শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫ | ২৮ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

ঝরে পড়া শিক্ষার্থী থেকে ডিজিটাল বিভাজন: শিক্ষার ক্ষতি কতটুকু

মাধ্যমিক পর্যায়ে ৪৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর ঝরে পড়ার একটি খবর বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, যা গভীর উদ্বেগজনক। উচ্চমাধ্যমিক পর্যায় গণনায় নেওয়া হলে ঝরে পড়ার হার আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা। করোনাকালে অভিভাবকের আয় কমে যাওয়ার পাশাপাশি দারিদ্রের প্রকোপ শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার অন্যতম কারণে হলেও এ ক্ষেত্রে শিক্ষাব্যয়ের অতিমাত্রায় উল্লম্ফনও কম দায়ী নয়। সমাজের দরিদ্র ব্যক্তিটিও চান তার সন্তান লেখাপড়া করুক; কিন্তু শিক্ষার অসামঞ্জস্য ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় কম আয়সম্পন্ন পরিবারগুলো এ ধাক্কা সামলাতে পারছে না বলে ঝরে পড়ার ঘটনা ঘটছে।

আর্থিক অসঙ্গতির পাশাপাশি বাল্যবিয়ে ও কুসংস্কারসহ আরও অনেক সমস্যাও রয়েছে। করোনাকালে এই হার বেড়েছে এবং মূলত মেয়ে শিক্ষার্থীরা এর শিকার হয়েছে। সম্প্রতি প্রত্যন্ত অঞ্চলের কয়েকটি বিদ্যালয় পরিদর্শন করে তার সত্যতা পেয়েছি। সাতক্ষীরা শ্যামনগর উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং যশোরের কেশবপুরের কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ঘুরে একই চিত্র দেখতে পেয়েছি–করোনার পর বহু মেয়ে শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আর আসছে না। এক বালিকা বিদ্যালয়ে ৭১ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৫৯ জন বিদ্যালয়ে আসছে, অর্থাৎ ২২ জন শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে। শিক্ষকরা মনে করছেন, তারা সবাই বিয়ে করে ফেলেছে। হতাশার বিষয় হলো–আইনগত বিধিনিষেধ থাকার পরও দেশে বাল্যবিয়ে ও শিশুশ্রম বন্ধ করা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত সমস্যার সমাধান খুঁজতে হবে, তা না হলে শিক্ষাবঞ্চিতরা দেশের জন্য বোঝা হয়ে উঠতে পারে।

শিক্ষার্থীদের স্কুলমুখী করা ও ধরে রাখার জন্য সরকার প্রতিবছর উপবৃত্তিসহ বিভিন্ন খাতে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করছে। পাশাপাশি বিনামূল্যে বই ও খাবার দেওয়া হচ্ছে। এরপরও মাধ্যমিকসহ বিভিন্ন পর্যায়ে এত অধিকসংখ্যক শিক্ষার্থী কেন ঝরে পড়ছে, এ প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে শিক্ষাকে আরও এগিয়ে নেওয়ার বিকল্প নেই। এ অবস্থায় মাধ্যমিকসহ বিভিন্ন পর্যায়ে বিপুলসংখ্যক ছাত্রছাত্রীর শিক্ষাব্যবস্থা থেকে ছিটকে পড়ার বিষয়টি মেনে নেওয়া কষ্টকর। এর আগে শিক্ষাখাত নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের পর্যালোচনামূলক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল বাংলাদেশে মোট শ্রমশক্তির সাড়ে ৮৮ শতাংশই অনানুষ্ঠানিক খাতে কাজ করে। মূলত মাধ্যমিক ও উচচমাধ্যমিক পর্যায়ে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীরাই এ শ্রমশক্তির সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। এটি রোধ করা না গেলে শিক্ষাক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনের স্বপ্ন সুদূরপরাহত থেকে যাবে। দেশের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে এ পর্যন্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা, গবেষণা ও কথাবার্তা কম হয়নি, যার অধিকাংশই অব্যস্থাপনা, অদূরদর্শিতা, দুর্নীতি ও রাজনীতিকরণের ঘূর্ণাবর্তে হারিয়ে গেছে।

