বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৬ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৫৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান

পরের দিন ম্যানেজার সব কর্মকর্তা কর্মচারীকে তার রুমে ডাকলেন হাতে হাতে বেতন দেওয়ার জন্য। জ্যাকের দিকে তাকিয়ে একটা খাম এগিয়ে দিয়ে বললেন, এই নাও, বাছা। জ্যাক দ্বিধান্বিত হাত বাড়াল। তিনি হাসিমুখে বললেন, তোমার কাজ বেশ ভালো হচ্ছে। তোমার বাবা-মাকে জানিয়ে দিতে পারো।

জ্যাক ততক্ষণে কথা বলা শুরু করেছে এবং জানাতে থাকে, সে আর আসবে না। ম্যানেজার বিস্মিত হয়ে তার দিকে তাকিয়ে থাকেন। তার খাম ধরা হাত তখনও জ্যাকের দিকে প্রসারিত। তিনি জিজ্ঞেস করেন, কেন? জ্যাককে তখন মিথ্যা বলতে হবে। কিন্তু মিথ্যা তার মুখ দিয়ে বের হবে না। জ্যাকের দুঃখী চাহনির দিকে তাকিয়ে থেকে ম্যানেজার বুঝতে পারেন এবং জিজ্ঞেস করেন— ও, তাহলে তুমি লিসেতে ফিরে যাবে?

হ্যাঁ, উত্তর দেয় জ্যাক। ভয় আর অসহায়ত্বের মধ্যে আকস্মিক স্বস্তির সম্ভাবনা তার চোখে জল নিয়ে আসে।

উত্তেজিত হয়ে ম্যানেজার দাঁড়িয়ে পড়লেন, তুমি যখন এখানে কাজ নিলে তখন তুমি জানতে তোমাকে ফিরে যেতে হবে। তোমার নানিও জানতেন নিশ্চয়ই! জ্যাক শুধু মাথা ঝাঁকিয়ে ইতিবাচক অর্থটাই প্রকাশ করতে পারে। ম্যানেজারের কণ্ঠ থেকে বজ্র নিনাদ ঝড়ে পড়ে। তিনি বুঝতে পারছেন, তারা অসৎ। তিনি অসততা পছন্দ করেন না। তিনি যদি জানতে পারতেন তার অধিকার আছে জ্যাককে বেতন না দেওয়ার, তিনি যদি জানতে পারতেন তাকে বোকা হতে হবে! না, তিনি বেতন দেবেন না। তার নানিকে আসতে হবে। তাকে সাদরে স্বাগত জানানো হবে। শুরুতে তারা যদি তাকে সত্য কথাটা বলত তবু হয়ত তিনি জ্যাককে কাজে নিতেন। কিন্তু কী ভয়ংকর কথা লিসেতে তার থাকার সাধ্য নেই, তারা খুব গরিব, তাকে কাজে নিতেই হবে!
বিমূঢ় জ্যাক শুধু বলতে পারে, শুধু ওই কারণেই।
কেন ওই কারণে?
কারণ আমরা গরিব। তারপর জ্যাক নীরব হয়ে যায়। তার দিকে তাকিয়ে ম্যানেজার বলতে থাকেন, ওই কারণেই তুমি এরকম একটা কাজ করতে পারলে? ওই কারণেই এরকম একটা কাহিনি ফাঁদলে? জ্যাক শক্ত মুঠিতে মাটির দিকে তাকিয়ে থাকে। অন্তহীন নীরবতা ঘিরে ধরে। তারপর ম্যানেজার টেবিল থেকে খামটা নিয়ে জ্যাকের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে কর্কশ কণ্ঠে বলেন, নাও তোমার বেতন। এবার ভাগো এখান থেকে।
জ্যাক বলে, না।

এবার ম্যানেজার খামটা জ্যাকের পকেটের মধ্যে ঠেসে দিয়ে বলেন, ভাগো এখন!
রাস্তায় নেমে জ্যাক দৌড়তে থাকে। কাঁদতে কাঁদতে সে দুহাতে শার্টের কলার চেপে ধরে যাতে পকেটের টাকার সঙ্গে তার হাতের ছোঁয়া না লাগে।
ছুটি না কাটানোর অধিকারের জন্য মিথ্যা বলা, গ্রীষ্মের আকাশ এবং তার ভালোাবাসার সমুদ্র থেকে দূরে কাজ করা এবং লিসেতে ফিরে আসার উদ্দেশে কাজ ত্যাগ করতে গিয়ে মিথ্যা বলা— এসব অবিচার তাকে প্রচণ্ড দুঃখী করে তোলে। এসবের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ ছিল মিথ্যা বলা। অবশ্য সে মিথ্যা বলতে পারত না এবং মিথ্যা বলতে হয়নি। আনন্দ-ফুর্তি করার ক্ষেত্রে সে মিথ্যা বলতে প্রস্তুত ছিল। কিন্তু প্রয়োজনের ক্ষেত্রে মিথ্যা বলা তার পক্ষে কঠিন। কাজ করার কারণে তার সবচেয়ে প্রিয় ছুটিটাই হারাতে হয়েছে, তার কাছ থেকে তার ছুটির অধিকার হরণ করা হয়েছে। এখন শুধু তাড়াহুড়ো করে শুরু হওয়া এবং দ্রুত ধাবমান বিষণ্ন দিনগুলো ছাড়া বছরের সামনের দিনগুলোতে আর কিছু নেই। দারিদ্রের মধ্যে থেকেও পেটুকের মতো করে যেসব রাজকীয় আনন্দ এবং অপূরণীয় সম্পদ উপভোগ করতে পারত সেগুলো হারাতে হয়েছে সামান্য কয়েকটা টাকা উপার্জনের জন্য, ওই কয়টা টাকা দিয়ে তার আনন্দের লক্ষ ভাগের এক ভাগও কেনা যাবে না। তবু সে বুঝতে পারে, ওই কাজটা না করলে তার উপায় ছিল না। কাজটা করার সময় সে অন্য সময়ের চেয়ে অনেকখানি বেশি বিদ্রোহী ছিল। কাজটা করার পরে তার গর্বও হয়েছে। মিথ্যা বলার অসহায়ত্বের ক্ষতিপূরণ সে প্রথম বেতনের দিনই পেয়ে গেছে। বাড়ি ফিরে প্রথমেই খাবার ঘরে ঢুকে দেখতে পেল, তার নানি আলুর খোসা ছড়িয়ে বেসিনের পানির মধ্যে ছুড়ে মারছেন। আর্নেস্ট মামা বসে তার দুপায়ের মাঝে ধরে রাখা কুকুর ব্রিলিয়ান্টের গা থেকে মাছি তাড়ান। মা কিছুক্ষণ আগে ফিরেছেন এবং দেয়ালের পাশের ড্রয়ারের মতো জায়গাটা থেকে ধোয়ার জন্য এক স্তুপ কাপড় বের করছেন। জ্যাক সরাসরি এগিয়ে গিয়ে টেবিলের ওপর একশো ফ্রাঁ এবং একটা মুদ্রা রাখল। সারা পথ সে মুদ্রাটা হাতের মুঠোয় ধরে বাড়ি ফিরেছে। কোনো কথা না বলে নানি তার দিকে বিশ ফ্রাঁ এগিয়ে দিলেন এবং বাকিটা নিয়ে নিলেন। হাত দিয়ে ক্যাথরিন করমারির গা ছুঁয়ে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বললেন, তোর ছেলে একটা কাজের মতো কাজ করেছে।

মায়ের দুঃখী চাহনি ছেলেকে আদর করে দিল। মা মুখে বললেন, হ্যাঁ।
অর্নেস্ট মামার পায়ের মাঝখানে ধরা ব্রিলিয়ান্ট ভাবল, তার কঠিন পরীক্ষা শেষ। তবে মামা কুকুরটাকে পায়ের মধ্যে ধরে রেখই বলল, ভালো, ভালো। বড় হয়ে গেছ।

