শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫ | ২৮ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

প্রতিবন্ধী নাগরিকরা সমঅধিকার নিয়ে বেঁচে থাকুক

আমরা জানি, ২৬ শে মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস। তবে আমরা হয়ত অনেকেই জানি না, ২৩শে মার্চ বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপুর্ণ দিন। এই দিনে বঙ্গবন্ধু আনুষ্ঠানিকভাবে পতাকা উত্তোলন করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশে। এজন্য দিনটিকে আমরা পতাকা উত্তোলন দিবসও বলি, প্রতিরোধ দিবসও বলি। যদিও উপমহাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে এদিনটি লাহোর প্রস্তাব দিবস ।

১৯৪০ সালের ২৩শে মার্চ লাহোরে নিখিল ভারত মুসলিম লীগ সভায় শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক এই উপমহাদেশে দুটি স্বাধীন মুসলিম রাষ্ট্র গঠনের আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব এনেছিলেন। তার একটি হবে উত্তর পূর্ব ভারতকে নিয়ে এবং বাংলাদেশ, অন্যটি পাকিস্তান। তবে নির্মম রাজনৈতিক ইতিহাস ঘটনা প্রবাহকে পাল্টে দেয়। দুটির জায়গায় একটি রাষ্ট্র হয়। মুসলিম রাষ্ট্র পাকিস্তান, ১৯৪৭ সালে। চব্বিশ বছরের বঞ্চনা, বৈষম্য নিপীড়ন, অত্যাচার, এমনকি আমাদের মাতৃভাষার উপরে যখন আঘাত এসবের বিরুদ্ধে আমাদের পর্যায়ক্রমে জবাব দিতে হয়েছে।

আমি একজন দৃস্টি প্রতিবন্ধী নাগরিক। এই দেশে কোনো প্রতিবন্ধী নাগরিকের, প্রতিবন্ধী শিশুর জন্য কোনো রকম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিল না। ১৯৫৬ সালে ঢাকায় চিকিৎসা শেষে আমার চক্ষু বিশেষজ্ঞ আমার মরহুম পিতা-মাতাকে জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, আমার দুটি চোখেরই দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে গেছে। কাজেই তখন আমি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী অর্থাৎ তখন সবাই বলতেন, অন্ধ হয়ে গেছে। তখন এদেশে আমার লেখা পড়ার কোনো সুযোগ ছিল না। তখন পূর্ব পাকিস্তান সরকার পরিচালিত হচ্ছিল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন। মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন আতাউর রহমান খান। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু তখন এক তরুন তেজস্বী রাজনৈতিক নেতা এবং মন্ত্রী পরিষদের সদস্য ছিলেন। ১৯৫৭ সালের ২ এপ্রিল ঢাকায় রোটারি ক্লাব আয়োজন করে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, যেখানে দৃস্টি প্রতিবন্ধীদের শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করা হয়। যেহেতু এদেশে কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগে ছিল না, কোনো শিক্ষক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নয়, তাই কলকাতা রোটারি ক্লাবের সহায়তায় একজন শিক্ষক প্রয়াত বিভূতি ভূষণকে নিয়ে আসা হয়। আর আমাকে সনাক্ত করা হয় প্রথম দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ছাত্র হিসেবে।