মাধ্যমিকসহ বিভিন্ন পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে এ বৃত্ত থেকে বের হতে হবে, একইসঙ্গে কার্যকর উদ্যোগ ও পদক্ষেপ গ্রহণও জরুরি। সারাদেশের লাখ লাখ নিম্নবিত্ত পরিবার আর্থিক দূরবস্থার কারণে সংকটে পড়েছেন। টান পড়েছে সংসারের খরচে। আয় না বাড়লেও পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ব্যয়। করোনাকালেই বিনোদন, পোশাক ও প্রসাধনীতে ব্যয় কমিয়েছে নিম্ন-মধ্যবিত্তরা। এবার হাত দিতে হচেছ খাবারে। সেটিতেও তাল মেলাতে না পারলে সন্তানের পড়াশুনা বন্ধ করে পাঠানো হচেছ কাজে। করোনার আর্থক প্রভাব এখানে কাটিয়ে উঠতে পারেনি নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা। এরই মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল বেড়ে যাওয়ায় তাদের ক্ষেত্রে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে দেখা দিয়েছে। ফলে একদিকে যেমন বাড়ছে ঝরে পড়া শিক্ষার্থী। অন্যদিকে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীই পড়াশুনা শেষ না করেই প্রবেশ করছে কর্মক্ষেত্রে।

বাংলাদেশে ৩ কোটি ৭০লাখ শিশুর পড়াশোনা ব্যাহত হয়েছে করোনায়। ইউনিসেফ ও বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তায় ‘গ্লোবাল এডুকেশন এভিডেন্স অ্যাডভাইজারি প্যানেলে’র নতুন এক প্রতিবেদনে বলা হয় নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশ এবং নিম্ন আর্থ-সামাজিক অবস্থানে থাকা শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উচচ আয়ের দেশগুলোর তুলনায় স্কুলগুলো গড়ে বেশিদিন বন্ধ থাকায় শিক্ষাার্থীরা প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ বলতে গেলে পায়নি বা পেলেও খুব পেয়েছে। করোনার কারণে দীর্ঘ দেড় বছর দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরাসরি শ্রেণির কাজ বন্ধ ছিল। এর কারণে শিক্ষার্থী বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বিষয়ের শিখন ঘাটতি নিরূপণ করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ২০২১ শিক্ষাবর্ষের অষ্টম শ্রেণির অর্থাৎ ২০২২ শিক্ষাবর্ষে নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বিষয়ে শিখন ঘাটতি নিরূপনে মাধ্যমিক ও উচচশিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনায় একটি গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিট (বেদু)। মূল গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার আগে ৩০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাইলট কার্যক্রম পরিচালনা করার কথা। পাইলট কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ৩০টি প্রতিষ্ঠান তালিকা করেছে বেদু। এসব প্রতিষ্ঠানের ২০ জন শিক্ষার্থীকে অনলাইন পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। আর এ প্রতিষ্ঠানগুলোতে এ পাইলট কার্যক্রম পরিচালনার ব্যবস্থা নিতে অধ্যক্ষদের নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচচ শিক্ষা অধিদপ্তর।

নির্বাচিত প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান ও জেলা-উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। একইসাথে পাঠানো হয়েছে শিখন ঘাটতি নিরূপনের পাইলট কার্যক্রমের নির্দেশিকা। এই গবেষণা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে শিক্ষক প্রশ্নোত্তরিকা এবং শিক্ষার্থীদের অনলাইন পরীক্ষার জন্য বিষয়ভিত্তিক (বাংলা, ইংরেজি, গণিত) প্রশ্নপত্র তৈরি করা হয়েছে। গবেষণার মূল কার্যক্রমে যাওয়ার আগে বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিট আইএলসি ল্যাব সুবিধা আছে এমন ৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাইলট কার্যক্রমের উদ্যোগ গ্রহন করেছে। এ পাইলট কার্যক্রমের তথ্য সংগ্রহের জন্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য গুগল ফর্ম ব্যবহার করা হবে। পাইলট কার্যক্রমটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ বা প্রধান শিক্ষক এবং আইএলসি ল্যাবের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের জন্য একটি নির্দেশনা তৈরি করা হয়েছে।

