রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ | ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

বঙ্গবন্ধুর পল্লী উন্নয়ন দর্শন: আমাদের বাস্তবতা

জল-জমি-জনতার দেশ, আমাদের এই বাংলাদেশ। অপার সম্ভাবনার এই দেশটিকে ঘিরে ছিল বঙ্গবন্ধুর হাজারো স্বপ্ন। দুঃখী, মেহনতি মানুষের মুখে হাসি ফুটানোর লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন। ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু ছিলেন দূরদর্শী মহাচিন্তাশীল ব্যক্তিত্ব। তিনি বলতেন, ‘আমার জীবনের একমাত্র বাসনা বাংলার মানুষ যেন পেট ভরে খেতে পায়,পরনে কাপড় পায়, উন্নত জীবনের অধিকারী হয়। আমাদের সংবিধানের ১৪ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রের অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব হইবে মেহনতি মানুষকে কৃষক ও শ্রমিককে এবং জনগণের অনগ্রসর অংশসমূহকে সকল প্রকার শোষণ হইতে মুক্তি দান করা।’

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, পল্লীবাসীকে গুরুত্ব দিয়ে পল্লী প্রকৃতিতে লিখেছিলেন, ‘গ্রামবাসীর প্রতি অবহেলা গেঁয়ো ব্যবস্থা। শহরবাসীর অহমিকা যাতে মিলতে দেয় না, ভেদকে জাগিয়ে রাখে।’ নোবেল বিজয়ী সুলজের ভাষায়–একবার যদি বিনিয়োগ সুবিধা ও কার্যকরী উদ্দীপনার সুযোগ সৃষ্টি হয় তাহলে কৃষকেরা বালিকে সোনায় রূপান্তর করবে। কথাটি নিরেট সত্য। পল্লীর কৃষককে উজ্জীবিত করার অপূর্ব কথামালা সুলজের কথায় লুকিয়ে রয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন–‘সরকারি কর্মচারীদের জনগণের সঙ্গে মিশে যেতে হবে। তাঁরা জনগণের খাদেম, সেবক, ভাই। তাঁরা জনগণের বাপ, জনগণের ভাই, জনগণের সন্তান। তাদের এই মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে।’ তিনি আরও বলেছিলেন, ‘সাত কোটি বাঙালির ভালোবাসার কাঙাল আমি। আমি সব হারাতে পারি, কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা হারাতে পারব না। সমস্ত সরকারি কর্মচারীকেই আমি অনুরোধ করি, যাদের অর্থে আমাদের সংসার চলে তাদের সেবা করুন।’

বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত সংবিধানের ১৩ (খ) অনুচ্ছেদে সম্পদের মালিকানার অন্যতম খাত হিসেবে সমবায়কে স্বীকৃতি দেয়া হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধুমাত্র সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিয়েই সমবায়কে সীমাবদ্ধ রাখেননি। তিনি পল্লী উন্নয়নের লক্ষ্যে এবং শোষিত মানুষের নায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য দেশে প্রথম পষ্ণবার্ষিকী পরিকল্পনায় সমতাভিক্তিক উন্নয়ন দর্শনের আওতায় সমবায়কে অন্যতম কৌশলিক হাতিয়ার হিসেবে বিবেচনার সুযোগ করে দিয়েছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন অগ্রযাত্রা মিশে আছে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের পথ ধরে। বঙ্গবন্ধু দেশের পল্লী উন্নয়ন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সমাজতন্ত্রে উত্তরন ও বহুমুখী সমবায় প্রতিষ্ঠার বিপ্লবকে একসঙ্গে গ্রথিত করেছেন। সরকারের বিশেষ প্রকল্প একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের মাধ্যমে এ পর্যন্ত অসংখ্য অসহায়, নিঃস্ব পরিবার ঠিকানা পেয়েছে। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে দেশ আজ বহুদূর এগিয়ে। বঙ্গবন্ধুর দর্শন ছিল ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, শোষণমুক্ত, গ্রামবান্ধব স্বনির্ভর গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। তাঁর জীবন দর্শন ছিল এদেশের গণমানুষের সুখ সমৃদ্ধি নিশ্চিত করা। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্টায় এগিয়ে আসতে হবে আমাদের সকলেরই। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পল্লী উন্নয়নে বলিষ্ঠ ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।

