রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস পর্ব-৪২

দ্য ফার্স্ট ম্যান

আরেকবার তার ধর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে সে বলে ‘ক্যাথলিক’। ধর্মশিক্ষার ক্লাস সে করতে চায় কি না জিজ্ঞেস করলে জ্যাকের নানির ভয়ের কথা মনে আসে এবং সে বলে, না। তার কথা শুনে মনিটর বললেন, তাহলে বুঝে গেলাম, তুমি ক্যাথলিক ঠিকই। কিন্তু ধর্মের বাস্তবায়ন করো না, তাই না? তার বাড়িতে ধর্মের কী আচার আচরণ পালন করা হয় সে সম্পর্কে জ্যাক ব্যাখ্যা করে বলতে পারে না। কিংবা তার এলাকার এবং জাতির লোকেরা ধর্মকে কীভাবে দেখে থাকে সেটাও তার জানার বাইরে। সুতরাং সে মনিটরের প্রশ্নের জবাবে বলল, হ্যাঁ। উপস্থিত সবাই হেসে উঠলে সেদিনই জ্যাকের একগুঁয়েমির একটা সুনাম প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায় এবং ওই মুহূর্তেই সে বুঝতে পারে, সে গভীর সাগরে পড়েছে।

আরেক দিন সাহিত্যের শিক্ষক তাদের সবার হাতে একটা ফরম ধরিয়ে দিলেন। ব্যক্তিগত কিছু তথ্য দিতে হবে এবং পিতামাতার স্বাক্ষর লাগবে। ছোটখাটো অস্ত্র থেকে শুরু করে ম্যাগাজিন এবং তাসসহ আরও কতিপয় জিনিস স্কুলে আনা যাবে না বলে উল্লেখ ছিল সেই ফরমে। ফরমের ভাষা এমনই জটিল ছিল যে, মা এবং নানি যাতে সহজে বুঝতে পারেন সেজন্য জ্যাককে সহজ করে বুঝিয়ে দিতে হয়েছিল। পরিবারের মধ্যে একমাত্র তার মা-ই কোনো রকমে স্বাক্ষর করতে পারতেন। কাজেই তিনি ফরমের নিচে এক কোণায় স্বাক্ষর করবেন। স্বামী মারা যাওয়ার পর সরকারের তরফ থেকে তিন মাস পর পর তাকে দেওয়া টাকা তোলার সময়ও তাকে স্বাক্ষর করতে হতো। প্রতিবার যাওয়ার সময় মা বলতেন তিনি কোষাগারে যাচ্ছেন। তার কাছে ওই শব্দের বেশি কোনো অর্থ জানা ছিল না সেই অফিস সম্পর্কে। তার সন্তানরা জানত, মা এক পৌরাণিক জায়গায় যাচ্ছেন। সেখানে প্রাচুর্যের কোনো সীমা নেই। প্রথমবার স্বাক্ষর দেওয়ার সময় ঝামেলা হওয়াতে ওখানে উপস্থিত পাশের একজন পরামর্শ দিলেন ‘বিধবা কামু’ কথাটার একটা অতি সাধারণ নমুনাকে স্বাক্ষর হিসেবে চালিয়ে দিতে। পরবর্তীতে ওই স্বাক্ষর দিলেই হবে। তিনি সেরকমই চালিয়ে এসেছেন। যাই হোক পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে জ্যাক দেখল, খুব ভোরে খোলে এরকম একটা দোকানে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করার জন্য মা খুব ভোরে বের হয়ে গেছেন; তার ফরমে স্বাক্ষর করার কথা হয়ত ভুলেই গেছেন। নানি স্বাক্ষর করতে পারতেন না। তার হিসাব চালাতেন বৃত্তের মাধ্যমে, মানে কয়বার বৃত্ত ছেদ করা হয়েছে তার উপর নির্ভর করতেন তার হিসাব। ছেদ করা দিয়ে তিনি বুঝাতেন এক, দশ কিংবা একশো। শেষে জ্যাক তার ফরম স্বাক্ষর ছাড়াই ফিরিয়ে নিয়ে গেল এবং বলল তার মা স্বাক্ষর করতে ভুলে গেছেন। তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, বাড়িতে স্বাক্ষর করার মতো আর কেউ ছিল কি না। জ্যাক বলল, না আর কেউ ছিল না। তখন শিক্ষকের বিস্মিত চাহনি থেকে জ্যাক বুঝতে পারল, ব্যাপরটা সে যতটা মনে করেছিল তার চেয়ে অনেক বেশি অস্বাভাবিক।

