বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৫৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান

শুধু কি এমনই ছিল সব? সেই আদব, ওইসব খেলাধুলা, ওই রকম সাহস, পরিবার, কেরোসিনের বাতি, অন্ধকার সিঁড়ি, বাতাসের তালগাছ, সমুদ্রে জন্ম ও অভিসিঞ্চন এবং শেষে গ্রীষ্মের কঠোর পরিশ্রমই কি সব ছিল? ওইসব কিছু ছিল ঠিকই। তবে তার নিজের সত্তার গহন গোপন বলতেও একটা কিছু ছিল।

ভূতলের অপরিমেয় পানির মতো তার ভেতর থেকে একটা কিছু নাড়া দিয়ে যাচ্ছিল এতগুলো বছর ধরে। ভূতলের পানি শিলাময় গোলকধাঁধার নিচে থেকে আলোর মুখ দেখে না। তবু কে জানে আবছাভাবে পৃথিবীর বিকীরণশীল কেন্দ্র থেকে কৈশিক নালির মধ্য দিয়ে গুহার কৃষ্ণ বাতাসে আলোর বিচ্ছুরণ ফেলে। তার ফলে যেখানে অন্য কোনো প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব নয় সেখানেও অতিভোজী ঊদ্ভিদের খাদ্যলাভ সম্ভব হয়। তার ভেতরের ওই অন্ধ নাড়া কখনো থামেনি। এখনো সে টের পায় এর অস্তিত্ব। মাটির নিচের পচা উদ্ভিদের আগুনের মতো তার ভেতরের আগুন বাইরে বেরিয়ে এসেছে। তবু ভেতরের জ্বলুনি থামেনি। বরং পচা উদ্ভিদের বাইরের ফাটল কুণ্ডলি পাকিয়ে বের হয়ে এসে ছড়িয়ে পড়েছে গাছপালার জগতে। তাতে জলাভূমির পচা উদ্ভিদের মতোই বাইরের কর্দমাক্ত ভূপৃষ্ঠও একই গতি ও ছন্দে এগিয়ে গেছে। আর সেই অদৃশ্য ঢেউগুলো দিনের পর দিন তার সবচেয়ে ভয়াবহ এবং প্রচণ্ড কামনা বাসনার জন্ম দিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, আরও জন্ম দিয়েছে সবচেয়ে ঊষর দুশ্চিন্তা, সবচেয়ে ফলপ্রসু স্মৃতিকাতরতা, তার আকস্মিক ক্ষমতাহীনতা ও সংযম এবং কেউ না হওয়ার আকাঙ্ক্ষা।