শিখন ঘাটতি বলতে আমরা সাধারণত বুঝে থাকি একজন শিক্ষার্থীর একটি নির্দিষ্ট শ্রেণিতে কি কি শিখতে পারার কথা এবং বাস্তবে যা শিখেছে তারমধ্যে যে, ব্যবধান সেটি। জ্ঞানের ঘাটতি হচ্ছে শিক্ষার্থীরা জানেনা কিংবা সঠিক তথ্য জানেনা। দক্ষতার ঘাটতি বলতে বুঝায় সাধারন দক্ষতাগুলো বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রাকটিস করেনি। মুটিভেশন গ্যাপ হচ্ছে শিক্ষার্থীরা তাদের জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধির কোনো প্রচেষ্টা গ্রহণ করতে উদ্যোগী নয়। শিক্ষার পরিবেশ উপযোগী অবস্থা তৈরি করার অভাব, সঠিক যোগাযোগ ঘাটতি প্রদর্শন–এসব ঘাটতি যদি পূরন করার প্রচেষ্টা গ্রহণ করা না হয়, তাহলে এই ঘাটতি বাড়তেই থাকে তাহলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে বড় একটি চ্যালেঞ্জের রূপ নেয়। কাজেই বেদু কর্তৃক এসব ঘাটতি শনাক্তকরণের উদ্যোগ খুবই প্রশংসনীয়। গত বছর কি মানদণ্ড ধরা হয়নি? অর্থাৎ কী বাকি ছিল বিশেষ করে দূরশিক্ষণ কিংবা অনলাইনে শিক্ষাদান চালু করার পর। সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীরা অর্জিত জ্ঞান ও দক্ষতা কতটা ব্যবহার করতে পারছে। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের আর কী কী অতিরিক্ত পেশাগত দক্ষতা প্রয়োজন।

‘গার্মেন্ট ওয়ার্কার ডায়েরিজ’ প্রকল্পের অংশ হিসেবে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) এবং মাইক্রোফিন্যান্স অপরচুনিটিজ (এমএফও) ২০২০ সালের এপ্রিল মাস থেকে বাংলাদেশের মূল পাঁচটি শিল্প এলাকায় (চট্টগ্রাম, ঢাক শহর, গাজীপুর, নারায়নগঞ্জ এবং সাভার) কর্মরত পোশাক শ্রমিকদের সম্পর্কে প্রতিমাসে তথ্য সংগ্রহ করছে। সানেম এবং এমএফও যৌথভাবে ২০২২ সালের ১৩ জানুয়ারি থেকে ২৩ জানুয়ারির মধ্যে এক হাজার ২৮০ জন গার্মেন্টস কর্মীর উপর তাদের পরিবারের শিশুদের শিক্ষার বিষয়ে এই জরিপটি পরিচালনা করে যেখানে ৭৬ শতাংশ নারী ও ২৪ শতাংশ পুরুষ। চলমান করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে শিশুরা শিক্ষার ক্ষেত্রে যেসব চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে সেগুলোর ওপর এই জরিপটি আলোকপাত করেছে। অনলাইন ক্লাসে শিশুদের অংশগ্রহনের হার, অংশগ্রহন করতে বিভিন্ন অসুবিধার সম্মুখীন হওয়া, অনলাইন ক্লাসের কার্যকারিতা এবং শেখার ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা ইত্যাদি বিষয়ে জিজ্ঞাসা করে শিক্ষার ওপর করোনা মহামারির প্রভাব আরও ভালভাবে বোঝার চেষ্টা করেছে এই জরিপটি।

