শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৫০

দ্য ফার্স্ট ম্যান

বইটা কোন পদ্ধতিতে ছাপা হয়েছে তার উপর নির্ভর করে পাঠক আগেই বুঝতে পারত, ওই বই থেকে কী ধরনের এবং কতখানি আনন্দ লাভ করতে পারবে। জ্যাক এবং পিয়েরে বড় বড় অক্ষরে দুপাশে সুপরিসর মার্জিনঅলা বই পছন্দ করত না। মার্জিত রুচির পাঠকদের জন্য তেমন বই পছন্দ হলেও তাদের পছন্দ ছিল ছোট অক্ষরে টাইপ করা এবং পৃষ্ঠায় কম মার্জিন সংবলিত বই। শব্দ আর বাক্যে পুরোপুরি ঠাসা বই ছিল তাদের প্রিয়। বড় আকারের পুরনো গামলার মধ্যে অনেক পরিমাণ খাবার যেমন ভয়াবহ ক্ষুধা নিবৃত্ত করার পরও কিছু খাবার অবশিষ্ট থাকে তেমনভাবে বইয়ের মধ্যে অনেক কিছু থাকবে যা দিয়ে তাদের পড়ার ক্ষুধা নিবৃত্ত করা যায়। সুক্ষ ব্যাপার স্যাপার তাদের পছন্দ ছিল না। তারা যেহেতু কোনো কিছুই ভালো করে জানত না, তাদের সবকিছুই জানার দরকার ছিল। বইটা সুলিখিত না হলে, কিংবা ভালো বাঁধাই না থাকলেও তাতে তাদের কিছু যেত আসত না। লেখার বক্তব্য হওয়া চাই প্রাঞ্জল এবং পৃষ্ঠা ভরা থাকা চাই অত্তুগ্র ঘটনাবলী। তাহলে ওইসব বই তাদের স্বপ্নের ক্ষুধা মিটাতে পারত এবং ওইসব বই পড়ার মাধ্যমে তারা যেন একটা প্রবল ঘুমের ভেতর ডুবে যেতে পারত।

