শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ২৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান

জ্যাক এবং পিয়েরেকে শুধু স্কুলই ওইসব আনন্দ দিতে পারত। তাদের সবচেয়ে ভালো লাগার বিষয়টা ছিল তারা বাড়ি থেকে দূরে আছে এই বোধটা। বাড়িতে অভাব আর অজ্ঞতা জীবন আরো বেশি কঠিন এবং বিষণ্ন করে তুলত। জীবন চারপাশ থেকে আটকাবস্থায় পতিত মনে হতো। দারিদ্র একপাশ থেকে টেনে তোলা যায় এমন একটা সেতুহীন আবদ্ধ দুর্গ।

তবে সবটাই এরকম ছিল তা নয়; জ্যাক নিজেকে সবচেয়ে দুর্ভাগাদের অন্যতম মনে করত, বিশেষ করে অবকাশের সময় তার নানি যখন জ্যাক ছোকরার অক্লান্ত জ্বালাতন থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য তাকে জাক্কার পার্বত্যাঞ্চলের মিলিয়ানার একটা হলিডে ক্যাম্পে পাঠিয়ে দিতেন। সেখানে থাকত আরো পঞ্চাশ জনের মতো বাচ্চার এক বিশাল সমাগম। বেশ কয়েকজন উপদেষ্টা থাকতেন। সেখানে তারা ডরমিটরিঅলা একটা স্কুলে থাকত। ভালো খাওয়া দাওয়া, আরামের ঘুম, খেলাধুলা কিংবা ঘুরে বেড়ানোর ব্যবস্থা ছিল। তাদের দেখাশোনার জন্য সুন্দর সেবিকারা ছিলেন। তবু এত কিছু সত্ত্বেও যখন সন্ধ্যা নেমে আসত, পর্বতের ঢালে ছায়াগুলো দ্রুত লম্বা হয়ে পড়ত, পর্বতে ঘেরা ছোট শহরটার বিশাল নৈঃশব্দের ভেতর পাশের কোনো এক সেনা ছাউনি থেকে ঘরে ফেরার তাগিদ জানিয়ে বিউগলের করুণ সুর বেজে উঠত, তখন ভ্রমণ করার মতো কোনো এলাকা থেকে শত কিলোমিটার দূরে বালক জ্যাক টের পেত তার ভেতরে পাখা বিস্তার করছে হতাশা। নীরবতার ভেতরেই মন হাহাকার করে উঠত তার সমস্ত ছেলেবেলার নিঃস্ব বাড়িটার জন্য।

না, স্কুল তাদের জন্য পারিবারিক জীবনের কষ্ট থেকে শুধু মুক্তির স্বাদই দিত না, বিশেষ করে এম বার্নার্ডের ক্লাস তাদের একটা মৌলিক ক্ষুধা মিটিয়েও থাকত। শিক্ষকের জন্য ক্ষুধাটা যতটা মৌলিক ছিল, ছাত্রদের জন্য ছিল তার চেয়ে আরো বেশি এবং সেটাই হলো কোনো কিছু আবিষ্কারের ক্ষুধা। তাদের অন্যান্য ক্লাসেও তারা অনেক কিছু শিখেছে। কিন্তু সেসব ক্লাসে তাদের অবস্থা ছিল যেন খাবার তৈরি করা হয়েছে, এবার গিলে রক্ষে করো। আর এম জারমেইনের ক্লাসে তারা প্রথম বুঝতে পারে, তাদের অস্তিত্ব আছে এবং তারাও উচ্চ তাৎপর্যের অধিকারী হতে পারে, জগৎ আবিষ্কারের যোগ্য হতে পারে। এমনকি তাদের শিক্ষক তাদেরকে যা পড়ানোর জন্য বেতন পেতেন শুধু সেগুলোর মধ্যে নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখেননি। তিনি সরলতার সঙ্গে তাদেরকে তার ব্যক্তিগত জীবনেও স্বাগত জানাতেন। তাদের সঙ্গেই তার ওই জীবনটা যাপন করতেন। তাদেরকে তার নিজের এবং তার দেখা শিশুদের বাল্যকাল সম্পর্কে বলতেন। তাদের সঙ্গে তার দর্শন ভাগাভাগি করে নিতেন।