জরিপে অংশগ্রহণকারী গার্মেন্টস কর্মীদের পরিবারগুলোর মধ্যে ৫৬ শতাংশ পরিবারে ১৯ বছরের কম বয়সী এক বা একাধিক শিশু রয়েছে। সেসব পরিবারের মধ্যে ৬১ শতাংশ পরিবারে অন্তত একজন স্কুলগামী শিশু রয়েছে। স্কুলগামী শিশু রয়েছে এমন পরিবারের মধ্যে ১১ শতাংশ জানিয়েছে, তাদের সন্তানদের স্কুল নিয়মিত অনলাইনে ক্লাস নিয়েছে, ২৬ শতাংশের মতে স্কুল অনলাইনে ক্লাস নিলেও তা নিয়মিত নয় এবং ৫৩ শতাংশ জানিয়েছে তাদের সন্তানদের স্কুল কোনও অনলাইন ক্লাস নেয়নি। তার মানে সব স্কুলের অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সক্ষমতা নেই। অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহনকারী শিশু রয়েছে এমন ৩১ শতাংশ পরিবারের মতে ক্লাসগুলো কার্যকর নয়। মাত্র ১৮ শতাংশ পরিবার এগুলোকে কার্যকর বলে মনে করেছেন এবং ৫২শতাংশ পরিবার অনলাইন ক্লাসের কার্যকারিতা সম্পর্কে নিশ্চিত নন। স্কুল থেকে ঝরে পড়ার হার সম্পর্কে ধারণা পেতে জরিপে গার্মেন্টস কর্মীদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে, করোনা মহামারির পরে স্কুলে সশরীরে ক্লাস পুনরায় চালু হলে তাদের পরিবারের শিশুরা আবার পড়াশোনা চালিযে যাবে কিনা। উদ্বেগজনকভাবে স্কুলগামী শিশু রয়েছ এমন ৯ শতাংশ পরিবার ধারণা করেছে যে, তাদের পরিবারের কিছু শিশু বা সব শিশু মহামারির পরে তাদের পড়াশুনা আর চালিয়ে যাবেনা। ঝরে পড়ার কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো তারা এখনা পড়াশনুরা খরচ বহন করতে অক্ষম। মহামারির সময়ে তাদের শিশুরা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ায় তাদের পক্ষে আর পড়াশুনায় ফিরে আসা সম্ভব নয়।

করোনা মহামাররি সময় লকডাউন এবং স্কুল বন্ধ থাকার কারণে ঝরে পড়া ছাড়াও শিক্ষার্থীদের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এর সুদূরপ্রসারী প্রভাবের মধ্যে রয়েছে শেখার ক্ষতি এমনকি শিশুশ্রম বা বাল্যবিবাহের প্রবণতা বেড়ে যাওয়া। ইউনেস্কোর মতে অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থা, সশরীরে ক্লাসের অভাব সম্পূর্ণ পূরণ করতে পারে না। তবে বিদ্যমান ডিজিটাল বিভাজন মহামারির মধ্যে শিক্ষায় বৈষম্য আরও প্রকট করেছে। এই বৈষম্য দূরীকরণের বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণ করা একান্ত জরুরি।

লেখক: শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ও গবেষক

এসএ/

Header Ad
Header Ad

কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ মিরাজ, দর্শক পছন্দে সেরা ঋতুপর্ণা

ছবি: সংগৃহীত

২০২৪ সালের কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত জমকালো অনুষ্ঠানে তার হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

অন্যদিকে, দর্শক ভোটে সর্বাধিক পছন্দের ক্রীড়াবিদ হিসেবে ‘পপুলার চয়েজ অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করেন নারী সাফ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা জাতীয় নারী ফুটবল দলের মিডফিল্ডার ঋতুপর্ণা চাকমা।

এ বছর ‘স্পোর্টস পারসন অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কার জয়ের দৌড়ে মিরাজ পেছনে ফেলেছেন ঋতুপর্ণা এবং ২০২৪ প্যারিস অলিম্পিকে কোয়ালিফাই করা আর্চার সাগর ইসলামকে। অপরদিকে, ‘পপুলার চয়েজ’ বিভাগে ঋতুপর্ণা এগিয়ে যান মিরাজ ও উদীয়মান পেসার নাহিদ রানাকে ছাড়িয়ে।

 

