বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫ | ২১ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

রমজানে নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে এখনই উদ্যোগ নিন

প্রতি বছর পবিত্র মাহে রমজান মাস আসার পূবেই নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যায়। আর এই নিত্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার ও ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো প্রতিবছর নানারকম অঙ্গীকার-প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকেন। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন, যে কোনো বিশেষ উপলক্ষে বাজারের চাবিকাটি চলে যায় অশুভ চক্রের হাতে। যে কোনো পূজা-পার্বণ-ঈদ এলেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়বে–এ যেন অলিখিত নিয়ম হয়ে গেছে। আবার বেশ কিছুদিন ধরেই লাফিয়ে লাফিয়ে দফায় দফায় বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম।

উৎসব, পূজা-পার্বণ উপলক্ষে সব দেশেই কিছু পণ্যের চাহিদা বাড়ে। ওই পণ্যগুলো শুধু নিছক উপহারের পণ্য–নিত্যপণ্য নয়। প্রতিদিন এসব পণ্য কেনা হয় না। কেবল বিশেষ দিনেই কেনা হয়। তাই ওই পণ্যগুলোর দাম বাড়লেও সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়ে না। এদিক দিয়ে আমাদের দেশ ভিন্নতর। দামি বিলাসী পণ্য নয়, সুযোগ পেলেই সব নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানো হয়।

প্রতি বছরই রমজানকে সামনে রেখে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ে। এবারও ব্যত্যয় হয়নি। তবে রমজান আসার দুই মাস আগেই বেড়েছে সয়াবিন, আটা, ময়দা ও ডালের দাম। ইফতারি ও সেহরি সামনে রেখে নতুনভাবে ভোজ্যতেল সয়াবিন ও পাম অয়েলের দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে কিংবা নানা অজুহাতে বাড়ানো হচ্ছে চাল, চিনি, মসুর ডাল, প্যাকেট আটা ও ময়দার দাম। মাঝারিমানের পাইজাম কেজিতে ২-৪ টাকা বেড়ে খুচরা বাজারে এসব চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকায়। এ ছাড়া মোটা স্বর্ণা ও চায়না ইরি চাল ৪৮-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সরু মিনিকেট ও নাজিরশাইল চাল মানভেদে ৬৫-৭২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কেজিপ্রতি খোলা আটা ২ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৩৮ এবং প্যাকেট আটা বিক্রি হচ্ছে ৪২-৪৮ টাকায়। কেজিপ্রতি মসুর ডালের দাম বেড়ে মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২৫ টাকায়।

আন্তর্জাতিক বাজারে হ্রাস পাওয়ার পরও দেশে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেন রিফাইনাররা। তাতে সরকারের সায় না মিললেও পণ্যটির দাম বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানিয়ছিলেন, ৬ ফেব্রুয়ারির আগে ভোজ্যতেলের দাম বাড়বে না। অথচ বাজারে ইতোমধ্যেই সয়াবিন তেলের দাম বাড়তে শুরু করেছে। এ সপ্তাহে এক লিটারের বোতল আগের দামে বিক্রি হলেও রূপচাঁদা, তীর, বসুন্ধরাসহ বেশ কয়েকটি ব্র্যান্ডের পাঁচ লিটার বোতলের দাম নির্ধারণ করা হচ্ছে ৮০০ টাকা পর্যন্ত, যা আগে ছিল ৭৬০ টাকা।

অন্যদিকে, খুচরা ব্যবসায়ীরা খোলা সয়াবিন তেলের কেজি বিক্রি করছেন ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা, যা আগে ছিল ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা। পাম অয়েলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা, তা আগে ছিল ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা। ফলে নিত্যপণ্যের পাইকারি ও খুচরা বাজার দীর্ঘমেয়াদি অস্থিরতার দিকে যাচ্ছে। বেশ কয়েকটি কোম্পানি দাম বাড়িয়ে বোতলজাত তেল সরবরাহ করছে। প্রশ্ন হচ্ছে, মন্ত্রীর ঘোষণার পরও কেন দাম বাড়ানো হলো। কারণ কি ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট? সিন্ডিকেট তথা মুষ্টিমেয় ব্যবসায়ীচক্র বাজার একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। তাদের নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না কেন? বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে নিত্যপণ্যের দাম দিন দিন বাড়তেই থাকবে। দেশের বাজারে কেউ অতিরিক্ত মুনাফা লাভের চেষ্টা করছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা দরকার।

