শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৯ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৫২

দ্য ফার্স্ট ম্যান

আলজেরিয়ার গ্রীষ্মকাল খুব কঠিন ছিল। আমলা শ্রেণির লোকেরা এবং স্বচ্ছল লোকেরা স্বাস্থ্য উদ্ধারের জন্য ‘ফরাসি হাওয়া’ খেতে যেত। ফিরে এসে কেউ কেউ অবিশ্বাস্য সব গল্প ফাঁদত। নয়নাভিরাম মাঠের বর্ণনা দিত। সেখানে নাকি আগস্ট মাসের ঠিক মাঝামাঝি সময়ে পানি প্রবাহিত হয় ইত্যাদি ইত্যাদি। দারিদ্রপীড়িত এলাকায় কোনো পরিবর্তন ঘটত না। নিচের অঞ্চলগুলোতে কখনও কখনও অর্ধেক খালি হওয়ার কথা শোনা গেলেও তাদের এলাকায় জনসংখ্যা দেদারসে বাড়তেই থাকত, রাস্তায় বাচ্চাদের ঢল দেখে তার প্রমাণ পাওয়া যেত।

জ্যাক এবং পিয়েরের কাছে ছুটির দিন মানে গরমের সময় কাপড়ের তৈরি দড়ির তলাঅলা জুতো, সস্তা ট্রাউজার এবং গোল গলাঅলা গেঞ্জি পরে রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো। সর্বশেষ বৃষ্টি নামত এপ্রিল মাসে, কিংবা বড়জোর মে মাসে। সপ্তাহ জুড়ে, মাস জুড়ে রোদ চড়া হতে থাকত। সূর্য আরও গরম হয়ে পড়ত। কড়া সূর্যালোক আশপাশের দেয়ালগুলো শুকিয়ে ভাজা ভাজা করে ফেলত। রাস্তার মাটি, টালি আর পাথরগুলোকে মিহি ধূলো বানিয়ে ফেলত। পাগলা বাতাসের কারণে দোকানপাট, রাস্তাঘাট এবং গাছের প্রতিটা পাতার ওপরে ধুলোর পুরু স্তর পড়ে যেত। জুলাই মাসে জ্যাকদের বাড়ির আশপাশের গোটা এলাকা ধূসর-হলুদ রঙের গোলকধাঁধায় পরিণত হয়ে যেত। দিনের বেলা জনমানবহীন; ভয়ঙ্কর সূর্যালোকের শাসনে বাড়িগুলোর সব ঘরের ঝাঁপ সতর্কতার সঙ্গে বন্ধ রাখা হতো। বাড়ি ঘরের দরজার সামনে কুকুর বিড়ালগুলো ভূপাতিত হয়ে পড়ে থাকত। জীবন্ত সবকিছুই দেয়ালের ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকার চেষ্টা করত। আগস্ট মাসে তাপে দগ্ধ হয়ে যাওয়া আকাশের ফেঁসোর মতো মেঘের আড়ালে চলে যেত সূর্য। ভারী, আর্দ্র আকাশ থেকে সাদা আলো ছড়িয়ে পড়ত। চোখের পক্ষে সহ্য করা কঠিন। সে আলো রাস্তার রঙের শেষ বিন্দুটা পর্যন্ত মুছে দিয়ে যেত। সমবায় সমিতির শ্রমিকদের হাতুড়ির বাড়ি ধীর লয়ে নেমে আসত। শ্রমিকরা মাঝে মাঝেই কাজ থামিয়ে তাদের ঘর্মাক্ত মাথা বুক পেতে দিত পাইপ থেকে বের হয়ে আসা ঠাণ্ডা