মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫ | ১১ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

‘এখন আমাদের রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের সমর্থন দরকার’

এ বছর ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক’ পেয়েছে ‘মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ লাভারস অব দ্য ওয়ার্ল্ড সোসাইটি (এমএলএলডব্লিউএস)’। মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট আমিনুল ইসলামের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ নিয়েই ‘মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ লাভারস অব দ্য ওয়ার্ল্ড সোসাইটি (এমএলএলডব্লিউএস)’-এর প্রেসিডেন্ট আমিনুল ইসলাম কথা বলেছেন ঢাকাপ্রকাশ-এর প্রতিবেদক ওমর শাহেদের সঙ্গে।

আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ লাভারস অব দ্য ওয়ার্ল্ড সোসাইটি (এমএলএলডব্লিউএস)’র আমি প্রেসিডেন্ট। আমাদের এই সংগঠন থেকেই সর্বপ্রথম ১৯৯৯ সালে ইউনেসকোতে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, ‘একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হোক’। কিন্তু ইউনেসকোতে কোনো একজন ব্যক্তি বা কোনো একটি বিশেষ সংগঠন থেকে করা কোনো প্রস্তাব তাদের বার্ষিক সাধারণ সভার আলোচনাভুক্ত করা হয় না। সুতরাং দেশ হিসেবে আমাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশসহ অনেক দেশকে অনুরোধ করেছিলাম প্রস্তাবটি ইউনেসকোতে দেওয়ার জন্য। ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ এগিয়ে এলো ও তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাশে ছিলেন। তিনি কাজটিকে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন ও ১৯৯৯ সালেরই ১৭ নভেম্বর ইউনেসকোর ৩০তম বার্ষিক সাধারণ সভায় আমাদের প্রস্তাব ১৮৮টি দেশের সবসম্মতিতে পাস করালেন তিনি। ২০০০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউরের রক্তে ভেজা ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের দিনটিকে ইউনেসকো ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে।

২০০০ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি থেকেই একুশে ফেব্রুয়ারি ১৮৮টি দেশের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী চালু হলো। সেই থেকে পালিত হয়ে আসছে। ২০০১ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি একুশের আগের দিন ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা আমাদের ‘মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ লাভারস অব দ্য ওয়ার্ল্ড সোসাইটি (এমএলএলডব্লিউএস)’কে ‘একুশে পদক’-এ ভূষিত করেন। ২০১৬ সালে আমাদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি প্রয়াত রফিক ভাই-বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম (ইন্টারন্যাশনাল মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ ডে’র উত্থাপক) ও তার সহযোগী অবদুস সালামকে আওয়ামী লীগ সরকার দেশের সবচেয়ে বড় রাষ্ট্রীয় সম্মান ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’-এ ভূষিত করেছে।

আজ থেকে বহু বছর আগে ১৯৯৮ সাল থেকে যে এই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের কথাটি চালু হয়ে আসছে ও আমাদের কর্মোদ্যগ চলছে; আজকে ২০২৩ সাল, এই সিকি শতাব্দী বা কোয়ার্টার সেঞ্চুরিতে কী কাজ আমরা করেছি প্রবাসে বসে সেই কথাগুলোও একটু বলতে চাই।

প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশের মাতৃভাষার জন্য আন্দোলন ও তার স্বীকৃতি বৈশ্বিকভাবে অঙ্গীভূত করাটি খুব কঠিন কাজ ছিল। কিন্তু আমরা শ্রমে, শ্রমে এই ভাষার প্রতি ভালোবাসা ও স্বীকৃতির কাজটিকে বাংলাদেশি ও বাঙালি কমিউনিটি থেকে কাউন্টি, তারপর মিউনিসিপ্যাল, এরপর প্রভিনিশিয়াল এবং একেবারে ন্যাশনাল লেভেলে নিয়ে গিয়েছি। কাজগুলো কীভাবে সম্ভব হয়েছে? মিনিউসিপ্যাল লেভেলে আমাদের বাংলাদেশের মাতৃভাষা দিবসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য প্রথমে একটি ক্লেইম (লিখিত আইনী দাবী) করেছি, যাতে অ্যাওয়ারনেস ক্রিয়েট করা যায়। এরপর ‘পার্মানেন্ট রিমাইন্ডার’ হিসেবে আমরা সেখানে ‘মনুমেন্ট’ প্রতিষ্ঠা করেছি। ২০০৯ সালে শহীদ মিনারটি উন্মোচন করা হয়েছে সম্পূর্ণ সরকারি খরচে। আমাদের মনুমেন্টের নাম হলো ‘দ্য লিঙ্গুয়া অ্যাকোয়া’। এটিই কানাডার প্রথম মনুমেন্ট। লিঙ্গুয়া মানে হলো ল্যাঙ্গোয়েজ বা ভাষা আর অ্যাকোয়া মানে হলো কোয়ার্টার। মানুষের মাতৃগর্ভে যখন সে থাকে বা শিশুরা যখন মায়ের মাতৃগর্ভে থাকে, তখন মোটে পাঁচ মাস বয়সেই তারা মায়ের ভাষাটি রপ্ত করতে শুরু করে। এজন্যই এই মনুমেন্টের নাম হলো ‘লিঙ্গুয়া অ্যাকোয়া’।