তা ছাড়া প্রত্যেক বইয়ের ছিল আলাদা আলাদা সুগন্ধ, যে কাগজের উপর ছাপা হতো অক্ষরগুলো সেই কাগজেরও গন্ধ থাকত। বইয়ের গন্ধ সব সময় খুব কোমল আর অনন্য। একেকটা বইয়ের নিজস্ব গন্ধ একেক রকম। চোখ বন্ধ করেই জ্যাক বলে দিতে পারত, বইটা নেলসন সিরিজের কি না। তখনকার দিনে নেলসন সিরিজের বই প্রকাশ করত ফাসকেল। পড়া শুরু করার আগেই একেকটা বই জ্যাককে প্রতিশ্রুতিভরা জগতে টেনে নিয়ে যেত। ওই গন্ধে জ্যাক নিজের অবস্থানের ঘরটা পর্যন্ত ভুলে যেত। বাড়ির আশপাশের এলাকা, এলাকার হৈচৈ, খোদ শহরটা এবং বাস্তবের গোটা জগৎই তার বোধ থেকে মুছে যেত। বুনো অবাধ একটা বোধ নিয়ে পড়া শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে সামনের জগৎটা বিলীন হয়ে যেত। জ্যাক নিজেই অন্যরূপের ভেতর প্রবেশ করত। বার বার তাকে ডাকা হতো, জ্যাক, তৃতীয় বারের মতো টেবিল ঠিক কর। তবু তার চেতনা ফিরত না। আরও ডাকাডাকির পর সে টেবিল সাজাত ঠিকই, তবে তার দৃষ্টি থাকত বইয়ের দিকে। মনে হতো, সে মাতাল অবস্থায় আছে। টেবিলের কাজ সেরে বইয়ের কাছে আবার ফিরে আসত। মনে হতো, সে পড়া ছেড়ে ওঠেইনি। তারপর তাকে বলা হতো, জ্যাক খেতে বসো। খেতে বসলে তার মনে হতো খাবারগুলো বইয়ের কথাগুলোর চেয়ে ভারী, তবে অবাস্তব। খাবার শেষ করে টেবিল পরিষ্কার করে আবার পড়ায় ফিরে যেত সে। কখনো কখনো মা তার নিজস্ব জায়গায় বসতে যাওয়ার আগে তার কাছে আসতেন। মা বলতেন, লাইব্রেরি থেকে আনা। অবশ্য লাইব্রেরি কথাটা মা ঠিকমতো উচ্চারণ করতে পারতেন না। তিনি শুধু তার ছেলের মুখে লাইব্রেরি কথাটা উচ্চারিত হতে শুনেছেন। তার কাছে কথাটার নিজস্ব কোনো অর্থ ছিল না। তবে তিনি বইয়ের মলাটের চেহারাটা ঠিক ঠিক চিনতেন এবং তার কথার সুরে জ্যাক মায়ের দিকে না তাকিয়েই বলে উঠত, হ্যাঁ। মা জ্যাকের কাঁধের উপর ঝুঁকে থাকতেন। মা লেখার লাইনগুলোর দিকে তাকিয়ে থেকে বইয়ের গন্ধ নিতেন। কখনো কখনো তার লন্ড্রির কাজ করে ফোলা আঙুল বইয়ের পাতার উপর ছুঁইয়ে যেতেন যেন বুঝতে চেষ্টা করছেন, বই জিনিসটা আসলে কেমন, যেন ওই রহস্যময় চিহ্নগুলোর আরও কাছে আসতে চাইছেন, দেখতে চাইছেন ওই দুর্বোধ্য চিহ্নগুলো কীভাবে তার ছেলেকে বার বার টেনে নিয়ে যায়। তার বোধের বাইরের এক জগতে ছেলে কীভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দিচ্ছে। সেখান থেকে ফেরার সময় তার দিকে এমনভাবে তাকাচ্ছে যেন তিনি অচেনা কেউ। মায়ের খসখসে আঙুলগুলো মাঝে মাঝে জ্যাকের মাথায় আদর বুলিয়ে যেত। মা দীর্ঘশ্বাস ফেলে তার নিজের জায়গায় গিয়ে বসতেন, জ্যাকের থেকে বেশ দূরে। নানি পর পর বেশ কয়েকবার আদেশ দিতেন, জ্যাক, ঘুমোতে যা। না হলে কাল সকালে দেরি হয়ে যাবে। জ্যাক উঠে দাঁড়িয়ে পরের দিনের ক্লাসের বইপত্র ব্যাগে গোছাতে শুরু করত; তবে বইটা তার বগলে ধরাই থাকত। বিছানায় মাতালের মতো ধপাস করে শুয়ে বইটা আস্তে করে পাশবালিশের নিচে চালান দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ত।

সুতরাং বেশ কয়েক বছর জ্যাকের অস্তিত্ব দুটো জগতের মাঝে অসমভাবে বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল। ওই জগৎ দুটো সে কোনোভাবেই এক করে মেলাতে পারেনি। দিনের প্রায় বারো ঘণ্টার জন্য তাকে থাকতে হতো যে জগতে সেখানে ছিল ঢোলের বাজনা, ছাত্র-শিক্ষকদের আনাগোনা, খেলাধুলা এবং পড়াশোনা। অন্যদিকে প্রাত্যহিক জীবনের দুতিন ঘণ্টা থাকতে হতো বাড়িতে, বাড়ির আশপাশের জগতে, মায়ের সান্নিধ্যে। অবশ্য শুধু গরিব মানুষের ঘুম ছাড়া আর কোনোভাবে মায়ের জগতের সঙ্গে সে নিজেকে মেলাতে পারেনি। যদিও বাড়ির আশপাশের জগৎ ছিল তার জীবনের প্রথমভাগের অংশ, তার বর্তমান এবং ভবিষ্যত ছিল লিসে। সুতরাং তার বাড়ির জগৎটা মিশে থাকত তার রাত, ঘুম এবং স্বপ্নের সঙ্গে। যে রাতে সে সিমেন্টের ওপর পড়ে গিয়েছিল তখনো কি মরুভূমির মতো হয়ে যাওয়া বাড়ির প্রতিবেশ তার সঙ্গেই ছিল?

