বৃহস্পতিবার, ৩ এপ্রিল ২০২৫ | ১৯ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

সুতাং নদীর পাড়ে

কিছুদিন ধরেই একটা ব্যাপার মাথার ভিতর ঘুরপাক খাচ্ছিল। তা হলো নদী। এই জীবনে কত নদী যে দেখেছি। কত নদীর জল ছুঁয়ে দেখেছি। নৌকায়, লঞ্চে, ইস্টিমারে কত রাত্রিদিন নদীতে ভেসেছি। আবার অনেক নদী আছে আজও দেখা হয় নাই। নামও জানি না। আজ কয়েকদিন ধরে মন বলছিল কোথাও গিয়ে একটু নদী দেখে আসি।
কিন্তু কোথায় যাব? কোন্ নদীর কূলে গিয়ে দেখব জল? কোনোই সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলাম না।
কাউকে কিছু না বলে একদিন ভোরবেলা বিমানবন্দর স্টেশনে চলে যাই। একটি ট্রেন তখন স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখতে পাই। কাউন্টারে টিকিট মাস্টারকে বলি - এই ট্টেনটি কোথায় যাবে?
- এটি পারাবত এক্সপ্রেস। সিলেট যাবে।
- আমাকে এই ট্রেনের একটি টিকেট দেন।
- কোন্ ক্লাসের টিকেট দিব?
- শোভন ক্লাসের।
সিলেট পর্যন্তই টিকেট কাটলাম। ভাবলাম, ট্রেনে যেতে যেতে নদী খুঁজব। যে নদীটা দেখতে ভালো লাগবে সেই নদীর কাছাকাছি কোনও একটি স্টেশনে নেমে পড়ব।
ট্রেন চলছে। আন্তঃনগর ট্রেন। খুব দ্রুত চলছে। জানালার কাছে সিট। খুব ভালো লাগছে। মাঠ ঘাট খালি প্রান্তর পেরিয়ে ট্রেনটি ছুটে চলেছে। মনে পড়ছিল সেই কবে ইন্টার ক্লাসে রবার্ট লুইস স্টীভেনশনের একটি কবিতা পড়েছিলাম -
'Faster than fairies, faster than witches, Bridges and houses, hedges and ditches; And charging along like troops in a battle, All through the meadows the horses and cattle...'
কিছুক্ষণ পরেই দেখি - ট্রেনটি বিকট শব্দ করে একটি ব্রিজ ক্রস করছে। নীচে চেয়ে দেখি নদী। নদীটির নাম শীতলক্ষ্যা। এই নদী এর আগে অনেক দেখেছি নারায়নগঞ্জের নিতাইগঞ্জে। নদীটা ভালো লাগলো। কিন্তু মন টানলো না তেমন। আর ট্রেনটা ছিল দ্রুতগামী। ঘোড়াশাল ফ্লাগ স্টেশনে ট্রেনটি থামল না।
হঠাৎ মনে পড়ল আমার এক ফেসবুক বান্ধবীর কথা। কাকতালীয় ভাবে ওর নাম ছিল 'নদী'। পুরো নাম নদী ইসলাম। এখানে পলাশে ওদের বাড়ি। সে এখন আয়ারল্যান্ডে ডাবলিন শহরে থাকে। ও ইনবক্সে আমাকে বলেছিল- ওদের বাড়ির কাছে নাকি 'হাঁড়িধোয়া' নামে একটি নদী আছে। নদীটা নাকি দেখতে খুব সুন্দর! আঁকাবাঁকা সর্পীল। ও এও বলেছিল যদি পারো কোনও একদিন গিয়ে এই নদীটা দেখে এসো। ট্টেনটা এখানে যদি থামতো তাহলে নাহয় নেমে এই হাঁড়িধোয়া নদীটাই দেখে যেতাম।
ট্রেনটি একসময় ভৈরব জংশন পার হয়ে আরও একটি সেতু অতিক্রম করছিল। ট্রেন থেকে নীচে চেয়ে দেখি, এ যে মেঘনা। এই নদীও দেখেছি এর আগে অনেক বার। ট্রেনটি ছুটছে দ্রুত গতিতে আখাউড়ার দিকে। এখানে কাছাকাছি কোনও স্টেশনে থামবে না। তাই এখানে আর নামা হলো না। তাছাড়া নামতামও না এখানে। কারণ আমি খুঁজছি স্বচ্ছতোয়া ছোট কোনও নদী।
ট্রেনটি একসময় আখাউড়া গিয়ে পৌঁছে। ট্রেন থেকে প্লাটফরমে নামি। একটি চা'র দোকানে বসে চা খাই। একবার ভাবছিলাম, এই ট্রেনটি ছেড়ে দিয়ে অন্য আর একটি ট্রেনে নাহয় চট্টগ্রামের দিকে যাব। কিন্তু তা আর হলো না। ট্রেন ছাড়ার সাইরেন বেজে উঠে। আমি দৌড়ে গিয়ে ট্টেনে উঠে পড়ি।
ট্রেনটি শায়েস্তাগঞ্জ জংশন পৌঁছার আগে কোথাও কোনও স্টেশনে আর থামল না। এরই মাঝে ছোট বড় দু-তিনটে নদী দেখলাম। ভালোও লেগেছিল। কিন্তু নেমে আর দেখা হয়নি।
শায়েস্তাগঞ্জ জংশনেও ট্রেন থেকে একটু নামলাম। ইতস্ততভাবে ঘোরাঘুরি করছিলাম প্লাটফর্মের উপর দিয়ে। একটা টং দোকানে বসে চা খেলাম। সিগারেটও খাই। মনে পড়ছিল অনেক বছর আগের কথা।