সে এর চেয়েও বেশি বিব্রত বোধ করেছে আলজিয়ার্সে আসা ফরাসি বালকদের নিজেদের বাবাদের পেশা সম্পর্কিত খামখেয়ালিপনা দেখে। যাকে নিয়ে জ্যাক সবচেয়ে বেশি ভেবেছে সে হলো জর্জ দিদিয়ের। ফরাসি ভাষার ক্লাস এবং অন্যান্য পড়াশোনার বিষয়ে দুজনের মধ্যে যথেষ্ট মিল থাকায় জ্যাক এবং তার মধ্যে বেশ বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। তবে তাদের বন্ধুত্বের কারণে পিয়েরে আবার ঈর্ষায় ভুগতে থাকে। দিদিয়ের এসেছে ধর্মপ্রাণ ক্যাথলিক পরিবার থেকে। তার মা ‘গান তৈরি করতে’ পারতেন এবং তার বোন (তাকে কখনও না দেখেই জ্যাক তার স্বপ্নে বিভোর হতো) কাপড়ে ফুল তুলতে পারত। দিদিয়ের নিজের সম্পর্কে বলত, বড় হয়ে সে পাদ্রি হবে। খুব বুদ্ধিদীপ্ত দিদিয়ের নৈতিকতা এবং ধর্মীয় বিশ্বাসের ব্যাপারে আপোসহীন। তার বিশ্বাস ছিল যুক্তিতর্কের বাইরে। তার মুখ থেকে কেউ কখনও খারাপ কোনো শব্দ শোনেনি। শারীরিক অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ক্রিয়াকলাপ কিংবা জন্ম প্রক্রিয়া সম্পর্কে অন্যরা অহরহ অনেক কথাই উচ্চারণ করত। সেসব ব্যাপারে অবশ্য তাদের পরিষ্কার ধারণা তখনও জন্মায়নি। জ্যাকের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব পাকাপাকি হয়ে যাওয়ার পরে তার পক্ষ থেকে জ্যাকের কাছে যেটা জোরালোভাবে চাওয়া হলো সেটা হলো, জ্যাক যেন অশ্লীল কথা উচ্চারণ না করে। দিদিয়েরের সঙ্গে কথা বলার সময় অশ্রাব্য কথা পরিহার করা জ্যাকের জন্য মোটেও কঠিন হয়নি। কিন্তু অন্যদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে কেমন করে যেন অবলীলায় ওইসব শব্দ বের হয়ে পড়ত। ততদিনে অবশ্য তার মধ্যে বহুমুখী স্বভাব গড়ে উঠতে শুরু করেছে। এই স্বভাবের বদৌলতে অনেক কিছুই তার জন্য সহজ হয়ে যেত। কারো ভাষা নকল করা, যেকোনো পরিবেশে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেওয়া, যেকোনো মানুষের ভূমিকা পালন করা ইত্যাদি তার কাছে তেমন কোনো ব্যাপারই ছিল না। দিদিয়েরের কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয় শুনে ফরাসি মধ্যবিত্ত পরিবার সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধরণা লাভ করে সে। ফ্রান্সে তার নিজের বাড়ি আছে। প্রত্যেক ছুটিতে সে সেখানে বেড়াতে যায়। বাড়ি সম্পর্কে সে জ্যাকের সঙ্গে অহরহ অনেক কথা বলে কিংবা লেখে। বাড়ির চিলেকোঠায় অনেক পুরনো বাক্সপেটরা আছে। সেগুলোতে পরিবারের চিঠিপত্র, স্যুভেনির, ছবি ইত্যাদি সংরক্ষণ করা আছে। তার দাদা এবং দাদার বাবার জীবন সম্পর্কে তার জানা শোনা আছে। এমনকি তাদের এক পূর্বপুরুষ ট্রাফালগারে নাবিক হয়ে গিয়েছিলেন, তার কথাও তার জানা আছে। তার স্মৃতিতে জ্বলজ্বলে সেই লম্বা ইতিহাস থেকে দৈনন্দিন জীবনের আচার ব্যবহার সম্পর্কে উপদেশ এবং উদাহরণ টানত সে। ‘আমার দাদা বলতেন’.... ‘বাবা মনে করেন’.... ইত্যাদি ইত্যাদি। ওইসব কথা থেকেই তার নিজের চারিত্রিক কঠোরতা এবং উদ্ধত পবিত্রতার সাফাই খুঁজে পেত জ্যাক। ফ্রান্স সম্পর্কে কথা বলতে গেলেই বলত, ‘আমাদের দেশ’। আর দেশ তার কাছে ভবিষ্যতে কী রকম ত্যাগ প্রত্যাশা করতে পারে সে সম্পর্কে সজাগ হয়ে নিজেকে প্রস্তুত করতে থাকে সে। জ্যাককে সে প্রায়ই বলত, তোমার বাবা আমাদের দেশের জন্য শহীদ হয়েছেন। দেশ সম্পর্কে জ্যাকের মনে এরকম কোনো ধারণা ছিল না। সে শুধু জানত, তারও পরিচয় ফরাসি হিসেবে এবং সে কারণেই তারও কিছু দায় দায়িত্ব রয়েছে। তবে তার কাছে ফ্রান্স মানে বিমূর্ত একটা ধারণামাত্র। মানুষ সে রকমই মনে করে আসছে বলে তার বিশ্বাস এবং সেই বিমূর্ত সত্তার প্রতিই তার মতো সবারই কর্তব্য আছে। ভালো মন্দ সব কিছুর বণ্টনকারী যে ঈশ্বরের কথা বাড়ির বাইরের মানুষদের কাছ থেকে সে শুনেছে বিমূর্ত বিষয়টা সেই ঈশ্বরের মতো, তার উপরে প্রভাব ফেলা মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে তিনি মানুষের ভাগ্য নিয়ে যা খুশি তা করতে পারেন। ঈশ্বর সম্পর্কে এরকম বিশ্বাস তার চারপাশের নারীদের মধ্যে আরও প্রবল। একদিন সে জিজ্ঞেস করেছিল, মা, আমাদের দেশ কোনটা?

