‘২০২৬ সালেই বাংলাদেশকে এলডিসি থেকে উত্তরণ করা হবে’

ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। বৃহস্পতিবার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানান সরকার প্রধানের প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ব্রিফিংকালে তিনি জানান, উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০২৬ সালেই বাংলাদেশকে এলডিসি থেকে উত্তরণ করা হবে। এজন্য আসন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। এর ফলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের মর্যাদা আরও বৃদ্ধি পাবে।
এর আগে, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার বলেছিল যে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পরিসংখ্যান নিয়ে কারসাজি করা হয়েছে এবং বাংলাদেশ ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করবে কি না তা নিয়ে তারা ‘ভাবছে’। অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরীও বলেছিলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণের সময় পিছিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছে সরকার।
তবে একদিনের ব্যবধানেই সরকার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ঘোষণা দেয়। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ১৯৭৫ সাল থেকে জাতিসংঘের এলডিসি তালিকায় ছিল এবং ২০১৮ সালে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের প্রাথমিক যোগ্যতা অর্জন করে।
বাংলাদেশের মাথাপিছু জাতীয় আয় বর্তমানে ২,৭৪৯ ডলার, যা উন্নয়নশীল দেশের যোগ্যতা অর্জনের প্রয়োজনীয় আয় ১,২৩০ ডলারের চেয়ে অনেক বেশি। মানব সম্পদ সূচকে ২০১৮ সালে বাংলাদেশের পয়েন্ট ছিল ৭২, যা উন্নয়নশীল দেশের যোগ্যতা অর্জনের মানদণ্ড ৬৪-এর চেয়ে বেশি।
২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৬তম বৈঠকে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সুপারিশ করা হয়। নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে ২০২৪ সালের মার্চে অনুষ্ঠিত সিডিপির বৈঠকে জানানো হয়, বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যা টানা তিনটি মূল্যায়নে সব সূচকে পাস করেছে।
উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের ফলে ২০২৬ সালের পর ইউরোপের রপ্তানি বাজারে শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা আর পাওয়া যাবে না। তবে, অন্তর্বর্তী সরকার এলডিসি থেকে উত্তরণে আসা চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলার জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছে।