আশির দশকের হেমন্তকাল। সেবার আমরা কয়েকজন তরুণ কর্মকর্তা একটাি অফিসের কাজে এসেছিলাম হবিগঞ্জ ও চুনারুঘাট। আমাদের সাথে দুটো মেয়েও ছিল। মনে পড়ছিল এই স্টেশনের কাছে কোথাও একটি হোটেলে আমরা লাঞ্চ করেছিলাম। আরও মনে পড়ছিল অনেক কথা। একটি নদীর কথা। অনেক স্মৃতি ধেয়ে আসছিল অস্পষ্ট করে অনেক পিছনের পুরনো জীবন থেকে।

আরও একটি সিগারেট ধরাই। ইতোমধ্যে ট্রেন ছাড়ার সাইরেন বাজতে থাকে। আমি নির্বিকার চেয়ে থাকি ট্রেনটার দিকে। ট্রেনটি ছেড়ে চলে গেল। আমি বসেই রইলাম চা' র দোকানের সামনে বেঞ্চের উপরে।
তখন দ্বিপ্রহর হয়ে গেছে। চা'র দোকান থেকে উঠে আস্তে আস্তে হেঁটে স্টেশনের বাইরে আসি। সেই খাবার হোটেলটি খুঁজতে থাকি। কত বছর আগের কথা। নামও মনে নেই হোটেলটির।

শেষ পর্যন্ত হোটেলটি খুঁজে পেলাম। তখন ছিল টিনের চালার হোটেল। এখন সেটি পাকা। দুপুরের খাবার খেয়ে নিলাম হোটেলটিতে।
হোটেল থেকে বেরিয়ে স্থানীয় একজন লোককে জিজ্ঞাসা করি, আচ্ছা, সুতাং যাব কীভাবে? আমি নিজেই বললাম, আগে তো ট্রেনে যাওয়া যেত।
লোকটি বলল - ঐ সেকশনে এখন আর ট্রেন চলে না। বন্ধ হয়ে গেছে অনেক আগেই। আপনি লোকাল বাসে অথবা অটোতে করে সুতাং বাজার যেতে পারবেন।

আমি বাসে না উঠে একটি খোলা অটোতে করে চলে যাই সুতাং রেল স্টেশনে। কেমন অপরিচিত লাগছিল স্টেশনটি। পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে আছে। কোনও কর্ম চাঞ্চল্য নেই। টিকিট ঘরটি আছে। স্টেশন মাস্টারের ঘরটিও আছে । কিন্তু কোনও কর্মচারী নেই। ছোট্ট একটি স্টেশন। শুধুমাত্র লোকাল ট্রেন এখানে থামত।

