রবিবার, ১২ মে ২০২৪ | ২৯ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

‘সবজি খেতে পারি না, ফল খাব কীভাবে’

সম্প্রতি রমজানে প্রতিটা দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ার কারণে দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ। এ শ্রেণির ভোক্তাদের অভিযোগ, এমনিতেই কয়েক মাস থেকে দ্রব্যের দাম বাড়তেই আছে। সেই সঙ্গে রমজানে বেড়েছে আরও কয়েকগুণ।

সরেজমিনে ফলের বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতারা অনেকেই বলছেন, যেভাবে শাকসবজির দাম বেড়েছে তাতে সবজি খেতে পারি না, ফল খাব কীভাবে?

সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, রমজান এলে মানুষের একটু খরচ বাড়ে, একটু বেশি কেনাকাটাও করতে হয়। ঠিক এই সুযোগটা গ্রহণ করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। যদিও পাইকারি বাজারে বাড়ে ১ টাকা কিন্তু এই পণ্যটি যখন অন্যান্য বাজারে ছড়িয়ে যায় তখন ওই পণ্যটির ৫ গুণ হারে বেশি দাম নেয় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। যা দেখার কেউ নেই।

তবে, স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, নিয়ম মেনেই আমরা ব্যবসা করছি। তবে পাইকারি বাজার থেকে প্রতিটা দ্রব্যের দাম বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে এ কারণেই একটু দাম বেশি রাখা হচ্ছে।

মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর পলাশী বাজারে সরেজমিনে কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে ঢাকাপ্রকাশ-এর এই প্রতিবেদকের কথা হয়। এতে বাজারের সার্বিক পরিস্থিতির বিভিন্ন তথ্য উঠে আসে।

পলাশী বাজারে ফল কিনতে এসেছেন আজিমপুরের বাসিন্দা মো. জুলহাস। জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ খুব কষ্টে আছি। না পারছি দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস কেনাকাটা করে পরিবারকে দিতে, না পারছি নিজেরা খেতে। তিনি বলেন, এমন কিছু সবজি আছে যেগুলোর দাম ১০০ টাকা করে— প্রায় ফলের দামের মতো।

তিনি আরও বলেন, আজ আমার ছেলে-মেয়েরা আপেল, আঙুর, বেদানা, ও মালটা খেতে চেয়েছে। এজন্য বাজারে ফল কিনতে এসেছি। এসে দেখি ফলের বাজারে আগুন। রমজানের আগে যে আপেলের কেজি ছিল ২০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা সেই আপেল এখন চায় ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। তিনি অভিযোগ করে বলেন, প্রায় প্রতি কেজিতে ১০০ টাকার মত বেড়েছে প্রতিটা ফলের দাম। বিদেশি ফলের দাম তো বেড়েছে সঙ্গে বেড়েছে আমাদের দেশীয় ফলের দামও। আয় রোজগার মোটেই বাড়েনি, বেড়েছে খরচ। এভাবে চলতে থাকলে আমরা পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকব কীভাবে?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী স্টাফ কোয়ার্টার থেকে বাবার জন্য ফল কিনতে এসেছেন জেরিন আক্তার। জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বাবা অসুস্থ, রোজা থাকতে তার কষ্ট হয়। প্রতিদিন এক দুই পিস করে ফল কিনে নিয়ে যাই বাবার জন্য। বাজারে এসে দেখি প্রতিটা ফলের দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। এভাবে দাম বাড়লে আমরা এ সব কিনব কি করে? সবকিছু আমাদের হাতের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।

বুয়েট বাজারে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেন গাউসুল আজম। তিনি রমজান উপলক্ষে প্রতিদিন পলাশী বাজার থেকে দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় জিনিস কেনাকাটা করেন। জানতে চাইলে আজম বলেন, আবাসিক এলাকা হওয়ায় এবং আশেপাশে উন্নত মানের একটি বাজার থাকায় আমাদের এই বাজারে প্রতিটা সবজির দাম দুইগুণ। তিনি বলেন, শুধু সবজি নয়, পলাশী বাজারে নির্ধারিত রেটের পণ্য ছাড়া প্রতিটা দ্রব্যের দাম বেশি।

