বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৩ আশ্বিন ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

রেনু থেকে আমাদের বঙ্গমাতা

রেনু গোলাপ গঞ্জের টুঙ্গি পাড়ায় ১৯৩০ সনের ৮ আগস্ট জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি তিন বছর বয়সে বাবাকে হারান, মাকে হারান পাঁচ বছর বয়সে। তিনি দাদার আদরে বড় হয়েছেন এবং দাদা তার দুই নাতনিকে সম্পত্তি লিখে দিয়ে যান। বঙ্গবন্ধুর মাতা ও পিতা বাবা-মা হারা পুত্রবধু রেনুকে তাদের কাছে নিয়ে এনে পরম আদর-যত্নে বড় করতে থাকেন। তাদের স্নেহ-মমতায় রেনুকে পিতা-মাতার অভাব তেমন অনুভব করতে হয়নি। সকলের প্রিয় রেনু বঙ্গবন্ধুর ভাই-বোনদের সঙ্গে একই পরিবারিক আদর্শ বেড়ে উঠেন।

রেনুর শ্বশুর-শাশুড়ি তাদের ছেলে সম্পর্কে জানতেন। তার রাজনৈতিক আদর্শ, দেশপ্রেমের বিষয়টি তারা বুঝতেন। তিনি যে একদিন বাংলার কাণ্ডারি হবেন, এতে তাদের কারোরই কোনো সন্দেহ ছিল না। এমন একজন ব্যক্তির জন্য যে উপযুক্ত জীবনসঙ্গী সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, সেটিও তারা ভালোভাবেই বুঝেছিলেন। আর সে লক্ষ্য নিয়েই বঙ্গবন্ধুর পিতা-মাতা পুত্রবধূ রেনুকে শৈশব থেকেই বঙ্গবন্ধুর মতো দেশপ্রেমিক নেতার উপযুক্ত সঙ্গী হিসেবে গড়ে তোলেন। রেনুও তার পরবর্তী জীবনে সে যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন।

বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট বেবী মওদুদ ‘বঙ্গবন্ধুর জীবনে মাইলস্টোনে ফজিলাতুনেসা রেনু’ নিবন্ধে উল্লেখ করেছেন, বঙ্গবন্ধুর জীবনসঙ্গী ফজিলাতুন নেসা রেনু শৈশবে বাবা-মা হারালে বঙ্গবন্ধুর মা তাকে পুত্রবধূ করে নিজের কাছে রেখে শিক্ষা-দীক্ষায় উপযুক্ত করে গড়ে তোলেন। গ্রামে জন্ম, গ্রামীণ জীবনধারায় লালিত-পালিত হলেও দিনে দিনে রেনু একজন আদর্শ ও মমতাময়ী নারীর প্রতিকৃতি হয়ে ওঠেন। শৈশব থেকেই বঙ্গবন্ধুর প্রতি তার ভালোবাসা, শ্রদ্ধা- আস্থা এতটাই গভীর ছিল যে, তিনি নীরবে নিভৃতে বঙ্গবন্ধুর চিন্তা- ভাবনার অংশীদার হয়ে উঠেছিলেন। পরম প্রিয় ভালোবাসার এই জীবনসঙ্গীকে শেখ মুজিব তার জীবনের সব খুঁটিনাটি কথা শোনাতেন। তার রাজনৈতিক দর্শন ও স্বপ্নের বিশ্বস্ত সঙ্গী হিসেবে প্রস্তুত করে তোলেন। রেনু ছিলেন অসীম ধৈর্য, উপস্থিত জ্ঞানসম্পন্ন এক প্রেমিময়ী স্ত্রী ও মমতাময়ী জননী। পুত্রবধূ হিসেবে রেনু তার শ্বশুর-শাশুড়ির কাছ থেকে জীবন চলার এই পাঠকে অত্যন্ত যোগ্যতার সঙ্গে রপ্ত করতে পেরেছিলেন তার স্বভাবাজাত বুদ্ধিমত্তা দ্বারা।

