শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১২ পৌষ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

বিশেষ সাক্ষাৎকার

'দুঃখজনক হলেও সত্য সংসদ ভবন অঙ্গনে স্বাধীনতাবিরোধীর কবর আছে'

বাঙালির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ অর্জন বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা, মহিয়সী বীরাঙ্গনা মা-বোনসহ অগণিত মানুষের অসামান্য আত্মত্যাগ ও ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের সোনার বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অমূল্য সমৃদ্ধ ইতিহাস, ঐতিহ্য ও মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য রক্ষার নিরিখে বর্তমানে জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের অন্যতম এক সংগঠন 'রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা ৭১'। বিশেষ এক সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে সংগঠনটির মূল আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা রাজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী সংগঠনটির কাঠামো, আদর্শ ও পরিকল্পনার বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য দিক আলোকপাত করেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ শোনার জন্য ঢাকায় এসেছিলেন তিনি। যা তাকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণে বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত করে।

প্রশ্ন: আপনারা কবে এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেই প্রেক্ষাপট সম্পর্কে কিছুটা আলোকপাত করবেন কী?

উত্তর: ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর এদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সম্পূর্ণভাবে ভুলুণ্ঠিত হয়। দেশ ফিরে যায় পাকিস্তানি ভাবধারায়। আমাদের একটা দীর্ঘ দুঃসময় গেছে যখন আমাদের মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দেওয়া ছিল দুঃসাধ্য। সেই অবস্থা থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের অনেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ও সেই মর্মে দেশের ইতিহাসকে পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করে আসছেন।

করোনা মহামারিকালে আমিসহ কয়েকজন সহযোদ্ধা হাতিয়া বিএলএফ কমান্ডার রফিকুল আলম, নৌ কমান্ডো মোশাররফ হোসেন, মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরের আবদুল হালিম খান, যুদ্ধাহত আবদুর রাজ্জাক, ফেনীর রফিকুল আলম একটি সংগঠন শুরুর পরিকল্পনা করি। গত ২২ জানুয়ারি রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে করোনা মহামারির মধ্যে শতাধিক মুক্তিযোদ্ধার উপস্থিতিতে সংগঠনের খসড়া ঘোষণাপত্র উপস্থাপন করি।

ঘোষণাপত্রে সংগঠনের আদর্শ ও মুক্তিযোদ্ধাদের সমস্যাগুলো তুলে ধরা হয়। ঘোষণাপত্রের আলোচনায় অনেক সহযোদ্ধা অংশ নেন এবং তাদের মূল্যবান পরামর্শ তুলে ধরেন। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, করোনা মহামারি সহনীয় পর্যায়ে আসলে ও রমজানের পর বড় আকারে সারা দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের উপস্থিতিতে দ্বিতীয় সাধারণ সভায় সংগঠনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হওয়া পর্যন্ত রাজজাকুল হায়দার চৌধুরীকে আহ্বায়ক, মোশাররফ হোসেন ও আবদুল হালিম খানকে যুগ্ম আহ্বায়ক এবং শামসুল আলম শামসকে সদস্য সচিব করে ১৫ সদস্যের একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়।

এরপর গত ২৬ ফেব্রুয়ারি মুক্তিযোদ্ধাদের উপস্থিতিতে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সেক্টরস কমান্ডারস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক হারুন হাবিব, বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন কবি জাহিদুল হক, প্রবীণ সাংবাদিক শামীম আক্তার চৌধুরী।

প্রশ্ন: আপনাদের সংগঠনের মাসিক ও সাপ্তাহিক কোনো আয়োজন বিষয়ক পরিকল্পনা সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দিবেন কী?

উত্তর: আমাদের এই সংগঠন শুরুর পর থেকে আমরা প্রতিমাসে আলোচনা সভা আয়োজনের চেষ্টা করছি। যেন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসসহ মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন বাস্তবভিত্তিক বিষয়গুলো আলোচিত হয়।

প্রশ্ন: আপনারা সংগঠনটি পরিচালনা করতে কী কী প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছেন?

উত্তর: স্বাভাবিকভাবেই একটা সংগঠন পরিচালনা করা খুব সহজ নয়। বিশেষ করে তা কিছুটা কঠিন হয় প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য। আমরা অনেকেই বয়সের ভারে বেশ ন্যুব্জ। ইতোমধ্যে অনেক সহযোদ্ধা মারা গেছেন। বাকিদের মধ্যে অনেকেই চলাচল শক্তি হারিয়ে ফেলেছেন। তবে এই সমস্যা থাকা সত্ত্বেও প্রতিটি সভায় শতাধিক মুক্তিযোদ্ধার উপস্থিতি দেশপ্রেমের বিশুদ্ধ আদর্শে লালিত আশাব্যঞ্জক দিকগুলো তুলে ধরে।

প্রশ্ন: বর্তমানে আপনাদের সংগঠনের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের বিষয়ে কিছু বলবেন কী?