হ্যা, তার ভেতরের এই আলোড়ন এই বিশাল দেশটার সঙ্গে মানানসই হয়েই তার সঙ্গে সঙ্গে ছিল এতগুলো বছর। বালক বয়স থেকেই সে এই আলোড়নের চাপ, সামনের বিশাল সমুদ্রের এবং পেছনে সীমাহীন পাহাড়ের বিস্তৃতি, সমতলভূমি, অন্তর্জগৎ বলে পরিচিত মরুভূমি— এসবের চাপ অনুভব করেছে। সামনে পেছনের মাঝে ছিল অহর্নিশ বিপদ। সে বিপদের কথা কেউ মুখ ফুটে বলেনি। কারণ সেটাই স্বাভাবিক মনে হয়েছে সবার কাছে। কিন্তু জ্যাক এর অস্তিত্ব টের পেয়েছে বিরমানড্রাইসের উঁচু খিলানের মতো ছাদ এবং সাদা রং করা দেয়ালঅলা ছোট খামারবাড়িতে থাকাকালে। সেখানে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার সময় তার খালা ভালো করে পরোখ করেছেন পুরু কাঠের তৈরি ঝাঁপ ঠিকমতো বন্ধ করা হয়েছে কি না। সেখানে তার মনে হতো, তাকে জোর করে ফেলে দেওয়া হয়েছে যেন সে সেখানকার প্রথম বাসিন্দা কিংবা প্রথম বিজেতা। সেখানে যেন তখনও জঙ্গল জীবনের আইন বলবত। করুণা ছাড়াই ন্যায়বিচার যেন শুধু শাস্তি দিতে প্রস্তুত এবং সেই ব্যবস্থাকে প্রতিহত করতে ব্যর্থ প্রচলিত প্রথাও। তার সামনের মানুষগুলোকে মনে হতো প্রলুব্ধকর তবে বিরক্তিকর, খুব কাছের কিন্তু বিচ্ছিন্ন। তাদের চারপশেই সারাদিন থাকতে হতো। কখনোবা বন্ধুত্ব কিংবা সৌহার্দ্য তৈরি হতো। সন্ধ্যার দিকে তারা সবাই যার যার বন্ধ ঘরে ফিরে যেত। সেসব ঘরে জ্যাক কখনো ঢুকে দেখেনি। ঘরে ঢোকার পথে আরেক বাধা ছিল তাদের নারীরা। তাদেরকে হয়ত কখনো দেখা হয়নি। কিংবা রাস্তা-ঘাটে দেখা হলেও পরে চেনার কোনো উপায় ছিল না, মুখের বেশিরভাগ ঢাকা থাকত বোরকায়। তাদের সাদা পোশাকের ফাঁকে দেখা যেত সুন্দর, আকর্ষণীয়, কোমল চোখ। এমনকি চাল চলনে ক্লান্ত এবং নমনীয় হলেও এলাকাজুড়ে তাদের সংখ্যা এতই বেশি ছিল যে, তাদের উপস্থিতি প্রায়ই উপদ্রবের মতো মনে হতো, বিশেষ করে যখন সন্ধ্যার সময় রাস্তায় কোনো ফরাসি লোকের সঙ্গে কোনো আরব লোকের মারামারি শুরু হয়ে যেত। মারামারি অবশ্য দুজন আরবের মধ্যে কিংবা দুজন ফরাসি লোকের মধ্যেও হতে পারত। তবে সেসব ক্ষেত্রে লড়াইটাতে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হতো না। রংচটা নীল রঙের ঢিলা পোশাক কিংবা বিশ্রী রঙের আলখাল্লা পরিহিত পাড়ার আরব লোকেরা চারদিক থেকে চলমান ধারার মতো ধীরে ধীরে এগিয়ে আসত। কোনো রকম উচ্চবাচ্য না করলেও গায়ে গা লাগানোর মতো ভিড়ের নিঃশব্দ ধাবমান চেহারা দেখেই মারামারি দেখতে আসা গুটিকয় ফরাসি লোক এলাকাছাড়া হয়ে যেত। আর যে ফরাসি লোকটা মারামারিতে জড়িত থাকত সে খানিক পরে দেখতে পেত, তার সামনে তার প্রতিপক্ষ তো আছেই, তার চারপাশে অগণিত দুর্বোধ্য মুখের উপস্থিতিও প্রচণ্ড জোরালো। সে যদি এই দেশে জন্মগ্রহণ না করে থাকত এবং এখানে টিকে থাকতে হলে সাহস থাকা চাই— এই সত্য যদি তার জানা না থাকত তাহলে ওই মুখগুলো তার সমস্ত সাহস বিলীন করে দিত। সে যা-ই হোক, ওই মুহূর্তে তার সামনের ভিড়ের আরব জনতা তার কাছে উচ্চবাচ্য করে কোনো রকম ভয়ভীতি দেখাত না ঠিকই। কিন্তু তাদের উপস্থিতি এবং সামনের দিকে ক্রমান্বয়ে এগিয়ে আসাটাই ছিল তার জন্য যথেষ্ট ভয়ের। আর সাধারণত ওই আরব লোকদের ভিড়ের অধীনেই চলে যেত রণক্ষেত্রের দখল। শেষে পড়িমরি করে ফরাসি লোকটা পালিয়ে বাঁচত পুলিশ আসার আগেই। মারামারি শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অবশ্য কে বা কারা পুলিশকে চটজলদি জানিয়ে দিত। পুলিশ এসে পারতপক্ষে মারামারিতে জড়িতদের ধরে নিয়ে যেত। জোর জবরদস্তি করে পুলিশের লোকেরা আসামিদের নিয়ে জ্যাকের জানালার পাশ দিয়ে থানার দিকে চলে যেত। তাদের চলে যাওয়া দেখে জ্যাকের মা বলে উঠতেন, বেচারা সব!