এবারের ডিসি সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী টেকসই পল্লী উন্নয়নে আমার শহর আমার গ্রাম বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করেন। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনসহ ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত দেশে পদার্পনের লক্ষ্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গঠনে কাজ করছে সরকার। বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকার প্রত্যন্ত পল্লী এলাকায় নাগরিক স্বাচ্ছন্দ্য ও স্বাচ্ছল্য পৌঁছে দেয়ার জন্য আমার গ্রাম আমার শহর এর যে ধারনা ব্যক্ত করেছে তা রুপায়নে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ কার্যকর ভূমিকা রাখবে এটা আশা করা যায়। জাতির পিতার এই সমবায়ভিক্তিক গ্রাম উন্নয়ন ভাবনায় সমবায় অধিদপ্তর কর্তৃক গ্রামের বৈশিষ্ট্য সমুন্নত রেখে গ্রামীণ সম্পদের সুষ্ঠু ও সুষম ব্যবহার নিশ্চিত করে সকল শ্রেণি পেশার জনগণকে অন্তর্ভুক্ত করে সমবায় সমিতি গঠনের মাধ্যমে প্রতিটি গ্রামে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সমবায়ভিক্তিক বঙ্গবন্ধু মডেল গ্রাম প্রতিষ্ঠার পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী এ দেশের কৃষি ও পল্লী উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর দর্শন লালন করে অংশগ্রহণমূলক প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গড়ে তোলার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন। বাংলাদেশ আজ বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর পল্লী উন্নয়নের পথ ধরে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার দিক নির্দেশনায় কাজ করে যাচ্ছে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে সম্পদের যথাযথ ব্যবহার ও মানব সম্পদ উন্নয়নে গ্রামে একটি ছাতা প্রতিষ্ঠানের চিন্তা বার্ড শুরু করে। পল্লী উন্নয়নে বার্ডের গবেষণাও বহুল প্রশংসিত।

সমগ্র বিশ্ব আজ ভয়াবহ কোভিড-১৯ ভাইরাসজনিত মহামারির কবলে বিপর্যস্ত। ইতিমধ্যে আমাদের দেশে এর প্রকোপ অনেকটাই কমেছে। করোনা কমলেও এর ক্ষত এবং নেতিবাচক প্রভাব বয়ে চলবে বহুদিন। অর্থনেতিক ও সামাজিক প্রভাব ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। অর্থনেতিক ও সামাজিক অস্থিরতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ইতিমধ্যে লাগামহীন নিত্যপণ্যের দামের অস্থিরতা স্বাভাবিক জীবনকে দুর্বিষহ করেছে। নিম্নবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণির একবেলা পেটপুরে খাবার খাওয়া এখন যেন বিলাসিতায় রূপ নিয়েছে। করোনাকালে পল্লীর জনগণের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা প্রতিকূলতায় থাকায় তাদের আর্থসামাজিক উন্নয়ন তেমনটা আশা করা যাচ্ছে না। দারিদ্র্য প্রবণ জেলাগুলোতে নিত্যপণ্যের চড়াদামের প্রভাবে সংকট আরও ঘনীভূত হয়েছে। তারপরও সরকার নানাভাবে আর্থিক প্রনোদনার মাধ্যমে সংকট কাটানোর চেষ্টা করছে।

