শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৯ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৫২

দ্য ফার্স্ট ম্যান

আলজেরিয়ার গ্রীষ্মকাল খুব কঠিন ছিল। আমলা শ্রেণির লোকেরা এবং স্বচ্ছল লোকেরা স্বাস্থ্য উদ্ধারের জন্য ‘ফরাসি হাওয়া’ খেতে যেত। ফিরে এসে কেউ কেউ অবিশ্বাস্য সব গল্প ফাঁদত। নয়নাভিরাম মাঠের বর্ণনা দিত। সেখানে নাকি আগস্ট মাসের ঠিক মাঝামাঝি সময়ে পানি প্রবাহিত হয় ইত্যাদি ইত্যাদি। দারিদ্রপীড়িত এলাকায় কোনো পরিবর্তন ঘটত না। নিচের অঞ্চলগুলোতে কখনও কখনও অর্ধেক খালি হওয়ার কথা শোনা গেলেও তাদের এলাকায় জনসংখ্যা দেদারসে বাড়তেই থাকত, রাস্তায় বাচ্চাদের ঢল দেখে তার প্রমাণ পাওয়া যেত।

জ্যাক এবং পিয়েরের কাছে ছুটির দিন মানে গরমের সময় কাপড়ের তৈরি দড়ির তলাঅলা জুতো, সস্তা ট্রাউজার এবং গোল গলাঅলা গেঞ্জি পরে রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো। সর্বশেষ বৃষ্টি নামত এপ্রিল মাসে, কিংবা বড়জোর মে মাসে। সপ্তাহ জুড়ে, মাস জুড়ে রোদ চড়া হতে থাকত। সূর্য আরও গরম হয়ে পড়ত। কড়া সূর্যালোক আশপাশের দেয়ালগুলো শুকিয়ে ভাজা ভাজা করে ফেলত। রাস্তার মাটি, টালি আর পাথরগুলোকে মিহি ধূলো বানিয়ে ফেলত। পাগলা বাতাসের কারণে দোকানপাট, রাস্তাঘাট এবং গাছের প্রতিটা পাতার ওপরে ধুলোর পুরু স্তর পড়ে যেত। জুলাই মাসে জ্যাকদের বাড়ির আশপাশের গোটা এলাকা ধূসর-হলুদ রঙের গোলকধাঁধায় পরিণত হয়ে যেত। দিনের বেলা জনমানবহীন; ভয়ঙ্কর সূর্যালোকের শাসনে বাড়িগুলোর সব ঘরের ঝাঁপ সতর্কতার সঙ্গে বন্ধ রাখা হতো। বাড়ি ঘরের দরজার সামনে কুকুর বিড়ালগুলো ভূপাতিত হয়ে পড়ে থাকত। জীবন্ত সবকিছুই দেয়ালের ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকার চেষ্টা করত। আগস্ট মাসে তাপে দগ্ধ হয়ে যাওয়া আকাশের ফেঁসোর মতো মেঘের আড়ালে চলে যেত সূর্য। ভারী, আর্দ্র আকাশ থেকে সাদা আলো ছড়িয়ে পড়ত। চোখের পক্ষে সহ্য করা কঠিন। সে আলো রাস্তার রঙের শেষ বিন্দুটা পর্যন্ত মুছে দিয়ে যেত। সমবায় সমিতির শ্রমিকদের হাতুড়ির বাড়ি ধীর লয়ে নেমে আসত। শ্রমিকরা মাঝে মাঝেই কাজ থামিয়ে তাদের ঘর্মাক্ত মাথা বুক পেতে দিত পাইপ থেকে বের হয়ে আসা ঠাণ্ডা