সেবার অফিস ট্যুরের সময় আমার আর নমিতার উপর দায়িত্ব পড়েছিল সুতাং নদীর পাড়ে খাসিয়া পুঞ্জিতে গিয়ে কয়েকটি পরিবারের সাথে আর্থ সামাজিকের উপর কিছু তথ্য জেনে নেওয়া। আমি আর নমিতা চুনারুঘাট থেকে একটি লোকাল ট্রেনে করে এসে নেমেছিলাম এই সুতাং স্টেশনে।

এই সুতাং স্টেশনের অদূরেই সুতাং নদী। কেমন যেন প্রকৃতিকালও মিলে গেল আজকেও। সেবার ছিল হেমন্ত সময়। আজকেও হেমন্ত। ঝকমকে রোদ চারদিকে ঝিকমিক করছে । কিন্তু মনটা প্রফুল্ল লাগছে না। সেবার আমার সাথে ছিল নমিতা ৷ এবার কেউ নেই। কী উচ্ছ্বল ছলছল ছিল মেয়েটা। জাহাঙ্গীর নগর ইউনিভার্সিটি থেকে সদ্য ভূগোলে স্নাতকোত্তর করে এসেছিল । লম্বা লম্বা চুল ছিল ওর। চুলের গোছা ছড়িয়ে পড়ত কটিদেশের উপরে। আমি ওকে বলতাম - এই যে কাজল কালোকেশী মেয়ে! কখনই চুল বাঁধবে না তুমি! নদী যেমন বুক উজার করে জল কলকলিয়ে চলে তেমনি তোমার চুল ছড়িয়ে দেবে আদিগন্ত তোমার পিঠের উপরে।

আমরা সেদিন হাঁটছিলাম সুতাং নদীর পাড় ধরে।
কোথাও পাহাড়ি পথ, কোথাও আঁকাবাঁকা সমতল। আবার কোথাও উঁচু-নিচু পথ। সব পথের ধুলোয় লুটিয়ে থাকে পাহাড়ি লাল মাটি ও ঝকঝকে বালি। যেতে যেতে সবুজ প্রকৃতির মাঝে দেখা মেলে দূরের পাহাড়। নদীটি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড়ের থেকে উৎপত্তি হয়ে বাংলাদেশে এসেছে।

পথে চলতে চলতে পড়ছিল টিলা। পথের দুপাশে কত নাম না জানা জংলী ফুল ফুটে আছে। বিচিত্র সব সুবাসে বাতাস ভরে আছে। সুতাং এর স্বচ্ছ জল ছোঁয়ার জন্য নমিতা আকুল হয়। পাড়ে থেকে জলের কাছে যেতে ও ভয় পাচ্ছিল। নমিতা আমাকে কুসুমে কোমলে ডাকে - রঞ্জন, তুমি আমার হাতটি ধরো।

কি পাগল মেয়ে যে নমিতা! আমার একটি হাত ওর পাঁজরে জড়িয়ে নিয়ে জলের কাছে চলে যায়। ও বলছিল - এত টলটলে জল, এত স্বচ্ছ রূপ ! এত পবিত্র! আমার সাথে তুমিও এই জল স্পর্শ করো। আমাকে তুমি অশেষ করো। দাও জগৎ দাও। দাও তোমার মঙ্গল ছোঁয়া। তুমি নিয়ে নাও আমার ধনদৌলত, সকল ঐশ্বর্য। সেই কত যুগের আগে তোমাকে দেখেছিলাম। সেই কতকাল ধরে এমনই ক্ষণ আমি চেয়েছিলাম। এমনই একটি নদীর কাছে তোমার মতো কাউকে আমার সমস্ত কিছু দান করতে ইচ্ছে জাগত। আজ সেই মাহেন্দ্রক্ষণ এসেছে আমার জীবনে। তুমি ফিরিয়ে দিও না
কী বিমুগ্ধ জীবন পায় মানুষ! হিরণ্য আখরে দাগ কেটে রয় তা জীবনের পরতে পরতে।
নদী থেকে চলে আসি ঝর্ণার ঝিরিপথের বাঁকে। এযে রবি ঠাকুরের নির্ঝরের স্বপ্ন ভঙ্গের গান এখানেও। কেমন ভয়ংকর নির্জনতা চারদিকে! নমিতার বুক ধকধক করছিল। ও বলছিল - এ তুমি কোথায় নিয়ে এলে! এ যে স্বর্গ এখানে নেমে এসেছে! সবকিছু স্বপ্ন নয় তো!
তখন ছিল অপরাহ্ন সময়। সুতাং নদীর জল ছিল স্থির। ডাহুক উড়ছিল। পানকৌড়িরা বসেছিল শিয়ালপোতা গাছের ঝাড়ে। তখনও রৌদ্র করছিল ঝিলমিল। নমিতা ওর বুকের পাঁজর থেকে আমার হাত সরে এনে আমার বুকের ভিতর ওর বুক সমর্পণ করে। আবারও বিহ্ববলতা! দীর্ঘ আলিঙ্গন যেন শেষ হতে চায়নি সেদিনের সুতাং নদীর পাড়ে মনুষ্যহীন নির্জন সেই অপরাহ্ন বেলায়।
আজ এত বছর পরে সুতাং নদীর কূল ধরে যখন হাঁটছিলাম তখন চারদিক থেকে কী এক নস্টালজিক বেদনা এসে মনকে আচ্ছন্ন করছিল। সুতাং নদীতে জল বয়ে চলেছে আগের মতোই কিন্তু কেমন যেন বিষাদ হয়ে আছে সে জল। পায়ে পায়ে চলছিলাম ধীরে। কিন্তু পা চলছিল না। পথ চলতে ব্যথা করছিল দু'পায়ে।
আরও কিছু দূর চলে যাই সেই টিলাটার কাছে। টিলার গায়ে লতাগুল্মে ভরে আছে। শুধু পাশের ঝর্ণার জল আজ আর ঝরে পড়ছে না ৷ সব আজ শব্দহীন। ভাবছিলাম আর এগুবো না সামনের দিকে। মনও চাইছিল না এগুতে । ফিরে চলে আসতে থাকি পরিত্যক্ত সুতাং স্টেশনের দিকে।
পথ দিয়ে ফিরছিলাম আর ভাবছিলাম সেই তরঙ্গায়িত যৌবন সময়ের কথা। কতজনকেই তো ভালো লেগেছিল। নমিতা ছিল তাদেরই একজন। মনে হতো মেয়ে তুমি আমার কিছু একটা হও। স্বপ্নও দেখতাম ওকে নিয়ে। এ রকম কত স্বপ্ন যে ভেঙ্গে গেছে সেই সময়ে। সেই ভাঙ্গা গড়ার সময়কাল কখন যে শেষ হয়ে গেছে তাও বুঝতে পারিনি। আমার গত জীবনকাল ধরে নমিতার মুখচ্ছবি যে মনে ভেসে উঠেনি তা নয়। এই সুতাং নদীর পাড়ে ওর বুকের সেই উষ্ণতা আজও আমাকে বিচলিত করে। কখনও কখনও নিজেকে খুব খালি খালি লাগে। ওর মায়াময় মুখখানি সুতাং নদীর জলের মতো হৃদয়ের ক্যানভাসে এখনও অস্পষ্ট জলছবি হয়ে আছে। সৌম্য বাতাসে কান পাতলে তার পায়ের ধ্বনি বাজে। সেই কবে নমিতা আমার হতে চেয়েছিল এক হৈমন্তিকা দিনে। ঝরা পাতাচিহ্ন ফেলে সে আর পুনরায় ফিরে আসবে না কোনোদিন। অথচ বনফুলের বিজরিত গন্ধ বাতাসে আকুল হবে এই সুতাং নদীর পাড়ে শতসহস্র বছর কাল।
কত যে ভ্রম আজও হয়!
সুতাং স্টেশনে গিয়ে টিকেট ঘরের দিকে এগিয়ে যাই। মাস্টার মশাইকে বলি - আমাদের ঢাকার বিমানবন্দর রেলস্টেশনের দুটো টিকেট দেন। কেউ কোনও উত্তর দিচ্ছে না। টিকেট ঘরটি যে তালাবন্ধ! ভিতরে কেউ নেই। পাশে চেয়ে দেখি - নমিতাও নেই।

 

ডিএসএস/ 
 

Header Ad
Header Ad

সাতক্ষীরায় মদপানে দুই যুবকের মৃত্যু, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৯

ছবি: সংগৃহীত

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলায় মদপানের ফলে দুই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। একই ঘটনায় আরও ৯ জন গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দুই যুবকের মৃত্যু হয়। এর আগে, ঈদের সন্ধ্যায় তারা মদপান করেন এবং রাতের মধ্যে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন।

