শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ২৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান

জ্যাক এবং পিয়েরেকে শুধু স্কুলই ওইসব আনন্দ দিতে পারত। তাদের সবচেয়ে ভালো লাগার বিষয়টা ছিল তারা বাড়ি থেকে দূরে আছে এই বোধটা। বাড়িতে অভাব আর অজ্ঞতা জীবন আরো বেশি কঠিন এবং বিষণ্ন করে তুলত। জীবন চারপাশ থেকে আটকাবস্থায় পতিত মনে হতো। দারিদ্র একপাশ থেকে টেনে তোলা যায় এমন একটা সেতুহীন আবদ্ধ দুর্গ।

তবে সবটাই এরকম ছিল তা নয়; জ্যাক নিজেকে সবচেয়ে দুর্ভাগাদের অন্যতম মনে করত, বিশেষ করে অবকাশের সময় তার নানি যখন জ্যাক ছোকরার অক্লান্ত জ্বালাতন থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য তাকে জাক্কার পার্বত্যাঞ্চলের মিলিয়ানার একটা হলিডে ক্যাম্পে পাঠিয়ে দিতেন। সেখানে থাকত আরো পঞ্চাশ জনের মতো বাচ্চার এক বিশাল সমাগম। বেশ কয়েকজন উপদেষ্টা থাকতেন। সেখানে তারা ডরমিটরিঅলা একটা স্কুলে থাকত। ভালো খাওয়া দাওয়া, আরামের ঘুম, খেলাধুলা কিংবা ঘুরে বেড়ানোর ব্যবস্থা ছিল। তাদের দেখাশোনার জন্য সুন্দর সেবিকারা ছিলেন। তবু এত কিছু সত্ত্বেও যখন সন্ধ্যা নেমে আসত, পর্বতের ঢালে ছায়াগুলো দ্রুত লম্বা হয়ে পড়ত, পর্বতে ঘেরা ছোট শহরটার বিশাল নৈঃশব্দের ভেতর পাশের কোনো এক সেনা ছাউনি থেকে ঘরে ফেরার তাগিদ জানিয়ে বিউগলের করুণ সুর বেজে উঠত, তখন ভ্রমণ করার মতো কোনো এলাকা থেকে শত কিলোমিটার দূরে বালক জ্যাক টের পেত তার ভেতরে পাখা বিস্তার করছে হতাশা। নীরবতার ভেতরেই মন হাহাকার করে উঠত তার সমস্ত ছেলেবেলার নিঃস্ব বাড়িটার জন্য।

না, স্কুল তাদের জন্য পারিবারিক জীবনের কষ্ট থেকে শুধু মুক্তির স্বাদই দিত না, বিশেষ করে এম বার্নার্ডের ক্লাস তাদের একটা মৌলিক ক্ষুধা মিটিয়েও থাকত। শিক্ষকের জন্য ক্ষুধাটা যতটা মৌলিক ছিল, ছাত্রদের জন্য ছিল তার চেয়ে আরো বেশি এবং সেটাই হলো কোনো কিছু আবিষ্কারের ক্ষুধা। তাদের অন্যান্য ক্লাসেও তারা অনেক কিছু শিখেছে। কিন্তু সেসব ক্লাসে তাদের অবস্থা ছিল যেন খাবার তৈরি করা হয়েছে, এবার গিলে রক্ষে করো। আর এম জারমেইনের ক্লাসে তারা প্রথম বুঝতে পারে, তাদের অস্তিত্ব আছে এবং তারাও উচ্চ তাৎপর্যের অধিকারী হতে পারে, জগৎ আবিষ্কারের যোগ্য হতে পারে। এমনকি তাদের শিক্ষক তাদেরকে যা পড়ানোর জন্য বেতন পেতেন শুধু সেগুলোর মধ্যে নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখেননি। তিনি সরলতার সঙ্গে তাদেরকে তার ব্যক্তিগত জীবনেও স্বাগত জানাতেন। তাদের সঙ্গেই তার ওই জীবনটা যাপন করতেন। তাদেরকে তার নিজের এবং তার দেখা শিশুদের বাল্যকাল সম্পর্কে বলতেন। তাদের সঙ্গে তার দর্শন ভাগাভাগি করে নিতেন।