তিনি বলেন, আজ আমার মেয়েটা বলেছে কিছু ফল কিনতে কিন্তু বাজারে দরদাম করে দেখি ফল আমাদের রিজিক থেকে উঠে যাচ্ছে। কারণ আমার মতো নিম্ন আয়ের মানুষ ফল কিনতে পারছেন না। রমজানে প্রতিটা দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়েছে ২ থেকে ৩ গুণ। সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি দ্রব্যমূল্য। সাধারণ মানুষ এ সব কিনতে হিমশিম খাচ্ছে। আমাদের মত গরিব মানুষের কথা কেউ চিন্তা করে না। উল্টাপাল্টা দাম বাড়ার কারণে আমরা সাংসারিক জীবনে টাকা-পয়সার অশান্তিতে পড়ছি।

আজম আরও বলেন, রোজার একসপ্তাহ আগে ফলের দাম অনেকটা স্বাভাবিক ছিল আর এখন প্রতিটা ফলের কেজিতে ৫০ টাকা থেকে ১০০ টাকা করে বেড়েছে। রোজার সময় একটু ফল এবং ভালো সবজি যে খাব— আস্তে আস্তে আমাদের সেই ভাগ্য উঠে যাচ্ছে।

ফল কিনতে আসা টিপু সুলতান বলেন, বাচ্চারা ড্রাগন ফল খেতে চেয়েছে। একটি ড্রাগন কিনেছি। যে ড্রাগন ফলের কেজি ছিল এর আগে ৩০০ টাকা এখনে সেই ফলের কেজি হয়েছে ৭০০ টাকা। রোজার সময়ে এই ফলটার দাম সবচেয়ে বেশি বেড়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

পরিবারের জন্য ফল কিনেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাজারে শাকসবজির যে হারে দাম বেড়েছে তাতে ভালো মতো সেটাই কিনতে হিমশিম খাচ্ছি, ফল কিনে খাব কীভাবে?

এই বিষয়ে জানতে চাইলে পলাশী মার্কেটের হফ ব্যবসায়ী নেতা আব্দুল মান্নান বলেন, ড্রাগন ফলের দাম একটু বেড়েছে। তা ছাড়া অন্যান্য ফলের দাম তুলনামূলক কম রয়েছে। আমরা বাইরে থেকে বেশি দামে ফল কিনে আনি এজন্য একটু চড়া দামে বিক্রি করতে হয়। অন্যথায় আমরা চলব কীভাবে।

জানতে চাইলে পলাশী মার্কেটের ফল ব্যবসায়ী মো রুবেল মিয়া বলেন, আমরা অতিরিক্ত হারে কারো থেকে দাম বেশি নেই না। তবে এটা আবাসিক এলাকা হওয়ার কারণে হয়ত সামান্য কিছু টাকা অন্য বাজারে তুলনায় বেশি। তিনি বলেন, আমরা তো ছোট ব্যবসায়ী, যারা বড় ব্যবসায়ী তারা মূলত দাম বাড়িয়ে দেয়, সে ক্ষেত্রে আমাদের কিছু করার থাকে না।

কেএম/আরএ/

Header Ad

সরকারি চাকরিতে বয়স বাড়ানোর সুপারিশের কার্যকারিতা নেই: শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ বছর করার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাছে তিনি যে সুপারিশ করেছিলেন, সেটির আর কোনো কার্যকারিতা নেই। তার সুপারিশপত্রটি নিয়ে একটি পক্ষ জল ঘোলা করার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, ইতিমধ্যে জাতীয় সংসদে জনপ্রশাসনমন্ত্রী এ বিষয়ে রাষ্ট্রের নীতিগত সিদ্ধান্তটা কী পরিষ্কার বলে দিয়েছেন। চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর বিষয়ে এই মুহূর্তে যে সিদ্ধান্ত নেই, সেটা বলে দেওয়া হয়েছে। ফলে বয়সসীমা ৩৫ বছর করার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাছে যে সুপারিশ করেছিলেন, সেটির আর কোনো কার্যকারিতা নেই। সুপারিশপত্রটি নিয়ে একটি পক্ষ জল ঘোলা করার চেষ্টা করছে।

