পানির অভাবে ১৫ বিঘা জমির বোরো চাষ ব্যাহত
কোনো নোটিশ ছাড়াই যশোরের চৌগাছা উপজেলায় একাধিক বোরো চাষির সেচ পাম্পের বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে কর্তৃপক্ষ। হঠাৎ করে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় প্রায় ১৫ বিঘা জমির বোরো ধান চাষ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা। আবাসিক মিটার থেকে সেচ পাম্পের সংযোগ দেওয়ায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে বলে জানায় বিদ্যুৎ অফিস।
চলতি বোরো মৌসুমে কৃষি উপকরণসহ সব কিছুর দাম প্রায় দ্বিগুণ। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও উপজেলার চাষিরা বোরো চাষ শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে মাঠে ধান রোপণের পর, তা পরিচর্যা ও প্রাথমিক সার দেওয়ার কাজ সম্পন্ন করেছেন অনেকেই। মাঠের পর মাঠ বোরো ক্ষেত এখন যেন সবুজের চাদরে ঢাকা পড়েছে। চলতি বোরো মৌসুমে এ জনপদের চাষিরা ব্যয় কমাতে নানা ধরনের পন্থা গ্রহণ করেছেন। তারই একটি হচ্ছে আবাসিক মিটার থেকে সেচ পাম্পে সংযোগ নেওয়া। আর এই সংযোগ নিয়ে এখন মহাবিপদে পড়েছেন একাধিক চাষি।
পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়র্ডের তারিনিবাস মহল্লার কৃষক আতিকুর রহমান, আমিনুর রহমান, নজরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর আলম, মিন্টু মিয়া, গফ্ফার আলী, বিপুল হোসেনসহ অনেকেই বোরো ধান চাষের ব্যয় কমাতে আবাসিক মিটার থেকে সেচ পাম্পে সংযোগ দেন।
হাজার হাজার টাকার তার কিনে তারা বাড়ির মিটার থেকে মাঠে বিদ্যুৎচালিত মিটারে এই সংযোগ নেন। ধান রোপণের পর প্রায় মাস পার হতে যাচ্ছে, হঠাৎ করেই গত ৪ ফেরুয়ারি বিদ্যুৎ অফিসের কর্মীরা গিয়ে সব মিটার থেকে বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
একটানা চার দিন জমিতে পানি দিতে না পারায় অনেক ধানক্ষেতে ফাটল দেখা দিয়েছে। দ্রুত পানি দিতে না পারলে সব ধান শুকিয়ে মারা যাবে বলে কৃষকরা জানান।
কৃষক আতিকুর, আমিনুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ডিজেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ডিজেলচালিত শ্যালো মেশিন দিয়ে এক বিঘা ধানে ব্যয় হবে অন্তত ১০ হাজার টাকা। পক্ষান্তরে বিদ্যুতে ব্যয় হবে তার অর্ধেক। ৫ কিংবা ১০ মোটর না আমরা সবাই দেড় মোটরে সংযোগ দিয়েছি এবং একটি মোটরের আওতায় মাত্র ২ থেকে সর্বোচ্চ ৪ বিঘা ধান আছে। সংযোগ অবৈধ জেনেও শুধু খরচ বাঁচাতে চাষিরা এই কাজটি করেছেন।
কিন্তু বিদ্যুৎ অফিস কোনো সতর্ক করা ছাড়াই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে। আমরা কৃষক, আমরা গরিব তাই আমাদের কষ্টের কথা কেউ বুঝতে চায় না।
চৌগাছা পল্লী বিদ্যুতের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী বালী আবুল কালাম আজাদ বলেন, আবাসিক মিটার থেকে সেচ পাম্প চালানো কখনই সম্ভব না, এতে সব কিছুই ঝুঁকিতে পড়বে। আমরা খবর পাওয়ার পর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছি।
এসএন