লিসেতে কারও সঙ্গে কোনো অবস্থাতেই জ্যাক তার মায়ের কথা কিংবা বাড়ির কথা বলতে পারত না। অন্যদিকে লিসের কথা বাড়ির কারও সঙ্গে বলার মতো ছিল না। প্রবেশিকা পরীক্ষার পূর্বে তার কোনো বন্ধু কিংবা কোনো শিক্ষক তার বাড়িতে কখনো আসেননি। বছরে শুধু একবার, জুলাই মাসের শুরুতে পুরস্কার প্রদানের সময় ছাড়া তার নানি এবং মা কখনো লিসেতে যাননি। সেদিন তারা লিসের বিশাল দরজা দিয়ে প্রবেশ করতেন পুরোদস্তুর পোশাকে সজ্জিত সব পিতামাতা এবং ছাত্রদের ভিড়ের মধ্যে। কখনো বাইরে যাবার সময় নানি সাধারণত কালো পোশাক এবং মাথায় ওড়না পরিহিত অবস্থায় যেতেন। লিসেতে যাওয়ার সময়ও সেই পোশাকই পড়তেন। বাদামী জাল আর কালো মোমের তৈরি আঙুরশোভিত হ্যাট, বাদামী রঙের গ্রীষ্মকালীন পোশাক এবং তার একমাত্র উঁচুতলাঅলা জুতা জোড়া পরে যেতেন মা। খোলা গলার কলারঅলা হাফহাতা সাদা শার্ট আর ট্রাউজার পরে যেত জ্যাক। দুটোই আগের রাতে মা খুব যত্ন করে ইস্ত্রি করে রাখতেন। তাদের দুজনের মাঝে হাঁটতে হাঁটতে জ্যাক তাদের লাল ট্রলিবাসের দিকে পথ দেখিয়ে নিয়ে যেত। দুপুর একটার দিকে তারা যাত্রা করত। বাসের মধ্যে নানি এবং মাকে সিটে বসিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকত জ্যাক। মাঝখানের কাঁচের দেয়াল ভেদ করে মায়ের দিকে তাকিয়ে থাকত সে। মা মাঝে মাঝে জ্যাকের দিকে তাকিয়ে হাসতেন। কিছুক্ষণ পর পরই মা তার হ্যাটের কৌণিক অবস্থা পরীক্ষা করে দেখতেন, তার ঢিলা মোজা জোড়া নিচের দিকে নেমে যায় কি না দেখতেন এবং তার গলায় পরা পাতলা একটা মালার সঙ্গে মেরি মাতার ছোট সোনার একটা মেডেল পরোখ করে দেখতেন। দু গভার্নমেন্টে থেকে রিউ বাব আজুন পর্যন্ত পথটুকু জ্যাক তাদের দুজনের সঙ্গে বছরে একবার পাড়ি দিত। মা সেদিন একটা লোশন ব্যবহার করতেন? জ্যাক মায়ের গায়ের লোশনের সুগন্ধ নিতে নিতে হাঁটত। নানি মাথা উচু করে গর্বভরা পদক্ষেপে এগিয়ে যেতেন। পায়ে ব্যথা লাগছে বলে মা কিছু বললে নানি তাকে বকুনি দিয়ে বলতেন, কষ্ট হলেও তার বয়সের তুলনায় ছোট জুতা পড়ার অভ্যাসটা হয়ে যাচ্ছে আপাতত। তখন জ্যাক আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে দুপাশের দোকানপাট এমনকি দোকানিদেরও দেখিয়ে দিত নানি এবং মাকে। বুঝাতে চাইত, তার জীবনে এইসব চাকচিক্য এসেছে তার লিসেতে পড়াশোনা করার কল্যাণে। লিসেতে পৌঁছে দেখতে পেত বিশাল দরজা খোলা। সিঁড়ির উপর থেকে একেবারে নিচ পর্যন্ত টবের গাছ দিয়ে সাজানো হয়েছে। যেসব ছাত্র প্রথম ভর্তি হয়েছে তাদের বাবা মায়েরা প্রথম বারের মতো ওই সিঁড়ি দিয়ে প্রবেশ করবেন। রকমারি পরিবার অনুষ্ঠান শুরুর অনেক আগে এসে উপস্থিত হতো। গরিব লোকেরা সব সময় এ রকম করেই থাকে। কারণ, তাদের সামাজিক দায়দায়িত্ব এবং আনন্দের সুযোগ খুব কমই থাকে। কাজেই যে অল্প সংখ্যক সুযোগ পাওয়া যায় সেখানে যেন অনিয়মানুবর্তিতার ঘটনা না ঘটে। ভেতরের উঠোনের মতো জায়গাটাতে ঢুকে তারা পুরনো ছাত্র এবং অভিভাবকদের জন্য নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়ে বসে পড়ত। সারি সারি সুসজ্জিত অনেক চেয়ার। চেয়ারগুলো ভাড়া করা হতো নাচ এবং গানের অনুষ্ঠানের আয়োজক একটা প্রতিষ্ঠান থেকে। ঊঠোনের অন্য প্রান্তে বিশাল ঘড়িটার নিচে উঁচু জায়গার সবটুকু ফাঁকা জায়গা ভরে থাকত সাধারণ চেয়ার এবং হাতলঅলা চেয়ারে। ওই জায়গাটাও জাকজমকপূর্ণভাবে সাজানো থাকত সবুজ গাছপালার টব দিয়ে। আস্তে আস্তে বসার পুরো জায়গাটাই ভরে উঠত। বিচিত্র রকমের হালকা রঙের পোশাক পরা মানুষ, তাদের মধ্যে মহিলাদের সংখ্যা বেশি। যারা আগে আসত তারা গাছের ছায়ার নিচে জায়গা নিয়ে বসত। অন্যরা আরব দেশের তৈরি বিনুনি করা খড়ের সঙ্গে প্রান্তভাগে লাল পশমী সুতোর টাসেলঅলা পাখা দিয়ে নিজেদের বাতাস করত। শ্রোতাদের যারা রোদে বসতে বাধ্য হতো তাদের মাথার উপরের সূর্য নীলাকাশটা আরও বেশি নীল করে জমাট বাধিয়ে দিতে থাকত আর নিচের দর্শকরা ভাজা এবং সিদ্ধ হতে থাকত।