তবে কখনওই নিজের মতামত তাদের ওপর চাপাতেন না। তার আরো অনেক সহকর্মীর মতো তিনিও যাজকীয় ব্যাপার স্যাপার পছন্দ করতেন না। তবে কোনো ধর্মের বিরুদ্ধে শ্রেণিকক্ষে কিছু বলতেন না। কারো বিশ্বাস কিংবা পছন্দের বিরুদ্ধেও কিছু বলতেন না। চৌর্যবৃত্তি, বিশ্বাসঘাতকতা, উগ্রতা এবং নোংরামির মতো যে সব বিষয়ে মোটেও কোনো যুক্তিতর্কের আবকাশ নেই সেসব অশুভ কাজ তিনি সর্বশক্তি দিয়ে ঘৃণা করতেন।

তবে যে যুদ্ধ তখনও সাম্প্রতিক ঘটনা সেই যুদ্ধ সম্পর্কে তাদেরকে বেশি বলতেন। দীর্ঘ চার বছর তিনি যুদ্ধ করেছেন। সৈনিকদের দুর্ভোগ, সাহস, ধৈর্য এবং যুদ্ধবিরতি চুক্তির আনন্দের কথা বলতেন। প্রতি পর্বের শেষে তাদের ছুটিতে পাঠানোর আগে এবং মাঝে মধ্যে পাঠ্যপরিকল্পনার ভেতর থেকে সময় বের করতে পারলে তিনি দরগেলির লেস ক্রয়েক্স দে বয়েস থেকে অংশ বিশেষ তাদের পড়ে শোনাতেন। তার ওই পড়ার মাধ্যমে জ্যাকের কল্পনার সামনে চমৎকারিত্বের দরজা খুলে যেত।

তবে মনে আছে, সেবার চমৎকারিত্বের জগতে যেন ভয় এবং দুর্ভাগ্য মিশে গিয়েছিল। অবশ্য তার অদেখা বাবাকে সে শুধু একটা তাত্ত্বিক সম্পর্কের মধ্যে এনেছে। তার শিক্ষক সমস্ত হৃদয় দিয়ে যে গল্পটা বলেছেন সেটা জ্যাক সমস্ত হৃদয় দিয়ে শুনেছে। সে গল্পের মধ্যেও এসেছে তুষার, তার কল্পনায় লালিত শীতকালের ছবি। তবে সেখানে সে দেখতে পেয়েছে কাদা জড়ানো ভারী পোশাক পরিহিত বিশেষ ধরনের মানুষদের। তারা অচেনা ভাষায় কথা বলে। তাদের মাথার ওপরে ছাদ হিসেবে পায় গোলা, আগুনের হলকা, গুলির বৃষ্টি। পিয়েরে এবং জ্যাক ক্রমবর্ধমান অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করত প্রত্যেকবার পড়ার জন্য। সে যুদ্ধ নিয়ে প্রায় সবাই কথা বলত।