তবে কখনওই নিজের মতামত তাদের ওপর চাপাতেন না। তার আরো অনেক সহকর্মীর মতো তিনিও যাজকীয় ব্যাপার স্যাপার পছন্দ করতেন না। তবে কোনো ধর্মের বিরুদ্ধে শ্রেণিকক্ষে কিছু বলতেন না। কারো বিশ্বাস কিংবা পছন্দের বিরুদ্ধেও কিছু বলতেন না। চৌর্যবৃত্তি, বিশ্বাসঘাতকতা, উগ্রতা এবং নোংরামির মতো যে সব বিষয়ে মোটেও কোনো যুক্তিতর্কের আবকাশ নেই সেসব অশুভ কাজ তিনি সর্বশক্তি দিয়ে ঘৃণা করতেন।

তবে যে যুদ্ধ তখনও সাম্প্রতিক ঘটনা সেই যুদ্ধ সম্পর্কে তাদেরকে বেশি বলতেন। দীর্ঘ চার বছর তিনি যুদ্ধ করেছেন। সৈনিকদের দুর্ভোগ, সাহস, ধৈর্য এবং যুদ্ধবিরতি চুক্তির আনন্দের কথা বলতেন। প্রতি পর্বের শেষে তাদের ছুটিতে পাঠানোর আগে এবং মাঝে মধ্যে পাঠ্যপরিকল্পনার ভেতর থেকে সময় বের করতে পারলে তিনি দরগেলির লেস ক্রয়েক্স দে বয়েস থেকে অংশ বিশেষ তাদের পড়ে শোনাতেন। তার ওই পড়ার মাধ্যমে জ্যাকের কল্পনার সামনে চমৎকারিত্বের দরজা খুলে যেত।

তবে মনে আছে, সেবার চমৎকারিত্বের জগতে যেন ভয় এবং দুর্ভাগ্য মিশে গিয়েছিল। অবশ্য তার অদেখা বাবাকে সে শুধু একটা তাত্ত্বিক সম্পর্কের মধ্যে এনেছে। তার শিক্ষক সমস্ত হৃদয় দিয়ে যে গল্পটা বলেছেন সেটা জ্যাক সমস্ত হৃদয় দিয়ে শুনেছে। সে গল্পের মধ্যেও এসেছে তুষার, তার কল্পনায় লালিত শীতকালের ছবি। তবে সেখানে সে দেখতে পেয়েছে কাদা জড়ানো ভারী পোশাক পরিহিত বিশেষ ধরনের মানুষদের। তারা অচেনা ভাষায় কথা বলে। তাদের মাথার ওপরে ছাদ হিসেবে পায় গোলা, আগুনের হলকা, গুলির বৃষ্টি। পিয়েরে এবং জ্যাক ক্রমবর্ধমান অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করত প্রত্যেকবার পড়ার জন্য। সে যুদ্ধ নিয়ে প্রায় সবাই কথা বলত।

এমনকি ডানিয়েল যখন মার্নের যুদ্ধ সম্পর্কে কথা বলত তখনও জ্যাক খুব মনোযোগ দিয়ে শুনত: ডানিয়েল বলেছে তাদের, মানে জুয়াভদের প্রথমে সম্মুখ সমরে নেওয়া হয়েছিল, তারপর একটা গিরিখাতের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তারাই ছিল সবার সামনে। তারা এগিয়ে যাচ্ছিল এবং হঠাৎ দেখতে পেল, তাদের সহযোদ্ধারা একজনের ওপর আরেকজন করে পড়ে যাচ্ছে। আর গিরিখাতের সমস্ত পাদদেশ রক্তে ভরে যাচ্ছে। অনেকের মুখ থেকে মা মা চিৎকার আর আর্তনাদ ভেসে আসছে। খুব ভয়ঙ্কর অবস্থা। ডানিয়েল কিভাবে বেঁচে এসেছিল সেটাই তার কাছে এক বড় বিস্ময়। সবাই বলত ওই যুদ্ধের স্মৃতি কখনও মুছে যাওয়ার নয়। যুদ্ধের স্মৃতি বালকদের জগতের সবকিছুর ওপর ছায়াপাত করত। অন্যান্য ক্লাসে যে সকল রূপকথার গল্প বলা হতো সেগুলোর চেয়ে বেশি টানত যুদ্ধের গল্পগুলো। তাদের মনের ভেতর যে সকল ধারণা থাকত সেগুলোর অবয়ব দান করত ওই গল্পগুলো। আর এম বার্নার্ড যদি পাঠ্যসূচির পরিবর্তন ঘটানোর জন্য ওই গল্পগুলো নিজের মাথার মধ্যে তুলে রাখতেন তাহলে তারা হতাশ হতো, ক্লান্ত বোধ করত।

