শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস পর্ব-৪২

দ্য ফার্স্ট ম্যান

আরেকবার তার ধর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে সে বলে ‘ক্যাথলিক’। ধর্মশিক্ষার ক্লাস সে করতে চায় কি না জিজ্ঞেস করলে জ্যাকের নানির ভয়ের কথা মনে আসে এবং সে বলে, না। তার কথা শুনে মনিটর বললেন, তাহলে বুঝে গেলাম, তুমি ক্যাথলিক ঠিকই। কিন্তু ধর্মের বাস্তবায়ন করো না, তাই না? তার বাড়িতে ধর্মের কী আচার আচরণ পালন করা হয় সে সম্পর্কে জ্যাক ব্যাখ্যা করে বলতে পারে না। কিংবা তার এলাকার এবং জাতির লোকেরা ধর্মকে কীভাবে দেখে থাকে সেটাও তার জানার বাইরে। সুতরাং সে মনিটরের প্রশ্নের জবাবে বলল, হ্যাঁ। উপস্থিত সবাই হেসে উঠলে সেদিনই জ্যাকের একগুঁয়েমির একটা সুনাম প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায় এবং ওই মুহূর্তেই সে বুঝতে পারে, সে গভীর সাগরে পড়েছে।

আরেক দিন সাহিত্যের শিক্ষক তাদের সবার হাতে একটা ফরম ধরিয়ে দিলেন। ব্যক্তিগত কিছু তথ্য দিতে হবে এবং পিতামাতার স্বাক্ষর লাগবে। ছোটখাটো অস্ত্র থেকে শুরু করে ম্যাগাজিন এবং তাসসহ আরও কতিপয় জিনিস স্কুলে আনা যাবে না বলে উল্লেখ ছিল সেই ফরমে। ফরমের ভাষা এমনই জটিল ছিল যে, মা এবং নানি যাতে সহজে বুঝতে পারেন সেজন্য জ্যাককে সহজ করে বুঝিয়ে দিতে হয়েছিল। পরিবারের মধ্যে একমাত্র তার মা-ই কোনো রকমে স্বাক্ষর করতে পারতেন। কাজেই তিনি ফরমের নিচে এক কোণায় স্বাক্ষর করবেন। স্বামী মারা যাওয়ার পর সরকারের তরফ থেকে তিন মাস পর পর তাকে দেওয়া টাকা তোলার সময়ও তাকে স্বাক্ষর করতে হতো। প্রতিবার যাওয়ার সময় মা বলতেন তিনি কোষাগারে যাচ্ছেন। তার কাছে ওই শব্দের বেশি কোনো অর্থ জানা ছিল না সেই অফিস সম্পর্কে। তার সন্তানরা জানত, মা এক পৌরাণিক জায়গায় যাচ্ছেন। সেখানে প্রাচুর্যের কোনো সীমা নেই। প্রথমবার স্বাক্ষর দেওয়ার সময় ঝামেলা হওয়াতে ওখানে উপস্থিত পাশের একজন পরামর্শ দিলেন ‘বিধবা কামু’ কথাটার একটা অতি সাধারণ নমুনাকে স্বাক্ষর হিসেবে চালিয়ে দিতে। পরবর্তীতে ওই স্বাক্ষর দিলেই হবে। তিনি সেরকমই চালিয়ে এসেছেন। যাই হোক পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে জ্যাক দেখল, খুব ভোরে খোলে এরকম একটা দোকানে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করার জন্য মা খুব ভোরে বের হয়ে গেছেন; তার ফরমে স্বাক্ষর করার কথা হয়ত ভুলেই গেছেন। নানি স্বাক্ষর করতে পারতেন না। তার হিসাব চালাতেন বৃত্তের মাধ্যমে, মানে কয়বার বৃত্ত ছেদ করা হয়েছে তার উপর নির্ভর করতেন তার হিসাব। ছেদ করা দিয়ে তিনি বুঝাতেন এক, দশ কিংবা একশো। শেষে জ্যাক তার ফরম স্বাক্ষর ছাড়াই ফিরিয়ে নিয়ে গেল এবং বলল তার মা স্বাক্ষর করতে ভুলে গেছেন। তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, বাড়িতে স্বাক্ষর করার মতো আর কেউ ছিল কি না। জ্যাক বলল, না আর কেউ ছিল না। তখন শিক্ষকের বিস্মিত চাহনি থেকে জ্যাক বুঝতে পারল, ব্যাপরটা সে যতটা মনে করেছিল তার চেয়ে অনেক বেশি অস্বাভাবিক।