১৯৫৭ সালের ২ এপ্রিল ৭ বছর বয়সে আমি আমার দ্বিতীয় যাত্রা শুরু করি। অর্থাৎ দৃষ্টি শক্তি হারিয়ে আবারও লেখাপড়া করার জন্য আমার প্রথম স্কুলে যাওয়া। একটি ভাড়াটে বাড়িতে ১৭/৮ ওয়ারি র‌্যাংকিং স্ট্রিট, পুরোনো ঢাকায় আমার প্রথম স্কুল জীবন শুরু। এখনও মনে পড়ে মাস্টার বাবুর হাতে যখন আমার মা আমাকে নিয়ে গেলেন, তার আগে স্কুল উদ্বোধন হয়েছিল ১৫ই মার্চ। সেদিন অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আতাউর রহমান খান, মাকে সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন, মিসেস চৌধুরী, আপনি মনসুরকে নিয়ে ভাববেন না। সে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে বটে, কিন্তু আজ থেকে সে পড়ালেখা শিখবে। আমাদের হেড মাস্টার সাহেব তিনি আমাকে বাংলা ব্রেইল পদ্ধতির মাধ্যমে বর্ণমালার সঙ্গে পরিচিত করলেন। ইংরেজি বর্ণমালার সঙ্গে পরিচয় করলেন। বললেন, প্রথমে ইংরেজি বর্ণমালা শিখবে। ছয়টি বিন্দু বা ডট দিয়ে নানানভাবে সাজানো হয়। সেভাবেই শিখলাম। তিন চার দিন সময় লাগল। তারপর বাংলা শেখানো হল। বিভিন্ন বস্তুর আকার প্রকার বোঝানোর জন্য বিভিন্ন জিনিস নিয়ে আসা হল। পাতার যে ঘ্রাণশক্তি সেটি পরীক্ষা করার চেষ্টা চলল। তারপর দুপুরবেলা মাদুর পেতে সংগীত শিক্ষার ব্যবস্থাও করা হল। আজও সেই গানটির কথা মনে আছে, জীবনের গভীর অর্থ তখন বুঝি নাই। গানের কথাগুলো ছিল এরকম,

এই করেছ ভাল নিঠুর হে, নিঠুর হে
এই করেছ ভাল
এমনি করে হৃদয়ে মোর
তীব্র দহন জ্বালো
এই করেছ ভাল নিঠুর হে, নিঠুর হে
এই করেছ ভাল।

জীবনের এই প্রান্তে এসে রবীন্দ্রনাথের লেখা এই গানটি আমার মনে হয় যেন প্রতিদিনের প্রার্থনা সংগীত।

খুব মনে হচ্ছে, জাতির পিতা সম্পর্কে একটি কথা বলা উচিত। আমি অত্যন্ত সৌভাগ্যবান, শুধুমাত্র তার কন্ঠস্বর শুনি নাই, তাকে স্পর্শ করেছি। তার সঙ্গে করমর্দন করেছি। সেটি প্রথম ঘটেছিল ১৯৬৯ সালে। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। পাকিস্তান থেকে ছয়জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে বিশ্ব অন্ধ প্রতিবন্ধী সম্মেলনে কলম্বোতে যাবেন। পাকিস্তান থেকে আমরা তিনজন ছাত্র। সে উপলক্ষে ১৯৬৯ এর সেপ্টেম্বরের এক সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে যাই। বঙ্গবন্ধু তার কয়েকজন বন্ধু ও সহকর্মীর সঙ্গে কথা বলছিলেন। আমরা যাব তিনি জানতেন। খুব স্নেহ করলেন, আদর করলেন। বললেন, এই বয়সে তোমরা যাচ্ছ, নিজের দেশেকে তুলে ধরবে। তোমাদের সমস্যা নিয়ে কথা বলবে। তোমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। সেদিন অনেক উৎসাহ অনেক প্রেরণার কথা শুনিয়েছিলেন। দ্বিতীয়বার তার সঙ্গে দেখা হওয়ার সুযোগ হয়েছিল আমার। সেটি ২৫শে জানুয়ারি ১৯৭২, পুরানো গণভবনে। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী’র সঙ্গে আমাদের আগের দিন দেখা হয়। তিনি যেহেতু রোটারি ক্লাবের চেয়ারম্যান ছিলেন, সে কারণে শৈশব থেকেই আমাকে চিনতেন। পরবর্তীতে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে তিনি ছিলেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি। তার সঙ্গে দৃষ্টি প্রতিবন্দ্বীদের সমস্যা নিয়ে আমরা আলাপ করতে গিয়েছিলাম। তিনি বলেছিলেন, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তোমরা কাল দেখা করতে যাবে, আমি তোমাদের সাক্ষাৎকারের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। উনি প্রথমে ভুল বুঝেছিলেন। উনি ভেবেছিলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধে গিয়ে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হয়েছি। আমরা তাকে জানিয়েছিলাম, আমরা শৈশব থেকেই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। আমরা বলেছিলাম, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত। এটি কোনো কল্যাণজনক কিছু হতে পারে না। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা শিক্ষা মন্ত্রণালয়য়ের অধীনস্ত করা হোক। তিনি সহমত প্রকাশ করে বলেছিলেন, অত্যন্ত ভাল কথা। তিনি বললেন, ‘তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী অধ্যাপক ইউসুফ সাহেবকে আমি এ ব্যাপারে বলে দেব। ‘আমাদের লিখিত স্মারকলিপি তিনি রাখলেন এবং অনেক উৎসাহ দিলেন। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হল, কিছু অনাহূত জটিলতার কারণে পরিশেষে সেটি আর বদল করা যায়নি। আজও এ দেশের প্রতিবন্দ্বীদের শিক্ষা ব্যবস্থা সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত। অথচ আমরা কলেজ ইউনিভার্সিটিতে পড়ি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে। অথচ আমাদের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে।