তবে তিনি যুদ্ধের ভয়াবহ বর্ণনার কোনোটা আংশিক বদলে দিতেন মজার কিছুর মিশেল দিয়ে। তখন আফ্রিকার ওই শিশুরা অমুক তমুকের সঙ্গে এমনভাবে পরিচিত হয়ে যেত যেন তারাও শিশুদের নিজেদের জগতেরই বাসিন্দা। নিজেদের মধ্যে কথোপকথনের সময় তাদেরকে এমনভাবে উল্লেখ করত যেন যুদ্ধের মানুষেরা তাদেরই পুরনো দিনের বন্ধু এবং তাদের সামনেই রয়েছে। জ্যাকের এক মুহূর্তের জন্যও মনে হতো না যে, তারা সবাই যুদ্ধের সময়ে বেঁচে ছিল, এখন নেই। তার বরং মনে হতো, তারা এখনও বেঁচে আছে; তারা যুদ্ধের শিকার হয়েছে সেটা তার কল্পনায় আসতে চাইত না। বছরের শেষ দিনে যখন তারা বইটার শেষে পৌঁছে যেত সেদিন এম বার্নার্ড খুব নিচু স্বরে দয়ের মৃত্যুর কথা পড়ে শোনাতেন। নিজের স্মৃতি আর আবেগের মুখোমুখি হয়ে তিনি চোখ তুলে নীরব এবং বিহ্বল ক্লাসের দিকে তাকিয়ে প্রথম সারিতে বসা জ্যাককে দেখতেন: তার সারা মুখমণ্ডল অশ্রুতে প্লাবিত। দমকে দমকে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। তার ফোঁপানি যেন আর কখনও থামবে না। কোনো রকমে শোনা যায় এমন নিচু স্বরে তিনি বলতেন, শান্ত হও, বাছা। তারপর ক্লাসের দিকে পেছন ফিরে তিনি বইটা বাক্সে রেখে দিতেন।

এম বার্নার্ড বললেন, এক মিনিট, বৎস। এবার তিনি কষ্ট করে উঠে দাঁড়ালেন। খাঁচার শিকগুলোর ওপরে আঙুল ছোঁয়ালেন এবং ক্যানারি পাখিটা আরো জোরে ডেকে উঠল। তিনি বলে উঠলেন, আহ কাসিমির, আমরা ক্ষুধার্ত। এরপর তিনি রুমের অন্য পাশে অগ্নিকুণ্ডের কাছে রাখা স্কুল বালকের ডেস্কের কাছে গেলেন। একটা ড্রয়ার খুলে হাতড়াতে লাগলেন। তারপর আরেকটা খুলে কিছু একটা বের করলেন। জ্যাককে উদ্দেশ করে বললেন, এই যে, এটা তোমার জন্য। জ্যাক দেখল একটা বই, মুদি দোকানের কাগজে বাঁধাই করা, ওপরে কিছু লেখা নেই। বইটা খোলার আগেই জ্যাক বুঝতে পারল বইটা হল লেস ক্রয়েক্স দে বয়েস; এই কপিটাই তিনি সেদিন ক্লাসে পড়েছিলেন।

জ্যাক বলতে চাইল, না, না। এটা....। কথাগুলো আর শেষ পর্যন্ত বলা হলো না।

এম বার্নার্ড তার প্রবীণ মাথাটা ঝাঁকিয়ে বললেন, শেষের দিন তুমি কেঁদেছিলে। সেদিন থেকে বইটা তোমার হয়ে গেছে। তারপর তার হঠাৎ লাল হয়ে ওঠা চোখ আড়াল করার জন্য অন্যদিকে তাকালেন। ডেস্কের কাছে আবার এগিয়ে গিয়ে পেছন দিকে হাত আড়াল করে রেখে জ্যাকের দিকে ফিরলেন। একটা খাটো মোটা লাল রুলার ঝাঁকিয়ে হাসতে হাসতে জ্যাককে জিজ্ঞেস করলেন, এই ‘মিষ্টি লাঠি’টার কথা তোমার মনে আছে?

ও, হ্যাঁ, হ্যাঁ। আপনি এতদিনও এটা রেখে দিয়েছেন! জানেন তো, এখন এসব নিষিদ্ধ?

