শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৯ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৫১

দ্য ফার্স্ট ম্যান

বেলা দুটোর সময় উপরের খিলানের কোথা থেকে যেন সামরিক বাজনায় ফরাসি জাতীয় সংগীত বাজানো হতো। উপস্থিত সব ছাত্র এবং অভিভাবক সবাই উঠে দাঁড়াত। তখন প্রধান শিক্ষক এবং একজন উচ্চপদস্থ অফিসারের সঙ্গে অন্যান্য শিক্ষক প্রবেশ করতেন। আয়তাকার টুপি আর লম্বা গাউন পরা সবাই। তাদের গাউনের রং দেখে বোঝা যেত কে কোন বিভাগের শিক্ষক।

উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা সাধারণত ঔপনিবেশিক সরকারের কোনো আমলা হয়ে থাকতেন, তাকে ওই অনুষ্ঠানের জন্য পাঠানো হত। আরেকবার সামরিক বাজনা বাজত শিক্ষকদের আসন গ্রহণের জন্য। অনতিবিলম্বে উচ্চপদস্থ কর্তা বক্তব্য শুরু করতেন। তার বক্তব্যের বিষয় থাকত সাধারণভাবে ফ্রান্স এবং বিশেষভাবে শিক্ষা। ক্যাথরিন করমারি কানে কিছু না শুনলেও মনোযোগ দিয়ে শোনার চেষ্টা করতেন। তার ধৈর্যচ্যুতি কিংবা ক্লান্তির কোনো ছাপ দেখা যেত না। জ্যাকের নানি শুনতে পারতেন। কিন্তু খুব পরিষ্কার কিছু বুঝতেন না। তার মেয়ের উদ্দেশে তিনি বলতেন, উনি খুব চমৎকার কথা বলেছেন। তার মেয়ে তার কথায় সায় দিয়ে মাথা ঝাঁকাতেন। তখন নানি তার বাম পাশে বসা অন্য অভিভাবকের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য হাসি ছড়িয়ে দিয়ে মাথা ঝাঁকাতেন। প্রথম বছরেই জ্যাক খেয়াল করেছে, শুধু তার নানিই মাথা এবং কাঁধ ঢেকে রাখার জন্য পুরনো দিনের স্পেনীয় ওড়না পরেছেন। বিষয়টা জ্যাকের জন্য বিব্রতকর মনে হয়েছে। সত্যি কথা হলো, এই অহেতুক লজ্জার বিষয়টা সারা জীবন জ্যাকের পিছু ছাড়েনি। কারণ পরে জ্যাক নানিকে বোঝাতে চেষ্টা করেছে ওড়নার বদলে একটা ক্যাপ পরলে ভালো। নানি বলেছেন, ক্যাপ কিনে বাজে ব্যয় করার মতো পয়সা তার নেই। বরং ওড়নায় তার কানের পাশটা উষ্ণ থাকে। কিন্তু অনুষ্ঠানে বসে নানি যখন পাশের কোনো মহিলার সঙ্গে কথা বলেছেন জ্যাকের লজ্জার সীমা থাকেনি। উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বক্তব্য শেষ হলে কনিষ্ঠতম শিক্ষক বক্তব্য শুরু করতেন। তিনি সাধারণত ফ্রান্স থেকে আগত নতুন শিক্ষক হয়ে থাকতেন এবং আনুষ্ঠানিক বক্তব্যের দায়িত্ব থাকত তার উপরেই। তার বক্তব্য ত্রিশ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা পর্যন্ত দীর্ঘ হয়ে থাকত। ওই নবীন শিক্ষাবিদ তার বক্তব্যের মধ্যে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক বিষয়ের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ উল্লেখ করতেন এবং সূক্ষ্ম মানবিক বিষয়াদির অনুপ্রবেশ ঘটাতে ভুল করতেন না। এতে