রমজানে ভোজ্যতেল, চিনি, ছোলা, পেঁয়াজ, ডাল ও খেজুর এর চাহদা বাড়ে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, দেশে সারাবছর ভোজ্যতেলের চাহিদা ২১ লাখ টন, যার ৯০ শতাংশই আমদানি করতে হয়। কেবল রমজান মাসেই এ তেলের চাহিদা থাকে ৪ লাখ টনের মতো। সারাবছরের জন্য প্রয়োজন হয় ১৮ লাখ টন চিনি, এর মধ্যে ৩ লাখ টনের চাহিদা থাকে কেবল রমজান মাসে। সারাবছর যেখানে ৫ লাখ টন মসুর ডাল লাগে, সেখানে রমজানে চাহিদা থাকে ৮০ হাজার টনের মতো। ডালের চাহিদা মেটাতে ৫০ শতাংশ আমদানি করতে হয়। বছরে ৮০ হাজার টন ছোলার প্রয়োজন হয় দেশে, যার ৮০ শতাংশই ব্যবহার হয় রমজান মাসে। এ সময় সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয় পেঁয়াজের। ২৫ লাখ টন বার্ষিক চাহিদার ৫ লাখ টনই ব্যয় হয় রমজান মাসে। তাই রমজান এলে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতা শুরু হয়। পণ্যমূল্য বাড়াতে তারা কারসাজির আশ্রয় নেয়। এতে করে বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে।

ব্যবসায়ীরা প্রতিবছরই নানা কৌশলে আগেই দাম বাড়িয়ে দেন সংঘবদ্ধভাবে। ব্যক্তিবিশেষের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার সুযোগ নেই। আর রমজানে দাম বৃদ্ধি না পাওয়ায় অভিযোগ করারও সুযোগ থাকে না। বরং ব্যবসায়ীরাই বলেন ‘দাম বাড়েনি’। বাজার দাম তদারকি ও নিয়ন্ত্রণে সরকারের সংস্থাগুলোও বাজার যাচাই করে জানায়, রমজানে নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। কিন্তু রমজানের প্রাক্কালে পণ্যের দাম যে পরিমাণ বাড়ানো হয়, পরে তা আর কমানো হয় না। সাধারণ ভোক্তাদের অভিযোগ, সরকার নিত্যপণ্যের বাজারের মূল দায়িত্ব ব্যবসায়ীদের ওপর ছেড়ে দিয়েছে, ফলে বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা দৃশ্যমান নেই। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট কোন কর্তৃপক্ষও সাধারন মানুষের এই আকাংখিত নিত্যপণ্যের বাজার তদারকির ন্যূনতম কোনো দায়িত্ব পালনে আগ্রহ নেই। যার কারণে বাজারে এক লাফে জিনিসের দাম দ্বিগুণ হারে বেড়েই চলেছে। পুরো বছর জুড়েই দফায় দফায় চক্রাকারে একেক বার একেকটি পণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের দুয়েকজন কর্মকর্তা নিয়মিত বাজার তদারকি করেও এই নিত্যপণ্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতির লাগাম টানতে পারছেন না।

ভোক্তা ও বাজার বিশ্লেষকদের মতে, ‘কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্সে (সিপিআই) দেখা যায়, খাদ্যে মূল্যস্ফীতি সার্বিক মূল্যস্ফীতির চেয়ে বেশি। তার অর্থ হলো–সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা, বিশেষত শ্রমজীবী ও সীমিত আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে দেখা যায়, গত ডিসেম্বর শেষে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৬ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। করোনার কারণে সংকটে থাকা ব্যবসা-বাণিজ্যসহ পুরো অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। অর্থাৎ ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে একজন মানুষ ১০০ টাকায় যত জিনিসপত্র কিনেছেন, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ওই টাকা দিয়ে সেই জিনিসপত্র পাচ্ছে না। জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় ওই একই পণ্য কিনতে ১০৬ টাকা ৫ পয়সা খরচ করতে হবে। ৬ টাকা ৫ পয়সা হলো মূল্যস্ফীতি। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য মতে, দেশের বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্যের দাম প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে। চাল, ডাল, তেল থেকে শুরু করে সবজিসহ সবকিছুর দামই বাড়তি। এ অবস্থা শুধু ঢাকা শহরেই নয়, গ্রামেও একই চিত্র। প্রতিনিয়ত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। একই সঙ্গে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে পরিবহন ব্যয়। ফলে মূল্যস্ফীতির চাপ অব্যাহতভাবে বাড়ছে।