বেবী মওদুদ আরও লিখেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্য, জন্মদাতা পিতা-মাতা স্নেহ, যত্ন ও পরিচর্যা যেমন ছিল, তেমনি তাদের পরে তার জীবনসঙ্গী রেনুর ছিল সজাগ দৃষ্টি। তিনি বঙ্গবন্ধুর মিশন ও ভিশনকে হৃদয় দিয়ে ধারণ করেছিলেন।

বঙ্গমাতা অত্যন্ত ধৈর্যশীল ছিলেন। ছোট্ট রেনুর বিয়ে হলে, বঙ্গবন্ধুর পিতা-মাতা রেনুকে আদর-যত্নে বেড়ে ওঠায় সাহায্য করেন এটি যেমন সত্য, তেমনি রেনু তার দাম্পত্য জীবনে স্বামীকে একটানা কাছে পাননি, এটিও সত্য। স্বামীকে কাছে না পাওয়ার ধৈর্যের পরীক্ষায়ও তিনি উর্ত্তীণ হয়েছেন।

কারাগারে থাকাকালীন অবস্থায় বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করার জন্য বঙ্গমাতা সন্তানদের নিয়ে কারাগারে যেতেন। কারাগারে সাক্ষাতের সময় অতিক্রান্ত হলেও অবুঝ সন্তানরা বাবাকে ছেড়ে ফিরতে চাইত না। বিশেষ করে শেখ রাসেলের বায়না এবং তাকে বুঝিয়ে বাসায় নিয়ে আসাটা বঙ্গমাতার জন্য যেমন ছিল কষ্টের, তেমনি তারা চলে যাওয়ার পর জেলখানার ছোট্ট একটি কক্ষে রাতযাপন ছিল বঙ্গবন্ধুর জন্য আরো বেদনার। জাতির পিতা এবং বঙ্গমাতা দেশের প্রতি, দেশের মানুষের জন্য যে ত্যাগ করেছেন তার তুলনা তারা নিজেরাই। ইতিহাস খুঁজে দ্বিতীয় পাওয়া যাবে না।

বঙ্গবন্ধু ১৭ বার কারাগারে যান। এই সময়ে দীর্ঘ ৩০৫৩ দিন তাকে কারাগারে থাকতে হয়। নাসিমা বেগম, ‘রেনু থেকে বঙ্গমাতা’। অথচ বঙ্গমাতা রেনুর জীবনে স্বামীকে কাছে না পাওয়ার যে দীর্ঘ সময় কারাগারে থামতে হয়। আমরা দেখতে পেলাম এবং এটি মেনে নিয়ে আমরণ বঙ্গবন্ধুর পাশে ছায়ার মতো থেকে তিনি যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তার কোনো তুলনা নেই। তিনি স্বামীর রাজনৈতিক কর্মকান্ডের কখনো কোনো বিরোধিতা তো করেইনি; বরং তার অনুপস্থিতিতে সংসারের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি স্বামীর খাবার নিয়মিত জেলখানায় পাঠিয়েছেন। কতটা ধৈর্যশীল হলে নিজের চাওয়া-পাওয়া তুচ্ছ করে এ ধরনের সহযোগিতা করা সম্ভব, তা সহজেই অনুমেয়।