বঙ্গবন্ধু প্রনয়ণ করেছিলেন বাংলাদেশ উপযোগী শোষিতের গণতন্ত্র, কোনো আমদানিকৃত সমাজতন্ত্র নয় অথচ আত্মনির্ভরশীলতার অর্থনীতির সোপানযাত্রা। ফিদেল ক্যাস্ত্রো ঠিকই এক মহান মানুষকে চিনেছিলেন তিনি দৃপ্তকন্ঠে উচ্চারণ করেছিলেন, ‘আমি হিমালয় দেখিনি, শেখ মুজিবকে দেখেছি। সাহস ও ব্যক্তিত্বে মানুষটি হিমাদ্রি সদৃশ।’ বঙ্গবন্ধুর পল্লী উন্নয়ন ভাবনার কেন্দ্রে ছিল কৃষি উৎপাদন, আয় বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান। তাঁর উন্নয়ন দর্শনের আলোকে নীতি কৌশল প্রণয়ন করা গেলে জাতি, সমাজ, রাষ্ট্র উপকৃত হবে। তিনি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন, যা ছুঁয়েছে বর্তমান টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ঠে। তিনি উপলব্ধি করেছিলেন–কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে, অর্থনীতি হবে স্বনির্ভর। দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত পল্লী এলাকা উন্নত ও সমৃদ্ধ হলে ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ দেশের স্বপ্ন পূরণের তালিকায় যথাযোগ্য স্থান করে নিবে, এটাই প্রত্যাশা।

লেখক: সহকারী সম্পাদক, ঢাকাপ্রকাশ; লেখক ও গবেষক

এসএ/

Header Ad

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল

ছবি: সংগৃহীত

একইসঙ্গে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করছেন জান্নাতুল ফেরদৌস নামের এক নারী। স্ত্রীর অধিকার থেকে বঞ্চিত করেননি দুই স্বামীর কাউকেই। গোপনে মন জয় করে চলছিলেন দুই স্বামীর। প্রায় দুই বছর দুই স্বামীর সংসার করার পর অবশেষে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

চার বছরের প্রেমের সম্পর্কের পর ২০২২ সালের ২৭ অক্টোবর নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে হলফনামার মাধ্যমে গোপনে বিয়ে করেন রাজবাড়ী সদরের আলীপুর ইউনিয়নের ইন্দ্রনারায়ণপুর গ্রামের আবু হানিফ শেখের ছেলে ইউটিউবার সাগর শেখ ও আলীপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম ভূঁইয়ার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস।

বাবা, মা ও ভাই প্রবাসে থাকায় বাবার বাড়িতে একাই বসবাস করতেন জান্নাতুল। সেখানে যাতায়াত করতেন স্বামী সাগর শেখ। সংসার জীবন ভালোই চলছিল এ দম্পতির। হঠাৎ জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় শ্বশুরবাড়ি যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায় সাগরের। এরই মধ্যে প্রথম বিয়ের কথা গোপন রেখে পরিবারের সিদ্ধান্তে অন্য এক যুবককে দ্বিতীয় বিয়ে করেন জান্নাতুল।

এদিকে স্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের বাড়িতে তুলে না নেয়ায় শ্বশুরবাড়ি গিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে নিয়মিত সময় কাটান জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। প্রথম স্বামী সাগরের দাবি, প্রায় দুই বছর ধরে তার সঙ্গেও স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ঠিক রেখে চলছিলেন জান্নাতুল।

স্ত্রীর পরিবার তাকে মেনে না নেয়ায় তার বোনের বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে একান্তে সময় কাটাতেন স্বামী-স্ত্রী। চলতি মাসের ২ নভেম্বর তারা একসঙ্গে নিজেদের দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকী পালন করেছেন বলেও দাবি করেন সাগর।

তবে দুই সপ্তাহ আগে স্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় স্বামীর ঘনিষ্ঠতার বিষয়ে জানতে পারেন সাগর। আর এতেই বাঁধে বিপত্তি। তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন জান্নাতুল। এখন দ্বিতীয় স্বামী নিয়েই সংসার করতে আগ্রহী তিনি। বাধ্য হয়ে স্ত্রীকে ফিরে পেতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দায়েরের পাশাপাশি আদালতে মামলা করেছেন সাগর।