এমনকি ডানিয়েল যখন মার্নের যুদ্ধ সম্পর্কে কথা বলত তখনও জ্যাক খুব মনোযোগ দিয়ে শুনত: ডানিয়েল বলেছে তাদের, মানে জুয়াভদের প্রথমে সম্মুখ সমরে নেওয়া হয়েছিল, তারপর একটা গিরিখাতের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তারাই ছিল সবার সামনে। তারা এগিয়ে যাচ্ছিল এবং হঠাৎ দেখতে পেল, তাদের সহযোদ্ধারা একজনের ওপর আরেকজন করে পড়ে যাচ্ছে। আর গিরিখাতের সমস্ত পাদদেশ রক্তে ভরে যাচ্ছে। অনেকের মুখ থেকে মা মা চিৎকার আর আর্তনাদ ভেসে আসছে। খুব ভয়ঙ্কর অবস্থা। ডানিয়েল কিভাবে বেঁচে এসেছিল সেটাই তার কাছে এক বড় বিস্ময়। সবাই বলত ওই যুদ্ধের স্মৃতি কখনও মুছে যাওয়ার নয়। যুদ্ধের স্মৃতি বালকদের জগতের সবকিছুর ওপর ছায়াপাত করত। অন্যান্য ক্লাসে যে সকল রূপকথার গল্প বলা হতো সেগুলোর চেয়ে বেশি টানত যুদ্ধের গল্পগুলো। তাদের মনের ভেতর যে সকল ধারণা থাকত সেগুলোর অবয়ব দান করত ওই গল্পগুলো। আর এম বার্নার্ড যদি পাঠ্যসূচির পরিবর্তন ঘটানোর জন্য ওই গল্পগুলো নিজের মাথার মধ্যে তুলে রাখতেন তাহলে তারা হতাশ হতো, ক্লান্ত বোধ করত।

তবে তিনি যুদ্ধের ভয়াবহ বর্ণনার কোনোটা আংশিক বদলে দিতেন মজার কিছুর মিশেল দিয়ে। তখন আফ্রিকার ওই শিশুরা অমুক তমুকের সঙ্গে এমনভাবে পরিচিত হয়ে যেত যেন তারাও শিশুদের নিজেদের জগতেরই বাসিন্দা। নিজেদের মধ্যে কথোপকথনের সময় তাদেরকে এমনভাবে উল্লেখ করত যেন যুদ্ধের মানুষেরা তাদেরই পুরনো দিনের বন্ধু এবং তাদের সামনেই রয়েছে। জ্যাকের এক মুহূর্তের জন্যও মনে হতো না যে, তারা সবাই যুদ্ধের সময়ে বেঁচে ছিল, এখন নেই। তার বরং মনে হতো, তারা এখনও বেঁচে আছে; তারা যুদ্ধের শিকার হয়েছে সেটা তার কল্পনায় আসতে চাইত না। বছরের শেষ দিনে যখন তারা বইটার শেষে পৌঁছে যেত সেদিন এম বার্নার্ড খুব নিচু স্বরে দয়ের মৃত্যুর কথা পড়ে শোনাতেন। নিজের স্মৃতি আর আবেগের মুখোমুখি হয়ে তিনি চোখ তুলে নীরব এবং বিহ্বল ক্লাসের দিকে তাকিয়ে প্রথম সারিতে বসা জ্যাককে দেখতেন: তার সারা মুখমণ্ডল অশ্রুতে প্লাবিত। দমকে দমকে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। তার ফোঁপানি যেন আর কখনও থামবে না। কোনো রকমে শোনা যায় এমন নিচু স্বরে তিনি বলতেন, শান্ত হও, বাছা। তারপর ক্লাসের দিকে পেছন ফিরে তিনি বইটা বাক্সে রেখে দিতেন।

এম বার্নার্ড বললেন, এক মিনিট, বৎস। এবার তিনি কষ্ট করে উঠে দাঁড়ালেন। খাঁচার শিকগুলোর ওপরে আঙুল ছোঁয়ালেন এবং ক্যানারি পাখিটা আরো জোরে ডেকে উঠল। তিনি বলে উঠলেন, আহ কাসিমির, আমরা ক্ষুধার্ত। এরপর তিনি রুমের অন্য পাশে অগ্নিকুণ্ডের কাছে রাখা স্কুল বালকের ডেস্কের কাছে গেলেন। একটা ড্রয়ার খুলে হাতড়াতে লাগলেন। তারপর আরেকটা খুলে কিছু একটা বের করলেন। জ্যাককে উদ্দেশ করে বললেন, এই যে, এটা তোমার জন্য। জ্যাক দেখল একটা বই, মুদি দোকানের কাগজে বাঁধাই করা, ওপরে কিছু লেখা নেই। বইটা খোলার আগেই জ্যাক বুঝতে পারল বইটা হল লেস ক্রয়েক্স দে বয়েস; এই কপিটাই তিনি সেদিন ক্লাসে পড়েছিলেন।