পানির সামনে। অ্যাপার্টমেন্টগুলোতে পানির বোতল এবং কখনও কখনও মদের বোতল ভেজা কাপড় দিয়ে পেঁচিয়ে রাখা হতো। জ্যাকের নানি ছায়াময় রুমের মধ্যে খালি পায়ে চলাচল করতেন। পরনে শুধু একটা কামিজ থাকত। কয়দা করে খড়ের পাখা ঘোরাতেন; কাজ করতেন বেশির ভাগ সকাল বেলায়। জ্যাককে টেনে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিতেন দুপুরের ঘুমের জন্য। সন্ধ্যার প্রথম প্রহরের ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় কাজ করার প্রত্যাশা নিয়ে অপেক্ষা করতেন। এভাবে সপ্তাহের পর সপ্তাহ ধরে গ্রীষ্ম এবং গ্রীষ্মের শিকার যারা তারা সবাই ভারী, ঘাম ঝড়ানো, শরীর ভাজা ভাজা করা আকাশের নিচে যেন হামাগুড়ি দিয়ে চলত। শেষে সবার মন থেকে যেন শীতের ঠাণ্ডা আর বৃষ্টির স্মৃতি মুছেই যেত যেন প্রবল বাতাসের কথা, তুষারের কথা কিংবা হালকা বৃষ্টির কথা পৃথিবী কখনও শোনেনি। বিশ্ব সৃষ্টির লগ্ন থেকে এই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অতিশয় তাপে দগ্ধ করিডরে পরিণত হওয়া এই খনিজ কাঠামো ছাড়া আর কোনো কিছুর অস্তিত্বই ছিল না। এখানে ঘর্মাক্ত এবং ধূলিধূসরিত জীবকূল কোটরাগত চোখে গতিহীন দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে এদিক ওদিক খুব আস্তে ধীরে চলাচল করত। আকাশটা সঙ্কুচিত হতে হতে এক সময় মাটির রাস্তাঘাটের ওপর যেন ভেঙে পড়ত। রাস্তার তলদেশ পর্যন্ত পৌঁছে যেত। পরিমাণে অঢেল, স্বভাবে প্রবল সেপ্টেম্বরের প্রথম বৃষ্টি, গোটা শহরকে প্লাবিত করে দিত। আশপাশের সব রাস্তাঘাট, ডুমুরের গাছের পাতা, মাথার ওপরের ট্রলিরেইল সবকিছু চকচক করত। শহরের দিকে তাকিয়ে থাকা ওপরের পাহাড় বেয়ে চলে আসত দূরের মাঠের ভেজা মাটির গন্ধ, আসার সময় গ্রীষ্মের কাছে বন্দিদের জন্য বয়ে নিয়ে আসত খোলা জায়গা আর স্বাধীনতার বার্তা। বাড়িঘর থেকে বাচ্চারা ছুটে বের হয়ে আসত রাস্তায়, পরনে সামান্য কাপড় চোপড়। বৃষ্টির পানি গিলতে থাকত রাস্তার ফেনিল জলের মধ্যে হৈহুল্লোর করে। একে অন্যের কাঁধ ছুয়ে রাস্তার খানাখন্দের মধ্যেই গোলাকার হয়ে চিৎকার চেচামেচি করত। তাদের ঐকতানে অতিশয় ঘোলা জলে তৈরি হতো যেন মৌসুমের প্রথম মদ। সেটা বাস্তবের আসল মদের চেয়েও ভয়ানক রকমের কড়া।