আসামিদের দুজনকে শক্ত করে বেঁধে ঘাড় ধরে ঠেলতে ঠেলতে নিয়ে যেত পুলিশ। তারা চলে যাওয়ার পর জ্যাক বুঝতে পারত রাস্তায় সংঘর্ষ, ভয় এবং আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ভয়ে বালক জ্যাকের কণ্ঠ পর্যন্ত শুকিয়ে কাঠ হয়ে যেত। সেরকম কোনো রাত তার মনের ভেতর জট পাকানো শিকড়-বাকড় নিয়ে এই বিশাল এবং ভয়াবহ দেশের সঙ্গে তাকে বেঁধে ফেলতেন দেশের তাপে ফুটন্ত দিন, হৃদয় ভেঙে দেওয়ার মতো দ্রুত গতিতে ধেয়ে আসা গোধূলির সঙ্গেও তাকে একাত্ব করে দিত। সেটাই ছিল দ্বিতীয় জীবনের মতো। দ্বিতীয় জীবনটাই তার বাইরের জীবনের প্রাত্যহিকতার চেয়ে যেন বেশি সত্যি বলে মনে হতো। ওই জীবনের ইতিহাস বয়ান করা যেতে পারত আবছা আকুলতা এবং শক্তিশালী অবর্ণনীয় চাঞ্চল্যে স্কুলের নিজস্ব গন্ধে, পাড়ার আস্তাবলগুলোর গন্ধে, মায়ের হাতে লন্ড্রি করতে দেওয়া কাপড়গুলোর গন্ধে, শহরের দিকের ওপরের এলাকার জুঁই, মধুমতি ফুলের সুগন্ধে, অভিধান এবং গোগ্রাসে পড়া বইগুলোর গন্ধে, বাড়ির এবং চাকরি করার সময়ের সেই দোকানের টয়লেটের কটু গন্ধে, ক্লাসের আগে কিংবা পরে একা একা দেখতে যাওয়া সুপরিসর ঠাণ্ডা শ্রেণিকক্ষের গন্ধে, তার প্রিয় সহপাঠিদের শরীরের উষ্ণতায় এবং দিদিয়েরের আনা পশমি কাপড়ের গন্ধে। বিশাল বপুঅলা মার্কোনির মা তার গায়ে বেশি করে কোলনের গন্ধ মেখে দিতেন। জ্যাক ওর খুব কাছে ঘেঁষে বসার চেষ্টা করত। পিয়েরে তার খালাদের কাছ থেকে লিপস্টিকের গন্ধ নিয়ে আসত। সবাই মিলে সে গন্ধ শুঁকে দেখত। উত্তেজনায় তাদের অবস্থা হতো কোনো বাড়িতে কামদশায় থাকা কোনো মাদী কুকুরের কাছে চলে আসা পুরুষ কুকুরের মতো। কল্পনায় তারা বুঝতে পারত, এটাই নারীর অস্তিত্বের লক্ষণ। কসমেটিক ক্রিমের মিষ্টি গন্ধে তাদের হৈচৈ, চিৎকার, ঘাম আর ধূলির জগৎ থেকে তাদের এক মার্জিত, কোমল এবং অবর্ণনীয় রকমের প্রলুব্ধকর জগতে নিয়ে যেত। লিপস্টিক সম্পর্কে তাদের মুখ থেকে বের হয়ে আসা অশ্রাব্য ভাষার খিস্তিও ওই মোহনীয় জগৎ থেকে তাদের ফিরিয়ে রাখতে পারত না। খুব ছোটবেলা থেকে শরীরের প্রতি ভালো লাগা, শরীরের সৌন্দর্য তার ভেতরে হাসির উদ্রেক করত। সমদ্রতটে দেখা নারী শরীরের প্রতি টান তার কখনো কমেনি। মনের মধ্যে অবশ্য বিশেষ কোনো জান্তব অস্বাভাবিকতা থাকত না। শরীরকে পাওয়ার মতো কোনো বাসনা তখন থাকত না। অবশ্য পাওয়ার পথও তার জানা ছিল না তখন, শুধু শরীরের ঔজ্জ্বল্যের ভেতর থাকতে ইচ্ছে করত। বন্ধুদের কারো কাঁধের সঙ্গে হেলে থেকে কিছুটা আত্মবিশ্বাসের অনুভূতির ছোঁয়া পেত। কখনো ট্রলিবাসের মধ্যে কোনো নারীর হাত তার হাতের ওপর খানিকক্ষণ রেখে দিলে ওই টানটা টের পেত সে। এই পার্থিব জীবন সবচেয়ে যে উষ্ণতাটা দিতে পারে তেমনি একটা উষ্ণতা সে পেত ওই সময়। মনে হতো, ওই প্রশান্তির মধ্যে ডুবে গিয়ে অনেকক্ষণ থেকে যায়। মায়ের কাছ থেকেও তেমনি প্রশান্তির উষ্ণতা প্রত্যাশা করত জ্যাক। কেন প্রত্যাশা করত সেই ব্যাখ্যা তার জানা ছিল না। সেই প্রশান্তি পেত না সে। পাওয়ার দুঃসাহসও ছিল না। তাদের বাড়ির কুকুর ব্রিলিয়ান্টের পাশে শুয়ে পশমের কড়া গন্ধের মধ্যে সেই প্রশান্তির উষ্ণতা পেত সে। আরও একটা অপ্রতিরোধ্য জান্তব গন্ধ পেত ব্রিলিয়ান্টের গা থেকে। সেই গন্ধের মধ্যে জীবনের একটা চমৎকার উষ্ণতা তার জন্য পুষে রাখা হয়েছে। সেই উষ্ণতা ছাড়া তার চলে না।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>
দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৫৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৫৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৫৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৫২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৫১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৫০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান:পর্ব-৪৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

