আন্দোলন চলবে চা শ্রমিকদের
২০ টাকা মজুরি বৃদ্ধির প্রস্তাব প্রত্যাখান
কোনরকম সমঝোতা ছাড়াই শেষ হয়েছে চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির বিষয়ে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক। মালিকপক্ষ থেকে ২০ টাকা মজুরি বাড়ানোর যে প্রস্তাব করা হয়েছিল সেটি প্রত্যাখান করেছেন চা শ্রমিক নেতারা। তারা সাফ জানিয়েছেন, আন্দোলন চলবে।
বুধবার (১৭ আগস্ট) বিকেলে ঢাকায় শ্রম অধিদপ্তর কার্যালয়ে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরীর মধ্যস্ততায় সরকার, চা বাগান মালিকপক্ষ ও চা শ্রমিক ইউনিয়নের মধ্যে এই বৈঠক শুরু হয়৷ প্রায় ছয় ঘন্টাব্যাপি চলা বৈঠক কোন সমঝোতায ছাড়াই রাত প্রায় ১১টায় শেষ হয়। তবে শ্রম অধিদপ্তরের দাবি, চা শ্রমিক ও মালিকপক্ষ সমঝোতার কাছাকাছি পৌঁছেছে।
বৈঠকে শেষে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সহ সভাপতি পংকজ কন্দ রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকাপ্রকাশ-কে জানান, সমঝোতা বৈঠকটি কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়েছে৷ চা শ্রমিকরা তাদের চলমান ধর্মঘট কর্মসূচী অব্যাহত রাখবেন৷
পংকজ কন্দ আরও জানান, শ্রম অধিদপ্তরের ডিজি মহোদয়ের মধ্যস্ততায় আমরা বসেছিলাম। কিন্তু আমরা যেটা প্রত্যাশা করেছিলাম সেটি হয় নি৷ তবে আলোচনার দুয়ার খোলা থাকবে আমাদের পক্ষ থেকে, পাশাপাশি আমাদের আন্দোলন কর্মসূচীও চলমান থাকবে৷ মালিকপক্ষ বৈঠকে যে মজুরি প্রস্তাব করেছেন সেটি তিনশ টাকার ধারেকাছেও নাই, তাই আমাদের কাছে এই প্রস্তাব গ্রহনযোগ্য নয়৷ আমাদের মা বোনেরা রাজপথে যে দাবি নিয়ে আন্দোলন করছে সেই দাবি যেহেতু পূরন হয় নি তাই আমরা ডিজি মহোদয় কে আগামীকাল বা পরশু মালিকপক্ষের প্রস্তাব প্রত্যাখান করার কথা জানিয়ে দিবো৷
চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা জানান, আজ সারাদিন ব্যাপি আমরা বৈঠক করেছি৷ মালিক পক্ষ শ্রমিকদের মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৪০ টাকা প্রস্তাব করেছিলেন ,আমরা এই মুহূর্তে এই প্রস্তাবটি প্রত্যাখান করছি৷
বাংলাদেশীয় চা সংসদের চেয়ারম্যান শাহ আলম ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, শ্রমিকপক্ষ ২ দিনের সময় নিয়েছে তারপর তারা তাদের সিদ্ধান্ত জানাবে৷
তবে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক নিপেন পাল বলেছেন, আমরা কোন সময় নেই নি কারো থেকে৷ আমাদেরকে আন্দোলন প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছিলো এবং ১৪০ টাকা মজুরি দেওয়ার কথা বলেছিলেন৷ আমরা বলেছি সরকারের ডাকে আমরা এখানে এসেছি, আমরা আলোচনা করতে পারি কিন্তু আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে৷ আমরা আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়ে দিবো যে, আমরা এই ২০ টাকা মজুরি বৃদ্ধির প্রস্তাব প্রত্যাখান করছি৷
শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী গণমাধ্যম কে বলেন, আমরা আজ আলোচনা করেছি মালিকপক্ষ ও শ্রমিকপক্ষের সঙ্গে। আমাদের আলোচনা অব্যাহত আছে। ধর্মঘট প্রত্যাহারের ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি৷ উনারা (শ্রমিকপক্ষ) একদিন সময় চেয়েছেন কাল উনারা স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে বসে একটা সিদ্ধান্ত জানাবেন৷
এদিকে আজকের এই ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মানুন চৌধুরী ছাড়াও বাংলাদেশীয় চা সংসদের চেয়ারম্যান শাহ আলম, ভাইস চেয়ারম্যান রিয়াজুর রহমান, সদস্য তাহসিন আহমেদ চৌধুরী সহ মালিকপক্ষের একটি প্রতিনিধি দল উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে শ্রমিকদের প্রতিনিধি দলে সাতটি চা বাগান ভ্যালীর সভাপতিরা ছিলেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাহী উপদেষ্টা রামভজন কৈরী, সহ-সভাপতি পংকজ কন্দ, ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক নিপেন পাল, অর্থ সম্পাদক পরেশ কালিন্দি ও মনু ধলাই ভ্যালীর সম্পাদক নির্মল দাশ পাইনকাও উপস্থিত ছিলেন৷
এনএইচবি/এএস