গরমের মৌসুম আসলেই ভয়াবহ ছিল। সবাইকে মাথা খারাপ করে দিত। দিন দিন সবার স্নায়বিক শক্তি একেবারে শেষ প্রান্তে চলে আসত। চিৎকার করে কিংবা খিস্তি ঝেড়ে প্রতিক্রিয়া দেখানোর মতো শক্তি পর্যন্ত কারো থাকত না। দারিদ্রক্লিষ্ট এলাকার এখানে ওখানে ফেটে পড়ার আগ পর্যন্ত কড়া তাপের মতো অসহিষ্ণুতা বাড়তেই থাকত। অত্যাধিক কড়া তাপের এরকম প্রভাবের একটা নজির জ্যাক দেখেছিল এক দিন, রিউ ডি লোইনে মারাবুট নামের আরব বসতিপূর্ণ এলাকার একেবারে প্রান্তে, পাহাড়ের গা ঘেঁষা কবর স্থানের কাছে নীল পোশাক পরা মাথা ন্যাড়া একজন আরব ধুলোময় মুরীয় ক্ষৌরাগার থেকে বের হয়ে এল। জ্যাকের সামনেই ফুটপাতে কয়েক কদম হেঁটে এসে শরীর সামনের দিকে এগিয়ে দিয়ে মাথা পেছনে হেলিয়ে দাঁড়াল সে। আসলে বাস্তবে এরকম করে দাঁড়ানো কারো পক্ষে সম্ভব নয়। তার মাথা পরিষ্কার করার সময় নাপিত উন্মাদ হয়ে গেছে। উপস্থিত আরবরা লক্ষ করে দেখেছে, নাপিত লম্বা ক্ষুর দিয়ে তার গলায় পোচ মেরে দিয়েছে। সেখান থেকে গল গল করে রক্ত বের হচ্ছে। গলায় পোচ খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সে ক্ষৌরাগার থেকে দৌড়ে বের হয়ে এসেছে। তার অবস্থা আধাখেচরাভাবে গলা কাটা হাঁসের মতো হয়েছে। উপস্থিত যারা ছিল তারা নাপিতকে সঙ্গে সঙ্গে ধরে ফেলেছে। এই অন্তহীন তাপের মৌসুমের মতোই উন্মাদ নাপিত তখন হাউমাউ করে চিৎকার শুরু করে দিয়েছে।

তারপর আকাশ থেকে নেমে আসা পানির প্রপাত গাছের পাতা, ঘরের ছাদ, দেয়াল, রাস্তাঘাট সবখান থেকে গ্রীষ্মের ধুলা একেবারে ঘষেমেজে পরিষ্কার করে দিত। খুব দ্রুত কাদা পানিতে ভরে যেত পয়োনালী; গলগল শব্দে জলের ধারা নামত নালার মধ্যে। বেশিরভাগ বছর নিষ্কাসনের সব ব্যবস্থা চুরমার করে দিয়ে রাস্তায় বন্যা বইয়ে দিত বৃষ্টির জল। গাড়ি এবং ট্রলিবাসগুলো চলার সময় দুপাশে জল ছিটে পড়ত খুব উচু হয়ে। আর পেছনে ক্রমহ্রাসমান ধারা দেখে মনে হতো, গাড়িটা কিংবা ট্রলিবাসটা একটা হলুদ রঙের মাছের ডানা। তটের কাছে এবং বন্দরের কাছে সমুদ্রের পানিও ঘোলাটে রং ধারণ করত। বৃষ্টির পরে প্রথম সূর্যালোকে বাড়িঘর থেকে, রাস্তা থেকে, গোটা শহর থেকে বাষ্প উঠে যেত ওপরের দিকে। তাপ আবার হয়ত ফিরে আসত। কিন্তু আগের মতো শাসন করার ক্ষমতা থাকত না। আকাশ অনেক উন্মুক্ত মনে হতো। শ্বাস নিতে কষ্ট হতো না। সূর্যের গভীর থেকে বাতাসে কম্পন ছড়িয়ে পড়ত। প্রচুর বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা শরতের আগাম বার্তা এবং স্কুলের পড়াশোনার মৌসুম শুরুর সম্ভাবনা নিয়ে আসত। নানি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলতেন, গ্রীষ্ম কত লম্বা রে বাবা! শরতের আগমনকে এবং জ্যাকের বিদায়কে তিনি সমানভাবে স্বাগত জানাতেন। কারণ গরমের সময়ে জ্যাকের ঘরের মধ্যে বন্দি অবস্থা তার কাছে অসহিষ্ণু মনে হতো।