ফিরে আসি ১৯৭৪সালে। বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন। যেমন প্রতিটি মহকুমার অধীন সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সমন্বিত কার্যক্রমে ১০ জন করে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী লেখাপড়ার সুযোগ পাবে। উনি এরকমই নির্দেশ দিয়েছিলেন। প্রক্রিয়াটি তিনি চালু করে দিয়ে গিয়েছিলেন। তার সেই অসম্পূর্ণ কাজ তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একুশ বছর পরে সেটি পুনরায় চালু করেছেন। বর্তমানে মেধাবি প্রতিবন্দী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়া হয়। অস্বচ্ছল প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ভাতা দেওয়া হয়।

ইতিহাস অনেক লম্বা। অনেক সময় পেরিয়ে গেছে, প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে কিছু কাজ নিশ্চয় হয়েছে। তবে দুঃখজনক হল, যতটুকু হয়েছে অথবা যেটুকু হবার কথা ছিল, তা খুব বেশি কিছু নয়। দৃষ্টি প্রতিবন্ধীসহ সকল প্রকার প্রতিবন্ধীদের নানা সমস্যা, যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই রয়ে গেছে। শিক্ষাক্ষেত্র, শিক্ষা শেষে তার কর্মসংস্থান, মর্যাদার সঙ্গে চাকরি করে বেঁচে থাকার পরিবেশ এখনো হয়নি। রাজনৈতিক অঙ্গীকার থাকতে পারে, কিন্তু তাকে বাস্তবায়িত করতে হবে। এ কথা আবারও বলি যে, প্রতিবন্দ্বী মানুষের সমস্যা ব্যাপক। উন্নয়নশীল দেশে এই সমস্যা অনেক গভীর ও অনেক বেশি। আমরা সভ্যতার উষালগ্ন থেকে আজ অব্দি যেভাবে এগিয়ে চলেছি, একসময় প্রতিবন্ধীদের আইসোলেটেড করে রাখতাম, এখন ইনক্লুসিভ করা হয়েছে। এখন আমরা সমঅধিকার নিয়ে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখি। আমার বিশ্বাস এই স্বাধীন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় হয়তো একদিন আমি থাকব না, আমি না থাকি, তাতে কি আসে যায়। এদেশের প্রতিবন্ধী নাগরিকেরা সমান অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকুক। আপনারা মনে রাখবেন, আমরা যারা প্রতিবন্ধী মানুষ, আমরা প্রথমে মানুষ, তারপর প্রতিবন্ধী। 


লেখক: প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি, ইমপ্যাক্ট ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ ও প্রতিবন্ধী বিষয়ক মানবাধিকার কর্মী

Header Ad
Header Ad

কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ মিরাজ, দর্শক পছন্দে সেরা ঋতুপর্ণা

ছবি: সংগৃহীত

২০২৪ সালের কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত জমকালো অনুষ্ঠানে তার হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

অন্যদিকে, দর্শক ভোটে সর্বাধিক পছন্দের ক্রীড়াবিদ হিসেবে ‘পপুলার চয়েজ অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করেন নারী সাফ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা জাতীয় নারী ফুটবল দলের মিডফিল্ডার ঋতুপর্ণা চাকমা।

