সোমবার, ৬ মে ২০২৪ | ২৩ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

পল্লিতে রবির কিরণ

রবীন্দ্রনাথকে আমরা সাহিত্যপ্রেমীরা ভেবে থাকি তিনি একজন কবি, সাহিত্যিক, লেখক, একজন দার্শনিক। কিন্তু পল্লি উন্নয়ন গবেষক হিসেবে আমি মনে করি রবীন্দ্রনাথ শুধু এক জায়গায় স্থির নন, তিনি পল্লি উন্নয়নের এক আলোকবর্তিকার নাম। তিনি জমিদারের সন্তান হয়েও জমিদারির খোলস ভেঙে গড়ে তুলেছিলেন আরেক প্রজাদরদী গল্পের স্ক্রিপ্ট। চিরায়ত প্রথার খোলস ভেঙে মানবিক প্রজাহিতৈষী জমিদার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন সমাজের কাছে। রাশিয়ার চিঠিতে দেখা যায় রবীন্দ্রনাথ এক পল্লি নায়ক। তিনি লিখেছেন, ‘জমির স্বত্ব ন্যায়ত জমিদারের নয়, চাষির’।

নবীন জমিদার রবীন্দ্রনাথ সব শ্রেণির লোককেই আপন করে নিতে পেরেছেন খুব অল্প সময়ে। তাই তো তিনি বলেছিলেন, ‘আমি তোমাদেরই লোক।’ তিনি অনুভব করেছিলেন, ‘ভিক্ষা দিয়ে মনুষ্যত্ব জাগানো যায় না, তোমাদের ভালো একমাত্র তোমরা নিজেরাই করতে পার। যে কাজ পাঁচজনের উপকারে লাগবে, সে কাজ তোমরা একত্রে মিলেমিশে কর, ‘দশে মিলে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ।’

দরিদ্রদের স্বাবলম্বী করার জন্য পল্লি উন্নয়নের নানাবিধ কর্মসূচি হাতে নেন তিনি। তিনি জানতেন এজন্য দরকার কৃষি ব্যবস্থায় আধুনিকায়ন ও বিজ্ঞানভিত্তিক চাষাবাদ। শিলাইদহ কুঠিবাড়ির ৮০ বিঘা জমি দেশের প্রথম কৃষি গবেষণাগার হওয়ার অপেক্ষায় ছিল। ১৯০৯ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিদেশ থেকে ফিরে শুরু করলেন বৈজ্ঞানিক প্রথায় চাষ, সার, পাম্প ইত্যাদির ব্যবস্থা। রবীন্দ্রনাথ ক্যানিং এ ডেনিয়াল হ্যামিলটনের কৃষিক্ষেত্র ও গবেষণাগার দেখে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিলাইদহে প্রথম ১৯১০ সালে সেচ কাজে পাম্পের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার করেন। জমি উর্বরের জন্য জেলেদের কাছ থেকে নৌকা বোঝাই ইলিশ মাছ সস্তায় কিনে নিতেন। চুন দিয়ে মাটিতে চাপা দিয়ে জৈব সার তৈরি করতেন। ট্রাক্টর এর মাধ্যমে শিলাইদহে চাষাবাদ শুরু করেন- যা এনেছিলেন রাশিয়া থেকে।

রবীন্দ্রনাথ অনেকটা সময় পল্লি অঞ্চলে থেকেছেন, অবলোকন করেছেন গরিব প্রজা কৃষকের উপর ঋণের বোঝা। জমিদারি করতে গিয়ে স্পষ্ট দেখেছেন মহাজনের উচ্চ সুদের ঋণ গরিব কৃষককে কীভাবে আরও দরিদ্র করছে সর্বস্বান্ত করছে। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন ঋণ ব্যবস্থায় এখনই পরিবর্তন করতে না পারলে পল্লি উন্নয়নে তার সব উদ্যোগই পরাস্ত হবে।

গ্রামের দরিদ্র প্রজাদের কষ্ট লাঘব করতে ১৮৯৪ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিলাইদহে প্রথম কৃষি ব্যাংক স্থাপন করেন। এই ব্যাংক সম্পর্কে সুধীর সেন তার Rabindranath Tagore on Rural Reconstruction গ্রন্থে লিখেছেন-‘Shilaidaha in the district of Nadia was selected as the center of his experience. A part of nucleus for rural work was already available there. An Agriculture Bank had been founded (in 1893-94) to advance loans particularly seasonal to the cultivators on reasonable rates of interest.’

স্বল্প সুদে ঋণ দিয়ে রবীন্দ্রনাথ দরিদ্র কৃষকদের মহাজনদের হাত থেকে মুক্ত করার প্রয়াস চালিয়েছেন। ১৯১৩ সালে নোবেল বিজয়ের কিছু অর্থ তিনি অসহায় মানুষদের কল্যাণে ব্যাংকে বিনিয়োগ করেন। পিতার আদেশে ১৯৮৩ সাল থেকে প্রায়ই পূর্ববঙ্গে আসতেন জমিদারি রক্ষার কাজে। ঘুরতেন পদ্মায় এক বোট থেকে আরেক বোটে চড়ে। বিভিন্ন স্থানের জমিদারি স্বপরিবারে দেখার সুযোগ তিনি পেতেন। শিলাইদহের কুঠিবাড়ির আশেপাশে অসহায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কষ্ট দেখে তার বিবেক নাড়া দিত।

শিলাইদহ ছিল রবীন্দ্রনাথের এক অনুভবের জায়গা। তিনি কৃষকপ্রজা কফিলুদ্দীন-জামালুদ্দীন শেখের সঙ্গে ধানক্ষেতের পোকা মারার পদ্ধতি নিয়ে বহুসময় কথা বলেছেন। উন্নতমানের বীজ ও সার সময়মতো কৃষকেরা যাতে পায়, সে বিষয়েও খোঁজ রাখতেন। গ্রাম উন্নয়ন, সমবায়, দারিদ্র্য বিমোচন, প্রান্তিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সবকিছুই ছিল কুষ্টিয়ার কুঠিবাড়ি, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর, নওগাঁর পতিসর ও খুলনার দক্ষিণ ডিহি অঞ্চলকে কেন্দ্র করে।

রবীন্দ্রনাথের উন্নয়ন দর্শন পল্লি সমাজের জন্য এক উন্নত মডেল। তার উন্নয়ন দর্শন ছড়িয়ে দিতে হবে নিভৃত পল্লিতে। এগুলো নিয়ে আমাদের লেখক গবেষকদের আরও অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। সরকারের ঊধ্‌র্বতন নীতিনির্ধারকদের পর্যায়ে এ বিষয়ে নজর দিতে হবে। বাংলাদেশে পল্লি উন্নয়নে একের পর এক প্রকল্প গ্রহণ করা হয় কিন্তু অনেকটাই যুগোপযোগী বলে মনে হয় না। আজ থেকে শতবর্ষ আগে রবীন্দ্রনাথ উন্নয়নের এক আশ্চর্য রকমের যাদুমন্ত্র শিখিয়েছেন সে বিষয়ে মনোযোগ দেওয়া দরকার। আজ উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নে বিস্তর সমস্যা সামনে এসে ঘুরপাক খাচ্ছে। এর মূলে রয়েছে সিদ্ধান্ত গ্রহণে অপরিপক্কতা ও সমন্বয়ের অভাব।

পূর্ববাংলার নদী, প্রকৃতি, গ্রামবাংলার মানুষের মর্মচেতনা স্পষ্ট বুঝতে পেরেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। প্রমত্তা পদ্মা চষে বেড়িয়েছেন একসময়। বোটের জানালা দিয়ে নদীতীরের মানুষের জীবনযাত্রা দুর্ভোগ স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করেছেন। মহাজনদের কাছে হাঁটুগেড়ে বসে থাকা অসহায় দরিদ্র কৃষককে দেখেছেন। উঁচু নিচু ভেদাভেদ খণ্ডাতে চেয়েছেন । সমস্যা উত্তরণের জন্য নানান রকম সম্ভাবনাও আগলে ধরেছেন। সেই সময়ের ঘুণে ধরা সমাজকে জাগিয়েছেন শিক্ষার আলো জ্বালিয়ে। পল্লির মানুষের অজ্ঞতা, কুসংস্কার দূর করে আলোর মশাল তুলে ধরেছেন। দরিদ্র মানুষের মুক্তির বার্তা পল্লিউন্নয়নের আলোকবর্তিকা সামনে এনেছেন তিনি। পল্লিতে রবীর কিরণ আজও স্পষ্ট প্রতীয়মান।

