কয়েক সপ্তাহের টানা আন্দোলন, আমরণ অনশন ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের মুখে অবশেষে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) কর্তৃপক্ষ ৩৭ শিক্ষার্থীর সাময়িক বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করেছে। একই সঙ্গে খুলে দেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি আবাসিক হল।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে অনুষ্ঠিত কুয়েটের ১০২তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ মাছুদ সভায় সভাপতিত্ব করেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিকেল থেকেই শিক্ষার্থীদের জন্য হলগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে ১৪ এপ্রিলের সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল, একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হবে ৪ মে এবং হল খোলা হবে ২ মে। তবে আজকের সভায় তা পরিবর্তন করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, দ্রুত স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতেই হলগুলো আগেভাগেই খুলে দেওয়া হচ্ছে।
১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় অনেকেই আহত হন। এরপর ২৫ ফেব্রুয়ারি কুয়েট কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম ও হল বন্ধ ঘোষণা করে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ছিল, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দোষীদের তথ্য থাকা সত্ত্বেও পক্ষপাতমূলক সিদ্ধান্ত নেয় এবং নির্দোষ অনেকে শাস্তির সম্মুখীন হন। সেই প্রেক্ষিতে ১৪ এপ্রিল রাতে জরুরি সিন্ডিকেট সভায় ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়, যা নতুন করে আন্দোলনের জন্ম দেয়।
বহিষ্কারাদেশের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। এরপর ১৩ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় খোলার আগেই ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে আন্দোলনে গতি আনেন তারা। ২১ এপ্রিল থেকে শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশন শুরু করেন এবং উপাচার্যের অপসারণসহ বিভিন্ন দাবিতে সোচ্চার হন।
শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার জানান, “শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। যাঁরা প্রকৃত দোষী, তাঁদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তিনি আরও জানান, একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, যার প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এ সময় তার সঙ্গে খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো. ফিরোজ সরকার এবং জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।