সোমবার, ১৩ মে ২০২৪ | ৩০ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

জীবন সংগ্রামে সফলতার দেখা পেল দেবহাটার ৫ নারী

জীবন সংগ্রামে সমাজ, পরিবারের নানা বাধাঁ কাটিয়ে সফলতার মুখ দেখেছেন দেবহাটার ৫ নারী। তৃণমূল থেকে উঠে আসা এসব নারীদের ৫টি ক্যাটাগরিতে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়িত ‘‘জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ’’ শীর্ষক কর্মসূচীর আওতায় খুঁজে বের করা হয়েছে। এসব নারীদের জীবনে রয়েছে আলাদা আলাদা জীবন কাহিনী। তাদের সেই সংগ্রামের কাহিনী তুলে ধরা হলো।

জীবন চলার পথ মসৃণ নয়, আসে নানান বাঁধা-বিপত্তি। সাহসী মানুষ এসব বাধা অতিক্রম করে আত্মপ্রত্যয়ের উপর ভর করে এগিয়ে যায় এবং সফলতা বয়ে আনে নিজের জীবনে। পাশাপাশি যুক্ত হয় সামাজিক কাজে। অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠে অন্যদের জন্য। এমনই একজন নারী জি. এম স্পর্শ। ১৯৯৩ সালে জেলার আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা ইউনিয়নের শ্বেতপুর গ্রামে এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ৯ম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত অবস্থায় মাত্র ১৬ বছর বয়সে বিয়ে হয়। পরে স্বামীর সহযোগিতায় এইচ.এস.সি পাশ করেন তিনি। পরীক্ষার কয়েক মাস পরেই তিনি প্রথম সন্তানের (কন্যা সন্তান) মা হন। যে কারণে অনেক ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তিনি পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারেননি।

২০১৯ সালে স্বামী ও পরিবারের সহযোগিতায় জি.এম স্পর্শ উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি। নির্বাচনে জয়লাভ করার পর তার আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে যায়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালে উপজেলা গভর্ন্যান্স ডেভলপমেন্ট প্রজেক্টের ( ইউজিডিপি) সহায়তায় স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক নারী উন্নয়ন ফোরাম সংক্রান্ত গাইড লাইনের আলোকে তিনি উপজেলা নারী উন্নয়ন ফোরাম গঠন করেন। একই সাথে নারী উন্নয়ন ফোরামকে টেকসই করার লক্ষে উপপরিচালকের কার্যালয়, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, সাতক্ষীরা থেকে ফোরামের নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন।

এই নারী উন্নয়ন ফোরামের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত নারী সদস্যদের নিয়ে সমাজে নারীর ন্যায্য অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা এবং নেতৃত্বের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে পরিষদে তাদের ভূমিকা আরও জোরালো করা, নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে কাজ করা এবং নারী নেতৃত্ব বিকাশের উপযোগী কার্যক্রম গ্রহণ বিষয়ে নারীদের উজ্জীবিত করছেন/পরামর্শ দিচ্ছেন জি.এম স্পর্শ। এ ছাড়াও তার নারী উন্নয়ন ফোরামের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক প্রতি বছর যে বরাদ্দ পেয়ে থাকেন সেটা দিয়ে তিনি দেবহাটা উপজেলার সকল মাধ্যমিক বিদ্যালয়/ মাদ্রাসার কিশোরীদের প্রজনন স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণ, বাল্যবিবাহ, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে উঠান বৈঠক, স্কুলে অবহিতকরণ সভা ও নারী জন প্রতিনিধিদের দক্ষতা বিকাশে ব্যয় করছেন। তা ছাড়াও উক্ত বরাদ্দকৃত টাকা থেকে দেবহাটা উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের দুঃস্থ-অসহায় নারী ও শিশুদের চিকিৎসা ও শিক্ষায় ব্যয় করছেন তিনি।