রবিবার (১২ মে) দুপুরে সচিবালয়ে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী এ বিষয়ে অনুরোধ করেছিলেন, কিছু কিছু বিষয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনাকালে মনে হয়েছে, সেটার বিষয়ে একটা সুপারিশ করা যেতে পারে। সেই হিসেবে আমি একটি সুপারিশপত্র দিয়েছি। কিন্তু দেখা যাচ্ছে যে সেই সুপারিশপত্র পুঁজি করে অনেকেই জল ঘোলা করার চেষ্টা করছেন।

তিনি বলেন, একটি পক্ষ আমার সেই সুপারিশপত্র পুঁজি করে সংঘাতমূলক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাইছে, অস্থিতিশীলতার সৃষ্টি করতে চাইছে। সুতরাং আমি তাদের বলব, এটা অত্যন্ত একটা খারাপ কাজ তারা করছে। রাষ্ট্র উত্তর দিয়েছেন, এখানেই বিষয়টি সমাপ্তি ঘটেছে।

সেই সুপারিশপত্রের কার্যকারিতা এখন নেই উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, যেহেতু জাতীয় সংসদে জনপ্রশাসনমন্ত্রী বলে দিয়েছেন। এখন এটাকে নিয়ে জলঘোলা করে নানা জায়গায় দাঁড়িয়ে আন্দোলনের নামে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করা কখনোই কাম্য নয়।

এর আগে, জাতীয় সংসদে পৃথক দুটি সম্পূরক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছিলেন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়টি সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়। আপাতত বয়সসীমা বাড়ানোর কোনো সিদ্ধান্ত সরকারের নেই। তবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে আরও আলাপ-আলোচনা করা হবে। আরও আলোচনা-পর্যালোচনা করে ভবিষ্যতে বিষয়টি দেখা হবে।

এদিকে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে শনিবার (১১ মে) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জড়ো হন আন্দোলনকারীরা। ‘চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫-প্রত্যাশী সমন্বয় পরিষদ’ নামের একটি সংগঠনের উদ্যোগে এ কর্মসূচি ডাকা হয়েছিল। এ কর্মসূচি থেকে ১৫ জনকে পুলিশ আটক করলেও পরে তাদেরকে জামিনে দেওয়া হয়।

এসএসসির ফল পুনঃনিরীক্ষণ শুরু কাল, আবেদন করবেন যেভাবে

ছবি: সংগৃহীত

চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার উত্তরপত্র চ্যালেঞ্জ বা ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন শুরু হবে আগামীকাল সোমবার। যা চলবে আগামী ১৯ মে পর্যন্ত। ফল পুনঃনিরীক্ষাণের আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতিপত্রের জন্য ১২৫ টাকা।

রবিবার (১২ মে) মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মো. আবুল বাসারের স্বাক্ষতির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল অপারেটর টেলিটক থেকে প্রতিপত্রের জন্য ১৫০ টাকা ফি দিয়ে ফল যাচাইয়ের আবেদন করা যাবে।

যেভাবে আবেদন করতে হবে:

শুধুমাত্র টেলিটক প্রি-পেইড মোবাইল ফোন থেকে পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন করা যাবে। আবেদন করতে মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে RSC <Space> বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর <Space> রোল নম্বর <Space> বিষয় কোড লিখে Send করতে হবে 16222 নম্বরে।

ফিরতি এসএমএ-এ আবেদন বাবদ কত টাকা কেটে নেওয়া হবে তা জানিয়ে একটি পিন দেওয়া হবে। এতে সম্মত থাকলে মেসেজ অপশনে গিয়ে RSC <Space> Yes <Space> PIN <Space> Contact Number (যে কোনো অপারেটর) লিখে Send করতে হবে 16222 নম্বরে।

ফল পুনঃনিরীক্ষণে ক্ষেত্রে একই এসএমএস-এর মাধ্যমে একাধিক বিষয়ের জন্য আবেদন করা যাবে। সে ক্ষেত্রে কমা (,) দিয়ে বিষয় কোড আলাদা লিখতে হবে। যেমন ঢাকা বোর্ডের একজন শিক্ষার্থী বাংলা ও ইংরেজি দুটি বিষয়ের জন্য টেলিটক প্রি-পেইড মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে লিখবে RSC <Space> Dha <Space> Roll Number <Space) 101, 102, 107, 108। ফল পুনঃনিরীক্ষণে প্রতিটি পত্রের জন্য ১২৫ টাকা করে কেটে নেওয়া হবে।

ভারতে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে কিডনি হাতিয়ে নিতো চক্রটি

আটককৃত দালালচক্রের সক্রিয় ৩ সদস্য। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর দিনমজুর মানুষদের টার্গেট করে তাদেরকে প্রলুব্ধ করে কিডনি বিক্রি চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে কিডনি কালোবাজারি সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে।

রোববার (১২ মে) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ঢাকার অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার খন্দকার মহিদ উদ্দিন।

গ্রেপ্তাররা হলেন- রাজু হাওলাদার (৩২), শাহেদ উদ্দীন (২২) ও আতাউর হোসেন বাপ্পী (২৮)। শনিবার (১১ মে) রাজধানী ধানমন্ডি ২/এ রোডের ইবনে সিনা ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের সামনে থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এই ঘটনায় পলাতক রয়েছে মাছুম (২৭), শাহীন (৩৫), সাগর ওরফে মোস্তফা (৩৭) সহ অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন।

এই দালালচক্রের খপ্পরে পড়ে কিডনি হারানো ভিকটিম রবিনের মামলার বরাত দিয়ে ডিএমপি জানায়, ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসের মিরপুর-১০ নং শাহ আলী মার্কেটের পিছনে চায়ের দোকানে রবিন তার এক বন্ধুর সাথে চা খাচ্ছিল এবং সংসারের অভাব অনটন নিয়ে কথাবার্তা বলছিল। ওই কথাবার্তা চলাকালীন পাশে বসা অভিযুক্ত ১নং পলাতক আসামী মাছুমও চা পান করছিল। এসব কথাবার্তা শুনে মাছুম নিজ থেকেই ভিকটিমকে বলে যে, ভারতে তার ব্যবসা আছে এবং ওই প্রতিষ্ঠানে চাকুরি দিতে পারবে। একপর্যায়ে মোবাইল নম্বর আদান প্রদান হয় এবং পরবর্তীতে ১নং পলাতক আসামীর সাথে প্রায় ১৫/২০ দিন মোবাইলে কথা হয়। অভিযুক্ত ১নং পলাকত আসামী ভিকটিমকে ভারত নিয়ে যাবে এবং সকল কার্যক্রম করবে মর্মে প্রস্তাব দেন, যাতে ভিকটিম রাজি হয়।

পরবর্তীতে ১নং পলাতক আসামী ভিকটিমকে পাসপোর্ট করে দিতে সহায়তা করে বলে যে, ভারতে তার প্রতিষ্ঠানে চাকুরির জন্য যেতে হলে ডাক্তারি কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। সে অনুযায়ী গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে ধানমন্ডি মডেল থানাধীন ৪নং রোডস্থ ল্যাব এইড হাসপাতালে ভিকটিমকে নিয়ে যায় এবং সেখানে অভিযুক্ত গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ রাজু হাওলাদার (৩২) এর সাথে পরিচয় হয়। অভিযুক্ত আসামী ও ১নং পলাতক আসামীরা পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট সংগ্রহ করে ভারতের ভিসা করানোর জন্য ভিকটিমের কাছ থেকে পাসপোর্ট নিয়ে নেয়। ভিসার সব কার্যক্রম শেষ করে অভিযুক্ত ১নং আসামী ও ১নং পলাতক আসামী ভিকটিমের সাথে গ্রেফতারকৃত ২নং আসামী শাহেদ উদ্দিন (২২) এবং ৩নং আসামী মোঃ আতাহার হোসেন বাপ্পী (২৮) দ্বয়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে বলে যে, তারা একে অপরের ব্যবসায়িক পার্টনার, বাংলাদেশ ও ভারতে তারা যৌথভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে। আসামীরা অনলাইনে বিমানের টিকেট ক্রয়পূর্বক ভিকটিমের হোয়াটস্ এ্যাপ এ প্রেরণ করে।