বঙ্গমাতা বঙ্গবন্ধুর সকল কাজের প্রেরণাদাত্রী ছিলেন। তিনি বঙ্গবন্ধুকে সাহস দিয়ে, শক্তি দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা দিতেন। তিনি কখনোই বঙ্গবন্ধুকে পেছনে টেনে ধরেননি। তার জীবনে শত যন্ত্রণার ভেতরও ভেঙে পড়েননি। আমরা জানি, বঙ্গমাতা রেনু এবং বঙ্গবন্ধু মুজিবের শৈশব কেটেছে একসঙ্গে। বড় হয়েছেন একই পরিবারে। তাদের স্বভাব ও চরিত্র প্রায় একই। অভিন্ন সামাজিক মূল্যবোধ, মানবিক গুন, শুভবুদ্ধি ও সামাজিক কল্যাণে উদ্বুুদ্ধ ছিলেন দুজনেই। তারা দুজনেই মানুষকে ভালোবেসে অপরের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে সচেষ্টা ছিলেন। মানুয়ের আপদে-বিপদে, রোগে-শোকে তাদের পাশে দাঁড়াতেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমনের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ এবং ‘কারাগারের রোজনামচা’ গ্রন্থ দুটির রচনা প্রসঙ্গে তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, ‘আমার মায়ের প্রেরণা ও অনুরোধে আব্বা লিখতে শুরু করেন। তিনি যতবার জেলে গেছেন আমার মা খাতা কিনে জেলে পৌঁছে দিতেন। আবার যখন মুক্তি পেতেন, তখন খাতাগুলি সংগ্রহ করে মা নিজের কাছে সযত্নে রেখে দিতেন। তার এই দূরদর্শী চিন্তা যদি না থাকতো তাহলে এই মূল্যবান লেখা আমরা জাতির কাছে তুলে দিতে পারতাম না।’

কারাগারের রোজনামচা’র ভূমিকা লিখতে গিয়ে কন্যা শেখ হাসিনা উল্লেখ করেছেন ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেবার সঙ্গে সঙ্গে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাকে ৩২ নম্বর ধানমন্ডির বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানে নিয়ে যায় এবং কারাগরে বন্দি করে রাখে। এরই একটি পর্যায়ে তারা এক মাসে ১৯ বার জায়গা বদল করেও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাত থেকে রেহাই পাননি, তারা ধরা পড়ে যান এবং তাদের ধানমন্ডি ১৮ নম্বর থেকে সড়কে (বর্তমানে ৯/এ ২৬ নম্বর বাড়ি) একটি একতলা বাড়িতে বন্দি করে রাখা হয়।

রাজনীতি বঙ্গবন্ধুর জীবনের সঙ্গ এমনভাবে জড়িয়েছিল যে, বারবার তাকে কারাবরণ করতে হতো। আর এ সময় বঙ্গমাতা অত্যন্ত শক্তহাতে দলের হাল ধরতেন। সংসার পরিচালনার পাশাপাশি তিনি দলের নোতাকর্মীদের সঙ্গে যোাগাযোগ রাখা শুরু করতেন। তিনি ধীরস্থির এবং প্রচণ্ড মানসিক শক্তির অধিকারী ছিলেন। বিপদে-আপদে, দুঃখ-বেদনায় কখনো ভেঙে পড়েননি। বরং সেখান থেকে কীভাবে বের হয়ে আসা যায় তার সঠিক পথ তিনি খুঁজে বের করতেন।
বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতা তোফায়েল আহমদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে অনেক সময়ে দলের নেতাকর্মীরাও গ্রেপ্তার হতেন। যখন মাঠে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো কেউ থাকতো না, বঙ্গমাতা দলের সারথির ভূমিকায় থাকতেন। কারাগারে যতবার তিনি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করেছেনম ততবারই তিনি পরিবার-পরিজন নিয়ে কথা বলার আগে দলের সংবাদ পরিবেশন করেছেন। আর বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে প্রাপ্ত বার্তা তিনি গোপনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিকট তা পৌঁছে দিতেন। তিনি নিজের ভালো-মন্দের কথা চিন্তা করেন নাই। চিন্তা করেছেন দেশ, জাতিকে নিয়ে। তিনি চিন্তা করেছেন দল, আওয়ামী লীগ- ছাত্রলীগকে নিয়ে। এভাবে তিনি রেনু থেকে হয়ে যান সবার বঙ্গমাতা।