তাছাড়া বছরের একটা বিশেষ সময়ে আলাদাভাবে কোনো মানুষ কর্মহীন থাকবে সেটা তার বোধগম্য ছিল না। তিনি বলতেন, আমার কথাই বলি; আমার তো কোনো ছুটি নেই। আসলেই তার কথা ঠিক। স্কুল কী জিনিস, ছুটি কী জিনিস এসব তিনি জানতেন না। একদম ছোটবেলা থেকে তিনি কাজ করে আসছেন, কোনো রকমের আরাম বিশ্রাম নেই। সামনে বড় কোনো প্রাপ্তিযোগ হবে বলে তার নাতি যে আরও কয়েক বছর বাড়ির জন্য কোনো উপার্জন করতে পারবে না সেটা তিনি মেনে নিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি একেবারে প্রথম দিন থেকেই অযথা খরচ হওয়া তিন মাসের কথা বিশেষভাবে চিন্তায় এনেছেন। লিসেতে জ্যাকের চতুর্থ বছর যেবার শুরু হলো তিনি ঠিক করলেন এইবার জ্যাকের ছুটির দিনগুলো কাজে লাগাতে হবে। স্কুলের বছর শেষের দিন তিনি জ্যাককে বললেন, এবারের গ্রীষ্মে কিন্তু তোকে কাজ করতে হবে। বাড়ির জন্য কিছু উপার্জন করতে হবে। ঘরের ভেতর কাজহীন বসে থাকলে চলবে না। আসলে জ্যাক ভেবেছিল ছুটিতে তার অনেক কাজ করতে হবে সাঁতার কাটতে যেতে হবে, কুবা অভিযানে যেতে হবে; খেলাধুলা, বেলকোর্টের রাস্তায় ঘোরাঘুরি, সচিত্র কাহিনিগুলো পড়া, জনপ্রিয় উপন্যাসগুলো পড়া, ভারমটের পঞ্জিকা, সেইন্ট এতিয়েনের অফুরন্ত ক্যাটালগ সবকিছু মিলে ছুটিটা কাটাতে পারবে। বাড়ির জন্য ফাইফরমাস খাটা, নানির চাপানো কাজ এসব তার কাজের মধ্যে গণনা করেনি সে। কিন্তু জ্যাকের পরিকল্পিত কাজগুলো নানির দৃষ্টিতে মোটেও কোনো কাজ নয়। স্কুলের সময়েও জ্যাক যেরকম কাজ করত এখন সে সেরকম কাজ করছে না এবং বাড়ির জন্য কিছু উপার্জনও করছে না। কাজেই তার এই ঘুরে বেড়ানোর বিষয়টা নরকের আগুনের মতো জাজ্বল্যমানভাবে অসহনীয়। সবচেয়ে সোজা সহজ কাজ বলতে নানি বুঝতেন তার একটা চাকরি জোটানো।

চলবে….

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৫১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৫০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান:পর্ব-৪৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

আরএ/

Header Ad
Header Ad

নির্বাচনের আগেই জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি নিহতদের পরিবারের

নিহতদের বিচারের দাবি স্বজনদের। ছবি: সংগৃহীত

আগামী সংসদ নির্বাচনের আগেই জুলাই হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাইকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন নিহতদের পরিবার। শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত ‘জুলাই ২৪ শহীদ পরিবার সোসাইটি’ নামের নতুন সংগঠনের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি উঠে আসে।

সংবাদ সম্মেলনে নিহতদের স্বজনরা বলেন, একদল রাজনৈতিক দল গঠন করে ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করছে। আরেক দল ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নির্বাচন চাচ্ছে। কিন্তু এসব হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন দেওয়া যাবে না।

তারা বলেন, এই দুই হাজার হত্যাকাণ্ডের বিপরীতে একজন হত্যাকারী পুলিশ কিংবা হেলমেট বাহিনীর সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হলেও দুই হাজার জন গ্রেপ্তার হতো। কিন্তু নগণ্য কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের সবাইকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

যাত্রাবাড়ী এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত মো. সিয়ামের ভাই মো. রাশেদ বলেন, এই সরকারের কাছে বেশি কিছু চাই না, ভাই হত্যার বিচার চাই। দেশে কোনো নির্বাচন দেওয়ার আগে ভাই হত্যার বিচার করুন।

নিহত সিফাতের বাবা কামাল হাওলাদার বলেন, আমাদের সন্তানরা জীবন দিয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন দল নির্বাচন নিয়ে রাজনীতি করছে। অথচ আমাদের সন্তান হত্যার বিচারের কথা কেউ বলছে না।