ড. সারিয়া সুলতানা
পল্লি উন্নয়ন গবেষক ও সহকারী সম্পাদক, ঢাকাপ্রকাশ২৪ডটকম

এসএন

 

 

 

 

 

 

Header Ad

অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা বন্ধে হাইকোর্টে রিট

ছবি: সংগৃহীত

তীব্র দাবদাহের মধ্যেও দেশে গাছ কাটা অব্যাহত থাকায় প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছে একটি পরিবেশবাদী সংগঠন। আগামীকাল সোমবার ওই আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে।

হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ-এইচআরপিবির পক্ষে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ রোববার (৫ মে) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি করেন।

আবেদনে পাঁচটি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এগুলো হল-

১. গাছ কাটা নিয়ন্ত্রণের জন্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়কে ৭ দিনের মধ্যে পরিবেশবাদী, পরিবেশবিজ্ঞানী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপকের সমন্বয়ে সাত সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন, যারা প্রয়োজনে ঢাকা শহরে গাছ কাটার অনুমতি দেবেন।

২. গাছ কাটা বন্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৭ দিনের মধ্যে একটি সার্কুলার জারি করে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে জেলা পরিবেশ অফিসার, সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ, সমাজকর্মী, পরিবেশবাদী, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি/সেক্রেটারি এবং সিভিল সার্জনের সমন্বয়ে কমিটি গঠনের নির্দেশ প্রদান করবেন, যাদের অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা যাবে না।

৩. গাছ কাটা বন্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৭ দিনের মধ্যে একটি সার্কুলার জারি করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে; কলেজের অধ্যক্ষ, সমাজকর্মী, পরিবেশবাদী, সমাজকল্যাণ অফিসার, অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অব ল্যান্ড এবং এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর সমন্বয়ে কমিটি গঠনের নির্দেশ প্রদান করবে, যাদের অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা যাবে না।

৪. কমিটি গঠন হওয়ার আগে পর্যন্ত সকল বিবাদী নিজ নিজ এলাকায় যাতে কোনো গাছ কাটা না হয় সে ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং দুই সপ্তাহের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।

৫. গাছ কাটা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, ঢাকা শহরসহ অন্যান্য জেলা এবং উপজেলা শহরে গাছ কাটা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং সামাজিক বনায়ন বিধিমালা-২০০৪ এর বিধানে গাছ লাগানোর চুক্তিভুক্ত পক্ষকে অর্থ প্রদানের বিধান সংযুক্ত করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না-সে মর্মে রুল চাওয়া হয়েছে।

এইচআরপিবির পক্ষে রিট আবেদনকারীরা হলেন-অ্যাডভোকেট ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট এখলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া এবং অ্যাডভোকেট রিপন বাড়ৈ।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব, পরিবেশ বিভাগ মহাপরিচালক, ঢাকা উত্তর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন মেয়র, ঢাকা উত্তরা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী, প্রধান বন সংরক্ষক, সড়ক মহাসড়ক বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী ও বাংলাদেশ পুলিশ মহাপরিদর্শককে রিট আবেদনে বিবাদী করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে মনজিল মোরসেদ বলেন, ‌‘সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য ঢাকা শহরে যে পরিমাণ গাছপালা থাকা দরকার, তা দিন দিন কমছে এবং সম্প্রতিকালে তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে মানুষের জীবনযাত্রা আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। এ কারণে সুষ্ঠুভাবে বেঁচে থাকার অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।’