আরে রাখো তো। তখনও নিষিদ্ধ ছিল। তুমি নিজেই তো দেখেছ, আমি এই লাঠির ব্যবহার করেছি।

আসলেই জ্যাকের মনে আছে। এম বার্নার্ড শারীরিক শাস্তির পক্ষে ছিলেন। অবশ্য সচরাচর যে শাস্তি বেশি প্রচলিত ছিল সেটা হলো পরীক্ষায় অর্জিত নম্বর থেকে কিছুটা বাদ দিয়ে দেওয়া। তাতে ভুক্তভোগীর অবস্থান নিচে নেমে আসত। অপরাধের মাত্রা বেশি হয়ে গেলে তিনি অপরাধীকে অধ্যক্ষের কাছে পাঠিয়ে দিতেন।

এই কাজটা তার আরও অনেক সহকর্মীই করতেন। এছাড়াও তিনি আরেকটা প্রথা মেনে চলতেন; খুব শান্ত এবং হাসিখুশি স্বরেই বলতেন, আমার হতভাগা রবার্ট, আমাদের এখন ‘মিষ্টি লাঠি’র আশ্রয় নিতেই হচ্ছে। কেউ কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাত না। শুধু গোপনে কেউ কেউ মুখ টিপে হাসতে চেষ্টা করত হয়তো। মানব স্বাভাবের ধরনই এরকম: একজনের শাস্তিতে অন্যরা আনন্দ পায়। যাকে ডাকা হতো সে ফ্যাকাশে মুখে উঠে দাঁড়াত। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সে চেষ্টা করত ভয়ের ভাবটা লুকিয়ে রাখতে। ব্ল্যাক বোর্ডের কাছে যে টেবিলের পাশে এম বার্নার্ড দাঁড়িয়ে থাকতেন নিজের আসন ছেড়ে সেটার দিকে এগিয়ে যেতে যেতে কেউ কেউ অশ্রু আড়াল করার চেষ্টা করত। নিছক একটা প্রথা পালনের মতো মনে হলেও এর মধ্যে যেন কষ্ট দিয়ে আনন্দ লাভের একটা ছোঁয়া থাকত। রবার্ট কিংবা যোসেফ যার যখন ডাক পড়ত সে নিজেই এগিয়ে গিয়ে মিষ্টি লাঠির স্বাদ নিত।

চলবে...

এসএ/

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

Header Ad
Header Ad

নাটকীয়তা শেষে রাতে ফাইনালে মুখোমুখি রিয়াল-বার্সা

ছবি: সংগৃহীত

রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার মুখোমুখি লড়াই মানেই ফুটবল দুনিয়ায় বাড়তি উত্তেজনা। স্প্যানিশ ফুটবলের এই দুই মহারথীর লড়াই কেবল মাঠের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এতে মিশে আছে স্পেন ও কাতালুনিয়ার জাতিসত্ত্বার লড়াই এবং রক্তাক্ত গৃহযুদ্ধের ইতিহাসও।

এবারের কোপা দেল রে ফাইনালে (শনিবার দিবাগত রাত ২টা, বাংলাদেশ সময়) আবার মুখোমুখি হচ্ছে রিয়াল ও বার্সা। তবে এবারের লড়াইয়ে যোগ হয়েছে ভিন্ন মাত্রা। রেফারিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে রিয়াল মাদ্রিদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে অস্থিরতা। সেভিয়ায় ফাইনালের আগে নির্ধারিত অনুশীলন করেনি রিয়াল, সংবাদ সম্মেলনেও আসেননি কোচ ও খেলোয়াড়রা। এমনকি দুই ক্লাবের কর্মকর্তাদের আনুষ্ঠানিক নৈশভোজেও থাকছেন না রিয়াল প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ। গুঞ্জন উঠেছিল, রিয়াল হয়তো ফাইনাল বয়কটও করতে পারে। তবে শেষ পর্যন্ত ক্লাব কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা খেলবে।

এদিকে, বার্সেলোনার সামনে রয়েছে ট্রেবল জয়ের স্বপ্ন টিকিয়ে রাখার চ্যালেঞ্জ। লা লিগায় শীর্ষে থাকা বার্সা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালেও জায়গা করে নিয়েছে। কোপা দেল রে শিরোপা তাদের ট্রেবল যাত্রার প্রথম ধাপ হতে পারে।

 