নিহত সাজ্জাত হোসেন সজলের মা শাহিনা বেগম বলেন, পুলিশ আমার ছেলেকে আশুলিয়ায় আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। সাত মাস হয়ে গেল আমি আমার ছেলের হত্যার বিচার পেলাম না। কান্না করতে করতে এখন চোখের জল শুকিয়ে গেছে। তবুও ছেলে হত্যার বিচার পাচ্ছি না।

সংবাদ সম্মেলনে তিনজন উপদেষ্টা নিয়ে ৩০ সদস্যবিশিষ্ট নির্বাহী পরিষদ কমিটি গঠন করা হয়। সংগঠনের উপদেষ্টা পরিষদে আছেন মো. মহিউদ্দিন, শহিদুল ইসলাম ভুইয়া এবং মো. মীর মোস্তাফিজুর রহমান। নির্বাহী পরিষদ কমিটিতে চেয়ারম্যান হয়েছেন মো. গোলাম রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আবুল হাসান এবং সাধারণ সম্পাদক রবিউল আউয়াল ভুইয়া। কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয়েছে আব্দুল্লাহ আল মারুফ ও জান্নাতুল ফেরদৌস সাফা। সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সেলিম মাহমুদ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামাল হাওলাদার ও সহ সাধারণ সম্পাদক সাবিনা আক্তার রিমা।

এছাড়া কোষাধক্ষ্য হয়েছেন জারতাজ পারভীন ও সহকোষাধক্ষ্য আবু হোসেন, জনসংযোগ সম্পাদক শিল্পী আক্তার, দপ্তর সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম ও সহদপ্তর সম্পাদক আব্দুল মান্নান। আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন রাহাত আহম্মেদ খান, ক্রিয়া সংস্কৃতি ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক কবির হোসেন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক শাহরিয়ার খান পলাশ এবং সহ শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক সাবরিনা আফরুজ সেবন্ধী।

নির্বাহী সদস্য হয়েছেন সামছি আরা জামান, মো. সাইদুল ইসলাম, মো. অব্দুল বাসার অনিক, স্বর্ণা আক্তার, রাজু আহমেদ, শাহিনা বেগম, ফারহানা ইসলাম পপি, খালেদ সাইফুল্লাহ, রাজু আহমেদ, মো. সুমন মিয়া, আহমেদ লামিয়া, পাপিয়া আক্তার শমী এবং এম. এ. মতিন।

Header Ad
Header Ad

চলন্ত বাসে ডাকাতি-যৌন নিপীড়ন: মির্জাপুর থানার এএসআই বরখাস্ত

মির্জাপুর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. আতিকুজ্জামান। ছবি: সংগৃহীত

চলন্ত বাসে ডাকাতি ও নারীর শ্লীলতাহানীর ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. আতিকুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মির্জাপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার এইচএম মাহবুব রেজওয়ান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জানা যায়, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে ভুক্তভোগী কয়েকজন বাসযাত্রী মির্জাপুর থানায় গিয়ে চলন্ত বাসে ডাকাতির বিষয়ে ডিউটি অফিসার মো. আতিকুজ্জামানকে অবহিত করেন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ আমলে না নেওয়ায় কয়েক মিনিট পর তারা থানা ত্যাগ করেন।

এছাড়া ডিউটি অফিসার তাদের নাম ঠিকানা বা মোবাইল নম্বর সহ কোন তথ্যই রাখেননি তিনি। যার কারণে মামলা গ্রহণ করতে বিলম্ব হয়। এরপর ঘটনার তিনদিন পরে এক ভুক্তভোগী বাস যাত্রীর মামলা নিতে হয়েছে।

এদিকে, টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান গত শুক্রবার ২১ ফেব্রুয়ারি রাতেই এএসআই আতিকুজ্জামানকে মির্জাপুর থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করেন। শনিবার তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

এএসআই আতিকুজ্জামানের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

এ বিষয়ে মির্জাপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার এইচএম মাহবুব রেজওয়ান জানান, শনিবার আতিকুজ্জামানের সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি তিনি জানতে পেরেছেন।