এ বছর ‘স্পোর্টস পারসন অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কার জয়ের দৌড়ে মিরাজ পেছনে ফেলেছেন ঋতুপর্ণা এবং ২০২৪ প্যারিস অলিম্পিকে কোয়ালিফাই করা আর্চার সাগর ইসলামকে। অপরদিকে, ‘পপুলার চয়েজ’ বিভাগে ঋতুপর্ণা এগিয়ে যান মিরাজ ও উদীয়মান পেসার নাহিদ রানাকে ছাড়িয়ে।

 

ছবি: সংগৃহীত

১৯৬৪ সাল থেকে ক্রীড়াবিদদের স্বীকৃতি জানিয়ে আসা দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ক্রীড়া সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএসপিএ) এবছর ১৫টি বিভাগে মোট ১৩ ব্যক্তি, দল ও সংস্থাকে সম্মাননা দেয়। সংগঠনের সভাপতি রেজওয়ান উজ জামান রাজিবের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং স্কয়ার টয়লেট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী।

পুরস্কার গ্রহণ করে মিরাজ বলেন, “বিএসপিএকে ধন্যবাদ প্রতি বছর এমন আয়োজনের জন্য। এটা আমাদের খেলোয়াড়দের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস।” ভুটানে লিগ খেলায় ব্যস্ত থাকায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে না পারলেও ভিডিও বার্তায় ঋতুপর্ণা জানান, “এই সম্মান আমাকে আরও ভালো করার অনুপ্রেরণা দেবে।”

Header Ad
Header Ad

রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা, মগবাজার-মধুবাগে তীব্র ভোগান্তি

রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মগবাজার ও মধুবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় ওয়াসার পানিতে পোকা ও ময়লার উপস্থিতি নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা। ট্যাপের পানি দুর্গন্ধযুক্ত ও অস্বচ্ছ হওয়ায় তা রান্না, গোসল ও দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করতে গিয়ে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, বাসার পানির ট্যাঙ্ক একাধিকবার পরিষ্কার করেও মিলছে না সমাধান। ওয়াসার সাপ্লাই পাইপ থেকেই এই সমস্যার উৎপত্তি বলে মনে করছেন তারা।

মধুবাগ এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, “এই পানি দিয়ে রান্না ও গোসল সম্ভব না। আমাদের বাসার শিশুরা পানি খেতেই চায় না। বাধ্য হয়ে পাম্প থেকে পানি এনে ব্যবহার করতে হচ্ছে।” আরেকজন জানান, “ট্যাঙ্ক পরিস্কার করলে প্রথমে কিছুদিন ভালো থাকে, তারপর আবার পোকা দেখা দেয়।”

বিকল্প না থাকায়, অনেকেই ট্যাপের মুখে কাপড় বেঁধে পানি ব্যবহার করছেন। কিন্তু তারপরও পেটের অসুখ ও চর্মরোগের প্রকোপ বাড়ছে বলেও জানান স্থানীয়রা।

এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঢাকা ওয়াসার তিনজন কর্মকর্তা মধুবাগ এলাকায় পরিদর্শনে যান এবং কয়েকটি বাসা থেকে পানি সংগ্রহ করে পরীক্ষায় পোকা পাওয়ার কথা স্বীকার করেন। তবে দায় চাপান ট্যাঙ্ক ঠিকমতো পরিষ্কার না করাকে। ওয়াসার উপসহকারী প্রকৌশলী তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, “লাইনের পানি পরিষ্কার। ট্যাঙ্ক যদি নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়, তাহলে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।”

তবে এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নন এলাকাবাসী। তারা বলছেন, নিয়মিত ট্যাঙ্ক পরিষ্কারের পরও পানি দূষিত হচ্ছে, যা পাইপলাইনের সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। এ অবস্থায় ওয়াসার কর্মকর্তারা পাইপের মান যাচাইয়ের আশ্বাস দিয়েছেন। এলাকাবাসী দ্রুত সমস্যার স্থায়ী সমাধান চেয়ে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Header Ad
Header Ad

বিদেশি আইনের আওতায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ: গভর্নর

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরাতে হবে বিদেশি আইনের মাধ্যমে এবং এ উদ্যোগ সম্পূর্ণ নতুন। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়াটি দেশের নয়, বরং বিদেশের আইনের সঙ্গে সংযোগ রেখে করতে হবে। এর জন্য আগে সংশ্লিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করতে হবে এবং এস্টেট (সম্পদ) ফ্রিজ করে আদালতের মাধ্যমে বাকি প্রক্রিয়া চালাতে হবে।”