মহামারি করোনায় এলোমেলো হয়ে পড়েছে মানুষের জীবন। করোনার নতুন ধরন অমিক্রনের কারণে এই অভিঘাত আরও বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অমিক্রনের প্রভাবে বিভিন্ন দেশে জারি করা হয়েছে নানা বিধিনিষেধ। বাংলাদেশেও এর প্রভাব বাড়ছে। সঙ্কুচিত হয়ে পড়েছে কর্মক্ষেত্রে। চাকরি হারিয়ে অনেকে বেকার হয়ে পড়েছে। এর বাইরে নিত্যপণ্যের মূল্য প্রান্তিক ও সীমিত আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। মূল্যস্ফীতিও বেশ ঊর্ধ্বমুখী। মূল্যস্ফীতি বাড়া মানেই প্রান্তিক ও সীমিত আয়ের মানুষের ভোগান্তি বৃদ্ধি। এতে খাদ্য উৎপাদন, বণ্টন, সরবরাহ ও মূল্যস্তরে পড়তে পারে নেতিবাচক প্রভাব; যা খাদ্যমূল্যের ওপর অস্বস্তিকর প্রভাব ফেলবে। বাংলাদেশে চলমান শীতে সবজির ভরা মৌসুমেও তরিতরকারির দাম সাধারণ ক্রেতার নাগালের বাইরে। চাল, ডাল, তেল, আটা, চিনিসহ নিত্যপণ্যের দামও চড়া প্রায় দুবছর ধরে। এ অবস্থায় প্রান্তিক ও সীমিত আয়ের মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।

অবশ্য ব্যবসায়ীরা নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক বাড়ালেও ভোক্তাদেরও দায় কোনো অংশে কম নয়। সামর্থ্যবান ভোক্তাদের অনেকেই রোজার আগেই পরিবারের বাজার সেরে ফেলেন। রমজান সংযম ও আত্মশুদ্ধির মাস। পবিত্র এই মাসে ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা সিয়াম সাধনার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভের চেষ্টা করেন। ধর্মপ্রাণ ব্যবসায়ীরা ধর্মকর্ম নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও অনেকে ধর্মের অনুশাসন না মেনে পণ্য মজুদ করেন। তাই রোজার মাসে যেন নিত্যপণ্যের বাজারে চাহিদা ও সরবরাহে সংকট তৈরী না হয়, সেজন্য একসঙ্গে বাজার না করে সপ্তাহের বাজার করা, দরিদ্রদের মাঝে ইফতারী হিসাবে সমাগ্রী বিতরণের পরিবর্তে নগদ অর্থ বিরতনের আহবান জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।

বাজারব্যবস্থার স্বাভাবিক গতি যোগসাজশের মাধ্যমে বাধাগ্রস্ত করা হলে অবশ্যই ভোক্তাস্বার্থ ক্ষতিগ্রস্থ হবে। যা দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। ভোক্তা ও বাজার বিশ্লেষকদের মতে সরকার ও বানিজ্য মন্ত্রনালয় নিত্যপণ্যের বাজারের দায়িত্ব পুরোটাই ব্যবসায়ীদের হাতে ছেড়ে দিয়েছে। সরকারের এ ব্যবসায়ী তোষনণীতির কারনে ব্যবসায়ীরা সুন্তোষ্ঠ হলেও সাধারন মানুষের মুখে হাসি নেই। উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পর্যায়ে থাকলে কভিডকালে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা যে কমেছে, তা মানতে হবে। গত কয়েক বছরে সরকারের পদক্ষেপ সত্ত্বেও নিত্যপণ্যের অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি কেন থামানো যায়নি, তা খতিয়ে দেখা উচিত। সে কারণে ঢাকা শহরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ১৪টি টিম বাজার তদারকি করার কথা থাকলেও বাজারে ভোক্তারা এই টিমের দেখা পান না। জেলা শহরে জেলা প্রশাসনের বাজার তদারকি টিম মাঠে থাকার কথা। অথচ অনেকেই ফটো সেশনের মতো বাজার তদারকি করে সরকারের কাছে প্রতিবেদন দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এই তদারকি কোনো প্রভাব ফেলতে পারছে না। উদার বাণিজ্য নীতির সুযোগ নিয়ে স্বার্থান্বেষী কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী বা প্রতিষ্ঠান বাজারের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত করার অপচেষ্টা করছে।

ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে মুনাফা করতেই হবে; কিন্তু মুনাফা অর্জনের নামে অনৈতিক কর্মকাণ্ড সমর্থনযোগ্য না। এ অবস্থায় পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে বাজার তদারকি বাড়ানো; বিকল্প ব্যবস্থাপনায় চাল, আটা, চিনি, পেঁয়াজসহ নিত্যপণ্য প্রান্তিক, শ্রমজীবী ও সীমিত আয়ের মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য একটি ব্যবস্থাপনা কাঠামো তৈরি; প্রয়োজনে প্রান্তিক ও শ্রমজীবিদের জন্য রেশনিং কার্ড প্রবর্তন করা যেতে পারে। বিশেষ করে করোনাকালে যাদের আয় কমে গেছে, তাদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর কর্মসূচির আওতা বাড়াতে হবে। গ্রাম ও শহরাঞ্চলের প্রান্তিক ও শ্রমজীবি মানুষ যাতে খেয়ে-পরে বাঁচতে পারে, সেজন্য নিত্যপণ্য্যের দাম যেমন স্থিতিশীল রাখতে হবে, তেমনি তাদের আয় বাড়ানো ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির ওপর জোর দিতে হবে। আমদানিকারক, উৎপাদক, পরিবেশক, সরবরাহকারী, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী পর্যায়ে সমন্বিত বাজার তদারকি নিশ্চিত, কার্যকর টিসিবি, সর্বোপরি ট্যারিফ কমিশন, কৃষি, খাদ্য, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং রাজস্ব বোর্ডের মধ্যে কার্যকর সমন্বয় নিশ্চিত করতে হবে। আসন্ন রমজানে যাতে নিত্যপণ্যসহ সব ধরনের পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে সরকারকে এখন থেকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

লেখক: ভাইস প্রেসিডেন্ট, কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)

এসএ/

Header Ad
Header Ad

পোশাক নিয়ে ঢাবি ছাত্রীকে হেনস্তা, কর্মচারী মোস্তফার জামিন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সহকারী বাইন্ডার মোস্তফা আসিফকে জামিন দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) তাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক মো. তৌফিক হাসান।

আসামি পক্ষের আইনজীবী জামিন চেয়ে শুনানি করেন। রাষ্ট্র পক্ষে জামিনের বিরোধিতা করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেরা মাহবুব তার জামিন মঞ্জুর করেন।

জানা যায়, গতকাল বুধবার শাহবাগ থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে হেনস্তা করেছেন মোস্তফা আসিফ– এমন অভিযোগ করে ভুক্তভোগী ঘটনার বিবরণ দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেন। হেনস্তার শিকার ওই শিক্ষার্থী প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করেন। পরে শাহবাগ থানায় মামলা করেন তিনি।

মামলার অভিযোগে বাদী উল্লেখ করেন, ৫ মার্চ দুপুর দেড়টার দিকে জাতীয় যাদুঘরের সামনে থেকে তিনি ও তার বন্ধু পায়ে হেঁটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে যাওয়ার পথে রাজু ভাস্কর্যের সামনে পৌঁছালে মোস্তফা আসিফ বাদীর সামনে এসে তিনি পর্দা করেননি কেন বলে প্রশ্ন করেন। তার ওড়না ঠিক নেই কেন বলাসহ আরও কুরুচিপূণ কথা বলে তাকে যৌনপীড়ন করেন। ওই ছাত্রী তখন প্রক্টরকে কল দিতে চাইলে আসামি দৌড়ে পালিয়ে যান।

Header Ad
Header Ad

পুলিশ আইন প্রয়োগ করতে গিয়ে মানুষের আক্রমণের শিকার হচ্ছে: আইজিপি

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। ছবি: সংগৃহীত

ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারের কারণে পুলিশ আইন প্রয়োগ করতে গিয়ে মানুষের আক্রমণের শিকার হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। তিনি বলেছেন, ৫ আগস্ট–পরবর্তী সময়ে অপরাধী পুলিশ সদস্যদের বিচারের আওতায় এনে ও সরিয়ে দিয়ে পুলিশ বাহিনীকে স্বগৌরবে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।

বৃহস্পতিবার সকালে রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আইজিপি। কর্মশালাটি ‘দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানবাধিকার ও পরিবেশের গুরুত্বসহ আইন প্রয়োগ’ শীর্ষক দিনব্যাপী আয়োজিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এছাড়া অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, "নাগরিক সমাজের প্রতি আমার অনুরোধ, পুলিশকে আপনারা আবার কাছে টেনে নিন। পুলিশকে আইন প্রয়োগে সহায়তা করুন। বর্তমানে বিভিন্ন জায়গায় দেখা যাচ্ছে, পুলিশ আইন প্রয়োগ করতে গিয়ে মানুষের আক্রমণের শিকার হচ্ছে। এটি আবেগের বিষয়। হয়তো অতীতের স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়, যখন পুলিশ অন্যায়ভাবে জনগণের ওপর আক্রমণ চালাতো, অন্যায় আচরণ করতো এবং গণবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল।"