তিনি ছিলেন কোমলে-কঠোর এক শুদ্ধ নারী। প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সকল করে সকল প্রতিবন্ধকতাকে অতিক্রম করে শুধু এগিয়ে গিয়েছেন। অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেননি। চারিত্রিক দৃঢ়তা ও সাহস নিয়ে সকল লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে থেকে বাংলা ও বাঙালির আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর সহযোদ্ধা হিসেবে কাজ করেছেন। রাজনৈতিক পরিবারের মধ্যে থেকে ভালোবেসেছেন সংসার-জীবন। জীবনের আড়ালে লুকিয়ে থাকা দুঃখ-কষ্ট সয়ে জীবন সমর্পিত করেছেন দেশ, মাটি ও মানুষের জন্য। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা, অসামান্য আত্মত্যাগ ও অসাধারণ অবদানের জন্যে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯৮ সালে শহিদ শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবকে স্বাধীনতা পুরস্কার (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়।

বঙ্গমাতা একদিন ড. নীলিমা ইব্রাহিমকে বললেন, “নিজের ভাইকে বানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু আর আমাকে বঙ্গমাতা, বেশ আমি বুঝি ‘বঙ্গবান্ধবী’ হতে পারি না। এতই কী বুড়ো হয়েছি।” তবে রেনু কৌতুক করে যা-ই বলুন না কেন, তিনি আমাদের বঙ্গমাতা থেকে গিয়েছেন এবং থাকবেনও।
বঙ্গবন্ধুর স্বীকারোক্তিতেই আছে। ১৯৭২- এর ২ মার্চ আজিমপুর গার্লস স্কুলে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেছিলেন-

“আমি আমার জীবনে দেখেছি আমি বুলেটের সামনে এগিয়ে গেলেও আমার স্ত্রী কোনোদিন বাধা দেননি। আমি দেখেছি ১০/১১ বছর জেলখানায় থাকলেও তিনি কোনোদিন মুখ খুলে প্রতিবাদ করেননি। যদি তিনি তা করতেন তাহলে আমি জীবনে অনেক বাধার মুখোমুখি হতাম। এমন অনেক সময় ছিল যখন আমি জেলে যাবার সময় আমার সন্তানদের জন্য একটি পয়সাও রেখে যেতে পারিনি। আমার নিরন্তর সংগ্রামী জীবনে তার প্রচুর অবদান আছে।”

বঙ্গবন্ধুর নিজের ভাষায় “রেনু আমার পাশে না থাকলে, আমার সব দুঃখ-কষ্ট অভাব অনটন, বারবার কারাবরণ, ছেলে মেয়ে নিয়ে অনিশ্চিত জীবনযাপন হাসিমুখে মেনে নিতে না পারলে আমি আজ বঙ্গবন্ধু হতে পারতাম না।”

রেনু তার জীবনের শেষ অগ্নিপরীক্ষা দিলেন ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ঘাতকের নির্মম বুলেট কেড়ে নিল বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। বেগম মুজিবকে ঘাতকরা বলল, আমাদের সাথে চলেন। তিনি বললেন, ‘তোমাদের সাথে কোথাও যাব না। তাকে মেরেছে, আমাকেও গুলি কর। আমি এক পা-ও নড়ব না।’ ঘাতকের হাতের বন্দুক গর্জে উঠল। বত্রিশ নম্বরের মেঝেতে লুটিয়ে পড়ল তার দেহে। তার শরীরের রক্ত গড়িয়ে গিয়ে মিশে যায় সিঁড়িতে পড়ে থাকা স্বামী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের রক্তের সাথে। আর সে রক্তের শ্রোতধারা গড়িয়ে মিশে যায় বাংলার মাটিতে।

যিনি বঙ্গবন্ধুর শৈশবের সঙ্গী থেকে জীবনসঙ্গী হয়েছেন। সবশেষে একই সাথে বঙ্গবন্ধুর সাথে মৃত্যুতে আলিঙ্গন করেন। ভাবলে বিস্ময় জাগে এক আটপৌরে সাধারণ চিরায়ত মাতৃরূপে যিনি হাজারো বাঙালি হৃদয়ের মণিকোঠায় স্থান করে আছেন। যতই দিন যাচ্ছে এই মহীয়সী নারীর প্রজ্ঞা এবং সাহসিকতার আলোর বিচ্ছুরণ ঘটছে। তেজস্বিনী অথচ চলনে বলনে এক সাধারণ গৃহবধূ। সেই গৃহবধূ রেনু আজ আমাদের বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব।