ছবি: সংগৃহীত

বার্সার জন্য দুঃসংবাদ, ইনজুরির কারণে দলের নির্ভরযোগ্য স্ট্রাইকার রবার্ট লেভানডফস্কি এই ফাইনালে খেলতে পারবেন না। তার জায়গায় শুরুতে দেখা যেতে পারে ফেরান তোরেসকে। তবে দলের বাকিরা সুস্থ ও প্রস্তুত রয়েছেন। লিগের শেষ ম্যাচে অধিকাংশ মূল খেলোয়াড় বিশ্রামে থাকায় বার্সেলোনা কিছুটা সতেজ ভাবেই নামবে মাঠে।

রিয়াল মাদ্রিদেও রয়েছে ইনজুরি সমস্যা। দলের ফরাসি তারকা কিলিয়ান এমবাপে চোটে পড়েছিলেন আর্সেনালের বিপক্ষে ম্যাচে। শেষ মুহূর্তে তার ফিটনেস দেখে মাঠে নামানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে ডিফেন্ডার ফার্লান্দ মেন্ডি ফাইনালে থাকছেন না, এটা নিশ্চিত।

এখন পর্যন্ত সামগ্রিক এল ক্লাসিকোতে রিয়াল মাদ্রিদ এগিয়ে—১০৫ জয়। বার্সেলোনা জয় পেয়েছে ১০২ ম্যাচে। তবে কোপা দেল রে’র ইতিহাসে এগিয়ে আছে বার্সা। ৩৭ দেখায় বার্সা জিতেছে ১৬ ম্যাচ, রিয়াল ১৩টি। ৮ ম্যাচ ছিল ড্র।

তবে কোপা দেল রে’র ফাইনালে ৭ বার এল ক্লাসিকো অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে রিয়াল জিতেছে ৪ বার এবং বার্সা ৩ বার।

চলতি মৌসুমে দুই দলের দুই দেখায় দুটিতেই বার্সেলোনা জয়ী হয়েছে—লা লিগায় ৪-০ এবং সুপারকোপা দে এস্পানার ফাইনালে ৫-২ ব্যবধানে।

 

স্টেডিয়াম: দে লা কার্তুহা, সেভিল
সময়: বাংলাদেশ সময় শনিবার দিবাগত রাত ২টা

 

Header Ad
Header Ad

মাদকাসক্ত ছেলেকে ত্যাজ্য ঘোষণা করলেন বাবা

ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার মুরাদনগরে নাঈম সরকার (১৯) নামের এক যুবককে মাদকাসক্তির কারণে ত্যাজ্য ঘোষণা করেছেন তার বাবা মফিজুল ইসলাম। ছেলের মাদকাসক্তি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে তিনি এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন।

মফিজুল ইসলাম উপজেলার কোম্পানীগঞ্জের নগরপাড় এলাকার বাসিন্দা। তিনি বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) কুমিল্লা নোটারী পাবলিক কার্যালয়ে এক হলফনামার মাধ্যমে ছেলে নাঈমের সঙ্গে পারিবারিক, সামাজিক ও আর্থিক সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করেন।

হলফনামায় মফিজুল উল্লেখ করেন, নাঈম একাদশ শ্রেণির ছাত্র হলেও দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত। সে মদ, গাঁজা, ইয়াবাসহ বিভিন্ন নেশাজাত দ্রব্যে আসক্ত হয়ে পড়েছে। এতে পরিবারে প্রতিনিয়ত অশান্তি সৃষ্টি হচ্ছিল। গভীর রাতে বাড়ি ফেরা, মা-বাবার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা এবং নানা অনৈতিক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়েছিল নাঈম। পরিবারের মান-মর্যাদা রক্ষার স্বার্থে তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে মফিজুল ইসলাম বলেন, "সন্তানের এমন বিপথগামী আচরণে আমি অত্যন্ত মর্মাহত। বহু চেষ্টা করেও তাকে সঠিক পথে ফেরাতে ব্যর্থ হয়েছি। অবশেষে পরিবার ও সমাজের সম্মান রক্ষার্থে তার সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করতে বাধ্য হয়েছি।"

Header Ad
Header Ad

গরমে লোডশেডিং নিয়ে সুখবর দিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। ছবি: সংগৃহীত

দেশজুড়ে ক্রমাগত গরম বাড়ছে। সামনে তাপমাত্রা আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে লোডশেডিং ও ভোগান্তি বেড়ে যাওয়ার শঙ্কায় রয়েছে সাধারণ মানুষ। তবে এ নিয়ে আশার খবর দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

