বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪ | ২০ কার্তিক ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

রমজানে নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে এখনই উদ্যোগ নিন

প্রতি বছর পবিত্র মাহে রমজান মাস আসার পূবেই নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যায়। আর এই নিত্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার ও ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো প্রতিবছর নানারকম অঙ্গীকার-প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকেন। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন, যে কোনো বিশেষ উপলক্ষে বাজারের চাবিকাটি চলে যায় অশুভ চক্রের হাতে। যে কোনো পূজা-পার্বণ-ঈদ এলেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়বে–এ যেন অলিখিত নিয়ম হয়ে গেছে। আবার বেশ কিছুদিন ধরেই লাফিয়ে লাফিয়ে দফায় দফায় বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম।

উৎসব, পূজা-পার্বণ উপলক্ষে সব দেশেই কিছু পণ্যের চাহিদা বাড়ে। ওই পণ্যগুলো শুধু নিছক উপহারের পণ্য–নিত্যপণ্য নয়। প্রতিদিন এসব পণ্য কেনা হয় না। কেবল বিশেষ দিনেই কেনা হয়। তাই ওই পণ্যগুলোর দাম বাড়লেও সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়ে না। এদিক দিয়ে আমাদের দেশ ভিন্নতর। দামি বিলাসী পণ্য নয়, সুযোগ পেলেই সব নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানো হয়।

প্রতি বছরই রমজানকে সামনে রেখে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ে। এবারও ব্যত্যয় হয়নি। তবে রমজান আসার দুই মাস আগেই বেড়েছে সয়াবিন, আটা, ময়দা ও ডালের দাম। ইফতারি ও সেহরি সামনে রেখে নতুনভাবে ভোজ্যতেল সয়াবিন ও পাম অয়েলের দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে কিংবা নানা অজুহাতে বাড়ানো হচ্ছে চাল, চিনি, মসুর ডাল, প্যাকেট আটা ও ময়দার দাম। মাঝারিমানের পাইজাম কেজিতে ২-৪ টাকা বেড়ে খুচরা বাজারে এসব চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকায়। এ ছাড়া মোটা স্বর্ণা ও চায়না ইরি চাল ৪৮-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সরু মিনিকেট ও নাজিরশাইল চাল মানভেদে ৬৫-৭২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কেজিপ্রতি খোলা আটা ২ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৩৮ এবং প্যাকেট আটা বিক্রি হচ্ছে ৪২-৪৮ টাকায়। কেজিপ্রতি মসুর ডালের দাম বেড়ে মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২৫ টাকায়।

আন্তর্জাতিক বাজারে হ্রাস পাওয়ার পরও দেশে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেন রিফাইনাররা। তাতে সরকারের সায় না মিললেও পণ্যটির দাম বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানিয়ছিলেন, ৬ ফেব্রুয়ারির আগে ভোজ্যতেলের দাম বাড়বে না। অথচ বাজারে ইতোমধ্যেই সয়াবিন তেলের দাম বাড়তে শুরু করেছে। এ সপ্তাহে এক লিটারের বোতল আগের দামে বিক্রি হলেও রূপচাঁদা, তীর, বসুন্ধরাসহ বেশ কয়েকটি ব্র্যান্ডের পাঁচ লিটার বোতলের দাম নির্ধারণ করা হচ্ছে ৮০০ টাকা পর্যন্ত, যা আগে ছিল ৭৬০ টাকা।

অন্যদিকে, খুচরা ব্যবসায়ীরা খোলা সয়াবিন তেলের কেজি বিক্রি করছেন ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা, যা আগে ছিল ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা। পাম অয়েলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা, তা আগে ছিল ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা। ফলে নিত্যপণ্যের পাইকারি ও খুচরা বাজার দীর্ঘমেয়াদি অস্থিরতার দিকে যাচ্ছে। বেশ কয়েকটি কোম্পানি দাম বাড়িয়ে বোতলজাত তেল সরবরাহ করছে। প্রশ্ন হচ্ছে, মন্ত্রীর ঘোষণার পরও কেন দাম বাড়ানো হলো। কারণ কি ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট? সিন্ডিকেট তথা মুষ্টিমেয় ব্যবসায়ীচক্র বাজার একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। তাদের নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না কেন? বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে নিত্যপণ্যের দাম দিন দিন বাড়তেই থাকবে। দেশের বাজারে কেউ অতিরিক্ত মুনাফা লাভের চেষ্টা করছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা দরকার।