ড. মাহবুবা রহমান, সাবেক বিভাগীয় প্রধান, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, লালমাটিয়া সরকারি মহিলা কলেজ, ঢাকা।

এসএন

Header Ad

একসঙ্গে ফিরছিলেন বাসায়, গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ গেল স্ত্রীর

ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের মির্জাপু‌রে কর্মস্থল থেকে বাসায় যাওয়ার পথে শিউলি আক্তার (৪৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় তার স্বামী শরিফুল ইসলা‌ম আহত হয়েছেন। তিনি মির্জাপুর কুমু‌দিনী মে‌ডি‌কেল হাসপাতা‌লে ভ‌র্তি রয়েছেন।

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে মির্জাপুর থানার উপ-প‌রিদর্শক (এসআই) জহুরুল ইসলাম এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে মঙ্গলবার (১৭ সে‌প্টেম্বর) রাত ১১টার দি‌কে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়‌কের মির্জাপুর ক‌্যা‌ডেট ক‌লে‌জের সাম‌নে এ ঘটনা ঘ‌টে। 

নিহত শিউলি আক্তারের বাড়ী চাঁদপুর। তিনি মির্জাপু‌রের স্কয়ার ফার্মা‌সিউটিক‌্যাল লি‌মি‌ডে‌টের প্রোডাক্টশন বিভা‌গের সহকা‌রী টিম লিডার এবং আহত তার স্বামী শ‌রিফুল একই কোম্পানীর ইঞ্জি‌নিয়ারিং বিভা‌গে কর্মরত ছিলেন। 

মির্জাপুর থানার উপ-প‌রিদর্শক (এসআই) জহুরুল ইসলাম জানান, রা‌তে তারা কর্মস্থল থে‌কে মোটরসাইকেল‌ যো‌গে বাসায় যা‌চ্ছি‌লেন। সড়কের মির্জাপুর ক‌্যা‌ডেট ক‌লে‌জের সাম‌নে পৌঁছলে অজ্ঞাত প‌রিবহন মোটরসাইকেল‌টি‌কে ধাক্কা দি‌লে ঘটনাস্থ‌লেই শিউলি মারা যায়। এতে গুরুত্বর আহত হয় তার স্বামী। পরে তা‌কে উদ্ধার ক‌রে মির্জাপুর কুমু‌দিনী হাসপাতা‌লে ভ‌র্তি করা হ‌য়ে‌ছে। 

যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটক যুবদল নেতার মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহে যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটকের পর সাইদুল ইসলাম (৪০) নামে এক যুবদল নেতার মৃত্যু হয়েছে। সে মহানগর যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার পর নগরীর গোলপুকুর পাড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। নিহত সাইদুল ইসলাম নগরীর গোলপুকুর পাড় এলাকার বাসিন্দা আব্দুস ছালামের ছেলে।

সূত্র জানায়, গত ৫ আগস্টের পর সাইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে জমি দখল, বালুর ঘাট দখল, স্থানীয় ব‍্যবসায়িদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি, অস্ত্র প্রদর্শনসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ উঠে। এসব ঘটনায় সম্প্রতি যৌথ বাহিনীর কাছে একাধিক অভিযোগ দায়ের হলে সোমবার দিবাগত রাতে সাইদুল ইসলামকে আটকে অভিযান চালায় যৌথ বাহিনীর একটি দল। এতে আটক হয় সাইদুল। পরে রাত দেড়টার দিকে সাইদুল ইসলামকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব‍্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে।

হাসপাতালের উপপরিচালক জাকিউল ইসলাম জানান, রাত ১টার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সাইদুরসহ বেশ কয়েকজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। এর মধ্যে সাইদুল মারা যায়। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে নিয়ে যায় যৌথ বাহিনী।