কোনো কিছু বুঝতে না পরলে মা যেমন চমকে উঠতেন ওই প্রশ্ন শুনেও তেমনি ভয়ে চমকে উঠেছিলেন, কী জানি বাবা, জানি না।

জ্যাক বলেছিল, আমাদের দেশ ফ্রান্স।
মা যেন স্বস্তি পেলেন। বললেন, ও, হ্যাঁ হ্যাঁ।

দেশ কাকে বলে সেটা দিদিয়ের খুব স্পষ্ট করে জানত। তার সামনে তার পরিবারের সুস্পষ্ট এবং জোরালো উপস্থিতি। যে দেশে তার জন্ম সে দেশের গোটা ইতিহাসই যেন তার নিজের। দেশের ইতিহাসের কথা বলতে গেলে সে জোয়ান অব আর্কের কথা বলে শান্তি পেত। তার নামের শুধু প্রথম অংশ উল্লেখ করত। ভালো আর মন্দ বলতে কী কী বুঝায় সেসব ব্যাপারে এবং নিজের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ ভাগ্য সম্পর্কে তার ধারণা বেশ পাকা ছিল। কম মাত্রায় হলেও নিজেদের সম্পর্কে পিয়েরে এবং জ্যাকেরও ধরণা ছিল। তারা জানত, তাদের জাতপাত আলাদা, অতীত বলতে কিছু নেই। পারিবারিক বিষয়ে বলার মতো কিছু নেই। বাড়িতে পুরনো চিঠিপত্র বোঝাই বাক্সপেটরা কিংবা পরিবারের মানুষদের ছবি রাখার মতো চিলেকোঠা নেই। ঝাপসা ইতিহাসের একটা দেশের নামমাত্র নাগরিক তারা। বড় হতে হতে দেখেছে, ঘরের ছাদ ঢেকে থাকত তুষারে আর মাথার উপরে চিরস্থায়ী এক বর্বর সূর্য। নৈতিক শিক্ষা বলতে যা ছিল তাতে চুরি করতে নিষেধ করা হয়েছে। মাসহ অন্য সব নারীকে সুরক্ষা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে নারীদের সম্পর্কে, বড়দের সঙ্গে সম্পর্ক বিষয়ে এবং আরও অনেক প্রসঙ্গে সেই নৈতিক শিক্ষা তাদের কিছুই বলেনি। তারা যে সমাজে বড় হয়েছে সেখানে শিশুরা ঈশ্বর সম্পর্কে কিছু জানে না। ভবিষ্যৎ জীবন সম্পর্কেও তারা কিছু জনে না। কারণ এই জীবন সূর্য, সমুদ্র আর দারিদ্রের উদাসীন দেবতাদের নিচে প্রতি দিনই যেন অফুরন্ত মনে হয়েছে তাদের কাছে। সত্যিকার অর্থে জ্যাক যদি দিদিয়েরের প্রতি এতটা অনুগত হয়েই থাকে তাহলে সেটা হয়েছে দিদিয়েরের হৃদয়ের কারণে। নিরঙ্কুশতার সঙ্গে তার হৃদয়ের মিশে যাওয়ার বিষয় এবং প্রবল অনুভূতির কাছে তার অনুগত্যের বিষয়টা জ্যাককে মুগ্ধ করেছে। অনুগত্য কথাটা জ্যাক প্রথম শুনেছে দিদিয়েরের কাছ থেকেই এবং কয়েকশো বার শোনা হয়ে গেছে এই কথাটা। দিদিয়েরের রয়েছে মনোমুগ্ধকর চারিত্রিক কোমলতা। তার কোমলতা সত্যিই বিচিত্র এবং চমকপ্রদ। জ্যাকের দৃষ্টিতে দিদিয়ের সবার থেকে কত আলাদা! এই কোমলতা জ্যাককে দুর্বার আকর্ষণে টানার ক্ষমতা রাখে। বড় হয়ে জ্যাক ভিনদেশি নারীদের প্রতি যেরকম অপ্রতিরোধ্য প্রবল আকর্ষণ বোধ করেছে তেমনি এক আকর্ষণ ছিল দিদিয়েরের মধ্যে। পরিবার, ঐতিহ্য আর ধর্ম সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকা ছেলে দিদিয়ের জ্যাককে যেন গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এলাকায় কোনো দুর্বোধ্য গুপ্ত কিছুর পাহারা থেকে ফিরে আসা অভিযাত্রীদের মতো দুর্বার আকর্ষণে টানত।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