ছবি: সংগৃহীত

১৯৬৪ সাল থেকে ক্রীড়াবিদদের স্বীকৃতি জানিয়ে আসা দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ক্রীড়া সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএসপিএ) এবছর ১৫টি বিভাগে মোট ১৩ ব্যক্তি, দল ও সংস্থাকে সম্মাননা দেয়। সংগঠনের সভাপতি রেজওয়ান উজ জামান রাজিবের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং স্কয়ার টয়লেট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী।

পুরস্কার গ্রহণ করে মিরাজ বলেন, “বিএসপিএকে ধন্যবাদ প্রতি বছর এমন আয়োজনের জন্য। এটা আমাদের খেলোয়াড়দের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস।” ভুটানে লিগ খেলায় ব্যস্ত থাকায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে না পারলেও ভিডিও বার্তায় ঋতুপর্ণা জানান, “এই সম্মান আমাকে আরও ভালো করার অনুপ্রেরণা দেবে।”

Header Ad
Header Ad

রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা, মগবাজার-মধুবাগে তীব্র ভোগান্তি

রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মগবাজার ও মধুবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় ওয়াসার পানিতে পোকা ও ময়লার উপস্থিতি নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা। ট্যাপের পানি দুর্গন্ধযুক্ত ও অস্বচ্ছ হওয়ায় তা রান্না, গোসল ও দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করতে গিয়ে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, বাসার পানির ট্যাঙ্ক একাধিকবার পরিষ্কার করেও মিলছে না সমাধান। ওয়াসার সাপ্লাই পাইপ থেকেই এই সমস্যার উৎপত্তি বলে মনে করছেন তারা।

মধুবাগ এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, “এই পানি দিয়ে রান্না ও গোসল সম্ভব না। আমাদের বাসার শিশুরা পানি খেতেই চায় না। বাধ্য হয়ে পাম্প থেকে পানি এনে ব্যবহার করতে হচ্ছে।” আরেকজন জানান, “ট্যাঙ্ক পরিস্কার করলে প্রথমে কিছুদিন ভালো থাকে, তারপর আবার পোকা দেখা দেয়।”

বিকল্প না থাকায়, অনেকেই ট্যাপের মুখে কাপড় বেঁধে পানি ব্যবহার করছেন। কিন্তু তারপরও পেটের অসুখ ও চর্মরোগের প্রকোপ বাড়ছে বলেও জানান স্থানীয়রা।

এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঢাকা ওয়াসার তিনজন কর্মকর্তা মধুবাগ এলাকায় পরিদর্শনে যান এবং কয়েকটি বাসা থেকে পানি সংগ্রহ করে পরীক্ষায় পোকা পাওয়ার কথা স্বীকার করেন। তবে দায় চাপান ট্যাঙ্ক ঠিকমতো পরিষ্কার না করাকে। ওয়াসার উপসহকারী প্রকৌশলী তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, “লাইনের পানি পরিষ্কার। ট্যাঙ্ক যদি নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়, তাহলে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।”

তবে এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নন এলাকাবাসী। তারা বলছেন, নিয়মিত ট্যাঙ্ক পরিষ্কারের পরও পানি দূষিত হচ্ছে, যা পাইপলাইনের সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। এ অবস্থায় ওয়াসার কর্মকর্তারা পাইপের মান যাচাইয়ের আশ্বাস দিয়েছেন। এলাকাবাসী দ্রুত সমস্যার স্থায়ী সমাধান চেয়ে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Header Ad
Header Ad

বিদেশি আইনের আওতায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ: গভর্নর

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরাতে হবে বিদেশি আইনের মাধ্যমে এবং এ উদ্যোগ সম্পূর্ণ নতুন। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়াটি দেশের নয়, বরং বিদেশের আইনের সঙ্গে সংযোগ রেখে করতে হবে। এর জন্য আগে সংশ্লিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করতে হবে এবং এস্টেট (সম্পদ) ফ্রিজ করে আদালতের মাধ্যমে বাকি প্রক্রিয়া চালাতে হবে।”