এ ছাড়া আমরা কাউন্টিতেসহ নানা জায়গায় জনসাধারণের সচেতনতা তৈরি করার জন্য ‘ইন্টারন্যাশনাল মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ ফেস্টিভ্যাল’ চালু করেছি। ২০১২ সাল থেকে প্রতিবছর এই সামারে (গ্রীষ্মকাল) আমরা উৎসবটি করি। কারণ একুশে ফেব্রুয়ারি হলো নর্থ আমেরিকাতে ঠান্ডার দিন, স্নো বা বরফ পড়ে। ইনসাইডে থেকে আমাদের একুশে পালন করতে হয়। এই সেলিব্রেশনকে আমরা বাইরে নিয়ে এসেছি এভাবে সামারে। সামারে ফেস্টিভ্যালটি পালন করি। বিভিন্ন ভাষাভাষী, বিভিন্ন হেরিটেজের মানুষ আসেন ও এখানে অংশগ্রহণ করেন।

চাইনিজ ফিলসফার-‘কনফুসিয়াস’, তার একটি উক্তি আছে-বলেছেন, ‘তোমরা যদি কোনো জিনিস অল্প সময়ের জন্য মনে রাখতে চাও, তাহলে মিটিং কর, সেমিনার কর। তোমরা যদি কোনো জিনিশ বাৎসরিক হিসেবে স্মরণ রাখতে চাও, ‘বছরওয়ারি’ সেটি উদযাপন করো (যেমন আমরা জন্মদিন, বিবাহ বার্ষিকী পালন করি)। কিন্তু তোমরা কোনো জিনিশ যদি বছরের পর বছর, প্রজন্মের পর প্রজন্ম মনে রাখতে চাও, তাহলে সেটি তোমরা শিক্ষায় মানে বিদ্যালয় ব্যবস্থায় ঢুকিয়ে দাও।’ তো আমরা আলহামদুলিল্লাহ, আমাদের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে বিদ্যালয় ব্যবস্থায়, কানাডা শিক্ষার বাৎসরিক পঞ্জিকাতে ইনকরপোরেট করে দিতে স্বক্ষম হয়েছি। এই অত্যন্ত কঠিন কাজটি করতে প্রায় ১০ বছর সময় লেগেছে। আমাদের এজন্য একটি মডেল শিক্ষাবিদদের নিয়ে তৈরি করতে হয়েছে, নাম হলো ‘বিসি মডেল (ব্রিটিশ-কলম্বিয়া এডুকেশনাল মডেল)’।

মডেলটি আমরা ইউনেসকোতে পাঠিয়েছি, তারা স্বীকৃতি দিয়ে রিকমেন্ড করেছেন। ‘বিসি মডেল’ এরপর থেকে অন্যান্য স্কুল ডিস্ট্রিক্টকে প্রয়োগ করা হচ্ছে। আমি যদি একটি উদাহরণ দেই, যেমন একটি স্কুল ডিস্ট্রিক্ট, ব্রিটিশ- কলম্বিয়ার সারি, সেখানে পার ইয়ার ইনরোলমেন্ট হলো ৭২ হাজার স্টুডেন্টস এবং ১৭২ ধরনের মাতৃভাষার লোকজন পড়ালেখা করে ওখানে। তাহলে বোঝা গেল, এই মডেলের ইমপ্যাক্টটি কী ধরনের? সুতরাং এই ফেব্রুয়ারিতে বাচ্চাদের যখন এই মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ সম্পর্কে পড়ালেখা করানো হয়, তখন ৭২ হাজার ছাত্র, ছাত্রী ও ১৭২ ধরনের মাতৃভাষার ছেলেমেয়েরা পড়ালেখা করতে পারে মডেলটি প্রয়োগ করার ফলে।