পানির সামনে। অ্যাপার্টমেন্টগুলোতে পানির বোতল এবং কখনও কখনও মদের বোতল ভেজা কাপড় দিয়ে পেঁচিয়ে রাখা হতো। জ্যাকের নানি ছায়াময় রুমের মধ্যে খালি পায়ে চলাচল করতেন। পরনে শুধু একটা কামিজ থাকত। কয়দা করে খড়ের পাখা ঘোরাতেন; কাজ করতেন বেশির ভাগ সকাল বেলায়। জ্যাককে টেনে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিতেন দুপুরের ঘুমের জন্য। সন্ধ্যার প্রথম প্রহরের ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় কাজ করার প্রত্যাশা নিয়ে অপেক্ষা করতেন। এভাবে সপ্তাহের পর সপ্তাহ ধরে গ্রীষ্ম এবং গ্রীষ্মের শিকার যারা তারা সবাই ভারী, ঘাম ঝড়ানো, শরীর ভাজা ভাজা করা আকাশের নিচে যেন হামাগুড়ি দিয়ে চলত। শেষে সবার মন থেকে যেন শীতের ঠাণ্ডা আর বৃষ্টির স্মৃতি মুছেই যেত যেন প্রবল বাতাসের কথা, তুষারের কথা কিংবা হালকা বৃষ্টির কথা পৃথিবী কখনও শোনেনি। বিশ্ব সৃষ্টির লগ্ন থেকে এই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অতিশয় তাপে দগ্ধ করিডরে পরিণত হওয়া এই খনিজ কাঠামো ছাড়া আর কোনো কিছুর অস্তিত্বই ছিল না। এখানে ঘর্মাক্ত এবং ধূলিধূসরিত জীবকূল কোটরাগত চোখে গতিহীন দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে এদিক ওদিক খুব আস্তে ধীরে চলাচল করত। আকাশটা সঙ্কুচিত হতে হতে এক সময় মাটির রাস্তাঘাটের ওপর যেন ভেঙে পড়ত। রাস্তার তলদেশ পর্যন্ত পৌঁছে যেত। পরিমাণে অঢেল, স্বভাবে প্রবল সেপ্টেম্বরের প্রথম বৃষ্টি, গোটা শহরকে প্লাবিত করে দিত। আশপাশের সব রাস্তাঘাট, ডুমুরের গাছের পাতা, মাথার ওপরের ট্রলিরেইল সবকিছু চকচক করত। শহরের দিকে তাকিয়ে থাকা ওপরের পাহাড় বেয়ে চলে আসত দূরের মাঠের ভেজা মাটির গন্ধ, আসার সময় গ্রীষ্মের কাছে বন্দিদের জন্য বয়ে নিয়ে আসত খোলা জায়গা আর স্বাধীনতার বার্তা। বাড়িঘর থেকে বাচ্চারা ছুটে বের হয়ে আসত রাস্তায়, পরনে সামান্য কাপড় চোপড়। বৃষ্টির পানি গিলতে থাকত রাস্তার ফেনিল জলের মধ্যে হৈহুল্লোর করে। একে অন্যের কাঁধ ছুয়ে রাস্তার খানাখন্দের মধ্যেই গোলাকার হয়ে চিৎকার চেচামেচি করত। তাদের ঐকতানে অতিশয় ঘোলা জলে তৈরি হতো যেন মৌসুমের প্রথম মদ। সেটা বাস্তবের আসল মদের চেয়েও ভয়ানক রকমের কড়া।