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “প্রথমে এস্টেটগুলো ফ্রিজ করার চেষ্টা করছি। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে, চিঠি পাঠানো হচ্ছে। আইন পরামর্শক নিয়োগে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এস্টেট ট্রেসিং ফার্মের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এস্টেট ফ্রিজ করা গেলে এটিই হবে প্রথম সাফল্য।”

এক প্রশ্নের উত্তরে গভর্নর বলেন, “আমার ধারণা, প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। শুধু বেক্সিমকো গ্রুপেরই প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার মতো অর্থ পাচার হয়েছে। এগুলো বড় গ্রুপের হিসাব, ছোট গ্রুপগুলো এখনো বিবেচনায় আনা হয়নি। ভবিষ্যতে যেন এমন না ঘটে, সে জন্য আমরা প্রয়োজনীয় নিয়ম-কানুন সংশোধনের উদ্যোগ নিচ্ছি।”

তিনি আরও বলেন, “সব সময় আদালতের মাধ্যমে সমাধান না করে, কিছু ক্ষেত্রে সমঝোতার ভিত্তিতেও (আউট অব কোর্ট সেটেলমেন্ট) টাকা ফেরত আনার চিন্তা করছি। তবে সেটার আগে সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকা জরুরি, না হলে আমরা ঠকে যাব।”

মুদ্রাস্ফীতি সংক্রান্ত এক প্রশ্নে গভর্নর বলেন, “অতীতে খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি ৯-১০ শতাংশ দেখানো হলেও বাস্তবে তা ছিল ১৩-১৪ শতাংশ। তবে এখন সেটি ৮-৯ শতাংশে নেমেছে। সামগ্রিকভাবে মুদ্রাস্ফীতি কমতির দিকেই। আগামী বছরে তা ৫ শতাংশ বা তার নিচে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।”

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. জামাল উদ্দিন, ফাইন্যান্স ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের পরিচালক মো. আনিসুর রহমানসহ চট্টগ্রাম কার্যালয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সঞ্চালনায় ছিলেন উপপরিচালক মো. জোবাইর হোসেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ মিরাজ, দর্শক পছন্দে সেরা ঋতুপর্ণা
রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা, মগবাজার-মধুবাগে তীব্র ভোগান্তি
বিদেশি আইনের আওতায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ: গভর্নর
মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম বদল নয়, বরং ঐতিহ্যে ফেরত: ঢাবি উপাচার্য
তৃতীয় বিয়ের ইতি, রোশন সিংয়ের সঙ্গে আইনিভাবে বিচ্ছিন্ন শ্রাবন্তী
৬৪ জেলা নিয়ে তৃণমূল ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজনের ঘোষণা ক্রীড়া উপদেষ্টার
আগামীকাল শনিবার রাজধানীতে “মার্চ ফর গাজা”, পাঁচটি স্থান থেকে শোভাযাত্রা শুরু
অবশেষে নতুন চুক্তি সালাহর, লিভারপুলে থাকছেন ২০২৭ পর্যন্ত
পহেলা বৈশাখের শোভাযাত্রায় হাসিনার মুখাবয়ব
ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে মামলা করল ওপেনএআই
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মৃদু ভূমিকম্প
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে নাগরিক কমিটির নেত্রী দিলশাদ আফরিন আটক
বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কায় ডলারের বড় পতন, রেকর্ড ছুঁয়েছে স্বর্ণের দাম
ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে ১৪৭ দেশ, বাড়ছে বিশ্বজনমত
মার্কিন পণ্যে ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে চীনের পাল্টা জবাব
নারায়ণগঞ্জে দুই নারী ও এক শিশুর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার
ফুটবল মাঠ পেরিয়ে হলিউডে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো
পুলিশের চাকরি পেতে সমন্বয়কদের পেছনে দৌড়ানো বন্ধ করুন: সারজিস
ড. ইউনূসের ৫ বছর ক্ষমতায় থাকার কোনও অধিকার নেই: সেলিমা রহমান
সিটি কর্পোরেশন হচ্ছে বগুড়া, গণশুনানির প্রস্তুতি শুরু