উদাহরণ যদি দেই, আমাকে একটি শিশুদের বিদ্যালয় থেকে কর্তৃপক্ষ দাওয়াত করেছিলেন। আমি তাদের মাতৃভাষা সম্পর্কে বলার পর বিদ্যালয়ের প্রিন্সিপাল খুব উৎসাহিত হয়েছেন। তার এলিমেন্টারি স্কুলের ৪শ জন ছাত্র, ছাত্রী আছে, তাদের প্রত্যেককে তিনি একটি করে মেপললিফ দিয়ে দিয়েছেন। এরপর নির্দেশ দিয়েছেন, এই মেপললিফের ওপর তোমার মাদার টাং কী লিখে নিয়ে এসো এবং একটি করে প্রবাদ লিখে নিয়ে এসো। প্রত্যেকটি ভাষাভাষী শিশু-যেমন বাংলা, উর্দু, ফরাসি তারা তাদের মাতৃভাষার নাম ও একটি প্রবাদ লিখেছে। তারা সবাই যখন এই ৪শটি ম্যাপললিফ নিয়ে এলো, তারা হলরুমে করেছেন কী-ল্যাঙ্গুয়েজেস ট্রি বানিয়েছেন। একটি বিরাট বড় গাছ বানিয়েছে ওরা। একুশে ফেব্রুয়ারিতে তারা ডিসপ্লে করেছেন, কত ধরনের ভাষাভাষী লোক আমরা এখানে আছি? এই রকম বিভিন্ন লেভেলে, কমিউনিটি, মিউনিসিপ্যালিটি, স্কুল ডিসট্রিক্টে কাজ করে আমাদের উদ্যোগকে প্রভিনশয়াল লেভেলে নিয়ে গিয়েছি। সেখানে নিতে হলে কানাডয়ান স্টেটস হেড যেমন ব্রিটেনের রানি-এখন রাজা, কিং চার্লস থ্রি, তাদের প্রতিনিধির স্বাক্ষর লাগে অনুমোদন হিসেবে এবং এই কাজকেও আমরা অর্জন করেছি।

আমরা কাজটিকে এরপর ন্যাশনাল লেভেলে নিয়ে গিয়েছে। কানাডিয়ান সিনেট ও কানাডিয়ান পার্লামেন্ট আছে। কোনো কাজকে বা উদ্যোগকে যদি আপনি আইন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চান তাহলে বিল আকারে এই দেশের সিনেট ও পার্লামেন্টে পাশ করতে হয়। তো আমরা ‘বিল এস টু ১৪ অন ইন্টারন্যাশনাল মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ ডে’- কাজটিকে এই বিল আকারে নিয়ে গিয়েছি তাদের সাহায্যে এবং এরপর কানাডিয়ান সিনেট থেকে অনুমোদিত হয়েছে এবং বিলটি এরপর তাদের মাধ্যমে পার্লামেন্টে অনুমোদিত হয়ে গিয়েছে বা পাশ হয়েছে ৩২৫-০ ভোটে। যেখানে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডু ভোট দিয়েছেন এই বিলের পক্ষে। সুতরাং, এই আইনটি একেবারে প্রস্তুত ঘোষণার জন্য। কিন্তু তাদের এজেন্ডা অনুসারে এখন একটু ব্যাকলক আছে হয়তো মার্চ...এই এক, দুই মাসের মধ্যে ঘোষিত হয়ে যাবে। তো কানাডা যখন ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে অফিশিয়ালি ঘোষণা করবে, তারা হবে বিশ্বের প্রথম দেশ যারা ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করল।

এই ধরনের কাজগুলো করে আমরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে বিভিন্ন পযায়ে প্রতিষ্ঠিত করছি। আগে আমি যে কথাটি বললাম যে, ইউনেসকো থেকে ডিক্লারেশন হলো, এটি প্রথম ফেইজ আর দ্বিতীয় ফেইজ হলো- ইমপ্লিমেন্টেশন অব ইন্টারন্যাশনাল মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ ডে। আমরা বিদেশে মেইনস্ট্রিম সোসাইটিতে সেটিও প্রতিষ্ঠিত করেছি। একদম গ্রাস রুট লেভেল থেকে একেবারে ন্যাশনাল লেভেল পর্যন্তই। এই কাজগুলোর পরিপ্রেক্ষিতেই এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের এই কাজে সন্তুষ্ট হয়ে ‘ইন্টারন্যাশনাল মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ ডে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড’-এ ভূষিত করছেন আমাদের সংগঠনকে। ২২ বছর পর আবার সরকার আমাদেরকে রিকগনাইজ করল।