আরএ/

Header Ad

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা

ফাইল ছবি

জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এ নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সকল মানুষকে এক বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা। কেউ কারো উপরে না, আবার কেউ কারো নিচেও না, এই ধারণা আমরা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ ছাত্র-জনতার সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে সম্প্রতি আমরা অর্জন করেছি, সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র-জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদের দিয়েছে, তার মাধ্যমে আমাদের দেশকে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করে যারা দেশ গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে জাতি তাদের সারা জীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

বক্তব্য শেষে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

Header Ad

নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু

ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁ শহরে যানযট নিরসন ও শৃঙ্খলা ফেরাতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক-শ্রমিকদের যৌথ উদ্যোগে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। এতে শহরে শৃঙ্খলা ফিরবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) অভিযানের উদ্বোধন করেন নওগাঁ পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক টি.এম.এ মমিন। এ সময় নওগাঁ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জিয়া উদ্দিন, নওগাঁ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন, নওগাঁ জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আফজাল হোসেন ও অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযান শুরুর পর থেকেই শহরের বরুনকান্দি, মশরপুর, তাজের মোড় ও কালীতলাসহ মোট ৮ টি প্রবেশদ্বারে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেক পোষ্টগুলোতে ২ জন পুলিশ সদস্য, ২ জন ছাত্র সমন্বয়ক, ৪ জন রোভার স্কাউট সদস্য ও ২ জন রিকশা মালিক শ্রমিক প্রতিনিধিসহ মোট ১২ জন করে কাজ করছেন।

পৌর প্রশাসক জানান, নওগাঁ শহরে বৈধ যানবাহনের সংখ্যা ৪ হাজার। কিন্তু প্রতিদিন পার্শবতী বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ১০ হাজার রিকশা, ব্যাটারী চালিত অটো রিকশা ও ইজিবাইক শহরে প্রবেশ করে। এতে তীব্র যানযট ও জন মানুষের ভোগান্তি তৈরী হয়। এই দূর্ভোগ লাঘোবে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল ও পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিনের দিক নির্দেশনায় যানবাহন নিয়ন্ত্রনসহ বিশেষ অভিযানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। বৈধ চালকদের চিহ্নিত করতে তাদের মাঝে পরিধেয় বিশেষ ধরনের জ্যাকেট প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

নওগাঁর পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন বলেন, নওগাঁ শহরের যানযট দীর্ঘদিনের সমস্যা। পরিকল্পিত ভাবে এই সমস্যা দূর করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের উদ্যোগে পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের সমন্বয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন ষ্টেক হোল্ডারদের পরামর্শ নিয়ে একটি কর্ম পরিকল্পনা গ্রহক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নওগাঁর জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, অভিযান সফল ভাবে বাস্তবায়ন হলে শহরে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। জনগন এর সুফল পাবেন। সকলকে এই কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদানের আহবান জানান তিনি।

Header Ad

২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত

বক্তব্য রাখছেন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে ২০২৬ সালের মাঝামাঝি নির্বাচন হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের নৌ পরিবহন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ডক্টর এম সাখাওয়াত হোসেন।

সম্প্রতি ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হাউস অব লর্ডসে মানবাধিকার সংগঠন ‘ভয়েস ফর বাংলাদেশ’ আয়োজিত সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

‘ডিসকাশন অন ডেমোক্রেটিক কলাপ্স অ্যান্ড রিবিল্ডিং অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই সম্মেলনে হাউস অব লর্ডসের সিনিয়র সদস্য আলেক্সান্ডার চার্লস কার্লাইল কিউসি সভাপতিত্ব করেন। ভয়েস ফর বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্রডকাস্টার আতাউল্লাহ ফারুকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এম সাখাওয়াত হোসেন।

সম্মেলেনে সাবেক ব্রিটিশ মন্ত্রী পল স্কালি বলেন, বাংলাদেশে যে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে, তার সঠিক তদন্ত শেষে যথাযথ বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে করে এ ধরনের ঘটনার পুররাবৃত্তি না হয়।

লর্ড হোসাইন বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার সব সংস্কার এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে সব ধরনের সহায়তা পাবে।

সম্মেলনে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানান লেবার দলীয় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি রুপা হক।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত
সাবেক এমপি শাহজাহান ওমরের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর
১২ বছর পর সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া
ধামরাইয়ে শ্রমিকবাহী বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৪