ক্ষমতায় এসে ইশতেহারটা ফেলে দিই না: প্রধানমন্ত্রী

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে নির্বাচনী ইশতেহার ফেলে দেয় না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আমরা যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছি, সেটা আমরা বাস্তবায়ন করতে চাই। আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই আমরা নির্বাচনী ইশতেহারটা ফেলে দিইনি। প্রতিবার বাজেট প্রণয়নের সময় সেটাকে অনুসরণ করেই আমাদের কর্মপরিকল্পনা নিই। কতটুকু আমরা করতে পারলাম কতটুকু আরও করার বাকি আছে সেটাও আমরা নির্দিষ্ট করি।
রবিবার (৩ জুলাই) দুপুরে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি (এপিএ) শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সরকার প্রধান এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে কথাগুলো বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী কীভাবে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন করব, সেই নির্দেশনা বা কর্ম পরিকল্পনারই একটা কাঠামো থাকে। আমাদের দলের ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্র থাকে, সেখানে আমাদের কিছু দিক নির্দেশনা থাকে সেটা আমরা বাস্তবায়ন করি। আমাদের দলের সম্মেলনেও সেগুলো আমরা পর্যালোচনা করি। সেখানেও আমরা কতটুকু কাজ সম্পন্ন করতে পারলাম আর কী কী বাকি আছে বা নতুন কী করা যেতে পারে সেটাও আমরা পরিপালন করি এবং তারই উপর ভিত্তি করে আমরা কাজ করি।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু হয়ে গেছে এখন দক্ষিণ অঞ্চল থেকে প্রচুর পণ্য আসবে। শুধু কাওরানবাজার আমাদের একটা হোল সেল মার্কেট কাঁচা শাকসব্জি ও মাছের জন্য। ঢাকা শহরে আমিনবাজারের দিকে মহাখালী ও সায়দাবাদ, কাঁচপুরে বা পশ্চিম দিকে আর একটা জায়গাসহ চারটা কাঁচাবাজার নির্মাণের সিদ্ধান্ত রয়েছে। দক্ষিণ অঞ্চল থেকে যে পণ্যগুলো আসবে কাঁচপুরে ওখানে একটা কাঁচা বাজার করে সেখানেই যেন সংরক্ষণ করতে পারি, সেখান থেকে সরবরাহ করতে পারি সেই ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ছিল। সেটা আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। তাহলে ঢাকা শহরে যে চাপ আসবে সেই চাপটা যেন না থাকে। কারণ বাজার অন্যত্র নিয়ে যাওয়া।
ঢাকার চারদিকে চারটা মার্কেট ভাগ করে দিতে হবে। পোস্তাগলা বা কেরানীগঞ্জের দিকে আরেকটা হোল সেল মার্কেট করা যেতে পারে। বা কামরাঙ্গীর চরের দিকে করতে পারি যাতে করে পণ্যগুলো ওখানে আসতে পারে। তাহলে শহরের ভেতরে আর কোনো ঝামেলা থাকবে না।
তিনি আরও বলেন, পদ্মা সেতু থেকে যে বিশাল ট্রাফিক আসবে তা গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য ঢাকাকে ঘিরে যে একটা রিং রোড করা তার ব্যবস্থাটা কিছু কিছু জায়গায় অলরেডি কাজ শুরু হয়েছে। এ ধরনের একটা ব্যবস্থা করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বন্যার প্রকোপ থাকবেই বন্যা নিয়ে আমাদের বাঁচতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ এলাকা আমাদের, প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়েই বাঁচতে হবে। মানুষের জীবন ক্ষয় যেন না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমাদের সব পরিকল্পনা। এসব পরিকল্পনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব দিয়ে গেছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ৭৫ এর ১৫ আগস্টের পরে সংবিধান লংঘন করে সামরিক শাসন জারি করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের যে পালাবদল শুরু হয়েছিল, সেখানে শুধু বারবার ক্যু হওয়া আর ক্ষমতার পরিবর্তন এটাই হয়েছে। গণমানুষ সব সময় অবহেলিত থেকে গিয়েছিল। সরকার যে জনগণের সরকার বা জনগণের সেবা করবে এটাই যেন সবাই ভুলে গিয়েছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে বিভিন্ন কর্মমুখী পরিকল্পনা নিই, প্রণয়ন শুরু করি। আমরা যে কাজগুলো করব সেগুলো যেন সুষ্ঠুভাবে হয় জনগণের কল্যাণে হয়। সেভাবেই আমরা কাজ করছি বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এগিয়ে যাবে। বিশ্বের যে যেখানে আছে বাঙালি মাথা উঁচু করে চলবে। এটাই আমাদের চাওয়া। পদ্মা সেতু আমাদের সেই আত্মমর্যাদা বাড়িয়ে দিয়েছে।
এসএম/এসএন