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান:পর্ব-৪৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

 

Header Ad

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কুশল বিনিময় করেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে তাদের এ কুশল বিনিময় হয়।

সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া পৌঁছালে উপস্থিত সবাই তাকে স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ও সরকারের উপদেষ্টা তার পাশে এসে দাঁড়ান এবং শারীরিক খোঁজখবর নেন। এ সময় খালেদা জিয়া তাদের অভিনন্দন জানান এবং দেশকে এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন।

এ সময় এই ৩ উপদেষ্টা বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে দোয়া চান এবং সরকারের সংস্কার কাজে তার সর্বাত্মক সহযোগিতা চান।

এদিকে সেনাকুঞ্জে গেলে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া এখানে এসেছেন। একযুগ তিনি আসার সুযোগ পাননি। আমরা গর্বিত এই সুযোগ দিতে পেরে। দীর্ঘদিনের অসুস্থতা সত্ত্বেও বিশেষ দিনে সবার সঙ্গে শরিক হওয়ার জন্য আপনাকে আবারও ধন্যবাদ। আপনার আশু রোগমুক্তি কামনা করছি।

Header Ad

দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম

ছবি: সংগৃহীত

আবারও স্বর্ণের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার ভরিতে ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা আজকেও ছিল এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩ হাজার ৬৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গয়নার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

স্বর্ণের দাম কমানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫৭৮ টাকায়। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫৮৬ টাকায়।

এর আগে, সবশেষ গত ১৯ নভেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় টানা চার দফা কমার পর ভরিতে ২ হাজার ৯৪০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।

এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩১ হাজার ১৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯২ হাজার ২৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছে গত ২০ নভেম্বর থেকে।

এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে ৫১ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ৩০ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ২১ বার।

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত