বাম্পার ফলনেও লোকসানের মুখে আলুচাষীরা

ছবি: সংগৃহীত
এ বছর আলুর বাম্পার ফলন হলেও দাম কমে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। এক একর জমিতে আলু চাষে কৃষকের খরচ হয়েছে প্রায় দুই লাখ টাকা। তবে বাজারদর অনুসারে তারা দেড় লাখ টাকাও উঠাতে পারছেন না। এতে প্রতি একরে কৃষকের ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা এবং প্রতি কেজিতে লোকসান হচ্ছে প্রায় ৭-৮ টাকা।
কৃষকরা জানাচ্ছেন, এবারে আলুবীজের তীব্র সংকট ছিল। বেশি দামে বীজ কিনতে হয়েছে, যার ফলে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। পাশাপাশি হিমাগারের খরচও বেড়েছে। সব মিলিয়ে উৎপাদন খরচ প্রায় দ্বিগুণ হলেও আলুর দাম কমেছে প্রায় ৬০ শতাংশ।
কুড়িগ্রামের কৃষক আব্দুল করিম জানান, সাড়ে ছয় একর জমিতে আলু আবাদ করেছেন, কিন্তু লাভের বদলে কীভাবে লোকসান কমানো যায় তা নিয়েই চিন্তিত। ঠাকুরগাঁওয়ের চাষি আহসানুর রহমান হাবিবও জানালেন, প্রতি বিঘায় তার খরচ পড়েছে লাখ টাকার ওপরে, কিন্তু বিক্রি করে পাচ্ছেন গড়ে ৬৫ হাজার টাকা।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, উৎপাদনের পর যথাযথ সংরক্ষণ ব্যবস্থা না থাকায় বাজারে অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে আলুর উৎপাদন ছিল এক কোটি চার লাখ ৩২ হাজার টন, যা গত অর্থবছরের তুলনায় মাত্র ১.৬২ শতাংশ বেশি। তবে দাম কমেছে প্রায় ৬০ শতাংশ।
রপ্তানি বাজারেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। ২০১৪ সালে রাশিয়া আলুতে ব্রাউনরট রোগের উপস্থিতি শনাক্ত করে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল, যা ২০২২ সালে তুলে নেওয়া হলেও বর্তমানে বাংলাদেশি রপ্তানিকারকরা সমস্যায় রয়েছেন।
বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে হিমাগারের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে নতুন করে হিমাগারের ভাড়া প্রতি কেজিতে ছয় টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ছাইফুল আলম জানিয়েছেন, আলুর ভালো ফলন হয়েছে এবং লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে উৎপাদন বেশি হয়েছে। তবে উৎপাদন খরচ বাড়ার পাশাপাশি দাম কম থাকায় কৃষকদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে এই সমস্যা সমাধানে কাজ করা হচ্ছে।