এখন আমাদের পরবর্তী ফেইজ গ্লোবাল ইমপ্লিমেনটেশনে যাচ্ছি যে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কীভাবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে বাস্তবায়ন করতে পারি? কানাডা একটি উদাহরণ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছি। এই দেশে আমাদের সংগঠন নিয়ে ৩৫ বছর ছিলাম। এখন আমি আমেরিকাতে গিয়েছি। এখানে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের চ্যাপ্টার ওপেন করেছি। মার্শাল হোসেন আমাদের এই চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট। তিনি এখন আমাদের নিয়ে আমেরিকাতে কাজ শুরু করেছেন। এই ফেইজে কাজ করতে হলে যে ধরণের কাজ-এখন আমাদের একটি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের সমর্থন দরকার। উদাহরণ হিসেবে আমাদের সংগঠন থেকে যদি বিদেশে কোনো স্কুল ডিস্ট্রিক্ট বা কোনো অর্গানাইজেশনে বা কোনো রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কোনো চিঠি লিখি, তারা কোনো গুরুত্ব দিতে চান না। একটি মূল্য তৈরি করতে আমাদের সরকার যদি প্রতিটি দূতাবাসে একটি চিঠি দিয়ে দেন, আমরা স্বেচ্ছাসেবামূলক কোনো সাহায্য চাই না, কেননা আমরাই তো এভাবে কাজ করছি; আমাদের প্রয়োজন প্রায়োগিক সাহায্য।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি প্রতিটি বাংলাদেশি দূতাবাসকে একটি করে ইনস্ট্রাকশন দিয়ে দেন, তাহলে আমরা দূতাবাসগুলোর মাধ্যমে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আমাদের কাজটিকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারব ইনশাআল্লাহ। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আরো কয়েকটি আবেদন রেখেছি। সেটি আমি বলতে পারি। এক নম্বর হলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করছি যে, তিনি যেন বিশ্বের প্রতিটি দূতাবাসে নির্দেশ দেন যে, ‘ইন্টারন্যাশনাল মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ ডে’কে বাস্তবায়ন করতে আমাদের সহযোগিতা করতে হবে। তার এই নির্দেশনা পেলে বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত ও দূতাবাসগুলোর সাহায্যে কাজটিকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবো যেহেতু কানাডায় কাজটি করতে পেরেছি।

দুই নাম্বার হলো-টু ক্রিয়েট দি অ্যাওয়ারনেস অব ইন্টারন্যাশনাল মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ ডে, আমাদের দেশের যে ‘স্যাটেলাইট-১ (বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট)’, উৎক্ষেপন করেছি বা মহাকাশে পাঠিয়েছি; দ্বিতীয় স্যাটেলাইটটি যাচ্ছে; তো আমরা চাচ্ছি, এই স্যাটেলাইটের গায়ে যদি শহীদ মিনারের ছবিটি থাকে, তাহলে আমরা বৈশ্বিকভাবে মহাকাশজুড়ে সচেতনতা তৈরি করতে পারব। উই ওয়ান্ট টু ক্রিয়েট দি শহীদ মিনার ইন দ্য বডি অব বাংলাদেশি সেকেন্ড স্যাটেলাইট অ্যাজ অ্যা ইউনিট মডেল ফর দ্য ইন্টারন্যাশনাল মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ ডে। কারণ হলো কী-আমরা একুশকে আন্তর্জাতিক মাতৃভষা দিবস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারছি, কিন্তু একুশের চেতনা বা এর মূল যে কারণটি বা পেছনের ইতিহাস এবং এর জন্য যে মডেলটি কাজ করেছে, সেই আমাদের জাতীয় শহীদ মিনারকে আমরা বৈশ্বিকভাবে শহীদ মিনারে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

আরও শেখ হাসিনার কাছে আবেদন করছি, আমার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি একটি ইনস্ট্রাকশন দেন, সেই অনুযায়ী আমরা ইউনেসকোতেও এই কাজটি দাবি করতে পারি। সে অনুযায়ী এরপর প্রতিটি হাই কমিশনের ভেতরে শহীদ মিনারের একটি করে মডেল রাখতে পারি।

চার নাম্বার হলো ববিসি মডেলটি প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছি, এর পরের কথা হলো মাতৃভাষা বহন করে শিশুরা, আমাদের এই মডেল হলো একটি ইউনিক মডেল তাদের জন্য। মডেলটিতে যদি সরকার ও অন্যরা সাহায্য করেন তাহলে আমাদের প্রবাসের বিভিন্ন জায়গায় আমরা প্রতিস্থাপন করতে পারি। যেমন লেবার বা শ্রমিক দিবস হলে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোর নাম উঠে আসে, তেমনি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের কথা উঠে এলে ও পালন করতে গেলেই বাংলাদেশের নাম, পূর্ব পাকিস্তান ও তৎপরবর্তী বাংলাদেশের ভাষা শহীদদের নাম বিশ্বের শিশুরা এবং অন্যরা পড়তে পারবেন।