Header Ad
Header Ad

ছাত্রদের নতুন দলে যোগ দিচ্ছেন সশস্ত্র বাহিনীর সাবেক সদস্যরা

ছবি: সংগৃহীত

নানা জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আগামী ২৬ অথবা ২৭ ফেব্রুয়ারি আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে শিক্ষার্থীদের নতুন রাজনৈতিক দল। এই দলে যোগ দিচ্ছেন সশস্ত্র বাহিনীর সাবেক সদস্যরা। জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

দল ঘোষণার আগে শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে তিন বাহিনীর সাবেক কয়েকজন সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করবে জাতীয় নাগরিক কমিটি।

নতুন দল ঘোষণা নিয়ে এখন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। নতুন দলের আহ্বায়ক হিসেবে নাহিদ ইসলামের দায়িত্ব নেয়ায় জোড়ালো সম্ভাবনা রয়েছে। তবে দলের সদস্যসচিব পদ নিয়ে নেতাদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। পরে আলোচনার ভিত্তিতে দলের শীর্ষ চারটি পদ মোটামুটি নিশ্চিত হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে পদগুলোতে কারা থাকছে তা এখনও জানা যায়নি। তবে আরও দুটি পদের বিষয়েও প্রস্তাব এসেছে।

এর আগে, জাতীয় নাগরিক কমিটিতে যুক্ত হতে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ক্যাম্পেইন চালায় সংগঠনটি। এরপর ‘আপনার চোখে নতুন বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি জনমত জরিপও চালালো হয়। সেখানে নতুন রাজনৈতিক দলের নাম, লোগোসহ বিভিন্ন মতামত জানতে চাওয়া হয়। এদিকে নয়া রাজনৈতিক দলের নাম ইংরেজীতে হবে বলে গুঞ্জন রয়েছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

নির্বাচনের আগেই জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি নিহতদের পরিবারের
চলন্ত বাসে ডাকাতি-যৌন নিপীড়ন: মির্জাপুর থানার এএসআই বরখাস্ত
ছাত্রদের নতুন দলে যোগ দিচ্ছেন সশস্ত্র বাহিনীর সাবেক সদস্যরা
চলন্ত বাসে ডাকাতির সময় ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি: পুলিশ সুপার
ময়মনসিংহে দেড় শতাধিক বিড়ালের মিলনমেলা
বিচার ও পুলিশ বিভাগের সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া হয়েছে: অ্যাটর্নি জেনারেল
১৩ দিনের চীন সফরে যাচ্ছেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির
২৯ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা পেয়েছে ২ সদস্যের একটি অপরিচিত বাংলাদেশি ফার্ম: ট্রাম্প
ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা: প্রাণে বাঁচলেন দিতি কন্যা লামিয়া
ফাগুনের দুপুরে রাজধানীতে স্বস্তির বৃষ্টি
‘আমাদের অনেক বয়স হয়েছে, নবীন-তরুণরা দেশকে নতুন করে চিন্তা করছেন’
ভেঙে পড়া রাষ্ট্রকে গঠন বিএনপির পক্ষেই সম্ভব: তারেক রহমান
চলন্তবাসে বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানি, টাঙ্গাইলে গ্রেফতার ৩
আমরা কারো দাবার গুটি হবো না: জামায়াত আমির
গরমে স্যুট পরে এসির তাপমাত্রা কমানো বন্ধ করুন: জ্বালানি উপদেষ্টা
সেনাবাহিনীতে চাকরির সুযোগ, আবেদন শুরু ২৮ ফেব্রুয়ারি
নতুন দলের শীর্ষ ছয়টি পদ নিয়ে ‘সমঝোতা’
মিঠাপুকুরে তোপের মুখে পালিয়ে গেলেন সাব রেজিস্ট্রার
আমার মা চাইতেন না আমি বিয়ে করে সংসারী হই : পপি  
ঝিনাইদহে ৩ জনকে হত্যা, দায় স্বীকার করলো চরমপন্থী সংগঠন