এসবের বাইরেও করোনাকালে নিজস্ব অর্থায়নে দরিদ্র অসুস্থ মানুষের চিকিৎসার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে যাওয়া, খাদ্য বিতরণসহ মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা, নিজস্ব অর্থায়নে বিভিন্ন মাদ্রাসার ছাত্রদের মাঝে কম্বল বিতরণ করা এবং উপজেলা পরিষদের সম্মানীর টাকা দিয়ে দরিদ্র মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করাসহ বিভিন্ন সেবামূলক কাজে অবদান রেখে চলেছেন তিনি।

অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী ফুলজান বিবি। তিনি রত্নেশ্বপুর গ্রামের রায়হান হোসেনের স্ত্রী। প্রায় ২২ বছর পূর্বে তার বিয়ে হয়। জানা গেছে, সেই সময় তার অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে তিনবেলা পেট ভরে খাওয়া হতো না। পরপর তার দুটি সন্তান হয়। কিন্তু শিশুদের খরচ চালোনোর মতো সামর্থ্য ছিল না তাদের।

এক পর্যায়ে খরচ সামলাতে বাড়িতে গরু, ছাগল ও হাঁস-মুরগি পালন করা শুরু করেন ফুলজান বিবি। তাতে যে টাকা আয় হতো তাতেও সংসার চলত না। তখন তিনি সেলাইয়ের কাজ শুরু করেন। পরে এনজিও থেকে লোন নিয়ে স্বামীকে ডেকোরেটরের ব্যবসা ছোট থেকে বড় আকারে রূপ নিতে শুরু করে। এতে করে তাদের অবস্থার পরিবর্তন হতে শুরু করে। তাদের পূর্বের অবস্থার পরিবর্তন হওয়ায় এখন সমাজের মানুষের কাছে সম্মাননীয় ব্যক্তি হিসাবে সম্মান পায়। বর্তমানে ফুলজান বিবির পরিবার অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জন করেছে।

নির্যাতনে বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন জীবন শুরু করেছেন আরিফা পারভিন। তিনি জগন্নাথপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের কন্যা।

জানা গেছে, গত ২ বছর আগে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার হাড়দ্দহা গ্রামে বিয়ে হয় আরিফার। বিয়ের পর থেকে কিছু দিন স্বামীর সংসারে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ভালো ছিল। কয়েক মাস যাওয়ার পর তার স্বামী বিভিন্ন নারীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে যায়। এমনকি বিয়ে করা স্ত্রীকে সহ্য করতে পারত না। এক সময় কথায় কথায় শারীরিকভাবে নির্যাতন শুরু করে তার স্বামী। অনেক সহ্য করার পরেও যখন তার স্বামীর অভ্যাস পরিবর্তন হয়নি তখন শ্বশুর বাড়ির পরিবারের সকলকে নির্যাতনের বিষয়টি জানান তিনি। জানানোর পরেও তারা তার অভ্যাসের পরিবর্তন ঘটাতে পারিনি।

স্বামীর অভ্যাস পরিবর্তনের চেষ্টা করে যখন ব্যর্থ হন তখন ব্র্যাক সামাজিক ক্ষমতায়ন ও আইনি সুরক্ষা কর্মসূচির অফিসে অভিযোগ করেন আরিফা। ব্র্যাক অফিসে শালিসের মাধ্যমে মিমাংসার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় তারা। এক পর্যায়ে দেনমোহর ও ভরনপোশন বাবদ মাত্র ৩৫ হাজার টাকা নিয়ে তালাক দেন স্বামীকে। সেই টাকা দিয়ে পানির ফলের ব্যবসা শুরু করেন আরিফা। সেইসঙ্গে কিছু জমি বন্ধক রেখে ফসলের চাষ শুরু করেন। এসবের পাশিপাশি একটি কারখানার ব্যাগ তৈরির কাজে যোগ দেন তিনি। সেখান থেকে যে টাকা উপার্জন হতো তা দিয়ে নিজের ও পরিবারের আর্থিক খরচ চালাতে সক্ষম হন।