এ ছাড়া এই যে বিভিন্ন দেশের স্কুল বোর্ডগুলো কারিকুলামগুলো তৈরি করবেন, বাংলা একাডেমি বা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট, আমাদের প্রধানমন্ত্রী তার কার্যালয়ের মাধ্যমে একটু যদি আমাদের সহযোগিতা করেন, আমরা সেসব কারিকুলাম নিয়ে বিদেশে, সবার আগে কানাডাতে প্রতিস্থাপন করতে পারি। এই সমস্ত অনেক কাজ আছে, আমরা এই কাজগুলো করতে চাই, কিন্তু আন্তর্জাতিকভাবে কাজ করতে গেলে বা হলে আমাদের সরকারি সাহায্য প্রয়োজন। সেজন্য কোনো ধরনের কোনো টাকা-পয়সার সাহায্য চাই না কিন্তু লজিস্টিক সাহায্য চাই। প্রধানমন্ত্রী আজ থেকে ২৫ বছর আগে যেমন ইউনেসকোতে ক্লেইম করতে হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন ও মূল কাজটি সেখানে করেছেন, আমাদের এই দাবিগুলো শুনলে আমার বিশ্বাস, তিনি আবার হাত বাড়িয়ে দেবেন ও তার দয়া এবং ভালোবাসায়, আবার প্রতিটি জায়গায় ইনস্ট্রাকশন দিয়ে দেবেন যাতে কাজগুলো অচিরেই আমরা সমাধান করতে পারি।

বাংলাদেশ ও বিশ্বের সব ভাষাভাষী মানুষের জন্য কাজগুলো করতে আমাদের পরিশ্রম করতে হয়েছে ২০টি বছর ধরে। মানুষ বিদেশে যায় টাকা কামানোর জন্য ও সেখানে তাদের জীবনটি অনেক বেশি কষ্টের। আমরা তো বিদেশে দুটি সুটকেস ছাড়া আর তো কিছু নিয়ে যাই না। নিয়ে যাই কী-একবুক ইনটেনজিবল (অধরা, অস্পৃশ্য) যা কিছু হেরিটেজ আছে। যেমন-গান, বাজনা, শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, মা, বাবা, ভাই, বোন, আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধবের ভালোবাসা। এগুলো তো আমরা ধারণ করি। এগুলোর কোনটি ছাড়াই তো আমরা কেউ বাঁচব না। আমরা যেমন কাজ করি, পরিশ্রম করি ও টাকা উপার্জন করি। কিন্তু সেগুলো-আমাদের শিল্প, সাহিত্যকে তো ধারণ করতে হয়। ওখানে তো এসই ক্রিয়েট করতে হয় বা পুনঃউৎপাদন করতে হয়। মাল্টি কালচারালিজম ক্যান্ট রান উইথআউট মাল্টি লিঙ্গুয়ালিজম। বিভিন্ন ভাষায় গান যেমন-আপনি আমার ভাষায় গান গাইতে না পারলে তো আমি আমার ভাষাটিকে প্রমোট করতে পারব না। মাই ল্যাঙ্গুয়েজ ইজ মাই আইডেনটিটি। তাই না? প্রতিটি ভাষা তার ভাষাভাষী মানুষদের আইডেনটিটি। সো উই লিভ ইন অ্যা ফরেন কান্ট্রি অ্যাজ অ্যা সালাদ আইটেম। সালাদের মধ্যে প্রতিটি জিনিস যেমন তাদের নিজস্ব আইডেনটিটি নিয়ে থাকে, তাই না? তেমনই আমরা প্রতিটি মানুষ নিজের আইডেনটিটি নিয়ে প্রবাসে বাস করি এবং সেজন্য আমরা কাজ করি এবং এজন্য আমাদের ভাষাকে আমরা স্টাবলিস্ট করেছি।

এজন্য কষ্ট হয়েছে অনেক, কষ্ট তো হবেই। এখানে তো ভাষার জন্য বাঙালি জীবন দিতে পেরেছেন। ওখানে যদি আমাদের কষ্ট হয়, সেই কষ্টগুলো তো আমাদের করতেই হবে, হয়েছেও। ইউনেসকোর স্বীকৃতিটি আমি আনিনি, এনেছেন আমাদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম। তিনি জীবিত অবস্থায় আমাকে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছেন, তিনি যে মশালটি আমার হাতে দিয়ে গিয়েছেন, আমি মশালটি প্রজ্জ্বলিত করতে পেরেছি বিদেশে ও দেশে। যেদিন ইউনেসকো আমাদের ভাষাকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করল, সেই দিনটি এবং এরপর থেকেই তো আমাদের আনন্দ। সেদিনের কথাটি আমার মনে পড়ে। তখন আমি কানাডাতেই ছিলাম। যেদিন ঘোষণা করা হলো, বিশিষ্ট ব্যক্তিরা ছিলেন, শহরের মেয়ররা ছিলেন, পার্লামেন্টের লোকেরা ছিলেন।

আমরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের উদ্বোধন অনুষ্ঠান করেছি। বারবার বলা হচ্ছে, মিস্টার আমিনুল ইসলাম, ইউ আর দি ড্রাইভিং ফোর্স ফর দ্য এন্টায়ার প্রজেক্ট। এটি টু হানড্রেট থাউজেন্ড ডলারের একটি প্রজেক্ট ছিল। কিন্তু আমরা এই পরিমাণ টাকা জড়ো করতে পারিনি। তবে সরকার পুরো ফান্ডটি দিয়েছেন। আমরা ফান্ডটি আনতে পেরেছি। আমরা জমি এবং স্মৃতিস্মারকও তৈরি করতে পেরেছি। সেদিনটি তো অবশ্যই আনন্দের বিষয় তাই না? কারণ একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় কাজ প্রতিষ্ঠিত করতে পারা হলো হাফ ছেড়ে বাঁচা। তখন তো আমাদের বাংলা ও বাংলার জন্য আত্মদানের জন্য কোনো জনসচেতনতা ছিল না, আত্মতৃপ্তিই ছিল কেবল।

শুধু যে বাংলা মাতৃভাষা তা নয়, আমরা বাংলা হেরিটেজ নিয়েই কাজ করি। যেমন ধরেন পহেলা বৈশাখ। আমরা কী করেছি? আমরা যদি প্রবাসে বলি আজকে পহেলা বৈশাখ ডে তাহলে মানুষ বুঝবে না। এজন্য আমরা একে ‘বাংলা হেরিটেজ উইক’ হিসেবে ক্লেইম করেছি। এরপর কাজের সূত্রে বাংলা নতুন বছরের পহেলা মাসের পহেলা সপ্তাহ মানে বৈশাখের পহেলা সপ্তাহকে কানাডা সরকার বাংলা হেরিটেজ উইক হিসেবে ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে আমরা কানাডাতে বাংলা হেরিটেজ উইক সরকারীভাবে করেছি। এও আমার জন্য অত্যন্ত আনন্দের বিষয়। কিন্তু এই কাজটি বাংলাদেশ সরকার জানে না! এগুলো আমরা ইন্টিগ্রেট করেছি। এছাড়াও আমাদের অনেক অ্যাচিভমেন্ট আছে। একুশে উপলক্ষে আমরা যে মনুমেন্ট তৈরি করলাম সেখানে।

আমাদের টাকা-পয়সা তো কেউ দেয়নি। যা করেছি নিজেদের আয়ের টাকায়। আজ ২০ বছর পর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে ডেকে নিয়ে এলেন ও আমাকে বিমান ভাড়া দিয়ে নিলে এলেন। তিনি আমাকে একটি সম্মান দিচ্ছেন, এই সম্মান বিশ্বের সবার জন্য। এটিই আমার প্রাপ্তি। আমি যদি আজ পড়ালেখা করতাম, এই ২০ বছরে ২-৩টি পিএইচডি করতে পারতাম।

এসজি

Header Ad
Header Ad

৫৩ বছরেও দেশের মানুষ স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে পারেনি: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার হীন লক্ষ্যে পলাতক অবৈধ সরকার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান ভেঙে ফেলেছে। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরে আজও তাই এ দেশের মানুষ স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে পারেনি।’

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে গণমাধ্যম দেওয়া এক বাণীতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের পতনের পর এখন সুযোগ এসেছে বাংলাদেশের সব দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তি এবং জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথচলা নিশ্চিত করা এবং দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে সংহত করা। এটিই হচ্ছে স্বাধীনতার মূল চেতনা।

বলেন, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস আমাদের জাতীয় জীবনে নবীন সূর্যোদয়ের মধ্য দিয়ে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা। হাজার বছরের সংগ্রাম মুখর এ জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন বাংলাদেশের স্বাধীনতা। আজকের এই দিনে আমি দেশবাসী ও প্রবাসী বাংলাদেশীসহ সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