সাগর শেখ বলেন, জান্নাতুল ও আমার বিয়ের বিষয়টি জান্নাতুলের মা ও বোন জানতো। বিয়ের পর আমাদের সংসার জীবন ভালোই কাটছিল। তবে হঠাৎ করে জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় তাদের বাড়িতে আমার যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের বিয়ের চার মাসের মাথায় আমি ভিডিও কন্টেন্ট তৈরির কাজে কয়েকদিনের জন্য রাজবাড়ীর বাইরে যাই।

কাজ থেকে এসে শুনি আমার স্ত্রী জান্নাতুল অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করেছে। আমি আমার স্ত্রীকে প্রশ্ন করলে সে বলে, ‘পরিবারের চাপে বিয়ে করেছি। ওই ছেলের সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক হয়নি। আমি তোমার স্ত্রী আছি, তোমারই থাকবো। আমার আম্মু দেশে আসলে আমি তোমার কাছে চলে আসবো।’

সাগর বলেন, ‘আমি জান্নাতুলদের বাড়ি যাতায়াত করতে না পারার কারণে বিভিন্ন সময় আমরা রাজবাড়ী শহরে আমার বোনের বাসায় ঘনিষ্ঠ সময় কাটাতাম। ওর কলেজে আনা-নেয়াসহ সবকিছু আমিই করতাম। এমনকি গত ২ নভেম্বরও আমরা আমার বোনের বাসায় আমাদের দ্বিতীয় বিবাহ বার্ষিকী পালন করেছি।

তবে বিবাহ বার্ষিকী পালনের দুদিন পরে আমি জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে ওই ছেলের (দ্বিতীয় স্বামীর) ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চলছে। ওই ছেলে নিয়মিত জান্নাতুলের বাবার বাড়িতে এসে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সময় কাটাচ্ছে। এ বিষয়ে আমি জান্নাতুলকে প্রশ্ন করলে সে আমাকে গালাগালি করে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এক পর্যায়ে সে আমার সঙ্গে সংসার করবে না বলেও জানায়।’

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি জান্নাতুলের মা প্রবাস থেকে দেশে ফিরেছে। তিনিও এখন আমাকে মেয়ের জামাই হিসেবে অস্বীকার করছেন। অথচ তার মেয়ের সঙ্গে আমার প্রেম থেকে শুরু করে বিয়ে পর্যন্ত সবকিছুই তিনি জানতেন।

এখন বাধ্য হয়ে আমি আমার স্ত্রীকে ফিরে পেতে আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে গত ১১ নভেম্বর লিখিত অভিযোগ করেছি। এছাড়া ১৭ নভেম্বর রাজবাড়ীর বিজ্ঞ ১নং আমলি আদালতে মামলা করেছি।’

সাগর আরও বলেন, ‘আমাকে ডিভোর্স না দিয়ে আমার স্ত্রী অন্য আরেকজনকে বিয়ে করে আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সে আমাকেও ম্যানেজ করে চলেছে, একইভাবে তার দ্বিতীয় স্বামীকেও ম্যানেজ করে চলেছে।

এটা আইন ও ধর্মীয় দুই দিক থেকেই অপরাধ। এছাড়া আমি এ পর্যন্ত আমার স্ত্রীর পেছনে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করেছি। তারপরও আমি আমার স্ত্রীকে ফেরত চাই। তাকে আমি আমার জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসি।’

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজী হননি জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। তবে তার দাবি, জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে তিনি জানতেন। সাগরের সঙ্গে বিয়ের বিষয়টি তিনি জানতেন না।

জান্নতুলের দ্বিতীয় স্বামীর বাবা বলেন, ‘কোন এক সূত্রে আমার শ্বশুর জান্নাতুলদের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে তাকে পছন্দ করে। পরে আমি গিয়ে তার বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দিলে বিয়ের দিন ধার্য হয়। বিয়ের আগের দিন সাগর নামে এক ছেলে আমার ছেলেকে ফোন করে বলে জান্নাতুলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক আছে।