করে তার বক্তব্য আলজেরীয় শ্রোতাদের কাছে পুরোপুরিই দুর্বোধ্য হয়ে উঠত। অত্যাধিক তাপের কারণে শ্রোতাদের মনোযোগ নেতিয়ে পড়ত এবং তাদের হাতের পাখা ঘন ঘন ঘুরতে থাকত। এমনকি মনোযোগী শ্রোতা নানিও এদিক ওদিক তাকিয়ে অবসন্নতা প্রকাশ করতেন। শুধু ক্যাথরিন করমারি তার উপরে বর্ষিত পান্ডিত্ব আর প্রজ্ঞার বর্ষণ একাগ্র দৃষ্টিতে গ্রহণ করে যেতেন সামান্যতম চোখ পিটপিট করার মতো অবহেলা না দেখিয়েও। আর জ্যাক এবং পিয়েরে অন্য বন্ধুদের অনুসন্ধানে এদিক ওদিক তাকিয়ে শরীর মোচড়াতে থাকত। তাদের প্রতি ইঙ্গিত ছুড়ে দিত এবং লম্বা আলাপ শুরু করেও দিত। আলাপের মধ্যে ভেংচি কাটাও থাকত। সবশেষে বিকট করতালি ছড়িয়ে পড়ত। কারণ বক্তা যথেষ্ট দয়াপরবশ হয়ে তার বক্তব্য শেষ করেছেন। তখনই শুরু হতো পুরস্কার ঘোষণা। প্রথমে শুরু হতো উপরের ক্লাসের এবং প্রথম দিকে ভর্তি হওয়া ছাত্রদের পুরস্কার বিতরণ। তার ক্লাসের পুরস্কার বিতরণ শুরু হওয়া পর্যন্ত জ্যাকের নানি এবং মা অধীর অপেক্ষা করতেন। যারা পড়াশোনায় পরম উৎকর্ষ দেখাতে পারত তাদের পুরস্কার প্রদানের সময় অদৃশ্য থেকে সংগীতের বিশেষ দামামা বেজে উঠত। পুরস্কারের পালা বড় থেকে ছোটদের দিকে আসত। পুরস্কার প্রাপ্তরা উঠোনের একপাশ দিয়ে হেঁটে মঞ্চে উঠত, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার প্রশংসাসূচক বাক্যে অভিসিক্ত হতো, তার সঙ্গে হ্যান্ডশেক করত। তারপর প্রধান শিক্ষক তাদের হাতে তুলে দিতেন বইয়ের বান্ডিল। মঞ্চের নিচে বই বোঝাই একটা ঠেলা গাড়ি দাঁড় করানো থাকত, সেখান থেকে একজন পরিচারক প্রধান শিক্ষকের হাতে বইয়ের বান্ডিল ধরিয়ে দিত এবং শেষে তিনি ছাত্রদের হাতে তুলে দিতেন বই। বিপুল করতালি আর সংগীতের মুর্ছনার মাঝে পুরস্কার বিজেতা চারপাশে তাকাতে তাকাতে আনন্দে উদ্ভাসিত হয়ে হেঁটে নেমে আসত। তার অনুসন্ধানী চোখ তার গর্বিত অভিভাবকদের দিকে। তখন তারা আনন্দের অশ্রু মুছতে ব্যস্ত। আকাশের নীল রং ততক্ষণে একটুখানি ফিকে হয়ে এসেছে। তাপমাত্রা কমেছে আরেকটু। সমুদ্রের উপরে কোথাও অল্প একটু ফাটল পেয়ে আকাশ হয়ত সেখানে তাপ ঢেলে দিয়েছে খানিক। পুরস্কার বিজেতারা একে একে মঞ্চের দিকে যাচ্ছে আসছে। সঙ্গে সংগীতের দামামা চলছে এভাবে দর্শকদের মধ্যে ভীড় কমে আসছে। আকাশ আরেকটু মিশ্র নীলাভ হয়ে গেলে আসত জ্যাকের পুরস্কার গ্রহণের পালা। তার ক্লাসের পুরস্কারের ঘোষণা শুনলেই জ্যাক হাসি তামাশা থামিয়ে গম্ভীর হয়ে যেত। নিজের নাম ঘোষিত হলে জ্যাক উঠে দাঁড়াত। মাথার ভেতরে তখন কেমন যেন ভনভন শব্দ করে উঠছে। তার এগিয়ে যাওয়া দেখে মা জিজ্ঞেস করতেন, করমারি কথাটা বলেছে নাকি? তখন পেছনে মায়ের দিকে তাকানোর আর অবসর নেই জ্যাকের।

নানি বলতেন, হ্যা, বলেছে। নানির মুখটা তখন আনন্দে উত্তেজনায় রাঙা হয়ে উঠেছে।

প্রথম দিন সিমেন্টের পথ পাড় হয়ে মঞ্চে পৌঁছনো, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার কোট এবং ঘড়ির চেইন, প্রধান শিক্ষকের মিষ্টি হাসি, মঞ্চের ভিড়ের মধ্যে কোনো শিক্ষকের আন্তরিক চাহনি এসব শেষ করে তারপর দর্শকদের বসার মাঝখানের ফাঁকা জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকা মা এবং নানির কাছে ফিরল জ্যাক। মা তার দিকে তাকিয়ে আছেন বিস্মিত আনন্দের দৃষ্টিতে। জ্যাক মায়ের হাতে তুলে দিল বিজয়ীদের নামের মোটা তালিকা। নানি তার আশপাশের দর্শকদের দিকে গর্বের দৃষ্টিতে তাকিয়ে তাদের আহ্বান করলেন জ্যাকের কৃতিত্ব দেখার জন্য। বিকেলের ওই সময়ের মধ্যেই এতসব কিছু ঘটে গেল দ্রুত। জ্যাক তখন তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরার জন্য উদগ্রীব, বাড়ি গিয়ে পুরস্কার হিসেবে পাওয়া বইগুলো দেখতে হবে। ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাওয়ার উপক্রম।

বাড়ি ফেরার সময় তারা পিয়েরে এবং তার মায়ের সঙ্গে ফিরল। জ্যাকের নানি আড় চোখে দেখে নিলেন কার বইয়ের বান্ডিলটা বেশি উঁচু হয়েছে। বাড়িতে পৌঁছে জ্যাক মায়ের কাছ থেকে পুরস্কারের তালিকাটা নিলে নানি তাকে যে সব পৃষ্ঠায় তার নাম এসেছে সেসব পৃষ্ঠার কোণা ভাঁজ করে রাখতে বললেন যাতে পরিবারের আর সবাইকে এবং প্রতিবেশীদের তিনি ভালো করে দেখাতে পারেন। তারপর নিজের কী কী অর্জন হলো তার একটা তালিকা তৈরি করতে বসল জ্যাক। কাজ শেষ হওয়ার আগেই দেখতে পেল মা আসছেন। ততক্ষণে মায়ের পোশাক বদলানো হয়ে গেছে, স্যান্ডেল পায়ে দিয়ে ব্লাউজের বোতাম লাগাতে লাগাতে আসছেন। জানালার কাছে চেয়ার টেনে নিতে নিতে জ্যাকের দিকে তাকিয়ে মা হাসলেন। বললেন, খুব ভালো করেছিস। এরপর তাকিয়ে থাকতে থাকতে মৃদু মাথা ঝাঁকাতে লাগলেন। এভাবে কখনও মাকে তাকিয়ে থাকতে দেখেনি সে। জ্যাক মায়ের তাকানোর উত্তরে ফিরে তাকিয়ে দেখল, মা রাস্তার দিকে তাকিয়েছেন। জ্যাক বুঝতে পারল, মা এখন লিসে থেকে অনেক দূরে। আরও এক বছর মাকে এভাবে আর দেখতে পাবে না। আস্তে আস্তে ঘরের ভেতরটা অন্ধকার ছেয়ে ফেলল। বাইরে রাস্তার প্রথম আলো জ্বলে উঠল। সেখানে কারা হেঁটে যাচ্ছে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে না। শুধু পথচারীদের হেঁটে যাওয়া দেখা যাচ্ছে।
জ্যাক কল্পনায় দেখতে পেল, তার মা লিসে এক নজর দেখার মতো দেখে চলে এসেছেন। নিজেকে সে শেষবারের মতো আবার ফিরিয়ে নিয়ে এল পরিবার এবং প্রতিবেশের মাঝে।

ছুটির দিনগুলো জ্যাককে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে নিয়ে আসত, বিশেষ করে প্রথম বছরগুলোর ছুটির দিনগুলো। তার পরিবারের কারো কোনো রকম ছুটির দিন ছিল না। তারা সারা বছর কাজ করত কোনো রকম বিশ্রাম ছাড়াই। কোনো বীমাকৃত কারখানায় কাজ করতে গেলে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে হাসপাতালে কিংবা ডাক্তারের কাছে যাওয়ার দরকার পড়লে শুধু সেটাই ছুটি বলে মনে হতো। একবার আর্নেস্ট মামা এরকম একটা জায়গায় কাজ করার সময় ক্লান্তিতে হাতের তালুর খানিক মাংস কেটে ফেলেছিল। সেই ঘটনাকে মামা বলত নিজেকে ‘বীমায় ফেলে দেওয়া’। পাড়ার অন্যান্য বউঝিদের এবং জ্যাকের মায়ের যেসব কাজ করতে হতো সেখানে কোনো বিরতি থাকত না। তাদের সামনে খুব পরিষ্কার যুক্তি ছিল, কাজের মাঝে বিশ্রাম মানেই পরিবারের সবার জন্য খাবারের ঘাটতি পড়া। তাদের বেকারত্বের বিপরীতে কোনো বীমা ছিল না। কাজেই তারা কর্মহীনতাকে বিপর্যয়ের মতো ভয় করত। সে কারণেই পিয়েরের পরিবারের এবং জ্যাকের পরিবারের পুরুষেরা যারা পরিশ্রমের দিক থেকে সবচেয়ে কষ্টসহিষ্ণু ছিল তারাও পরিশ্রমের ব্যাপারে বিদেশিদেরকেও ভয় পেত। তারা মনে করত ইতালিয়, স্পেন, ইহুদি, আরব এবং সর্বোপরি সারা পৃথিবীর মানুষই তাদের কাজ চুরি করে নিতে পারে। যেসব বুদ্ধিজীবি সর্বহারা সম্প্রদায়ের পক্ষে তত্ত্ব প্রচার করে থাকেন তাদের জন্য এই মানুষগুলোর এরকম মনোভাব বিব্রতকর মনে হলেও আসলে কিন্তু মানবিক এবং সমর্থন পাওয়ার যোগ্য। পৃথিবীর প্রভূত্ব অর্জন কিংবা সম্পদের সুবিধা অর্জনের জন্য এই জাতীয়তাবাদী মানুষগুলো অন্যান্যাদের জাতীয়তাবাদের প্রতি বিদ্বেষী ছিল না। তারা শুধু দাসত্ব করার অধিকার চাইত। তাদের কাছে কাজ মানে কোনো বিশেষ গুণ নয়, কাজ মানে প্রয়োজনীযতা। টিকে থাকার জন্যই কাজের দরকার। আর এই কাজই তাদের ক্রমান্বয়ে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যেত।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৫০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান:পর্ব-৪৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

আরএ/

Header Ad
Header Ad

সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত

ওমানের মাসকটে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি ওমানের রাজধানী মাস্কাটে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার ( ২১ ফেব্রুয়ারি) নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ভারত- বাংলাদেশের মধ্যকার উক্ত বৈঠকের আলোচ্য বিষয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল।

তিনি বলেন, মাস্কাটে ওই বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন। দক্ষিণ এশিয়ার সবাই জানে কোন দেশ ও তার কী ধরনের কর্মকাণ্ড সার্ককে কোণঠাসা করে রেখেছে। তৌহিদ হোসেনকে জয়শঙ্কর এ কথাও বলেছেন, সন্ত্রাসবাদের স্বাভাবিকীকরণ করাটা বাংলাদেশের উচিত নয়।

ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের কোনো কোনো উপদেষ্টার কিছু কিছু মন্তব্য নিয়েও প্রশ্ন করা হয়। জবাবে রণধীর জয়সোয়াল বলেন, ভারত এসব মন্তব্য নজরে রেখেছে। ওই ধরনের মন্তব্য ও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজকর্মে তার প্রভাব–প্রতিক্রিয়ার বিষয়ও ভারতের গোচরে রয়েছে।

তিনি বলেন, এ ধরনের মন্তব্য অবশ্যই সহায়ক নয়। এর প্রতিক্রিয়া কী, তা তাদেরই ভেবে দেখা দরকার।

নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফের মহাপরিচালকদের বৈঠক সদ্য শেষ হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, বাংলাদেশে ৫ আগস্টের পালাবদলের পর সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগগুলো অতিরঞ্জিত, মিডিয়ার সৃষ্টি।

এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে জয়সোয়াল বলেন, গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কী হয়েছে, সে বিষয়ে সবাই অবগত। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের উদ্বেগ বারবার প্রকাশ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। যুক্তরাষ্ট্রকেও এ বিষয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

জামায়াতের আমিরকে যানজট মুক্ত করতে গিয়ে প্রাণ দিলেন কর্মী

ছবিঃ সংগৃহীত

যানজটে আটকে থাকা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের গাড়ি বহরকে সাইড করে দিতে গিয়ে বাস চাপায় নিহত হয়েছেন জসিম উদ্দিন (৫৩) নামে জামায়াতের একজন কর্মী।

নিহত জসিম উদ্দিন উপজেলার বাগমারা উত্তর ইউনিয়নের সৈয়দপুর পশ্চিম পাড়ার মৃত আলী আশ্রাফ মোল্লার ছেলে। তার স্ত্রী ও শিশুসহ তিন ছেলে সন্তান রয়েছে।

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের লালমাই উপজেলার সৈয়দপুর এলাকার ওয়ালটন শো-রুমের সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সৈয়দপুর গ্রামের বাসিন্দা মারুপ সিরাজী বলেন, লক্ষীপুর যাওয়ার পথে জামায়াত আমিরের বহরের ৪টি গাড়ি বাগমারা উত্তরবাজারে যানজটে আটকা পড়লে জামায়াতের নেতাকর্মীরা ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। হঠাৎ তিশা পরিবহনের ঢাকামুখী একটি দ্রুতগতির বাস ধাক্কা দিলে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনকারী জামায়াতের কর্মী জসিম উদ্দীনের মাথা থেতলে যায়। রক্তক্ষরণ হয়ে ঘটনাস্থলেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

বাগমারা বাজারের ব্যবসায়ী মফিজুল ইসলাম মুন্না বলেন, কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত হলেও বাগমারা বাজার অংশে অধিগ্রহণ জটিলতার কারণে দুই লেন করা হয়েছে।সে কারণে ২৪ ঘণ্টাই সড়কের এই অংশে যানজট লেগে থাকে। যানজট নিরসনে পুলিশ দায়িত্ব পালন করলে আজ হয়তো এমন মৃত্যু হতো না।

লালমাই উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা ইমাম হোসেন বলেন, আমিরে জামায়াত লক্ষীপুর যাওয়ার পথে বাগমারা উত্তর বাজার বালুর মাঠে পথসভা করেন। পথসভাস্থলে পৌঁছার কিছুক্ষণ আগে তাঁর গাড়ি বহর যানজটে আটকা পড়ে।

তখন আমিসহ সংগঠনের ১৫/২০ জন কর্মী ট্রাফিকের দায়িত্ব শুরু করি। আমরা আমিরে জামায়াতকে নিয়ে পথসভায় চলে যাওয়ার পর জামায়াতের কর্মী জসিম উদ্দিন বাস চাপায় মারা যান।

লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, বাগমারা উত্তরবাজারে বাস চাপায় জসিম উদ্দিন নামের একজন মারা গেছেন। মরদেহ নিহতের বাড়িতে রয়েছে। খবর পেয়েই নিহতের বাড়িতে গিয়েছি।

 

Header Ad
Header Ad

সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা  

ছবিঃ সংগৃহীত

সুনামগঞ্জের মধ্যনগর বাজারে অনির্দিষ্ট কালের জন্য সভা-সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ করে ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। পুলিশের আসামি ধরাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং দলীয় অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা থেকে ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উজ্জ্বল রায়।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় আসামি ধরাকে কেন্দ্র করে মধ্যনগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম মজনু এবং যুবদল নেতা শহিদ মিয়ার লোকজনের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় বিএনপি ও যুবদলের অস্থায়ী অফিস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর থেকে মধ্যনগর বাজার এলাকায় উভয় পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করে। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনার আশঙ্কা এবং সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে পরবর্তী নির্দেশ দেওয়ার আগে পর্যন্ত বাজার এবং আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ মিছিল-মিটিং নিষিদ্ধ করা হয়।

মধ্যনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সজীব রহমান বলেন, ‘মধ্যনগর যুবদল নেতা শহিদ মিয়া ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাঈযুম মজনুর লোকজনের মধ্যে পুলিশের আসামি ধরা নিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। পরে উভয় পক্ষের লোকজন বিএনপি ও যুবদলের অফিস ভাঙচুর করে। এতে বাজারের সাধারণ ব্যবসায়ী ও মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বাজার ও আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে উপজেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে। বিশৃঙ্খল অবস্থা এড়াতে বাজারে পুলিশের টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাজার ও আশপাশের এলাকায় পুলিশ মোতায়েন থাকবে। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত
জামায়াতের আমিরকে যানজট মুক্ত করতে গিয়ে প্রাণ দিলেন কর্মী
সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা  
একুশে টিভির জিডি, কর্মচারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে জামায়াত  
আফ্রিকার রানের চাপে বড় ব্যবধানে হারলো আফগানিস্তান
আগামীকাল দুই বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে
অপারেশন ডেভিল হান্ট: ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার ৪৬১
খিলগাঁওয়ে স-মিলে ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১০ ইউনিট
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
পশ্চিম তীরে নতুন করে হামলার নির্দেশ দিলেন নেতানিয়াহু
মেসির অটোগ্রাফ চেয়ে শাস্তি পেলেন রেফারি
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বেনাপোলে হয়নি দুই বাংলার মিলন মেলা
মাতৃভাষার গুরুত্ব ও ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে যা বললেন ড. ইউনূস
চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানি: তিন দিন পর মামলা, আতঙ্কে যাত্রীরা
বিপ্লবের আত্মত্যাগ উন্নত বাংলাদেশের পথে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে : পররাষ্ট্রসচিব
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে ২০২৪ সালে আওয়ামী সরকারের পতনের কারণ উদঘাটন
চ্যাম্পিয়নশিপের দল শেফিল্ডে মাসে ৪০ কোটি টাকা বেতন পাবেন হামজা চৌধুরী
পবিপ্রবিতে আবাসিক হলগুলোর নাম পরিবর্তন, মুছে ফেলা হলো শেখ পরিবারের নাম
ইসরায়েলের তেল আবিবে তিনটি বাসে বিস্ফোরণ
বিয়ের ছবি ভাইরাল, বললেন শুভকামনা জানানোর জন্য ধন্যবাদ