আমাদের সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর দর্শন, প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে সঠিকভাবে পৌঁছে দেওয়া। আমরা ইতোমধ্যে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে মতবিনিময় ও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস সম্বলিত গল্প বলা শুরু করেছি। এটাকে দেশব্যাপী বিস্তৃত করার কাজ শুরু হয়েছে। আর আমরা সহযোদ্ধারা অবিরতভাবে সেই চেষ্টা চালিয়ে যাব। দেশব্যাপী অনেক মুক্তিযোদ্ধার অর্থনৈতিক ও সামাজিক পুনর্বাসন সংক্রান্ত বাস্তবভিত্তিক অনেক কাজ অপূর্ণ আছে।

প্রশ্ন: আপনাদের সাংগঠনিক-অর্থনৈতিক দিকগুলো কীভাবে পরিচালিত হয়? আপনাদের সদস্য কত? মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া স্কল মুক্তিযোদ্ধা কি এতে অংশ নিতে পারেন?

উত্তর: আমাদের সকল সদস্যদের ব্যক্তিগত অবদানের মাধ্যমে এই সংগঠনের বিভিন্ন ব্যয়ভার পরিচালিত হয়। বর্তমানে সংগঠনের সদস্য সংখ্যা ২০০। সদস্যদের জন্য একটি অন্যতম শর্ত হলো মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে বিশ্বাসী এবং বঙ্গবন্ধুর দর্শন ধারণ। অন্যথায় তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা হলেও আমাদের সদস্য হতে পারবেন না।

আলোচনার শেষপর্যায়ে রাজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী বেশ দুঃখ মিশ্রিত স্বরে বলেন, 'একটি দুঃখজনক হলেও সত্য দিক হলো আমাদের জাতীয় সংসদ ভবন অঙ্গনে কয়েকজন বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী নেতার কবর আছে। আন্তর্জাতিক স্থপতি লুই কানের নকশা অনুযায়ী সংসদ ভবন অঙ্গনে কোনো কবর থাকার প্রশ্নই উঠে না, রাজাকার ও স্বাধীনতাবিরোধীদের করব তো নয়ই। এসব কবর সরানোর জন্য আমরা মুক্তিযোদ্ধা, নতুন প্রজন্ম ও প্রগতিশীল শক্তিকে এক করে একটা ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তুলব।

মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন বাজি রেখে যে অকুতোভয় মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করেছেন, যাদের অসামান্য ও রক্তক্ষয়ী আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি আমাদের সোনার বাংলাদেশের পূর্ণাঙ্গ চিত্র, আমাদের স্বাধীনতা। তাদের সবার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানায়। মুক্তিযোদ্ধাদের অন্যতম সংগঠন 'রণাঙ্গনে মুক্তিযোদ্ধা ৭১' বাংলাদেশের প্রকৃত ইতিহাস বিনির্মাণে আগামীর সফল অগ্রযাত্রায় আমার আন্তরিক শুভকামনা।'

এসজি

Header Ad
Header Ad

দুর্নীতিবাজদের ফাইলগুলো পুড়ে গেছে : রুহুল কবির রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু হওয়ার পরই সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা রহস্যজনক। শুক্রবার রাজধানীর কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে জাতীয়তাবাদী ৮৮ এসএসসি ব্যাচ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রিজভী অভিযোগ করেন, সচিবালয়ের মতো নিরাপদ সরকারি দপ্তরে আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গেছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফাইল। এর মধ্যে রয়েছে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত সাবেক কেবিনেট সচিবের ফাইল, যার ওপর তদন্ত চলছিল। তিনি প্রশ্ন করেন, “শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজনদের ফাইল তলব করার পরপরই কেন এমন ঘটনা ঘটল? এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়, বরং পরিকল্পিত।”

তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার স্বৈরাচারের দোসরদের চিহ্নিত করে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। শেখ হাসিনার সহযোগীদের প্রশাসনে বসিয়ে গণতন্ত্র রক্ষার বিপ্লবকে ব্যর্থ করার চেষ্টা চলছে। যারা অতীতে গণতন্ত্র রক্ষায় আন্দোলন করেছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষ তৈরি করার চেষ্টা হচ্ছে।

রিজভী বলেন, নির্বাচন গণতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনকে উপেক্ষা করে সংস্কারের কথা বলছে। তিনি অভিযোগ করেন, “এটি মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দিন আমলের ষড়যন্ত্রের মতো। জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনই গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি। আনুপাতিক হারে নির্বাচন জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়, কারণ এটি জটিল এবং সরাসরি ভোটাধিকারের বিরোধী।”

রিজভী আরও বলেন, যারা গণতন্ত্রের জন্য জীবন দিয়েছে, তাদের অবদানের প্রতি সম্মান জানিয়ে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের রায়কে গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে সতর্ক করে বলেন, গণতন্ত্র রক্ষার স্বার্থে জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করতে হবে এবং কোনো ষড়যন্ত্রমূলক পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকতে হবে।

Header Ad
Header Ad

শনিবার যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ থাকবে না

ছবি: সংগৃহীত

সিলেট নগরীর ২৫ এলাকায় শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে। বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে, জরুরি মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত এবং কিছু এলাকায় সকাল ৮টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হবে।

এ বিষয়ে সিলেট বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর প্রকৌশলী শামস-ই-আরেফিন বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ১১ কেভি মুক্তিরচক ও ধোপাদিঘীরপাড় ফিডারের আওতাধীন এলাকাগুলোতে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে। এই এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে মেন্দিবাগ, নোয়াগাঁও সাদিপুর, বোরহানউদ্দীন রোড, কুশিঘাট, মীরেরচক, মুক্তিরচক, মুরাদপুর, পীরেরচক, উপশহর রোড, সোবহানীঘাট বিশ্বরোড, ডুবড়ী হাওর, সবজিবাজার, ফুলতলী মাদরাসা, হাফিজ কম্প্লেক্স, নাইওরপুল পয়েন্ট, ওসমানী শিশু পার্ক, ধোপাদিঘীরপাড় ও আশপাশের এলাকা।

অন্যদিকে, ১১ কেভি সোবহানিঘাট ও কালিঘাট ফিডারের আওতাধীন এলাকাগুলোতে সকাল ৮টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে। এই এলাকাগুলো হলো কাস্টঘর, চালিবন্দর, আমজাদ আলী রোড, মহাজনপট্টি, লালদিঘীরপাড়, হকার্স মার্কেট, বন্দরবাজার রোড, জেল রোড এবং আশপাশের অঞ্চল।

বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কাজ শেষ হলে নির্ধারিত সময়ের আগেই বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরায় চালু করা হবে। সাময়িক এ অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে বিভাগটি এবং গ্রাহকদের সহযোগিতা কামনা করেছে।

Header Ad
Header Ad

গুম অবস্থায় ভারতের কারাগারে যাওয়ার লোমহর্ষক বর্ণনা সুখরঞ্জন বালির

সুখরঞ্জন বালি। ছবি: সংগৃহীত

২০১২ সালের ৫ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পক্ষে সাক্ষ্য দিতে এসে নিখোঁজ হন পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানি উপজেলার উমেদপুর গ্রামের বাসিন্দা সুখরঞ্জন বালি।

দীর্ঘ পাঁচ বছর পর ভারত থেকে মুক্তি পেয়ে দেশে ফিরে তিনি নিজের ওপর ঘটে যাওয়া ভয়াবহ অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। তার এই অভিজ্ঞতা বাংলাদেশে গুম, নির্যাতন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের এক মর্মস্পর্শী উদাহরণ।

২০১২ সালের ৫ নভেম্বর সকালে ঢাকার আদালতে যাওয়ার সময় সুখরঞ্জন বালিকে অপহরণ করা হয়। তিনি জানান, সাদা পোশাকধারী ব্যক্তিরা তাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে একটি অচেনা স্থানে নিয়ে যায়। চোখ বেঁধে তাকে অন্ধকার একটি ঘরে আটকে রাখা হয়। সেখানে তাকে মাঝে মাঝে খাবার দেওয়া হলেও কোনো আলো-বাতাস প্রবেশ করতে পারত না।

এরপর তাকে আরেকটি ঘরে নিয়ে যাওয়া হয় যেখানে জোরপূর্বক সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। তিনি জানান, তাদের প্রস্তাবে রাজি না হলে তাকে শারীরিক নির্যাতন, বৈদ্যুতিক শক এবং ভয়াবহ মানসিক যন্ত্রণা দেওয়া হয়।

অপহরণের কয়েকদিন পর তাকে বিজিবি ও পুলিশের সহায়তায় ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর হাতে তুলে দেওয়া হয়। বিএসএফ তাকে প্রচণ্ড মারধর করে এবং উত্তর চব্বিশ পরগণার স্বরূপনগর থানায় হস্তান্তর করে। সেখান থেকে তাকে বশিরহাট ও পরবর্তীতে দমদম কারাগারে পাঠানো হয়।

দমদম কারাগারে পাঁচ বছর কারাবাসের সময় বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা তার সাক্ষাৎকার নেয়। ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের আদেশে ২০১৮ সালে তিনি মুক্তি পান এবং দেশে ফিরে আসেন।

সুখরঞ্জন বালির অভিযোগ অনুযায়ী, বাংলাদেশ পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ তাকে অপহরণ করে এবং বিজিবি’র সহায়তায় বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করে। তিনি বলেন, "বাংলাদেশের একজন নাগরিককে রাষ্ট্রীয় বাহিনী কিভাবে অন্য একটি দেশের বাহিনীর হাতে তুলে দেয়?"

বিএসএফের হাতে নির্যাতনের দাগ এখনো তার শরীরে দৃশ্যমান। তিনি জানান, দমদম কারাগারে থাকা অবস্থায় তার পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার সহায়তায় তার মুক্তির ব্যবস্থা করেন।

দেশে ফিরে আসার পর তিনি পিরোজপুরে নিজের গ্রামে ফিরে যেতে সাহস পাননি। নিরাপত্তার কারণে বাগেরহাটে আত্মীয়দের আশ্রয়ে দিন কাটিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, গুম এবং পাঁচ বছরের কারাবাসের কারণে তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে স্বাভাবিক জীবনযাপনে অক্ষম হয়েছেন।

২০১৮ সালে মুক্তির পর তিনি রাষ্ট্রের কাছে বিচার ও ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।

২০২৪ সালের আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত গুম-সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ১,৬৭৬টি গুমের অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে অনেকগুলো অভিযোগে তৎকালীন সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশনার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এক ভাষণে বলেন, "গুম কমিশনের প্রতিবেদন মানুষ মানুষের প্রতি কী পরিমাণ নৃশংস হতে পারে তার দলিল।" তিনি আরও বলেন, "গুমের শিকার ব্যক্তিদের ভয় আজও কাটেনি।"

 

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

দুর্নীতিবাজদের ফাইলগুলো পুড়ে গেছে : রুহুল কবির রিজভী
শনিবার যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ থাকবে না
গুম অবস্থায় ভারতের কারাগারে যাওয়ার লোমহর্ষক বর্ণনা সুখরঞ্জন বালির
শেখ হাসিনাকে ‘নারী’ বলতে রাজি নন মৎস্য উপদেষ্টা
সূর্যের সবচেয়ে কাছে মানুষের তৈরি যান
বর্তমান সরকার রিজার্ভ বাড়িয়েছে, ব্যাংক সেক্টর সচল করছে: জামায়াত আমির
বাংলাদেশ জটিল রাজনৈতিক সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে : মির্জা ফখরুল
সংবিধান সংস্কারে রাজনৈতিক দলের সংকল্প জরুরি: অধ্যাপক আলী রীয়াজ
চলতি বছরের বিজিবি-বিএসএফ বৈঠক হচ্ছে না
ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে নিহত সবাই একই পরিবারের
ইউসুফ (আঃ)- এর সমাধিতে নিয়ে গেল ইসরায়েলি সেনারা
ইন্টারপোলের রেড নোটিশে ৬৩ বাংলাদেশি: অপরাধীদের ধরতে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আজমীর বরখাস্তের আদেশ বাতিল
মাহফিলে আজহারী উঠবেন রাতে, দুপুরেই ভরে গেছে ময়দান
ইসরায়েলি হামলায় অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেন ডব্লিউএইচও প্রধান
থাইল্যান্ডে নিখোঁজ হওয়া বাংলাদেশিকে পাওয়া গেল থাই নারীর সঙ্গে হোটেলে  
হাসিনার দোসররা সচিবালয়ে পরিকল্পিতভাবে অগ্নিকাণ্ড করেছে: শাকিল উজ্জামান
ভারতে ইসকন মন্দিরে চিন্ময়ের আইনজীবীর বৈঠক
ভোটার হওয়ার বয়স ১৭ বছর নির্ধারিত হওয়া উচিত: ড. মুহাম্মদ ইউনূস  
নির্বাচনে অংশ নিতে খালেদা জিয়ার আইনগত কোনো বাধা নাই