ঢাকাকে শঙ্কায় ফেলে শেষ চারের পথে কুমিল্লা

বিপিএলের ইতিহাসে সবচেয়ে সেরা দল ঢাকা। এবার ফ্রাঞ্চাইজি বদল হওয়াতে ভালো মানের দল গড়তে পারেনি। তারই খেসারত দিতে যাচ্ছে শেষ চারে যাওয়ার রাস্তাকে কঠিন করে। শেষ চারের লড়াইয়ে টিকে থাকতে হলে আজ বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের বিপক্ষে তাদের জয় ছিল আবশ্যিক। কিন্তু সেখানে তারা হেরে গেছে ৬০ রানের বিশাল ব্যবধানে। কুমিল্লার ৬ উইকেটে ১৬৪ রানের জবাবে ঢাকা ৯ উইকেটে করে ১০৪ রান। এই হারে তাদের শেষ চারে যাওয়ার সম্ভাবনা নিভু নিভু হয়ে উঠেছে। ৭ ম্যাচে পয়েন্ট মাত্র ২। এটি ছিল তাদের টানা ষষ্ঠ হার। বাকি ৫ ম্যাচ জিতলেও তাদের অনেক ‘যদি’ আর ‘কিন্তর’ উপর নির্ভর করতে হবে।
অপরদিকে কুমিল্লা প্রথম ৩ ম্যাচে হারের পর এটি ছিল তাদের টানা চতুর্থ জয়। ৮ পয়েন্ট নিয়ে তারা পয়েন্ট টেবিলের তিনে থেকে শেষ চারে যাওয়ার সম্ভাবনাকে আরও উজ্জ্বল করে তুলেছে। প্রথম খেলতে নেমেই নাসিম শাহ ৪ ওভারে মাত্র ১২ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়ে জিতে নেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। চট্টগ্রামে দুই দলের প্রথম মোকাবিলাতেও কুমিল্লা জিতেছিল ৩৩ রানে।
১৬৫ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ঢাকা কোনো লড়াইই করতে পারেনি। ব্যাটিং পাওয়ার প্লের আগেই তারা ১৬ রানে হারায় ৩ উইকেট। ওপেনার মিজানুর রহমান (৫) ও মোহাম্মদ মিঠুনকে (৩) ফিরিয়ে দেন প্রথমবারের মতো খেলতে নামা পাকিস্তানের পেসার নাসিম শাহ। সৌম্য সরকারকে (৩) ফেরান আবু হায়দার রনি। ঢাকার বাতিঘর দারুণ ফর্মে থাকা অধিনায়ক নাসির হোসেনও ফিরে যান দলীয় ৫০ রানের আগেই। নাসির আউট হওয়ার আগে নিজের ফর্মের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রান করে যাচ্ছিলেন। ১৫ বলে ২ বাউন্ডারিতে ১৭ রান করে তিনি শিকার হন খুশদিল শাহর। খুশদিল শাহ তার ৪ ওভারে টানা স্পেলে পরে আরিফুলের (১১) উইকেটও তুলে নেন।
কুমিল্লার বোলাদের তোপের মাঝে একমাত্র ওসমান খানই টিকে ছিলেন। কিন্তু অপরপ্রান্তে কেউই দাঁড়াতেই পারছিলেন না। নাসিম শাহ ২ ওভারে প্রথম স্পেলে ২ উইকেট নেয়ার পর দ্বিতীয় স্পেলে বল হাতে তুলে নিয়েই ওভারে প্রথম ও দ্বিতীয় বলে ফিরিয়ে দেন মুক্তার আলী (৯) আমির হামজাকে (০)। ঢাকার রান তখন ৭ উইকেটে ৭৬। ওসমানখান তখন ২৫ বলে ২৪ রান করে দেখছেন সঙ্গীদের আসা-যাওয়া। এরপর তিনি দেখেন মুকিদুলের শিকার হয়ে তাসকিনের (২) বিদায়। নবম উইকেট জুটিতে আল আমিন কিছুটা প্রতিরোধ গড়লে ঢাকা অলআউট হওয়া থেকে রক্ষা পায়। ২৩ বল থাকতে ক্রিজে এসে আল আমিন ১৪ বল খেলে ২ চারে ১৪ রান করে অপরাজিত থাকেন। সেই সঙ্গে দলীয় শতরানও অতিক্রম করে ঢাকা। ওসমান গনি ১টি করে চার ও ছয় মেরে ৩৪ বলে ৩৩ রান করে অকেশনাল বোলার জনসন চার্লসের শিকার হন।
নাসিম শাহ ১২ রানে ৪ উইকেট নেন। খুশদিল শাহ ২৪ রানে নেন ২ উইকেট। ১টি করে উইকেট ছিল জনসন চার্লস, আবু হায়দার ও মুকিদুল ইসলামের।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে কুমিল্লার ৬ উইকেটে ১৬৪ রান ছিল সবার সম্মিলিত প্রয়াস। সর্বোচ্চ ৩২ রানে আসে জনসন চার্লসের ব্যাট থেকে। তিনি ২৫ বলে ২ ছক্কা ও ১ চারে এই রান করেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩০ রান করেন খুশদিল শাহ। তিনি ১৭ বলে ২টি করে চার ও ছক্কা মারেন। অধিনাক ইমরুল কায়েসের ব্যাট থেকে আসে ৫ চারে ২২ বলে ২৮ রানের ইনিংস। গত ম্যাচে কোন রান করতে না পারা লিটন কুমার দাস ও জাকের আলী করেন ২০ রান করে। লিটনের ২০ রান ছিল স্বভাববিরোধী। ২০ বলে ৩ চারে। কিন্তু জাকের আলীর অপরাজিত ২০রান ছিল ১০ বলে। চার ও ছয় ছিল একটি করে। নাসির ৩ ওভারে ১৯ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। ১টি করে উইকেট ছিল তাসকিন ও আল আমিনের।
এমপি/আরএ/