তিনি বলেন, এই স্বাধীনতা দিবসে আনন্দোজ্জ্বল মুহূর্তের মধ্যে প্রথমেই যে কথা মনে পড়ে, তাহলো এ দেশের অগণিত দেশপ্রেমিক শহীদের আত্মদান, আমি এ মহান দিনে তাদের গভীর শ্রদ্ধা জানাই। যাদের অবিস্মরণীয় আত্মদানে অর্জিত হয়েছে দেশমাতৃকার মুক্তি। মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তমসহ সব জাতীয় নেতার স্মৃতির প্রতি আমি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। যাদের জীবন মরণ লড়াইয়ে ৯ মাসে আমরা বিজয় লাভ করেছি সেইসব অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানের কথা জাতি কখনোই বিস্মৃত হবে না।

তিনি মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করা মা-বোনদের অবদানকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে বলেন, স্বাধিকার আর স্বাধীনতা সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে রক্তস্নাত পথে বিশ্ব মানচিত্রে উদ্ভাসিত হয় আমাদের মানচিত্র। এদিনে দেশমাতৃকার শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। তার ঐতিহাসিক ঘোষণায় সেই মুহূর্তে দিশেহারা জাতি পেয়েছিল মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার অভয়মন্ত্র।

একটি শোষণ, বঞ্চনাহীন, মানবিক সাম্যের উদার গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে এদেশের মানুষ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। দুর্ভাগ্যক্রমে গণতন্ত্রবিনাশী শক্তির চক্রান্ত এখনও থেমে নেই। বারবার ফ্যাসিবাদী, স্বৈরাচারী ও অবৈধ শক্তি আমাদের সে লক্ষ্য পূরণ করতে দেয়নি। দেশি-বিদেশি চক্রান্তের ফলে আমাদের গণতন্ত্র ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি হোঁচট খেয়েছে এবং স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হয়েছে।

তারেক রহমান বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তমকে চক্রান্তমূলকভাবে হত্যার পরে গণতন্ত্রের আপোসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সফল ও সার্থক নেতৃত্বে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ধারা সূচিত হলেও গণতন্ত্রের শত্রুদের কারণে স্থায়ী ও মজবুত গণতান্ত্রিক কাঠামো তৈরি করা সম্ভব হয়নি। একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার হীন লক্ষ্যে পলাতক অবৈধ সরকার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভেঙ্গে ফেলেছে। আমি দেশবাসীর সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে প্রার্থনা জানাই।

Header Ad
Header Ad

অবৈধ স্যাটেলাইট পে-চ্যানেল বন্ধে বিটিআরসির নির্দেশ

ছবি: সংগৃহীত

দেশে অনুমোদনহীনভাবে স্যাটেলাইট পে-চ্যানেল প্রদর্শন বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। সম্প্রতি, কিছু ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান (আইএসপি) ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম অনুমোদন ছাড়া পে-চ্যানেল সম্প্রচার করছে, যা দেশের প্রচলিত আইন লঙ্ঘন করছে।

এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে বিটিআরসি, এবং আগামী ২৯ মার্চের মধ্যে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের কাছ থেকে করণীয় সম্পর্কে মতামত চেয়েছে।

বিটিআরসির এনফোর্সমেন্ট অ্যান্ড ইন্সপেকশন শাখার উপপরিচালক মো. হাসিবুল কবির স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জানানো হয়, কিছু আইএসপি অনুমোদিত প্রযুক্তি ব্যবহার না করেই বিদেশি চ্যানেলের পরিবেশকদের ডিস্ট্রিবিউট করা পে-চ্যানেলগুলো পাইরেসির মাধ্যমে ক্লিন ফিডবিহীনভাবে ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে বাসা-বাড়িতে প্রদর্শন করছে। একই ধরনের কার্যক্রম কিছু ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মেও চলছে, যা দেশের আইন পরিপন্থী।

বিটিআরসি জানায়, এসব অনিয়মের ফলে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের (বিএসসিএল) মাধ্যমে বৈধ বিদেশি চ্যানেলের সম্প্রচার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং চ্যানেলের সংখ্যা কমছে।

বিটিআরসি জানিয়েছে, আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলোর এই কার্যক্রম বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ আইন, ২০০১-এর ৭৩ নম্বর ধারা এবং আইএসপি গাইডলাইনের অনুচ্ছেদ ৭.৬ এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এছাড়া, গাইডলাইনের সঙ্গে সংযুক্ত এপেনডিক্স-৪-এর ২(ডি)(এক্স) ধারা অনুযায়ী করা হলফনামারও বরখেলাপ হয়েছে।