পুলিশকে আবার মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার প্রচেষ্টা চলছে উল্লেখ করে বাহারুল আলম বলেন, "৫ আগস্টের পর আমরা চেষ্টা করছি, যারা পুলিশের অপরাধের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিচারের আওতায় এনে ও অপসারণের মাধ্যমে বাহিনীকে আবার স্বগৌরবে ফিরিয়ে আনার। পুলিশকে কর্মক্ষম ও জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য করা এখন আমাদের অন্যতম লক্ষ্য।"

আইজিপি আরও বলেন, "স্বৈরাচারী সরকার ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে জনগণের ওপর অত্যাচার চালিয়েছে। এক হাজার শহীদ ও কয়েক সহস্র আহত ছাত্র-জনতা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, ৫ আগস্টের আগে ১৫ বছর আমরা কীভাবে অসহনীয় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে কাটিয়েছি।"

তিনি বলেন, "জুলাই অভ্যুত্থানের মামলাগুলো সঠিক তদন্ত ও বিচারের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে হবে। যদি সুষ্ঠু বিচার না হয় এবং মানুষ যদি ন্যায়বিচার না পায়, তাহলে জাতি আমাদের ক্ষমা করবে না। এ জন্য বিচারক, সরকারি কৌঁসুলি, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।"

কর্মশালায় রংপুর বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার শহিদুল ইসলাম, রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মজিদ আলীসহ আট জেলার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা ও দায়রা জজ, ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক, সরকারি কৌঁসুলি ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা (ওসি) উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

২১ কোটি টাকা ঘুষ গ্রহণের মামলায় জামিন পেলেন লুৎফুজ্জামান বাবর

বিএনপি নেতা লুৎফুজ্জামান বাবর। ছবি: সংগৃহীত

ঘুষ গ্রহণের মামলায় জামিন পেয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপি নেতা লুৎফুজ্জামান বাবর। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) ঢাকার বিশেষ জজ-৩ আদালতের বিচারক মো. আবু তাহের এ আদেশ দেন।

মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও লুৎফুজ্জামান বাবরসহ আটজনের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য আগামী ১৮ মার্চ দিন ধার্য করেছেন আদালত।

বসুন্ধরা গ্রুপের পরিচালক সাব্বির হত্যা মামলার আসামি সাফিয়াত সোবাহান সানভীরকে দায়মুক্তি দেয়ার উদ্দেশ্যে ২১ কোটি টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে ২০০৭ সালে রাজধানীর রমনা থানায় মামলাটি করা হয়।

মামলার অপার আসামিরা হলেন: তারেক রহমানের তৎকালীন এপিএস মিয়া নুর উদ্দিন অপু, কাজী সালিমুল হক কামাল, আহমেদ আকবর সোবহান, সাফিয়াত সোবহান, সাদাত সোবহান ও আবু সুফিয়ান।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পোশাক নিয়ে ঢাবি ছাত্রীকে হেনস্তা, কর্মচারী মোস্তফার জামিন
পুলিশ আইন প্রয়োগ করতে গিয়ে মানুষের আক্রমণের শিকার হচ্ছে: আইজিপি
২১ কোটি টাকা ঘুষ গ্রহণের মামলায় জামিন পেলেন লুৎফুজ্জামান বাবর
লন্ডনে জয়শঙ্করের ওপর হামলার চেষ্টা, ছেঁড়া হলো ভারতের পতাকা!
ভাষানটেকে বস্তিতে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে
রাষ্ট্র নাকি ব্যবসায়ী কার শক্তি বেশি দেখতে চান চট্টগ্রামের ডিসি
আ.লীগ নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, তারাই সিদ্ধান্ত নেবে: ড. ইউনূস
জাবিতে ‘হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের’ পরিচয়ধারী এক ভুয়া শিক্ষার্থী আটক
ভারতের পরবর্তী টার্গেট পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর
মিয়ানমার থেকে ফিরলেন ৫৬ বাংলাদেশি জেলে
রোজাদারের জন্য যেসব কাজ মাকরুহ
রাজধানীর ভাষানটেকে বস্তিতে আগুন
সাবেক এমপি এম এ মালেক গ্রেপ্তার  
৭ বছরের দণ্ড থেকে খালাস পেলেন তারেক রহমান-মামুন  
বসুন্ধরা এলাকায় হামলা নিয়ে যা বললেন সারজিস আলম  
ইসরায়েলি পার্লামেন্টে ধস্তাধস্তি, দুই জন আহত  
ওয়ানডে থেকে অবসরের ঘোষণা মুশফিকের
অবৈধ বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র  
প্রকাশ্যে ধুমপান নিষিদ্ধের দাবিতে রাজধানীতে নারীদের মশাল মিছিল  
সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী শেখ মইনউদ্দিন