শ্বশুরবাড়ির লোকজনের উপেক্ষা, স্বামীর নির্যাতন, অসহযোগিতা এত কিছু আরিফাকে থামিয়ে রাখতে পারেনি। নিজের কাজের প্রতি নিষ্ঠা, পরিশ্রম, সততা ও একাগ্রতা তাকে সাফল্যে পৌঁছাতে সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে। সত্যিকার অর্থে নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করার যে অভিপ্রায় সেটা অর্জন করেছেন তিনি।

সফল জননী নারী পারভিন আক্তার। তিনি মাঝ-পারুলিয়া গ্রামের আতিয়ার রহমানের স্ত্রী।

পারভিন আক্তার জানান, তার স্বামী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। দেশ স্বাধীনের পরে তিনি কিছুই করতেন না। স্বামীর তেমন জমি জায়গাও ছিল না। আমার বিয়ের পর আমাদের ৩টি ছেলে সন্তান জন্মগ্রহণ করে। স্বামী ও ৩টি সন্তান নিয়ে সংসার খুব ভালো চলছিল না। সব বাধা উপেক্ষা করে ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষের মতো মানুষ করার সিদ্ধান্ত নিলাম। সংসার ও ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ কোনোভাবে নিজেই চালাতে লাগলাম।

তিনি আরও জানান, ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ যোগানোর জন্য বাড়িতে হাঁস-মুরগি ও গাভি পালন শুরু করলাম। পালিত পশু-পাখি থেকে পাওয়া মাংস ও ডিম ছেলে-মেয়েদের চাহিদার পাশাপাশি বিক্রি করে তাদের বই, খাতা, কলম ও পড়া লেখার খরচ যোগাতাম। ছেলে মেয়েরা সবাই ছিল মেধাবী ও পরিশ্রমী । স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে সাফল্যের সাথে পড়াশোনা করে। বর্তমানে ৩ ছেলে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সবাই সর্বোচ্চ মেধার স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হয়। আমার বড় ছেলে তাহাজাত হোসেন (হিরু) সাউথ ইস্ট ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী ভাইস প্রেসিডেন্ট, মেঝ ছেলে শাহাদাত হোসেন (বিরু) মেহেরপুর জেলা আনসার কমান্ডার। ছোট ছেলে ইমদাদ হোসেন (মিথ) ঢাকা পলিটেকনিক কলেজের প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাদেরকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করেছি। আমার দেখা দেখি অন্য নারীরাও তাদের সন্তানদেরকে বিদ্যালয়মুখী করার জন্য আগ্রহী হচ্ছেন ।

শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারী তুতিয়া খাতুন। তিনি বটিয়াঘাটা থানার নারায়নখালী গ্রামে ১৯৬৪ সালে মৃত আবু বকর শেখ ও নুরজাহানা বেগমের কোল আলোকিত করে পৃথিবীতে আসেন।

তুতিয়া খাতুন তার জীবন সংগ্রাম নিয়ে বলেন, আমার পিতা একজন বিশিষ্ট বস্ত্র ব্যবসায়ী। মাতা ছিলেন একজন গৃহিনী। আমার পিতা তৎকালীন সময়ে ইউপি চেয়ারম্যান ছিলেন। আমি ছোট বেলা থেকেই পড়ালেখায় ভালো ফলাফল অর্জন করে চলছিলাম। উপযুক্ত বয়সে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। সেই থেকে আমার উপরে এবং শিক্ষা জীবনে চরম বাধা বিপত্তি আসে। অনেক বাধা বিপত্তির মধ্যে দিয়ে স্বামীর একান্ত প্রচেষ্টায় মেমোরিয়াল সিটি কলেজ খুলনাতে বিজ্ঞান শাখায় ১ম বর্ষে ভর্তি হই। সেখানে থেকে ১৯৮৩ সালে বিজ্ঞান শাখা থেকে ২য় বিভাগে উত্তীর্ণ হই। সেখানেও আমি বিভিন্ন রিসাইটেশনের সাথে জড়িত থাকি এবং পুরুস্কার পেয়েও থাকি। এমন মুহূর্তে আমার একটি পুত্র সন্তান হয়, তাকে নিয়ে আমি বেশ কষ্টেও লেখাপড়া করি। ১৯৮৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বি.কম সম্মান শ্রেণিতে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ভর্তি হই এবং ১৯৮৬ সালে বি.কম সম্মান ব্যবস্থাপনা বিষয়ের উপর ডিগ্রি লাভ করি। সে সময় আমার দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম হয়। এত কষ্ট সত্ত্বেও আমি ১৯৮৭ সালে এম কম শেষ বর্ষে ভর্তি হই। সেখান থেকে এম কম ব্যবস্থাপনা বিষয়ের উপরে ডিগ্রি লাভ করি। এরপর ১৯৯৩ সালে কলারোয়ার শেখ আমানুল্লাহ ডিগ্রি কলেজে ব্যবস্থাপনা বিষয়ের প্রভাষক পদে নিয়োগ হয়।