এ পরিস্থিতিতে, পাইরেসি রোধ এবং ক্লিন ফিডবিহীন স্যাটেলাইট চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে (২৯ মার্চের মধ্যে) গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে বিটিআরসিকে অবহিত করতে বলা হয়েছে।

চিঠিটি আইএসপি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি এবং সব জাতীয়, বিভাগীয়, জেলা ও থানা পর্যায়ের আইএসপিদের পাঠানো হয়েছে।

বিটিআরসির এই কঠোর নির্দেশনার ফলে দেশে অনুমোদনহীনভাবে পে-চ্যানেল সম্প্রচারের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

Header Ad
Header Ad

ওয়াসিম হত্যা মামলায় নওফেল-নাসিরসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

ওয়াসিম হত্যা মামলায় নওফেল-নাসিরসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দ্বিতীয় শহীদ হিসেবে চিহ্নিত চট্টগ্রামের ওয়াসিম হত্যা মামলায় সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক মেয়র আ জ ম নাসির উদ্দীনসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারকের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।

গত ১৬ জুলাই বিকেল ৩টার দিকে চট্টগ্রামের মুরাদপুর এলাকায় ছাত্রদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সংঘর্ষ বাধে আন্দোলনকারী ও ছাত্রলীগের মধ্যে। এই সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন চট্টগ্রাম কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র এবং কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ওয়াসিম আকরাম।

ওয়াসিম কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তার বাবা সৌদি প্রবাসী শফিউল আলম। দুই ভাই ও তিন বোনের মধ্যে ওয়াসিম ছিলেন পরিবারের অন্যতম সদস্য।

ওয়াসিমের মা জোসনা আক্তার গত ১৮ আগস্ট চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ১৬ জুলাই বিকেল ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে ওয়াসিম আকরাম মুরাদপুরের বারকোড রেস্টুরেন্টের সামনে অবস্থান করছিলেন। তখন ছাত্র জনতার বৈষম্যবিরোধী শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলছিল।

এজাহারে আরও বলা হয়, আসামিদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ইন্ধনে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের ক্যাডাররা অস্ত্রশস্ত্রসহ আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায়। তারা মুহুর্মুহু বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে, লাঠিসোঁটা, হকিস্টিক, কিরিচ এবং আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হয়।

একপর্যায়ে, আসামিদের ছোড়া এলোপাতাড়ি গুলিতে ওয়াসিমের বুক ও নাভিতে গুলি লাগে। মাটিতে লুটিয়ে পড়ার পর দ্রুত তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আদেশের পর মামলার তদন্ত ও বিচার কার্যক্রমে নতুন মোড় নিতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এখন দেখার বিষয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কীভাবে আসামিদের গ্রেপ্তার ও মামলার বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

৫৩ বছরেও দেশের মানুষ স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে পারেনি: তারেক রহমান
অবৈধ স্যাটেলাইট পে-চ্যানেল বন্ধে বিটিআরসির নির্দেশ
ওয়াসিম হত্যা মামলায় নওফেল-নাসিরসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
বুধবার ভোরে সাভার-নবীনগর সড়কে যান চলাচল বন্ধ
৯০ দিনের মধ্যে দেশে স্টারলিংক চালুর নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে যা বললেন তামিম ইকবাল
অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান অব্যাহত থাকবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
জিএম সুবক্তগীন এর কর্মদক্ষতায় রেলের পূর্বাঞ্চলে বইছে সুবাতাস
ছায়ানটের সভাপতি সন্‌জীদা খাতুন মারা গেছেন
যারা ১০০ গাড়ি নিয়ে ক্যাম্পেইন করতে যায়, তারা কী করবে তা ভালো বুঝি: ফখরুল
‘আওয়ামী লিগ’ নামে নতুন দল গঠিত, নিবন্ধনের আবেদন ইসিতে
ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ১৫ নির্দেশনা
শপথ নিলেন আপিল বিভাগের নতুন দুই বিচারপতি
দেশে কোনো জরুরি অবস্থা জারি করা হয়নি: সেনাপ্রধান
১৩তম এনোবল এওয়ার্ড পেলেন মাওলা সোহরাব হোসাইন আতিকী  
আন্দোলনরত পোশাক শ্রমিকদের সচিবালয় অভিমুখে যাত্রা, পুলিশের বাধা
সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা
কন্যা সন্তানের বাবা হলেন ক্রিকেটার কে এল রাহুল
বাংলাদেশে এখনও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়নি: প্রধান উপদেষ্টা
এবার পুলিশের ৪৩ কর্মকর্তাকে বদলি