তবে এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোন সদস্য মন্তব্য করতে রাজি হননি। একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে নিহতের সুরতহাল সম্পন্ন করা হয়। পরে মঙ্গলবার বিকেলে স্বজনদের কাছে মরদেহ বুঝিয়ে দেয়া হয়। রাতে জানাজার শেষে নিহত সাইদুলের দাফন সম্পন্ন হয়।

এ ঘটনায় কোতোয়ালী মডেল থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে পরিবারের কোন সদস্যও মন্তব্য করতে রাজি হননি।

ভারতে এক কেজির ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৩০০০ রুপিতে

ফাইল ছবি

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ইলিশ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় ইলিশ নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে ভারতীয়রা। ওপার বাংলার কলকাতার বাজারে আকাশচুম্বী দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। এতে করে ব্যাপক চাহিদা গিয়ে ভিন্ন উপায় অবলম্বন করতে হচ্ছে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের।

ভারতের মাছ বিক্রেতারা কেউ কেউ অবৈধভাবে ইলিশ আমদানি করছেন অথবা সীমিত আকারে হিমায়িত মজুত করা ইলিশ আকাশচুম্বী দামে বিক্রি করছেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার রুপিতে। নিষেধাজ্ঞার আগে কলকাতা ও দিল্লিতে প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি হতো ১২০০ থেকে ১৫০০ রুপিতে।

এদিকে দিল্লির সিআর পার্ক মার্কেট-১ এর এক মাছবিক্রেতা জানান, তিনি এবং আরও অনেকে অবৈধভাবে ইলিশ এনে প্রতি কেজি তিন হাজার রুপিতে বিক্রি করছেন। তিনি বলেন, দুর্গা পূজা আসছে, আর বাঙালি ক্রেতারা ইলিশ চায়। আমাদের তাদের চাহিদা মেটাতে হবে।

কলকাতার বিখ্যাত গড়িয়াহাট বাজারের একজন পাইকারি মাছবিক্রেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, গোপন চ্যানেলে অবৈধভাবে মাছ ভারতে আসছে। এখন চাহিদার কারণে দাম একটু বেশিই হয়েছে। উৎসব শেষ হলে এক মাস পরে দাম কমবে বলেও জানান তিনি।

সর্বশেষ সংবাদ

একসঙ্গে ফিরছিলেন বাসায়, গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ গেল স্ত্রীর
যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটক যুবদল নেতার মৃত্যু
ভারতে এক কেজির ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৩০০০ রুপিতে
সাবেক এমপি সেলিম আলতাফ গ্রেপ্তার
ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ারে কী কী করতে পারবে সেনাবাহিনী ?
দুই মাসের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা পেল সেনাবাহিনী
শুক্রবারও চলবে মেট্রোরেল, চালু হচ্ছে কাজীপাড়া স্টেশন
গতিশীল প্রবাসী আয় রিজার্ভের পতন ঠেকাচ্ছে: বাংলাদেশ ব্যাংক
রংধনু গ্রুপের পরিচালক মিজান গ্রেপ্তার
‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনে’ প্রধান উপদেষ্টার ১০০ কোটি টাকার অনুদান
অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না: তারেক রহমান
দুবাইফেরত যাত্রীর সাবান-শ্যাম্পু হাতিয়ে বরখাস্ত ৩ কর্মকর্তা
সাবেক রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলামের রিমান্ড স্থগিত
ভাইরাল হওয়া মালা খানের স্বামী ও দুই মেয়ে থাকেন কানাডায়, ঢাকায় আছে গরু-ছাগলের খামার!
পদত্যাগ করলেন ভারতের দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল
যে গ্রামের নাম শুনলেই ভেঙে যায় বিয়ে, মেলে না চাকরি!
এখনই রাজনৈতিক দল খোলার কোনো অভিপ্রায় আমাদের নেই : উপদেষ্টা আসিফ
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে ভারত আগ্রহী: জয়শঙ্কর
আইসিসির লেভেল ৩ কোচ হলেন মোহাম্মদ আশরাফুল
নেতাকর্মীদের প্রতি আওয়ামী লীগের দুই নির্দেশনা