ওবায়দুল কাদেরের ভাইসহ ৪ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল

ছবি: সংগৃহীত

৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে নোয়াখালীর ৩টি উপজেলার মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী ও দুই ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইসমাঈল। অপরদিকে, তিনটি উপজেলায় ৩৭ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধতা পেয়েছে।

রোববার (৫ মে) সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ যাচাই-বাছাই অনুষ্ঠিত হয়।

মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রার্থীরা হলেন: কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী শাহাদাত হোসেন ও বেগমগঞ্জের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী এ এস এম সেলিম। শাহাদাত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইসমাঈল বলেন, হলফনামায় মামলা সংক্রান্ত তথ্য সঠিকভাবে উল্লেখ না করে তথ্য গোপনের অভিযোগে বেগমগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী এ এস এম সেলিমের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়। অপরদিকে, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী শাহাদাত হোসেনের হলফনামায় চারটি মামলার তথ্য গোপন করায় তার মনোনয়নপত্র বাতিলে ঘোষিত হয়। মামলার তথ্য গোপনের অভিযোগে বেগমগঞ্জ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. নুর হোসেন মাসুদ ও মো. মনির হোসেনের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়।

উল্লেখ্য, মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রার্থীরা আগামী ৬মে থেকে ৮মে জেলা প্রশাসক বরাবর প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল করার সুযোগ পাবেন। আগামী ২৯ মে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তৃতীয় ধাপে নোয়াখালীর সদর উপজেলা, বেগমগঞ্জ উপজেলা ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

গ্রামে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না, সংসদে ক্ষোভ চুন্নুর

ছবি: সংগৃহীত

গ্রামে এখন ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না উল্লেখ করে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক বলেছেন, ‘সরকার বলেছে ২৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সক্ষমতা আছে, তাহলে বিদ্যুৎ গেল কোথায়?’

আজ রবিবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক আরও বলেন, এখন দেশের মানুষ অনেক সমস্যায় আছে। এর মধ্যে দুটি সমস্যা গুরুতর। একটি হলো বিদ্যুৎ, আরেকটি সড়ক দুর্ঘটনা।

জাপা মহাসচিব বলেন, এখন গ্রামে-গঞ্জে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোথাও ১২ ঘণ্টা, কোথাও আট ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। আমার এলাকায় পাঁচ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। সরকার বলছে, ২৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আছে। তাহলে সেই বিদ্যুৎ গেল কোথায়?
এ নিয়ে সরকারি দলের সদস্যদের কেউ কেউ আপত্তি করলে চুন্নু বলেন, লোডশেডিং হয় না গ্রামে? চ্যালেঞ্জ করলাম। আমার এলাকার মানুষ আমাকে বলেছে, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে দাওয়াত দিতে, আমার এলাকায় একটা দিন থাকতে, লোডশেডিং হয় কি না তা দেখার জন্য।

তিনি বলেন, আমার প্রশ্ন আরেক জায়গায়। ভাড়ায় যেসব বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র আছে, তাদের ৪১ শতাংশ সক্ষমতা থাকার পরও বসে আছে। ২২-২৩ আর্থিক বছরে বসে থাকার পরও ভাড়া বাবদ তাদের ২৬ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।

চুন্নু বলেন, এর আগে সংসদে বলেছিলাম, আমার এলাকায় বিদ্যুৎ চলে যায়। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আমাকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন, আমি আজ চ্যালেঞ্জ চাই না। আমি চাই, তিনি সশরীরে আমার এলাকায় যাবেন দুই-চার দিনের মধ্যে। দেখে আসবেন কয় ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে।

তিনি বলেন, দায়মুক্তি দিয়ে যেসব চুক্তি আমরা করেছি, সেগুলো দয়া করে প্রত্যাহার করুন। বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে বসে বসে জরিমানা দেওয়া হবে, এ চুক্তি বাতিল করুন। সেসব কোম্পানি বিদ্যুৎ দিলে বিল পরিশোধ করবেন। বসিয়ে রেখে এভাবে এক বছরে ২৬ হাজার কোটি টাকা দেবেন, তারপর আবার লোডশেডিংও থাকবে! ঢাকায় থেকে অসহনীয় অবস্থা আপনারা বুঝবেন না।