জ্যাক বলতে চাইল, না, না। এটা....। কথাগুলো আর শেষ পর্যন্ত বলা হলো না।

এম বার্নার্ড তার প্রবীণ মাথাটা ঝাঁকিয়ে বললেন, শেষের দিন তুমি কেঁদেছিলে। সেদিন থেকে বইটা তোমার হয়ে গেছে। তারপর তার হঠাৎ লাল হয়ে ওঠা চোখ আড়াল করার জন্য অন্যদিকে তাকালেন। ডেস্কের কাছে আবার এগিয়ে গিয়ে পেছন দিকে হাত আড়াল করে রেখে জ্যাকের দিকে ফিরলেন। একটা খাটো মোটা লাল রুলার ঝাঁকিয়ে হাসতে হাসতে জ্যাককে জিজ্ঞেস করলেন, এই ‘মিষ্টি লাঠি’টার কথা তোমার মনে আছে?

ও, হ্যাঁ, হ্যাঁ। আপনি এতদিনও এটা রেখে দিয়েছেন! জানেন তো, এখন এসব নিষিদ্ধ?

আরে রাখো তো। তখনও নিষিদ্ধ ছিল। তুমি নিজেই তো দেখেছ, আমি এই লাঠির ব্যবহার করেছি।

আসলেই জ্যাকের মনে আছে। এম বার্নার্ড শারীরিক শাস্তির পক্ষে ছিলেন। অবশ্য সচরাচর যে শাস্তি বেশি প্রচলিত ছিল সেটা হলো পরীক্ষায় অর্জিত নম্বর থেকে কিছুটা বাদ দিয়ে দেওয়া। তাতে ভুক্তভোগীর অবস্থান নিচে নেমে আসত। অপরাধের মাত্রা বেশি হয়ে গেলে তিনি অপরাধীকে অধ্যক্ষের কাছে পাঠিয়ে দিতেন।

এই কাজটা তার আরও অনেক সহকর্মীই করতেন। এছাড়াও তিনি আরেকটা প্রথা মেনে চলতেন; খুব শান্ত এবং হাসিখুশি স্বরেই বলতেন, আমার হতভাগা রবার্ট, আমাদের এখন ‘মিষ্টি লাঠি’র আশ্রয় নিতেই হচ্ছে। কেউ কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাত না। শুধু গোপনে কেউ কেউ মুখ টিপে হাসতে চেষ্টা করত হয়তো। মানব স্বাভাবের ধরনই এরকম: একজনের শাস্তিতে অন্যরা আনন্দ পায়। যাকে ডাকা হতো সে ফ্যাকাশে মুখে উঠে দাঁড়াত। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সে চেষ্টা করত ভয়ের ভাবটা লুকিয়ে রাখতে। ব্ল্যাক বোর্ডের কাছে যে টেবিলের পাশে এম বার্নার্ড দাঁড়িয়ে থাকতেন নিজের আসন ছেড়ে সেটার দিকে এগিয়ে যেতে যেতে কেউ কেউ অশ্রু আড়াল করার চেষ্টা করত। নিছক একটা প্রথা পালনের মতো মনে হলেও এর মধ্যে যেন কষ্ট দিয়ে আনন্দ লাভের একটা ছোঁয়া থাকত। রবার্ট কিংবা যোসেফ যার যখন ডাক পড়ত সে নিজেই এগিয়ে গিয়ে মিষ্টি লাঠির স্বাদ নিত।

চলবে...

