পুলিশ আইন প্রয়োগ করতে গিয়ে মানুষের আক্রমণের শিকার হচ্ছে: আইজিপি

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। ছবি: সংগৃহীত
ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারের কারণে পুলিশ আইন প্রয়োগ করতে গিয়ে মানুষের আক্রমণের শিকার হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। তিনি বলেছেন, ৫ আগস্ট–পরবর্তী সময়ে অপরাধী পুলিশ সদস্যদের বিচারের আওতায় এনে ও সরিয়ে দিয়ে পুলিশ বাহিনীকে স্বগৌরবে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।
বৃহস্পতিবার সকালে রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আইজিপি। কর্মশালাটি ‘দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানবাধিকার ও পরিবেশের গুরুত্বসহ আইন প্রয়োগ’ শীর্ষক দিনব্যাপী আয়োজিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এছাড়া অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, "নাগরিক সমাজের প্রতি আমার অনুরোধ, পুলিশকে আপনারা আবার কাছে টেনে নিন। পুলিশকে আইন প্রয়োগে সহায়তা করুন। বর্তমানে বিভিন্ন জায়গায় দেখা যাচ্ছে, পুলিশ আইন প্রয়োগ করতে গিয়ে মানুষের আক্রমণের শিকার হচ্ছে। এটি আবেগের বিষয়। হয়তো অতীতের স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়, যখন পুলিশ অন্যায়ভাবে জনগণের ওপর আক্রমণ চালাতো, অন্যায় আচরণ করতো এবং গণবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল।"
পুলিশকে আবার মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার প্রচেষ্টা চলছে উল্লেখ করে বাহারুল আলম বলেন, "৫ আগস্টের পর আমরা চেষ্টা করছি, যারা পুলিশের অপরাধের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিচারের আওতায় এনে ও অপসারণের মাধ্যমে বাহিনীকে আবার স্বগৌরবে ফিরিয়ে আনার। পুলিশকে কর্মক্ষম ও জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য করা এখন আমাদের অন্যতম লক্ষ্য।"
আইজিপি আরও বলেন, "স্বৈরাচারী সরকার ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে জনগণের ওপর অত্যাচার চালিয়েছে। এক হাজার শহীদ ও কয়েক সহস্র আহত ছাত্র-জনতা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, ৫ আগস্টের আগে ১৫ বছর আমরা কীভাবে অসহনীয় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে কাটিয়েছি।"
তিনি বলেন, "জুলাই অভ্যুত্থানের মামলাগুলো সঠিক তদন্ত ও বিচারের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে হবে। যদি সুষ্ঠু বিচার না হয় এবং মানুষ যদি ন্যায়বিচার না পায়, তাহলে জাতি আমাদের ক্ষমা করবে না। এ জন্য বিচারক, সরকারি কৌঁসুলি, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।"
কর্মশালায় রংপুর বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার শহিদুল ইসলাম, রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মজিদ আলীসহ আট জেলার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা ও দায়রা জজ, ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক, সরকারি কৌঁসুলি ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা (ওসি) উপস্থিত ছিলেন।
