ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পরকীয়ার জেরে জোড়া খুন আদালতে দায় স্বামীর স্বীকারোক্তি

ছবিঃ সংগৃহীত
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়ে স্ত্রী ও শ্যালিকাকে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন মো. আমীর হোসেন সামিউর। তিনি আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে জানান, পরকীয়ার সন্দেহ থেকেই তিনি স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন এবং ঘটনাটি দেখে ফেলায় শ্যালিকাকেও হত্যা করেন।
বুধবার (৫ মার্চ) দুপুরে গ্রেফতার আমীর হোসেন পুলিশ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (চতুর্থ আদালত) আছমা জাহান নিপার আদালতে সোপর্দ করলে তিনি এ জবানবন্দি দেন।
এর আগে আমীর হোসেন পুলিশের কাছেও ১৬১ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
পুলিশের তদন্তে জানা যায়, আমীর হোসেনের সন্দেহ ছিল যে তার স্ত্রী জ্যোতি আক্তার পরকীয়ায় লিপ্ত। এক সপ্তাহ আগে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে তিনি স্ত্রীকে অপরিচিত এক যুবকের সঙ্গে দেখে ফেলেন। এ ঘটনায় স্ত্রীর সঙ্গে তার সম্পর্কের অবনতি ঘটে। পরে, ২ মার্চ গভীর রাতে দাম্পত্য কলহ চরমে পৌঁছালে আমীর হোসেন বালিশ চাপা দিয়ে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন।
এ সময় তার শ্যালিকা স্মৃতি আক্তার ঘুম থেকে উঠে ঘটনাটি দেখে ফেলেন। প্রথমে তাকে চলে যেতে বললেও পরে রান্নাঘরে নিয়ে গিয়ে তাকেও শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। হত্যার পর তিনি ঘর থেকে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা নিয়ে পালিয়ে যান।
এ ব্যাপারে কসবা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রিপন দাস বলেন, ‘আদালতেও আমীর হোসেন স্ত্রী ও শ্যালিকাকে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
রিপন দাস আরও জানান, গ্রেফতারের সময় আমীর হোসেনের কাছ থেকে এক জোড়া স্বর্ণের কানের দুল, চেইন, একজোড়া নূপুর ও নগদ ৭ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
উল্লেখ্য, গত সোমবার (৩ মার্চ) ভোরে কসবা উপজেলার ধজনগর গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়ে পারিবারিক বিরোধের জের ধরে স্ত্রী জ্যোতি আক্তার (২০) ও শ্যালিকা স্মৃতি আক্তারকে (১৩) খুন করে পালিয়ে যান স্বামী আমীর হোসেন সামিউর (৩০)।
পরে তাকে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে চট্টগ্রামের বাকুলিয়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার আমীর হোসেন কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার জামতলী গ্রামের জাকির হোসেনের ছেলে। এ ঘটনায় নিহতদের ভাই মোবারক হোসেন বাদী হয়ে সোমবার রাতে কসবা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