এসএ/

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

Header Ad

গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের শ্রীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উদয়খালী গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

মৃত তিন শিক্ষার্থী হলেন- মোজাম্মেল হোসেন নাঈম (২৪), মোস্তাকিম রহমান মাহিন (২২) ও জোবায়ের আলম সাকিব (২২)।

জানা গেছে, শনিবার সকালে গাজীপুর মহানগরের বোর্ড বাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের প্রায় ৪৬০ জন শিক্ষার্থী বিআরটিসির ৬টি ডাবল ডেকার বাস ও ৩টি মাইক্রোবাসে করে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উত্তর পেলাইদ গ্রামের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামীণ আঞ্চলিক সড়ক ধরে রিসোর্টের উদ্দেশ্যে যাওয়ার সময় উত্তর পেলাইদ গ্রামের উদয়খালী বাজারে পৌঁছালে বিআরটিসির ডাবল ডেকার একটি বাস পল্লী বিদ্যুতের তারের স্পর্শে আসে। এ সময় বাসটি বিদ্যুতায়িত হলে কয়েকজন শিক্ষার্থী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। তাদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক জাকিউল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, তিনজনকেই মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। আহত সংখ্যা এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি। আমরা জরুরি বিভাগে যাচ্ছি।

Header Ad

কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া

ছবি: সংগৃহীত

মিল্ক বিউটিখ্যাত দক্ষিনি অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়া নতুন বছরে তার জীবনের একটি বিশেষ অধ্যায়ে পা রাখতে যাচ্ছেন। খলচরিত্র করে আলোড়ন তোলা অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে তার প্রেমের গুঞ্জন চলছিল অনেক দিন ধরেই। তবে এ নিয়ে কেউই মুখ খোলেননি। এবার তাদের সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন তামান্না। এমনকি ২০২৫ সালে সাতপাকে বাঁধা পড়ার সম্ভাবনা আছে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমের এক প্রোমোশনাল ইন্টারভিউতে তামান্না তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে জানান, প্রেমের সম্পর্কের জন্য জীবনে দুবার হৃদয় ভেঙেছে তার। সেই সময়টা তামান্নার জন্য খুবই ভয়াবহ ছিল।

তিনি আরও জানান, তিনি খুব কম বয়সে একজন ছেলের সঙ্গে প্রথম ভালোবাসায় জড়িয়েছিলেন এবং তার দ্বিতীয় সম্পর্কটি ছিল তার অভিনয় ক্যারিয়ারের শিখরে থাকা অবস্থায়। তবে সে সময় তিনি অনুভব করেন যে, সেই ছেলে তার সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের জন্য সঠিক ব্যক্তি নয়।

তবে এত কিছুর পরও বাহুবলিখ্যাত তামান্না প্রেমিকের নাম প্রকাশ করেননি। এর আগে গুঞ্জন ছিল যে, তিনি ভারতীয় অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে ডেট করছেন। পাপারাজ্জিদের ক্যামেরায় বহুবার ফ্রেমবন্দি হয়েছেন তারা। যদিও নিজেদের এ সম্পর্ক আড়ালে রাখতে বদ্ধপরিকর দুজনই। এখন দেখার অপেক্ষা তামান্না জীবনসঙ্গী হিসেবে কাকে বেছে নেন।

সবশেষ তামান্না ভাটিয়াকে আইটেম গার্ল হিসেবে দেখা যায় অমর কৌশিক পরিচালিত ‘স্ত্রী ২’ সিনেমায়। এ সিনেমায় আরও অভিনয় করেন রাজকুমার রাও, শ্রদ্ধা কাপুর, পঙ্ক ত্রিপাঠিসহ আরও অনেকে।

Header Ad

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...

ছবি: সংগৃহীত

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকার বিনিময়ে নয় মাসের শিশু সন্তানকে দত্তক দেন শরীফা খাতুন নামে মানসিক ভারস্যমহীন এক মা। বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ওই নবজাতককে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশের সহায়তায় ওই শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফেরত দেন।
মানসিক ভারসাম্যহীন নারী শরীফা খাতুন বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের জেমজুট মুসলিমবাগ এলাকায় তিন সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালান।

প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যরা জানান, গত এক বছর আগে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় শরীফা খাতুনের। এর পর সন্তানদের নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে চলত তার পরিবার।