Header Ad
Header Ad

উত্তরায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তরুণ-তরুণীর মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর উত্তরায় সেলফি তোলার সময় ট্রেনের ধাক্কায় এক তরুণ ও এক তরুণী প্রাণ হারিয়েছেন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উত্তরা পূর্ব থানার ৮ নম্বর সেক্টরের শেষ প্রান্তের রেলক্রসিং এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে তরুণ-তরুণী রেললাইন দিয়ে হাঁটছিলেন এবং সেলফি তুলছিলেন। এ সময় ঢাকাগামী ও টঙ্গীগামী দুটি ট্রেন একযোগে রেলক্রসিং অতিক্রম করছিল। এ সময় টঙ্গীগামী ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই তরুণী মারা যান।

গুরুতর আহত অবস্থায় তরুণটিকে প্রথমে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নেয়া হয় এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই রাত ৮টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, উত্তরা থেকে আহত অবস্থায় এক তরুণকে হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার মরদেহ জরুরি বিভাগে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে রেলওয়ে থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।

তবে দুর্ঘটনায় নিহতদের নাম-পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Header Ad
Header Ad

জাতীয় গ্রিডে যান্ত্রিক ত্রুটিতে ১০ জেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় গ্রিডে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ১০টি জেলা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় খুলনাসহ দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।

ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) লিমিটেড সূত্রে জানা গেছে, গোপালগঞ্জের আমিনবাজার এলাকায় জাতীয় গ্রিডে ত্রুটি দেখা দেওয়ায় এই বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়। রাত ৮টার পর থেকে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হতে শুরু করে এবং পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হচ্ছে। তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে আরও কিছু সময় লাগবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