সে অবশ্যই বড় হয়ে গেছে, তার ঋণের খুব অল্প একটা অংশ হলেও সে শোধ করে দিতে পেরেছে। সামান্য ওই টাকা দিয়ে পরিবারের দারিদ্র কিছুটা কমাতে পেরেছে— এই ধারণাটা তার মনকে কিছুটা দুষ্ট অহংকারে ভরে তুলল। এরকম অহংবোধ মানুষের মনে এসে থাকে যখন সে স্বাধীনবোধ করে এবং বুঝতে পারে, কোনো কিছুর কাছে, কারো কাছে তাকে আর অধীন হয়ে থাকতে হবে না। পঞ্চম বর্ষের ক্লাস শুরুর প্রথম দিন লিসের চত্বরে পা রেখেই বুঝতে পারে, সে আগের মতো নেই; চার বছর আগে বেলকোর্ট ছেড়ে প্রথম যেদিন এসেছিল সেদিনের মতো অচেনা সে নয়। সেদিন পায়ের তলার পুরু তলিঅলা জুতা পরে কেমন যেন টলোমলো মনে হচ্ছিল। অচেনা যে জগৎ তার জন্য অপেক্ষা করছিল সে জগৎ সম্পর্কে তার মনের ভেতর অনেক অজানা আশঙ্কা ছিল। কিন্তু আজ তার সহপাঠীদের দিকে সে যে চাহনি নিয়ে তাকাচ্ছে সে চাহনির মধ্যে নিষ্পাপ ভাবটা অনেকখানি অনুপস্থিত। তা ছাড়া ওই সময়ের মধ্যে তাকে শৈশব থেকে অনেক কিছুই ওপরের দিকে টেনে নিয়ে গেছে। সেদিনের আগ পর্যন্ত সে নানির হাতের প্রচণ্ড মার খেয়ে এসেছে বিনা প্রতিবাদে যেন মার খাওয়া বাল্যবেলার একটা অপ্রতিরোধ্য বাধ্যবাধকতা। কিন্তু এখন জ্যাককে মারতে গেলে সে হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে যদি তার হাত থেকে চামড়ার চাবুকটা কেড়ে নেয়— এই ভয়ে নানি একদিন নিজের রুমের দিকে ফিরে গিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদা শুরু করলেন। বুঝতে পারলেন, এতদিন ধরে এই অস্বাভাবিক শিশুকে বড় করেছেন। এটা তার দুর্ভাগ্য। তার আফসোসের আরও কারণ হলো, জ্যাককে তিনি আর কখনো মারতে পারবেন না। বাস্তবে অবশ্য তা-ই হয়েছিল, জ্যাককে আর মারতে পারেননি তিনি। কারণ, ততদিনে এই হালকা পাতলা পৌরুষদীপ্ত কিশোরের মধ্য থেকে আগের সেই বালকটি হারিয়ে গেছে। ছোট ছোট করে ছাঁটা চুল এবং আগুনে চাহনির এই যুবক গ্রীষ্মের গোটা সময় কাজ করে পরিবারের জন্য উপার্জন করেছে। সে লিসের ফুটবল দলের প্রথম সারির গোল রক্ষক। দিন তিনেক আগে জীবনে প্রথমবারের মতো সে একটা মেয়ের ঠোঁটের কম্পমান স্পর্শও লাভ করে ফেলেছে।

হ্যাঁ, এই বালকের জীবন এরকমই ছিল। দারিদ্র-দ্বীপের প্রচণ্ড প্রয়োজনীয়তার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত প্রতিবেশের জীবন এরকমই ছিল। অজ্ঞ আর প্রতিবন্দ্বী পরিবারে উঠতি যুবা বয়সের টগবগে রক্তের বয়সে অজানা এক জগৎ তার জীবনের জন্য প্রচণ্ড ক্ষুধা, বশ না মানা ক্ষুধার্ত ধীশক্তি এবং সর্বদা আনন্দের উত্তুঙ্গ মানসকে প্রত্যাঘাতে ধরাশায়ী করতে চেষ্টা করেছে। মুহূর্তের জন্য সে লজ্জিত বোধ করেছে। আবার উঠে দাঁড়িয়েছে, শিখতে চেষ্টা করেছে এবং বুঝতে চেষ্টা করেছে এই অচেনা জগৎ। এই জগতৎ সে নিজের ভেতর ধারণ করার চেষ্টা করেছে। কারণ সে এই জগৎ নিজের সমস্ত শক্তি দিয়ে ধরার চেষ্টা করেছে। সে সামনে এগিয়ে যেতে চেষ্টা করেছে। তবে নিজেকে ছোট করে নয় এবং শেষমেষ সে যে আত্মবিশ্বাস পায়নি তা নয়। হ্যাঁ, এক ধরনের নিশ্চয়তা সে পেয়েছে যেহেতু সে নিশ্চিত হতে পেরেছে, সে যা মনপ্রাণ দিয়ে চায় তা সে পাবে। যা কিছু এই জগতের এবং শুধুই এই জগতের সেসবের কোনো কিছুই তার কাছে অসম্ভব হয়ে থাকবে না। যে কোনোখানে একটুখানি ভরসার জায়গা পাওয়ার জন্য সে নিজেকে প্রস্তুত করছিল। ছেলেবেলার শূন্যতা নিয়েই সে নিজেকে প্রস্তুত করছিল। কারণ কোনো উচ্চাভিলাষী আসন সে চায়নি। সে শুধু চেয়েছে আনন্দ, মুক্ত প্রাণশক্তি, উদ্যম এবং জীবনে যা কিছু ভালো এবং পয়সার কাছে বিকিয়ে দিতে হয় না এমন কিছু। এমনকি দারিদ্রের বলই নিজেকে সে প্রস্তুত করতে থাকে, যাতে একদিন পয়সা না চেয়ে, পয়সার কাছে নতিস্বীকার না করে, পয়সা গ্রহণ করতে পারে, ঠিক এখন চল্লিশ বছর বয়সী জ্যাক যেমন অনেক দোদুল্যমান হয়েও অনেকখানি নিশ্চিত যে, অন্যসব মানুষের মধ্যে সবচেয়ে নিঃস্ব যারা তাদের চেয়েও নিঃস্ব সে, একমাত্র মা ছাড়া আর কেউ নেই তার। এভাবেই সে জীবন পার করেছে সমুদ্রের ধারে, ঝড়ো বাতাসের মধ্যে, খোলা রাস্তায়, গ্রীষ্মের খরতাপের নিচে, সংক্ষিপ্ত শীতের ভারী বর্ষণ-তলের খেলাধুলার মধ্যে। জীবন পার করেছে সে বাবা ছাড়া। উত্তরাধিকার সূত্রে কোনো কিছুই পায়নি সে। জীবনে একটি বছরের জন্য বাবাকে খুব দরকার ছিল। চারপাশের মানুষজন আর বিভিন্ন বিষয় থেকে শিক্ষা লাভ করেছে। যে জ্ঞান তার কাছে নিজেই এসে হাজির হয়েছে সে জ্ঞান দিয়েই সে বুঝে নিয়েছে, কখন কোনো আচরণের আদব শিখতে হবে এবং নিজের উত্তরাধিকার নিজেই তৈরি করতে হবে। তার পরিস্থিতির জন্য কখনো যথেষ্ট মনে হয়েছে সেই আদব, কখনো বা পৃথিবীর ক্ষতের মুখোমুখি হলে পরবর্তীতে অপর্যাপ্ত মনে হয়েছে।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৫৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৫৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৫২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৫১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৫০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান:পর্ব-৪৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

আরএ/

 

Header Ad
Header Ad

অবশেষে সরিয়ে দেওয়া হলো মাউশির বিতর্কিত ডিজিকে

অধ্যাপক ড. এহতেসাম উল হক ও মাউশির লোগো। ছবি: সংগৃহীত

শিক্ষক নেতাদের আন্দোলন ও গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক (ডিজি) পদ থেকে অধ্যাপক ড. এহতেসাম উল হককে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি শিক্ষা ক্যাডারের ১৪তম বিসিএসের কর্মকর্তা এবং পটুয়াখালী সরকারি কলেজের অধ্যাপক ছিলেন।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সম্প্রতি তার বিতর্কিত কার্যক্রম নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর তাকে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করে মাউশিতে সংযুক্ত করা হয়েছে। এদিকে, নতুন মহাপরিচালক হিসেবে অধ্যাপক মুহাম্মদ আজাদ খানকে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব মো. মাহবুব আলম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, অধ্যাপক মুহাম্মদ আজাদ খানের এই দায়িত্ব কেবল সাময়িক, যা পদোন্নতি হিসেবে গণ্য হবে না। পরবর্তীতে নিয়মিত নিয়োগের মাধ্যমে মহাপরিচালক নিয়োগ হলে এই চলতি দায়িত্ব বাতিল হয়ে যাবে।

অধ্যাপক এহতেসাম উল হকের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এর আগে তিনি বরিশাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ থাকাকালীন শিক্ষার্থীদের ওপর নিপীড়ন চালানোর অভিযোগে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন। অভিযোগ রয়েছে, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তথ্য তিনি পুলিশের কাছে সরবরাহ করেছিলেন।

২০২৩ সালের ৫ আগস্ট তার অপসারণের দাবিতে কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে। দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার অপসারণের দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ২০২১ সালের জুন মাসে বরিশাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে যোগদানের পর থেকে তিনি নানা অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়ে যান। তিনি বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের তৎকালীন মেয়র এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আত্মীয় সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর ঘনিষ্ঠ ছিলেন।

অভিযোগ রয়েছে, অধ্যক্ষ থাকাকালীন তিনি শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতেন এবং আন্দোলনে অসহযোগিতা করতেন। এমনকি কলেজের গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করতেন, যা তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনও ব্যবহার করতেন। তিনি কলেজের বিদ্যুৎ ব্যবহার করে নিজের বাসায় গ্রিল নির্মাণসহ অন্যান্য কাজ করিয়েছেন। কেউ প্রতিবাদ করলে চাকরি খেয়ে ফেলার হুমকি দিতেন এবং বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন (এসিআর) খারাপ করে দেওয়ার ভয় দেখাতেন। এছাড়া, চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন না দিয়ে বিদায় করে দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

ডিজি পদ থেকে এহতেসাম উল হককে অপসারণের খবরে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, একজন বিতর্কিত ব্যক্তি শিক্ষাখাতের এত বড় দায়িত্বে থাকতে পারেন না। তার অপসারণের মাধ্যমে প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রতি সরকারের সদিচ্ছার প্রতিফলন ঘটেছে।

Header Ad
Header Ad

২০১৮ সালের নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা ৩৩ ডিসি ওএসডি

ছবি: সংগৃহীত

২০১৮ সালের বিতর্কিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ৩৩ জন জেলা প্রশাসককে (ডিসি) বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত ছয়টি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিতর্কিত নির্বাচনে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনের কারণে এই কর্মকর্তাদের ওএসডি করা হয়েছে। এর আগে একই কারণে আরও ১২ জন কর্মকর্তাকে ওএসডি করা হয়েছিল।

ওএসডি হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের পরিচালক (যুগ্মসচিব) কবীর মাহমুদ, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো. মাহমুদুল আলম, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো. আবুল ফজল মীর, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের সদস্য-পরিচালক (যুগ্মসচিব) মঈনউল ইসলাম, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য (যুগ্মসচিব) মো. ওয়াহিদুজ্জামান, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (সংযুক্ত) এ কে এম মামুনুর রশিদ এবং বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বাপবিবো) সদস্য (যুগ্মসচিব) ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম।

এছাড়া তালিকায় রয়েছেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব কাজী আবু তাহের, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সদস্য (যুগ্মসচিব) মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব (সংযুক্ত) আনার কলি মাহবুব, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সদস্য (যুগ্মসচিব) সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী, কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব সাবিনা ইয়াসমিন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আতাউল গনি এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (সংযুক্ত) আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন।

এছাড়া, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব এ জেড এম নুরুল হক, বাংলাদেশ রাবার বোর্ডের পরিচালক (যুগ্ম-সচিব) এস এম আজিয়র রহমান, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সচিব (যুগ্ম-সচিব) মো. মাসুদ আলম সিদ্দিক এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের যুগ্ম-সচিব গোপাল চন্দ্র দাশসহ আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা রয়েছেন।

প্রসঙ্গত, বিতর্কিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকেই ওই সময়ের রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। এবার সেই নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তাদের পর্যায়ক্রমে ওএসডি করা হচ্ছে বলে মনে করছেন প্রশাসনিক বিশ্লেষকরা।

Header Ad
Header Ad

ট্রাম্পের বিস্ফোরক দাবি: চলমান যুদ্ধের সূচনা ইউক্রেনই করেছিল

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য ইউক্রেনকেই দায়ী করে নতুন বিতর্ক উসকে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন রাজনীতিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে পরিচিত ট্রাম্প এবার ইউক্রেনের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। তিনি দাবি করেছেন, চলমান যুদ্ধের সূচনা ইউক্রেনই করেছিল।

মঙ্গলবার (স্থানীয় সময়) ফ্লোরিডার মার-আ-লাগোতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির প্রতি কঠোর মনোভাব প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ইউক্রেনে একটি নতুন নির্বাচন হওয়া উচিত। বিশ্লেষকদের মতে, এটি জেলেনস্কিকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনারই ইঙ্গিত।

ট্রাম্প আরও বলেন, ইউক্রেনে দীর্ঘদিন ধরে কোনো নির্বাচন হয়নি এবং সেখানে সামরিক আইন চলছে। তার দাবি, জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা মাত্র চার শতাংশে নেমে গেছে, আর দেশটি ধ্বংসের পথে। যদিও যুদ্ধকালীন সময়ে নির্ভরযোগ্য জনমত জরিপ পাওয়া কঠিন, তবে বিভিন্ন প্রতিবেদনে দেখা গেছে, জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা ট্রাম্পের দাবির মতো এতটা কমেনি।

এছাড়া, ইউক্রেনের নির্বাচন প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, "তারা কি জনগণের মতামত নিয়েছে? তারা আলোচনার টেবিলে বসতে চায়, কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সেখানে কোনো নির্বাচন হয়নি।"

প্রসঙ্গত, ইউক্রেনে ২০২৪ সালের এপ্রিলে নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও দেশটির সংবিধান অনুযায়ী, যুদ্ধকালীন সময়ে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এই মন্তব্য কৌতুকপূর্ণ, কারণ তিনি নিজেই ২০২০ সালের মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন।

ট্রাম্প আরও দাবি করেন, ইউক্রেন চাইলে যুদ্ধ বন্ধ করতে পারতো এবং তাদের উচিত ছিল রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতায় যাওয়া। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এর অর্থ হলো—ইউক্রেনকে হয় রাশিয়ার মিত্র সরকার গঠনের প্রস্তাবে রাজি হতে হতো, নয়তো প্রতিরোধ ছেড়ে দিয়ে আত্মসমর্পণ করতে হতো।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের সাম্প্রতিক অবস্থান ইঙ্গিত দেয় যে, তিনি পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে ইউক্রেনকে সমর্থন না দিয়ে বরং রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি বিতর্কিত শান্তিচুক্তির দিকে এগোতে পারেন, যা পুতিনের জন্য বড় ধরনের কূটনৈতিক জয় হিসেবে বিবেচিত হবে।

সূত্র: সিএনএন

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

অবশেষে সরিয়ে দেওয়া হলো মাউশির বিতর্কিত ডিজিকে
২০১৮ সালের নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা ৩৩ ডিসি ওএসডি
ট্রাম্পের বিস্ফোরক দাবি: চলমান যুদ্ধের সূচনা ইউক্রেনই করেছিল
ডিবির সাবেক প্রধান হারুনের ১০০ বিঘা জমি, ৫ ভবন ও ২ ফ্ল্যাট ক্রোকের নির্দেশ
দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন রেখা গুপ্তা, বিজেপির সিদ্ধান্তে চমক
একুশের প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতির শহীদ মিনারে না যাওয়ার আহ্বান
নামাজি জীবনসঙ্গী খুঁজছেন আইশা খান
গাইবান্ধায় গাঁজাসহ আটক এএসআইকে কারাগারে প্রেরণ
উপদেষ্টাদের মিটিংয়ে কোন প্রটোকলে গিয়েছিলেন হাসনাত-পাটোয়ারী: ছাত্রদল সেক্রেটারি
সরকারে থেকে ‘নতুন দল’ গঠন করলে মেনে নেওয়া হবে না: মির্জা ফখরুল
হোস্টিং সামিট ২০২৫ অনুষ্ঠিত
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচে পাকিস্তানকে ৩২১ রানের বড় লক্ষ্য দিলো নিউজিল্যান্ড
বৈষম্যবিরোধী নামধারী শীর্ষ নেতার নির্দেশে কুয়েটে ছাত্রদলের ওপর হামলা: রাকিব
যান্ত্রিক ত্রুটিতে আবারও বন্ধ বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র
কুবিতে ছাত্র সংসদের দাবিতে মানববন্ধন ও সন্ত্রাসবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল
২২০ জনকে নিয়োগ দেবে সমরাস্ত্র কারখানা, এসএসসি পাসেও আবেদন
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে ২ দিনব্যাপি খামারি প্রশিক্ষণ
সবার সাত দিন কারাগারে থাকা উচিত: আদালতে পলক
বিপ্লবী সরকারের ডাক থেকে সরে এলেন কাফি  
নাঈম ভাই হেনা কোথায়?: ‘তুই অনেক দেরি করে ফেলেছিস বাপ্পা’