তিনি বলেন, "এবারের গরমে লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। আমরা সীমিত পর্যায়ে তা নিয়ন্ত্রণে রাখার পরিকল্পনা নিয়েছি। আমাদের প্রজেকশনে ১৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য রয়েছে। আশা করছি, অনেকটাই ম্যানেজ করতে পারবো।"

শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনের বিজয় হলে ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টারস বাংলাদেশ (এফইআরবি) আয়োজিত 'জ্বালানি সংকট উত্তরণের পথ' শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য রাখার সময় তিনি এসব কথা বলেন।

সেমিনারে উপদেষ্টা আরও জানান, লোডশেডিংয়ের ক্ষেত্রে শহর ও গ্রামের মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করা হবে। জ্বালানি আমদানি করে বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল রাখতে হবে। এলএনজি আমদানির ক্ষেত্রে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপে (পিপিপি) যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

সরকারের মেয়াদ স্বল্প হওয়ায় কাজের সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, "জ্বালানির ক্ষেত্রে যেকোনো কাজ সম্পন্ন করতে সময় লাগে। আমরা এমন কিছু হাতে নিচ্ছি না, যা সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে বকেয়া পরিশোধে। বিল পরিশোধ না করলে কোনো দেশ ব্যবসা করবে না।"

তিনি আরও জানান, আগামী দুই মাসের মধ্যে সিস্টেম লস ৫০ শতাংশ কমানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। লাইন লিকেজ ও গ্যাস চুরির বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন প্রকল্পে অপ্রয়োজনীয় ব্যয়ও কমিয়ে আনা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "আগামী বছর আর কোনো বকেয়া থাকবে না, শুধুমাত্র কারেন্ট পেমেন্ট দিতে হবে। ভর্তুকি বাড়বে না, বরং কমবে। আমরা যে সংকটের গহ্বরে পড়েছিলাম, সেখান থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছি।"

সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের বিষয়ে উপদেষ্টা জানান, বিট নিলামে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত অনুমোদন শেষে পুনরায় রি-টেন্ডার করা হবে বলেও তিনি আশ্বাস দেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

নাটকীয়তা শেষে রাতে ফাইনালে মুখোমুখি রিয়াল-বার্সা
মাদকাসক্ত ছেলেকে ত্যাজ্য ঘোষণা করলেন বাবা
গরমে লোডশেডিং নিয়ে সুখবর দিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা
পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের ক্রিকেটীয় সম্পর্ক ছিন্ন করা উচিত: সৌরভ গাঙ্গুলি
র‍্যাফেল ড্রতে ৯ কোটি টাকা জিতলেন দুই প্রবাসী বাংলাদেশি
৬২ জন পুলিশ সদস্য পাচ্ছেন বিপিএম ও পিপিএম পদক
সিন্ধুতে হয় পানি, না হয় ভারতীয়দের রক্ত বইবে: বিলাওয়াল ভুট্টো
অন্য নারীতে মজেছেন সৃজিত! মিথিলা কোথায়?
৪ মাসে কুরআনের হাফেজ হলেন ১০ বছরের অটিস্টিক শিশু আহমাদ
রাষ্ট্র সংস্কারের যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, তা যেন বেহাত না হয়: আলী রীয়াজ
১৪ ব্যাংকে ২৩৮ কোটি টাকা স্থানান্তর, যা বললেন বিসিবি সভাপতি
কাশ্মীর সীমান্তে ফের গোলাগুলি, মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তান সেনা
বাইরে থেকে ফিরেই ঠান্ডা গোসল? সাবধান! এই অভ্যাস ডেকে আনতে পারে বিপদ
কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তান-ভারত পাল্টাপাল্টি উত্তেজনা নিয়ে যা বললেন ট্রাম্প
রাঙামাটিতে সিএনজি-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ৫
রেফারির বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে রিয়াল, ফাইনাল ম্যাচ বয়কটের হুমকি
আইন উপদেষ্টাকে জড়িয়ে ভারতের গণমাধ্যমে মিথ্যা প্রতিবেদন, মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি
নিজ দেশেই বিমান হামলা চালালো ভারত, ‘অসাবধানতা’ বলছে বিমান বাহিনী
গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত আরও ৮৪ ফিলিস্তিনি
আইনি নোটিশ প্রসঙ্গে যা বললেন ডা. তাসনিম জারা