সে জান্নাতুলের সঙ্গে নিজের একটি ছবিও আমার ছেলেকে পাঠায়। এরপর আমি ওই এলাকায় আমার আত্মীয়দের কাছে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের কোন সম্পর্ক ছিল না। এছাড়া জান্নাতুলকেও আমি সরাসরি প্রশ্ন করলে সেও সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করে।

পরে ঘরোয়া আয়োজনে জান্নাতুলের সঙ্গে আমার ছেলের বিয়ে হয়। এখন সাগর নামে ছেলেটি জান্নাতুলকে তার স্ত্রী হিসেবে দাবি করছে। আমি যতদূর জেনেছি সাগরের স্ত্রী ও সন্তান আছে। এখন বিষয়টি আইনগতভাবেই সমাধান হবে।

আর জান্নাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে কথা বলতে তার বাবার বাড়িতে গেলে ভেতরে ঢোকার অনুমতি মেলেনি।’

বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে তার মা হাচিনা বেগম বলেন, ‘সাগরের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে হয়েছিল৷ তবে বিয়ের দুই মাসের মাথায় তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। আমার মেয়ে তো ছোট বুঝে নাই, যে কারণে সেসময় ওরা ডিভোর্সের কাগজ ছিঁড়ে ফেলেছে। এর ৪/৫ মাস পরে আমার মেয়ের আবার বিয়ে হয়েছে। সাগর আমার মেয়েকে চাপে ফেলে এতোদিন তার সঙ্গে সময় কাটাতে বাধ্য করেছে।’

আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক জানান, ‘সাগর ও জান্নাতুলের বিবাহ বিচ্ছেদ হলে তার নোটিশের একটি কপি ইউনিয়ন পরিষদে আসার কথা। এরকম কোন কপি কখনো পাননি তারা।’

তিনি বলেন, ‘সাগর আমার ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করেছে। আমিও খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি সাগর জান্নাতুলের প্রথম স্বামী। সে সাগরকে তালাক না দিয়েই বিয়ের চার মাসের মাথায় অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করে। প্রায় দুই বছর সে চালাকি করে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করেছে। সাগরের কাছ থেকে জান্নাতুল অনেক টাকা-পয়সা খেয়েছে বলেও আমি জানতে পেরেছি।’

আবু বক্কার বলেন, ‘সাগরের অভিযোগের ভিত্তিতে আমি জান্নাতুলের বাবাকে নোটিশের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদে ডাকি। তবে নোটিশ পেয়ে তিনি তার ছোটভাই ও তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামকে সঙ্গে নিয়ে আমার বাড়িতে এসে বলেন, আমি যেন পরিষদে বসে বিষয়টি সমাধান করে দেই। তবে এর ১/২ দিন পরে তিনি জানান, এ বিষয়ে তারা বসতে চান না।

আইনগতভাবে তারা বিষয়টি সমাধান করতে চান। পরে আবার তারা বসতে সম্মত হলে জান্নাতুল ও তার বাবা এবং তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামসহ পরিষদের অন্য সদস্যদের নিয়ে বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ইউনিয়ন পরিষদে বসেছিলাম। সাগরও সেখানে ছিল। তবে সেখানে জান্নাতুল বলে দিয়েছে সে কোনভাবেই সাগরের সঙ্গে ঘর সংসার করবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পুরুষ শাসিত সমাজে নারীরা নির্যাতিত হয়। কিন্তু ছেলেরা যে কতোটুকু নির্যাতিত হয় তা এই সম্পর্কের জের দেখলে বোঝা যায়। আমাদের সমাজে ছেলেরা আরও বেশি নির্যাতিত হচ্ছে। সেটা নীরবে নিভৃতে ছেলেরা সহ্য করে যাচ্ছে। আমি আশা করবো আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা বিষয়টি তুলে ধরবেন।

