কাজী ফিরোজ রশীদকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান মিডিয়া এডুকেটরস নেটওয়ার্কের
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ. আ. ম. স আরেফিন সিদ্দিকের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে সাংসদ কাজী ফিরোজ রশীদের বক্তব্য মিথ্যা ও উদ্দেশ্যমূলক। তার এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্যে আমরা মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ। রবিবার (৩ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে একথা জানায় মিডিয়া এডুকেটরস নেটওয়ার্ক।
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৮ শিক্ষকের দেয়া বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, গত ৩০ জুন জাতীয় সংসদে বাজেট অধিবেশনের সমাপনী দিনে বক্তব্য রাখার সময় কাজী ফিরোজ রশীদ ড. আরেফিন সিদ্দিকের পিএইচডি ডিগ্রি নেই বলে অসত্য তথ্য প্রদান করেন। প্রকৃত তথ্য হলো, ড. আরেফিন সিদ্দিক ১৯৮৬ সালে ভারতের মহীশুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। এছাড়াও বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি উচ্চতর পেশাগত প্রশিক্ষণও নেন। বাংলাদেশে সাংবাদিকতার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা প্রবর্তনের ক্ষেত্রেও তার ভূমিকা অনস্বীকার্য।
কাজী ফিরোজ রশীদ দেশব্যাপী শিক্ষকদের উপর হামলা ও লাঞ্ছনার বিষয়ে বক্তব্য দিতে গিয়ে সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিকভাবে ড. আরেফিন সিদ্দিককে টেনে আনেন। আমরা মনে করি, শিক্ষকদের উপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে তিনি একজন শিক্ষাবিদ সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য প্রদান করে প্রকারান্তরে সমগ্র শিক্ষক সমাজকেই অপমান করেছেন। তার এ ধরনের বক্তব্য শিক্ষকদের উপর চলমান হামলা ও লাঞ্ছনার ঘটনার ধারাবাহিকতা কি না, সেটি খতিয়ে দেখার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, একই বক্তব্যে কাজী ফিরোজ রশীদ নারীদেরকে নিয়ে বলেন, ‘প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির আধুনিক মেয়েদের হাতে এখন চা ও সিগারেট দেখি। তাদের এক হাতে কাপ ও অন্য হাতে সিগারেট। এটা কোন সংস্কৃতি ও কোন শিক্ষা।’
তার উপরোক্ত বক্তব্যও বৈষম্যমূলক এবং নারীদের জন্য অপমানজনক। আমরা মনে করি, চা ও সিগারেট পানের সংস্কৃতি খারাপ হলে সেটি সকলের জন্যই খারাপ। তিনি শুধুমাত্র নারীদের উদ্দেশ্য করে এমন বক্তব্য দিতে পারেন না। আমরা তার এ বক্তব্যেরও প্রত্যাহার এবং ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানাই।
জাতীয় সংসদের মতো স্থানে একজন জনপ্রতিনিধির এমন মিথ্যাচার দুঃখজনক বলে উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে। কাজী ফিরোজ রশীদকে অবিলম্বে তার এ বক্তব্য প্রত্যাহার ও ক্ষমা চাইতে হবে। পাশাপাশি দেশব্যাপী শিক্ষকদের উপর একের পর এক হামলার এ সময়টিতেই তাঁর এ ধরনের বক্তব্য প্রদান উদ্দেশ্যপূর্ণ কি না, সেটিও সরকারকে খতিয়ে দেখতে হবে।