তিনি বলেন, বিদ্যুতের অপচয় বন্ধ করুন। বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছেন। মন্ত্রী একটি সুন্দর কথা বলেন, সমন্বয়। সমন্বয়ের মানে মূল্যবৃদ্ধি। এ সমন্বয় আগামী তিন বছর বারবার করবেন। ভর্তুকি তুলে নিলে বিদ্যুতের দাম দ্বিগুণ হয়ে যাবে দুই-তিন বছর পর। মানুষ কিনতে পারবে কি না, আমি জানি না। আমি বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে বলব, শুধুমাত্র দাম না বাড়িয়ে এমন কিছু পদক্ষেপ নিন, যাতে জনগণের ওপর চাপ না পড়ে, একটি সহনীয় অবস্থায় আপনারা সরকারেও থাকতে পারেন, আর বিদ্যুৎও যাতে পাওয়া যায়।

সড়ক দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় ৩১৫ জন মারা গেছেন ঈদের আগে ও পরে। প্রতিদিন এখন ১৪ জন মারা যান। বছরে পাঁচ হাজারের মতো লোক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। এটি সরকারের সংস্থার হিসাব। ১৭ এপ্রিল ঝালকাঠিতে সিমেন্টবাহী ট্রাকের চাপায় ১৪ জন মারা যান। সেই ট্রাকের চালকের ভারি যানবাহন চালানোর কোনো লাইসেন্সই ছিল না।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় ২২ এপ্রিল যে বাসের ধাক্কায় একজন শিক্ষার্থী মারা যান, সেটির ফিটনেসই ছিল না। ৪৩ বছরের পুরোনো গাড়ি। এ গাড়ি তো দুর্ঘটনা ঘটাবেই। সড়কে বেশির ভাগ দুর্ঘটনা হয় পুরোনো, ফিটনেসবিহীন গাড়িতে। সড়ক পরিবহনমন্ত্রী, আপনি একটু শক্ত হোন। এসব গাড়ি-অটো যদি রাস্তায় চলাচল না করে, তাহলে এভাবে মানুষ মারা যাবে না। দয়া করে আপনি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিন।

সর্বশেষ সংবাদ

অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা বন্ধে হাইকোর্টে রিট
ওবায়দুল কাদেরের ভাইসহ ৪ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল
গ্রামে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না, সংসদে ক্ষোভ চুন্নুর
আটকে গেল এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি
৩০ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে সুন্দরবনের আগুন
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
এবার মানবপাচার মামলায় ৪ দিনের রিমান্ডে মিল্টন সমাদ্দার
দ্বিতীয় বিয়েতে বাধা দেওয়ায় স্ত্রীকে তালাকের অভিযোগ
দেশে ফেরা হলো না প্রবাসীর, বিমানে ওঠার আগে মৃত্যু
বজ্রপাত থেকে বাঁচার ‘কৌশল’ জানাল আবহাওয়া অফিস
নওগাঁয় ঔষধ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে হয়রানি মূলক মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
কিশোরীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে দুই যুবককে পিটিয়ে হত্যা করল জনতা
সত্য বলায় যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে আঘাত লাগলে কিছু করার নেই: ওবায়দুল কাদের
সেনাবাহিনীকে আরও আধুনিক ও দক্ষ করে তোলা হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
উপজেলা নির্বাচন বর্জনে রিজভীর লিফলেট বিতরণ
টাঙ্গাইলে বজ্রপাতে বাবুর্চির মৃত্যু
জিম্বাবুয়ে-যুক্তরাষ্ট্র সিরিজের ফলাফল কোনো কাজে আসবে না : সাকিব
১৫ বছরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সুন্দরবনের আগুন নেভাতে যোগ দিয়েছে নৌ ও বিমান বাহিনী
গাজায় দেড় লাখের বেশি অন্তঃসত্ত্বা নারী পানিশূন্যতায় ভুগছেন