গরমের মৌসুম আসলেই ভয়াবহ ছিল। সবাইকে মাথা খারাপ করে দিত। দিন দিন সবার স্নায়বিক শক্তি একেবারে শেষ প্রান্তে চলে আসত। চিৎকার করে কিংবা খিস্তি ঝেড়ে প্রতিক্রিয়া দেখানোর মতো শক্তি পর্যন্ত কারো থাকত না। দারিদ্রক্লিষ্ট এলাকার এখানে ওখানে ফেটে পড়ার আগ পর্যন্ত কড়া তাপের মতো অসহিষ্ণুতা বাড়তেই থাকত। অত্যাধিক কড়া তাপের এরকম প্রভাবের একটা নজির জ্যাক দেখেছিল এক দিন, রিউ ডি লোইনে মারাবুট নামের আরব বসতিপূর্ণ এলাকার একেবারে প্রান্তে, পাহাড়ের গা ঘেঁষা কবর স্থানের কাছে নীল পোশাক পরা মাথা ন্যাড়া একজন আরব ধুলোময় মুরীয় ক্ষৌরাগার থেকে বের হয়ে এল। জ্যাকের সামনেই ফুটপাতে কয়েক কদম হেঁটে এসে শরীর সামনের দিকে এগিয়ে দিয়ে মাথা পেছনে হেলিয়ে দাঁড়াল সে। আসলে বাস্তবে এরকম করে দাঁড়ানো কারো পক্ষে সম্ভব নয়। তার মাথা পরিষ্কার করার সময় নাপিত উন্মাদ হয়ে গেছে। উপস্থিত আরবরা লক্ষ করে দেখেছে, নাপিত লম্বা ক্ষুর দিয়ে তার গলায় পোচ মেরে দিয়েছে। সেখান থেকে গল গল করে রক্ত বের হচ্ছে। গলায় পোচ খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সে ক্ষৌরাগার থেকে দৌড়ে বের হয়ে এসেছে। তার অবস্থা আধাখেচরাভাবে গলা কাটা হাঁসের মতো হয়েছে। উপস্থিত যারা ছিল তারা নাপিতকে সঙ্গে সঙ্গে ধরে ফেলেছে। এই অন্তহীন তাপের মৌসুমের মতোই উন্মাদ নাপিত তখন হাউমাউ করে চিৎকার শুরু করে দিয়েছে।

তারপর আকাশ থেকে নেমে আসা পানির প্রপাত গাছের পাতা, ঘরের ছাদ, দেয়াল, রাস্তাঘাট সবখান থেকে গ্রীষ্মের ধুলা একেবারে ঘষেমেজে পরিষ্কার করে দিত। খুব দ্রুত কাদা পানিতে ভরে যেত পয়োনালী; গলগল শব্দে জলের ধারা নামত নালার মধ্যে। বেশিরভাগ বছর নিষ্কাসনের সব ব্যবস্থা চুরমার করে দিয়ে রাস্তায় বন্যা বইয়ে দিত বৃষ্টির জল। গাড়ি এবং ট্রলিবাসগুলো চলার সময় দুপাশে জল ছিটে পড়ত খুব উচু হয়ে। আর পেছনে ক্রমহ্রাসমান ধারা দেখে মনে হতো, গাড়িটা কিংবা ট্রলিবাসটা একটা হলুদ রঙের মাছের ডানা। তটের কাছে এবং বন্দরের কাছে সমুদ্রের পানিও ঘোলাটে রং ধারণ করত। বৃষ্টির পরে প্রথম সূর্যালোকে বাড়িঘর থেকে, রাস্তা থেকে, গোটা শহর থেকে বাষ্প উঠে যেত ওপরের দিকে। তাপ আবার হয়ত ফিরে আসত। কিন্তু আগের মতো শাসন করার ক্ষমতা থাকত না। আকাশ অনেক উন্মুক্ত মনে হতো। শ্বাস নিতে কষ্ট হতো না। সূর্যের গভীর থেকে বাতাসে কম্পন ছড়িয়ে পড়ত। প্রচুর বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা শরতের আগাম বার্তা এবং স্কুলের পড়াশোনার মৌসুম শুরুর সম্ভাবনা নিয়ে আসত। নানি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলতেন, গ্রীষ্ম কত লম্বা রে বাবা! শরতের আগমনকে এবং জ্যাকের বিদায়কে তিনি সমানভাবে স্বাগত জানাতেন। কারণ গরমের সময়ে জ্যাকের ঘরের মধ্যে বন্দি অবস্থা তার কাছে অসহিষ্ণু মনে হতো।

তাছাড়া বছরের একটা বিশেষ সময়ে আলাদাভাবে কোনো মানুষ কর্মহীন থাকবে সেটা তার বোধগম্য ছিল না। তিনি বলতেন, আমার কথাই বলি; আমার তো কোনো ছুটি নেই। আসলেই তার কথা ঠিক। স্কুল কী জিনিস, ছুটি কী জিনিস এসব তিনি জানতেন না। একদম ছোটবেলা থেকে তিনি কাজ করে আসছেন, কোনো রকমের আরাম বিশ্রাম নেই। সামনে বড় কোনো প্রাপ্তিযোগ হবে বলে তার নাতি যে আরও কয়েক বছর বাড়ির জন্য কোনো উপার্জন করতে পারবে না সেটা তিনি মেনে নিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি একেবারে প্রথম দিন থেকেই অযথা খরচ হওয়া তিন মাসের কথা বিশেষভাবে চিন্তায় এনেছেন। লিসেতে জ্যাকের চতুর্থ বছর যেবার শুরু হলো তিনি ঠিক করলেন এইবার জ্যাকের ছুটির দিনগুলো কাজে লাগাতে হবে। স্কুলের বছর শেষের দিন তিনি জ্যাককে বললেন, এবারের গ্রীষ্মে কিন্তু তোকে কাজ করতে হবে। বাড়ির জন্য কিছু উপার্জন করতে হবে। ঘরের ভেতর কাজহীন বসে থাকলে চলবে না। আসলে জ্যাক ভেবেছিল ছুটিতে তার অনেক কাজ করতে হবে সাঁতার কাটতে যেতে হবে, কুবা অভিযানে যেতে হবে; খেলাধুলা, বেলকোর্টের রাস্তায় ঘোরাঘুরি, সচিত্র কাহিনিগুলো পড়া, জনপ্রিয় উপন্যাসগুলো পড়া, ভারমটের পঞ্জিকা, সেইন্ট এতিয়েনের অফুরন্ত ক্যাটালগ সবকিছু মিলে ছুটিটা কাটাতে পারবে। বাড়ির জন্য ফাইফরমাস খাটা, নানির চাপানো কাজ এসব তার কাজের মধ্যে গণনা করেনি সে। কিন্তু জ্যাকের পরিকল্পিত কাজগুলো নানির দৃষ্টিতে মোটেও কোনো কাজ নয়। স্কুলের সময়েও জ্যাক যেরকম কাজ করত এখন সে সেরকম কাজ করছে না এবং বাড়ির জন্য কিছু উপার্জনও করছে না। কাজেই তার এই ঘুরে বেড়ানোর বিষয়টা নরকের আগুনের মতো জাজ্বল্যমানভাবে অসহনীয়। সবচেয়ে সোজা সহজ কাজ বলতে নানি বুঝতেন তার একটা চাকরি জোটানো।

চলবে….

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৫১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৫০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান:পর্ব-৪৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

আরএ/

Header Ad
Header Ad

খিলগাঁওয়ের আগুনে পুড়ে ছাই ২০টি দোকান ও দুটি স’মিল

ছবিঃ সংগৃহীত

রাজধানীর খিলগাঁওয়ের তালতলা মার্কেটের পাশের একটি স’মিলে শুক্রবার রাত ৭টা ৩০ মিনিটে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। পরে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট ৯টা ৩৫ মিনিটে এই আগুন নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়। আগুনে প্রায় ২০টি দোকান ও দুটি স’মিল পুড়ে গেছে।

আগুন নিয়ন্ত্রণের পর ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশনস) লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, কেমিক্যাল ড্রাম বিস্ফোরণে স’মিলে লাগা আগুন চারদিক ছড়িয়ে পড়ে।

তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘খিলগাঁওয়ের আগুনে আনুমানিক ২০টি দোকান এবং দুটি স মিল পুড়েছে। আগুনে হয়তো কেমিক্যাল ড্রাম বিস্ফোরিত হয়েছে; যার ফলে আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। আমাদের নয়টি ইউনিট কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থলে আরো চারটি ইউনিট ছিল, তবে সেগুলোকে কাজ করতে হয়নি।

লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আগুনে কেউ নিখোঁজ রয়েছে এমন কোনো সংবাদ আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত আসেনি। এ ছাড়া আমরা এখন পর্যন্ত আহত ও নিহতের কোনো সংবাদ পাইনি।’

আগুনের উৎসটি কি ছিল প্রাথমিকভাবে জানা গেছে কিনা প্রশ্ন করা হলে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এই মুহূর্তে এ বিষয়ে বলা যাবে না তদন্ত ছাড়া। সিগারেটের মাধ্যমে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে নাকি স্যাবোটেজ হয়েছে— এই প্রত্যেকটা বিষয়ে আমাদের তদন্ত করে দেখতে হবে।

অনেকগুলো সোর্স থেকে আগুনের সৃষ্টি হতে পারে। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকেও আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। তাই তদন্ত ছাড়া এ বিষয়ে কিছু বলা যাবে না।’
এদিকে, দুই ঘণ্টা ধরে ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাশেদ বিন খালিদ জানান, ‘শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সেখানে আগুন লাগার খবর পাই।

প্রথমে আমাদের দুটি ইউনিট কাজ শুরু করে। পরে আরো সাতটি ইউনিট যোগ দেয়। এরপর রাত ৯টা ৩৫ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন লাগার পরে ফায়ার সার্ভিসকে সহযোগিতা করতে ছুটে আসেন সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র‍্যাবের সদস্যরা।’

তবে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স মিল থেকে আগুন গাড়ির গ্যারেজে ছড়িয়ে পড়ে। পরে গ্যারেজে থাকা বিভিন্ন গাড়িতে আগুন লেগে সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়। এ সময় আশপাশের মানুষ ছোটাছুটি করতে থাকে। উৎসুক জনতার ভিড়ে ফায়ার সার্ভিসকে আগুন নিয়ন্ত্রণে বেশ বেগ পেতে হয়।

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা জানান, ওই এলাকায় একটি গাড়ির গ্যারেজ ও রাবারের কাঁচামালের গোডাউন রয়েছে। কিছু গাড়ি বের করা সম্ভব হলেও অনেক গাড়ি পুড়ে গেছে।

খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. দাউদ হোসেন বলেন, ‘ওই স মিল খিলগাঁও থানার কাছেই। পাশের একটি গাড়ির গ্যারেজেও আগুন ছড়িয়েছে। ক্রাউডের কারণে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের কাজ করতে সমস্যা হচ্ছিল।

 

Header Ad
Header Ad

পদ্মাপাড়ে মুখে স্কচটেপ প্যাঁচানো ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার  

ব্যবসায়ী আবুল বাসার ওরফে মিন্টু। ছবিঃ সংগৃহীত

রাজশাহী নগরীর পদ্মাপাড়ে মুখে স্কচটেপ প্যাঁচানো একটি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার বিকালে নগরীর লালন শাহ মুক্তমঞ্চ সংলগ্ন এলাকার কাশবন থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণা, হত্যা করে কাশবনে ফেলে দেওয়া হয়েছে লাশটি।

নিহত ব্যক্তির নাম আবুল বাসার ওরফে মিন্টু (৩৫)। পেশায় ব্যবসায়ী মিন্টু নগরীর মির্জাপুর পূর্বপাড়া মহল্লার বাসিন্দা। বিনোদপুর বাজারে তার ইলেকট্রিক ব্যবসার দোকান আছে।

নগরীর রাজপাড়া থানার ওসি আশরাফুল ইসলাম জানান, কাশবনে ঘুরতে আসা কয়েকজন লাশটি দেখে পুলিশে খবর দেয়। ঘুরতে আসা অনেকে লাশের ছবিটি সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মগুলোতে শেয়ার করে। জানাজানির পর নিহতের পরিবার ঘটনাস্থলে এসে লাশটি শনাক্ত করে।

আশরাফুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে মিন্টুর খোঁজ পাচ্ছিল না পরিবার। কাশবনে তার মুখ পলিথিন দিয়ে ঢাকা ছিল। পলিথিনের ওপর স্কচটেপ প্যাঁচানো ছিল।

ওসি আরও বলেন, ‘আলামত দেখে মনে হয়েছে এটি হত্যাকাণ্ড। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে হত্যা মামলা হবে।’

Header Ad
Header Ad

সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত

ওমানের মাসকটে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি ওমানের রাজধানী মাস্কাটে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার ( ২১ ফেব্রুয়ারি) নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ভারত- বাংলাদেশের মধ্যকার উক্ত বৈঠকের আলোচ্য বিষয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল।

তিনি বলেন, মাস্কাটে ওই বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন। দক্ষিণ এশিয়ার সবাই জানে কোন দেশ ও তার কী ধরনের কর্মকাণ্ড সার্ককে কোণঠাসা করে রেখেছে। তৌহিদ হোসেনকে জয়শঙ্কর এ কথাও বলেছেন, সন্ত্রাসবাদের স্বাভাবিকীকরণ করাটা বাংলাদেশের উচিত নয়।

ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের কোনো কোনো উপদেষ্টার কিছু কিছু মন্তব্য নিয়েও প্রশ্ন করা হয়। জবাবে রণধীর জয়সোয়াল বলেন, ভারত এসব মন্তব্য নজরে রেখেছে। ওই ধরনের মন্তব্য ও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজকর্মে তার প্রভাব–প্রতিক্রিয়ার বিষয়ও ভারতের গোচরে রয়েছে।

তিনি বলেন, এ ধরনের মন্তব্য অবশ্যই সহায়ক নয়। এর প্রতিক্রিয়া কী, তা তাদেরই ভেবে দেখা দরকার।

নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফের মহাপরিচালকদের বৈঠক সদ্য শেষ হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, বাংলাদেশে ৫ আগস্টের পালাবদলের পর সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগগুলো অতিরঞ্জিত, মিডিয়ার সৃষ্টি।

এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে জয়সোয়াল বলেন, গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কী হয়েছে, সে বিষয়ে সবাই অবগত। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের উদ্বেগ বারবার প্রকাশ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। যুক্তরাষ্ট্রকেও এ বিষয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খিলগাঁওয়ের আগুনে পুড়ে ছাই ২০টি দোকান ও দুটি স’মিল
পদ্মাপাড়ে মুখে স্কচটেপ প্যাঁচানো ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার  
সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত
জামায়াতের আমিরকে যানজট মুক্ত করতে গিয়ে প্রাণ দিলেন কর্মী
সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা  
একুশে টিভির জিডি, কর্মচারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে জামায়াত  
আফ্রিকার রানের চাপে বড় ব্যবধানে হারলো আফগানিস্তান
আগামীকাল দুই বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে
অপারেশন ডেভিল হান্ট: ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার ৪৬১
খিলগাঁওয়ে স-মিলে ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১০ ইউনিট
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
পশ্চিম তীরে নতুন করে হামলার নির্দেশ দিলেন নেতানিয়াহু
মেসির অটোগ্রাফ চেয়ে শাস্তি পেলেন রেফারি
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বেনাপোলে হয়নি দুই বাংলার মিলন মেলা
মাতৃভাষার গুরুত্ব ও ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে যা বললেন ড. ইউনূস
চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানি: তিন দিন পর মামলা, আতঙ্কে যাত্রীরা
বিপ্লবের আত্মত্যাগ উন্নত বাংলাদেশের পথে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে : পররাষ্ট্রসচিব
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে ২০২৪ সালে আওয়ামী সরকারের পতনের কারণ উদঘাটন
চ্যাম্পিয়নশিপের দল শেফিল্ডে মাসে ৪০ কোটি টাকা বেতন পাবেন হামজা চৌধুরী
পবিপ্রবিতে আবাসিক হলগুলোর নাম পরিবর্তন, মুছে ফেলা হলো শেখ পরিবারের নাম