রমজানে ভোজ্যতেল, চিনি, ছোলা, পেঁয়াজ, ডাল ও খেজুর এর চাহদা বাড়ে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, দেশে সারাবছর ভোজ্যতেলের চাহিদা ২১ লাখ টন, যার ৯০ শতাংশই আমদানি করতে হয়। কেবল রমজান মাসেই এ তেলের চাহিদা থাকে ৪ লাখ টনের মতো। সারাবছরের জন্য প্রয়োজন হয় ১৮ লাখ টন চিনি, এর মধ্যে ৩ লাখ টনের চাহিদা থাকে কেবল রমজান মাসে। সারাবছর যেখানে ৫ লাখ টন মসুর ডাল লাগে, সেখানে রমজানে চাহিদা থাকে ৮০ হাজার টনের মতো। ডালের চাহিদা মেটাতে ৫০ শতাংশ আমদানি করতে হয়। বছরে ৮০ হাজার টন ছোলার প্রয়োজন হয় দেশে, যার ৮০ শতাংশই ব্যবহার হয় রমজান মাসে। এ সময় সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয় পেঁয়াজের। ২৫ লাখ টন বার্ষিক চাহিদার ৫ লাখ টনই ব্যয় হয় রমজান মাসে। তাই রমজান এলে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতা শুরু হয়। পণ্যমূল্য বাড়াতে তারা কারসাজির আশ্রয় নেয়। এতে করে বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে।

ব্যবসায়ীরা প্রতিবছরই নানা কৌশলে আগেই দাম বাড়িয়ে দেন সংঘবদ্ধভাবে। ব্যক্তিবিশেষের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার সুযোগ নেই। আর রমজানে দাম বৃদ্ধি না পাওয়ায় অভিযোগ করারও সুযোগ থাকে না। বরং ব্যবসায়ীরাই বলেন ‘দাম বাড়েনি’। বাজার দাম তদারকি ও নিয়ন্ত্রণে সরকারের সংস্থাগুলোও বাজার যাচাই করে জানায়, রমজানে নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। কিন্তু রমজানের প্রাক্কালে পণ্যের দাম যে পরিমাণ বাড়ানো হয়, পরে তা আর কমানো হয় না। সাধারণ ভোক্তাদের অভিযোগ, সরকার নিত্যপণ্যের বাজারের মূল দায়িত্ব ব্যবসায়ীদের ওপর ছেড়ে দিয়েছে, ফলে বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা দৃশ্যমান নেই। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট কোন কর্তৃপক্ষও সাধারন মানুষের এই আকাংখিত নিত্যপণ্যের বাজার তদারকির ন্যূনতম কোনো দায়িত্ব পালনে আগ্রহ নেই। যার কারণে বাজারে এক লাফে জিনিসের দাম দ্বিগুণ হারে বেড়েই চলেছে। পুরো বছর জুড়েই দফায় দফায় চক্রাকারে একেক বার একেকটি পণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের দুয়েকজন কর্মকর্তা নিয়মিত বাজার তদারকি করেও এই নিত্যপণ্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতির লাগাম টানতে পারছেন না।

ভোক্তা ও বাজার বিশ্লেষকদের মতে, ‘কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্সে (সিপিআই) দেখা যায়, খাদ্যে মূল্যস্ফীতি সার্বিক মূল্যস্ফীতির চেয়ে বেশি। তার অর্থ হলো–সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা, বিশেষত শ্রমজীবী ও সীমিত আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে দেখা যায়, গত ডিসেম্বর শেষে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৬ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। করোনার কারণে সংকটে থাকা ব্যবসা-বাণিজ্যসহ পুরো অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। অর্থাৎ ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে একজন মানুষ ১০০ টাকায় যত জিনিসপত্র কিনেছেন, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ওই টাকা দিয়ে সেই জিনিসপত্র পাচ্ছে না। জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় ওই একই পণ্য কিনতে ১০৬ টাকা ৫ পয়সা খরচ করতে হবে। ৬ টাকা ৫ পয়সা হলো মূল্যস্ফীতি। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য মতে, দেশের বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্যের দাম প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে। চাল, ডাল, তেল থেকে শুরু করে সবজিসহ সবকিছুর দামই বাড়তি। এ অবস্থা শুধু ঢাকা শহরেই নয়, গ্রামেও একই চিত্র। প্রতিনিয়ত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। একই সঙ্গে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে পরিবহন ব্যয়। ফলে মূল্যস্ফীতির চাপ অব্যাহতভাবে বাড়ছে।

মহামারি করোনায় এলোমেলো হয়ে পড়েছে মানুষের জীবন। করোনার নতুন ধরন অমিক্রনের কারণে এই অভিঘাত আরও বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অমিক্রনের প্রভাবে বিভিন্ন দেশে জারি করা হয়েছে নানা বিধিনিষেধ। বাংলাদেশেও এর প্রভাব বাড়ছে। সঙ্কুচিত হয়ে পড়েছে কর্মক্ষেত্রে। চাকরি হারিয়ে অনেকে বেকার হয়ে পড়েছে। এর বাইরে নিত্যপণ্যের মূল্য প্রান্তিক ও সীমিত আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। মূল্যস্ফীতিও বেশ ঊর্ধ্বমুখী। মূল্যস্ফীতি বাড়া মানেই প্রান্তিক ও সীমিত আয়ের মানুষের ভোগান্তি বৃদ্ধি। এতে খাদ্য উৎপাদন, বণ্টন, সরবরাহ ও মূল্যস্তরে পড়তে পারে নেতিবাচক প্রভাব; যা খাদ্যমূল্যের ওপর অস্বস্তিকর প্রভাব ফেলবে। বাংলাদেশে চলমান শীতে সবজির ভরা মৌসুমেও তরিতরকারির দাম সাধারণ ক্রেতার নাগালের বাইরে। চাল, ডাল, তেল, আটা, চিনিসহ নিত্যপণ্যের দামও চড়া প্রায় দুবছর ধরে। এ অবস্থায় প্রান্তিক ও সীমিত আয়ের মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।

অবশ্য ব্যবসায়ীরা নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক বাড়ালেও ভোক্তাদেরও দায় কোনো অংশে কম নয়। সামর্থ্যবান ভোক্তাদের অনেকেই রোজার আগেই পরিবারের বাজার সেরে ফেলেন। রমজান সংযম ও আত্মশুদ্ধির মাস। পবিত্র এই মাসে ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা সিয়াম সাধনার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভের চেষ্টা করেন। ধর্মপ্রাণ ব্যবসায়ীরা ধর্মকর্ম নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও অনেকে ধর্মের অনুশাসন না মেনে পণ্য মজুদ করেন। তাই রোজার মাসে যেন নিত্যপণ্যের বাজারে চাহিদা ও সরবরাহে সংকট তৈরী না হয়, সেজন্য একসঙ্গে বাজার না করে সপ্তাহের বাজার করা, দরিদ্রদের মাঝে ইফতারী হিসাবে সমাগ্রী বিতরণের পরিবর্তে নগদ অর্থ বিরতনের আহবান জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।

বাজারব্যবস্থার স্বাভাবিক গতি যোগসাজশের মাধ্যমে বাধাগ্রস্ত করা হলে অবশ্যই ভোক্তাস্বার্থ ক্ষতিগ্রস্থ হবে। যা দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। ভোক্তা ও বাজার বিশ্লেষকদের মতে সরকার ও বানিজ্য মন্ত্রনালয় নিত্যপণ্যের বাজারের দায়িত্ব পুরোটাই ব্যবসায়ীদের হাতে ছেড়ে দিয়েছে। সরকারের এ ব্যবসায়ী তোষনণীতির কারনে ব্যবসায়ীরা সুন্তোষ্ঠ হলেও সাধারন মানুষের মুখে হাসি নেই। উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পর্যায়ে থাকলে কভিডকালে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা যে কমেছে, তা মানতে হবে। গত কয়েক বছরে সরকারের পদক্ষেপ সত্ত্বেও নিত্যপণ্যের অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি কেন থামানো যায়নি, তা খতিয়ে দেখা উচিত। সে কারণে ঢাকা শহরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ১৪টি টিম বাজার তদারকি করার কথা থাকলেও বাজারে ভোক্তারা এই টিমের দেখা পান না। জেলা শহরে জেলা প্রশাসনের বাজার তদারকি টিম মাঠে থাকার কথা। অথচ অনেকেই ফটো সেশনের মতো বাজার তদারকি করে সরকারের কাছে প্রতিবেদন দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এই তদারকি কোনো প্রভাব ফেলতে পারছে না। উদার বাণিজ্য নীতির সুযোগ নিয়ে স্বার্থান্বেষী কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী বা প্রতিষ্ঠান বাজারের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত করার অপচেষ্টা করছে।

ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে মুনাফা করতেই হবে; কিন্তু মুনাফা অর্জনের নামে অনৈতিক কর্মকাণ্ড সমর্থনযোগ্য না। এ অবস্থায় পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে বাজার তদারকি বাড়ানো; বিকল্প ব্যবস্থাপনায় চাল, আটা, চিনি, পেঁয়াজসহ নিত্যপণ্য প্রান্তিক, শ্রমজীবী ও সীমিত আয়ের মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য একটি ব্যবস্থাপনা কাঠামো তৈরি; প্রয়োজনে প্রান্তিক ও শ্রমজীবিদের জন্য রেশনিং কার্ড প্রবর্তন করা যেতে পারে। বিশেষ করে করোনাকালে যাদের আয় কমে গেছে, তাদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর কর্মসূচির আওতা বাড়াতে হবে। গ্রাম ও শহরাঞ্চলের প্রান্তিক ও শ্রমজীবি মানুষ যাতে খেয়ে-পরে বাঁচতে পারে, সেজন্য নিত্যপণ্য্যের দাম যেমন স্থিতিশীল রাখতে হবে, তেমনি তাদের আয় বাড়ানো ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির ওপর জোর দিতে হবে। আমদানিকারক, উৎপাদক, পরিবেশক, সরবরাহকারী, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী পর্যায়ে সমন্বিত বাজার তদারকি নিশ্চিত, কার্যকর টিসিবি, সর্বোপরি ট্যারিফ কমিশন, কৃষি, খাদ্য, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং রাজস্ব বোর্ডের মধ্যে কার্যকর সমন্বয় নিশ্চিত করতে হবে। আসন্ন রমজানে যাতে নিত্যপণ্যসহ সব ধরনের পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে সরকারকে এখন থেকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

লেখক: ভাইস প্রেসিডেন্ট, কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)

এসএ/

Header Ad

স্বৈরাচার পালিয়েছে, তবে দেশে এখনো ক্রান্তিকাল বিদ্যমান: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালালেও বাংলাদেশ এখনো ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। প্রশাসনের অভ্যন্তরে থাকা স্বৈরাচারের প্রেতাত্মারা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে যশোরে বিএনপির প্রয়াত নেতা ও সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের স্মরণসভায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তারেক রহমান।

তারেক রহমান বলেন, বিএনপি দেশের সংস্কার চায়। তবে শুধু শব্দ বা ভাষার পরিবর্তন নয়, এমন সংস্কার চাই যা মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন আনবে। তিনি মনে করেন, মানুষের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত এই সংস্কারের পথ চলা থামানো উচিত নয়। রাজনীতির মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা, আর বিএনপি তার ৩১ দফার মাধ্যমে এ সংগ্রামে প্রতিটি নাগরিকের জন্য কাজ করছে।

তারেক রহমান প্রয়াত তরিকুল ইসলামের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, তিনি সারাজীবন মা-মাটি-মানুষের জন্য নিবেদিত ছিলেন। নতুন প্রজন্মকে তাঁর জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। যারা রাজনীতিকে ব্যক্তিগত লাভের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছেন, তাদের পতন এ জাতি প্রত্যক্ষ করেছে। তারেক আরো বলেন, ছাত্র-জনতার মহাবিপ্লবের মাধ্যমে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার উৎখাত হয়েছে, কিন্তু তাদের সহযোগী ও প্রেতাত্মারা এখনো ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তিনি জাতীয়তাবাদের আদর্শে বিশ্বাসীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।

তারেক রহমান বলেন, ভুল বোঝাবুঝি দূর করে গণতন্ত্রের পথে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে। কেবল সংবিধানের কিছু শব্দের পরিবর্তনে সংস্কার সম্ভব নয়, বরং ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিএনপির ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের জন্য সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। দেশের মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্যই বিএনপি এই ৩১ দফা প্রস্তাবনা সামনে এনেছে এবং দলটি সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে।

তরিকুল ইসলামের আদর্শ ও ত্যাগের কথা স্মরণ করে তারেক বলেন, তিনি কখনো নিজের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি। স্বৈরাচার এরশাদের আমলে ও পরবর্তীতে ওয়ান-ইলেভেনের সময়েও তিনি কারাভোগ ও নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। তরিকুল ইসলামের সাথে কারাগারে কাটানো কিছু মুহূর্তের কথা স্মরণ করে তারেক বলেন, সেই সময় তিনি তরিকুল ইসলামের কাছ থেকে অনেক সাহস পেয়েছিলেন।

স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন। বক্তব্য রাখেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, যশোর বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম, প্রেস ক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। এছাড়া মরহুম তরিকুল ইসলামের সহধর্মিণী ও বিএনপি নেত্রী নার্গিস বেগম এবং তাঁর দুই সন্তান শান্তুনু ইসলাম সুমিত ও অনিন্দ্য ইসলাম অমিত উপস্থিত ছিলেন।

সভা শেষে তরিকুল ইসলামের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

Header Ad

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা

ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা আগামী ১২ এপ্রিল থেকে শুরু হবে। পরীক্ষা চলবে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত।

মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর প্রশাসক অধ্যাপক মো. আখতার হোসেন মজুমদার স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি উপ-কমিটির সভায় সর্বসম্মতভাবে রাবি ছাড়াও ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রংপুরে অবস্থিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী ২০২৫ সালের ১২, ১৯ ও ২৬ এপ্রিল তারিখে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।

১৪ নভেম্বর তারিখে অনুষ্ঠিতব্য ভর্তি কমিটির সভায় এই সুপারিশ বিবেচনা করা হবে। ঐ সভায় ভর্তি সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়েও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিত বলা হয়েছে।

Header Ad

আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ফাঁসের ঘটনায় গৃহবধূর আত্মহত্যা

ছবি: সংগৃহীত

গত কয়েক মাস যাবৎ ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিম আক্তার ( ১৭) নামের এক গৃহবধুর আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ছড়াচ্ছিলেন হেলাল উদ্দিন সরদার নামের ( ২৭) এক যুবক।

আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ফাঁসের ঘটনায় ৪নভেম্বর (সোমবার ) রাতে অভিমান করে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে মিম আক্তার। পরে তাকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ২টার দিকে মারা যায় মিম। মীম আক্তার নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার মালশন গ্রামের আসাদুল প্রামানিক এর মেয়ে। আর অভিযুক্ত হেলাল উদ্দিন সরদার একই এলাকার আঁকনা গ্রামের মকলেছুর রহমান সরদার এর ছেলে।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে আঁকনা গ্রামের মকলেছুর রহমান সরদারের ছেলে মালয়েশিয়া প্রবাসী হেলাল উদ্দিন সরদার এর সাথে একই এলাকার মালশন গ্রামের আসাদুল প্রামানিক এর মেয়ে মিম আক্তারের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের ৭মাসের মাথায় পারিবারিক কলহের জেরে গত ৭জুলাই দু’জনের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। তার পর থেকেই হেলাল “মিম আক্তার” শিরোনামে একটি ফেসবুক আইডি খুলে সেখানে মিমের আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও পোষ্ট করতে থাকে। শুধু ফেসবুকই নয় হোয়াইটস অ্যাপস সহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে মিমের অন্তরঙ্গ ছবি ও ভিডিও পোষ্ট করে। এমনকি মিমের হোয়াইস আ্যপে এসব ছবি ও ভিডিও পাঠিয়ে তাকে উত্যক্ত করে হেলাল । পরে মিম তার ব্যবহৃত ফোনটি ভেঙ্গে ফেলে। ঘটনাটি পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে জানাজানি হলে অভিমান করে সোমবার রাত ৮টার দিকে বিষ পান করে (পোকামাকড় নিধনের বিষ) আত্নহত্যা করার চেষ্টা করে। পরে পরিবারের লোকজনসহ স্থানীয়রা উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ২টার দিকে মারা যায় মিম।

মিমের বাবা আসাদুল প্রামানিক বলেন, আমার মেয়ের বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ার পর থেকেই হেলাল নানাভাবে বিরক্ত ও উত্যক্ত করে আসছিল। তার নামে ফেসবুক আইডি খুলে নানা রকম ছবি ও ভিডিও পোস্ট করতো। আমার মেয়েকেও হোয়াইটস অ্যাপে সেসব দিয়ে ভয়ভূতি ও হুমকি দিয়ে বলতো তোর জীবন শেষ করে দিবো। এসব জানাজানি হলে আমার মেয়ে সবার অজান্তে ঘরে বিষ খায়। হাসপাতালে নিয়ে আসার পর মেয়েটা মারা যায়। এসব ছবি-ভিডিও ছড়িয়ে আমার মেয়েকে আত্নহত্যা করতে বাধ্য করা হয়েছে। অপমান ও অভিমানে মেয়েটা আত্নহত্যা করেছে। হেলালসহ যারাই জড়িত থাক,তাদের সবার কঠিণ শাস্তি চাই। আমরা থানায় মামলা করবো।

এদিকে ঘটনার পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছে অভিযুক্ত হেলাল উদ্দিন সরদারের পরিবারের লোকজন। গ্রামের বাড়ি আঁকনাতে গিয়েও তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি। অভিযুক্ত মালয়েশিয়া প্রবাসী হেলাল এর সাথেও যোগাযোগ করার চেষ্টাও তা সম্বব হয়নি।

নওগাঁ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ফজলুল হক নয়ন বলেন, মিম বিষ পান করার পর বেশ কয়েক ঘন্টা পর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। আমরা আমাদের সাধ্যমত চিকিৎসা প্রদান করেছি। পরবর্তীতে রাজশাহী বা বগুড়া নিয়ে যাওয়ারও পরামর্শ দিয়েছিলাম। তবে এখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থান মারা যায়।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রাণীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি ) তারিকুল ইসলাম বলেন, মালশন গ্রামের মিম আক্তার নামের একজন বিষপান করে। পরবর্তীতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আবস্থান মারা গেছেন। যেতেতু নওগাঁ সদর হাসপাতালে মারা গেছেন যার কারনে সদর থানা পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করছেন। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করবো।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

স্বৈরাচার পালিয়েছে, তবে দেশে এখনো ক্রান্তিকাল বিদ্যমান: তারেক রহমান
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা
আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ফাঁসের ঘটনায় গৃহবধূর আত্মহত্যা
সম্মেলন শেষে ঢাবি পরিচ্ছন্নতা অভিযান করেছে তাবলিগের সাথীরা
বাংলাদেশ দলের সহকারী কোচ হলেন সালাহউদ্দিন
আরও ২৯ জন সাংবাদিকের প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল
কৃষক বাবাকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে পুলিশের এএসপি হন শতকোটি টাকার মালিক হারুন
হত্যা মামলার আসামি হয়েও পাসপোর্ট পেতে যাচ্ছেন শিরীন শারমিন চৌধুরী
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে ছাত্রদলের দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা
শেখ হাসিনা কীভাবে ভারতে আছেন, জানতে চাইলেন ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী
মানুষ আগেও ভোটারবিহীন সরকারকে মানেনি, এখনও মানবে না: মির্জা আব্বাস
মাওলানা সাদকে দেশে আসতে দিলে অন্তর্বর্তী সরকারের পতন
সরকারি অনুষ্ঠানে স্লোগান ও জয়ধ্বনি থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা
বেনাপোল স্থলবন্দরে ভোক্তা অধিকারের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
গুম কমিশনে জমা পড়েছে ১৬০০ অভিযোগ, সবচেয়ে বেশি র‌্যাবের বিরুদ্ধে
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে হত্যার হুমকি, থানায় জিডি
মালয়েশিয়ায় বন্দিশিবির থেকে ছয় বাংলাদেশিকে উদ্ধার, মানবপাচার চক্র আটক
১২ কেজি এলপি গ্যাসের দাম কমলো ১ টাকা
বিডিআর হত্যাকাণ্ড পুনঃতদন্তে হাইকোর্টের জাতীয় কমিশন গঠনের নির্দেশ কেন নয়
বাংলাদেশে ইজতেমা একবারই হবে, দুবার নয়: মহাসম্মেলনে বক্তারা