসের লোকজন যারা বিরোধিতা করেছেন তাদের কাছেই চাবি ছিল অফিসের। যেখানে কোনো অবৈধ কার্যকলাপ ছিল না ম্যাডামের। বিআরআইসিএমের কার্যালয়ে গরু ও ছাগল নিয়ে আসা হতো বিক্রির জন্য। ঝামেলার কারণে খামার ছেড়ে দিয়েছিলেন। ফলে গরু ও ছাগলগুলো অফিসে আনা হয়েছিল। সেখান থেকে আমি দুটি গরু ও দুটি রাম ছাগল নিয়েছি। ঢাকায় তার কোনো সম্পত্তি নেই। ম্যাডাম তার বাবা, ভাই, ভাইয়ের স্ত্রীর সঙ্গে কোয়ার্টারে থাকতেন। ।

মালা খানের চাচা তোফাজ্জল খান বলেন, মালা খানের ঘটনাটি দেখে বিস্মিত হয়েছি। আমার ভাতিজি একজন সৎ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা। অফিসের লোকজন তার বিরুদ্ধে লেগেছে। তার অফিসে আয়নাঘর থাকাসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলছে। তার ভাইয়ের খামার ছিল বসিলাতে। আন্দোলনের আগে এক ট্রাক গরু এনে টাঙ্গাইলের বিভিন্ন হাটে বিক্রি করেছি। এলাকায় কিছু জায়গা কিনে দিয়েছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে ওই জমি আমি কিনে নিয়েছি।

চাচা তোফাজ্জল খানের মুঠোফোনে কথা হয় বিআরআইসিএমের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মালা খানের সঙ্গে।

তিনি বলেন, ঘটনাটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। ৫ আগস্টের পর অফিসে যাইনি কয়েকদিন। এর মধ্যে তারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে, মিথ্যা ঘটনা তৈরি করেছে। তারা মন্ত্রণালয় বরাবর অভিযোগ দিয়েছে আমার বিরুদ্ধে। মিথ্যা ঘটনার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আইনগত কোনো কিছুই করতে পারব না।

মালা খান বলেন, সরকার পতনের পর কয়েকদিন অফিস করেছি। আগে থেকেই ওই কক্ষের বিষয়ে জানত অফিসের লোকজন। কিন্তু এখন সেটি ‘গোপন কক্ষ’ নাম দিয়ে প্রচার করছে। মূলত আমাকে অপদস্ত করার জন্য এমন নাটক সাজিয়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ

দাড়ি-গোঁফ কেটে পালাচ্ছিলেন শ্যামল দত্ত-মোজাম্মেল বাবু
ফরিদপুরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় ভারতীয় নাগরিক গ্রেপ্তার
সেই গোপন কক্ষ ‘গোপন’ ছিল না: মালা খান
‘আপনার স্বামী আর্মিতে, আমার স্ত্রীও ডাক্তার’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে ১৪টি দাবি তুলে ধরলেন হাসনাত আবদুল্লাহ
শত্রুরা জানে জামায়াতে ইসলামী ভাঙবে, কিন্তু মচকাবে না: ডা. শফিকুর রহমান
সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন গ্রেফতার
নওগাঁয় ১৪মণ অবৈধ বিস্ফোরক দ্রব্যসহ ব্যবসায়ী গ্রেফতার
দায়িত্ব ছাড়ার পর উপদেষ্টাদের সম্পদ একটুও বাড়বে না : ধর্ম উপদেষ্টা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ককে কুপিয়েছে ছাত্রদল নেতা
রাতেই দেশ ছেড়ে পালাতে পারেন সাবেক মুখ্যসচিব কায়কাউস !
সৈয়দপুর রেল কারখানা থেকে লোহা ও কয়লা চুরি
ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ইংল্যান্ড যাওয়ার চেষ্টা, নৌকা ডুবে নিহত ৮
ভোলায় সাড়ে ৬ লাখ কোটি টাকার গ্যাসের সন্ধান
সেন্সর বোর্ডের সদস্যপদ ফিরিয়ে দিলেন আশফাক নিপুণ
হারিয়ে যাওয়া ২০০ একর জমি বাংলাদেশকে ফেরত দিতে সম্মত ভারত
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জুরিবোর্ডে থাকছেন যারা
নির্বাচিত সরকারই ঠিক করবে কী সংস্কার হবে: মির্জা ফখরুল
১০০ কোটি নয় কাজীপাড়া স্টেশন মেরামতে লাগছে ১ কোটি টাকারও কম
অবশেষে মিলল শেখ হাসিনার পদত্যাগের চিঠি