সে এর চেয়েও বেশি বিব্রত বোধ করেছে আলজিয়ার্সে আসা ফরাসি বালকদের নিজেদের বাবাদের পেশা সম্পর্কিত খামখেয়ালিপনা দেখে। যাকে নিয়ে জ্যাক সবচেয়ে বেশি ভেবেছে সে হলো জর্জ দিদিয়ের। ফরাসি ভাষার ক্লাস এবং অন্যান্য পড়াশোনার বিষয়ে দুজনের মধ্যে যথেষ্ট মিল থাকায় জ্যাক এবং তার মধ্যে বেশ বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। তবে তাদের বন্ধুত্বের কারণে পিয়েরে আবার ঈর্ষায় ভুগতে থাকে। দিদিয়ের এসেছে ধর্মপ্রাণ ক্যাথলিক পরিবার থেকে। তার মা ‘গান তৈরি করতে’ পারতেন এবং তার বোন (তাকে কখনও না দেখেই জ্যাক তার স্বপ্নে বিভোর হতো) কাপড়ে ফুল তুলতে পারত। দিদিয়ের নিজের সম্পর্কে বলত, বড় হয়ে সে পাদ্রি হবে। খুব বুদ্ধিদীপ্ত দিদিয়ের নৈতিকতা এবং ধর্মীয় বিশ্বাসের ব্যাপারে আপোসহীন। তার বিশ্বাস ছিল যুক্তিতর্কের বাইরে। তার মুখ থেকে কেউ কখনও খারাপ কোনো শব্দ শোনেনি। শারীরিক অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ক্রিয়াকলাপ কিংবা জন্ম প্রক্রিয়া সম্পর্কে অন্যরা অহরহ অনেক কথাই উচ্চারণ করত। সেসব ব্যাপারে অবশ্য তাদের পরিষ্কার ধারণা তখনও জন্মায়নি। জ্যাকের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব পাকাপাকি হয়ে যাওয়ার পরে তার পক্ষ থেকে জ্যাকের কাছে যেটা জোরালোভাবে চাওয়া হলো সেটা হলো, জ্যাক যেন অশ্লীল কথা উচ্চারণ না করে। দিদিয়েরের সঙ্গে কথা বলার সময় অশ্রাব্য কথা পরিহার করা জ্যাকের জন্য মোটেও কঠিন হয়নি। কিন্তু অন্যদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে কেমন করে যেন অবলীলায় ওইসব শব্দ বের হয়ে পড়ত। ততদিনে অবশ্য তার মধ্যে বহুমুখী স্বভাব গড়ে উঠতে শুরু করেছে। এই স্বভাবের বদৌলতে অনেক কিছুই তার জন্য সহজ হয়ে যেত। কারো ভাষা নকল করা, যেকোনো পরিবেশে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেওয়া, যেকোনো মানুষের ভূমিকা পালন করা ইত্যাদি তার কাছে তেমন কোনো ব্যাপারই ছিল না। দিদিয়েরের কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয় শুনে ফরাসি মধ্যবিত্ত পরিবার সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধরণা লাভ করে সে। ফ্রান্সে তার নিজের বাড়ি আছে। প্রত্যেক ছুটিতে সে সেখানে বেড়াতে যায়। বাড়ি সম্পর্কে সে জ্যাকের সঙ্গে অহরহ অনেক কথা বলে কিংবা লেখে। বাড়ির চিলেকোঠায় অনেক পুরনো বাক্সপেটরা আছে। সেগুলোতে পরিবারের চিঠিপত্র, স্যুভেনির, ছবি ইত্যাদি সংরক্ষণ করা আছে। তার দাদা এবং দাদার বাবার জীবন সম্পর্কে তার জানা শোনা আছে। এমনকি তাদের এক পূর্বপুরুষ ট্রাফালগারে নাবিক হয়ে গিয়েছিলেন, তার কথাও তার জানা আছে। তার স্মৃতিতে জ্বলজ্বলে সেই লম্বা ইতিহাস থেকে দৈনন্দিন জীবনের আচার ব্যবহার সম্পর্কে উপদেশ এবং উদাহরণ টানত সে। ‘আমার দাদা বলতেন’.... ‘বাবা মনে করেন’.... ইত্যাদি ইত্যাদি। ওইসব কথা থেকেই তার নিজের চারিত্রিক কঠোরতা এবং উদ্ধত পবিত্রতার সাফাই খুঁজে পেত জ্যাক। ফ্রান্স সম্পর্কে কথা বলতে গেলেই বলত, ‘আমাদের দেশ’। আর দেশ তার কাছে ভবিষ্যতে কী রকম ত্যাগ প্রত্যাশা করতে পারে সে সম্পর্কে সজাগ হয়ে নিজেকে প্রস্তুত করতে থাকে সে। জ্যাককে সে প্রায়ই বলত, তোমার বাবা আমাদের দেশের জন্য শহীদ হয়েছেন। দেশ সম্পর্কে জ্যাকের মনে এরকম কোনো ধারণা ছিল না। সে শুধু জানত, তারও পরিচয় ফরাসি হিসেবে এবং সে কারণেই তারও কিছু দায় দায়িত্ব রয়েছে। তবে তার কাছে ফ্রান্স মানে বিমূর্ত একটা ধারণামাত্র। মানুষ সে রকমই মনে করে আসছে বলে তার বিশ্বাস এবং সেই বিমূর্ত সত্তার প্রতিই তার মতো সবারই কর্তব্য আছে। ভালো মন্দ সব কিছুর বণ্টনকারী যে ঈশ্বরের কথা বাড়ির বাইরের মানুষদের কাছ থেকে সে শুনেছে বিমূর্ত বিষয়টা সেই ঈশ্বরের মতো, তার উপরে প্রভাব ফেলা মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে তিনি মানুষের ভাগ্য নিয়ে যা খুশি তা করতে পারেন। ঈশ্বর সম্পর্কে এরকম বিশ্বাস তার চারপাশের নারীদের মধ্যে আরও প্রবল। একদিন সে জিজ্ঞেস করেছিল, মা, আমাদের দেশ কোনটা?

কোনো কিছু বুঝতে না পরলে মা যেমন চমকে উঠতেন ওই প্রশ্ন শুনেও তেমনি ভয়ে চমকে উঠেছিলেন, কী জানি বাবা, জানি না।

জ্যাক বলেছিল, আমাদের দেশ ফ্রান্স।
মা যেন স্বস্তি পেলেন। বললেন, ও, হ্যাঁ হ্যাঁ।

দেশ কাকে বলে সেটা দিদিয়ের খুব স্পষ্ট করে জানত। তার সামনে তার পরিবারের সুস্পষ্ট এবং জোরালো উপস্থিতি। যে দেশে তার জন্ম সে দেশের গোটা ইতিহাসই যেন তার নিজের। দেশের ইতিহাসের কথা বলতে গেলে সে জোয়ান অব আর্কের কথা বলে শান্তি পেত। তার নামের শুধু প্রথম অংশ উল্লেখ করত। ভালো আর মন্দ বলতে কী কী বুঝায় সেসব ব্যাপারে এবং নিজের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ ভাগ্য সম্পর্কে তার ধারণা বেশ পাকা ছিল। কম মাত্রায় হলেও নিজেদের সম্পর্কে পিয়েরে এবং জ্যাকেরও ধরণা ছিল। তারা জানত, তাদের জাতপাত আলাদা, অতীত বলতে কিছু নেই। পারিবারিক বিষয়ে বলার মতো কিছু নেই। বাড়িতে পুরনো চিঠিপত্র বোঝাই বাক্সপেটরা কিংবা পরিবারের মানুষদের ছবি রাখার মতো চিলেকোঠা নেই। ঝাপসা ইতিহাসের একটা দেশের নামমাত্র নাগরিক তারা। বড় হতে হতে দেখেছে, ঘরের ছাদ ঢেকে থাকত তুষারে আর মাথার উপরে চিরস্থায়ী এক বর্বর সূর্য। নৈতিক শিক্ষা বলতে যা ছিল তাতে চুরি করতে নিষেধ করা হয়েছে। মাসহ অন্য সব নারীকে সুরক্ষা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে নারীদের সম্পর্কে, বড়দের সঙ্গে সম্পর্ক বিষয়ে এবং আরও অনেক প্রসঙ্গে সেই নৈতিক শিক্ষা তাদের কিছুই বলেনি। তারা যে সমাজে বড় হয়েছে সেখানে শিশুরা ঈশ্বর সম্পর্কে কিছু জানে না। ভবিষ্যৎ জীবন সম্পর্কেও তারা কিছু জনে না। কারণ এই জীবন সূর্য, সমুদ্র আর দারিদ্রের উদাসীন দেবতাদের নিচে প্রতি দিনই যেন অফুরন্ত মনে হয়েছে তাদের কাছে। সত্যিকার অর্থে জ্যাক যদি দিদিয়েরের প্রতি এতটা অনুগত হয়েই থাকে তাহলে সেটা হয়েছে দিদিয়েরের হৃদয়ের কারণে। নিরঙ্কুশতার সঙ্গে তার হৃদয়ের মিশে যাওয়ার বিষয় এবং প্রবল অনুভূতির কাছে তার অনুগত্যের বিষয়টা জ্যাককে মুগ্ধ করেছে। অনুগত্য কথাটা জ্যাক প্রথম শুনেছে দিদিয়েরের কাছ থেকেই এবং কয়েকশো বার শোনা হয়ে গেছে এই কথাটা। দিদিয়েরের রয়েছে মনোমুগ্ধকর চারিত্রিক কোমলতা। তার কোমলতা সত্যিই বিচিত্র এবং চমকপ্রদ। জ্যাকের দৃষ্টিতে দিদিয়ের সবার থেকে কত আলাদা! এই কোমলতা জ্যাককে দুর্বার আকর্ষণে টানার ক্ষমতা রাখে। বড় হয়ে জ্যাক ভিনদেশি নারীদের প্রতি যেরকম অপ্রতিরোধ্য প্রবল আকর্ষণ বোধ করেছে তেমনি এক আকর্ষণ ছিল দিদিয়েরের মধ্যে। পরিবার, ঐতিহ্য আর ধর্ম সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকা ছেলে দিদিয়ের জ্যাককে যেন গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এলাকায় কোনো দুর্বোধ্য গুপ্ত কিছুর পাহারা থেকে ফিরে আসা অভিযাত্রীদের মতো দুর্বার আকর্ষণে টানত।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

Header Ad

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কুশল বিনিময় করেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে তাদের এ কুশল বিনিময় হয়।

সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া পৌঁছালে উপস্থিত সবাই তাকে স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ও সরকারের উপদেষ্টা তার পাশে এসে দাঁড়ান এবং শারীরিক খোঁজখবর নেন। এ সময় খালেদা জিয়া তাদের অভিনন্দন জানান এবং দেশকে এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন।

এ সময় এই ৩ উপদেষ্টা বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে দোয়া চান এবং সরকারের সংস্কার কাজে তার সর্বাত্মক সহযোগিতা চান।

এদিকে সেনাকুঞ্জে গেলে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া এখানে এসেছেন। একযুগ তিনি আসার সুযোগ পাননি। আমরা গর্বিত এই সুযোগ দিতে পেরে। দীর্ঘদিনের অসুস্থতা সত্ত্বেও বিশেষ দিনে সবার সঙ্গে শরিক হওয়ার জন্য আপনাকে আবারও ধন্যবাদ। আপনার আশু রোগমুক্তি কামনা করছি।

Header Ad

দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম

ছবি: সংগৃহীত

আবারও স্বর্ণের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার ভরিতে ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা আজকেও ছিল এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩ হাজার ৬৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গয়নার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

স্বর্ণের দাম কমানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫৭৮ টাকায়। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫৮৬ টাকায়।

এর আগে, সবশেষ গত ১৯ নভেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় টানা চার দফা কমার পর ভরিতে ২ হাজার ৯৪০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।

এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩১ হাজার ১৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯২ হাজার ২৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছে গত ২০ নভেম্বর থেকে।

এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে ৫১ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ৩০ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ২১ বার।

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত