স্মার্টফোনের কার্যক্ষমতা ভালো রাখার ১০ উপায়

ছবিঃ সংগৃহীত
স্মার্টফোন এখন আর শুধু যোগাযোগের মাধ্যম নয়, বরং আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য সঙ্গী। তবে ফ্ল্যাগশিপ হোক বা বাজেট ফোন—যথাযথ ব্যবস্থাপনা না থাকলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ডিভাইসের পারফরম্যান্স কমতে থাকে। স্মার্টফোনের হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার উভয়ই সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারলে এটি দীর্ঘদিন ভালো পারফরম্যান্স দিতে পারে।
১. অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ মুছে ফেলা
নিয়মিত ব্যবহার না করলেও অনেকের ফোনে অপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন অ্যাপ ইনস্টল করা থাকে। এসব অ্যাপ ফোনের স্টোরেজ দখল করে রাখার পাশাপাশি ব্যাকগ্রাউন্ডে চালু থাকে। ফলে প্রসেসিং পাওয়ার ও ব্যাটারি খরচ হতে থাকে। ফোনের কার্যক্ষমতা ভালো রাখতে হলে কিছুদিন পরপর ইনস্টল করা অ্যাপের তালিকা পর্যালোচনা করে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপগুলো মুছে ফেলতে হবে। ফোনে প্রি-ইনস্টল করা অ্যাপগুলো মুছে ফেলা যায় না, আর তাই সেগুলো নিষ্ক্রিয় করে রাখতে হবে। এর ফলে সেগুলো ব্যাকগ্রাউন্ডে চালু থাকবে না।
২. স্টোরেজ ব্যবস্থাপনা
অপ্রয়োজনীয় ফাইল, অডিও, ভিডিও ও ডকুমেন্ট জমতে জমতে ফোনের স্টোরেজ পূর্ণ হয়ে যায়, যা ফোনের গতি কমিয়ে দেয়। আর তাই নিয়মিত ফাইল ম্যানেজার বা স্টোরেজ অপশন থেকে বড় ও অব্যবহৃত মিডিয়া ফাইলগুলো মুছে ফেলতে হবে। দীর্ঘদিন ব্যবহারের পর ফোন ধীরগতির হয়ে গেলে ফ্যাক্টরি রিসেট করার বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে।
৩. ফোনের সফটওয়্যার নিয়মিত আপডেট করা
নতুন সফটওয়্যারের আপডেট সাধারণত বাগ ফিক্স, সিকিউরিটি আপগ্রেড এবং পারফরম্যান্স উন্নত করে। তাই স্মার্টফোনের অপারেটিং সিস্টেম এবং অ্যাপগুলো সর্বদা আপডেট রাখা জরুরি।
৪. ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপস বন্ধ রাখা
অনেক অ্যাপ আছে যেগুলো মোবাইলে অনুমতি ছাড়াই ব্যাকগ্রাউন্ডে চালু থাকে, যা র্যাম এবং ব্যাটারি খরচ করে। বিভিন্ন স্ক্যানার ও Settings > Apps > Running apps থেকে অপ্রয়োজনীয় ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ বন্ধ করলে ভালো পারফরম্যান্স পাওয়া যায়।
৫. ফোনের স্টোরেজ পরিষ্কার রাখা
ফোনে যদি অনেক বেশি ছবি, ভিডিও বা অপ্রয়োজনীয় ফাইল জমে যায়, তাহলে ফোনের গতি কমে যায়। স্টোরেজে ২০-৩০% সর্বদা খালি রাখার চেষ্টা করা উচিত। এতে করে মেমরির ওপর চাপ কম থাকে। Google Files বা SD Maid-এর মতো ক্লিনার অ্যাপ ব্যবহার করে মোবাইলের কিছু স্টোরেজ খালি রাখা উচিত।
৬. লাইটওয়েট (Lite) অ্যাপ ব্যবহার করা
যেসব অ্যাপের লাইট ভার্সন আছে (যেমন : Facebook Lite, Messenger Lite, YouTube Go), সেগুলো ব্যবহার করুন। এগুলো কম র্যাম ও স্টোরেজ খরচ করে, ফলে ফোন দ্রুত কাজ করে।
৭. নিয়মিত ফোন রিস্টার্ট করা
অনেক দিন ফোন বন্ধ না করলে র্যাম এবং ক্যাশে মেমোরি জমে স্মার্টফোন ধীরগতির হতে পারে। তাই প্রতি সপ্তাহে এক-দুবার ফোন রিস্টার্ট করলে ফোনের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
৮. অপ্রয়োজনীয় অ্যানিমেশন ও ইফেক্ট বন্ধ করুন
ফোনের অ্যানিমেশন এবং ট্রানজিশন ইফেক্টগুলো দেখতে সুন্দর লাগলেও এগুলো র্যাম এবং প্রসেসরের ওপর চাপ ফেলে। Settings > Developer options > Window animation scale থেকে এগুলো কমিয়ে দিলে ফোন আরো দ্রুত কাজ করে।
৯. কম উইজেট ও সাধারণ ওয়ালপেপার ব্যবহার করুন
অনেক ব্যবহারকারী মোবাইলে প্রয়োজনের অতিরিক্ত উইজেট ব্যবহার করে, যা ব্যাটারি ও র্যাম খরচ করে। এ ছাড়া লাইভ ওয়ালপেপার মোবাইলের পারফরম্যান্সের ওপর প্রভাব ফেলে। হোম স্ক্রিনে শুধু দরকারি উইজেট রাখা এবং সাধারণ ওয়ালপেপার ব্যবহার করা মোবাইলের পারফরম্যান্সের ঠিক রাখতে সহায়তা করে।
১০. ফোনকে অতিরিক্ত গরম হতে দেবেন না
উচ্চ তাপমাত্রা ফোনের ব্যাটারি ও প্রসেসরের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়। চার্জ দেওয়ার সময় ভারী গেম বা অ্যাপ চালালে মোবাইল অনেক গরম হয়। তাই চার্জ দেওয়ার সময় ভারী গেম বা অ্যাপ থেকে বিরত থাকা উচিত। এ ছাড়া সরাসরি রোদে বেশিক্ষণ ফোন না রাখা উচিত।
এই ১০টি নিয়ম মেনে চললে আপনার স্মার্টফোন দীর্ঘদিন ভালো পারফরম্যান্স দিতে পারে এবং ব্যাটারিও বেশি দিন টিকতে পারে!