বিদ্যুৎ না থাকায় এইসব অঞ্চলের সাধারণ মানুষকে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। বিদ্যুৎনির্ভর সব ধরনের কাজকর্মও ব্যাহত হয়েছে।

উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৪ সালে দেশে বড় ধরনের একটি গ্রিড বিপর্যয় ঘটেছিল। সেবার ভারত থেকে আসা বিদ্যুৎ সরবরাহ কয়েক সেকেন্ডের জন্য বন্ধ হয়ে পড়ায় সারাদেশ প্রায় ৩০ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন ছিল।

Header Ad
Header Ad

আবারও দুই ধাপে ৬ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা

ছবি: সংগৃহীত

বিভিন্ন দিবস, উৎসব এবং সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে নির্বাহী আদেশের সুবিধা কাজে লাগিয়ে আবারও ছুটি কাটানোর সুযোগ পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা। মে মাসে দুই দফায় টানা তিনদিন করে মোট ছয়দিনের ছুটির সুযোগ আসছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সরকারি ছুটির প্রজ্ঞাপন অনুসারে, আগামী ১ মে (বৃহস্পতিবার) আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে সরকারি ছুটি থাকবে। এরপর ২ ও ৩ মে যথাক্রমে শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় সরকারি কর্মচারীরা টানা তিনদিনের ছুটি উপভোগ করতে পারবেন।

এছাড়া, আগামী ১১ মে (রবিবার) বুদ্ধ পূর্ণিমার ছুটি রয়েছে। এর আগে ৯ ও ১০ মে যথাক্রমে শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় আবারও টানা তিনদিন ছুটি মিলবে।

এর আগে গত মার্চ-এপ্রিল মাসে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সরকারি চাকরিজীবীরা টানা নয়দিন ছুটি কাটানোর সুযোগ পেয়েছিলেন। সরকার ২৮ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত ঈদের ছুটির সঙ্গে নির্বাহী আদেশে আরও একটি অতিরিক্ত ছুটি যুক্ত করেছিল।

ছুটির বিধিমালা অনুযায়ী, দুই ছুটির মাঝে নৈমিত্তিক ছুটি নেওয়ার নিয়ম নেই। তবে অর্জিত ছুটি বা পূর্বনির্ধারিত ঐচ্ছিক ছুটি নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। বছরের শুরুতে নিজ ধর্ম অনুযায়ী তিনদিনের ঐচ্ছিক ছুটি অনুমোদন নিয়ে ভোগ করার নিয়মও চালু আছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

উত্তরায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তরুণ-তরুণীর মৃত্যু
জাতীয় গ্রিডে যান্ত্রিক ত্রুটিতে ১০ জেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট
আবারও দুই ধাপে ৬ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা
পাকিস্তানি হামলার আশঙ্কায় বাঙ্কারে আশ্রয় নিচ্ছেন ভারতীয়রা
চীনা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করলো বিএনপি
আওয়ামী লীগ ভারতের গোলামী করা দল : নুরুল হক নুর
ইরানের রাজাই বন্দরে শক্তিশালী বিস্ফোরণ, আহত ৫১৬ জন
প্রায় দুই ঘণ্টা পর মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক
গোবিন্দগঞ্জে মৃত আওয়ামী লীগ নেতার নামে জামাতের মামলা
গুজরাটে ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি গ্রেফতারের দাবি পুলিশের
নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই বাসীর গলার কাঁটা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ অবশেষে সংস্কার
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ
গোবিন্দগঞ্জে গাঁজাসহ ট্রাকের চালক-হেলপার গ্রেপ্তার
আদমদীঘিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা তোহা গ্রেপ্তার
নাটকীয়তা শেষে রাতে ফাইনালে মুখোমুখি রিয়াল-বার্সা
মাদকাসক্ত ছেলেকে ত্যাজ্য ঘোষণা করলেন বাবা
গরমে লোডশেডিং নিয়ে সুখবর দিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা
পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের ক্রিকেটীয় সম্পর্ক ছিন্ন করা উচিত: সৌরভ গাঙ্গুলি
র‍্যাফেল ড্রতে ৯ কোটি টাকা জিতলেন দুই প্রবাসী বাংলাদেশি
৬২ জন পুলিশ সদস্য পাচ্ছেন বিপিএম ও পিপিএম পদক