অনলাইন জুয়ার রমরমা ব্যবসা, কঠোর অবস্থানে সরকার
দেশে অনলাইনে জুয়ার রমরমা ব্যবসা চলছে। বিষয়টি নজরে আসায় জুয়া খেলার ওয়েবসাইট ও অ্যাপগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে সরকার। ইতিমধ্যে ৬ হাজারেরও বেশি ওয়েবসাইট ও অ্যাপ ব্লক করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (বিটিআরসি)। আরও ২৪৬টি অ্যাপ ও ওয়েবসাইট লিংক ব্লক করতে আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গুগল, ফেসবুক ও ইউটিউবকে চিঠি দিয়েছে বিটিআরসি।
বাংলাদেশে অনলাইনে জুয়া খেলায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই টাকার লেনদেন হয় মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের (এমএফএস) মাধ্যমে। তাই বিকাশ, নগদ, রকেটসহ সব এমএফএস অপারেটরকে গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টস নিয়মিত মনিটরিং করতে নির্দেশনা দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
এ ছাড়া, ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড সহজলভ্য হওয়ায় লেনদেনে এগুলোও ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ ব্যাংককেও চিঠি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত একটি বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব জুয়ার ওয়েবসাইট ও অ্যাপের কারণে ই-কমার্সের গ্রাহকদের আস্থা কমে যাওয়ায় এমন উদ্যোগ নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বৈঠকে উপস্থিত একটি এমএফএস অপারেটরের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, এমএফএস অপারেটররা সহজেই এমন ধরনের গ্রাহকদের সনাক্ত করতে পারে যারা অনলাইন ট্রান্সন্যাশনাল জুয়ার সঙ্গে জড়িত। আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থাও নিয়ে থাকি।
বিটিআরসি সূত্র জানায়, গুগল প্লে স্টোরে এমন ১৫০টি অ্যাপ রয়েছে। এর মধ্যে ১৪টি অ্যাপ বিটিআরসি’র আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গুগল মুছে ফেলেছে। বাকি ১৩৬টি অ্যাপ বন্ধেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। ফেসবুক এবং ইউটিউবও সম্প্রতি ১৭টি জুয়ার লিংক ব্লক করেছে।
জানা যায়, গত কয়েক বছরে মোট ৬ হাজার ওয়েবসাইট ও অ্যাপ ব্লক করেছে বিটিআরসি।বর্তমানে আরও ৩০০টি ওয়েবসাইট মনিটরিংয়ে রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি।
এমএফএস অপারেটরগুলোর প্রতিনিধিরা বৈঠকে বলেছেন, গ্রাহক বা এজেন্টের ছদ্মবেশে কোনো সন্দেহজনক লেনদেন হলেই সেটি বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইউ) জানানো হয়। তারপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও তথ্য সরবরাহ করা হয় যাতে তারা পদক্ষেপ নিতে পারে। বৈঠকে এমন কিছু ঘটনার উদহারণও দেন তারা
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক ও ডিজিটাল ই-কমার্স সেলের প্রধান মো. হাফিজুর রহমান ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ই-কমার্স ব্যবসায়ী ও গ্রাহকদের আস্থা ব্যপকভাবে কমে গেছে এসব বেটিং ওয়েবসাইটের কারণে। এ কারণে আমরা বিটিআরসিকে এগুলো বন্ধে সহযোগিতা করছি।
এক প্রশ্নের জবাবে হাফিজুর রহমান বলেন, ব্লক করা কিছু ওয়েবসাইট ভার্চ্যুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্কের (ভিপিএন) মাধ্যমে খোলা যেতে পারে। এ ব্যাপারে বিটিআরসি গুগল বা ফেসবুককে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বলবে, যাতে এগুলোর রিয়েলটাইম অবস্থাটা জানা যায়।
এনএইচবি/এমএমএ/