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “প্রথমে এস্টেটগুলো ফ্রিজ করার চেষ্টা করছি। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে, চিঠি পাঠানো হচ্ছে। আইন পরামর্শক নিয়োগে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এস্টেট ট্রেসিং ফার্মের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এস্টেট ফ্রিজ করা গেলে এটিই হবে প্রথম সাফল্য।”

এক প্রশ্নের উত্তরে গভর্নর বলেন, “আমার ধারণা, প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। শুধু বেক্সিমকো গ্রুপেরই প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার মতো অর্থ পাচার হয়েছে। এগুলো বড় গ্রুপের হিসাব, ছোট গ্রুপগুলো এখনো বিবেচনায় আনা হয়নি। ভবিষ্যতে যেন এমন না ঘটে, সে জন্য আমরা প্রয়োজনীয় নিয়ম-কানুন সংশোধনের উদ্যোগ নিচ্ছি।”

তিনি আরও বলেন, “সব সময় আদালতের মাধ্যমে সমাধান না করে, কিছু ক্ষেত্রে সমঝোতার ভিত্তিতেও (আউট অব কোর্ট সেটেলমেন্ট) টাকা ফেরত আনার চিন্তা করছি। তবে সেটার আগে সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকা জরুরি, না হলে আমরা ঠকে যাব।”

মুদ্রাস্ফীতি সংক্রান্ত এক প্রশ্নে গভর্নর বলেন, “অতীতে খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি ৯-১০ শতাংশ দেখানো হলেও বাস্তবে তা ছিল ১৩-১৪ শতাংশ। তবে এখন সেটি ৮-৯ শতাংশে নেমেছে। সামগ্রিকভাবে মুদ্রাস্ফীতি কমতির দিকেই। আগামী বছরে তা ৫ শতাংশ বা তার নিচে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।”

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. জামাল উদ্দিন, ফাইন্যান্স ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের পরিচালক মো. আনিসুর রহমানসহ চট্টগ্রাম কার্যালয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সঞ্চালনায় ছিলেন উপপরিচালক মো. জোবাইর হোসেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ মিরাজ, দর্শক পছন্দে সেরা ঋতুপর্ণা
রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা, মগবাজার-মধুবাগে তীব্র ভোগান্তি
বিদেশি আইনের আওতায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ: গভর্নর
মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম বদল নয়, বরং ঐতিহ্যে ফেরত: ঢাবি উপাচার্য
তৃতীয় বিয়ের ইতি, রোশন সিংয়ের সঙ্গে আইনিভাবে বিচ্ছিন্ন শ্রাবন্তী
৬৪ জেলা নিয়ে তৃণমূল ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজনের ঘোষণা ক্রীড়া উপদেষ্টার
আগামীকাল শনিবার রাজধানীতে “মার্চ ফর গাজা”, পাঁচটি স্থান থেকে শোভাযাত্রা শুরু
অবশেষে নতুন চুক্তি সালাহর, লিভারপুলে থাকছেন ২০২৭ পর্যন্ত
পহেলা বৈশাখের শোভাযাত্রায় হাসিনার মুখাবয়ব
ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে মামলা করল ওপেনএআই
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মৃদু ভূমিকম্প
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে নাগরিক কমিটির নেত্রী দিলশাদ আফরিন আটক
বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কায় ডলারের বড় পতন, রেকর্ড ছুঁয়েছে স্বর্ণের দাম
ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে ১৪৭ দেশ, বাড়ছে বিশ্বজনমত
মার্কিন পণ্যে ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে চীনের পাল্টা জবাব
নারায়ণগঞ্জে দুই নারী ও এক শিশুর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার
ফুটবল মাঠ পেরিয়ে হলিউডে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো
পুলিশের চাকরি পেতে সমন্বয়কদের পেছনে দৌড়ানো বন্ধ করুন: সারজিস
ড. ইউনূসের ৫ বছর ক্ষমতায় থাকার কোনও অধিকার নেই: সেলিমা রহমান
সিটি কর্পোরেশন হচ্ছে বগুড়া, গণশুনানির প্রস্তুতি শুরু