আপনাদের সংবাদের মাধ্যমে মানুষ যাতে সচেতন হতে পারে। আজকে আমার ইউনিয়নে এমন ঘটনা ঘটেছে। আর কোন ইউনিয়নে যেন এমন ঘটনা কোনদিন না ঘটে।’

Header Ad

শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

২৪ এর গনঅভূ্থানে ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী, শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে যান বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন।

এ সময় মোবাইল ফোনে লাউডস্পিকারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা.শফিকুর রহমান বলেন, আব্দুল্লাহ দেশের জন্য মানুষের জন্য মানবতার কল্যাণের জন্য জীবনকে উৎস্বর্গ করে আল্লাহর দরবারে চলে গেছেন, আল্লাহ তাকে শহীদ হিসাবে কবুল করুন। শহীদরা মরে না। তারা আল্লাহর জীম্মায় জীবন্ত থাকে। এ সময় শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন তিনি।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর ১২ টার দিকে যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার বড় আঁচড়া গ্রামে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন আব্দুল্লাহর বাড়িতে গিয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের খোঁজ খবর নেন,কবর জিয়ারত করেন এবং তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করেন।

এর আগে তিনি নাভারণ দারুল আমান ট্রাষ্টে ওলামা সম্মেলনে যোগদান করেন। পরে ২০১৬ সালে গুম হওয়া ইসলামি ছাত্র শিবিরে নেতা রেজোয়ানের বাড়িতে যান এবং খোঁজ খবর ও সমবেদনা জানান।

এসময় তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মৃত্যু বরনকারী সকলে ন্যায় বিচার পাবেন বলে পরিবারের সদস্যদের সান্তনা দেন। এবং গনঅভূ্থানে নিহত সকল পরিবারের সাথে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলাম আছে থাকবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য মাওলানা আজিজুর রহমান, যশোরের জেলা আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা গোলাম রসূল, সাবেক জেলা আমীর মাওলানা হাবীবুর রহমান, জেলা জামায়াতের নেতা মাওলানা আবু জাফর, মাওঃ শিহাব উদ্দিন শার্শা থানা আমীর রেজাউল ইসলাম, সেক্রেটারী মাওলানা ইউসুফ আলী ও ঝিকরগাছা থানা আমীর মাওলানা আসাদুল আলম প্রমূখ।

Header Ad

বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

দিনাজপুরের বিরামপুরে বিশনি পাহান (৫৫) নামের এক আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের ময়না মোড় এলাকার ধানক্ষেত থেকে ওই নারীর হাতবাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত বিশনি পাহান উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের বেণুপুর গ্রামের সাধন পাহানের মেয়ে।

নিহতের ভাই চরকা পাহান বলেন, আমার ছোট বোনের স্বামী বিশনি পাহানকে ছেড়ে চলে গেছেন। সে প্রতিরাতেই নেশা করতো। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই আমার বাড়িতে থাকতো আমার বোন। আমার বোন এলাকায় মানুষের জমিতে কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। শুক্রবার বিকেলে এলাকার এক ব্যক্তির জমিতে ধান কাটার কাজ শেষ করে আর বাড়িতে ফেরেননি। রাতে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি। শনিবার সকালে ধানক্ষেতে হাতবাঁধা অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়।

বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক জানান, এলাকাবাসীর দেওয়া খবরে ঘটনাস্থল থেকে আদিবাসী এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে তাকে কে বা কাহারা হত্যা করেছে। তদন্ত করলেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল
শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন
বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার
বিএনপির কাঁধে অনেক দ্বায়িত্ব: তারেক রহমান
'জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিত'- তোফায়েল আহমেদ
৩ মাসে জ্বালানি খাতে সাশ্রয় হয়েছে ৩৭০ কোটি টাকা : জ্বালানি উপদেষ্টা
জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি
দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা
অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি