রকেটের গতিতে বেড়েছে কলার দাম!
গত কয়েক মাস ধরেই নিত্য পণ্যের বাজার অস্থির। সেই অস্থিরতা আর পবিত্র রমজান মাসকে ঘিরে আরেক দফা দাম বেড়েছে প্রায় সব পণ্যের। মূল্যবৃদ্ধির এই তালিকা থেকে কলাও বাদ যায়নি। রমজান মাসে কলার চাহিদা বাড়ার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছে ইচ্ছে মতো। বাজার ভেদে বিক্রি হচ্ছে একেক রকম দামে।
ক্রেতাদের অভিযোগ, রমজানে রকেটের গতিতে বেড়েছে কলার দাম! প্রতি পিছ কলার দাম বেড়েছে ৫ টাকা করে। আর কলা বুঝে হালি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে! ফলে এই কলা কিনতে গিয়েই অনেকই হিমশিম খাচ্ছেন।
সাধারণত প্রতিটি কলা (ছোট) বিক্রি হয় ৫ টাকা, বড় কলা ১০ টাকা করে। রমজান মাস শুরুর পর থেকে সেই ৫ টাকার কলা বাজার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা করে। আবার ১০ টাকার কলা বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা। অনেক জায়গায় এক হালি কলা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা (দেশি সাগরকলা)। কলার দাম এতটাই বেড়েছে যে, ক্রেতাদের একটা বড় অংশ কলা কেনাই বাদ দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) দুপুরে পলাশী বাজারে কলা কিনতে এসেছিলেন আব্দুর রহমান। ক্ষোভের সঙ্গে তিনি বলেন, রকেটের গতিতে বেড়েছে কলার দাম! কয়েকদিন আগে কলার হালি ছিল ১৫ থেকে ২০ টাকা। বড় জোর ২৫ টাকা। সেই কলার হালি এখন ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকা। এটা ভাবা যায়?
তিনি বলেন, আমরা কীভাবে কিনে খাব? দাম বাড়ায় কারা? যারা এর সঙ্গে যুক্ত তাদের শাস্তির আওতায় আনা সরকারের দায়িত্ব। কিন্তু সেটা তো কেউ করেন না। সামান্য এসব কলা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে কী হবে।
শুধু আব্দুর রহমান নয়, তার মত আরও অনেক পলাশী বাজারে কলা কিনতে এসে অভিযোগ করে বলেন, সামান্য কলা এবং লেবুর দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে না সরকার। ক্রেতাদের অভিযোগ, সাগর কলা, চাম্পা কলা, দেশি কলা, থেকে শুরু করে যেই কলা কিনতে যান না কেন, প্রতিটা কলার দাম বেড়েছে কমপক্ষে ৫ টাকা।
পলাশী বাজারে পলাশ আহমেদ বলেন, রোজা থাকি সেই ছোটবেলা থেকে। দুধ কলা না হলে আমার সেহরি খাওয়া হয় না। আজ দুই পিস কলা কিনেছি ৩০ টাকা দিয়ে যা বাপের জনমেও এত দাম দিয়ে কখনো কিনি নাই। এদেশে দেখার অনেক কিছু বাকি আছে আমাদের। যে কলা চায়ের দোকানে নেয় ৮-১০ টাকা সেই কলা এই রোজার মধ্যে কিনতে হলো ১৫ টাকায়!
এক হালি বড় সাগর কলা কিনেছেন লাইলি-রাজীব দম্পতি। তারা অভিযোগ করে বলেন, আজ বাধ্য হয়ে এক হালি বড় সাগর কলা কিনলাম ৫৫ টাকা দিয়ে যা আগে কিনেছি ১৫ টাকা অথবা ২০ টাকা বা তার সামান্য একটু বেশি, কলা বুঝে দাম দিয়েছি।
তারা জানান, কলা ব্যবসায়ীর সঙ্গে দামাদামি করলে তারা খারাপ ব্যবহার করে। বলে, কলার এক দাম। নিলে নেন, না নিলে চলে যান।
তবে কলা ব্যবসায়ীরা বলছে, দেশি ভালো সাগর কলার (১ পিচ) দাম ১৮-২০ টাকাও আছে।
পলাশী বাজারের কলা বিক্রেতা শামীম হোসেন বলেন, কলা আমরা বেশি দামে কিনেছি, এজন্য একটু বেশি দামে বিক্রি করছি। তিনি বলেন, রমজানের প্রথম দিনে কলার কিছুটা সংকট ছিল। তখন একটি কলা বিক্রি করেছি দাম ১৮-২০ টাকা করে। এখন দাম কমেছে কিছুটা, কমছে চাহিদাও।
এনএইচবি/এমএমএ/