গত মঙ্গলবার নিজের ৯ মাসের কন্যা সন্তানকে পঞ্চগড় পৌরসভার দক্ষিণ তেলিপাড়া এলাকায় একটি হলুদ খেতে রেখে ভিক্ষা করতে যান শরীফা খাতুন। এ সময় শিশুটিকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে স্থানীয় রুনা আক্তার নামে এক নারী; একইসঙ্গে শরীফাকেও নিজ বাড়িতে নেন তিনি। রুনা নামে ওই নারীর নিজ সন্তান না থাকায় শিশুটিকে দত্তক নিতে চাইলে, ৫০০ টাকার বিনিময়ে রেখে চলে যান শরীফা।

এরপর চার দিন পর অবশেষে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় নিজ পরিবারের কাছে ফিরেছে শিশুটি। বর্তমানে শিশুটিকে দেখভাল করছেন মানসিক ভারসামহীন শরীফার ১৬ বছরের বড় ছেলে নয়ন।

এ বিষয়ে শরীফার ছেলে নয়ন ইসলাম বলেন, গত চার দিন আগে মা বোনকে নিয়ে হঠাৎ পঞ্চগড়ে যান। পরে একসময় বাড়িতে একাই এসে ঘরে তালা লাগিয়ে বন্দি অবস্থায় থাকতে শুরু করেন। বোন কোথায় তা জানতে চাইলে কোনো কিছুই জানাচ্ছিলেন না।

পরে অনেক কৈশলে বোনের অবস্থান জানতে পারি। এরপর সেই বাড়িতে গিয়ে বোনকে ফেরত চাইলে তারা দিতে অস্বীকার করেন। আরও জানতে পারি মা বোনকে নেবেন না বললে তারা ৫০০ টাকা মাকে খেতে দিয়ে একটা কাগজে স্বাক্ষর করে নেন। শুক্রবার সাংবাদিক ও পুলিশ এসে তদন্ত করে আমার বোনকে আনতে নির্দেশ দিলে মাকে সঙ্গে নিয়ে বোনকে বাড়িতে নিয়ে আসি।

স্থানীয় মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অনেক আগে থেকে ওই নারীকে দেখছি। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে পরিবার চালান। তবে কয়েকদিন আগে নিজের সন্তানকে মানুষের কাছে দিয়ে প্রায় পাগল হয়ে বেড়াচ্ছিলেন।

কাজলা নামে স্থানীয় এক নারী বলেন, সকালে শরিফা আমার কাছে এসে আমার পা জড়িয়ে ধরেছেন আর বলেছেন আপু যেভাবেই পারো আমার মেয়েকে এনে দাও।

প্রতিবেশীরা বলেন, স্বামী না থাকায় পরিবারটা চালাতে শরীফা খাতুন ভিক্ষা করতেন। এর মাঝে এমন কাণ্ড ঘটে তিনি পাগল হয়ে গেছেন। তার তিনটা সন্তান। একটা ছেলে ও দুটি মেয়ে। এদের কি হবে আমরা জানি না। তবে সরকারি সহায়তা পেলে তাদের গতি হতো।

এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, আগের বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। খবর পাওয়ার পর পঞ্চগড় সদর থানার ওসিকে জানানো হয়। বিষয়টি পুলিশের হস্তক্ষেপে সুষ্ঠু সমাধান করে ভারসাম্যহীন নারীর কাছে তার বাচ্চা ফেরত দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, যেহেতু ওই নারীর বাড়ি বোদা উপজেলায়, সেখানকার ইউএনওকে জানিয়ে সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান
বেনাপোলে সীমান্ত থেকে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল উদ্ধার
পুলিশ-অটোরিকশা চালক সংঘর্ষ, ঢাকা-পদ্মা সেতু ট্রেন চলাচল বন্ধ
ভারতীয় সাবমেরিনের সঙ্গে মাছ ধরা নৌকার সংঘর্ষ, নিখোঁজ ২
সংসার ভাঙার দুদিন পরই সুখবর দিলেন এ আর রহমান
ঢাকায় পৌঁছেছেন বাইডেনের বিশেষ প্রতিনিধি
আ.লীগকে নির্বাচনের সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে যা বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