ওই টিকিট নিয়ে ভিকটিম গত ২২ ডিসেম্বর বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে ইনডিগো এয়ারলাইনস এর বিমানে করে ভারতের নয়া দিল্লিতে পৌঁছায়। সেখানে অভিযুক্ত ২নং ও ৩নং পলাতক আসামীরা ভিকটিমের ছবির প্রিন্ট কপি নিয়ে ভিকটিমকে রিসিভ করার জন্য অপেক্ষারত ছিল। ভিকটিমকে রিসিভ করেই অভিযুক্ত ২নং ও ৩নং পলাতক আসামীরা পাসপোর্ট কেড়ে নেয় এবং ভাড়াকৃত একটি প্রাইভেট কারযোগে প্রায় ১ ঘন্টা ২০ মিনিটের দূরত্বে ভারতের ফরিদাবাদ এলাকায় ৫৬৪ নম্বর বাসায় (২ তলা বিশিষ্ট বাসা) নিয়ে যায়।

এভাবে ভারতের ফরিদাবাদ এলাকার ওই ৫৬৪ নম্বর বাসায় ভিকটিমকে ২নং ও ৩নং পলাতক আসামীরা প্রায় ২০/২৫ দিন আটকে রাখে। আটক রাখাকালীন অভিযুক্ত ৩নং আসামী মোঃ মাছুম বাংলাদেশ থেকে সেখানে যায়। মাছুমকে পেয়ে ভিকটিম তার চাকুরির কথা জিজ্ঞাসা করলে সে বিভিন্ন রকম তালবাহানামূলক কথাবার্তা বলে।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন ঢাকার অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার খন্দকার মহিদ উদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত

অভিযুক্ত ৩নং আসামী ভিকটিমকে তার আর্থিক অনটন, সাংসারিক অর্থনৈতিক দূরবস্থার সুযোগ নিয়ে একটি কিডনি প্রদানের জন্য প্ররোচিত করে এবং ভয়ভীতি দেখায় যে, পাসপোর্ট ছাড়া সে দেশেও ফিরে আসতে পারবে না। একপর্যায়ে আসামীরা ভিকটিমকে নয়া দিল্লির এশিয়ান হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে কিডনি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ডাক্তারি পরীক্ষা নিরীক্ষা করায়। ডাক্তারি পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে কিছুদিন পর ভারতের গুজরাটে নিয়ে যায় এবং মুক্তিনগর এলাকায় ২ তলা বিশিষ্ট একটি বাসায় রাখে।

রবিনের এজাহার অনুযায়ী, দারিদ্র্যের সুযোগ নিয়ে অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে ফুসলিয়ে কাউকে কিছু না বলার শর্তে আসামীরা পরস্পর যোগসাজসে ইচ্ছার বিরুদ্ধে এবং বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে ও সুকৌশলে চলতি বছরের ৪ মার্চ ভারতের গুজরাট কিডনি এন্ড স্পেশালাইজড হাসপাতালে নাভীর নিচে তলপেট বরাবর অপারেশনের মাধ্যমে ১ টি কিডনি প্রদানে বাধ্য করে এবং ফুসলিয়ে কিছু কাগজপত্রে স্বাক্ষর নেয়। অপারেশন শেষে ওই হাসপাতাল থেকে ৪ দিন পরে ছাড়পত্র প্রদান করে। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর আসামীদের দালাল চক্র ভারতের অজ্ঞাত স্থানে প্রায় ১০/১১ দিন ভিকটিমকে আটক রাখে।

উল্লেখ্য, হাসপাতালে থাকা অবস্থায় বিভিন্ন মাধ্যমে ভিকটিম জানতে পারে যে, ওই কিডনি আসামীরা দালাল চক্রের কাছে প্রায় ৫০ লাখ টাকায় বিক্রি করে। বিভিন্ন সময়ে ভারতে থাকাকালীন অবস্থায় আসামীরা ভিকটিমকে বলে যে, তাকে ভারতে মেরে ফেললে কী হবে? এমন ভয়ভীতি দেখিয়ে দালালচক্র ভিকটিমকে কিছু টাকা দেওয়ার কথা বলে। বাংলাদেশে অবস্থানকৃত চক্রের অন্য সদস্যরা ভিকটিমের স্ত্রী ইশরাত জাহানের বিকাশ নম্বর বিভিন্ন সময়ে মোট ৩ লাখ টাকা প্রদান করে এবং পরবর্তীতে আরও ৩ লাখ টাকা দেওয়ার আশ্বাস প্রদান করে।

এভাবে দেশে এসে ভিকটিম বুঝতে পারে যে, সে বড় দালালচক্রের খপ্পরে পড়ে তার কিডনি হারিয়েছে। কিডনি অপারেশনের ফলে প্রায় ৫ ইঞ্চি পরিমান কাটা দাগ রয়েছে ভিকটিমের শরীরে।

প্রসঙ্গত, ভিকটিম শারীরিকভাবে অসুস্থবোধ করায় গত ১০ মে ধানমন্ডি থানাধীন ল্যাব এইড হাসপাতালে আল্ট্রাসনোগ্রাম করে যাতে লেখা আছে Non Visualized left Kidney। কিডনি হারিয়ে আজ সে এক কর্মক্ষমতাহীন মানুষ। এমতাবস্থায় এই চক্রের দ্বারা অন্য আরেকজন ব্যক্তি প্রতারিত হতে গেলে ভিকটিম রবিন তা জানতে পারলে ধানমন্ডি থানা পুলিশের সহায়তায় এই ৩ জন আসমীকে গ্রেফতার করে এবং সেই মতো মামলা রুজু হয়। পলাতক আসামীদের দ্রুত গ্রেফতারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।

সর্বশেষ সংবাদ

সরকারি চাকরিতে বয়স বাড়ানোর সুপারিশের কার্যকারিতা নেই: শিক্ষামন্ত্রী
এসএসসির ফল পুনঃনিরীক্ষণ শুরু কাল, আবেদন করবেন যেভাবে
ভারতে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে কিডনি হাতিয়ে নিতো চক্রটি
উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর নির্দেশ ইসির
মারা গেলেন প্রথম শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপনকারী সেই ব্যক্তি
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ: অধ্যক্ষের অপসারণ চান শিক্ষক-কর্মচারীরা
চামড়া ব্যবসায়ীদের সহজ শর্তে ঋণ পেতে সুপারিশ করা হবে: শিল্পমন্ত্রী
গোবিন্দগঞ্জে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীর হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন
উড়ন্ত বিমান থেকে লাফ দেওয়ার হুমকি যাত্রীর, তারপর...
রাজশাহীর কোন আম কবে বাজারে আসবে জানালো জেলা প্রশাসন
আমরা যে উন্নয়নের রোল মডেল তৈরি করেছি তা এখানেই সীমাবদ্ধ না: নৌপ্রতিমন্ত্রী
এসএসসিতে ৫১ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সবাই ফেল
বাংলাদেশের হোয়াইটওয়াশের স্বপ্ন ভেঙে সান্ত্বনার জয় পেল জিম্বাবুয়ে
বিয়ে করছেন ‘বিগ বস’ তারকা আবদু রোজিক
এসএসসিতে কোন বোর্ডে পাসের হার কত
হোয়াইটওয়াশের মিশনে জিম্বাবুয়েকে ১৫৮ রানের টার্গেট দিল বাংলাদেশ
ছাত্রীদের চেয়ে ছাত্ররা পিছিয়ে, কারণ খুঁজতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ
এসএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশ, পাসের হার ৮৩.০৪ শতাংশ
সৌদি আরবে এবার হজযাত্রীদের জন্য থাকছে উড়ন্ত ট্যাক্সি
আজ বিশ্ব মা দিবস