মৃতদের মধ্যে রয়েছেন আশাশুনি উপজেলার তেতুলিয়া গ্রামের জাফর আলী খাঁর ছেলে জাকির হোসেন টিটু (৪০) ও সোহরাব গাজীর ছেলে নাজমুল গাজী (২৬)।

এ ঘটনায় অসুস্থদের মধ্যে রয়েছেন ব্রাহ্মণ তেতুলিয়া গ্রামের সাইদ সরদারের ছেলে ফারুক হোসেন, মোকামখালী গ্রামের কুদ্দুস সরদারের ছেলে ইমরান, মিত্র তেতুলিয়ার মর্জিনা খাতুনের ছেলে ইকবাল, কামরুলের ছেলে লিফটন, আজিবার সরদারের ছেলে রবিউল, শহীদ গাজীর ছেলে তুহিন, আনিসের ছেলে নাজমুলসহ আরও কয়েকজন।

গুরুতর অসুস্থদের মধ্যে ফারুক হোসেনকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ইমরানকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ঈদের দিন সন্ধ্যায় আশাশুনির তেতুলিয়া শ্মশানঘাট মাঠে বসে জাকির হোসেন টিটু, নাজমুল গাজীসহ মোট ১১ জন একসঙ্গে মদপান করেন। মদপানের পর তারা বাড়ি ফিরে যান এবং ঘুমিয়ে পড়েন।

এরপর রাত ১২টার দিকে একে একে সবাই মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের আশাশুনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জাকির হোসেন টিটু ও নাজমুল গাজী মারা যান। বাকি ৯ জনের চিকিৎসা চলছে।

আশাশুনি থানার ডিউটি অফিসার এসআই ফিরোজ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, "অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে মৃত্যু অন্য কোনো কারণে হয়েছে কিনা, তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।"

নিহতদের মধ্যে একজনের মরদেহ উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় বিস্তারিত তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Header Ad
Header Ad

ইরানের ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র নেটওয়ার্কের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরান, চীন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) একাধিক ব্যক্তি ও সংস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ইরানের অস্ত্র সংগ্রহ নেটওয়ার্কের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ এই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেয়।

এই পদক্ষেপকে ইরানের ওপর আরও চাপ সৃষ্টির একটি অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর আগে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে সতর্ক করে বলেছিলেন, নতুন পারমাণবিক চুক্তিতে রাজি না হলে দেশটির ওপর বোমা হামলা চালানো বা নতুন শুল্ক আরোপ করা হতে পারে।

মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ ও বিচার বিভাগ যৌথভাবে জানিয়েছে, ইরানের ড্রোন কর্মসূচির অন্যতম প্রধান নির্মাতার জন্য মানববিহীন এয়ার ভেহিকল (ইউএভি)–এর উপকরণ সংগ্রহের সঙ্গে যুক্ত ছয়টি সংস্থা ও দুই ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট এক বিবৃতিতে বলেন, "ইরান তাদের ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়াসহ তাদের প্রক্সিদের সরবরাহ করছে। রুশ বাহিনী এগুলো ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে, যা বেসামরিক নাগরিক, মার্কিন বাহিনী ও মিত্রদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।"

তিনি আরও বলেন, "আমরা ইরানের সামরিক-শিল্প কমপ্লেক্স এবং তাদের ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ও প্রচলিত অস্ত্রের বিস্তার ব্যাহত করতে কাজ চালিয়ে যাব।"

মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ জানিয়েছে, নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে একটি ইরান-ভিত্তিক সংস্থা, দুইজন ইরানি নাগরিক, একটি চীন-ভিত্তিক সংস্থা এবং চারটি সংযুক্ত আরব আমিরাত-ভিত্তিক সংস্থা।

এ বিষয়ে জাতিসংঘে ইরানের মিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

Header Ad
Header Ad

বিশ্বব্যাপী অপপ্রচার ছড়াচ্ছে আওয়ামী লীগের দোসররা: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগের দোসররা বিশ্বব্যাপী অপপ্রচার চালিয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, "পরাজিত শক্তি নিউইয়র্ক টাইমসে মিথ্যা তথ্য দিয়ে রিপোর্ট করিয়েছে। ফ্যাসিবাদের দোসররা হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছে। তারা এই অবৈধ টাকা ব্যবহার করে বাংলাদেশকে কলঙ্কিত করতে চায়।"

বুধবার (২ এপ্রিল) সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

রিজভী আহমেদ অভিযোগ করেন, "শেখ হাসিনা জঙ্গি দমনের নামে একটি নাটক সাজিয়ে বিশ্ববাসীকে বিভ্রান্ত করেছেন। এটি মূলত ক্ষমতায় টিকে থাকার একটি রাজনৈতিক কৌশল ছিল। এমনকি একজন সাবেক আইজিপির বইয়েও এটি উঠে এসেছে।"

তিনি আরও বলেন, "বাংলাদেশে উগ্রবাদের কোনো উত্থান ঘটেনি। বরং বর্তমানে দেশে ফ্যাসিবাদের কোনো ছোবল নেই, মানুষ নির্বিঘ্নে ধর্মপালন করতে পারছে, কথা বলতে পারছে। এবার মানুষ নির্ভয়ে ঈদ উদযাপন করেছে, যা অতীতে সম্ভব হয়নি।"

আওয়ামী লীগ সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, "আওয়ামী লীগ বসে নেই, তারা কালো টাকা ব্যবহার করে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। তারা অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। বিদেশে পালিয়ে থাকা আওয়ামী লীগের নেতারাই দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।"

তিনি আরও বলেন, "শেখ হাসিনার নির্দেশে মুগ্ধ ফাইয়াজদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, কিন্তু এ নিয়ে তার কোনো অনুশোচনা নেই। প্রশাসনের চারপাশে আওয়ামী লীগের দোসররা বসে আছে, যার ফলে দেশে গণতন্ত্র ও সুশাসন ভূলুণ্ঠিত হয়েছে।"

রিজভী আহমেদ দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার করে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানান। তিনি বলেন, "নির্বাচনী সরকারই হচ্ছে বৈধ সরকার। নির্বাচন নিয়ে গড়িমসি সাধারণ জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হলে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হবে।"

তিনি নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দ্রুত নির্বাচনের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সাতক্ষীরায় মদপানে দুই যুবকের মৃত্যু, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৯
ইরানের ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র নেটওয়ার্কের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
বিশ্বব্যাপী অপপ্রচার ছড়াচ্ছে আওয়ামী লীগের দোসররা: রিজভী
দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশে জঙ্গিবাদের উত্থানের ঘটনা ঘটেনি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
আখাউড়ায় ট্রেনের ছাদে টিকটক বানাতে গিয়ে দুর্ঘটনা, নিহত ২
বাংলাদেশকে ভেঙে ফেলার আহ্বান ভারতের ত্রিপুরার রাজপরিবার প্রধানের
বিএনপি কখনোই নির্বাচনের পরে সংস্কারের কথা বলেনি: মির্জা ফখরুল
বিরামপুরে জমি নিয়ে বিরোধ, চাঁদা দাবি ও হামলার ঘটনায় আটক ৫
হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা ভ্যাল কিলমার আর নেই
ময়মনসিংহে সিনেমা হলে যান্ত্রিক ত্রুটির জেরে দর্শকদের ভাঙচুর
সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের তীব্র প্রতিক্রিয়া
মিয়ানমারের ভূমিকম্পে এক ইমামের ১৭০ স্বজনের মৃত্যু
ঈদের আনন্দে যমুনার দুর্গম চরে গ্রাম-বাংলার ঘুড়ি উৎসব, আনন্দে মেতে উঠে বিনোদনপ্রেমীরা!
ইমামকে ঘোড়ার গাড়িতে রাজকীয় বিদায়, দেওয়া হলো ৯ লাখ টাকার সংবর্ধনা
লন্ডনে একসঙ্গে দেখা গেলো সাবেক চার আওয়ামী মন্ত্রীকে
ঢাকায় ফিরছে ঈদযাত্রীরা, অনেকে ছুটছেন শহরের বাইরে
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় আবারও সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ৭
বিটিভিতে আজ প্রচারিত হবে ঈদের বিশেষ ‘ইত্যাদি’
ঈদের ছুটিতে ফাঁকা ঢাকা, নেই যানজটের চিরচেনা দৃশ্য
মাদারীপুরে তিন মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ৪, আহত ২