তিনি আরও বলেন, আমার স্বামীর বাড়ি দেবহাটার সখিপুর হওয়ায় প্রতিদিন ৭২ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে আমাকে আমার কর্মস্থলে যেতে হতো। সংসারের সব কাজ শেষ করে সময়মতো কর্মস্থলে উপস্থিত হতাম। নির্দিষ্ট কয়েক বছর চাকরির পরে সহকারী অধ্যাপক পদে উপনীত হই। বর্তমানে ওই কলেজে যথেষ্ট সততা ও কর্মদক্ষতার সাথে (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যক্ষ পদে নিয়োজিত আছি।

তুতিয়া খাতুন বলেন, বর্তমানে আমি স্বচ্ছল ও স্বাচ্ছন্দময়ী একজন নারী। আমি আমার কর্মস্থলে যথেষ্ট সুনামের সাথে নিয়োজিত আছি।

এসআইএইচ

Header Ad

একসঙ্গে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে মা পেলেন জিপিএ ৪.৫৪, মেয়ে ২.৬৭

নুরুন্নাহার বেগমের সঙ্গে মেয়ে নাসরিন বেগম। ছবি: সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নে মা ও মেয়ে একসঙ্গে এসএসসি পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হয়েছেন। মা চাতলপাড় ইউনিয়নের ১,২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত সদস্য (মেম্বার) নুরুন্নাহার বেগম (৪৪)। ফলাফলের এমন খবর জেনে বেশ খুশি তিনি।

এদিকে মা ও মেয়ের একসঙ্গে পাস করার ঘটনা এলাকায় বেশ আলোচনা সৃষ্টি করেছে। সবাই ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বার নুরুন্নাহার বেগমের প্রশংসা করছেন। নুরুন্নাহারের পরিবারেও বইছে আনন্দের বন্যা। স্বজনরা ছুটে আসছেন তার বাড়িতে।

প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষায় (কারিগরি শাখা) ৪.৫৪ জিপিএ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। নুরুন্নাহারের মেয়ে নাসরিন বেগমও এবার মানবিক বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় ২.৬৭ জিপিএ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে।

তারা উভয়েই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নের চাতলপাড় ওয়াজউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। নুরুন্নাহার বেগম ১নং চাতলপাড় ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য।

নিজের সাফল্যের বিষয়ে নুরুন্নাহার বেগম যুগান্তরকে জানান, আমার ইচ্ছা ছিল লেখাপড়া করব। আমি দেখেছি একজন মানুষের বিশেষ করে একজন নারীর লেখাপড়ার খুব প্রয়োজন। এবার আমি আর আমার মেয়ে উভয়ই এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছি।

তিনি আরও জানান, একজন নারী সংরক্ষিত সদস্য হিসেবে আমার অনেক দায়িত্ব রয়েছে। লেখাপড়া ছাড়া সে দায়িত্ব পালন করাও কঠিন।

মায়ের এমন অর্জনে মেয়ে নাসরিন বেগম জানান, আমার মায়ের সাফল্যে আমি অনেক খুশি। মা আমার থেকেও জিপিএ বেশি পেয়েছে। এটা অনেকের জন্য অনুপ্রেরণার বিষয়।

চাতলপাড় ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. ওমর আলী বলেন, একজন মানুষের কতটুকু আগ্রহ থাকলে এ বয়সে মেয়ের সঙ্গে পড়াশোনা করে। নুরুন্নাহার ঘরে বাহিরে সব জায়গায় সমানতালে অবদান রেখে যাচ্ছেন। আমাদের সমাজের জন্য নুরুন্নাহার বেগম অনন্য দৃষ্টান্ত।

ইউক্রেনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় রাশিয়ায় নিহত ১৫

ছবি: সংগৃহীত

ইউক্রেনের ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় রাশিয়ায় ১৫ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও ২০ জন। ক্ষেপণাস্ত্রটি রাশিয়া গুলি করে ফেলে দেওয়ার পর সেটির একটি টুকরোর আঘাতে একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকের অংশবিশেষ ধসে পড়লে ঘটনা ঘটে।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন রুশ কর্মকর্তারা।

রোববার রাশিয়ার বেলগোরোদ অঞ্চলে ঘটনাটি ঘটেছে।

এটি সীমান্তের নিকটবর্তী বেলগোরোদ অঞ্চলে ইউক্রেনের চালানো অন্যতম প্রাণঘাতী হামলা।

রাশিয়ার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইউক্রেন এদিন ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।

ঘটনাস্থল থেকে আসা ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, ওই ভবনের অন্তত ১০টি তলা ধসে পড়ছে। পরে জরুরি বিভাগের কর্মীরা যখন জীবিতদের খোঁজে ধ্বংসস্তূপের মধ্যে তল্লাশি চালাচ্ছিলেন, তখন ভবনের ছাদটি ধসে পড়ে। লোকজনকে প্রাণ বাঁচাতে ছুটে সরে যেতে দেখা যায়, আর তাদের পেছনে কংক্রিটের ভাঙা টুকরো পড়তে থাকে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ০৮৪০ জিএমটিতে অন্তত ১২টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে হামলাটি চালানো হয়। এটিকে ‘আবাসিক এলাকায় চালানো সন্ত্রাসী হামলা’ বলে অভিহিত করেছে তারা। ধ্বংস করে দেওয়া একটি তোচকা-ইউ ক্ষেপণাস্ত্রের টুকরাগুলোর আঘাতে বেলগোরোদ শহরের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়টি।

সোমবার ভোররাতে রাশিয়ার জরুরি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ ঘটনায় ১৫ জন নিহত হয়েছেন।

রাশিয়ার বার্তা সংস্থাগুলো জানিয়েছে, ২০ জন আহত হয়েছে এবং একটি শিশুসহ বেশ কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন।

জরুরি বিভাগের কর্মীরা যখন ধ্বংসস্তূপের মধ্যে তল্লাশি চালাচ্ছিলেন তখনো রকেট হামলার সাইরেন বাজছিল।

ইউক্রেইন ও রাশিয়া- উভয় দাবি করে আসছে তারা বেসামরিকদের লক্ষ্যস্থল করে না।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া প্রতিবেশী ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু করে। তারপর থেকে দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ নিহত, লাখ লাখ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল ঘোষণা মঙ্গলবার দুপুরে

ছবি: সংগৃহীত

সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে আসলো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা। আগামীকাল ১৪ মে, মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২ টায় আনুষ্ঠানিকভোবে ঘোষণা হবে টি-২০ বিশ্বকাপের বাংলাদেশ দল। আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ জাতীয় দলের লাল-সবুজ জার্সি গায়ে কোন ১৫ জন মাঠে নামবেন? তাদের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা হবে এ সময়।

সোমবার (১৩ মে) বিসিবি মিডিয়া ম্যানেজার ও বিশ্বকাপে জাতীয় দলের টিম অপারেশন্স ম্যানেজার রাবিদ ইমাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এবারের বিশ্বকাপ শুরুর আগে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লাইট ধরবে শান্তরা। তাই ধারনা করা হচ্ছিলো সোমবার স্কোয়াড ঘোষণা হতে পারে।

এদিকে ইনজুরিতে পড়েছেন দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য পেসার তাসকিন আহমেদ। চতুর্থ ম্যাচে বোলিংয়ের সময় পাঁজরের পেশিতে যে টান পড়েছিল তার।

বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, তাসকিনের রিপোর্ট এখনো হাতে পাইনি। পেলে বিস্তারিত জানানো হবে। রিপোর্ট না দেখা পর্যন্ত আসলে বলা যাচ্ছে না কি অবস্থা।

এ ব্যাপারে রোববার বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেন, সোমবার সকালে রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর দেখতে হবে ওর সেরে উঠতে কত দিন লাগতে পারে। এ ধরনের চোটে সাধারণত দুই থেকে তিন সপ্তাহ বিশ্রামে থাকতে হয়। দুই সপ্তাহ বা তিন সপ্তাহ হলে তখন কী করা হবে, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আছে। দরকার হলে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলবো। যদি ঠিক করা যায়, তাহলে এক জিনিস; আর দেরি করতে হলে অন্য সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

এদিকে এক মে ছিল আইসিসির কাছে দল পাঠানোর শেষ সময়। প্রকাশ না করলেও তালিকা বিসিবি সময়মতো পাঠিয়ে দিয়েছে। তবে আগামী ২৫ মে পর্যন্ত কোনো কারণ ছাড়াই বিশ্বকাপ স্কোয়াডে পরিবর্তন আনতে পারবে সংশ্লিষ্ট বোর্ড। হয়তো এই সুযোগটাই নিয়েছিল বিসিবি।

এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ‘ডি’ গ্রুপে রয়েছে বাংলাদেশ, যেখানে তাদের সঙ্গে রয়েছে শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ আফ্রিকা, নেপাল ও নেদারল্যান্ডস।

সর্বশেষ সংবাদ

একসঙ্গে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে মা পেলেন জিপিএ ৪.৫৪, মেয়ে ২.৬৭
ইউক্রেনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় রাশিয়ায় নিহত ১৫
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল ঘোষণা মঙ্গলবার দুপুরে
চূড়ান্ত রায়ের আগে ফাঁসির আসামিকে কনডেম সেলে রাখা যাবে না: হাইকোর্ট
উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হেড মাঝিকে গুলি করে হত্যা
ধর্ম নিয়ে কটূক্তি, জবি শিক্ষার্থী তিথি সরকারের ৫ বছর কারাদণ্ড
শূন্য রানে আউট হয়েও বিশ্বরেকর্ড গড়লেন বাবর আজম
স্পেনে সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশি যুবক নিহত
আওয়ামী লীগ পালানোর দল নয়: ওবায়দুল কাদের
একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন শুরু হতে পারে ২৬ মে
রাজধানীতে ২৩ জন গ্রেপ্তার
এসএসসি পাস করেছে বিদ্যালয়ের একমাত্র পরীক্ষার্থী রুবিনা
আবারও সীমান্তে বিএসএফের গুলি, হাসপাতালে বাংলাদেশী যুবক
আবারও দুঃসংবাদ দিল আবহাওয়া অফিস
মালয়েশিয়ায় ২৭ বাংলাদেশী অভিবাসী আটক
রাতেই কুবুবদিয়ায় পৌঁছাবে এমভি আবদুল্লাহ
সড়ক দুর্ঘটনায় অভিনেত্রীর মৃত্যু
এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জ শুরু, চলবে ১৯ মে পর্যন্ত
হাসপাতাল চত্বরে মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ১
সৌদি পৌঁছেছেন ১২ হাজার ৬৪৯ হজযাত্রী